Ajker Patrika

কোরবানির ঈদের আগে দুমকীতে ছড়িয়ে পড়ছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ, আতঙ্কিত খামারিরা

দুমকী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি 
পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলায় গরুর লাম্পি স্কিন রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলায় গরুর লাম্পি স্কিন রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন খামারিরা। কোরবানির ঈদের আগে গরুর এমন রোগে খামারিরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন। তবে খামারিদের আতঙ্কিত না হয়ে বরং সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা।

লাম্পি স্কিন রোগে গরুর মৃত্যুর হার কম হলেও এতে ঝুঁকি বাড়ছে দুগ্ধ, চামড়া ও মাংস শিল্পে। এ রোগে আক্রান্ত পশুর চামড়া অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। আক্রান্ত গাভির দুধ উৎপাদন শূন্যের কোটায় নেমে আসে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, মূলত মশা ও মাছির মাধ্যমে ভাইরাসজনিত চর্মরোগটি সারা দেশে ছড়াচ্ছে। দুমকী উপজেলার লেবুখালী, আঙ্গারিয়া, পাঙ্গাসিয়া, মুরাদিয়া ও শ্রীরামপুর ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামের গরু কমবেশি এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এ রোগের প্রতিষেধক (ভ্যাকসিন) সরকারি পর্যায়ে সরবরাহ না থাকায় গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারিরা।

উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চরবয়েরা গ্রামের আ. জলিল জানান, তিনি চার-পাঁচটি গরু লালন-পালন করছেন। শাহি ওয়াল জাতের একটি গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। চামড়ার অধিকাংশ জায়গায়ই পচন ধরেছে। অবশেষে তিনি হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন চিকিৎসা করাতে। কোরবানির ঈদের চারদিকে যেভাবে গরুর এই রোগ ছড়াচ্ছে, তাতে তাঁর প্রতিটি দিন আতঙ্কে কাটছে। আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের রুপাশিয়া গ্রামের এখলাছ ও আ. মোতালেব বলেন, এ রোগে আক্রান্ত হয়ে দুটি বাছুর মরে গেছে। শ্রীরামপুর ইউনিয়নের দুমকী গ্রামের সঞ্জীব দাস বলেন, লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুটির চিকিৎসা করিয়েও কোনো লাভ হয়নি। গরুটি মরে গেছে। খামারি সহিদুল ইসলাম বলেছেন, এ রোগে গরু আক্রান্ত হলে তাঁর ঈদকেন্দ্রিক ব্যবসায় ধস নামবে। এতে ভীষণভাবে ক্ষতির মুখে পড়বেন তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন আশিক হাজরা বলেন, গরুর লাম্পি স্কিন রোগের (এলএসডি) সুনির্দিষ্ট ভ্যাকসিন সরকারিভাবে সরবরাহ নেই। বেসরকারি পর্যায়ে কিছু কোম্পানি ওষুধ বাজারজাত করছে। শুধু সচেতনতার মাধ্যমেই এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। রোগের লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হয়। প্রাথমিকভাবে অ্যান্টিপাইরেটিক ও অ্যান্টিহিস্টামিন দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। নডিউল বা গুটি ফেটে গেলে বা সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন দমন করার জন্য ক্ষত স্থানে পভিসেপ অথবা ভায়োডিন দিয়ে ড্রেসিং করে বোরিক পাউডার বা সালফানিলামাইড পাউডার লাগানো যেতে পারে। অযথা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, এই রোগ প্রতিরোধে অসুস্থ পশুকে আলাদা করতে হবে। খামারের ভেতরের ও আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেখে মশা-মাছির উপদ্রব কমিয়ে রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আক্রান্ত গরুকে খামারের শেড থেকে আলাদা করে অন্য স্থানে মশারি দিয়ে ঢেকে রাখলে অন্য গরুতে সংক্রমণ হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আক্রান্ত গাভির দুধ বাছুরকে খেতে না দিয়ে মাটিচাপা দেওয়া উচিত। আক্রান্ত গরুর ব্যবহার্য কোনো জিনিস সুস্থ গরুর কাছে আনা বা সেই গরুর খাবার অন্য গরুকে খেতে দেওয়া যাবে না। এই প্রাণিস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, লাম্পি স্কিন ডিজিজের চিকিৎসায় গোট পক্সের ভ্যাকসিন প্রাথমিকভাবে কাজে লাগতে পারে। তবে এ ভ্যাকসিনেরও যথেষ্ট অভাব রয়েছে। ২৫-৩০ দিন পর সাধারণত এমনিতেই রোগটি সেরে যায়। তাই লাম্পি স্কিন রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেলেই দ্রুত উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বা রেজিস্টার্ড প্রাণী চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরিচর্যার ব্যবস্থা করতে হবে। আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রথম দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

নির্বাচনী সমঝোতা: এখনো হিসাব মেলাচ্ছে জামায়াত ও এনসিপি

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে— শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজে আগুন, এক কর্মচারী নিহত; ১৫ জন জীবিত উদ্ধার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

যাত্রী ওঠানোর আগমুহূর্তে সেন্ট মার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজ ‘দ্য আটলান্টিক ক্রুজ’-এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে জাহাজের এক কর্মচারী নিহত হয়েছেন। এ সময় জাহাজের ক্রুসহ ১৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত কর্মচারীর নাম নূর কামাল (২৫)। তিনি টেকনাফের বাসিন্দা। কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক সৈয়দ মুহাম্মদ মোরশেদ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কক্সবাজারের নুনিয়াছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাটসংলগ্ন বাঁকখালী নদীতে নোঙর করা অবস্থায় জাহাজটিতে আগুন লাগে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সি ক্রুজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর।

জানা গেছে, সেন্ট মার্টিনগামী পর্যটকদের তুলতে জাহাজটি বাঁকখালী নদীর বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে ভেড়ার ঠিক আগমুহূর্তে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে জাহাজটিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। এ সময় স্থানীয় লোকজন ট্রলার ও স্পিডবোটের সহায়তায় জাহাজের ক্রুসহ ১৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করে।

স্কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো সকাল ৭টার দিকে পর্যটক তুলতে ঘাটে আসছিল দ্য আটলান্টিক ক্রুজ। হঠাৎ জাহাজের ভেতর থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। অল্প সময়ের মধ্যেই আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে।’

অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট। তবে দীর্ঘ সময় চেষ্টার পরও আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

এদিকে আগুন লাগার ঘটনায় সেন্ট মার্টিনগামী পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। জাহাজটিতে প্রায় ২০০ জন যাত্রী ওঠার কথা থাকলেও তাঁদের মধ্যে ১২০ জনকে তিনটি বিকল্প জাহাজে তুলে দেওয়া হয়েছে। অন্য যাত্রীরা রোববার সেন্ট মার্টিন যেতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে। তবে অগ্নিকাণ্ডের কারণে দুটি জাহাজ ছাড়তে দেরি হওয়ায় যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সকাল ৯টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আ. মান্নান বলেন, জাহাজে আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিকেলে জাহাজের মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন নৌপথে প্রতিদিন ছয়টি পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রথম দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

নির্বাচনী সমঝোতা: এখনো হিসাব মেলাচ্ছে জামায়াত ও এনসিপি

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে— শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জবির ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন

জবি প্রতিনিধি‎
জবির ‎ভেতরে চলছে পরীক্ষা, আর বাইরে যেন ভিন্ন এক দৃশ্যপট। ছবি: আজকের পত্রিকা
জবির ‎ভেতরে চলছে পরীক্ষা, আর বাইরে যেন ভিন্ন এক দৃশ্যপট। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষের ‘সি’ ইউনিটের (বাণিজ্য অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হলো। আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা সময়ব্যাপী এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

‎বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবারের ‘সি’ ইউনিটে মোট ৫২০টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন ২০ হাজার ৫৩৭ জন শিক্ষার্থী। সে হিসাবে প্রতি আসনের বিপরীতে ছিলেন প্রায় ৪০ জন।

‎শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে দেখা যায় উৎকণ্ঠাময় পরিবেশ। ‎ভেতরে চলছে পরীক্ষা, আর বাইরে কেউ আঙুলে তসবিহ গুনছেন, কেউ পড়ছেন দোয়া, আবার কেউ অস্থির পায়ে হাঁটছেন এদিক–ওদিক। সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা আর আশার ভারে ভারী বাবা–মা ও স্বজনদের চোখ।

মোহাম্মদপুর থেকে আসা আসমা আক্তার বলেন, ‘মেয়েটা দিন–রাত এক করে পড়াশোনা করেছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই অনেক চিন্তা হচ্ছে। তবে আমরা আশাবাদীও। আল্লাহর কাছে দোয়া করা ছাড়া আর কোনো পথ দেখছি না।’

সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা আর আশার ভারে ভারী বাবা–মা ও স্বজনদের চোখ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা আর আশার ভারে ভারী বাবা–মা ও স্বজনদের চোখ। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎যাত্রাবাড়ী থেকে আসা মিলন হোসেন বলেন, ‘আমার বোন ছোটবেলা থেকেই খুব মেধাবী। ভর্তি পরীক্ষার জন্য তাঁর প্রস্তুতিও ভালো ছিল। তবুও এত পরিশ্রম যদি বৃথা যায় এই আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই সৃষ্টিকর্তার কাছে হাত তুলে দোয়া করছি, যেন সে তাঁর পরিশ্রমের যথাযথ ফল পায়।’

‎‎ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা থেকে আসা এক অভিভাবক বলেন, ‘দুদিন আগে আমরা ঢাকায় এসেছি। আমার ছেলেটা পরীক্ষা দিতে ভেতরে ঢুকেছে। খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে কপালে কী আছে, তা জানি না।’

জবিতে প্রতি আসনের জন্য লড়ছেন প্রায় ৪০ জন ভর্তিচ্ছু। ছবি: আজকের পত্রিকা
জবিতে প্রতি আসনের জন্য লড়ছেন প্রায় ৪০ জন ভর্তিচ্ছু। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎‎এর আগে ১৩ ডিসেম্বর ‘ই’ ইউনিটের (চারুকলা অনুষদ) এবং ২৬ ডিসেম্বর ‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

‎উল্লেখ্য, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ৯ জানুয়ারি বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এবং কলা ও আইন অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ৩০ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রথম দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

নির্বাচনী সমঝোতা: এখনো হিসাব মেলাচ্ছে জামায়াত ও এনসিপি

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে— শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় ঘন কুয়াশা : ৮ ফ্লাইট নামল চট্টগ্রাম, কলকাতা ও ব্যাংককে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৭
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি

ঘন কুয়াশার কারণে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ সম্ভব না হওয়ায় আটটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চট্টগ্রাম, ভারতের কলকাতা এবং থাইল্যান্ডের ব্যাংকক বিমানবন্দরে পাঠানো হয়েছে। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে এই ফ্লাইট ডাইভারশন হয় বলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, কুয়াশার কারণে রানওয়েতে দৃশ্যমানতা স্বাভাবিক মাত্রার নিচে নেমে আসায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ডাইভার্ট করা ফ্লাইটগুলোর মধ্যে তিনটি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে, চারটি ভারতের কলকাতা বিমানবন্দরে এবং একটি ফ্লাইট ব্যাংকক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সকল ফ্লাইট অপারেশন পুনরায় স্বাভাবিকভাবে শুরু হবে। যাত্রীদের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ডাইভার্ট ও বিলম্বিত ফ্লাইটের যাত্রীদের জন্য সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনগুলো প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার ও হোটেল সুবিধা প্রদান করছে। যাত্রীদের ধৈর্য ও সহযোগিতার জন্য বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।

এদিকে কুয়াশার কারণে ফ্লাইট ডাইভারশনের ঘটনায় কিছু যাত্রীকে ভোগান্তিতে পড়তে হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আবহাওয়া উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক ফ্লাইট সূচি ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রথম দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

নির্বাচনী সমঝোতা: এখনো হিসাব মেলাচ্ছে জামায়াত ও এনসিপি

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে— শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টানা দ্বিতীয় দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যশোরে, ঠান্ডা বাতাসে দুর্বিষহ জীবন

­যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৪৫
যশোর শহরের লালদীঘিপাড়ে শ্রম বিক্রির জন্য জড়ো হয়েছেন শ্রমজীবীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোর শহরের লালদীঘিপাড়ে শ্রম বিক্রির জন্য জড়ো হয়েছেন শ্রমজীবীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দ্বিতীয় দিনের মতো দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) জেলায় তাপমাত্রা নেমে এসেছে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এটি দেশে আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। গতকাল শুক্রবারও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। টানা দুই দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রার সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় কাঁপন ধরেছে হাড়ে। এই এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। শীত প্রভাব বিস্তার করেছে পশুপাখি ও কৃষিতেও।

আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাসে জানিয়েছে যশোর, চুয়াডাঙ্গা, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ এবং নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং কোথাও কোথাও তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে দেশের অনেক জায়গায় ঠান্ডার অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে।

এদিকে তীব্র শীতের কারণে মানুষের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। মোটা জ্যাকেট, মাফলারে ঢেকে জবুথবু হয়ে পথ চলতে দেখা যায় তাদের। হাড়কাঁপানো শীতে ঘর থেকে বের হননি অনেকে। তবে ঘর থেকে বের হয়েও কাজ মিলছে না শ্রমজীবী মানুষের।

যশোর শহরের লালদীঘিপাড়ে প্রতিদিন ৩০০-৪০০ মানুষ শ্রম বিক্রির জন্য জড়ো হয়ে থাকেন। তীব্র শীতে সেই সংখ্যা অর্ধেকে এসে দাঁড়িয়েছে। তারপরও কাজ না পাওয়ায় অনেকেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কিছু মানুষ অনেক বেলা অবধি অপেক্ষা করছেন কাজের আশায়।

বাহাদুরপুর এলাকার সুজন মিয়া বলেন, ‘শীতে এক দিন কাজ পাই তো, তিন দিন পাই না। এক সপ্তাহ ধরে কাজ হচ্ছে না। শীতের মধ্যে প্রতিদিন ভোরবেলায় এসে বসে থেকেও কোনো লাভ হচ্ছে না।’

শহরের বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক এলাকার নির্মাণশ্রমিক মো. মিনহাজ বলেন, ‘শীতে বাইরে দাঁড়াতে পারছি না। অনেক কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু উপায় নেই। কাজের সন্ধানে বের হয়েছি। ঠিকমতো কাজও পাচ্ছি না।’

মোটা জ্যাকেট, মাফলারে ঢেকে জবুথবু হয়ে পথ চলছে মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোটা জ্যাকেট, মাফলারে ঢেকে জবুথবু হয়ে পথ চলছে মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

শহরের শংকরপুর এলাকার শ্রমজীবী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিল্ডিংয়ের রঙের কাজ করি। কাজের সন্ধানে এসেছি। এখানে বসে আছি। এখনো কাজ পাইনি। শীতের ভেতরে অনেক কষ্ট হচ্ছে। পেটের দায়ে ঘরের বাইরে বের হয়েছি। কাজ পাব কি না জানি না।’

শহরের রায়পাড়া এলাকার রিকশাচালক হানেফ আলী বলেন, ‘শীতে ঘর থেকে মানুষ বের হচ্ছে খুবই কম। এ জন্য যাত্রী পাচ্ছি না। আয়রোজগারও কমেছে। খুব কষ্টে দিন পার করছি।’

এদিকে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির ফলে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পাচ্ছে। জ্বর, হাঁচি, কাশিসহ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। শীতকালীন রোগবালাই থেকে রক্ষা পেতে গরম পানি পান করাসহ গরম কাপড় ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

প্রসঙ্গত, আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, তাপমাত্রা ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নেমে এলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নেমে এলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ, ৪ দশমিক ১ ডিগ্রি থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নেমে এলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ এবং তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রথম দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

নির্বাচনী সমঝোতা: এখনো হিসাব মেলাচ্ছে জামায়াত ও এনসিপি

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে— শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত