Ajker Patrika

মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধিদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

হৃদয় হোসেন মুন্না, বেতাগী (বরগুনা)
আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২৪, ২৩: ৪৪
মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধিদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

বরগুনার বেতাগীতে কিশোর-কিশোরী ক্লাবের কো-অর্ডিনেটরদের (ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য) সম্মানী ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আফরোজ সুলতানার বিরুদ্ধে। তিন বছরের অধিক সময় দায়িত্ব পালন করলেও প্রাপ্য সম্মানী না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ সংরক্ষিত মহিলা সদস্যরা। তবে এ খবর জানেই না স্থানীয় প্রশাসন। বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে বরগুনার বেতাগীতে ৭টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভায় একটি করে কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে শিশুদের আবৃত্তি ও সংগীত শিক্ষা, কারাতে প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে। 

প্রতিটি ক্লাবের সদস্য ৩০ জন কিশোর-কিশোরী। ক্লাবগুলোর কার্যক্রম তদারকির জন্য প্রতিটি ইউনিয়নের একজন করে সংরক্ষিত ইউপি সদস্যদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদের জন্য প্রতি মাসে দুই হাজার টাকা সম্মানী ভাতা বরাদ্দ দেয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। ২০২০ সালে শুরু হওয়া ৫ বছরের এ প্রকল্প শেষ হবে চলতি বছরের ডিসেম্বরে। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রকল্পের শুরুতেই ২০২০-২১ অর্থবছরে বেতাগী উপজেলার কিশোর কিশোরী ক্লাবের কো-অর্ডিনেটরদের সম্মানীর জন্য বরাদ্দকৃত ৮০ হাজার টাকা, ক্লাবের জন্য সাংস্কৃতি উপকরণ ক্রয় বাবদ ১ লাখ ৫২ হাজার এবং নাস্তা বাবদ ৩ লাখ ৯ হাজার ৬০০ টাকা আত্মসাৎ করেন তৎকালীন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহিনুর বেগম। 

মন্ত্রণালয়য়ের নিরীক্ষায় তখন এ নিয়ে অডিট আপত্তি দেওয়া হয়। এরপর ২০২১-২২ অর্থ বছরে কো-অর্ডিনেটরদের ১১ মাসের (আগস্ট-জুন) সম্মানী বাবদ বেতাগী উপজেলায় ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা সংরক্ষিত ইউপি সদস্যদের মাঝে বিতরণের জন্য দেওয়া হয়। 

তবে সেই টাকা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন ক্লাবের দায়িত্ব থাকা কো-অর্ডিনেটররা। সবশেষ ২০২২-২৩ অর্থ বছরের কো-অর্ডিনেটরদের সম্মানীর টাকা স্থগিত রেখে মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ৬ মাসের (জানুয়ারি থেকে জুন) সম্মানী বাবদ ৯৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়ে তা কো-অর্ডিনেটরদের প্রদানের নির্দেশ দিয়ে চিঠি দেয়। 

তবে কয়েকজন কো-অর্ডিনেটরকে সম্মানী বাবদ শুধু ২ হাজার টাকা প্রদান করা হলেও অন্যদের কোনো টাকা দেননি বর্তমান উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আফরোজ সুলতানা। 

কাজিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য ও কিশোর কিশোরী ক্লাবের কো-অর্ডিনেটর রিনা গাজী আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমি তিন বছরের বেশি সময় কিশোর-কিশোরী ক্লাবের দায়িত্বে। তবে আমি এযাবৎ কোনো টাকা পাইনি। আমি অফিসে গিয়ে আইডি কার্ড, মোবাইল নম্বর দিয়ে এসেছি। তারা আমার স্বাক্ষরও নিয়েছে। তবে প্রতিবারই অফিসে টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন বরাদ্দ এলে টাকা পাবেন। 

হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য শিউলি ডাকুয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমি ২০২১ সাল থেকে কিশোর-কিশোরী ক্লাবের দায়িত্বে আছি। গত বছর তারা আমার আইডি কার্ড ও মোবাইল নম্বর নেয়, তবে কোনো টাকা দেয়নি। এবার আমি অফিসে গিয়ে আবার স্বাক্ষর দিয়ে আসলে কিছুদিন পর তারা আমার স্বামীকে ডেকে ২ হাজার টাকা বুঝিয়ে দেয়। তবে আমার নামে কত টাকা বিতরণ দেখানো হয়েছে এটা আমি জানি না। 

বিবিচিনি ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য শ্যামলী বেগম বলেন, কোনো টাকা পাওয়া তো পরের কথা, ক্লাবের কো-অর্ডিনেটরদের জন্য যে সম্মানী ভাতা আছে তাই আমি জানতাম না। অফিসের এক লোকের মাধ্যমে ভাতার কথা জানতে পেরেছি। তা ছাড়া আমার ইউনিয়নের কিশোর কিশোরী ক্লাবের কার্যক্রম যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয় না। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিশোর কিশোরী ক্লাবের এক শিক্ষক বলেন, আমার ক্লাবের কো-অর্ডিনেটরের সম্মানী ভাতা থেকে তাকে বঞ্ছিত করা হয়েছে। আমাদের মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিজের ইচ্ছা মতো সব কাজ করেন। আগে ক্লাবের ছাত্র ছাত্রীদের জন্য নাস্তা আমার বন্টন করতাম। কিন্তু এখন নাস্তা নিজে কিনে দেন। একজন শিক্ষার্থীর নাস্তার জন্য ৩০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও তিনি গড়ে ২০ টাকার নাস্তা দেন। প্রতি ক্লাবে ৩০ জন ছাত্র ছাত্রীকে নাস্তা দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি আমাদের ২০ থেকে ২২ জনের নাস্তা দেন। তা ছাড়া আমাদের বেতন দেওয়ার সময় তিনি অফিস খরচের কথা বলে টাকা কেটে রাখেন। 

সার্বিক অভিযোগের বিষয়ে জানতে বেতাগী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে আফরোজ সুলতানাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে আপনারা মহিলা সদস্যদের নিয়ে অফিসে আসেন। তখন এই বিষয়ে কথা বলবো। আমি এখন ব্যস্ত পরে কথা বলবো।’ 

এ ব্যাপারে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) মো. ফারুক আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত নই। কিশোর কিশোরী ক্লাব প্রকল্পের কোনো টাকা আত্মসাতের সুযোগ নেই। এরকম কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত