এস এস শোহান, বাগেরহাট

মৎস্য ও বন্য প্রাণীর প্রজনন, বংশ বৃদ্ধি ও বিচরণ কার্যক্রমের সুরক্ষার জন্য ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিন মাস বনজীবীদের সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চলছে। কিন্তু এই সময়ে থেমে নেই হরিণশিকারিরা। তাঁরা নানা কৌশলে বন থেকে হরিণ শিকার করে লোকালয়ে এনে মাংস বিক্রি করছেন চড়া দামে। চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম্যে হুমকির মুখে সুন্দরবনের হরিণ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বাগেরহাটের শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা ও রামপাল, খুলনার দাকোপ এবং বরগুনার পাথরঘাটায় অনেকগুলো শিকারি চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। শিকারিরা বনরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিতে জেলে সেজে খণ্ড খণ্ডভাবে সরঞ্জাম বনের ভেতর নিয়ে পরে একত্র করে ফাঁদ তৈরি করে। বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মী ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় চলে এই শিকার।
শরণখোলা, মোংলা ও মোরেলগঞ্জের বাসিন্দারা জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে তাঁরা প্রকাশ্যে হরিণ শিকার করতেন। পরে বন বিভাগের নানা নিষেধাজ্ঞা ও মামলা দেওয়ায় এসব এলাকার সাধারণ মানুষ শিকার বন্ধ করলেও চোরা শিকারি এবং অতি মুনাফালোভীরা শিকার অব্যাহত রাখে। সাম্প্রতিক সময়ে বরগুনার চরদোয়ানি, জ্ঞানপাড়া ও খুলনার কয়রা এলাকার মানুষ বেশি জড়াচ্ছে এই অপরাধে। তাদের শিকার করা হরিণের মাংস বিক্রি হয় খুলনা, পিরোজপুর ও বাগেরহাট শহরের টাকাওয়ালা মানুষের কাছে।
শরণখোলার বৃদ্ধ শামসুর রহমান বলেন, ‘একটা সময় মাসে দু-চারটা হরিণ আমাদের গ্রামে চলে আসত। অনেকে ধরে জবাই করে খেত। কিন্তু অন্তত ১০ বছর হলো, আমাদের এলাকার মানুষ হরিণ শিকারের কথা চিন্তাও করে না। কারণ, একবার মামলা হলে ছাড়াতে অনেক টাকা লাগে। তবে বর্তমানে বরগুনা ও কয়রার লোকজন হরিণ শিকার করে নিয়ে যায়। ওরা নদীপথে এসে নদীপথেই নিয়ে যায়। বনরক্ষীদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে।’
সুন্দরবনের পাশের বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, বিশেষ অনুষ্ঠান, আপ্যায়ন, উপঢৌকন ও ঘুষ হিসেবে হরিণের মাংস ব্যবহৃত হয়। বিশেষ ব্যক্তির মাধ্যমে ফোনে অর্ডার করলেই মেলে মাংস। প্রতি কেজি বিক্রি হয় ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। বিভিন্ন পক্ষকে হাত করে চলে এই ব্যবসা। অনেক ক্ষেত্রে চামড়াসহ মাংস কেটে গ্রাহকের কাছে পাঠানো হয় প্রমাণ হিসেবে। হরিণের মাংস বিক্রির জন্য গড়ে উঠেছে অবৈধ নেটওয়ার্ক। অপরিচিত বা সন্দেহজনক কারও কাছে স্বীকার না করলেও সিন্ডিকেট সদস্যদের মাধ্যমে সহজে মেলে এটি।
এ নিয়ে কথা হলে সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, মাংসের চাহিদা বন্ধ না হলে সুন্দরবনের হরিণ শিকার বন্ধ হবে না। তিনি জানান, সুন্দরবনের বাঘের প্রধান খাদ্য হরিণ। সুন্দরবন টিকিয়ে রাখতে হলে হরিণ রক্ষা খুবই জরুরি। তাই হরিণ শিকার বন্ধে আইনের প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ভোক্তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
ফাঁদ ও বিষ: হরিণ শিকারের জন্য মালা, ছিটকা ও হাঁটা নামের তিন ধরনের ফাঁদ ব্যবহার করে শিকারিরা। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় মালা। এই ফাঁদ বনের মধ্যে গাছের সঙ্গে নির্দিষ্ট উচ্চতায় মালার মতো করে পাতা থাকে। হরিণ হেঁটে যাওয়ার সময় ফাঁদে মাথা প্রবেশ করালেই আটকে পড়ে। আর ছিটকা হচ্ছে লম্বা ও চিকন গাছের মাথা নিচু করে বেঁধে রাখা একটি ফাঁদ। যখন হরিণ ওই গাছের পাতা খাওয়া শুরু করে এবং নাড়া লাগে, তখন ফাঁদ সক্রিয় হয়ে হরিণের গলায় ফাঁস পড়ে যায়। হাঁটা ফাঁদ এমনভাবে পাতা থাকে যে হরিণ হেঁটে গেলেই আটকে পড়ে যায়।
ফাঁদ তৈরিতে আগে শুধু নাইলনের রশি ব্যবহার করলেও বর্তমানে সিলভারের তৈরি চিকন তার ব্যবহার করা হয়; যাতে সহজে হরিণ বা বনরক্ষীদের চোখে না পড়ে। এ ছাড়া বনের মধ্যে ছোট ছোট গর্তে জমে থাকা পানিতে বিষ দিয়ে রাখেন শিকারিরা। ওই পানি খেলে কিছুক্ষণের মধ্যে হরিণের শরীর অবশ হয়ে যায়, তখন সেগুলোকে ধরে জবাই করে শিকারিরা।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মে-জুন মাসে চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ৮৬টি অভিযান পরিচালনা করেন বনকর্মীরা। এসব অভিযান থেকে সাড়ে ৩ হাজার ফাঁদ জব্দ করা হয়। সেই সঙ্গে শিকারের কাজে ব্যবহৃত ৫৩টি ট্রলার ও নৌকা জব্দ হয়। এই সময়ে ৩৪ জনকে আটক এবং ৭৯ জনকে আসামি করে ৫৪টি মামলা করা হয়। পাশাপাশি ৮৪ কেজি হরিণের মাংস, ছয়টি হরিণের মাথা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বন বিভাগ।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত ১৫০ জনের তালিকা তৈরি করেছে। তালিকায় নাম আসা ব্যক্তিদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে বন বিভাগ।
প্যারালাল লাইন সার্চিং: সুন্দরবনে প্রাণী ও বনজ সম্পদ রক্ষায় সাধারণভাবে নদী-খালে নৌযানের মাধ্যমে টহল কার্যক্রম চলে বেশি। তবে এবার প্রথম বনে চোরা শিকারি ও অপরাধীদের ধরতে প্যারালাল লাইন সার্চিং (একসঙ্গে অনেক বনরক্ষীর সমতলে হেঁটে হেঁটে তল্লাশি) শুরু করেন বনরক্ষীরা। এতে সফলতাও মেলে। বনের মধ্যে নির্দিষ্ট উচ্চতায় শিকারিদের পেতে রাখা ও মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা ফাঁদ জব্দ করেছেন বনরক্ষীরা। এ ছাড়া সম্প্রতি বনের মধ্যে অপরাধীদের শনাক্তের জন্য ড্রোন ব্যবহার শুরু হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে সুন্দরবনে চোরা শিকারিরা হরিণ শিকার করে আসছে। সম্প্রতি আমরা প্যারালাল লাইন সার্চিং পদ্ধতিতে টহল জোরদার করায় শিকারিদের দৌরাত্ম্য কিছুটা কমেছে। দীর্ঘদিনের পেতে রাখা ফাঁদও পেয়েছি। বনের মধ্যে টহল বাড়ানো হচ্ছে। অপরাধমুক্ত সুন্দরবন গড়তে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। যারা হরিণের মাংস খায়, তাদেরও মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। তাদের সামাজিকভাবে বর্জন করা দরকার।’
এই কর্মকর্তা আরও জানান, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগে জনবলের সংকট রয়েছে। প্রায় ১ হাজার ৫০০ একর বনের জন্য আছেন মাত্র একজন বনকর্মী। তাঁর অধীনে ১০০টি শূন্য পদ রয়েছে। এই পদগুলোতে জনবল নিয়োগ হলে কাজের তৎপরতা আরও বাড়বে। শিকার বন্ধ করতে পারলে হরিণের সংখ্যা দ্রুত বাড়বে। হরিণ বাঘের প্রধান খাবার। বনের পরিবেশ এবং হরিণের সংখ্যা বাড়াতে পারলে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যাও বাড়বে নিশ্চয়। বন বিভাগ সেই লক্ষ্যে কাজ করছে।

মৎস্য ও বন্য প্রাণীর প্রজনন, বংশ বৃদ্ধি ও বিচরণ কার্যক্রমের সুরক্ষার জন্য ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিন মাস বনজীবীদের সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চলছে। কিন্তু এই সময়ে থেমে নেই হরিণশিকারিরা। তাঁরা নানা কৌশলে বন থেকে হরিণ শিকার করে লোকালয়ে এনে মাংস বিক্রি করছেন চড়া দামে। চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম্যে হুমকির মুখে সুন্দরবনের হরিণ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বাগেরহাটের শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা ও রামপাল, খুলনার দাকোপ এবং বরগুনার পাথরঘাটায় অনেকগুলো শিকারি চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। শিকারিরা বনরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিতে জেলে সেজে খণ্ড খণ্ডভাবে সরঞ্জাম বনের ভেতর নিয়ে পরে একত্র করে ফাঁদ তৈরি করে। বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মী ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় চলে এই শিকার।
শরণখোলা, মোংলা ও মোরেলগঞ্জের বাসিন্দারা জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে তাঁরা প্রকাশ্যে হরিণ শিকার করতেন। পরে বন বিভাগের নানা নিষেধাজ্ঞা ও মামলা দেওয়ায় এসব এলাকার সাধারণ মানুষ শিকার বন্ধ করলেও চোরা শিকারি এবং অতি মুনাফালোভীরা শিকার অব্যাহত রাখে। সাম্প্রতিক সময়ে বরগুনার চরদোয়ানি, জ্ঞানপাড়া ও খুলনার কয়রা এলাকার মানুষ বেশি জড়াচ্ছে এই অপরাধে। তাদের শিকার করা হরিণের মাংস বিক্রি হয় খুলনা, পিরোজপুর ও বাগেরহাট শহরের টাকাওয়ালা মানুষের কাছে।
শরণখোলার বৃদ্ধ শামসুর রহমান বলেন, ‘একটা সময় মাসে দু-চারটা হরিণ আমাদের গ্রামে চলে আসত। অনেকে ধরে জবাই করে খেত। কিন্তু অন্তত ১০ বছর হলো, আমাদের এলাকার মানুষ হরিণ শিকারের কথা চিন্তাও করে না। কারণ, একবার মামলা হলে ছাড়াতে অনেক টাকা লাগে। তবে বর্তমানে বরগুনা ও কয়রার লোকজন হরিণ শিকার করে নিয়ে যায়। ওরা নদীপথে এসে নদীপথেই নিয়ে যায়। বনরক্ষীদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে।’
সুন্দরবনের পাশের বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, বিশেষ অনুষ্ঠান, আপ্যায়ন, উপঢৌকন ও ঘুষ হিসেবে হরিণের মাংস ব্যবহৃত হয়। বিশেষ ব্যক্তির মাধ্যমে ফোনে অর্ডার করলেই মেলে মাংস। প্রতি কেজি বিক্রি হয় ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। বিভিন্ন পক্ষকে হাত করে চলে এই ব্যবসা। অনেক ক্ষেত্রে চামড়াসহ মাংস কেটে গ্রাহকের কাছে পাঠানো হয় প্রমাণ হিসেবে। হরিণের মাংস বিক্রির জন্য গড়ে উঠেছে অবৈধ নেটওয়ার্ক। অপরিচিত বা সন্দেহজনক কারও কাছে স্বীকার না করলেও সিন্ডিকেট সদস্যদের মাধ্যমে সহজে মেলে এটি।
এ নিয়ে কথা হলে সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, মাংসের চাহিদা বন্ধ না হলে সুন্দরবনের হরিণ শিকার বন্ধ হবে না। তিনি জানান, সুন্দরবনের বাঘের প্রধান খাদ্য হরিণ। সুন্দরবন টিকিয়ে রাখতে হলে হরিণ রক্ষা খুবই জরুরি। তাই হরিণ শিকার বন্ধে আইনের প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ভোক্তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
ফাঁদ ও বিষ: হরিণ শিকারের জন্য মালা, ছিটকা ও হাঁটা নামের তিন ধরনের ফাঁদ ব্যবহার করে শিকারিরা। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় মালা। এই ফাঁদ বনের মধ্যে গাছের সঙ্গে নির্দিষ্ট উচ্চতায় মালার মতো করে পাতা থাকে। হরিণ হেঁটে যাওয়ার সময় ফাঁদে মাথা প্রবেশ করালেই আটকে পড়ে। আর ছিটকা হচ্ছে লম্বা ও চিকন গাছের মাথা নিচু করে বেঁধে রাখা একটি ফাঁদ। যখন হরিণ ওই গাছের পাতা খাওয়া শুরু করে এবং নাড়া লাগে, তখন ফাঁদ সক্রিয় হয়ে হরিণের গলায় ফাঁস পড়ে যায়। হাঁটা ফাঁদ এমনভাবে পাতা থাকে যে হরিণ হেঁটে গেলেই আটকে পড়ে যায়।
ফাঁদ তৈরিতে আগে শুধু নাইলনের রশি ব্যবহার করলেও বর্তমানে সিলভারের তৈরি চিকন তার ব্যবহার করা হয়; যাতে সহজে হরিণ বা বনরক্ষীদের চোখে না পড়ে। এ ছাড়া বনের মধ্যে ছোট ছোট গর্তে জমে থাকা পানিতে বিষ দিয়ে রাখেন শিকারিরা। ওই পানি খেলে কিছুক্ষণের মধ্যে হরিণের শরীর অবশ হয়ে যায়, তখন সেগুলোকে ধরে জবাই করে শিকারিরা।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মে-জুন মাসে চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ৮৬টি অভিযান পরিচালনা করেন বনকর্মীরা। এসব অভিযান থেকে সাড়ে ৩ হাজার ফাঁদ জব্দ করা হয়। সেই সঙ্গে শিকারের কাজে ব্যবহৃত ৫৩টি ট্রলার ও নৌকা জব্দ হয়। এই সময়ে ৩৪ জনকে আটক এবং ৭৯ জনকে আসামি করে ৫৪টি মামলা করা হয়। পাশাপাশি ৮৪ কেজি হরিণের মাংস, ছয়টি হরিণের মাথা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বন বিভাগ।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত ১৫০ জনের তালিকা তৈরি করেছে। তালিকায় নাম আসা ব্যক্তিদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে বন বিভাগ।
প্যারালাল লাইন সার্চিং: সুন্দরবনে প্রাণী ও বনজ সম্পদ রক্ষায় সাধারণভাবে নদী-খালে নৌযানের মাধ্যমে টহল কার্যক্রম চলে বেশি। তবে এবার প্রথম বনে চোরা শিকারি ও অপরাধীদের ধরতে প্যারালাল লাইন সার্চিং (একসঙ্গে অনেক বনরক্ষীর সমতলে হেঁটে হেঁটে তল্লাশি) শুরু করেন বনরক্ষীরা। এতে সফলতাও মেলে। বনের মধ্যে নির্দিষ্ট উচ্চতায় শিকারিদের পেতে রাখা ও মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা ফাঁদ জব্দ করেছেন বনরক্ষীরা। এ ছাড়া সম্প্রতি বনের মধ্যে অপরাধীদের শনাক্তের জন্য ড্রোন ব্যবহার শুরু হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে সুন্দরবনে চোরা শিকারিরা হরিণ শিকার করে আসছে। সম্প্রতি আমরা প্যারালাল লাইন সার্চিং পদ্ধতিতে টহল জোরদার করায় শিকারিদের দৌরাত্ম্য কিছুটা কমেছে। দীর্ঘদিনের পেতে রাখা ফাঁদও পেয়েছি। বনের মধ্যে টহল বাড়ানো হচ্ছে। অপরাধমুক্ত সুন্দরবন গড়তে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। যারা হরিণের মাংস খায়, তাদেরও মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। তাদের সামাজিকভাবে বর্জন করা দরকার।’
এই কর্মকর্তা আরও জানান, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগে জনবলের সংকট রয়েছে। প্রায় ১ হাজার ৫০০ একর বনের জন্য আছেন মাত্র একজন বনকর্মী। তাঁর অধীনে ১০০টি শূন্য পদ রয়েছে। এই পদগুলোতে জনবল নিয়োগ হলে কাজের তৎপরতা আরও বাড়বে। শিকার বন্ধ করতে পারলে হরিণের সংখ্যা দ্রুত বাড়বে। হরিণ বাঘের প্রধান খাবার। বনের পরিবেশ এবং হরিণের সংখ্যা বাড়াতে পারলে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যাও বাড়বে নিশ্চয়। বন বিভাগ সেই লক্ষ্যে কাজ করছে।
এস এস শোহান, বাগেরহাট

মৎস্য ও বন্য প্রাণীর প্রজনন, বংশ বৃদ্ধি ও বিচরণ কার্যক্রমের সুরক্ষার জন্য ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিন মাস বনজীবীদের সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চলছে। কিন্তু এই সময়ে থেমে নেই হরিণশিকারিরা। তাঁরা নানা কৌশলে বন থেকে হরিণ শিকার করে লোকালয়ে এনে মাংস বিক্রি করছেন চড়া দামে। চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম্যে হুমকির মুখে সুন্দরবনের হরিণ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বাগেরহাটের শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা ও রামপাল, খুলনার দাকোপ এবং বরগুনার পাথরঘাটায় অনেকগুলো শিকারি চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। শিকারিরা বনরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিতে জেলে সেজে খণ্ড খণ্ডভাবে সরঞ্জাম বনের ভেতর নিয়ে পরে একত্র করে ফাঁদ তৈরি করে। বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মী ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় চলে এই শিকার।
শরণখোলা, মোংলা ও মোরেলগঞ্জের বাসিন্দারা জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে তাঁরা প্রকাশ্যে হরিণ শিকার করতেন। পরে বন বিভাগের নানা নিষেধাজ্ঞা ও মামলা দেওয়ায় এসব এলাকার সাধারণ মানুষ শিকার বন্ধ করলেও চোরা শিকারি এবং অতি মুনাফালোভীরা শিকার অব্যাহত রাখে। সাম্প্রতিক সময়ে বরগুনার চরদোয়ানি, জ্ঞানপাড়া ও খুলনার কয়রা এলাকার মানুষ বেশি জড়াচ্ছে এই অপরাধে। তাদের শিকার করা হরিণের মাংস বিক্রি হয় খুলনা, পিরোজপুর ও বাগেরহাট শহরের টাকাওয়ালা মানুষের কাছে।
শরণখোলার বৃদ্ধ শামসুর রহমান বলেন, ‘একটা সময় মাসে দু-চারটা হরিণ আমাদের গ্রামে চলে আসত। অনেকে ধরে জবাই করে খেত। কিন্তু অন্তত ১০ বছর হলো, আমাদের এলাকার মানুষ হরিণ শিকারের কথা চিন্তাও করে না। কারণ, একবার মামলা হলে ছাড়াতে অনেক টাকা লাগে। তবে বর্তমানে বরগুনা ও কয়রার লোকজন হরিণ শিকার করে নিয়ে যায়। ওরা নদীপথে এসে নদীপথেই নিয়ে যায়। বনরক্ষীদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে।’
সুন্দরবনের পাশের বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, বিশেষ অনুষ্ঠান, আপ্যায়ন, উপঢৌকন ও ঘুষ হিসেবে হরিণের মাংস ব্যবহৃত হয়। বিশেষ ব্যক্তির মাধ্যমে ফোনে অর্ডার করলেই মেলে মাংস। প্রতি কেজি বিক্রি হয় ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। বিভিন্ন পক্ষকে হাত করে চলে এই ব্যবসা। অনেক ক্ষেত্রে চামড়াসহ মাংস কেটে গ্রাহকের কাছে পাঠানো হয় প্রমাণ হিসেবে। হরিণের মাংস বিক্রির জন্য গড়ে উঠেছে অবৈধ নেটওয়ার্ক। অপরিচিত বা সন্দেহজনক কারও কাছে স্বীকার না করলেও সিন্ডিকেট সদস্যদের মাধ্যমে সহজে মেলে এটি।
এ নিয়ে কথা হলে সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, মাংসের চাহিদা বন্ধ না হলে সুন্দরবনের হরিণ শিকার বন্ধ হবে না। তিনি জানান, সুন্দরবনের বাঘের প্রধান খাদ্য হরিণ। সুন্দরবন টিকিয়ে রাখতে হলে হরিণ রক্ষা খুবই জরুরি। তাই হরিণ শিকার বন্ধে আইনের প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ভোক্তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
ফাঁদ ও বিষ: হরিণ শিকারের জন্য মালা, ছিটকা ও হাঁটা নামের তিন ধরনের ফাঁদ ব্যবহার করে শিকারিরা। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় মালা। এই ফাঁদ বনের মধ্যে গাছের সঙ্গে নির্দিষ্ট উচ্চতায় মালার মতো করে পাতা থাকে। হরিণ হেঁটে যাওয়ার সময় ফাঁদে মাথা প্রবেশ করালেই আটকে পড়ে। আর ছিটকা হচ্ছে লম্বা ও চিকন গাছের মাথা নিচু করে বেঁধে রাখা একটি ফাঁদ। যখন হরিণ ওই গাছের পাতা খাওয়া শুরু করে এবং নাড়া লাগে, তখন ফাঁদ সক্রিয় হয়ে হরিণের গলায় ফাঁস পড়ে যায়। হাঁটা ফাঁদ এমনভাবে পাতা থাকে যে হরিণ হেঁটে গেলেই আটকে পড়ে যায়।
ফাঁদ তৈরিতে আগে শুধু নাইলনের রশি ব্যবহার করলেও বর্তমানে সিলভারের তৈরি চিকন তার ব্যবহার করা হয়; যাতে সহজে হরিণ বা বনরক্ষীদের চোখে না পড়ে। এ ছাড়া বনের মধ্যে ছোট ছোট গর্তে জমে থাকা পানিতে বিষ দিয়ে রাখেন শিকারিরা। ওই পানি খেলে কিছুক্ষণের মধ্যে হরিণের শরীর অবশ হয়ে যায়, তখন সেগুলোকে ধরে জবাই করে শিকারিরা।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মে-জুন মাসে চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ৮৬টি অভিযান পরিচালনা করেন বনকর্মীরা। এসব অভিযান থেকে সাড়ে ৩ হাজার ফাঁদ জব্দ করা হয়। সেই সঙ্গে শিকারের কাজে ব্যবহৃত ৫৩টি ট্রলার ও নৌকা জব্দ হয়। এই সময়ে ৩৪ জনকে আটক এবং ৭৯ জনকে আসামি করে ৫৪টি মামলা করা হয়। পাশাপাশি ৮৪ কেজি হরিণের মাংস, ছয়টি হরিণের মাথা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বন বিভাগ।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত ১৫০ জনের তালিকা তৈরি করেছে। তালিকায় নাম আসা ব্যক্তিদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে বন বিভাগ।
প্যারালাল লাইন সার্চিং: সুন্দরবনে প্রাণী ও বনজ সম্পদ রক্ষায় সাধারণভাবে নদী-খালে নৌযানের মাধ্যমে টহল কার্যক্রম চলে বেশি। তবে এবার প্রথম বনে চোরা শিকারি ও অপরাধীদের ধরতে প্যারালাল লাইন সার্চিং (একসঙ্গে অনেক বনরক্ষীর সমতলে হেঁটে হেঁটে তল্লাশি) শুরু করেন বনরক্ষীরা। এতে সফলতাও মেলে। বনের মধ্যে নির্দিষ্ট উচ্চতায় শিকারিদের পেতে রাখা ও মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা ফাঁদ জব্দ করেছেন বনরক্ষীরা। এ ছাড়া সম্প্রতি বনের মধ্যে অপরাধীদের শনাক্তের জন্য ড্রোন ব্যবহার শুরু হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে সুন্দরবনে চোরা শিকারিরা হরিণ শিকার করে আসছে। সম্প্রতি আমরা প্যারালাল লাইন সার্চিং পদ্ধতিতে টহল জোরদার করায় শিকারিদের দৌরাত্ম্য কিছুটা কমেছে। দীর্ঘদিনের পেতে রাখা ফাঁদও পেয়েছি। বনের মধ্যে টহল বাড়ানো হচ্ছে। অপরাধমুক্ত সুন্দরবন গড়তে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। যারা হরিণের মাংস খায়, তাদেরও মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। তাদের সামাজিকভাবে বর্জন করা দরকার।’
এই কর্মকর্তা আরও জানান, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগে জনবলের সংকট রয়েছে। প্রায় ১ হাজার ৫০০ একর বনের জন্য আছেন মাত্র একজন বনকর্মী। তাঁর অধীনে ১০০টি শূন্য পদ রয়েছে। এই পদগুলোতে জনবল নিয়োগ হলে কাজের তৎপরতা আরও বাড়বে। শিকার বন্ধ করতে পারলে হরিণের সংখ্যা দ্রুত বাড়বে। হরিণ বাঘের প্রধান খাবার। বনের পরিবেশ এবং হরিণের সংখ্যা বাড়াতে পারলে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যাও বাড়বে নিশ্চয়। বন বিভাগ সেই লক্ষ্যে কাজ করছে।

মৎস্য ও বন্য প্রাণীর প্রজনন, বংশ বৃদ্ধি ও বিচরণ কার্যক্রমের সুরক্ষার জন্য ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিন মাস বনজীবীদের সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চলছে। কিন্তু এই সময়ে থেমে নেই হরিণশিকারিরা। তাঁরা নানা কৌশলে বন থেকে হরিণ শিকার করে লোকালয়ে এনে মাংস বিক্রি করছেন চড়া দামে। চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম্যে হুমকির মুখে সুন্দরবনের হরিণ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বাগেরহাটের শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা ও রামপাল, খুলনার দাকোপ এবং বরগুনার পাথরঘাটায় অনেকগুলো শিকারি চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। শিকারিরা বনরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিতে জেলে সেজে খণ্ড খণ্ডভাবে সরঞ্জাম বনের ভেতর নিয়ে পরে একত্র করে ফাঁদ তৈরি করে। বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মী ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় চলে এই শিকার।
শরণখোলা, মোংলা ও মোরেলগঞ্জের বাসিন্দারা জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে তাঁরা প্রকাশ্যে হরিণ শিকার করতেন। পরে বন বিভাগের নানা নিষেধাজ্ঞা ও মামলা দেওয়ায় এসব এলাকার সাধারণ মানুষ শিকার বন্ধ করলেও চোরা শিকারি এবং অতি মুনাফালোভীরা শিকার অব্যাহত রাখে। সাম্প্রতিক সময়ে বরগুনার চরদোয়ানি, জ্ঞানপাড়া ও খুলনার কয়রা এলাকার মানুষ বেশি জড়াচ্ছে এই অপরাধে। তাদের শিকার করা হরিণের মাংস বিক্রি হয় খুলনা, পিরোজপুর ও বাগেরহাট শহরের টাকাওয়ালা মানুষের কাছে।
শরণখোলার বৃদ্ধ শামসুর রহমান বলেন, ‘একটা সময় মাসে দু-চারটা হরিণ আমাদের গ্রামে চলে আসত। অনেকে ধরে জবাই করে খেত। কিন্তু অন্তত ১০ বছর হলো, আমাদের এলাকার মানুষ হরিণ শিকারের কথা চিন্তাও করে না। কারণ, একবার মামলা হলে ছাড়াতে অনেক টাকা লাগে। তবে বর্তমানে বরগুনা ও কয়রার লোকজন হরিণ শিকার করে নিয়ে যায়। ওরা নদীপথে এসে নদীপথেই নিয়ে যায়। বনরক্ষীদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে।’
সুন্দরবনের পাশের বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, বিশেষ অনুষ্ঠান, আপ্যায়ন, উপঢৌকন ও ঘুষ হিসেবে হরিণের মাংস ব্যবহৃত হয়। বিশেষ ব্যক্তির মাধ্যমে ফোনে অর্ডার করলেই মেলে মাংস। প্রতি কেজি বিক্রি হয় ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। বিভিন্ন পক্ষকে হাত করে চলে এই ব্যবসা। অনেক ক্ষেত্রে চামড়াসহ মাংস কেটে গ্রাহকের কাছে পাঠানো হয় প্রমাণ হিসেবে। হরিণের মাংস বিক্রির জন্য গড়ে উঠেছে অবৈধ নেটওয়ার্ক। অপরিচিত বা সন্দেহজনক কারও কাছে স্বীকার না করলেও সিন্ডিকেট সদস্যদের মাধ্যমে সহজে মেলে এটি।
এ নিয়ে কথা হলে সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, মাংসের চাহিদা বন্ধ না হলে সুন্দরবনের হরিণ শিকার বন্ধ হবে না। তিনি জানান, সুন্দরবনের বাঘের প্রধান খাদ্য হরিণ। সুন্দরবন টিকিয়ে রাখতে হলে হরিণ রক্ষা খুবই জরুরি। তাই হরিণ শিকার বন্ধে আইনের প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ভোক্তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
ফাঁদ ও বিষ: হরিণ শিকারের জন্য মালা, ছিটকা ও হাঁটা নামের তিন ধরনের ফাঁদ ব্যবহার করে শিকারিরা। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় মালা। এই ফাঁদ বনের মধ্যে গাছের সঙ্গে নির্দিষ্ট উচ্চতায় মালার মতো করে পাতা থাকে। হরিণ হেঁটে যাওয়ার সময় ফাঁদে মাথা প্রবেশ করালেই আটকে পড়ে। আর ছিটকা হচ্ছে লম্বা ও চিকন গাছের মাথা নিচু করে বেঁধে রাখা একটি ফাঁদ। যখন হরিণ ওই গাছের পাতা খাওয়া শুরু করে এবং নাড়া লাগে, তখন ফাঁদ সক্রিয় হয়ে হরিণের গলায় ফাঁস পড়ে যায়। হাঁটা ফাঁদ এমনভাবে পাতা থাকে যে হরিণ হেঁটে গেলেই আটকে পড়ে যায়।
ফাঁদ তৈরিতে আগে শুধু নাইলনের রশি ব্যবহার করলেও বর্তমানে সিলভারের তৈরি চিকন তার ব্যবহার করা হয়; যাতে সহজে হরিণ বা বনরক্ষীদের চোখে না পড়ে। এ ছাড়া বনের মধ্যে ছোট ছোট গর্তে জমে থাকা পানিতে বিষ দিয়ে রাখেন শিকারিরা। ওই পানি খেলে কিছুক্ষণের মধ্যে হরিণের শরীর অবশ হয়ে যায়, তখন সেগুলোকে ধরে জবাই করে শিকারিরা।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মে-জুন মাসে চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ৮৬টি অভিযান পরিচালনা করেন বনকর্মীরা। এসব অভিযান থেকে সাড়ে ৩ হাজার ফাঁদ জব্দ করা হয়। সেই সঙ্গে শিকারের কাজে ব্যবহৃত ৫৩টি ট্রলার ও নৌকা জব্দ হয়। এই সময়ে ৩৪ জনকে আটক এবং ৭৯ জনকে আসামি করে ৫৪টি মামলা করা হয়। পাশাপাশি ৮৪ কেজি হরিণের মাংস, ছয়টি হরিণের মাথা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বন বিভাগ।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত ১৫০ জনের তালিকা তৈরি করেছে। তালিকায় নাম আসা ব্যক্তিদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে বন বিভাগ।
প্যারালাল লাইন সার্চিং: সুন্দরবনে প্রাণী ও বনজ সম্পদ রক্ষায় সাধারণভাবে নদী-খালে নৌযানের মাধ্যমে টহল কার্যক্রম চলে বেশি। তবে এবার প্রথম বনে চোরা শিকারি ও অপরাধীদের ধরতে প্যারালাল লাইন সার্চিং (একসঙ্গে অনেক বনরক্ষীর সমতলে হেঁটে হেঁটে তল্লাশি) শুরু করেন বনরক্ষীরা। এতে সফলতাও মেলে। বনের মধ্যে নির্দিষ্ট উচ্চতায় শিকারিদের পেতে রাখা ও মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা ফাঁদ জব্দ করেছেন বনরক্ষীরা। এ ছাড়া সম্প্রতি বনের মধ্যে অপরাধীদের শনাক্তের জন্য ড্রোন ব্যবহার শুরু হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে সুন্দরবনে চোরা শিকারিরা হরিণ শিকার করে আসছে। সম্প্রতি আমরা প্যারালাল লাইন সার্চিং পদ্ধতিতে টহল জোরদার করায় শিকারিদের দৌরাত্ম্য কিছুটা কমেছে। দীর্ঘদিনের পেতে রাখা ফাঁদও পেয়েছি। বনের মধ্যে টহল বাড়ানো হচ্ছে। অপরাধমুক্ত সুন্দরবন গড়তে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। যারা হরিণের মাংস খায়, তাদেরও মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। তাদের সামাজিকভাবে বর্জন করা দরকার।’
এই কর্মকর্তা আরও জানান, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগে জনবলের সংকট রয়েছে। প্রায় ১ হাজার ৫০০ একর বনের জন্য আছেন মাত্র একজন বনকর্মী। তাঁর অধীনে ১০০টি শূন্য পদ রয়েছে। এই পদগুলোতে জনবল নিয়োগ হলে কাজের তৎপরতা আরও বাড়বে। শিকার বন্ধ করতে পারলে হরিণের সংখ্যা দ্রুত বাড়বে। হরিণ বাঘের প্রধান খাবার। বনের পরিবেশ এবং হরিণের সংখ্যা বাড়াতে পারলে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যাও বাড়বে নিশ্চয়। বন বিভাগ সেই লক্ষ্যে কাজ করছে।

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
৭ মিনিট আগে
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
৩০ মিনিট আগে
সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’
১ ঘণ্টা আগে
মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য...
২ ঘণ্টা আগেফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।
নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।
থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।
ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।
নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।
থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।
ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

মৎস্য ও বন্য প্রাণীর প্রজনন, বংশ বৃদ্ধি ও বিচরণ কার্যক্রমের সুরক্ষার জন্য ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিন মাস বনজীবীদের সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চলছে। কিন্তু এই সময়ে থেমে নেই হরিণশিকারিরা। তাঁরা নানা কৌশলে বন থেকে হরিণ শিকার করে লোকালয়ে এনে মাংস বিক্রি করছেন চড়া দামে। চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম
১৭ জুলাই ২০২৫
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
৩০ মিনিট আগে
সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’
১ ঘণ্টা আগে
মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য...
২ ঘণ্টা আগেচবি প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।
দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।
দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

মৎস্য ও বন্য প্রাণীর প্রজনন, বংশ বৃদ্ধি ও বিচরণ কার্যক্রমের সুরক্ষার জন্য ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিন মাস বনজীবীদের সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চলছে। কিন্তু এই সময়ে থেমে নেই হরিণশিকারিরা। তাঁরা নানা কৌশলে বন থেকে হরিণ শিকার করে লোকালয়ে এনে মাংস বিক্রি করছেন চড়া দামে। চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম
১৭ জুলাই ২০২৫
ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
৭ মিনিট আগে
সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’
১ ঘণ্টা আগে
মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য...
২ ঘণ্টা আগেময়মনসিংহ প্রতিনিধি

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’
আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।
৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’
আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।
৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

মৎস্য ও বন্য প্রাণীর প্রজনন, বংশ বৃদ্ধি ও বিচরণ কার্যক্রমের সুরক্ষার জন্য ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিন মাস বনজীবীদের সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চলছে। কিন্তু এই সময়ে থেমে নেই হরিণশিকারিরা। তাঁরা নানা কৌশলে বন থেকে হরিণ শিকার করে লোকালয়ে এনে মাংস বিক্রি করছেন চড়া দামে। চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম
১৭ জুলাই ২০২৫
ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
৭ মিনিট আগে
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
৩০ মিনিট আগে
মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য...
২ ঘণ্টা আগেমাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।
কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।
বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।
কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।
কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।
বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।
কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

মৎস্য ও বন্য প্রাণীর প্রজনন, বংশ বৃদ্ধি ও বিচরণ কার্যক্রমের সুরক্ষার জন্য ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিন মাস বনজীবীদের সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চলছে। কিন্তু এই সময়ে থেমে নেই হরিণশিকারিরা। তাঁরা নানা কৌশলে বন থেকে হরিণ শিকার করে লোকালয়ে এনে মাংস বিক্রি করছেন চড়া দামে। চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম
১৭ জুলাই ২০২৫
ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
৭ মিনিট আগে
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
৩০ মিনিট আগে
সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’
১ ঘণ্টা আগে