Ajker Patrika

খুবি শিক্ষার্থী অর্ণব হত্যা: বন্ধু পলাতক, অপরাধ চক্রের সঙ্গে সখ্য বিবেচনায় তদন্ত

কাজী শামিম আহমেদ, খুলনা
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অর্ণব কুমার। ছবি: সংগৃহীত
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অর্ণব কুমার। ছবি: সংগৃহীত

অপরাধ চক্র, চাঁদাবাজি, প্রেমঘটিত বিষয় ও বাবার কনস্ট্রাকশন ব্যবসা—এই চারটি বিষয়কে সামনে রেখে অর্ণব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। খুলনায় আলোচিত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অর্ণব হত্যার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে তথ্য সংগ্রহের জন্য তিনজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।

পুলিশের ধারণা চাঁদাবাজি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হতে পারে। হত্যার পর অর্ণবের বন্ধু রাব্বানীর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি আত্মগোপনে। পুলিশ তাঁকে খুঁজছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ চার রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করেছে।

গত শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাত সোয়া ৯টার দিকে খুলনা নগরীর শেখপাড়া তেঁতুলতলা মোড়ে অর্ণব কুমার সরকারকে গুলি করে এবং কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের ছাত্র ছিলেন।

চার বিষয় সামনে রেখে তদন্ত

অর্ণব হত্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মো. মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, রহস্য উদ্‌ঘাটনে ৪টি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করা হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে—চাঁদাবাজি, প্রেমঘটিত বিষয়, বাবার কনস্ট্রাকশন ব্যবসা ও অর্ণব কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য কিনা। এই চারটি বিষয়ে প্রাথমিক কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, হত্যাকাণ্ডের মোটিফ বুঝতে রাতভর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময়ে তিনজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তদন্ত সামনের দিকে নিয়ে যাবে পুলিশ।

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, একটি ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর অনেকগুলো ডালপালা বের হয়। কিন্তু কেউ তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে না। অনেকে বলেছেন, অর্ণব খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবুর ‘বি কোম্পানি’র সদস্য। কেউ বলছেন, অর্ণব কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। আবার তাঁর বাবার ব্যবসা কেন্দ্রিক বিরোধ নিয়ে তথ্য দিচ্ছেন। তা ছাড়া প্রেমঘটিত বিষয়টিও সামনে আসছে। ফলে এখনই ঘটনার নেপথ্য কারণ বলা সম্ভব নয়।

বাড়ি থেকে একজন যুবক অর্ণবকে ডেকে শেখপাড়া তেঁতুলতলা মোড়ে নিয়ে যায় বলে শোনা যাচ্ছে। সে সম্পর্কে মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, এমন তথ্য আমরা শুনেছি, এটারও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তবে অর্ণব কেন তেঁতুলতলা মোড়ে এসেছিলেন তা কেউ সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না।

হত্যাকারীদের সঙ্গে অর্ণবের সখ্য ছিল

এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে শেখপাড়া তেঁতুলতলা মোড় এলাকা ঘুরে একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সংস্থা ও সূত্র জানায়, একটি বিষয় বেশ জোরেশোরে আলোচনায় আসছে। সেটি হলো, হত্যাকারীদের সঙ্গে অর্ণবের সখ্য ছিল। তারা একটি স্থানে চাঁদাবাজি করেছিল। যেটির সম্পূর্ণ টাকা অর্ণব আত্মসাৎ করে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এটির মীমাংসা করার জন্য তাঁকে সেখানে ডেকে নেওয়া হয়। তর্ক–বিতর্কের একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা তাঁকে প্রথমে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে কুপিয়ে জখম করে। সাতজন এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। তাদের প্রত্যেকের মুখ মাফলার দিয়ে ঢাকা ছিল। একজনের হাতে শটগান ও বাকিদের হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল। শটগান হাতে থাকা ব্যক্তি অর্ণবকে লক্ষ্য করে একটি ও পিস্তল দিয়ে পরপর ৩টি গুলি করে। অন্যরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। হত্যাকারীরা তার মৃত্যু নিশ্চিত করে মোটরসাইকেলে চড়ে সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে হারিয়ে যায়।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মো. মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, পুলিশের কাছে আসা প্রাথমিক তথ্য বলছে, এ হত্যাকাণ্ডে প্রথমে তিনটি মোটরসাইকেল যোগে আসে সন্ত্রাসীরা। এরপর আরও কয়েকটি মোটরসাইকেল যোগে মহড়া দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। আমরা ঘটনাস্থলের সিসি টিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেগুলো দেখা হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একজন পথচারী বলেন, অর্ণব রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে বন্ধুদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে চা পান করছিলেন। এ সময়ে কয়েকজন তাদের ঘিরে ফেলে। তখন অর্ণব তাদের উদ্দেশে বলতে থাকেন, ‘আমি এর সঙ্গে জড়িত নই’। এ কথা বলার পর একজন বলে, ‘তুই তো ওই গ্রুপের সদস্য’। এ কথা বলামাত্র শটগান দিয়ে গুলি করে ওই ব্যক্তি। আশপাশের লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করতে পরপর আরও তিন রাউন্ড গুলি করা হয়।

ঘটনাস্থল থেকে শটগানের একটি ও পিস্তলের তিন রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করেছে সোনাডাঙ্গা থানা-পুলিশ।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ–পুলিশ কমিশনার খুলনায় সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে স্বীকার করে বলেন, এত দিন সন্ত্রাসীদের ওপর আমরা নজর রাখতাম। কিন্তু এখন তারা আমাদের গতিবিধি নজরে আনছে। তাদের দমনে হোন্ডা বাহিনী, চেকপোস্ট ও গোয়েন্দা বাহিনী নিয়োজিত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই অপরাধ কমে যাবে।

অর্ণবের সঙ্গে সন্ত্রাসী কানেকশন

একাধিক সূত্র জানায়, অর্ণব ছিলেন খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবুর ‘বি কোম্পানি’র গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। এই গ্রুপের সঙ্গে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী পলাশ গ্রুপের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। চাঁদাবাজির অর্থ ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে অর্ণবসহ অন্যরা পলাশ গ্রুপের টার্গেটে ছিল। শুক্রবার রাতে অর্ণবের সঙ্গে ‘বি কোম্পানি’র আরও তিন সদস্য তেঁতুলতলা মোড়ে উপস্থিত ছিল। প্রতিপক্ষ হামলা করার আগেই তারা পালিয়ে যায়।

হত্যায় জড়িত ৫ জন

একাধিক গোয়েন্দা সূত্র জানায়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অর্ণব হত্যা মিশন সফল করে ৫ জন সন্ত্রাসী। এর মধ্যে কালা লাভলু শটগান দিয়ে প্রথমে মাথায় গুলি করে। এ ছাড়া সহযোগী সাইদুল, আসিফ ওরফে ট্যাপা আসিফ, দেলো ও ইনসান ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায় এবং পিস্তল দিয়ে ফাঁকা গুলি করে। সূত্রটি আরও জানায়, ট্যাপা আসিফ কয়েক দিন আগে গ্রেপ্তার হওয়া চিংড়ি পলাশের ভাই।

সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, অর্ণব হত্যার ঘটনায় শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেল পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবে সন্ধ্যার পর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার কথা। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে অর্ণবের মরদেহ বেলা পৌনে ১টায় প্রথমে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে গল্লামারী শ্মশানঘাটে নিয়ে সৎকার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া (রংপুর) 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় চার-পাঁচ দিন ধরে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে তিস্তাতীরবর্তী এলাকার মানুষেরা। তবে শীত নিবারণের জন্য সরকারি সহায়তা নিয়ে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা। শীতার্ত মানুষের অভিযোগ, প্রয়োজনের সময় তারা কম্বল পাচ্ছে না। তবে উপজেলা প্রশাসনের দাবি, কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।

গত বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কোলকোন্দ ইউনিয়নের বেদপাড়া এলাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা যায় সন্ধ্যা রানী (৫০) নামের এক নারীকে। শীতের কষ্টের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এই ঠান্ডায় হাত-পা কোঁকড়া হয়ে যাচ্ছে। আগুন পোহাইলেও ঠিকমতো কাজ হয় না। আগের বছর শীত আসার আগেই কম্বল পাইছিলাম। এবার শীত আইসা চলি যাচ্ছে, কেউ খোঁজও নিল না।’ ক্ষোভ প্রকাশ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, ‘এবার শীতে কি সরকার থাকি কোনো কম্বলের ব্যবস্থাই নাই, নাকি সবগুলা লোকজনে ভাগ করে খাইছে?’

এই অভিযোগ শুধু সন্ধ্যা রানীর নয়; কয়েক দিনে সরেজমিনে উপজেলার কোলকোন্দ, লক্ষ্মীটারী ও আলমবিদিতর ইউনিয়নের তিস্তাতীরবর্তী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দিনমজুর, বয়স্ক নারী-পুরুষ ও শিশুরা শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অথচ শীত নিবারণে সরকারি সহায়তার কোনো দৃশ্যমান উপস্থিতি চোখে পড়েনি।

আলমবিদিতর ইউনিয়নের ডাঙ্গী পাইকান এলাকায় আলুখেতে কাজ করার সময় কথা হয় দিনমজুর নুর আমিনের (৫৪) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঠান্ডা বাড়ার কারণে কোমর আর ঘাড়ের ব্যথা এমন হইছে যে ঠিকমতো হাঁটতেও পারি না, ঘাড়ও সোজা করতে পারি না। তবুও কাজ করা লাগে। বসে থাকলে কি আর পেট চলবে?’

ভুক্তভোগীদের অভিযোগের পর গত বুধবার গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে, চলতি শীতে শীতার্ত মানুষের জন্য উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ৮০০ কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তবে নির্বাচনী কিছু জটিলতার কারণে ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশনায় কম্বলগুলো উপজেলা পরিষদের একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। পরে সাংবাদিকদের অনুসন্ধানের বিষয়টি জানতে পেরে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তড়িঘড়ি করে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ১০০টি করে কম্বল সরবরাহ করা হয়।

জানতে চাইলে মর্ণেয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তাঁদের ইউনিয়নের জন্য ১০০টি কম্বল দেওয়া হয়েছে। শনিবার (আজ) সেগুলো বিতরণ করা হবে।

কোলকোন্দ ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম বলেন, সম্ভবত বৃহস্পতিবার ইউনিয়ন সচিব পিআইও অফিস থেকে ১০০টি কম্বল এনেছেন। তবে সঠিক তথ্য খোঁজ নিয়ে বলতে হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সজীবুল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাসিক সমন্বয় সভায় ওপর থেকে নির্দেশনা এসেছে, জরুরি অবস্থা ছাড়া কোনো কম্বল বিতরণ করা যাবে না। নির্বাচনী কিছু জটিলতাও রয়েছে। অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বলেন, ‘কম্বলের বরাদ্দ ছিল। আমরা সেগুলো বিতরণ করে ফেলেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সুরেশ চন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি

একসময়ের জ্ঞানের বাতিঘর আজ নিকষ কালো অন্ধকার

মেহেদী হাসান, (দিনাজপুর) ফুলবাড়ী
লতা-পাতা ও আগাছায় ভরা শতবর্ষী সুরেশ চন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি। ছবি: আজকের পত্রিকা
লতা-পাতা ও আগাছায় ভরা শতবর্ষী সুরেশ চন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দূর থেকে তাকালেই মনে হয়, কোনো পরিত্যক্ত ভুতুড়ে বাড়ি। লতা-পাতায় ঢাকা দেয়াল, আগাছায় ভরা চত্বর আর তালাবদ্ধ দরজার ভেতরে মাকড়সার জাল। অথচ একসময় এ জায়গাটিই ছিল পাঠকের ভিড়ে মুখর, জ্ঞানের আলোয় উজ্জ্বল এক প্রজন্মের আশ্রয়। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর এলাকার সুজাপুর গ্রামে শতবর্ষী ‘সুরেশ চন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি’ আজ নীরব অন্ধকারে দাঁড়িয়ে আছে—ইতিহাস, শিক্ষা ও সংস্কৃতির এক জীবন্ত সাক্ষী হয়ে।

জানা গেছে, ১৯১৬ সালে তৎকালীন জমিদার সুরেশ চন্দ্র রায় ও তাঁর ছেলে ক্ষীতিশ চন্দ্র রায়ের উদ্যোগে ফুলবাড়ী দিয়ে প্রবাহিত ছোট যমুনা নদীর পশ্চিম পাড়ে সুজাপুর গ্রামে যাত্রা শুরু করে এ পাবলিক লাইব্রেরিটি। সুজাপুর হাইস্কুল প্রতিষ্ঠার পর দরিদ্র ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের বইয়ের সংকট দূর করতে বিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকায় পাঠাগারটি নির্মাণ করা হয়। বাবার স্মৃতি অমর করে রাখতে এর নামকরণ করা হয় ‘সুরেশ চন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি’।

একসময় এ লাইব্রেরিতে ছিল বিপুল বই। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা গ্রন্থে ভরপুর ছিল তাকগুলো। পাঠকদের পদচারণে মুখর ছিল পুরো প্রাঙ্গণ। এ লাইব্রেরি থেকেই বহু মানুষ জ্ঞানের আলোয় পথচলা শুরু করেছিলেন। কালের বিবর্তনে যেমন ছোট যমুনা নদী আজ মরা নদীতে পরিণত হয়েছে, তেমনি এ লাইব্রেরিও ধীরে ধীরে হারিয়েছে তার প্রাণ। সবচেয়ে বড় আঘাত আসে ১৯৭১ সালে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী আগুনে পুড়িয়ে দেয় লাইব্রেরির অমূল্য বই ও আসবাবপত্র।

দীর্ঘ নীরবতার পর ২০১১ সালের ১৪ অক্টোবর লাইব্রেরি পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পুরোনো ভবনের পাশে ১২ শতাংশ জমিতে নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ২০১২ সালে পুরোনো ভবন সংস্কার ও নতুন ভবন নির্মাণের পাশাপাশি কেনা হয় ১ হাজার ১২০টি বই। ২০১৫ সালে আরও ২ লাখ টাকা অনুদানে নির্মিত হয় অতিরিক্ত একটি ঘর। ২০১৭ সালে সেখানে চালু হয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এলাকার শিক্ষিত যুবকেরা সেখানে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। পাঠকদের পদচারণে আবারও মুখর হয়ে ওঠে লাইব্রেরিটি। গঠিত হয় পরিচালনা কমিটি। মনে হয়েছিল, আবার বুঝি ফিরবে সেই দিন।

কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। অর্থাভাব, লাইব্রেরিয়ানের বেতন ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের চাপে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। কে নেবে এর দায়িত্ব—এ প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। এর মধ্যেই আঘাত হানে করোনা মহামারি। বন্ধ হয়ে যায় সব কার্যক্রম। ২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারি রাতের আঁধারে চুরি যায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ছয়টি কম্পিউটার। এভাবেই নতুন আশার শেষ আলোটুকুও যেন নিভে যায়।

এ বিষয়ে ইউএনও আহমেদ হাছান জানান, তিনি লাইব্রেরিটি পরিদর্শন করে পরিচালনা কমিটিকে আপাতত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে লাইব্রেরি খুলে বসার ব্যবস্থা করতে বলেছেন। পরবর্তী সময়ে জনবলসংকটসহ অন্যান্য সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নেবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ শুরু না হওয়ায় শঙ্কায় কৃষক

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
নেত্রকোনায় হাওরের ফসল রক্ষায় ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প নির্ধারণ এবং ১৫ ডিসেম্বর নির্মাণ শুরুর কথা ছিল। কিন্তু এখনো কাজ শুরু না হওয়ায় হতাশ কৃষকরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নেত্রকোনায় হাওরের ফসল রক্ষায় ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প নির্ধারণ এবং ১৫ ডিসেম্বর নির্মাণ শুরুর কথা ছিল। কিন্তু এখনো কাজ শুরু না হওয়ায় হতাশ কৃষকরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

হাওরে বছরে একটি ফসলই ফলে, আর তা হলো বোরো ধান। এ ফসলের ওপর নির্ভর করে চলে হাওরপাড়ের বাসিন্দাদের ঘর-গেরস্থালি। আগাম বন্যার হাত থেকে বোরো রক্ষায় প্রতিবছর দেওয়া হয় অস্থায়ী বাঁধ। সেই বাঁধের কাজ শুরু হয় ১৫ ডিসেম্বর। কিন্তু গতকাল বুধবার পর্যন্ত নেত্রকোনায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিই (পিআইসি) গঠন করা হয়নি। ফলে আগাম বন্যায় ফসল ভেসে যাওয়ার শঙ্কায় আছেন জেলার হাওরপাড়ের বাসিন্দারা।

নেত্রকোনায় হাওরের ফসল রক্ষায় ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প নির্ধারণ, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পিআইসি গঠন, ১৫ ডিসেম্বর বাঁধের নির্মাণ শুরু ও ২৮ ফেব্রুয়ারি নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত পিআইসি গঠন সম্পন্ন করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ফলে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।

পাউবো ও জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১৩৪টি হাওর রয়েছে। এসব হাওরে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়। বোরো রক্ষায় গত বছর জেলার ৭ উপজেলায় ১৪৯ কিলোমিটার অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। এ জন্য ১৯১টি পিআইসি গঠন করা হয়। বরাদ্দ ছিল ২২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। তবে এবার কত কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করে হবে সেই জরিপই শেষ করতে পারেনি পাউবো। ফলে চূড়ান্ত হয়নি কতগুলো পিআইসি গঠন করা হবে। ফলে এর বরাদ্দের পরিমাণও জানাতে পারেনি পাউবো।

মোহনগঞ্জ উপজেলার বরান্তর গ্রামের একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা ঋণ করে বোরোর আবাদ করছেন। বাঁধের কাজ সময়মতো শুরু হয়নি। এ কারণে তাঁরা আতঙ্কে আছেন। আগাম বন্যায় ফসল নষ্ট হলে নিজেদের সংসারের খরচ চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। তাই এ বিষয়ে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ চান তাঁরা।

খালিয়াজুরী উপজেলার লেপসিয়া এলাকার কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘একটিমাত্র বোরো ফসলের ওপরে আমাদের সারা বছরের খাওয়াদাওয়া, হাটবাজার ও পোলাপানের লেখাপড়ার খরচসহ যাবতীয় খরচ নির্ভর করে। এবার সময়মতো বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু হয়নি, ফলে যথাসময়ে শেষ করতে পারবে না। আগাম বন্যা হলে আমাদের ফসল বাঁচানো যাবে না।’

পাউবো ও জেলা প্রশাসন সূত্র আরও জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির কাজে সরাসরি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে যুক্ত করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নসহ তদারকিতে জেলা প্রশাসককে সভাপতি ও নেত্রকোনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীকে সদস্যসচিব করে জেলা কমিটি করা হয়। একইভাবে উপজেলা পর্যায়ে ইউএনওকে সভাপতি ও পাউবোর একজন কর্মকর্তাকে সদস্যসচিব করে উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়। মূলত উপজেলা কমিটি প্রকল্প নির্ধারণ ও পিআইসি গঠন করে জেলা কমিটিতে পাঠায়। পরে জেলা কমিটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। প্রতিটি প্রকল্পের জন্য প্রকৃত কৃষক ও স্থানীয় সুবিধাভোগীদের নিয়ে পাঁচ থেকে সাত সদস্যের পিআইসি থাকে।

প্রকল্পের সদস্যসচিব ও নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাখাওয়াত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, জরিপ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী সপ্তাহে পিআইসি গঠন করার পাশাপাশি কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। জরিপের রিপোর্ট এখনো হাতে না পাওয়ায় এবার কতগুলো পিআইসি গঠন হবে আর বরাদ্দ কত হবে জানানো যাচ্ছে না।

কাজ শুরু করতে দেরি হলেও নির্ধারিত সময়েই শেষ করতে পারব। এ নিয়ে শঙ্কার কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছেন পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী।

এ বিষয়ে প্রকল্পের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. সাইফুর রহমান বলেন, চলতি সপ্তাহে পিআইসি কমিটি গঠন সম্পন্ন হবে। আগামী সপ্তাহে কাজ শুরু করা হবে। স্থানীয় পর্যায়ে কিছু জটিলতা ছিল, পাশাপাশি হাওরের পানি নামতে দেরি হয়েছে। সব জটিলতা সমাধান করে পিআইসি গঠন শুরু হয়েছে। দেরিতে কাজ শুরু হলেও নির্ধারিত সময়েই কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

  • বিগত কয়েকটি নির্বাচনে জয় পান জাপার প্রার্থীরা
  • উঠান বৈঠক, সভা, সেমিনারসহ প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সবাই
  • ভোটারের কাছে আলোচনায় রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা
­­ জসিম উদ্দিন, নীলফামারী
নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

নীলফামারীর চারটি সংসদীয় আসনের দুটিতে দলীয় প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি। একটি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যটিও শরিকদের ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে। সব আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে ভোটের মাঠে সক্রিয় জামায়াতে ইসলামী। প্রার্থী ঘোষণা করে প্রচারে ব্যস্ত অন্য দলগুলোও। তবে নীলফামারীর আসনগুলোতে চমক দেখাতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। সেই তালিকায় রয়েছেন সাবেক এমপি, বিএনপির নেতা ও ক্রীড়া সংগঠক।

বিগত কয়েকটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (জাপা) নীলফামারীর আসনগুলো থেকে জয় পেয়ে আসছে। তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জেলায় দলটির রাজনৈতিক তৎপরতা তেমন নেই বললেই চলে। স্থানীয় জাপা নেতাদের মতে, ঢাকায় দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়েছে। সে হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণে তাঁদের প্রস্তুতিও রয়েছে।

নীলফামারী-১ (ডোমার ও ডিমলা)

সীমানাঘেঁষা ডোমার ও ডিমলা উপজেলা নিয়ে গঠিত নীলফামারী-১ আসনে জাতীয় পার্টি অথবা আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয় পেয়েছিলেন। এবার তাঁদের অনুপস্থিতিতে আসনটি দখলে মরিয়া বিএনপি জোট ও জামায়াত। জয় নিশ্চিত করতে বিএনপি এ আসন জোট শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীকে ছেড়ে দিয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে এ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাগনে শাহরিন ইসলাম চৌধুরী নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছেন। জোটকে ছেড়ে দেওয়ায় বিএনপির এই নেতা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এদিকে জামায়াতে ইসলামী এখানে দলটির জেলা শাখার আমির আবদুস সাত্তারকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। বেশ আগেই নাম ঘোষণা করায় নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ চালাচ্ছেন তিনি।

নীলফামারী-২ (সদর)

এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলের জেলা সদস্যসচিব এ এইচ এম সাইফুল্লাহ (রুবেল)। তিনি দিনরাত সমানতালে নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। বসে নেই নারী কর্মীরা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটে যাচ্ছেন তাঁরা। তাঁর বিপরীতে জামায়াত জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও দলের জেলা শাখার সহকারী সেক্রেটারি আল ফারুক আবদুল লতীফকে প্রার্থী করেছে। জামায়াতের এ নেতাকে দাঁড়িপাল্লার কান্ডারি করায় নেতা-কর্মীরা রয়েছে ফুরফুরে মেজাজে। তবে বিএনপি ও জামায়াতের দুই প্রার্থীই দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনী এলাকায় সভা-সমাবেশসহ গণসংযোগ করায় ভোটারদের কাছে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন। এনসিপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির জেলা সদস্যসচিব চিকিৎসক কামরুল ইসলাম দর্পণ। তিনিও প্রচার চালাচ্ছেন। আসন্ন নির্বাচনে বিজয়ী হতে নিজেদের অবস্থান শক্ত করার প্রয়াস চালাচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ক্রীড়া সংগঠক মিনহাজুল ইসলাম মিনহাজ।

নীলফামারী-৩ (জলঢাকা)

এ আসনে বিএনপি এখনো কারও নাম ঘোষণা করেনি। শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করার উদ্দেশ্যে এখনো ফাঁকা রাখা হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তবে কাকে প্রার্থী করা হতে পারে, তা অনুমান করতে পারছে না কেউ, কারণ একাধিক জোট শরিককে বিকল্প ধরা হচ্ছে। তবুও মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন দলটির জেলা কমিটির সাবেক সহসভাপতি এবং দুইবারের নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ আলী। ইতিমধ্যে তিনি কেন্দ্রের সবুজসংকেত পেয়েছেন বলে দাবি করে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তবে আসনটি জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। তিনবার এই সংসদীয় আসন থেকে জিতেছেন জামায়াতের প্রার্থী। এবার দাঁড়িপাল্লার কান্ডারি করা হয়েছে জেলা জামায়াতের শুরা সদস্য ওবায়দুল্লাহ সালাফীকে। তিনি নেতা-কর্মীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কাছে দলের বাইরে থেকে মাঠ গোছাতে সব ইউনিয়নে উঠান বৈঠক, সভা, সেমিনারসহ বিভিন্ন কৌশলে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন। এ আসনে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আবু সাঈদ লিওন দল থেকে মনোনয়ন পেয়ে কোমর বেঁধে প্রচারণায় নেমেছেন। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হিসেবে মো. আমজাদ হোসেন মাঠে আছেন।

নীলফামারী-৪ (সৈয়দপুর ও কিশোরগঞ্জ)

এ আসনে কখনো জাতীয় পার্টি, কখনো আওয়ামী লীগ কিংবা কখনো বিএনপি জয় পেয়েছে। এবার সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকারকে মনোনয়ন দিয়েছে দলটি। বিগত দেড় দশক নেতা-কর্মীদের পাশে ছিলেন এই নেতা। আসনটিতে কখনো জয় পায়নি জামায়াত। এবার মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা জামায়াতের আমির আব্দুল মুনতাকিম। অন্যদিকে সাবেক সংসদ সদস্য শিল্পপতি সিদ্দিকুল আলম ও বিএনপি নেতা রিয়াদ আরফান সরকার রানা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। ভোটারের কাছে আলোচনায় রয়েছে এ দুটি মুখ। স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই পাল্টে দিতে পারে এ আসনের হিসাবনিকাশ। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থীরা প্রচার চালাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত