Ajker Patrika

গাজীপুরে রাতে সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা: আরও যা যা জানা গেল

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২: ৪২
গাজীপুরে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রীর বাড়িতে মারধরে আহত কয়েকজন। ছবি: সংগৃহীত
গাজীপুরে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রীর বাড়িতে মারধরে আহত কয়েকজন। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের সাবেক মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারধরে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অন্তত তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের দাবি, মারধরের শিকার কেউ বাড়িতে হামলা করতে যাননি। কয়েকজন ছাত্রকে সেখানে আটকে রাখা হয়েছে– এমন খবর দিয়ে উদ্ধারের জন্য তাঁদের ডেকে নিয়ে ফাঁদে ফেলে মারধর করা হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুরের যুগ্ম আহ্বায়ক নাবওল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের রাত সাড়ে ৮টার দিকে বলা হয়, সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা হয়েছে। সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা যেন দ্রুত গিয়ে তাদের বাঁচাই। খবর পেয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা সেখানে তাদের উদ্ধার করতে যায়। সেখানে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে নিয়ে তাদের আটকে মারধর করে।’

নাবওল আহমেদ আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ফাঁদে পড়েছে বুঝতে পেরে আমরা বহুবার পুলিশকে জানিয়েছি। তারা ঘটনার দুই ঘণ্টা পর এসেছে। যারা হামলা করেছে তারা সবাই আওয়ামী লীগের লোকজন। তাদের হামলায় অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। ১০-১২ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। আমরা এই হামলার বিচার চাই, অনতিবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।’

তবে কয়েকজন এলাকাবাসী জানিয়েছেন, গতকাল শুক্রবার সাড়ে রাত ৯টার দিকে একদল বিক্ষুব্ধ ছাত্র–জনতা গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রমের দক্ষিণখানে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় মসজিদের মাইকে মন্ত্রীর বাড়িতে ডাকাত পড়েছে জানিয়ে লোকজনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। এলাকার লোকজন দা, বঁটি, লাঠিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়িটি ঘিরে ফেলে। পরে ভেতরে ঢুকে কয়েকজনকে ব্যাপক মারধর করে। এতে অন্তত ১৫ জন গুরুতর জখম হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাত ১১টার দিকে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

গাজীপুরের একাধিক ব্যক্তি জানান, ধীরাশ্রমের দক্ষিণখান এলাকা মূলত আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত। এখানকার বেশির ভাগ লোকই আওয়ামী লীগ সমর্থক। এই কথা এলাকার সবাই জানে। তবু মাত্র ১৫-২০ জন লোক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালাতে যাবে, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। গত রাতের ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। পুলিশের উচিত, বিষয়টি তদন্ত করে বের করা।

গাজীপুরে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রীর বাড়িতে মারধরে আহত কয়েকজন। ছবি: সংগৃহীত
গাজীপুরে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রীর বাড়িতে মারধরে আহত কয়েকজন। ছবি: সংগৃহীত

গত রাতের ঘটনার একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবককে স্থানীয়রা আটক করেছে। তারা বলছে, ‘আমরা না বুঝে এসেছি। আমাদের মাফ করে দেন।’ তবে এসব যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। আরও কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বাসভবনের ভেতরে যুবকদের বেধড়ক পেটানো হচ্ছে।

এদিকে হামলার প্রতিবাদে গতকাল রাত পৌনে ২টার দিকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুরের নেতা মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘শুক্রবার রাতে আমাদের কাছে খবর আসে ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হচ্ছে। এটি শোনার পর প্রতিহত করতে আমাদের শিক্ষার্থীরা রওনা হন। দ্রুত ১৫-১৬ জন সেখানে চলে যান। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, লুটপাট হচ্ছে। তাতে বাধা দিলে পেছন থেকে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে যায়। তাদের হাতে রামদাসহ বিভিন্ন অস্ত্র ছিল। অন্য শিক্ষার্থীরা আসার আগেই ওই ১৫ জনকে ছাদে নিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে অন্য শিক্ষার্থীরা গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়।’

শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শেখ ফরহাদ বলেন, রাত ১১টা পর্যন্ত গুরুতর আহত অবস্থায় ১৫ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাঁরা হলেন, বিকাশ (১৫), সামিউল ইসলাম (১৮) রাসেল (২১), শুভ শাহরিয়ার (১৭), হামজা (২১), কাশেম (১৭), আকরাম (২৪), হিমেল (২২), রোহান (২২), নাঈম (২১), ইয়াকুব (২০), গৌরব (২১), হাসান (২২), সাগর (২৩) ও সাজ্জাদ (২১)।

এদিকে গুরুতর আহত পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা হলেন, শুভ শাহরিয়া (১৬), ইয়াকুব (২৪), সৌরভ (২২), কাশেম (১৭) ও হাসান (২২)।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান বলেন, ‘প্রকৃত ঘটনা কী ঘটেছে, তা নিশ্চিত হতে পারিনি। এখানে হামলার খবর পেয়ে আমরা আসি এবং আহত অবস্থায় ১৫ জনের মতো উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। ঘটনার বিষয়ে কোনো পক্ষের কাউকেই আমরা পাইনি। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বা তথ্য নেওয়ার জন্যও কারও সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। ফলে এখানে আসলে কী ঘটেছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’

গাজীপুর সদর মেট্রো থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান বলেন, সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। পরে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এদিকে গত রাতে বিক্ষোভ করার সময় আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর আওয়ামী লীগ এবং সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর হোসেনের লোকজন হামলা চালিয়েছে দাবি করে আজ শনিবার ‘মার্চ টু গাজীপুর’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গাজীপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় নাগরিক কমিটি। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় ডিসি অফিসের সামনে রাজবাড়ী মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। সবাইকে এই কর্মসূচিতে শামিল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঝালকাঠিতে ট্রলির ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ঝালকাঠির নলছিটিতে ট্রলির ধাক্কায় লিমা আক্তার (৩০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তা৭র স্বামী মোটরসাইকেলচালক আহত হয়েছেন। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে উপজেলার ভৈরবপাশা ইউনিয়নের লক্ষণকাঠি এলাকায় বরিশাল-ঝালকাঠি মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল আলম।

নিহত লিমা আক্তার ইশ্বরকাঠি এলাকার ব্যবসায়ী রাজু মল্লিকের স্ত্রী। তাঁদের পাঁচ বছর ও দুই বছর বয়সী দুটি সন্তান রয়েছে।

নিহত লিমার ভাশুর ও স্থানীয় ইউপি সদস্য পারভেজ মল্লিক জানান, বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে ঝালকাঠি আসার পথে পেছন দিক থেকে একটি ট্রলি তাঁদের ধাক্কা দেয়। এ সময় ট্রলিটি একটি নৌবাহিনীর গাড়িকেও ধাক্কা দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় লিমাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আনিস আলমগীর এখনো ডিবি কার্যালয়ে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আনিস আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
আনিস আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

সাংবাদিক আনিস আলমগীর এখনো ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে রয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তাঁকে সেখানে ডেকে নেওয়া হয়।

আজ সোমবার সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান আনিস আলমগীরের ডিবি কার্যালয়ে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ডিবি সদস্যরা তাঁকে সেখানে নিয়ে যান। রাজধানীর ধানমন্ডির একটি জিম থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন আনিস আলমগীর।

ডিবির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, আনিস আলমগীর এখনো ডিবি কার্যালয়েই রয়েছেন। তাঁর বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা এখনো জানানো হয়নি।

এদিকে সাংবাদিক আনিস আলমগীর এবং অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্টের ষড়যন্ত্র এবং নিষিদ্ধ সংগঠনকে উসকে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।

‘জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স’ নামে একটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংগঠক আরিয়ান আহমেদ এই অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত অপর দুজন হলেন মারিয়া কিসপট্টা ও ইমতু রাতিশ ইমতিয়াজ।

থানায় দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মধ্যেও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুসারীরা বিভিন্ন কৌশলে দেশে অবস্থান করে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। অভিযুক্তরা এসব কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্টের পর থেকে অভিযুক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন টেলিভিশন টক শোতে অংশ নিয়ে নিষিদ্ধ সংগঠনকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রচারণা চালাচ্ছেন। এর মাধ্যমে তাঁরা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করছেন।

এতে আরও বলা হয়, অভিযুক্তদের এসব বক্তব্য ও অনলাইন কার্যক্রমের কারণে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা উসকানি পাচ্ছে। ফলস্বরূপ তারা রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, সহিংসতা এবং অবকাঠামো ধ্বংসের মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত হচ্ছে।

উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মোহাম্মদ রফিক আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, এটি সাইবার-সম্পর্কিত একটি ইস্যু। তিনি বলেন, ‘আমরা অভিযোগ গ্রহণ করেছি। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা যাচাই ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পেলে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এখন ঢাকায়

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৩
ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিতে ঢাকায় পৌঁছেছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। ছবি: ফ্লাইটর‍্যাডার২৪
ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিতে ঢাকায় পৌঁছেছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। ছবি: ফ্লাইটর‍্যাডার২৪

রাজধানীর এয়ারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার জন্য ঢাকায় এসেছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি সিঙ্গাপুর থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন রাগিব সামাদ আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ বেলা ১১টা ২২ মিনিটে বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে সড়কপথে আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সে বিমানবন্দরে নেওয়া হবে এবং সেখান থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হবে।

ওসমান হাদির বড় দুই ভাই—ওমর ফারুক এবং আবু বকর সিদ্দিক—তাঁর সঙ্গে বিদেশ যাওয়ার কথা রয়েছে। দুপুরের মধ্যেই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর সন্ধ্যার দিকে হাদিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।

এরপর গতকাল রোববার ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাফর, ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে হাদিকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

পরে প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত দুদিন ধরে ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সরকার সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেছে। আজ (গতকাল রোববার) এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পরামর্শে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে।

আগামীকাল (আজ সোমবার) দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় মেডিকেল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল এবং ভ্রমণসংক্রান্ত সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাক্সিডেন্ট ইমার্জেন্সি বিভাগে তাঁর চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

ওসমান হাদির চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে। তার চিকিৎসা প্রক্রিয়া সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঠাকুরগাঁওয়ে অবৈধভাবে সার মজুত: ব্যবসায়ীকে ৭ দিনের কারাদণ্ড, ৭৬৬ বস্তা জব্দ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
সারগুলো জব্দ করে গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সারগুলো জব্দ করে গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক সার মজুত রাখার অভিযোগে এক কীটনাশক ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ আদালত সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। একই সঙ্গে দুটি গুদাম থেকে ৭৬৬ বস্তা সার জব্দ করা হয়েছে এবং গুদাম দুটি সিলগালা করা হয়েছে।

রোববার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বড় খোঁচাবাড়ি বাজারের পেছনে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খাইরুল ইসলাম। অভিযানে আব্দুল্লাহ নামের ওই কীটনাশক ব্যবসায়ীর দুটি গুদামে অবৈধভাবে মজুত রাখা বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক সার পাওয়া যায়।

সারগুলো জব্দ করে গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সারগুলো জব্দ করে গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আব্দুল্লাহকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জব্দ করা ৭৬৬ বস্তা সার গুদামে রেখে সিলগালা করা হয়েছে।

ইউএনও মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। জব্দকৃত সার কিছুদিন পর কৃষি কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে ন্যায্যমূল্যে উন্মুক্ত বাজারে বিক্রি করা হবে। কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত