Ajker Patrika

ফরেন পলিসির নিবন্ধ /ডিসেম্বরের মধ্যেই ফের যুদ্ধে জড়াতে পারে ইরান-ইসরায়েল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১৪: ৫২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েল সম্ভবত চলতি বছরের ডিসেম্বরের আগেই ইরানের সঙ্গে নতুন যুদ্ধ শুরু করবে। এমনও হতে পারে, হয়তো চলতি আগস্টের শেষেই এই যুদ্ধ শুরু করতে পারে তেল আবিব। ইরানও এমন আক্রমণের আশঙ্কা থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রথম যুদ্ধে সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হবে ধরে নিয়ে ইরান দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নিয়েছিল, ধীরে ধীরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল। তবে এবার ইরান শুরু থেকেই শক্তিশালী ও নির্ণায়ক আঘাত হানতে পারে। তেহরানের লক্ষ্য থাকবে ‘ইসরায়েলের সামরিক আধিপত্য’ দমন করা অসম্ভব—এমন ধারণা ভেঙে ফেলা।

ফলে আসন্ন যুদ্ধ আগের যুদ্ধের তুলনায় অনেক বেশি রক্তক্ষয়ী-প্রাণঘাতী হওয়ার হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি আবার ইসরায়েলের চাপে নতি স্বীকার করে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন, তবে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে এমন এক পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে, যার তুলনায় ওয়াশিংটনের কাছে ইরাক যুদ্ধও সহজ বলে মনে হবে।

ইসরায়েলের জুন মাসের যুদ্ধ আসলে কখনোই শুধু ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ছিল না। এর মূল লক্ষ্য ছিল—মধ্যপ্রাচ্যের শক্তির ভারসাম্য পাল্টে দেওয়া। ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা কখনোই চূড়ান্ত বিষয় ছিল না। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে চাপ দিয়ে আসছে, যাতে ইরান দুর্বল হয় এবং এমন এক আঞ্চলিক ভারসাম্য তৈরি হয়, যেখানে ইসরায়েলের প্রাধান্য থাকবে। কিন্তু এটি ইসরায়েল একা অর্জন করতে পারবে না।

এই প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের হামলার তিনটি বড় লক্ষ্য ছিল—কেবল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা দুর্বল করা নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রকেও সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলা, ইরানের শাসকগোষ্ঠীকে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং দেশটিকে সিরিয়া বা লেবাননের মতো দুর্বল করে ফেলা, যেখানে ইসরায়েল নির্বিঘ্নে বোমা হামলা চালাতে পারবে, যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা ছাড়াই। তবে এ তিনটির মধ্যে কেবল একটি লক্ষ্য আংশিক সফল হয়। ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ‘ধ্বংস’ করতে পারেননি, কিংবা সেটিকে এমন জায়গায় পাঠাতে পারেননি, যেখানে বিষয়টিকে সমাধান হয়ে গেছে বলা যায়।

অন্যভাবে বললে, জুনের হামলায় ইসরায়েল সর্বোচ্চ ‘আংশিক সাফল্য’ পেয়েছে। ইসরায়েলের কাঙ্ক্ষিত ফল ছিল, ট্রাম্প যেন পূর্ণমাত্রায় জড়িয়ে পড়েন, ইরানের প্রচলিত বাহিনী এবং অর্থনৈতিক অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু বানান। কিন্তু ট্রাম্প দ্রুত ও নির্ণায়ক সামরিক পদক্ষেপের পক্ষপাতী হলেও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে যেতে ভয় পান। তাই তাঁর কৌশল ছিল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সীমিত হামলা চালানো, যাতে সংঘাত উসকে না উঠে। স্বল্পমেয়াদে ট্রাম্প এতে সফল হয়েছিলেন—তবে এটি ইসরায়েলের বিরক্তির কারণ হয়েছিল—কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে তিনি ইসরায়েলের তৈরি করা এক উত্তেজনাপূর্ণ চক্রে জড়িয়ে পড়েছেন।

ট্রাম্পের সীমিত বোমাবর্ষণ অভিযানের বাইরে না যাওয়ার সিদ্ধান্তই ছিল ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার বড় কারণ। যুদ্ধ চলতে থাকায় ইসরায়েল গুরুতর ক্ষতির মুখে পড়ে, দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ইরান ক্রমশ দক্ষতার সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তা ভেদ করে ইসরায়েলের ক্ষয়ক্ষতি করতে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র পুরোপুরি যুদ্ধে অংশ নিলে ইসরায়েল লড়াই চালিয়ে যেত, কিন্তু যখন স্পষ্ট হলো ট্রাম্পের হামলা কেবল এককালীন, তখন পরিস্থিতি বদলে যায়। ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধে টানতে সফল হয়েছিল, তবে ধরে রাখতে পারেনি।

ইসরায়েলের বাকি দুইটি লক্ষ্য স্পষ্টতই ব্যর্থ হয়েছে। গোয়েন্দা অভিযানে শুরুর দিকে কিছু সাফল্য মিলেছিল। যেমন, ইসরায়েল ইরানের ৩০ জ্যেষ্ঠ কমান্ডার এবং ১৯ পারমাণবিক বিজ্ঞানীকে হত্যা করতে পেরেছিল। কিন্তু এসব কেবল অস্থায়ীভাবে ইরানের কমান্ড ও কন্ট্রোল ব্যবস্থাকে ব্যাহত করেছিল। মাত্র ১৮ ঘণ্টার মধ্যেই ইরান বেশির ভাগ কমান্ডারকেই প্রতিস্থাপন করে এবং ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে প্রমাণিত হয়, বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও ইরান শক্তিশালী আঘাত হানার মতো সক্ষমতা ধরে রেখেছে।

ইসরায়েল আশা করেছিল, প্রথম দিকের হামলায় ইরানের শাসকগোষ্ঠীর ভেতর ভীতি ছড়িয়ে পড়বে এবং তাতে সরকারের পতন ত্বরান্বিত হবে। ওয়াশিংটন পোস্টের তথ্য অনুযায়ী, ফারসি ভাষায় দক্ষ মোসাদের এজেন্টরা ইরানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের মোবাইলে হুমকি দিয়েছিল। মোসাদ এজেন্টেরা হুমকি দিয়েছিল যে, তাদের ও পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হবে, যদি না তারা ভিডিও করে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। যুদ্ধের শুরুর সময়, এমন ২০ টিরও বেশি ফোন কল করা হয়েছিল। কিন্তু এর প্রমাণ নেই যে, একজন ইরানি জেনারেলও এই হুমকিতে নতি স্বীকার করেছিলেন। বরং শাসকগোষ্ঠীর সংহতি অটুট ছিল।

ইসরায়েলের প্রত্যাশার বিপরীতে, ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস বা বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) জ্যেষ্ঠ কমান্ডারদের হত্যার পরও দেশটিতে সরকারের বিরুদ্ধে কোনো গণবিক্ষোভ বা বিদ্রোহ দেখা যায়নি। উল্টো, রাজনৈতিক মতপার্থক্য ভুলে ইরানিরা দেশকে কেন্দ্র করে ঐক্যবদ্ধ হয়। জাতীয়তাবাদের ঢেউ দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ইসরায়েল ইরান সরকারের তথাকথিত অ-জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাতে পারেনি। প্রায় দুই বছর ধরে গাজায় হত্যাযজ্ঞ চালানো এবং পারমাণবিক আলোচনার সময় ইরানের ওপর প্রতারণামূলক হামলা করার পর কেবলমাত্র একটি ক্ষুদ্র অংশ—মূলত প্রবাসী ইরানিরাই—ইসরায়েলের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে।

বরং ইরানি জনগণকে শাসকগোষ্ঠীর বিপক্ষে দাঁড় করানোর পরিবর্তে ইসরায়েল ইসলামি প্রজাতন্ত্রের বয়ানকে নতুন জীবন দিয়েছে। আগে ইরানিদের একাংশ অভিযোগ করত, সরকারের বিনিয়োগ পরমাণু কর্মসূচি, ক্ষেপণাস্ত্র ও মিত্র অ-রাষ্ট্রীয় গোষ্ঠী গুলোতে কেন করা হচ্ছে। এখন অনেকে ক্ষুব্ধ যে, এসব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল না।

তেহরানের এক শিল্পী জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নারগেস বাজোগলিকে বলেন, ‘আগে আমি বিক্ষোভে অংশ নিয়ে স্লোগান দিতাম—ইরানের অর্থ লেবানন বা ফিলিস্তিনে পাঠিও না। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি, আমাদের যে বোমার মুখোমুখি হতে হয়, তা আসলে একটাই। আর যদি আমাদের পুরো অঞ্চলে শক্ত প্রতিরক্ষা না থাকে, তবে যুদ্ধ আমাদের ঘরে চলে আসবে।’

এই পরিবর্তিত মনোভাব কত দিন স্থায়ী হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে আপাতত ইসরায়েলের হামলা উল্টো ইরানের শাসনব্যবস্থাকেই শক্তিশালী করেছে—অভ্যন্তরীণ সংহতি জোরদার করেছে এবং রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে ব্যবধান কমিয়েছে। ইসরায়েল ইরানকে সিরিয়ার মতো যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করতেও ব্যর্থ হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া টেকসই আকাশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। যুদ্ধ চলাকালীন ইসরায়েল ইরানের আকাশসীমার কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করলেও তা ছিল না নির্বিঘ্ন। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, এবং তা ইসরায়েলের জন্য অসহনীয় হয়ে পড়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য সহায়তা ছাড়া ইসরায়েল হয়তো যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সক্ষম হতো না। যেমন, শুধু ১২ দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে যেসব থাড ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়েছিল তার ২৫ শতাংশ ব্যবহার করে ফেলেছে তেল আবিব। বাকি যা আছে, তার জোরে নতুন করে ইসরায়েলের ইরানে হামলা শুরুর সম্ভাবনা জোরদার হয়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ এবং সেনাপ্রধান ইয়াল জামির এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন। জামির বলেছেন, জুনের যুদ্ধ ছিল প্রথম ধাপ, আর এখন ইসরায়েল ‘সংঘাতের নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করছে।’

ইরান পুনরায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করুক বা না করুক, ইসরায়েল দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যে—তারা ইরানকে ক্ষেপণাস্ত্র ভান্ডার পুনরায় গড়ে তোলা, আকাশ প্রতিরক্ষা পুনর্গঠন বা উন্নত ব্যবস্থা মোতায়েনের সময় দেবে না। এই যুক্তিই ইসরায়েলের তথাকথিত ‘ঘাস কাটা’ কৌশলের মূল। এই কৌশলে প্রতিপক্ষকে বারবার ও আগেভাগেই আঘাত করা হয়, যাতে তারা এমন সামরিক সক্ষমতা তৈরি করতে না পারে যা ইসরায়েলের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে।

অর্থাৎ, ইরান যখন নতুন করে সামরিক সম্পদ গড়ে তুলছে, তখন সেটিই হয়ে উঠছে ইসরায়েলের কাছে দ্রুত হামলা চালানোর অজুহাত। এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র যখন মধ্যবর্তী নির্বাচনী মৌসুমে প্রবেশ করবে, তখন আরেকটি আক্রমণ দেশটির রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশকেও আরও জটিল করে তুলবে। তাই আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ইসরায়েল হামলা চালাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে এই ধরনের ফলাফল যাতে ইসরায়েল অর্জন করতে না পারে, তা ইরানি নেতারা ঠেকাতে চাইছেন। ইসরায়েলের ‘ঘাস কাটা’ কৌশল কার্যকর—এমন কোনো ধারণা ভাঙতে ইরান সম্ভবত পরবর্তী যুদ্ধে শুরুতেই ইসরায়েলে প্রচণ্ড ও দ্রুত আঘাত হানবে। এক্সে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি লিখেছেন, ‘আবার আগ্রাসন হলে আমরা আরও দৃঢ় প্রতিক্রিয়া জানাতে দ্বিধা করব না, আর তা আড়াল করা হবে অসম্ভব।’ ইরানি নেতাদের বিশ্বাস, ইসরায়েলের জন্য পরবর্তী যুদ্ধের ব্যয় এতটাই ভয়াবহ হতে হবে যে ধীরে ধীরে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা ক্ষয়ে যাবে এবং পুরো দেশ অরক্ষিত হয়ে পড়বে।

জুনের যুদ্ধ নিষ্পত্তিহীনভাবে শেষ হলেও, পরবর্তী যুদ্ধের ফল নির্ভর করবে কোন পক্ষ বেশি শিখেছে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারে তার ওপর। ইসরায়েল কি ইরানের তুলনায় দ্রুত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা মজুত করতে পারবে? মোসাদ কি এখনো ইরানের ভেতরে গভীর প্রভাব বিস্তার করে আছে, নাকি প্রথম দফার যুদ্ধে শাসন পরিবর্তনের চেষ্টায় তাদের বেশির ভাগ এসেটস ব্যয় হয়ে গেছে? ইরান কি ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা ভেদ করার ক্ষেত্রে বেশি জ্ঞান অর্জন করেছে, নাকি ইসরায়েল তাদের দুর্বলতা পূরণে বেশি সফল হয়েছে? আপাতত, কোনো পক্ষই এসব প্রশ্নের উত্তর নিশ্চিতভাবে দিতে পারছে না।

এ কারণেই ইরান নিশ্চিত হতে পারছে না যে, আরও শক্ত প্রতিক্রিয়া জানালেই ইসরায়েলের কৌশল ব্যর্থ হবে। তাই দেশটি তার পারমাণবিক অবস্থান নতুন করে বিবেচনা করতে পারে—বিশেষ করে যখন তাদের তথাকথিত প্রতিরোধ অক্ষ এবং পারমাণবিক অস্ত্রের বিষয়ে অস্পষ্টতাসহ অন্য উপায়গুলো অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।

দ্বিতীয় ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ হলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া হতে পারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধে জড়াতে তিনি অনিচ্ছুক বলেই মনে হয়। রাজনৈতিকভাবে, তাঁর প্রাথমিক হামলাই তাঁর মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইনে গৃহযুদ্ধ ডেকে এনেছিল। সামরিকভাবে, মাত্র ১২ দিনের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র মজুতে ভয়াবহ ঘাটতি ধরা পড়েছে। ট্রাম্প এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন উভয়েই এমন এক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য অংশের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবহার করেছেন, যেটিকে কোনো পক্ষই যুক্তরাষ্ট্রের মূল স্বার্থের জন্য অপরিহার্য মনে করে না।

কিন্তু প্রথম আঘাতের অনুমোদন দিয়ে ট্রাম্প আসলে ইসরায়েলের পাতা ফাঁদেই পা দিয়েছেন—এবং এখন তিনি সেখান থেকে বের হতে পারবেন কি না তা স্পষ্ট নয়। বিশেষত, যদি তিনি ইরানের সঙ্গে চুক্তির ক্ষেত্রে শূন্য সমৃদ্ধকরণকেই শর্ত মানতে থাকেন। সীমিত সম্পৃক্ততা এখন আর সম্ভব নয়। ট্রাম্পকে হয় পুরোপুরি যুদ্ধে নামতে হবে, নয়তো সম্পূর্ণ সরে দাঁড়াতে হবে। আর সরে দাঁড়ানো মানে শুধু একবার অস্বীকার করা নয়—বরং ইসরায়েলের চাপের মুখেও ধারাবাহিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। এখন পর্যন্ত তিনি সে ধরনের ইচ্ছাশক্তি বা দৃঢ়তা কোনোটি-ই দেখাননি।

অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকা'র সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩০
হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূ-রাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূ-রাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।

সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।

২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।

ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।

হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।

এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।

অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।

সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।

ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।

তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।

সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।

পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।

সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।

তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাইজেরিয়ায় কোন আইএসকে আঘাত করল মার্কিন বাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে আইএস আস্তানা লক্ষ্য করে মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে আইএস আস্তানা লক্ষ্য করে মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।

ইসলামিক স্টেট কী

ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।

পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।

বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়

মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।

এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।

লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল

আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।

মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।

আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা

কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।

নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাইজেরিয়ায় কেন হামলা চালাল মার্কিন বাহিনী, খ্রিষ্টান নিপীড়নের সঙ্গে এর সম্পর্ক কী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।

ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’

গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।

কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন

অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।

তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।

নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে

নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।

উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।

নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান

ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।

এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।

নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।

এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’

এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।

দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘ভেনেজুয়েলা সংকট’ কীভাবে আন্তর্জাতিক সংঘাতের রূপ নিচ্ছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।

ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।

ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।

ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।

এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।

‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।

সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত