
তিন বছর ধরে ইউক্রেন এমন পরিস্থিতি সহ্য করে আসছে, যা একসময় ছিল অকল্পনীয়। দেশটির রাজধানীতে আকাশ ও স্থল হামলা, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ; ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, গ্লাইড বোমা হামলা ও বিচারবহির্ভূত হত্যা— এমন কোনো ঘটনা নেই যা ঘটেনি। কিন্তু এখন কিয়েভ একেবারেই অপ্রত্যাশিত এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে, যেটির উৎস আবার ইউক্রেনের মিত্র বলে পরিচিতি পশ্চিমা বিশ্ব। আরও স্পষ্ট করে বললে, যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে এসেছে। রাশিয়ার সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্ক গড়ার নগ্ন প্রয়াস সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত অবস্থায় ফেলেছে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে। তিনি প্রকাশ্যেই ক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বহু প্রতীক্ষিত সৌদি আরব সফর স্থগিত করেছেন জেলেনস্কি। কারণ কিয়েভের ভাগ্য নির্ধারণের জন্য সংলাপে ‘ঘটনাচক্রে’ অংশ নিতে চাননি তিনি। জেলেনস্কি স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি— এটি খুবই বিস্ময়কর! আমি মনে করি, এটি অনেকের জন্যই অপ্রত্যাশিত ছিল।’ ঠিক পরদিন ১৯ ফেব্রুয়ারি পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জেলেনস্কিকে সরাসরি ‘অনির্বাচিত স্বৈরশাসক’ বলে আক্রমণ করেন ট্রাম্প।
পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের সংলাপের সিদ্ধান্ত এবং ক্রেমলিনের পুনর্বাসনে তাঁর সুস্পষ্ট আকাঙ্ক্ষা কিয়েভের রাজনৈতিক মহলে গভীর আলোড়ন তুলেছে। তবে সেই বিস্ময়ের ঘোর কেটে গেছে, সত্যিকার অর্থে এখন খুব বেশি বিস্মিত নন কেউ। জেলেনস্কির দলের এক জ্যেষ্ঠ এমপি বলেন, ‘যেদিন আমরা খবরটি শুনি, সেদিন আমাদের মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না, তবে এমন কিছু হবে বলে আমরা ধরে নিয়েছিলাম।’ কারণ, ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের জন্য ওয়াশিংটনের দরজা যে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, তা মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বুঝতে পেরেছি যে, রাশিয়ার ন্যারেটিভ আমেরিকায় কতটা গভীরভাবে শিকড় গেড়েছে!’ ইউক্রেনের বিরোধী দলীয় এক এমপি পার্লামেন্টে বিরাজমান এক ধরনের ‘অশুভ আশঙ্কার’ কথা উল্লেখ করেন। তাঁর আশঙ্কা, এমপিদের এমন এক অপমানজনক যুদ্ধবিরতি চুক্তির পক্ষে ভোট দিতে বাধ্য করা হতে পারে, যা তাদের জন্য লজ্জাজনক হবে।
ইউক্রেন যুদ্ধের করাল গ্রাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেও, দেশটির টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হবে। মানুষ, রাজনীতিবিদ ও সৈনিক থেকে শুরু করে সবাই ক্লান্ত। হাজারো মানুষ হতাহত হয়েছেন। লাখ লাখ মানুষ দেশ ছেড়েছেন। ইউরোপে পালিয়ে যাওয়া ৪৩ লাখ ইউক্রেনীয়দের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশেরও বেশির বয়স ১৮ বছরের কম। তাদের অনেকেই আর কখনো ফিরে আসবে না। দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা ছাড়া যেনতেন একটি চুক্তি হলে অনেক ইউক্রেনীয় বাবা-মার জন্য সন্তানদের বিদেশে পাঠানোর বিকল্প থাকবে না। বিষয়টি ইউক্রেনের জনমিতিতে বিদ্যমান অসন্তোষকে তীব্রতর করবে। ইউক্রেনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের শান্তি প্রয়োজন। এমন এক শান্তি, যা আমাদের ধ্বংস করবে না।’
যেসব পরিবারে কিশোর ছেলে আছে, তাদের কঠিন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তারা হয় সুযোগ থাকতেই ছেলেদের ইউরোপে পাঠিয়ে দেবে না হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশেই রেখে দিতে হবে। সাবেক সৈনিক সেরহি ভাসিলিউক এমন একটি জটিলতার মুখোমুখি। ১৭ বছর বয়সী ছেলে আন্দ্রিকে বিদেশ পাঠাতে তিনি ও তাঁর স্ত্রী একমত হলেও ছেলের দ্বিধাহীন অস্বীকার তাঁদের উদ্বেগের মধ্যে ফেলেছে। আন্দ্রি বলেছে, সে অন্য কোথাও ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছে না এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে। কিন্তু আন্দ্রির মা তা কোনোভাবেই মানতে রাজি নন। সেরহি অনিচ্ছাসত্ত্বেও ছেলের ইচ্ছায় সায় দিয়েছেন। কারণ ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুতে তরুণদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগের কাজ তিনিও করেছেন। তাই সেরহির জন্য বিষয়টা তেমন অসহনীয় নয়। তিনি বলেন, ওর মতো ছেলেরা যদি যুদ্ধে না থাকে, তাহলে লড়াই করার কেউ থাকবে না।
এত দীর্ঘ বিপর্যয়ের পরও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে এখনো পর্যন্ত চুক্তিতে আসার মতো কিছু হয়নি। কিন্তু ইউক্রেনের জনজীবনে ও রণক্ষেত্রে যে নেতিবাচক ঘটনাপ্রবাহ ঘটে যাচ্ছে, ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে বাইরের দুনিয়ায় ঠিক একইরকম ঘটনা ঘটছে। রাশিয়া একটি ফাঁদ পেতে রেখেছে। তা হলো- নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ও তাৎক্ষণিক নির্বাচন ছাড়া যুদ্ধবিরতির ডাক। সেটা ঘটলে ইউক্রেনের জনগণের ঐক্য বিনষ্ট হবে। ইউক্রেনের অনেকের আশঙ্কা, এখন ট্রাম্প প্রশাসন যে ধরনের ভাষা প্রয়োগ করছে, তাতে রাশিয়ার পাতা ফাঁদের ছায়া দেখা যাচ্ছে।
ইউক্রেনের সাবেক এক কূটনীতিক বলেন, ‘ট্রাম্প জেলেনস্কিকে সরাতে চান বলে মনে হচ্ছে। কারণ, তিনি কখনোই তাঁকে পছন্দ করেননি। জেলেনস্কিকে সামলোনো কঠিন বলে মনে করেন ট্রাম্প। তাই, নির্বাচন তাঁর কাছে কোনো ইস্যু নয়, উদ্দেশ্য জেলেনস্কিকে সরিয়ে দেওয়া।’
ট্রাম্পের গতি দ্রুত শান্তি অর্জনের ক্ষেত্র তৈরি না করলেও ইউক্রেনের জন্য অগ্রহণযোগ্য প্রস্তাব তৈরি করবে। এরপর সেই প্রস্তাব বাস্তবায়নের ভার পড়বে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির কাঁধে। তখন জেলেনস্কি চাপে পড়বেন, সেই ফাঁকে ট্রাম্প আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি করবেন। ট্রাম্পের ছক মোটামুটি স্পষ্ট। কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এখনো তাঁর বিপৎসীমাগুলো চিহ্নিত করতে পারেননি।
গত সপ্তাহে ইকোনমিস্টকে জেলেনস্কি বলেন, ‘খুনির’ (পুতিন) সঙ্গে বসার প্রস্তুতি মানেই আপস। তবে এরই মধ্যে জেলেনস্কি নির্দেশনা দিয়েছেন, তিনি নিরাপত্তার গ্যারান্টি ছাড়া যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবেন না, বা তাকে এড়িয়ে কোনো চুক্তি হলে তা মেনে নেবেন না। শীর্ষস্থানীয় এক ইউক্রেনের কর্মকর্তা বলেন, চুক্তির অংশ হিসেবে হারানো অঞ্চলগুলোকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে কখনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেবে না ইউক্রেন। তবে ন্যাটোর সদস্যপদ যে খুব দূরের সম্ভাবনা, তা তিনি স্বীকার করেন।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ইউক্রেনের জন্য ন্যূনতম ও গ্রহণযোগ্য চাওয়া হলো— পশ্চিমা বিশ্বের সেনাবাহিনীগুলোর সঙ্গে অব্যাহত সম্পর্ক বজায় রাখা, ইউক্রেনে পশ্চিমা বিশ্বের অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং বিদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর উপস্থিতি। সেই বাহিনীর কত বড় হবে, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ইউক্রেনে তাদের উপস্থিতি। তিনি বলেন, ‘যখন তারা এখানে থাকবে, আমরা বিশ্বাস করি, তাদের পক্ষে চলে যাওয়া কঠিন হবে।’
তাত্ত্বিকভাবে, ট্রাম্প যে চুক্তি করতে চান সেটির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে পারে ইউক্রেন। তবে বাস্তবতা হলো— সময়ের সঙ্গে ইউক্রেনের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। উভয় পক্ষের জন্যই যুদ্ধ নির্মম, তবে তা ইউক্রেনীয়দের জন্য বেশি কঠিন। কারণ, দেশটি অপেক্ষাকৃত দরিদ্র ও কম জনসংখ্যার। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছে। কিন্তু যুদ্ধ পরিচালনায় গুরুতর সমস্যা আছে এবং কৌশলগত পরিকল্পনার অভাব দেখা যাচ্ছে। ফ্রন্টলাইনে ব্রিগেডগুলো লোকবলের অভাবে ভুগছে, কিছু ব্রিগেডের আকার এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে।
এদিকে, সমাধান চাপিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের হাতে অনেক অস্ত্র আছে। তিনি সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দিতে পারেন; রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারেন; ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রের যোগাযোগের মেরুদণ্ড স্টারলিংক সেবা বন্ধ; এবং রিয়েল টাইম টার্গেটিং প্রযুক্তির মতো সহায়তাগুলো পাঠানো বন্ধ করে দিতে পারেন। ইউক্রেনের সামনে নতুন বিকল্প থাকলেও তা এসব সিস্টেম বন্ধের ক্ষতি পোষাতে পারবে না। এক জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘যদি জেলেনস্কি ১৮ এবং ২০ বছর বয়সী ছেলেদের মাঠে নামাতে পারেন, তাহলে লড়াই চালিয়ে যাওয়া অর্থপূর্ণ হতে পারে। তা নাহলে এমন একটি চুক্তি সম্মত হওয়াই তার জন্য সর্বোত্তম পথ।’
ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে ট্রাম্পের সংলাপে ইউরোপকে বাদ দেওয়ার ফলে এখন অনেক কিছুই নির্ভর করছে শুধু জেলেনস্কির ওপর। তাঁর পক্ষে ট্রাম্পের চাপিয়ে দেওয়া কঠিন দাবি ঠেকানোর ভাল যুক্তি আছে। এটির ওপর নির্ভর করছে জেলেনস্কির পদ এবং ইতিহাসে অবস্থান। কিন্তু নিজের পরিচয় দিতে শত্রুদের ব্যবহারে সিদ্ধ এক মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর মতো কাজটি তাঁর জন্য বিপজ্জনক এবং মানসিকভাবে কঠিন হতে পারে। অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো এরই মধ্যে উদ্বিগ্ন যে, জেলেনস্কি ক্রমাগত একটি সংকীর্ণ বৃত্তে আবদ্ধ হয়ে পড়ছেন। এটি ঠিক এমন এক সময়ে ঘটছে যখন তাঁর সবচেয়ে বেশি ব্যাপক সমর্থন প্রয়োজন। এক সূত্র বললেন, জেলেনস্কিকে ‘না’ বলার জন্য কেউ প্রস্তুত নন এবং তিনি ভুল করেই যাচ্ছেন। অনেক ইউক্রেনীয়ও স্পষ্টভাবে তাদের সমর অধিনায়কের প্রতি হতাশ।
ইউক্রেনের এক জরিপ অনুসারে, জেলেনস্কি প্রেসিডেন্ট হিসেবে সবচেয়ে জনপ্রিয়, তবে ভবিষ্যৎ নির্বাচনে সাবেক সেনাপ্রধান ভ্যালেরি জালুঝনির কাছে ৩০ থেকে ৬৫ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হতে পারেন। জালুঝনি এখনও রাজনীতিতে প্রবেশ করেননি। গত জানুয়ারির এক জরিপে দেখা যায়, জেলেনস্কির প্রতি মানুষের আস্থা কমে ৫২ শতাংশে নেমেছে। এটি যুদ্ধের সময়কালের মধ্যে নিম্নতম। অথচ, যুদ্ধের শুরুতে ইউক্রেনের ৯০ শতাংশ মানুষ তাঁর প্রতি আস্থা রাখতেন। তবে ১৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প বলেছিলেন, ইউক্রেনের মাত্র ৪ শতাংশ মানুষ জেলেনস্কিকে পছন্দ করে।
ইউক্রেনের সামগ্রিক পরিস্থিতি এখনো ‘সবচেয়ে খারাপ’ না হলেও ট্রাম্প ক্রেমলিনের নীলনকশা বাস্তবায়ন করলে পরিস্থিতি ‘দুঃস্বপ্ন’ হয়ে উঠতে সময় লাগবে না। ওই নীলনকশার আওতায় ইউক্রেনকে কার্যকর নিরাপত্তা গ্যারান্টি না দিয়েই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হবে, রাজনৈতিক অচলাবস্থায় পরিণত নির্বাচন, দুর্বল প্রেসিডেন্সি, ভগ্ন পার্লামেন্ট, তাঁরপর মাঠ থেকে সেনা প্রত্যাহার, ব্যাপক অভিবাসন এবং শেষ দৃশ্যে ইউক্রেনের ভেতরের সংহতি বিনষ্ট করা হবে।
এমনটা হলে যুদ্ধের শুরুতে ইউক্রেনীয়রা যে ঐক্য দেখিয়েছিল তা তখন কেবলই এক দূরবর্তী স্মৃতি হয়ে থাকবে। এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি অসম্ভব নয়। মনে রাখবেন, দেশে কোটি কোটি অস্ত্র আছে। এমনকি ফ্রন্টলাইনে মাত্র ২ হাজার ৪০০ ডলার দিয়েও একটি রুশ ট্যাংক কিনতে পারবেন।’
ইউক্রেন রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার লক্ষ্য পুতিন ত্যাগ করেছেন— তেমন একটা লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ১৭ বছর বয়সী ছেলের দিকে তাকিয়ে সেরহি ভাসিলিউক ভবিষ্যদ্বাণী করেন, ‘যতদিন সেই নষ্ট লোক (পুতিন) জীবিত থাকবে’ ততদিন যুদ্ধ চলতে থাকবে। তবে দেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তটি যুদ্ধের প্রথম কয়েকদিনে অতিক্রান্ত হয়েছে, যখন ইউক্রেনীয়রা রুশ ট্যাংকের সারি কিয়েভের দোরগোড়ায় থামিয়ে দিয়েছিল।
এক সময় সেরহি নিজেই রুশ বাহিনী ঠেকানোর দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু এখন মশাল তাঁর ছেলের প্রজন্মের হাতে। আগামী ৩ জুন আন্দ্রি ১৮ বছরে প্রবেশ করবে। ওই দিন আন্দ্রির দুটি কাজের পরিকল্পনা আছে— অর্থনীতি বিষয়ক ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হওয়া এবং ইউক্রেনের এলিট অ্যাসল্ট ইউনিটগুলোর একটিতে অংশগ্রহণ করা। এবিষয়ে আন্দ্রির বাবা বলেন, ‘এখন যুদ্ধ শেষ হলেও; যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠিত হলেও ভবিষ্যতে যে যুদ্ধ আর হবে না, তার নিশ্চয়তা নেই। তাই আমাদের অবশ্যই সবচেয়ে শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়তে হবে।’
অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান

তিন বছর ধরে ইউক্রেন এমন পরিস্থিতি সহ্য করে আসছে, যা একসময় ছিল অকল্পনীয়। দেশটির রাজধানীতে আকাশ ও স্থল হামলা, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ; ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, গ্লাইড বোমা হামলা ও বিচারবহির্ভূত হত্যা— এমন কোনো ঘটনা নেই যা ঘটেনি। কিন্তু এখন কিয়েভ একেবারেই অপ্রত্যাশিত এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে, যেটির উৎস আবার ইউক্রেনের মিত্র বলে পরিচিতি পশ্চিমা বিশ্ব। আরও স্পষ্ট করে বললে, যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে এসেছে। রাশিয়ার সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্ক গড়ার নগ্ন প্রয়াস সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত অবস্থায় ফেলেছে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে। তিনি প্রকাশ্যেই ক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বহু প্রতীক্ষিত সৌদি আরব সফর স্থগিত করেছেন জেলেনস্কি। কারণ কিয়েভের ভাগ্য নির্ধারণের জন্য সংলাপে ‘ঘটনাচক্রে’ অংশ নিতে চাননি তিনি। জেলেনস্কি স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি— এটি খুবই বিস্ময়কর! আমি মনে করি, এটি অনেকের জন্যই অপ্রত্যাশিত ছিল।’ ঠিক পরদিন ১৯ ফেব্রুয়ারি পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জেলেনস্কিকে সরাসরি ‘অনির্বাচিত স্বৈরশাসক’ বলে আক্রমণ করেন ট্রাম্প।
পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের সংলাপের সিদ্ধান্ত এবং ক্রেমলিনের পুনর্বাসনে তাঁর সুস্পষ্ট আকাঙ্ক্ষা কিয়েভের রাজনৈতিক মহলে গভীর আলোড়ন তুলেছে। তবে সেই বিস্ময়ের ঘোর কেটে গেছে, সত্যিকার অর্থে এখন খুব বেশি বিস্মিত নন কেউ। জেলেনস্কির দলের এক জ্যেষ্ঠ এমপি বলেন, ‘যেদিন আমরা খবরটি শুনি, সেদিন আমাদের মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না, তবে এমন কিছু হবে বলে আমরা ধরে নিয়েছিলাম।’ কারণ, ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের জন্য ওয়াশিংটনের দরজা যে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, তা মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বুঝতে পেরেছি যে, রাশিয়ার ন্যারেটিভ আমেরিকায় কতটা গভীরভাবে শিকড় গেড়েছে!’ ইউক্রেনের বিরোধী দলীয় এক এমপি পার্লামেন্টে বিরাজমান এক ধরনের ‘অশুভ আশঙ্কার’ কথা উল্লেখ করেন। তাঁর আশঙ্কা, এমপিদের এমন এক অপমানজনক যুদ্ধবিরতি চুক্তির পক্ষে ভোট দিতে বাধ্য করা হতে পারে, যা তাদের জন্য লজ্জাজনক হবে।
ইউক্রেন যুদ্ধের করাল গ্রাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেও, দেশটির টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হবে। মানুষ, রাজনীতিবিদ ও সৈনিক থেকে শুরু করে সবাই ক্লান্ত। হাজারো মানুষ হতাহত হয়েছেন। লাখ লাখ মানুষ দেশ ছেড়েছেন। ইউরোপে পালিয়ে যাওয়া ৪৩ লাখ ইউক্রেনীয়দের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশেরও বেশির বয়স ১৮ বছরের কম। তাদের অনেকেই আর কখনো ফিরে আসবে না। দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা ছাড়া যেনতেন একটি চুক্তি হলে অনেক ইউক্রেনীয় বাবা-মার জন্য সন্তানদের বিদেশে পাঠানোর বিকল্প থাকবে না। বিষয়টি ইউক্রেনের জনমিতিতে বিদ্যমান অসন্তোষকে তীব্রতর করবে। ইউক্রেনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের শান্তি প্রয়োজন। এমন এক শান্তি, যা আমাদের ধ্বংস করবে না।’
যেসব পরিবারে কিশোর ছেলে আছে, তাদের কঠিন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তারা হয় সুযোগ থাকতেই ছেলেদের ইউরোপে পাঠিয়ে দেবে না হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশেই রেখে দিতে হবে। সাবেক সৈনিক সেরহি ভাসিলিউক এমন একটি জটিলতার মুখোমুখি। ১৭ বছর বয়সী ছেলে আন্দ্রিকে বিদেশ পাঠাতে তিনি ও তাঁর স্ত্রী একমত হলেও ছেলের দ্বিধাহীন অস্বীকার তাঁদের উদ্বেগের মধ্যে ফেলেছে। আন্দ্রি বলেছে, সে অন্য কোথাও ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছে না এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে। কিন্তু আন্দ্রির মা তা কোনোভাবেই মানতে রাজি নন। সেরহি অনিচ্ছাসত্ত্বেও ছেলের ইচ্ছায় সায় দিয়েছেন। কারণ ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুতে তরুণদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগের কাজ তিনিও করেছেন। তাই সেরহির জন্য বিষয়টা তেমন অসহনীয় নয়। তিনি বলেন, ওর মতো ছেলেরা যদি যুদ্ধে না থাকে, তাহলে লড়াই করার কেউ থাকবে না।
এত দীর্ঘ বিপর্যয়ের পরও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে এখনো পর্যন্ত চুক্তিতে আসার মতো কিছু হয়নি। কিন্তু ইউক্রেনের জনজীবনে ও রণক্ষেত্রে যে নেতিবাচক ঘটনাপ্রবাহ ঘটে যাচ্ছে, ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে বাইরের দুনিয়ায় ঠিক একইরকম ঘটনা ঘটছে। রাশিয়া একটি ফাঁদ পেতে রেখেছে। তা হলো- নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ও তাৎক্ষণিক নির্বাচন ছাড়া যুদ্ধবিরতির ডাক। সেটা ঘটলে ইউক্রেনের জনগণের ঐক্য বিনষ্ট হবে। ইউক্রেনের অনেকের আশঙ্কা, এখন ট্রাম্প প্রশাসন যে ধরনের ভাষা প্রয়োগ করছে, তাতে রাশিয়ার পাতা ফাঁদের ছায়া দেখা যাচ্ছে।
ইউক্রেনের সাবেক এক কূটনীতিক বলেন, ‘ট্রাম্প জেলেনস্কিকে সরাতে চান বলে মনে হচ্ছে। কারণ, তিনি কখনোই তাঁকে পছন্দ করেননি। জেলেনস্কিকে সামলোনো কঠিন বলে মনে করেন ট্রাম্প। তাই, নির্বাচন তাঁর কাছে কোনো ইস্যু নয়, উদ্দেশ্য জেলেনস্কিকে সরিয়ে দেওয়া।’
ট্রাম্পের গতি দ্রুত শান্তি অর্জনের ক্ষেত্র তৈরি না করলেও ইউক্রেনের জন্য অগ্রহণযোগ্য প্রস্তাব তৈরি করবে। এরপর সেই প্রস্তাব বাস্তবায়নের ভার পড়বে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির কাঁধে। তখন জেলেনস্কি চাপে পড়বেন, সেই ফাঁকে ট্রাম্প আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি করবেন। ট্রাম্পের ছক মোটামুটি স্পষ্ট। কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এখনো তাঁর বিপৎসীমাগুলো চিহ্নিত করতে পারেননি।
গত সপ্তাহে ইকোনমিস্টকে জেলেনস্কি বলেন, ‘খুনির’ (পুতিন) সঙ্গে বসার প্রস্তুতি মানেই আপস। তবে এরই মধ্যে জেলেনস্কি নির্দেশনা দিয়েছেন, তিনি নিরাপত্তার গ্যারান্টি ছাড়া যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবেন না, বা তাকে এড়িয়ে কোনো চুক্তি হলে তা মেনে নেবেন না। শীর্ষস্থানীয় এক ইউক্রেনের কর্মকর্তা বলেন, চুক্তির অংশ হিসেবে হারানো অঞ্চলগুলোকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে কখনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেবে না ইউক্রেন। তবে ন্যাটোর সদস্যপদ যে খুব দূরের সম্ভাবনা, তা তিনি স্বীকার করেন।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ইউক্রেনের জন্য ন্যূনতম ও গ্রহণযোগ্য চাওয়া হলো— পশ্চিমা বিশ্বের সেনাবাহিনীগুলোর সঙ্গে অব্যাহত সম্পর্ক বজায় রাখা, ইউক্রেনে পশ্চিমা বিশ্বের অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং বিদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর উপস্থিতি। সেই বাহিনীর কত বড় হবে, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ইউক্রেনে তাদের উপস্থিতি। তিনি বলেন, ‘যখন তারা এখানে থাকবে, আমরা বিশ্বাস করি, তাদের পক্ষে চলে যাওয়া কঠিন হবে।’
তাত্ত্বিকভাবে, ট্রাম্প যে চুক্তি করতে চান সেটির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে পারে ইউক্রেন। তবে বাস্তবতা হলো— সময়ের সঙ্গে ইউক্রেনের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। উভয় পক্ষের জন্যই যুদ্ধ নির্মম, তবে তা ইউক্রেনীয়দের জন্য বেশি কঠিন। কারণ, দেশটি অপেক্ষাকৃত দরিদ্র ও কম জনসংখ্যার। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছে। কিন্তু যুদ্ধ পরিচালনায় গুরুতর সমস্যা আছে এবং কৌশলগত পরিকল্পনার অভাব দেখা যাচ্ছে। ফ্রন্টলাইনে ব্রিগেডগুলো লোকবলের অভাবে ভুগছে, কিছু ব্রিগেডের আকার এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে।
এদিকে, সমাধান চাপিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের হাতে অনেক অস্ত্র আছে। তিনি সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দিতে পারেন; রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারেন; ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রের যোগাযোগের মেরুদণ্ড স্টারলিংক সেবা বন্ধ; এবং রিয়েল টাইম টার্গেটিং প্রযুক্তির মতো সহায়তাগুলো পাঠানো বন্ধ করে দিতে পারেন। ইউক্রেনের সামনে নতুন বিকল্প থাকলেও তা এসব সিস্টেম বন্ধের ক্ষতি পোষাতে পারবে না। এক জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘যদি জেলেনস্কি ১৮ এবং ২০ বছর বয়সী ছেলেদের মাঠে নামাতে পারেন, তাহলে লড়াই চালিয়ে যাওয়া অর্থপূর্ণ হতে পারে। তা নাহলে এমন একটি চুক্তি সম্মত হওয়াই তার জন্য সর্বোত্তম পথ।’
ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে ট্রাম্পের সংলাপে ইউরোপকে বাদ দেওয়ার ফলে এখন অনেক কিছুই নির্ভর করছে শুধু জেলেনস্কির ওপর। তাঁর পক্ষে ট্রাম্পের চাপিয়ে দেওয়া কঠিন দাবি ঠেকানোর ভাল যুক্তি আছে। এটির ওপর নির্ভর করছে জেলেনস্কির পদ এবং ইতিহাসে অবস্থান। কিন্তু নিজের পরিচয় দিতে শত্রুদের ব্যবহারে সিদ্ধ এক মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর মতো কাজটি তাঁর জন্য বিপজ্জনক এবং মানসিকভাবে কঠিন হতে পারে। অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো এরই মধ্যে উদ্বিগ্ন যে, জেলেনস্কি ক্রমাগত একটি সংকীর্ণ বৃত্তে আবদ্ধ হয়ে পড়ছেন। এটি ঠিক এমন এক সময়ে ঘটছে যখন তাঁর সবচেয়ে বেশি ব্যাপক সমর্থন প্রয়োজন। এক সূত্র বললেন, জেলেনস্কিকে ‘না’ বলার জন্য কেউ প্রস্তুত নন এবং তিনি ভুল করেই যাচ্ছেন। অনেক ইউক্রেনীয়ও স্পষ্টভাবে তাদের সমর অধিনায়কের প্রতি হতাশ।
ইউক্রেনের এক জরিপ অনুসারে, জেলেনস্কি প্রেসিডেন্ট হিসেবে সবচেয়ে জনপ্রিয়, তবে ভবিষ্যৎ নির্বাচনে সাবেক সেনাপ্রধান ভ্যালেরি জালুঝনির কাছে ৩০ থেকে ৬৫ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হতে পারেন। জালুঝনি এখনও রাজনীতিতে প্রবেশ করেননি। গত জানুয়ারির এক জরিপে দেখা যায়, জেলেনস্কির প্রতি মানুষের আস্থা কমে ৫২ শতাংশে নেমেছে। এটি যুদ্ধের সময়কালের মধ্যে নিম্নতম। অথচ, যুদ্ধের শুরুতে ইউক্রেনের ৯০ শতাংশ মানুষ তাঁর প্রতি আস্থা রাখতেন। তবে ১৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প বলেছিলেন, ইউক্রেনের মাত্র ৪ শতাংশ মানুষ জেলেনস্কিকে পছন্দ করে।
ইউক্রেনের সামগ্রিক পরিস্থিতি এখনো ‘সবচেয়ে খারাপ’ না হলেও ট্রাম্প ক্রেমলিনের নীলনকশা বাস্তবায়ন করলে পরিস্থিতি ‘দুঃস্বপ্ন’ হয়ে উঠতে সময় লাগবে না। ওই নীলনকশার আওতায় ইউক্রেনকে কার্যকর নিরাপত্তা গ্যারান্টি না দিয়েই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হবে, রাজনৈতিক অচলাবস্থায় পরিণত নির্বাচন, দুর্বল প্রেসিডেন্সি, ভগ্ন পার্লামেন্ট, তাঁরপর মাঠ থেকে সেনা প্রত্যাহার, ব্যাপক অভিবাসন এবং শেষ দৃশ্যে ইউক্রেনের ভেতরের সংহতি বিনষ্ট করা হবে।
এমনটা হলে যুদ্ধের শুরুতে ইউক্রেনীয়রা যে ঐক্য দেখিয়েছিল তা তখন কেবলই এক দূরবর্তী স্মৃতি হয়ে থাকবে। এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি অসম্ভব নয়। মনে রাখবেন, দেশে কোটি কোটি অস্ত্র আছে। এমনকি ফ্রন্টলাইনে মাত্র ২ হাজার ৪০০ ডলার দিয়েও একটি রুশ ট্যাংক কিনতে পারবেন।’
ইউক্রেন রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার লক্ষ্য পুতিন ত্যাগ করেছেন— তেমন একটা লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ১৭ বছর বয়সী ছেলের দিকে তাকিয়ে সেরহি ভাসিলিউক ভবিষ্যদ্বাণী করেন, ‘যতদিন সেই নষ্ট লোক (পুতিন) জীবিত থাকবে’ ততদিন যুদ্ধ চলতে থাকবে। তবে দেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তটি যুদ্ধের প্রথম কয়েকদিনে অতিক্রান্ত হয়েছে, যখন ইউক্রেনীয়রা রুশ ট্যাংকের সারি কিয়েভের দোরগোড়ায় থামিয়ে দিয়েছিল।
এক সময় সেরহি নিজেই রুশ বাহিনী ঠেকানোর দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু এখন মশাল তাঁর ছেলের প্রজন্মের হাতে। আগামী ৩ জুন আন্দ্রি ১৮ বছরে প্রবেশ করবে। ওই দিন আন্দ্রির দুটি কাজের পরিকল্পনা আছে— অর্থনীতি বিষয়ক ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হওয়া এবং ইউক্রেনের এলিট অ্যাসল্ট ইউনিটগুলোর একটিতে অংশগ্রহণ করা। এবিষয়ে আন্দ্রির বাবা বলেন, ‘এখন যুদ্ধ শেষ হলেও; যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠিত হলেও ভবিষ্যতে যে যুদ্ধ আর হবে না, তার নিশ্চয়তা নেই। তাই আমাদের অবশ্যই সবচেয়ে শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়তে হবে।’
অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
১ দিন আগে
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
২ দিন আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
২ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
উশাকভ মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের সম্পূর্ণ এলাকার ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ দাবির কথাই বলেছিলেন। পুতিন ইউক্রেনে হাজার হাজার সৈন্য পাঠানোর প্রায় ৪ বছর পরও এবং দোনেৎস্কে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহের এক দশকেরও বেশি সময় পর অঞ্চলটির কিছু অংশ এখনো ইউক্রেনের হাতে আছে।
প্রায় সব দেশই দোনেৎস্ককে ইউক্রেনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু এটি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের চারটি অঞ্চলের মধ্যে একটি, যা মস্কো ২০২২ সালে একটি গণভোটের পর সংযুক্ত করার কথা ঘোষণা করে। কিয়েভ ও পশ্চিমা দেশগুলো সেই গণভোটকে ‘প্রহসন’ বলে বাতিল করে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফক্স নিউজকে বলেছিলেন, যুদ্ধটি এখন দোনেৎস্কের সেই ২০ শতাংশ বা ৫ হাজার বর্গকিলোমিটারের এলাকা নিয়ে, যা রাশিয়া নিয়ন্ত্রণ করে না কিন্তু চায়।
পুতিন ২০২২ সালে ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর সময় বলেছিলেন, তাঁর লক্ষ্য হলো ‘গত আট বছর ধরে যারা ভয়ভীতি ও গণহত্যার শিকার হয়েছেন...সেই মানুষগুলোকে রক্ষা করা।’ ইউক্রেন এবং তার মিত্ররা বলেছিল, পুতিনের এই দাবি ঔপনিবেশিক ধাঁচের এবং এলাকা দখলের জন্য একটি মিথ্যা অজুহাত মাত্র।
পুতিনের এই দাবি মূলত দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ের দিকে ইঙ্গিত করে, যারা ২০১৪ সালে ইউক্রেনীয় সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিছু এলাকা দখল করেছিল। পূর্ব ইউক্রেনে এর পরের সংঘর্ষে উভয় পক্ষই শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছিল। মস্কো এই অঞ্চলের বিশাল রুশভাষী জনসংখ্যাকে উদ্ধৃত করে বলেছিল যে,২০২২ সালে হস্তক্ষেপ করা তাদের নৈতিক কর্তব্য।
কিয়েভ বলেছিল, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় শক্তি দিয়ে জবাব দেওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় ছিল না এবং তারাও বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীর বিরুদ্ধে শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের অভিযোগ এনেছিল। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সালের শুরু পর্যন্ত ইউক্রেনীয় সরকারি বাহিনী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে সংঘাতে উভয় পক্ষে ৩ হাজার ১০৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৯ হাজার বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছিলেন।
দোনেৎস্কের বাকি যে অংশটি রাশিয়া চায়, তার মধ্যে রয়েছে স্লোভিয়ানস্ক এবং ক্রামাতোরস্ক—দুটি ‘দুর্গনগরী’ যা ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এই শহরগুলো ইউক্রেনের বাকি অঞ্চল রক্ষার জন্য কিয়েভের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দোনেৎস্কের পশ্চিমের ভূমি অনেকটাই সমতল এবং বিশাল খোলা মাঠ; যা রাশিয়াকে দোনেৎস্কের বাইরে অগ্রসর হতে এবং দিনিপ্রো নদীর পূর্ব তীর পর্যন্ত এলাকা দখল করার পথ সহজ করে দেবে।
শহরগুলো পরিখা, ট্যাংক-বিধ্বংসী বাধা, বাংকার এবং মাইনক্ষেত্রসহ অত্যন্ত সুরক্ষিত প্রতিরক্ষা লাইনের অংশ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, গণভোট ছাড়া দোনেৎস্কের বাকি অংশ রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়া অবৈধ হবে এবং তা ভবিষ্যতে ইউক্রেনের গভীরে আক্রমণের জন্য রাশিয়াকে একটি পথ খুলে দেবে।
কিয়েভের আশঙ্কা, যদি তারা দোনেৎস্কের বাকি অংশ ছেড়ে দেয়, তবে রাশিয়া আবার অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হবে এবং একসময় দোনেৎস্ক ব্যবহার করে পশ্চিম দিকে আক্রমণ চালাবে।
উভয় পক্ষই দোনেৎস্ককে কেন্দ্র করে যুদ্ধে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে এবং প্রচুর অর্থ ও সরঞ্জাম ব্যয় করেছে। এর মধ্যে বাখমুত শহরের লড়াইও রয়েছে। যেখানে রাশিয়া হাজার হাজার দণ্ডিত অপরাধীকে ভাড়াটে সৈন্যে পরিণত করে রণক্ষেত্রে নামিয়েছিল। এ কারণে, দোনেৎস্ক উভয় দেশের জনমানসে আরও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ফলে কারও পক্ষে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করা কঠিন।
ইউক্রেন চায় না যে, রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে জয় করতে ব্যর্থ হওয়া ভূখণ্ডকে উপহার হিসেবে পাক এবং জেলেনস্কি বলেছেন, যে যুদ্ধ রাশিয়া শুরু করেছে, তার জন্য তাদের পুরস্কৃত করা উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার অক্টোবর মাসে বলেছিল, রাশিয়ার অগ্রগতির হার দেখে মনে হয় না যে তারা খুব শিগগিরই দোনেৎস্কের বাকি অংশ দখল করতে চলেছে। তবে ‘রাশিয়ার অগ্রগতির একটি অপরিবর্তনীয় হার ধরে নিলে’ তারা ২০২৭ সালের আগস্টের মধ্যে তা নিতে পারে।
রাশিয়ার কমান্ডাররা অবশ্য আরও বেশি আশাবাদী। জেনারেল স্টাফের প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ রোববার পুতিনকে বলেছেন, মস্কোর বাহিনী পুরো ফ্রন্ট লাইন বরাবর অগ্রসর হচ্ছে এবং দনবাসের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য কাজ করছে।
দোনেৎস্ক বন্দর, রেলপথ এবং অন্যান্য ভারী শিল্পের কেন্দ্র। এটি একসময় ইউক্রেনের কয়লা, পরিশোধিত ইস্পাত, কোক, ঢালাই লোহা এবং ইস্পাত উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি সরবরাহ করত, তবে যুদ্ধের কারণে অনেক খনি ও কারখানা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া, দোনেৎস্কে বিরল মৃত্তিকা, টাইটানিয়াম এবং জিরকোনিয়াম রয়েছে—যা এটিকে নিয়ন্ত্রণকারী পক্ষের জন্য আয়ের উৎস।
দোনেৎস্কের ভাগ্য পুতিন এবং জেলেনস্কি উভয়ের ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারকে প্রভাবিত করতে পারে। পুতিন নিজেকে জাতিগত রুশদের রক্ষক হিসেবে তুলে ধরেছেন, তারা যেখানেই থাকুক না কেন। পুরো দোনেৎস্ককে সুরক্ষিত করা এই বক্তব্যের মূল কেন্দ্রবিন্দু। জেলেনস্কি ২০১৯ সালে পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধ অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। ২০২২ সাল থেকে তিনি অনেক বড়, বৈরী প্রতিবেশীর মুখে অস্ত্র এবং সংখ্যায় কম ইউক্রেনের এক দৃঢ় রক্ষক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন।
লড়াই না করে দোনেৎস্ক ছেড়ে দেওয়া—যেখানে অন্তত আড়াই লাখ ইউক্রেনীয় বাস করে—ইউক্রেনীয়দের কাছে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখা হতে পারে, যাদের অনেকেই যুদ্ধক্ষেত্রে স্বজন হারিয়েছেন। কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজির সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুসারে, ইউক্রেনীয়দের একটি সংকীর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এখনো আঞ্চলিক ছাড়ের বিরোধিতা করে।
জেলেনস্কিসহ ইউক্রেনের কর্মকর্তারা যেকোনো শান্তি চুক্তির অধীনে কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূমি ছাড়ার সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। জেলেনস্কি বলেন, তাঁর ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার কোনো ম্যান্ডেট নেই এবং রাষ্ট্রের ভূমি ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো কেনা-বেচা করা যায় না। ইউক্রেনের সংবিধান অনুসারে, আঞ্চলিক পরিবর্তন অবশ্যই একটি গণভোটের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে, যা ইউক্রেনের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ, অন্তত ৩০ লাখ ইউক্রেনীয় ভোটারের স্বাক্ষর থাকলে আয়োজন করা যেতে পারে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই গণভোটের বিষয়টির সমালোচনা করেছেন এবং তিনি বলেছিলেন, ‘কিছু ভূমি অদল-বদল হবে।’ এখন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা মূলত এই দোনেৎস্কের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে যাবে সেটাই নিয়েই থমকে আছে।
রয়টার্স থেকে পরিমার্জিত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
উশাকভ মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের সম্পূর্ণ এলাকার ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ দাবির কথাই বলেছিলেন। পুতিন ইউক্রেনে হাজার হাজার সৈন্য পাঠানোর প্রায় ৪ বছর পরও এবং দোনেৎস্কে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহের এক দশকেরও বেশি সময় পর অঞ্চলটির কিছু অংশ এখনো ইউক্রেনের হাতে আছে।
প্রায় সব দেশই দোনেৎস্ককে ইউক্রেনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু এটি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের চারটি অঞ্চলের মধ্যে একটি, যা মস্কো ২০২২ সালে একটি গণভোটের পর সংযুক্ত করার কথা ঘোষণা করে। কিয়েভ ও পশ্চিমা দেশগুলো সেই গণভোটকে ‘প্রহসন’ বলে বাতিল করে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফক্স নিউজকে বলেছিলেন, যুদ্ধটি এখন দোনেৎস্কের সেই ২০ শতাংশ বা ৫ হাজার বর্গকিলোমিটারের এলাকা নিয়ে, যা রাশিয়া নিয়ন্ত্রণ করে না কিন্তু চায়।
পুতিন ২০২২ সালে ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর সময় বলেছিলেন, তাঁর লক্ষ্য হলো ‘গত আট বছর ধরে যারা ভয়ভীতি ও গণহত্যার শিকার হয়েছেন...সেই মানুষগুলোকে রক্ষা করা।’ ইউক্রেন এবং তার মিত্ররা বলেছিল, পুতিনের এই দাবি ঔপনিবেশিক ধাঁচের এবং এলাকা দখলের জন্য একটি মিথ্যা অজুহাত মাত্র।
পুতিনের এই দাবি মূলত দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ের দিকে ইঙ্গিত করে, যারা ২০১৪ সালে ইউক্রেনীয় সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিছু এলাকা দখল করেছিল। পূর্ব ইউক্রেনে এর পরের সংঘর্ষে উভয় পক্ষই শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছিল। মস্কো এই অঞ্চলের বিশাল রুশভাষী জনসংখ্যাকে উদ্ধৃত করে বলেছিল যে,২০২২ সালে হস্তক্ষেপ করা তাদের নৈতিক কর্তব্য।
কিয়েভ বলেছিল, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় শক্তি দিয়ে জবাব দেওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় ছিল না এবং তারাও বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীর বিরুদ্ধে শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের অভিযোগ এনেছিল। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সালের শুরু পর্যন্ত ইউক্রেনীয় সরকারি বাহিনী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে সংঘাতে উভয় পক্ষে ৩ হাজার ১০৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৯ হাজার বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছিলেন।
দোনেৎস্কের বাকি যে অংশটি রাশিয়া চায়, তার মধ্যে রয়েছে স্লোভিয়ানস্ক এবং ক্রামাতোরস্ক—দুটি ‘দুর্গনগরী’ যা ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এই শহরগুলো ইউক্রেনের বাকি অঞ্চল রক্ষার জন্য কিয়েভের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দোনেৎস্কের পশ্চিমের ভূমি অনেকটাই সমতল এবং বিশাল খোলা মাঠ; যা রাশিয়াকে দোনেৎস্কের বাইরে অগ্রসর হতে এবং দিনিপ্রো নদীর পূর্ব তীর পর্যন্ত এলাকা দখল করার পথ সহজ করে দেবে।
শহরগুলো পরিখা, ট্যাংক-বিধ্বংসী বাধা, বাংকার এবং মাইনক্ষেত্রসহ অত্যন্ত সুরক্ষিত প্রতিরক্ষা লাইনের অংশ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, গণভোট ছাড়া দোনেৎস্কের বাকি অংশ রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়া অবৈধ হবে এবং তা ভবিষ্যতে ইউক্রেনের গভীরে আক্রমণের জন্য রাশিয়াকে একটি পথ খুলে দেবে।
কিয়েভের আশঙ্কা, যদি তারা দোনেৎস্কের বাকি অংশ ছেড়ে দেয়, তবে রাশিয়া আবার অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হবে এবং একসময় দোনেৎস্ক ব্যবহার করে পশ্চিম দিকে আক্রমণ চালাবে।
উভয় পক্ষই দোনেৎস্ককে কেন্দ্র করে যুদ্ধে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে এবং প্রচুর অর্থ ও সরঞ্জাম ব্যয় করেছে। এর মধ্যে বাখমুত শহরের লড়াইও রয়েছে। যেখানে রাশিয়া হাজার হাজার দণ্ডিত অপরাধীকে ভাড়াটে সৈন্যে পরিণত করে রণক্ষেত্রে নামিয়েছিল। এ কারণে, দোনেৎস্ক উভয় দেশের জনমানসে আরও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ফলে কারও পক্ষে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করা কঠিন।
ইউক্রেন চায় না যে, রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে জয় করতে ব্যর্থ হওয়া ভূখণ্ডকে উপহার হিসেবে পাক এবং জেলেনস্কি বলেছেন, যে যুদ্ধ রাশিয়া শুরু করেছে, তার জন্য তাদের পুরস্কৃত করা উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার অক্টোবর মাসে বলেছিল, রাশিয়ার অগ্রগতির হার দেখে মনে হয় না যে তারা খুব শিগগিরই দোনেৎস্কের বাকি অংশ দখল করতে চলেছে। তবে ‘রাশিয়ার অগ্রগতির একটি অপরিবর্তনীয় হার ধরে নিলে’ তারা ২০২৭ সালের আগস্টের মধ্যে তা নিতে পারে।
রাশিয়ার কমান্ডাররা অবশ্য আরও বেশি আশাবাদী। জেনারেল স্টাফের প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ রোববার পুতিনকে বলেছেন, মস্কোর বাহিনী পুরো ফ্রন্ট লাইন বরাবর অগ্রসর হচ্ছে এবং দনবাসের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য কাজ করছে।
দোনেৎস্ক বন্দর, রেলপথ এবং অন্যান্য ভারী শিল্পের কেন্দ্র। এটি একসময় ইউক্রেনের কয়লা, পরিশোধিত ইস্পাত, কোক, ঢালাই লোহা এবং ইস্পাত উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি সরবরাহ করত, তবে যুদ্ধের কারণে অনেক খনি ও কারখানা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া, দোনেৎস্কে বিরল মৃত্তিকা, টাইটানিয়াম এবং জিরকোনিয়াম রয়েছে—যা এটিকে নিয়ন্ত্রণকারী পক্ষের জন্য আয়ের উৎস।
দোনেৎস্কের ভাগ্য পুতিন এবং জেলেনস্কি উভয়ের ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারকে প্রভাবিত করতে পারে। পুতিন নিজেকে জাতিগত রুশদের রক্ষক হিসেবে তুলে ধরেছেন, তারা যেখানেই থাকুক না কেন। পুরো দোনেৎস্ককে সুরক্ষিত করা এই বক্তব্যের মূল কেন্দ্রবিন্দু। জেলেনস্কি ২০১৯ সালে পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধ অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। ২০২২ সাল থেকে তিনি অনেক বড়, বৈরী প্রতিবেশীর মুখে অস্ত্র এবং সংখ্যায় কম ইউক্রেনের এক দৃঢ় রক্ষক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন।
লড়াই না করে দোনেৎস্ক ছেড়ে দেওয়া—যেখানে অন্তত আড়াই লাখ ইউক্রেনীয় বাস করে—ইউক্রেনীয়দের কাছে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখা হতে পারে, যাদের অনেকেই যুদ্ধক্ষেত্রে স্বজন হারিয়েছেন। কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজির সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুসারে, ইউক্রেনীয়দের একটি সংকীর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এখনো আঞ্চলিক ছাড়ের বিরোধিতা করে।
জেলেনস্কিসহ ইউক্রেনের কর্মকর্তারা যেকোনো শান্তি চুক্তির অধীনে কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূমি ছাড়ার সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। জেলেনস্কি বলেন, তাঁর ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার কোনো ম্যান্ডেট নেই এবং রাষ্ট্রের ভূমি ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো কেনা-বেচা করা যায় না। ইউক্রেনের সংবিধান অনুসারে, আঞ্চলিক পরিবর্তন অবশ্যই একটি গণভোটের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে, যা ইউক্রেনের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ, অন্তত ৩০ লাখ ইউক্রেনীয় ভোটারের স্বাক্ষর থাকলে আয়োজন করা যেতে পারে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই গণভোটের বিষয়টির সমালোচনা করেছেন এবং তিনি বলেছিলেন, ‘কিছু ভূমি অদল-বদল হবে।’ এখন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা মূলত এই দোনেৎস্কের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে যাবে সেটাই নিয়েই থমকে আছে।
রয়টার্স থেকে পরিমার্জিত

ইউক্রেনের সাবেক এক কূটনীতিক বলেন, ‘ট্রাম্প জেলেনস্কিকে সরাতে চান বলে মনে হচ্ছে। কারণ, তিনি কখনোই তাঁকে পছন্দ করেননি। জেলেনস্কিকে সামলোনো কঠিন বলে মনে করেন ট্রাম্প। তাই, নির্বাচন তাঁর কাছে কোনো ইস্যু নয়, উদ্দেশ্য জেলেনস্কিকে সরিয়ে দেওয়া।’
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
২ দিন আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
২ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
সম্প্রতি টেসলার মালিক ইলন মাস্ক গত নভেম্বরে এমন এক পে-অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, যা তাঁকে একজন ট্রিলিয়ন ডলারের মালিকে পরিণত করতে পারে। তিনি ইতিমধ্যেই বিশ্বের শীর্ষ ধনী। যদি তিনি প্রস্তাবিত পূর্ণ প্যাকেজটি পান, তাহলে তিনি বিশ্বের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হবেন। ফোর্বসের হিসেবে বর্তমানে বিশ্বের ৩ হাজার ২৮ জন বিলিয়নিয়ার আছেন। তাঁদের মোট সম্পদ প্রায় ১৬.১ ট্রিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে পৃথিবীতে এখনো প্রায় ৮৩ কোটি ১০ লাখ মানুষ দৈনিক তিন ডলারের নিচে আয় করে চরম দারিদ্র্যে দিন কাটান।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের এই বিপুল সম্পদ বৈষম্য শুধু অর্থনীতিকে নয়, রাজনীতি, মিডিয়া ও চিন্তাকেও প্রভাবিত করে। অনেকেই মনে করেন, বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ ও ক্ষমতা বিশ্বব্যবস্থাকে ‘অতি ধনীদের স্বার্থে’ পুনর্গঠন করছে। আবার অন্য একটি মত বলছে, বিলিয়নিয়ারেরা না থাকলে উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও অগ্রগতি থমকে যাবে। কারণ বৃহৎ বিনিয়োগই গড়ে তোলে নতুন সমাধান।
উদ্ভাবন কি থেমে যাবে
অ্যাডাম স্মিথ ইনস্টিটিউটের ম্যাক্সওয়েল মার্লোর মতে, বিলিয়নিয়ারদের বিলোপ করা হলে পশ্চিমা অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে। তাঁর দাবি, অধিকাংশ বিলিয়নিয়ার তাঁদের সম্পদের মালিক হয়েছেন সমাজের চাহিদামতো পণ্য ও প্রযুক্তি তৈরি করে। তাঁদের সম্পদ মূলত কোম্পানির শেয়ার, মেধাস্বত্ব অথবা সম্পত্তি—যা দিনে দিনে ওঠানামা করে। তাঁর মতে, এই ধনী ব্যক্তিদের প্রণোদনাই উদ্ভাবনে গতি আনে; তা না থাকলে উন্নয়ন থেমে যাবে।
যদি ন্যায্যভাবে সম্পদ বণ্টিত হতো
গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ট্যাক্স জাস্টিসের ডেরেজে আলেমায়েহুর মতে, শুধু বিলিয়নিয়ার কর আরোপ নয়—প্রশ্ন হচ্ছে, সেই কর কোথায় যাবে। দক্ষিণ বিশ্বের শ্রম ও সম্পদ থেকেই যে বিপুল সম্পদ তৈরি হয়, তাই তার ন্যায্য অংশ দক্ষিণেই ফিরে আসা উচিত। তিনি বলেন, বৈষম্য কমাতে শুধু অর্থ হস্তান্তর নয়, বৈশ্বিক আর্থিক কাঠামো পুনর্গঠন জরুরি; নইলে বৈষম্য আরও গভীর হবে।
বিধিনিষেধ কি বদলাতে হবে
ডেনিসন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ফাদেল কাবুব বলেন, বিলিয়নিয়ারেরা আসলে ব্যর্থ নীতির ফল। সিস্টেম যেভাবে সাজানো, তাতে সম্পদ একদিকে কেন্দ্রীভূত হওয়াই স্বাভাবিক। তাঁর মতে, বিলিয়নিয়ার শ্রেণিকে বিলোপ করতে হলে আধুনিক অ্যান্টি ট্রাস্ট ও কঠোর বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
মিডিয়ার ওপর প্রভাব কমবে
গোল্ডস্মিথস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেস ফ্রিডম্যান মনে করেন, বিলিয়নিয়ারেরা পুরো মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কিনে ফেলতে সক্ষম হওয়ায় তথ্যপ্রবাহ তাঁদের স্বার্থেই নিয়ন্ত্রিত হয়। যেমন—বেজোস বা ইলন মাস্কের গণমাধ্যম মালিকানা এই অঙ্গনের স্বাধীনতাকে দীর্ঘমেয়াদে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাই বিলিয়নিয়ার প্রভাব সীমিত হলে তথ্যের উৎসও আরও স্বাধীন হতে পারে।
চরম সম্পদ কি সত্যিই বিলোপ করা সম্ভব
বিশ্ব ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাবের লুকাস শ্যানসেলের মতে, ইতিহাসে এর নজির আছে। উদাহরণস্বরূপ—রকেফেলারের একচেটিয়া সাম্রাজ্য ভেঙে দেওয়া, কিংবা রুজভেল্টের সময় সর্বোচ্চ করহার ৯৪ শতাংশে উন্নীত করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পানামা পেপারসের মতো ফাঁস যেমন দুর্দান্ত স্বচ্ছতা তৈরি করেছে, তেমনি তা পরিবর্তনের সুযোগও তৈরি করছে। তিনি মনে করেন, ধনীদের ওপর কর আরোপের মতো ধারণা এখন আর ‘যদি’ নয়, বরং ‘কখন’ করা হবে—এ প্রশ্নে এসে দাঁড়িয়েছে।
আল-জাজিরা অবলম্বনে

বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
সম্প্রতি টেসলার মালিক ইলন মাস্ক গত নভেম্বরে এমন এক পে-অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, যা তাঁকে একজন ট্রিলিয়ন ডলারের মালিকে পরিণত করতে পারে। তিনি ইতিমধ্যেই বিশ্বের শীর্ষ ধনী। যদি তিনি প্রস্তাবিত পূর্ণ প্যাকেজটি পান, তাহলে তিনি বিশ্বের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হবেন। ফোর্বসের হিসেবে বর্তমানে বিশ্বের ৩ হাজার ২৮ জন বিলিয়নিয়ার আছেন। তাঁদের মোট সম্পদ প্রায় ১৬.১ ট্রিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে পৃথিবীতে এখনো প্রায় ৮৩ কোটি ১০ লাখ মানুষ দৈনিক তিন ডলারের নিচে আয় করে চরম দারিদ্র্যে দিন কাটান।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের এই বিপুল সম্পদ বৈষম্য শুধু অর্থনীতিকে নয়, রাজনীতি, মিডিয়া ও চিন্তাকেও প্রভাবিত করে। অনেকেই মনে করেন, বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ ও ক্ষমতা বিশ্বব্যবস্থাকে ‘অতি ধনীদের স্বার্থে’ পুনর্গঠন করছে। আবার অন্য একটি মত বলছে, বিলিয়নিয়ারেরা না থাকলে উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও অগ্রগতি থমকে যাবে। কারণ বৃহৎ বিনিয়োগই গড়ে তোলে নতুন সমাধান।
উদ্ভাবন কি থেমে যাবে
অ্যাডাম স্মিথ ইনস্টিটিউটের ম্যাক্সওয়েল মার্লোর মতে, বিলিয়নিয়ারদের বিলোপ করা হলে পশ্চিমা অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে। তাঁর দাবি, অধিকাংশ বিলিয়নিয়ার তাঁদের সম্পদের মালিক হয়েছেন সমাজের চাহিদামতো পণ্য ও প্রযুক্তি তৈরি করে। তাঁদের সম্পদ মূলত কোম্পানির শেয়ার, মেধাস্বত্ব অথবা সম্পত্তি—যা দিনে দিনে ওঠানামা করে। তাঁর মতে, এই ধনী ব্যক্তিদের প্রণোদনাই উদ্ভাবনে গতি আনে; তা না থাকলে উন্নয়ন থেমে যাবে।
যদি ন্যায্যভাবে সম্পদ বণ্টিত হতো
গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ট্যাক্স জাস্টিসের ডেরেজে আলেমায়েহুর মতে, শুধু বিলিয়নিয়ার কর আরোপ নয়—প্রশ্ন হচ্ছে, সেই কর কোথায় যাবে। দক্ষিণ বিশ্বের শ্রম ও সম্পদ থেকেই যে বিপুল সম্পদ তৈরি হয়, তাই তার ন্যায্য অংশ দক্ষিণেই ফিরে আসা উচিত। তিনি বলেন, বৈষম্য কমাতে শুধু অর্থ হস্তান্তর নয়, বৈশ্বিক আর্থিক কাঠামো পুনর্গঠন জরুরি; নইলে বৈষম্য আরও গভীর হবে।
বিধিনিষেধ কি বদলাতে হবে
ডেনিসন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ফাদেল কাবুব বলেন, বিলিয়নিয়ারেরা আসলে ব্যর্থ নীতির ফল। সিস্টেম যেভাবে সাজানো, তাতে সম্পদ একদিকে কেন্দ্রীভূত হওয়াই স্বাভাবিক। তাঁর মতে, বিলিয়নিয়ার শ্রেণিকে বিলোপ করতে হলে আধুনিক অ্যান্টি ট্রাস্ট ও কঠোর বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
মিডিয়ার ওপর প্রভাব কমবে
গোল্ডস্মিথস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেস ফ্রিডম্যান মনে করেন, বিলিয়নিয়ারেরা পুরো মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কিনে ফেলতে সক্ষম হওয়ায় তথ্যপ্রবাহ তাঁদের স্বার্থেই নিয়ন্ত্রিত হয়। যেমন—বেজোস বা ইলন মাস্কের গণমাধ্যম মালিকানা এই অঙ্গনের স্বাধীনতাকে দীর্ঘমেয়াদে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাই বিলিয়নিয়ার প্রভাব সীমিত হলে তথ্যের উৎসও আরও স্বাধীন হতে পারে।
চরম সম্পদ কি সত্যিই বিলোপ করা সম্ভব
বিশ্ব ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাবের লুকাস শ্যানসেলের মতে, ইতিহাসে এর নজির আছে। উদাহরণস্বরূপ—রকেফেলারের একচেটিয়া সাম্রাজ্য ভেঙে দেওয়া, কিংবা রুজভেল্টের সময় সর্বোচ্চ করহার ৯৪ শতাংশে উন্নীত করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পানামা পেপারসের মতো ফাঁস যেমন দুর্দান্ত স্বচ্ছতা তৈরি করেছে, তেমনি তা পরিবর্তনের সুযোগও তৈরি করছে। তিনি মনে করেন, ধনীদের ওপর কর আরোপের মতো ধারণা এখন আর ‘যদি’ নয়, বরং ‘কখন’ করা হবে—এ প্রশ্নে এসে দাঁড়িয়েছে।
আল-জাজিরা অবলম্বনে

ইউক্রেনের সাবেক এক কূটনীতিক বলেন, ‘ট্রাম্প জেলেনস্কিকে সরাতে চান বলে মনে হচ্ছে। কারণ, তিনি কখনোই তাঁকে পছন্দ করেননি। জেলেনস্কিকে সামলোনো কঠিন বলে মনে করেন ট্রাম্প। তাই, নির্বাচন তাঁর কাছে কোনো ইস্যু নয়, উদ্দেশ্য জেলেনস্কিকে সরিয়ে দেওয়া।’
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
১ দিন আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
২ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে। এই পরিচয়টিকে তাকাইচি নিজেও গর্বের সঙ্গে গ্রহণ করেন। মার্গারেট থ্যাচারের অনুরাগী এই রক্ষণশীল নেতা ঘরোয়া অর্থনীতি থেকে শুরু করে পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা—সব ক্ষেত্রেই শক্ত অবস্থানের বার্তা দিয়েছেন।
তাকাইচির রাজনৈতিক পরিচয়ের মূল কেন্দ্রে রয়েছে ‘নিপ্পন কেইগি’ নামে জাপানের সবচেয়ে প্রভাবশালী জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী। এই সংগঠন জাপানের সংবিধানের যুদ্ধবিরোধী ৯ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠন এবং ঐতিহ্যবাদী মূল্যবোধে প্রত্যাবর্তনের পক্ষে। পূর্বসুরী শিনজো আবের মতো তাই তাকাইচিও জাপানকে স্বাভাবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান, যেখানে গোয়েন্দা সংস্থা, আধুনিক সেনাবাহিনী এবং কঠোর নিরাপত্তা আইন থাকবে।
অর্থনীতির ক্ষেত্রে তিনি জাতীয় শিল্পকে শক্তিশালী করা, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানো এবং রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বৃদ্ধির পক্ষে। একই সঙ্গে কঠোর অভিবাসন নীতি ও রক্ষণশীল মূল্যবোধের প্রচারও তাঁকে ডানপন্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় করেছে। তবে এই অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এখন আন্তর্জাতিক উত্তেজনার সঙ্গে গেঁথে গেছে—বিশেষ করে, তাইওয়ান ইস্যুতে তাঁর অবস্থানের কারণে।
তাকাইচি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চীনের প্রতি কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছেন। বেইজিংকে তিনি কৌশলগত হুমকি হিসেবে দেখেন এবং প্রতিরোধমূলক সামরিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপের পক্ষে জোর দিচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে অক্টোবরের শেষ দিকে তাঁর ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাৎ দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন সোনালি যুগে প্রবেশ করানোর আভাস দেয়। জাপান প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির কমপক্ষে ২ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আর যুক্তরাষ্ট্র বিরল ধাতুর সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ অর্থনৈতিক সহায়তার ঘোষণা দেয়।
তবে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো তাইওয়ানের সঙ্গে তাকাইচির ঘনিষ্ঠতা। তিনি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, যা চীনের কাছে স্পষ্ট উত্তেজনাকর পদক্ষেপ হিসেবে ধরা পড়েছে। আরও বিতর্ক সৃষ্টি হয় যখন তাকাইচি প্রকাশ্যে বলেন, তাইওয়ানের নিরাপত্তা জাপানের নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এমনকি তাইওয়ানে চীনা হামলার ক্ষেত্রে জাপানের আত্মরক্ষা বাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
এ ক্ষেত্রে চীনের প্রতিক্রিয়াও ছিল কঠোর ও দ্রুত। তারা তাকাইচির বিরুদ্ধে ‘পুরোনো সামরিকতাবাদকে পুনরুজ্জীবিত করার’ অভিযোগ তোলে, রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এবং জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাঠায়। পাশাপাশি সামুদ্রিক এলাকায় কোস্টগার্ডের টহল বাড়ায় চীন, জাপানি সামুদ্রিক পণ্যে সীমাবদ্ধতা আরোপের হুমকি দেয় এবং উত্তেজনাপূর্ণ নানা বিবৃতি দেয়।
এদিকে জাপানও পশ্চিম সীমান্তের ইয়োনাগুনি দ্বীপে বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও একই দ্বীপে সামরিক অবকাঠামো শক্তিশালী করছে। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করছে।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি তাকাইচিকে উত্তেজনা না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ আগামী এপ্রিলে তিনি বেইজিং সফর করতে চান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাকাইচির নেতৃত্বে জাপান নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রবেশ করেছে। তাঁর দৃঢ় অবস্থান দেশকে হয় পুনরুত্থানের পথে নেবে—নয়তো চীন–তাইওয়ান উত্তেজনার কেন্দ্রে ঠেলে দেবে। ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তিনি কোন পথে হাঁটবেন তার ওপর।

জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে। এই পরিচয়টিকে তাকাইচি নিজেও গর্বের সঙ্গে গ্রহণ করেন। মার্গারেট থ্যাচারের অনুরাগী এই রক্ষণশীল নেতা ঘরোয়া অর্থনীতি থেকে শুরু করে পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা—সব ক্ষেত্রেই শক্ত অবস্থানের বার্তা দিয়েছেন।
তাকাইচির রাজনৈতিক পরিচয়ের মূল কেন্দ্রে রয়েছে ‘নিপ্পন কেইগি’ নামে জাপানের সবচেয়ে প্রভাবশালী জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী। এই সংগঠন জাপানের সংবিধানের যুদ্ধবিরোধী ৯ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠন এবং ঐতিহ্যবাদী মূল্যবোধে প্রত্যাবর্তনের পক্ষে। পূর্বসুরী শিনজো আবের মতো তাই তাকাইচিও জাপানকে স্বাভাবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান, যেখানে গোয়েন্দা সংস্থা, আধুনিক সেনাবাহিনী এবং কঠোর নিরাপত্তা আইন থাকবে।
অর্থনীতির ক্ষেত্রে তিনি জাতীয় শিল্পকে শক্তিশালী করা, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানো এবং রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বৃদ্ধির পক্ষে। একই সঙ্গে কঠোর অভিবাসন নীতি ও রক্ষণশীল মূল্যবোধের প্রচারও তাঁকে ডানপন্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় করেছে। তবে এই অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এখন আন্তর্জাতিক উত্তেজনার সঙ্গে গেঁথে গেছে—বিশেষ করে, তাইওয়ান ইস্যুতে তাঁর অবস্থানের কারণে।
তাকাইচি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চীনের প্রতি কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছেন। বেইজিংকে তিনি কৌশলগত হুমকি হিসেবে দেখেন এবং প্রতিরোধমূলক সামরিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপের পক্ষে জোর দিচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে অক্টোবরের শেষ দিকে তাঁর ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাৎ দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন সোনালি যুগে প্রবেশ করানোর আভাস দেয়। জাপান প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির কমপক্ষে ২ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আর যুক্তরাষ্ট্র বিরল ধাতুর সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ অর্থনৈতিক সহায়তার ঘোষণা দেয়।
তবে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো তাইওয়ানের সঙ্গে তাকাইচির ঘনিষ্ঠতা। তিনি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, যা চীনের কাছে স্পষ্ট উত্তেজনাকর পদক্ষেপ হিসেবে ধরা পড়েছে। আরও বিতর্ক সৃষ্টি হয় যখন তাকাইচি প্রকাশ্যে বলেন, তাইওয়ানের নিরাপত্তা জাপানের নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এমনকি তাইওয়ানে চীনা হামলার ক্ষেত্রে জাপানের আত্মরক্ষা বাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
এ ক্ষেত্রে চীনের প্রতিক্রিয়াও ছিল কঠোর ও দ্রুত। তারা তাকাইচির বিরুদ্ধে ‘পুরোনো সামরিকতাবাদকে পুনরুজ্জীবিত করার’ অভিযোগ তোলে, রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এবং জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাঠায়। পাশাপাশি সামুদ্রিক এলাকায় কোস্টগার্ডের টহল বাড়ায় চীন, জাপানি সামুদ্রিক পণ্যে সীমাবদ্ধতা আরোপের হুমকি দেয় এবং উত্তেজনাপূর্ণ নানা বিবৃতি দেয়।
এদিকে জাপানও পশ্চিম সীমান্তের ইয়োনাগুনি দ্বীপে বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও একই দ্বীপে সামরিক অবকাঠামো শক্তিশালী করছে। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করছে।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি তাকাইচিকে উত্তেজনা না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ আগামী এপ্রিলে তিনি বেইজিং সফর করতে চান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাকাইচির নেতৃত্বে জাপান নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রবেশ করেছে। তাঁর দৃঢ় অবস্থান দেশকে হয় পুনরুত্থানের পথে নেবে—নয়তো চীন–তাইওয়ান উত্তেজনার কেন্দ্রে ঠেলে দেবে। ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তিনি কোন পথে হাঁটবেন তার ওপর।

ইউক্রেনের সাবেক এক কূটনীতিক বলেন, ‘ট্রাম্প জেলেনস্কিকে সরাতে চান বলে মনে হচ্ছে। কারণ, তিনি কখনোই তাঁকে পছন্দ করেননি। জেলেনস্কিকে সামলোনো কঠিন বলে মনে করেন ট্রাম্প। তাই, নির্বাচন তাঁর কাছে কোনো ইস্যু নয়, উদ্দেশ্য জেলেনস্কিকে সরিয়ে দেওয়া।’
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
১ দিন আগে
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
২ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে বলে দুই দেশই নিশ্চিত করেছে।
রাষ্ট্রীয় সফরে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভারতে পৌঁছে পরদিন শুক্রবার মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন পুতিন। এই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি পর্যালোচনা ছাড়াও নতুন কয়েকটি আন্তদপ্তর ও বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা এবং একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব ধরে রাখতে ভারতের নীতির জন্য এই বৈঠক একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাশিয়া থেকে ডিসকাউন্টে ভারতের তেল কেনা দীর্ঘদিন ধরেই ওয়াশিংটনকে অসন্তুষ্ট করে আসছে। এই অসন্তুষ্টি থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা মোট শুল্ককে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছে। তবে ভারত বলছে, তারা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার বিরোধী নয়, কিন্তু ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানি চাহিদা মেটাতেই বাধ্য হয়ে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা হচ্ছে। নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ‘রসনেফত’ ও ‘লুকওইল’ এর মতো রাশিয়ার কিছু কোম্পানি থেকে ভারত তেল কিনবে না বলে জানিয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞামুক্ত রুশ সরবরাহকারীদের সঙ্গে বাণিজ্য চালু থাকবে।
পুতিনের এই সফরে দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হবে। ভারত রাশিয়ায় ওষুধ, কৃষিপণ্য ও টেক্সটাইল রপ্তানি বাড়াতে চায় এবং পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের অনুরোধ জানাবে। এ ছাড়া সার সরবরাহের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি এবং রাশিয়ায় ভারতীয় দক্ষ জনশক্তির নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন নিয়ে আলোচনা এগোতে পারে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, সমুদ্র পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা ও গণমাধ্যম সহযোগিতা বিষয়ক নথিপত্র চূড়ান্তের কাজও চলছে।
বুধবার এই বিষয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্টের এক নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, জ্বালানি সহযোগিতাই পুতিন-মোদি আলোচনার বড় অংশ দখল করবে। ভারতের ফার ইস্টে বিনিয়োগ, রাশিয়ার সঙ্গে বেসামরিক পারমাণবিক প্রকল্প এবং কুদানকুলাম প্রকল্পের সম্প্রসারণ নিয়ে অগ্রগতি পর্যালোচনা হবে। স্থানীয়ভাবে যন্ত্রাংশ উৎপাদন এবং তৃতীয় দেশে যৌথ পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হবে।
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এই সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ২০১৮ সালের ৫.৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির আওতায় ভারতের হাতে ইতিমধ্যে রাশিয়ার তিনটি এস-৪০০ স্কোয়াড্রন এসেছে। যুদ্ধজনিত কারণে বাকিগুলোর সরবরাহে যুদ্ধজনিত বিলম্ব হচ্ছে। ভারত এই সরবরাহ দ্রুত নিশ্চিত করতে চাপ দেবে। পাশাপাশি আরও এস-৪০০ কেনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়নি, যদিও বৈঠক থেকে কোনো ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা কম। রুশ নির্মিত এসইউ-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান আপগ্রেড, অস্ত্র সরবরাহ দ্রুততর করা এবং যৌথ সামরিক মহড়ায় সমন্বয় জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা হবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত বহুজাতিক অস্ত্র সরবরাহকারীদের দিকে নজর বাড়ালেও রাশিয়া এখনো তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা অংশীদার। পুতিনের সফরকে সেই সম্পর্কটি আরও দৃঢ় করার বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে বলে দুই দেশই নিশ্চিত করেছে।
রাষ্ট্রীয় সফরে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভারতে পৌঁছে পরদিন শুক্রবার মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন পুতিন। এই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি পর্যালোচনা ছাড়াও নতুন কয়েকটি আন্তদপ্তর ও বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা এবং একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব ধরে রাখতে ভারতের নীতির জন্য এই বৈঠক একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাশিয়া থেকে ডিসকাউন্টে ভারতের তেল কেনা দীর্ঘদিন ধরেই ওয়াশিংটনকে অসন্তুষ্ট করে আসছে। এই অসন্তুষ্টি থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা মোট শুল্ককে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছে। তবে ভারত বলছে, তারা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার বিরোধী নয়, কিন্তু ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানি চাহিদা মেটাতেই বাধ্য হয়ে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা হচ্ছে। নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ‘রসনেফত’ ও ‘লুকওইল’ এর মতো রাশিয়ার কিছু কোম্পানি থেকে ভারত তেল কিনবে না বলে জানিয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞামুক্ত রুশ সরবরাহকারীদের সঙ্গে বাণিজ্য চালু থাকবে।
পুতিনের এই সফরে দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হবে। ভারত রাশিয়ায় ওষুধ, কৃষিপণ্য ও টেক্সটাইল রপ্তানি বাড়াতে চায় এবং পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের অনুরোধ জানাবে। এ ছাড়া সার সরবরাহের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি এবং রাশিয়ায় ভারতীয় দক্ষ জনশক্তির নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন নিয়ে আলোচনা এগোতে পারে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, সমুদ্র পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা ও গণমাধ্যম সহযোগিতা বিষয়ক নথিপত্র চূড়ান্তের কাজও চলছে।
বুধবার এই বিষয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্টের এক নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, জ্বালানি সহযোগিতাই পুতিন-মোদি আলোচনার বড় অংশ দখল করবে। ভারতের ফার ইস্টে বিনিয়োগ, রাশিয়ার সঙ্গে বেসামরিক পারমাণবিক প্রকল্প এবং কুদানকুলাম প্রকল্পের সম্প্রসারণ নিয়ে অগ্রগতি পর্যালোচনা হবে। স্থানীয়ভাবে যন্ত্রাংশ উৎপাদন এবং তৃতীয় দেশে যৌথ পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হবে।
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এই সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ২০১৮ সালের ৫.৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির আওতায় ভারতের হাতে ইতিমধ্যে রাশিয়ার তিনটি এস-৪০০ স্কোয়াড্রন এসেছে। যুদ্ধজনিত কারণে বাকিগুলোর সরবরাহে যুদ্ধজনিত বিলম্ব হচ্ছে। ভারত এই সরবরাহ দ্রুত নিশ্চিত করতে চাপ দেবে। পাশাপাশি আরও এস-৪০০ কেনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়নি, যদিও বৈঠক থেকে কোনো ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা কম। রুশ নির্মিত এসইউ-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান আপগ্রেড, অস্ত্র সরবরাহ দ্রুততর করা এবং যৌথ সামরিক মহড়ায় সমন্বয় জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা হবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত বহুজাতিক অস্ত্র সরবরাহকারীদের দিকে নজর বাড়ালেও রাশিয়া এখনো তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা অংশীদার। পুতিনের সফরকে সেই সম্পর্কটি আরও দৃঢ় করার বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ইউক্রেনের সাবেক এক কূটনীতিক বলেন, ‘ট্রাম্প জেলেনস্কিকে সরাতে চান বলে মনে হচ্ছে। কারণ, তিনি কখনোই তাঁকে পছন্দ করেননি। জেলেনস্কিকে সামলোনো কঠিন বলে মনে করেন ট্রাম্প। তাই, নির্বাচন তাঁর কাছে কোনো ইস্যু নয়, উদ্দেশ্য জেলেনস্কিকে সরিয়ে দেওয়া।’
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
১ দিন আগে
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
২ দিন আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
২ দিন আগে