আজকের পত্রিকা ডেস্ক

মিয়ানমারে সর্বশেষ সামরিক অভ্যুত্থানটি ঘটে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। এরপর থেকেই দেশটিতে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা চলছে। জান্তা সরকারের সহিংস দমন-পীড়নের বিপরীতে তৃণমূলে বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতিরোধ দেশটিকে বহুধা বিভক্ত করে ফেলেছে। মাত্র চার বছরের কিছু বেশি সময়ে সারা দেশে পাঁচ শতাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। পুরোনো জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলো তো আছেই।
গোষ্ঠীগুলো জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষিপ্ত গেরিলা যুদ্ধ শুরু করলেও তা এখন পূর্ণাঙ্গ, বহুমুখী সংঘাতে রূপ নিয়েছে। সামরিক বাহিনী ও বিভিন্ন প্রতিরোধ গোষ্ঠীর মধ্যে ১৬ হাজারের বেশি সশস্ত্র সংঘর্ষ হয়েছে। সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ।
এই গৃহযুদ্ধে সবচেয়ে বড় মোড় আসে ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর। সেদিন থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স—আরাকান আর্মি (এএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) ও তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) ‘অপারেশন ১০২৭’ শুরু করে। অন্যান্য গোষ্ঠীর সঙ্গে মিলে তারা জান্তার ওপর বড় আঘাত হানে। জোটটি মিয়ানমারের বিস্তীর্ণ ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নেয় এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিগুলো থেকে সামরিক বাহিনীকে বিতাড়িত করে।
তবে সবচেয়ে বড় প্রতীকী জয় সম্ভবত ছিল এমএনডিএএ ও মিত্রদের উত্তর শান রাজ্যের লাশিওতে অবস্থিত জান্তা বাহিনীর উত্তর-পূর্ব আঞ্চলিক সামরিক কমান্ড দখল। মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধের ইতিহাসে এটি একটি নজিরবিহীন অর্জন।
আপাতদৃষ্টিতে মিয়ানমারে মূল খেলোয়াড় জান্তা সরকার ও বিদ্রোহীরা হলেও দেশটির রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যুতে চীন দীর্ঘদিনের নীরব কিন্তু শক্তিশালী খেলোয়াড়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে বেইজিং ‘হস্তক্ষেপ না করার’ নীতি মেনে চলার কথা বলে। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে বেইজিং সেই নীতি পরিবর্তন করছে। দেশটির লক্ষ্য হলো—মিয়ানমারে চলমান অস্থিরতা থেকে নিজেদের কৌশলগত বিনিয়োগ রক্ষা করা এবং দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে পরিস্থিতির ওপর সতর্ক নজর রাখা।
‘অপারেশন ১০২৭’—এর দ্বিতীয় ধাপের পর মধ্যস্থতাকারী হিসেবে চীনের ভূমিকা লক্ষণীয়ভাবে আরও দৃঢ়, এমনকি জবরদস্তিমূলক হয়ে ওঠে। ঐতিহাসিকভাবে জান্তা সরকার ও জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে চীনকে নিরপেক্ষ সহায়তাকারী হিসেবে দেখা হলেও দেশটির সর্বশেষ মধ্যস্থতা আগের অবস্থান থেকে স্পষ্ট ‘বিচ্যুতি’।
এবার বেইজিং দৃঢ়ভাবে এমন একটি সমাধানের জন্য চাপ দিচ্ছে, যা তার নিজের স্বার্থের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। তারা সামরিক জান্তা ও প্রতিরোধ গোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্যমান ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখতে চায়। চীন নিশ্চিত করেছে, যাতে কোনো একক পক্ষ চীনের আঞ্চলিক প্রভাবকে ক্ষুণ্ন করার মতো যথেষ্ট শক্তি অর্জন করতে না পারে।
কূটনৈতিক চাপ ও অর্থনৈতিক প্রণোদনা—দুয়ে মিলে চীন কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনে সফল হয়েছে। চলতি এপ্রিলে নয় মাস লাশিও দখলে রাখার পর এমএনডিএএ শহরটি জান্তার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে। চীনা হস্তক্ষেপ ছাড়া এই পদক্ষেপ অকল্পনীয়। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি মিয়ানমারের মাটিতে ফলাফল নির্ধারণে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বৃদ্ধিরই ইঙ্গিত।
কে আলোচনার টেবিলে বসবে, আর কে বসবে না—বেইজিং কেবল সেটিই নির্ধারণ করছে না, বরং আলোচনায় কে কী পাবে, সেটিও নির্ধারণ করে দিচ্ছে। মিয়ানমারের প্রতিরোধ বাহিনীগুলোর জন্য এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী। চীনের এই দৃঢ়তা কেবল সামরিক কৌশলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়—এটি রাজনৈতিক ক্ষেত্রকেও নতুন করে সাজাচ্ছে। চীন যখন মিয়ানমারের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে নেতৃত্ব দিচ্ছে, তখন এর সম্ভাব্য পরিণতি হতে পারে তিনটি।
প্রথমত—চীন সামরিক বিজয়ের মাধ্যমে মিয়ানমারের প্রতিরোধ বাহিনীগুলোর কৌশলগত অর্জনকে সক্রিয়ভাবে সীমিত করছে। প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর জন্য চূড়ান্ত কৌশল স্পষ্ট—সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে সামরিক জান্তাকে উৎখাত করা। এই ধারণা জনমত ও কৌশলগত পরিকল্পনা উভয় ক্ষেত্রেই প্রাধান্য বিস্তার করেছে।
তবে চীনের জবরদস্তিমূলক মধ্যস্থতার ধরন এই উদ্দেশ্যকে সূক্ষ্মভাবে ক্ষুণ্ন করে। প্রতিরোধ বাহিনীর হাতে থাকা প্রতিটি শহর বা নগর নিয়ে বেইজিং হয়তো প্রতিক্রিয়া দেখাবে না, তবে তার স্বার্থ ঝুঁকির মুখে পড়লে হস্তক্ষেপ করার নমুনা দেশটি দেখিয়েছে। এটি একটি স্পষ্ট বার্তা দেয়—প্রতিরোধ বাহিনীগুলো কত দূর যেতে পারবে তার একটি নির্দিষ্ট সীমা রয়েছে এবং এটি নির্ধারণ করে দেবে চীনই।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—জান্তা বা প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর কোনো এক পক্ষকে বেছে নেওয়ার অবস্থা এখন নেই। বরং চীনের তৎপরতা এখন একটি বৃহত্তর কৌশলগত হিসাবকে প্রতিফলিত করে। এই হিসাবকে মিয়ানমারের অস্থির ক্ষমতার সমীকরণে নিজ হাতে ‘ভারসাম্য’ বজায় রাখার কৌশল বলা যেতে পারে এবং চীন এমনটিই চাচ্ছে।
বেইজিংয়ের দৃষ্টিকোণ থেকে ভৌগোলিকভাবে খণ্ডিত মিয়ানমারের চেয়ে রাজনৈতিকভাবে খণ্ডিত মিয়ানমার অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণযোগ্য। দুর্বল ও বিভক্ত—কিন্তু এখনো অখণ্ড—একটি দেশ চীনের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থকে আরও ভালোভাবে রক্ষা করে। এই কৌশল মিয়ানমার রাষ্ট্রের পতন না ঘটিয়েই আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার ঝুঁকির বাইরে থেকে চীনকে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ দেয়। বেইজিংয়ের জন্য আদর্শ পরিস্থিতি হলো—এমন একটি দুর্বল মিয়ানমার, যাতে তাকে সহজে প্রভাবিত করা যায়, অথচ চীনের কৌশলগত স্বার্থ রক্ষা করার জন্য রাষ্ট্র হিসেবে অখণ্ড থেকে যায়।
দ্বিতীয় পরিণতি হলো—‘চীনা বৈশিষ্ট্যযুক্ত সংঘাত সমাপ্তি মডেলের’ উত্থান, যা মিয়ানমারের জন্য নির্ধারক ‘নির্দেশিকা’ হয়ে উঠতে পারে। বছরের পর বছর ধরে পশ্চিমা দাতা ও সরকারগুলো মিয়ানমারের শান্তি প্রক্রিয়ায় প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ, সংলাপ সহজীকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করেছে।
তবুও ফলাফল খুবই সীমিত, টেকসই ফলাফল প্রায় হয়নি বললেই চলে। বিপরীতে, চীন এখন নিজস্ব মডেল এগিয়ে নিচ্ছে, যা দৃঢ় মধ্যস্থতা ও যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণে সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিফলিত হচ্ছে। সম্প্রতি লাশিওর নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তরে বেইজিংয়ের ভূমিকা এর উদাহরণ।
লাশিও প্রক্রিয়া যদি কার্যকর প্রমাণিত হয়, তবে মিয়ানমারে ভবিষ্যতের সংঘাতগুলো কীভাবে পরিচালিত হবে এবং বেইজিংয়ের কৌশলগত হিসাব কীভাবে মিয়ানমারের ভূ–কৌশলগত বিষয়াবলিতে পরিণতি পাবে, তার একটি দৃষ্টান্ত হতে পারে এটি। একই সময়ে উত্তেজনা হ্রাসের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণে চীনের ক্রমবর্ধমান আধিপত্য আরও স্পষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের বিভিন্ন সংগঠনগুলোতে অর্থায়ন কমাচ্ছে।
উপরন্তু, বেইজিং কেবল মূল অভ্যন্তরীণ খেলোয়াড়দের ওপরই নয়, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার মতো প্রভাবশালী আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ওপরও যথেষ্ট প্রভাব রাখে। এই প্রভাব অনিবার্যভাবে প্রতিটি আলোচনা প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। তবে চীন সহিংসতা কমাতে সহায়ক হলেও টেকসই শান্তির জন্য প্রয়োজনীয় গভীর কাঠামোগত সংস্কারকে উৎসাহিত করার সম্ভাবনা কম। ন্যায়বিচার, সমতা ও দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সমাধানের দ্বারা সংজ্ঞায়িত ইতিবাচক শান্তি বেইজিংয়ের কৌশলগত স্বার্থের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নাও হতে পারে। আর আজকের মিয়ানমারের প্রেক্ষাপটে এটি বাস্তবসম্মত উদ্দেশ্য বলেও মনে হয় না।
চূড়ান্ত ও সম্ভবত সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিণতিটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে চীনের সরাসরি জড়িয়ে পড়ার বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকির সঙ্গে সম্পর্কিত। বর্তমানে বিশ্বমঞ্চে দুটি সম্ভাব্য গতিপথ দেখা যাচ্ছে—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ‘ভূ-রাজনৈতিক উপেক্ষা’ ও ‘ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা’। উভয় পরিস্থিতিই মিয়ানমারের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করে।
ভূ-রাজনৈতিক উপেক্ষার ক্ষেত্রে, অন্যান্য সংকট ও অভ্যন্তরীণ অগ্রাধিকারে ব্যস্ত থাকা ক্লান্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সম্ভবত মিয়ানমারকে চীনের কাছেই ছেড়ে দেবে। পাশাপাশি মিয়ানমারের প্রতিবেশীসহ আঞ্চলিক শক্তিগুলো টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা ও গণতান্ত্রিক শাসনের চেয়ে স্বল্পমেয়াদি স্থিতিশীলতা ও কৌশলগত স্বার্থরক্ষা করাকে অগ্রাধিকার দিতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে চীন তার পছন্দের পরিণতির বিরুদ্ধে সামান্যতম প্রতিরোধও চাইবে না এবং নিজস্ব কৌশলগত স্বার্থ অনুযায়ী মিয়ানমারের সংঘাতপরবর্তী রূপান্তরে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ভালোভাবেই প্রস্তুত থাকবে। এই অবস্থান কার্যকরভাবে বেইজিংকে দেশটির ভবিষ্যৎ গঠনের সক্ষমতা দেবে।
তবে বিকল্প পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হতে পারে। বৃহৎ শক্তিগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার পুনরাবির্ভাবে দেশটিকে অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা বাড়তে পারে, যা দেশটিকে আরও গভীর বিশৃঙ্খলার মধ্যে ঠেলে দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমার ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার মঞ্চ হয়ে উঠতে পারে। ক্ষমতার কেন্দ্রের অনুপস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়তে পারে এবং অস্ত্র পাচার থেকে শুরু করে মাদক কারবারের মতো অবৈধ অর্থনীতি এই অস্থিরতায় ফুলেফেঁপে উঠবে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, দ্বিতীয় পথটি (ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা) বিপর্যয়কর হতে পারে।
উপেক্ষা বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা যাই হোক না কেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়ার ব্যর্থতা মিয়ানমারকে এমন এক ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করে, যা শান্তি বা সমৃদ্ধি দ্বারা নয়, বরং ভঙ্গুরতা ও বিদেশি হস্তক্ষেপ দ্বারা সংজ্ঞায়িত হবে।
মিয়ানমার ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের আগের রাজনৈতিক সংকটকে অনেক পেছনে ফেলে এসেছে। দেশটি এখন একটি দীর্ঘস্থায়ী ও জটিল গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। যেখানে সামরিক জান্তা ও প্রতিরোধ বাহিনী উভয়ই নিজ নিজ অনমনীয় এজেন্ডায় ঘুরপাক খাচ্ছে। এদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দেশটির প্রতি ক্রমবর্ধমানভাবে উদাসীন, বহুমাত্রিক বৈশ্বিক সংকটে বিভ্রান্ত এবং সেখানে নাক গলাতে অনিচ্ছুক। এই প্রেক্ষাপটে মিয়ানমারকে হয়তো শেষ পর্যন্ত সংঘাত ও খণ্ডিত হওয়ার চক্র থেকে মুক্তির পথ নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক পণ্ডিত জন সিডেনহ্যাম ফার্নিভ্যাল একবার সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘কমবেশি দীর্ঘ অরাজকতার পর আমাদের বংশধরেরা হয়তো বার্মাকে চীনের একটি প্রদেশ হিসেবে খুঁজে পাবে।’ বক্তব্যটি অতিশয়োক্তি বা অযৌক্তিক ভীতি তৈরি বলে মনে হতে পারে। কিন্তু গভীর অস্থিরতার এই সময়ে ফার্নিভ্যালের কথাগুলো অস্বস্তিকর প্রাসঙ্গিকতার সঙ্গে অনুরণিত হচ্ছে। মিয়ানমারের আক্ষরিকভাবে চীনের প্রদেশে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা কম হলেও দেশটির রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক পুনর্গঠনে বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান প্রভাব স্পষ্ট ও ক্রমশ নির্ণায়ক হয়ে উঠছে।
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

মিয়ানমারে সর্বশেষ সামরিক অভ্যুত্থানটি ঘটে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। এরপর থেকেই দেশটিতে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা চলছে। জান্তা সরকারের সহিংস দমন-পীড়নের বিপরীতে তৃণমূলে বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতিরোধ দেশটিকে বহুধা বিভক্ত করে ফেলেছে। মাত্র চার বছরের কিছু বেশি সময়ে সারা দেশে পাঁচ শতাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। পুরোনো জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলো তো আছেই।
গোষ্ঠীগুলো জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষিপ্ত গেরিলা যুদ্ধ শুরু করলেও তা এখন পূর্ণাঙ্গ, বহুমুখী সংঘাতে রূপ নিয়েছে। সামরিক বাহিনী ও বিভিন্ন প্রতিরোধ গোষ্ঠীর মধ্যে ১৬ হাজারের বেশি সশস্ত্র সংঘর্ষ হয়েছে। সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ।
এই গৃহযুদ্ধে সবচেয়ে বড় মোড় আসে ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর। সেদিন থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স—আরাকান আর্মি (এএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) ও তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) ‘অপারেশন ১০২৭’ শুরু করে। অন্যান্য গোষ্ঠীর সঙ্গে মিলে তারা জান্তার ওপর বড় আঘাত হানে। জোটটি মিয়ানমারের বিস্তীর্ণ ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নেয় এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিগুলো থেকে সামরিক বাহিনীকে বিতাড়িত করে।
তবে সবচেয়ে বড় প্রতীকী জয় সম্ভবত ছিল এমএনডিএএ ও মিত্রদের উত্তর শান রাজ্যের লাশিওতে অবস্থিত জান্তা বাহিনীর উত্তর-পূর্ব আঞ্চলিক সামরিক কমান্ড দখল। মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধের ইতিহাসে এটি একটি নজিরবিহীন অর্জন।
আপাতদৃষ্টিতে মিয়ানমারে মূল খেলোয়াড় জান্তা সরকার ও বিদ্রোহীরা হলেও দেশটির রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যুতে চীন দীর্ঘদিনের নীরব কিন্তু শক্তিশালী খেলোয়াড়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে বেইজিং ‘হস্তক্ষেপ না করার’ নীতি মেনে চলার কথা বলে। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে বেইজিং সেই নীতি পরিবর্তন করছে। দেশটির লক্ষ্য হলো—মিয়ানমারে চলমান অস্থিরতা থেকে নিজেদের কৌশলগত বিনিয়োগ রক্ষা করা এবং দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে পরিস্থিতির ওপর সতর্ক নজর রাখা।
‘অপারেশন ১০২৭’—এর দ্বিতীয় ধাপের পর মধ্যস্থতাকারী হিসেবে চীনের ভূমিকা লক্ষণীয়ভাবে আরও দৃঢ়, এমনকি জবরদস্তিমূলক হয়ে ওঠে। ঐতিহাসিকভাবে জান্তা সরকার ও জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে চীনকে নিরপেক্ষ সহায়তাকারী হিসেবে দেখা হলেও দেশটির সর্বশেষ মধ্যস্থতা আগের অবস্থান থেকে স্পষ্ট ‘বিচ্যুতি’।
এবার বেইজিং দৃঢ়ভাবে এমন একটি সমাধানের জন্য চাপ দিচ্ছে, যা তার নিজের স্বার্থের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। তারা সামরিক জান্তা ও প্রতিরোধ গোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্যমান ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখতে চায়। চীন নিশ্চিত করেছে, যাতে কোনো একক পক্ষ চীনের আঞ্চলিক প্রভাবকে ক্ষুণ্ন করার মতো যথেষ্ট শক্তি অর্জন করতে না পারে।
কূটনৈতিক চাপ ও অর্থনৈতিক প্রণোদনা—দুয়ে মিলে চীন কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনে সফল হয়েছে। চলতি এপ্রিলে নয় মাস লাশিও দখলে রাখার পর এমএনডিএএ শহরটি জান্তার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে। চীনা হস্তক্ষেপ ছাড়া এই পদক্ষেপ অকল্পনীয়। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি মিয়ানমারের মাটিতে ফলাফল নির্ধারণে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বৃদ্ধিরই ইঙ্গিত।
কে আলোচনার টেবিলে বসবে, আর কে বসবে না—বেইজিং কেবল সেটিই নির্ধারণ করছে না, বরং আলোচনায় কে কী পাবে, সেটিও নির্ধারণ করে দিচ্ছে। মিয়ানমারের প্রতিরোধ বাহিনীগুলোর জন্য এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী। চীনের এই দৃঢ়তা কেবল সামরিক কৌশলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়—এটি রাজনৈতিক ক্ষেত্রকেও নতুন করে সাজাচ্ছে। চীন যখন মিয়ানমারের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে নেতৃত্ব দিচ্ছে, তখন এর সম্ভাব্য পরিণতি হতে পারে তিনটি।
প্রথমত—চীন সামরিক বিজয়ের মাধ্যমে মিয়ানমারের প্রতিরোধ বাহিনীগুলোর কৌশলগত অর্জনকে সক্রিয়ভাবে সীমিত করছে। প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর জন্য চূড়ান্ত কৌশল স্পষ্ট—সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে সামরিক জান্তাকে উৎখাত করা। এই ধারণা জনমত ও কৌশলগত পরিকল্পনা উভয় ক্ষেত্রেই প্রাধান্য বিস্তার করেছে।
তবে চীনের জবরদস্তিমূলক মধ্যস্থতার ধরন এই উদ্দেশ্যকে সূক্ষ্মভাবে ক্ষুণ্ন করে। প্রতিরোধ বাহিনীর হাতে থাকা প্রতিটি শহর বা নগর নিয়ে বেইজিং হয়তো প্রতিক্রিয়া দেখাবে না, তবে তার স্বার্থ ঝুঁকির মুখে পড়লে হস্তক্ষেপ করার নমুনা দেশটি দেখিয়েছে। এটি একটি স্পষ্ট বার্তা দেয়—প্রতিরোধ বাহিনীগুলো কত দূর যেতে পারবে তার একটি নির্দিষ্ট সীমা রয়েছে এবং এটি নির্ধারণ করে দেবে চীনই।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—জান্তা বা প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর কোনো এক পক্ষকে বেছে নেওয়ার অবস্থা এখন নেই। বরং চীনের তৎপরতা এখন একটি বৃহত্তর কৌশলগত হিসাবকে প্রতিফলিত করে। এই হিসাবকে মিয়ানমারের অস্থির ক্ষমতার সমীকরণে নিজ হাতে ‘ভারসাম্য’ বজায় রাখার কৌশল বলা যেতে পারে এবং চীন এমনটিই চাচ্ছে।
বেইজিংয়ের দৃষ্টিকোণ থেকে ভৌগোলিকভাবে খণ্ডিত মিয়ানমারের চেয়ে রাজনৈতিকভাবে খণ্ডিত মিয়ানমার অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণযোগ্য। দুর্বল ও বিভক্ত—কিন্তু এখনো অখণ্ড—একটি দেশ চীনের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থকে আরও ভালোভাবে রক্ষা করে। এই কৌশল মিয়ানমার রাষ্ট্রের পতন না ঘটিয়েই আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার ঝুঁকির বাইরে থেকে চীনকে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ দেয়। বেইজিংয়ের জন্য আদর্শ পরিস্থিতি হলো—এমন একটি দুর্বল মিয়ানমার, যাতে তাকে সহজে প্রভাবিত করা যায়, অথচ চীনের কৌশলগত স্বার্থ রক্ষা করার জন্য রাষ্ট্র হিসেবে অখণ্ড থেকে যায়।
দ্বিতীয় পরিণতি হলো—‘চীনা বৈশিষ্ট্যযুক্ত সংঘাত সমাপ্তি মডেলের’ উত্থান, যা মিয়ানমারের জন্য নির্ধারক ‘নির্দেশিকা’ হয়ে উঠতে পারে। বছরের পর বছর ধরে পশ্চিমা দাতা ও সরকারগুলো মিয়ানমারের শান্তি প্রক্রিয়ায় প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ, সংলাপ সহজীকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করেছে।
তবুও ফলাফল খুবই সীমিত, টেকসই ফলাফল প্রায় হয়নি বললেই চলে। বিপরীতে, চীন এখন নিজস্ব মডেল এগিয়ে নিচ্ছে, যা দৃঢ় মধ্যস্থতা ও যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণে সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিফলিত হচ্ছে। সম্প্রতি লাশিওর নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তরে বেইজিংয়ের ভূমিকা এর উদাহরণ।
লাশিও প্রক্রিয়া যদি কার্যকর প্রমাণিত হয়, তবে মিয়ানমারে ভবিষ্যতের সংঘাতগুলো কীভাবে পরিচালিত হবে এবং বেইজিংয়ের কৌশলগত হিসাব কীভাবে মিয়ানমারের ভূ–কৌশলগত বিষয়াবলিতে পরিণতি পাবে, তার একটি দৃষ্টান্ত হতে পারে এটি। একই সময়ে উত্তেজনা হ্রাসের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণে চীনের ক্রমবর্ধমান আধিপত্য আরও স্পষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের বিভিন্ন সংগঠনগুলোতে অর্থায়ন কমাচ্ছে।
উপরন্তু, বেইজিং কেবল মূল অভ্যন্তরীণ খেলোয়াড়দের ওপরই নয়, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার মতো প্রভাবশালী আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ওপরও যথেষ্ট প্রভাব রাখে। এই প্রভাব অনিবার্যভাবে প্রতিটি আলোচনা প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। তবে চীন সহিংসতা কমাতে সহায়ক হলেও টেকসই শান্তির জন্য প্রয়োজনীয় গভীর কাঠামোগত সংস্কারকে উৎসাহিত করার সম্ভাবনা কম। ন্যায়বিচার, সমতা ও দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সমাধানের দ্বারা সংজ্ঞায়িত ইতিবাচক শান্তি বেইজিংয়ের কৌশলগত স্বার্থের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নাও হতে পারে। আর আজকের মিয়ানমারের প্রেক্ষাপটে এটি বাস্তবসম্মত উদ্দেশ্য বলেও মনে হয় না।
চূড়ান্ত ও সম্ভবত সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিণতিটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে চীনের সরাসরি জড়িয়ে পড়ার বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকির সঙ্গে সম্পর্কিত। বর্তমানে বিশ্বমঞ্চে দুটি সম্ভাব্য গতিপথ দেখা যাচ্ছে—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ‘ভূ-রাজনৈতিক উপেক্ষা’ ও ‘ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা’। উভয় পরিস্থিতিই মিয়ানমারের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করে।
ভূ-রাজনৈতিক উপেক্ষার ক্ষেত্রে, অন্যান্য সংকট ও অভ্যন্তরীণ অগ্রাধিকারে ব্যস্ত থাকা ক্লান্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সম্ভবত মিয়ানমারকে চীনের কাছেই ছেড়ে দেবে। পাশাপাশি মিয়ানমারের প্রতিবেশীসহ আঞ্চলিক শক্তিগুলো টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা ও গণতান্ত্রিক শাসনের চেয়ে স্বল্পমেয়াদি স্থিতিশীলতা ও কৌশলগত স্বার্থরক্ষা করাকে অগ্রাধিকার দিতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে চীন তার পছন্দের পরিণতির বিরুদ্ধে সামান্যতম প্রতিরোধও চাইবে না এবং নিজস্ব কৌশলগত স্বার্থ অনুযায়ী মিয়ানমারের সংঘাতপরবর্তী রূপান্তরে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ভালোভাবেই প্রস্তুত থাকবে। এই অবস্থান কার্যকরভাবে বেইজিংকে দেশটির ভবিষ্যৎ গঠনের সক্ষমতা দেবে।
তবে বিকল্প পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হতে পারে। বৃহৎ শক্তিগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার পুনরাবির্ভাবে দেশটিকে অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা বাড়তে পারে, যা দেশটিকে আরও গভীর বিশৃঙ্খলার মধ্যে ঠেলে দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমার ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার মঞ্চ হয়ে উঠতে পারে। ক্ষমতার কেন্দ্রের অনুপস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়তে পারে এবং অস্ত্র পাচার থেকে শুরু করে মাদক কারবারের মতো অবৈধ অর্থনীতি এই অস্থিরতায় ফুলেফেঁপে উঠবে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, দ্বিতীয় পথটি (ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা) বিপর্যয়কর হতে পারে।
উপেক্ষা বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা যাই হোক না কেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়ার ব্যর্থতা মিয়ানমারকে এমন এক ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করে, যা শান্তি বা সমৃদ্ধি দ্বারা নয়, বরং ভঙ্গুরতা ও বিদেশি হস্তক্ষেপ দ্বারা সংজ্ঞায়িত হবে।
মিয়ানমার ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের আগের রাজনৈতিক সংকটকে অনেক পেছনে ফেলে এসেছে। দেশটি এখন একটি দীর্ঘস্থায়ী ও জটিল গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। যেখানে সামরিক জান্তা ও প্রতিরোধ বাহিনী উভয়ই নিজ নিজ অনমনীয় এজেন্ডায় ঘুরপাক খাচ্ছে। এদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দেশটির প্রতি ক্রমবর্ধমানভাবে উদাসীন, বহুমাত্রিক বৈশ্বিক সংকটে বিভ্রান্ত এবং সেখানে নাক গলাতে অনিচ্ছুক। এই প্রেক্ষাপটে মিয়ানমারকে হয়তো শেষ পর্যন্ত সংঘাত ও খণ্ডিত হওয়ার চক্র থেকে মুক্তির পথ নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক পণ্ডিত জন সিডেনহ্যাম ফার্নিভ্যাল একবার সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘কমবেশি দীর্ঘ অরাজকতার পর আমাদের বংশধরেরা হয়তো বার্মাকে চীনের একটি প্রদেশ হিসেবে খুঁজে পাবে।’ বক্তব্যটি অতিশয়োক্তি বা অযৌক্তিক ভীতি তৈরি বলে মনে হতে পারে। কিন্তু গভীর অস্থিরতার এই সময়ে ফার্নিভ্যালের কথাগুলো অস্বস্তিকর প্রাসঙ্গিকতার সঙ্গে অনুরণিত হচ্ছে। মিয়ানমারের আক্ষরিকভাবে চীনের প্রদেশে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা কম হলেও দেশটির রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক পুনর্গঠনে বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান প্রভাব স্পষ্ট ও ক্রমশ নির্ণায়ক হয়ে উঠছে।
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
২১ ঘণ্টা আগে
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
১ দিন আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
২ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
উশাকভ মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের সম্পূর্ণ এলাকার ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ দাবির কথাই বলেছিলেন। পুতিন ইউক্রেনে হাজার হাজার সৈন্য পাঠানোর প্রায় ৪ বছর পরও এবং দোনেৎস্কে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহের এক দশকেরও বেশি সময় পর অঞ্চলটির কিছু অংশ এখনো ইউক্রেনের হাতে আছে।
প্রায় সব দেশই দোনেৎস্ককে ইউক্রেনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু এটি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের চারটি অঞ্চলের মধ্যে একটি, যা মস্কো ২০২২ সালে একটি গণভোটের পর সংযুক্ত করার কথা ঘোষণা করে। কিয়েভ ও পশ্চিমা দেশগুলো সেই গণভোটকে ‘প্রহসন’ বলে বাতিল করে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফক্স নিউজকে বলেছিলেন, যুদ্ধটি এখন দোনেৎস্কের সেই ২০ শতাংশ বা ৫ হাজার বর্গকিলোমিটারের এলাকা নিয়ে, যা রাশিয়া নিয়ন্ত্রণ করে না কিন্তু চায়।
পুতিন ২০২২ সালে ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর সময় বলেছিলেন, তাঁর লক্ষ্য হলো ‘গত আট বছর ধরে যারা ভয়ভীতি ও গণহত্যার শিকার হয়েছেন...সেই মানুষগুলোকে রক্ষা করা।’ ইউক্রেন এবং তার মিত্ররা বলেছিল, পুতিনের এই দাবি ঔপনিবেশিক ধাঁচের এবং এলাকা দখলের জন্য একটি মিথ্যা অজুহাত মাত্র।
পুতিনের এই দাবি মূলত দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ের দিকে ইঙ্গিত করে, যারা ২০১৪ সালে ইউক্রেনীয় সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিছু এলাকা দখল করেছিল। পূর্ব ইউক্রেনে এর পরের সংঘর্ষে উভয় পক্ষই শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছিল। মস্কো এই অঞ্চলের বিশাল রুশভাষী জনসংখ্যাকে উদ্ধৃত করে বলেছিল যে,২০২২ সালে হস্তক্ষেপ করা তাদের নৈতিক কর্তব্য।
কিয়েভ বলেছিল, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় শক্তি দিয়ে জবাব দেওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় ছিল না এবং তারাও বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীর বিরুদ্ধে শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের অভিযোগ এনেছিল। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সালের শুরু পর্যন্ত ইউক্রেনীয় সরকারি বাহিনী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে সংঘাতে উভয় পক্ষে ৩ হাজার ১০৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৯ হাজার বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছিলেন।
দোনেৎস্কের বাকি যে অংশটি রাশিয়া চায়, তার মধ্যে রয়েছে স্লোভিয়ানস্ক এবং ক্রামাতোরস্ক—দুটি ‘দুর্গনগরী’ যা ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এই শহরগুলো ইউক্রেনের বাকি অঞ্চল রক্ষার জন্য কিয়েভের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দোনেৎস্কের পশ্চিমের ভূমি অনেকটাই সমতল এবং বিশাল খোলা মাঠ; যা রাশিয়াকে দোনেৎস্কের বাইরে অগ্রসর হতে এবং দিনিপ্রো নদীর পূর্ব তীর পর্যন্ত এলাকা দখল করার পথ সহজ করে দেবে।
শহরগুলো পরিখা, ট্যাংক-বিধ্বংসী বাধা, বাংকার এবং মাইনক্ষেত্রসহ অত্যন্ত সুরক্ষিত প্রতিরক্ষা লাইনের অংশ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, গণভোট ছাড়া দোনেৎস্কের বাকি অংশ রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়া অবৈধ হবে এবং তা ভবিষ্যতে ইউক্রেনের গভীরে আক্রমণের জন্য রাশিয়াকে একটি পথ খুলে দেবে।
কিয়েভের আশঙ্কা, যদি তারা দোনেৎস্কের বাকি অংশ ছেড়ে দেয়, তবে রাশিয়া আবার অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হবে এবং একসময় দোনেৎস্ক ব্যবহার করে পশ্চিম দিকে আক্রমণ চালাবে।
উভয় পক্ষই দোনেৎস্ককে কেন্দ্র করে যুদ্ধে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে এবং প্রচুর অর্থ ও সরঞ্জাম ব্যয় করেছে। এর মধ্যে বাখমুত শহরের লড়াইও রয়েছে। যেখানে রাশিয়া হাজার হাজার দণ্ডিত অপরাধীকে ভাড়াটে সৈন্যে পরিণত করে রণক্ষেত্রে নামিয়েছিল। এ কারণে, দোনেৎস্ক উভয় দেশের জনমানসে আরও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ফলে কারও পক্ষে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করা কঠিন।
ইউক্রেন চায় না যে, রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে জয় করতে ব্যর্থ হওয়া ভূখণ্ডকে উপহার হিসেবে পাক এবং জেলেনস্কি বলেছেন, যে যুদ্ধ রাশিয়া শুরু করেছে, তার জন্য তাদের পুরস্কৃত করা উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার অক্টোবর মাসে বলেছিল, রাশিয়ার অগ্রগতির হার দেখে মনে হয় না যে তারা খুব শিগগিরই দোনেৎস্কের বাকি অংশ দখল করতে চলেছে। তবে ‘রাশিয়ার অগ্রগতির একটি অপরিবর্তনীয় হার ধরে নিলে’ তারা ২০২৭ সালের আগস্টের মধ্যে তা নিতে পারে।
রাশিয়ার কমান্ডাররা অবশ্য আরও বেশি আশাবাদী। জেনারেল স্টাফের প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ রোববার পুতিনকে বলেছেন, মস্কোর বাহিনী পুরো ফ্রন্ট লাইন বরাবর অগ্রসর হচ্ছে এবং দনবাসের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য কাজ করছে।
দোনেৎস্ক বন্দর, রেলপথ এবং অন্যান্য ভারী শিল্পের কেন্দ্র। এটি একসময় ইউক্রেনের কয়লা, পরিশোধিত ইস্পাত, কোক, ঢালাই লোহা এবং ইস্পাত উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি সরবরাহ করত, তবে যুদ্ধের কারণে অনেক খনি ও কারখানা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া, দোনেৎস্কে বিরল মৃত্তিকা, টাইটানিয়াম এবং জিরকোনিয়াম রয়েছে—যা এটিকে নিয়ন্ত্রণকারী পক্ষের জন্য আয়ের উৎস।
দোনেৎস্কের ভাগ্য পুতিন এবং জেলেনস্কি উভয়ের ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারকে প্রভাবিত করতে পারে। পুতিন নিজেকে জাতিগত রুশদের রক্ষক হিসেবে তুলে ধরেছেন, তারা যেখানেই থাকুক না কেন। পুরো দোনেৎস্ককে সুরক্ষিত করা এই বক্তব্যের মূল কেন্দ্রবিন্দু। জেলেনস্কি ২০১৯ সালে পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধ অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। ২০২২ সাল থেকে তিনি অনেক বড়, বৈরী প্রতিবেশীর মুখে অস্ত্র এবং সংখ্যায় কম ইউক্রেনের এক দৃঢ় রক্ষক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন।
লড়াই না করে দোনেৎস্ক ছেড়ে দেওয়া—যেখানে অন্তত আড়াই লাখ ইউক্রেনীয় বাস করে—ইউক্রেনীয়দের কাছে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখা হতে পারে, যাদের অনেকেই যুদ্ধক্ষেত্রে স্বজন হারিয়েছেন। কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজির সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুসারে, ইউক্রেনীয়দের একটি সংকীর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এখনো আঞ্চলিক ছাড়ের বিরোধিতা করে।
জেলেনস্কিসহ ইউক্রেনের কর্মকর্তারা যেকোনো শান্তি চুক্তির অধীনে কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূমি ছাড়ার সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। জেলেনস্কি বলেন, তাঁর ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার কোনো ম্যান্ডেট নেই এবং রাষ্ট্রের ভূমি ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো কেনা-বেচা করা যায় না। ইউক্রেনের সংবিধান অনুসারে, আঞ্চলিক পরিবর্তন অবশ্যই একটি গণভোটের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে, যা ইউক্রেনের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ, অন্তত ৩০ লাখ ইউক্রেনীয় ভোটারের স্বাক্ষর থাকলে আয়োজন করা যেতে পারে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই গণভোটের বিষয়টির সমালোচনা করেছেন এবং তিনি বলেছিলেন, ‘কিছু ভূমি অদল-বদল হবে।’ এখন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা মূলত এই দোনেৎস্কের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে যাবে সেটাই নিয়েই থমকে আছে।
রয়টার্স থেকে পরিমার্জিত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
উশাকভ মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের সম্পূর্ণ এলাকার ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ দাবির কথাই বলেছিলেন। পুতিন ইউক্রেনে হাজার হাজার সৈন্য পাঠানোর প্রায় ৪ বছর পরও এবং দোনেৎস্কে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহের এক দশকেরও বেশি সময় পর অঞ্চলটির কিছু অংশ এখনো ইউক্রেনের হাতে আছে।
প্রায় সব দেশই দোনেৎস্ককে ইউক্রেনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু এটি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের চারটি অঞ্চলের মধ্যে একটি, যা মস্কো ২০২২ সালে একটি গণভোটের পর সংযুক্ত করার কথা ঘোষণা করে। কিয়েভ ও পশ্চিমা দেশগুলো সেই গণভোটকে ‘প্রহসন’ বলে বাতিল করে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফক্স নিউজকে বলেছিলেন, যুদ্ধটি এখন দোনেৎস্কের সেই ২০ শতাংশ বা ৫ হাজার বর্গকিলোমিটারের এলাকা নিয়ে, যা রাশিয়া নিয়ন্ত্রণ করে না কিন্তু চায়।
পুতিন ২০২২ সালে ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর সময় বলেছিলেন, তাঁর লক্ষ্য হলো ‘গত আট বছর ধরে যারা ভয়ভীতি ও গণহত্যার শিকার হয়েছেন...সেই মানুষগুলোকে রক্ষা করা।’ ইউক্রেন এবং তার মিত্ররা বলেছিল, পুতিনের এই দাবি ঔপনিবেশিক ধাঁচের এবং এলাকা দখলের জন্য একটি মিথ্যা অজুহাত মাত্র।
পুতিনের এই দাবি মূলত দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ের দিকে ইঙ্গিত করে, যারা ২০১৪ সালে ইউক্রেনীয় সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিছু এলাকা দখল করেছিল। পূর্ব ইউক্রেনে এর পরের সংঘর্ষে উভয় পক্ষই শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছিল। মস্কো এই অঞ্চলের বিশাল রুশভাষী জনসংখ্যাকে উদ্ধৃত করে বলেছিল যে,২০২২ সালে হস্তক্ষেপ করা তাদের নৈতিক কর্তব্য।
কিয়েভ বলেছিল, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় শক্তি দিয়ে জবাব দেওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় ছিল না এবং তারাও বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীর বিরুদ্ধে শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের অভিযোগ এনেছিল। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সালের শুরু পর্যন্ত ইউক্রেনীয় সরকারি বাহিনী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে সংঘাতে উভয় পক্ষে ৩ হাজার ১০৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৯ হাজার বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছিলেন।
দোনেৎস্কের বাকি যে অংশটি রাশিয়া চায়, তার মধ্যে রয়েছে স্লোভিয়ানস্ক এবং ক্রামাতোরস্ক—দুটি ‘দুর্গনগরী’ যা ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এই শহরগুলো ইউক্রেনের বাকি অঞ্চল রক্ষার জন্য কিয়েভের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দোনেৎস্কের পশ্চিমের ভূমি অনেকটাই সমতল এবং বিশাল খোলা মাঠ; যা রাশিয়াকে দোনেৎস্কের বাইরে অগ্রসর হতে এবং দিনিপ্রো নদীর পূর্ব তীর পর্যন্ত এলাকা দখল করার পথ সহজ করে দেবে।
শহরগুলো পরিখা, ট্যাংক-বিধ্বংসী বাধা, বাংকার এবং মাইনক্ষেত্রসহ অত্যন্ত সুরক্ষিত প্রতিরক্ষা লাইনের অংশ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, গণভোট ছাড়া দোনেৎস্কের বাকি অংশ রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়া অবৈধ হবে এবং তা ভবিষ্যতে ইউক্রেনের গভীরে আক্রমণের জন্য রাশিয়াকে একটি পথ খুলে দেবে।
কিয়েভের আশঙ্কা, যদি তারা দোনেৎস্কের বাকি অংশ ছেড়ে দেয়, তবে রাশিয়া আবার অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হবে এবং একসময় দোনেৎস্ক ব্যবহার করে পশ্চিম দিকে আক্রমণ চালাবে।
উভয় পক্ষই দোনেৎস্ককে কেন্দ্র করে যুদ্ধে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে এবং প্রচুর অর্থ ও সরঞ্জাম ব্যয় করেছে। এর মধ্যে বাখমুত শহরের লড়াইও রয়েছে। যেখানে রাশিয়া হাজার হাজার দণ্ডিত অপরাধীকে ভাড়াটে সৈন্যে পরিণত করে রণক্ষেত্রে নামিয়েছিল। এ কারণে, দোনেৎস্ক উভয় দেশের জনমানসে আরও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ফলে কারও পক্ষে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করা কঠিন।
ইউক্রেন চায় না যে, রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে জয় করতে ব্যর্থ হওয়া ভূখণ্ডকে উপহার হিসেবে পাক এবং জেলেনস্কি বলেছেন, যে যুদ্ধ রাশিয়া শুরু করেছে, তার জন্য তাদের পুরস্কৃত করা উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার অক্টোবর মাসে বলেছিল, রাশিয়ার অগ্রগতির হার দেখে মনে হয় না যে তারা খুব শিগগিরই দোনেৎস্কের বাকি অংশ দখল করতে চলেছে। তবে ‘রাশিয়ার অগ্রগতির একটি অপরিবর্তনীয় হার ধরে নিলে’ তারা ২০২৭ সালের আগস্টের মধ্যে তা নিতে পারে।
রাশিয়ার কমান্ডাররা অবশ্য আরও বেশি আশাবাদী। জেনারেল স্টাফের প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ রোববার পুতিনকে বলেছেন, মস্কোর বাহিনী পুরো ফ্রন্ট লাইন বরাবর অগ্রসর হচ্ছে এবং দনবাসের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য কাজ করছে।
দোনেৎস্ক বন্দর, রেলপথ এবং অন্যান্য ভারী শিল্পের কেন্দ্র। এটি একসময় ইউক্রেনের কয়লা, পরিশোধিত ইস্পাত, কোক, ঢালাই লোহা এবং ইস্পাত উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি সরবরাহ করত, তবে যুদ্ধের কারণে অনেক খনি ও কারখানা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া, দোনেৎস্কে বিরল মৃত্তিকা, টাইটানিয়াম এবং জিরকোনিয়াম রয়েছে—যা এটিকে নিয়ন্ত্রণকারী পক্ষের জন্য আয়ের উৎস।
দোনেৎস্কের ভাগ্য পুতিন এবং জেলেনস্কি উভয়ের ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারকে প্রভাবিত করতে পারে। পুতিন নিজেকে জাতিগত রুশদের রক্ষক হিসেবে তুলে ধরেছেন, তারা যেখানেই থাকুক না কেন। পুরো দোনেৎস্ককে সুরক্ষিত করা এই বক্তব্যের মূল কেন্দ্রবিন্দু। জেলেনস্কি ২০১৯ সালে পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধ অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। ২০২২ সাল থেকে তিনি অনেক বড়, বৈরী প্রতিবেশীর মুখে অস্ত্র এবং সংখ্যায় কম ইউক্রেনের এক দৃঢ় রক্ষক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন।
লড়াই না করে দোনেৎস্ক ছেড়ে দেওয়া—যেখানে অন্তত আড়াই লাখ ইউক্রেনীয় বাস করে—ইউক্রেনীয়দের কাছে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখা হতে পারে, যাদের অনেকেই যুদ্ধক্ষেত্রে স্বজন হারিয়েছেন। কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজির সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুসারে, ইউক্রেনীয়দের একটি সংকীর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এখনো আঞ্চলিক ছাড়ের বিরোধিতা করে।
জেলেনস্কিসহ ইউক্রেনের কর্মকর্তারা যেকোনো শান্তি চুক্তির অধীনে কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূমি ছাড়ার সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। জেলেনস্কি বলেন, তাঁর ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার কোনো ম্যান্ডেট নেই এবং রাষ্ট্রের ভূমি ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো কেনা-বেচা করা যায় না। ইউক্রেনের সংবিধান অনুসারে, আঞ্চলিক পরিবর্তন অবশ্যই একটি গণভোটের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে, যা ইউক্রেনের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ, অন্তত ৩০ লাখ ইউক্রেনীয় ভোটারের স্বাক্ষর থাকলে আয়োজন করা যেতে পারে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই গণভোটের বিষয়টির সমালোচনা করেছেন এবং তিনি বলেছিলেন, ‘কিছু ভূমি অদল-বদল হবে।’ এখন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা মূলত এই দোনেৎস্কের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে যাবে সেটাই নিয়েই থমকে আছে।
রয়টার্স থেকে পরিমার্জিত

আপাতদৃষ্টিতে মিয়ানমারে মূল খেলোয়াড় জান্তা সরকার ও বিদ্রোহীরা হলেও দেশটির রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যুতে চীন দীর্ঘদিনের নীরব কিন্তু শক্তিশালী খেলোয়াড়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে বেইজিং ‘হস্তক্ষেপ না করার’ নীতি মেনে চলার কথা বলে।
২৬ এপ্রিল ২০২৫
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
১ দিন আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
২ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
সম্প্রতি টেসলার মালিক ইলন মাস্ক গত নভেম্বরে এমন এক পে-অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, যা তাঁকে একজন ট্রিলিয়ন ডলারের মালিকে পরিণত করতে পারে। তিনি ইতিমধ্যেই বিশ্বের শীর্ষ ধনী। যদি তিনি প্রস্তাবিত পূর্ণ প্যাকেজটি পান, তাহলে তিনি বিশ্বের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হবেন। ফোর্বসের হিসেবে বর্তমানে বিশ্বের ৩ হাজার ২৮ জন বিলিয়নিয়ার আছেন। তাঁদের মোট সম্পদ প্রায় ১৬.১ ট্রিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে পৃথিবীতে এখনো প্রায় ৮৩ কোটি ১০ লাখ মানুষ দৈনিক তিন ডলারের নিচে আয় করে চরম দারিদ্র্যে দিন কাটান।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের এই বিপুল সম্পদ বৈষম্য শুধু অর্থনীতিকে নয়, রাজনীতি, মিডিয়া ও চিন্তাকেও প্রভাবিত করে। অনেকেই মনে করেন, বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ ও ক্ষমতা বিশ্বব্যবস্থাকে ‘অতি ধনীদের স্বার্থে’ পুনর্গঠন করছে। আবার অন্য একটি মত বলছে, বিলিয়নিয়ারেরা না থাকলে উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও অগ্রগতি থমকে যাবে। কারণ বৃহৎ বিনিয়োগই গড়ে তোলে নতুন সমাধান।
উদ্ভাবন কি থেমে যাবে
অ্যাডাম স্মিথ ইনস্টিটিউটের ম্যাক্সওয়েল মার্লোর মতে, বিলিয়নিয়ারদের বিলোপ করা হলে পশ্চিমা অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে। তাঁর দাবি, অধিকাংশ বিলিয়নিয়ার তাঁদের সম্পদের মালিক হয়েছেন সমাজের চাহিদামতো পণ্য ও প্রযুক্তি তৈরি করে। তাঁদের সম্পদ মূলত কোম্পানির শেয়ার, মেধাস্বত্ব অথবা সম্পত্তি—যা দিনে দিনে ওঠানামা করে। তাঁর মতে, এই ধনী ব্যক্তিদের প্রণোদনাই উদ্ভাবনে গতি আনে; তা না থাকলে উন্নয়ন থেমে যাবে।
যদি ন্যায্যভাবে সম্পদ বণ্টিত হতো
গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ট্যাক্স জাস্টিসের ডেরেজে আলেমায়েহুর মতে, শুধু বিলিয়নিয়ার কর আরোপ নয়—প্রশ্ন হচ্ছে, সেই কর কোথায় যাবে। দক্ষিণ বিশ্বের শ্রম ও সম্পদ থেকেই যে বিপুল সম্পদ তৈরি হয়, তাই তার ন্যায্য অংশ দক্ষিণেই ফিরে আসা উচিত। তিনি বলেন, বৈষম্য কমাতে শুধু অর্থ হস্তান্তর নয়, বৈশ্বিক আর্থিক কাঠামো পুনর্গঠন জরুরি; নইলে বৈষম্য আরও গভীর হবে।
বিধিনিষেধ কি বদলাতে হবে
ডেনিসন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ফাদেল কাবুব বলেন, বিলিয়নিয়ারেরা আসলে ব্যর্থ নীতির ফল। সিস্টেম যেভাবে সাজানো, তাতে সম্পদ একদিকে কেন্দ্রীভূত হওয়াই স্বাভাবিক। তাঁর মতে, বিলিয়নিয়ার শ্রেণিকে বিলোপ করতে হলে আধুনিক অ্যান্টি ট্রাস্ট ও কঠোর বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
মিডিয়ার ওপর প্রভাব কমবে
গোল্ডস্মিথস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেস ফ্রিডম্যান মনে করেন, বিলিয়নিয়ারেরা পুরো মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কিনে ফেলতে সক্ষম হওয়ায় তথ্যপ্রবাহ তাঁদের স্বার্থেই নিয়ন্ত্রিত হয়। যেমন—বেজোস বা ইলন মাস্কের গণমাধ্যম মালিকানা এই অঙ্গনের স্বাধীনতাকে দীর্ঘমেয়াদে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাই বিলিয়নিয়ার প্রভাব সীমিত হলে তথ্যের উৎসও আরও স্বাধীন হতে পারে।
চরম সম্পদ কি সত্যিই বিলোপ করা সম্ভব
বিশ্ব ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাবের লুকাস শ্যানসেলের মতে, ইতিহাসে এর নজির আছে। উদাহরণস্বরূপ—রকেফেলারের একচেটিয়া সাম্রাজ্য ভেঙে দেওয়া, কিংবা রুজভেল্টের সময় সর্বোচ্চ করহার ৯৪ শতাংশে উন্নীত করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পানামা পেপারসের মতো ফাঁস যেমন দুর্দান্ত স্বচ্ছতা তৈরি করেছে, তেমনি তা পরিবর্তনের সুযোগও তৈরি করছে। তিনি মনে করেন, ধনীদের ওপর কর আরোপের মতো ধারণা এখন আর ‘যদি’ নয়, বরং ‘কখন’ করা হবে—এ প্রশ্নে এসে দাঁড়িয়েছে।
আল-জাজিরা অবলম্বনে

বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
সম্প্রতি টেসলার মালিক ইলন মাস্ক গত নভেম্বরে এমন এক পে-অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, যা তাঁকে একজন ট্রিলিয়ন ডলারের মালিকে পরিণত করতে পারে। তিনি ইতিমধ্যেই বিশ্বের শীর্ষ ধনী। যদি তিনি প্রস্তাবিত পূর্ণ প্যাকেজটি পান, তাহলে তিনি বিশ্বের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হবেন। ফোর্বসের হিসেবে বর্তমানে বিশ্বের ৩ হাজার ২৮ জন বিলিয়নিয়ার আছেন। তাঁদের মোট সম্পদ প্রায় ১৬.১ ট্রিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে পৃথিবীতে এখনো প্রায় ৮৩ কোটি ১০ লাখ মানুষ দৈনিক তিন ডলারের নিচে আয় করে চরম দারিদ্র্যে দিন কাটান।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের এই বিপুল সম্পদ বৈষম্য শুধু অর্থনীতিকে নয়, রাজনীতি, মিডিয়া ও চিন্তাকেও প্রভাবিত করে। অনেকেই মনে করেন, বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ ও ক্ষমতা বিশ্বব্যবস্থাকে ‘অতি ধনীদের স্বার্থে’ পুনর্গঠন করছে। আবার অন্য একটি মত বলছে, বিলিয়নিয়ারেরা না থাকলে উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও অগ্রগতি থমকে যাবে। কারণ বৃহৎ বিনিয়োগই গড়ে তোলে নতুন সমাধান।
উদ্ভাবন কি থেমে যাবে
অ্যাডাম স্মিথ ইনস্টিটিউটের ম্যাক্সওয়েল মার্লোর মতে, বিলিয়নিয়ারদের বিলোপ করা হলে পশ্চিমা অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে। তাঁর দাবি, অধিকাংশ বিলিয়নিয়ার তাঁদের সম্পদের মালিক হয়েছেন সমাজের চাহিদামতো পণ্য ও প্রযুক্তি তৈরি করে। তাঁদের সম্পদ মূলত কোম্পানির শেয়ার, মেধাস্বত্ব অথবা সম্পত্তি—যা দিনে দিনে ওঠানামা করে। তাঁর মতে, এই ধনী ব্যক্তিদের প্রণোদনাই উদ্ভাবনে গতি আনে; তা না থাকলে উন্নয়ন থেমে যাবে।
যদি ন্যায্যভাবে সম্পদ বণ্টিত হতো
গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ট্যাক্স জাস্টিসের ডেরেজে আলেমায়েহুর মতে, শুধু বিলিয়নিয়ার কর আরোপ নয়—প্রশ্ন হচ্ছে, সেই কর কোথায় যাবে। দক্ষিণ বিশ্বের শ্রম ও সম্পদ থেকেই যে বিপুল সম্পদ তৈরি হয়, তাই তার ন্যায্য অংশ দক্ষিণেই ফিরে আসা উচিত। তিনি বলেন, বৈষম্য কমাতে শুধু অর্থ হস্তান্তর নয়, বৈশ্বিক আর্থিক কাঠামো পুনর্গঠন জরুরি; নইলে বৈষম্য আরও গভীর হবে।
বিধিনিষেধ কি বদলাতে হবে
ডেনিসন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ফাদেল কাবুব বলেন, বিলিয়নিয়ারেরা আসলে ব্যর্থ নীতির ফল। সিস্টেম যেভাবে সাজানো, তাতে সম্পদ একদিকে কেন্দ্রীভূত হওয়াই স্বাভাবিক। তাঁর মতে, বিলিয়নিয়ার শ্রেণিকে বিলোপ করতে হলে আধুনিক অ্যান্টি ট্রাস্ট ও কঠোর বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
মিডিয়ার ওপর প্রভাব কমবে
গোল্ডস্মিথস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেস ফ্রিডম্যান মনে করেন, বিলিয়নিয়ারেরা পুরো মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কিনে ফেলতে সক্ষম হওয়ায় তথ্যপ্রবাহ তাঁদের স্বার্থেই নিয়ন্ত্রিত হয়। যেমন—বেজোস বা ইলন মাস্কের গণমাধ্যম মালিকানা এই অঙ্গনের স্বাধীনতাকে দীর্ঘমেয়াদে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাই বিলিয়নিয়ার প্রভাব সীমিত হলে তথ্যের উৎসও আরও স্বাধীন হতে পারে।
চরম সম্পদ কি সত্যিই বিলোপ করা সম্ভব
বিশ্ব ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাবের লুকাস শ্যানসেলের মতে, ইতিহাসে এর নজির আছে। উদাহরণস্বরূপ—রকেফেলারের একচেটিয়া সাম্রাজ্য ভেঙে দেওয়া, কিংবা রুজভেল্টের সময় সর্বোচ্চ করহার ৯৪ শতাংশে উন্নীত করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পানামা পেপারসের মতো ফাঁস যেমন দুর্দান্ত স্বচ্ছতা তৈরি করেছে, তেমনি তা পরিবর্তনের সুযোগও তৈরি করছে। তিনি মনে করেন, ধনীদের ওপর কর আরোপের মতো ধারণা এখন আর ‘যদি’ নয়, বরং ‘কখন’ করা হবে—এ প্রশ্নে এসে দাঁড়িয়েছে।
আল-জাজিরা অবলম্বনে

আপাতদৃষ্টিতে মিয়ানমারে মূল খেলোয়াড় জান্তা সরকার ও বিদ্রোহীরা হলেও দেশটির রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যুতে চীন দীর্ঘদিনের নীরব কিন্তু শক্তিশালী খেলোয়াড়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে বেইজিং ‘হস্তক্ষেপ না করার’ নীতি মেনে চলার কথা বলে।
২৬ এপ্রিল ২০২৫
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
২১ ঘণ্টা আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
২ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে। এই পরিচয়টিকে তাকাইচি নিজেও গর্বের সঙ্গে গ্রহণ করেন। মার্গারেট থ্যাচারের অনুরাগী এই রক্ষণশীল নেতা ঘরোয়া অর্থনীতি থেকে শুরু করে পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা—সব ক্ষেত্রেই শক্ত অবস্থানের বার্তা দিয়েছেন।
তাকাইচির রাজনৈতিক পরিচয়ের মূল কেন্দ্রে রয়েছে ‘নিপ্পন কেইগি’ নামে জাপানের সবচেয়ে প্রভাবশালী জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী। এই সংগঠন জাপানের সংবিধানের যুদ্ধবিরোধী ৯ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠন এবং ঐতিহ্যবাদী মূল্যবোধে প্রত্যাবর্তনের পক্ষে। পূর্বসুরী শিনজো আবের মতো তাই তাকাইচিও জাপানকে স্বাভাবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান, যেখানে গোয়েন্দা সংস্থা, আধুনিক সেনাবাহিনী এবং কঠোর নিরাপত্তা আইন থাকবে।
অর্থনীতির ক্ষেত্রে তিনি জাতীয় শিল্পকে শক্তিশালী করা, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানো এবং রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বৃদ্ধির পক্ষে। একই সঙ্গে কঠোর অভিবাসন নীতি ও রক্ষণশীল মূল্যবোধের প্রচারও তাঁকে ডানপন্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় করেছে। তবে এই অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এখন আন্তর্জাতিক উত্তেজনার সঙ্গে গেঁথে গেছে—বিশেষ করে, তাইওয়ান ইস্যুতে তাঁর অবস্থানের কারণে।
তাকাইচি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চীনের প্রতি কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছেন। বেইজিংকে তিনি কৌশলগত হুমকি হিসেবে দেখেন এবং প্রতিরোধমূলক সামরিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপের পক্ষে জোর দিচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে অক্টোবরের শেষ দিকে তাঁর ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাৎ দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন সোনালি যুগে প্রবেশ করানোর আভাস দেয়। জাপান প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির কমপক্ষে ২ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আর যুক্তরাষ্ট্র বিরল ধাতুর সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ অর্থনৈতিক সহায়তার ঘোষণা দেয়।
তবে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো তাইওয়ানের সঙ্গে তাকাইচির ঘনিষ্ঠতা। তিনি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, যা চীনের কাছে স্পষ্ট উত্তেজনাকর পদক্ষেপ হিসেবে ধরা পড়েছে। আরও বিতর্ক সৃষ্টি হয় যখন তাকাইচি প্রকাশ্যে বলেন, তাইওয়ানের নিরাপত্তা জাপানের নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এমনকি তাইওয়ানে চীনা হামলার ক্ষেত্রে জাপানের আত্মরক্ষা বাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
এ ক্ষেত্রে চীনের প্রতিক্রিয়াও ছিল কঠোর ও দ্রুত। তারা তাকাইচির বিরুদ্ধে ‘পুরোনো সামরিকতাবাদকে পুনরুজ্জীবিত করার’ অভিযোগ তোলে, রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এবং জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাঠায়। পাশাপাশি সামুদ্রিক এলাকায় কোস্টগার্ডের টহল বাড়ায় চীন, জাপানি সামুদ্রিক পণ্যে সীমাবদ্ধতা আরোপের হুমকি দেয় এবং উত্তেজনাপূর্ণ নানা বিবৃতি দেয়।
এদিকে জাপানও পশ্চিম সীমান্তের ইয়োনাগুনি দ্বীপে বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও একই দ্বীপে সামরিক অবকাঠামো শক্তিশালী করছে। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করছে।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি তাকাইচিকে উত্তেজনা না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ আগামী এপ্রিলে তিনি বেইজিং সফর করতে চান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাকাইচির নেতৃত্বে জাপান নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রবেশ করেছে। তাঁর দৃঢ় অবস্থান দেশকে হয় পুনরুত্থানের পথে নেবে—নয়তো চীন–তাইওয়ান উত্তেজনার কেন্দ্রে ঠেলে দেবে। ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তিনি কোন পথে হাঁটবেন তার ওপর।

জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে। এই পরিচয়টিকে তাকাইচি নিজেও গর্বের সঙ্গে গ্রহণ করেন। মার্গারেট থ্যাচারের অনুরাগী এই রক্ষণশীল নেতা ঘরোয়া অর্থনীতি থেকে শুরু করে পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা—সব ক্ষেত্রেই শক্ত অবস্থানের বার্তা দিয়েছেন।
তাকাইচির রাজনৈতিক পরিচয়ের মূল কেন্দ্রে রয়েছে ‘নিপ্পন কেইগি’ নামে জাপানের সবচেয়ে প্রভাবশালী জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী। এই সংগঠন জাপানের সংবিধানের যুদ্ধবিরোধী ৯ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠন এবং ঐতিহ্যবাদী মূল্যবোধে প্রত্যাবর্তনের পক্ষে। পূর্বসুরী শিনজো আবের মতো তাই তাকাইচিও জাপানকে স্বাভাবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান, যেখানে গোয়েন্দা সংস্থা, আধুনিক সেনাবাহিনী এবং কঠোর নিরাপত্তা আইন থাকবে।
অর্থনীতির ক্ষেত্রে তিনি জাতীয় শিল্পকে শক্তিশালী করা, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানো এবং রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বৃদ্ধির পক্ষে। একই সঙ্গে কঠোর অভিবাসন নীতি ও রক্ষণশীল মূল্যবোধের প্রচারও তাঁকে ডানপন্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় করেছে। তবে এই অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এখন আন্তর্জাতিক উত্তেজনার সঙ্গে গেঁথে গেছে—বিশেষ করে, তাইওয়ান ইস্যুতে তাঁর অবস্থানের কারণে।
তাকাইচি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চীনের প্রতি কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছেন। বেইজিংকে তিনি কৌশলগত হুমকি হিসেবে দেখেন এবং প্রতিরোধমূলক সামরিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপের পক্ষে জোর দিচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে অক্টোবরের শেষ দিকে তাঁর ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাৎ দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন সোনালি যুগে প্রবেশ করানোর আভাস দেয়। জাপান প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির কমপক্ষে ২ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আর যুক্তরাষ্ট্র বিরল ধাতুর সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ অর্থনৈতিক সহায়তার ঘোষণা দেয়।
তবে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো তাইওয়ানের সঙ্গে তাকাইচির ঘনিষ্ঠতা। তিনি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, যা চীনের কাছে স্পষ্ট উত্তেজনাকর পদক্ষেপ হিসেবে ধরা পড়েছে। আরও বিতর্ক সৃষ্টি হয় যখন তাকাইচি প্রকাশ্যে বলেন, তাইওয়ানের নিরাপত্তা জাপানের নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এমনকি তাইওয়ানে চীনা হামলার ক্ষেত্রে জাপানের আত্মরক্ষা বাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
এ ক্ষেত্রে চীনের প্রতিক্রিয়াও ছিল কঠোর ও দ্রুত। তারা তাকাইচির বিরুদ্ধে ‘পুরোনো সামরিকতাবাদকে পুনরুজ্জীবিত করার’ অভিযোগ তোলে, রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এবং জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাঠায়। পাশাপাশি সামুদ্রিক এলাকায় কোস্টগার্ডের টহল বাড়ায় চীন, জাপানি সামুদ্রিক পণ্যে সীমাবদ্ধতা আরোপের হুমকি দেয় এবং উত্তেজনাপূর্ণ নানা বিবৃতি দেয়।
এদিকে জাপানও পশ্চিম সীমান্তের ইয়োনাগুনি দ্বীপে বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও একই দ্বীপে সামরিক অবকাঠামো শক্তিশালী করছে। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করছে।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি তাকাইচিকে উত্তেজনা না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ আগামী এপ্রিলে তিনি বেইজিং সফর করতে চান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাকাইচির নেতৃত্বে জাপান নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রবেশ করেছে। তাঁর দৃঢ় অবস্থান দেশকে হয় পুনরুত্থানের পথে নেবে—নয়তো চীন–তাইওয়ান উত্তেজনার কেন্দ্রে ঠেলে দেবে। ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তিনি কোন পথে হাঁটবেন তার ওপর।

আপাতদৃষ্টিতে মিয়ানমারে মূল খেলোয়াড় জান্তা সরকার ও বিদ্রোহীরা হলেও দেশটির রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যুতে চীন দীর্ঘদিনের নীরব কিন্তু শক্তিশালী খেলোয়াড়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে বেইজিং ‘হস্তক্ষেপ না করার’ নীতি মেনে চলার কথা বলে।
২৬ এপ্রিল ২০২৫
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
২১ ঘণ্টা আগে
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
১ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে বলে দুই দেশই নিশ্চিত করেছে।
রাষ্ট্রীয় সফরে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভারতে পৌঁছে পরদিন শুক্রবার মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন পুতিন। এই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি পর্যালোচনা ছাড়াও নতুন কয়েকটি আন্তদপ্তর ও বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা এবং একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব ধরে রাখতে ভারতের নীতির জন্য এই বৈঠক একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাশিয়া থেকে ডিসকাউন্টে ভারতের তেল কেনা দীর্ঘদিন ধরেই ওয়াশিংটনকে অসন্তুষ্ট করে আসছে। এই অসন্তুষ্টি থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা মোট শুল্ককে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছে। তবে ভারত বলছে, তারা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার বিরোধী নয়, কিন্তু ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানি চাহিদা মেটাতেই বাধ্য হয়ে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা হচ্ছে। নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ‘রসনেফত’ ও ‘লুকওইল’ এর মতো রাশিয়ার কিছু কোম্পানি থেকে ভারত তেল কিনবে না বলে জানিয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞামুক্ত রুশ সরবরাহকারীদের সঙ্গে বাণিজ্য চালু থাকবে।
পুতিনের এই সফরে দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হবে। ভারত রাশিয়ায় ওষুধ, কৃষিপণ্য ও টেক্সটাইল রপ্তানি বাড়াতে চায় এবং পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের অনুরোধ জানাবে। এ ছাড়া সার সরবরাহের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি এবং রাশিয়ায় ভারতীয় দক্ষ জনশক্তির নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন নিয়ে আলোচনা এগোতে পারে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, সমুদ্র পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা ও গণমাধ্যম সহযোগিতা বিষয়ক নথিপত্র চূড়ান্তের কাজও চলছে।
বুধবার এই বিষয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্টের এক নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, জ্বালানি সহযোগিতাই পুতিন-মোদি আলোচনার বড় অংশ দখল করবে। ভারতের ফার ইস্টে বিনিয়োগ, রাশিয়ার সঙ্গে বেসামরিক পারমাণবিক প্রকল্প এবং কুদানকুলাম প্রকল্পের সম্প্রসারণ নিয়ে অগ্রগতি পর্যালোচনা হবে। স্থানীয়ভাবে যন্ত্রাংশ উৎপাদন এবং তৃতীয় দেশে যৌথ পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হবে।
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এই সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ২০১৮ সালের ৫.৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির আওতায় ভারতের হাতে ইতিমধ্যে রাশিয়ার তিনটি এস-৪০০ স্কোয়াড্রন এসেছে। যুদ্ধজনিত কারণে বাকিগুলোর সরবরাহে যুদ্ধজনিত বিলম্ব হচ্ছে। ভারত এই সরবরাহ দ্রুত নিশ্চিত করতে চাপ দেবে। পাশাপাশি আরও এস-৪০০ কেনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়নি, যদিও বৈঠক থেকে কোনো ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা কম। রুশ নির্মিত এসইউ-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান আপগ্রেড, অস্ত্র সরবরাহ দ্রুততর করা এবং যৌথ সামরিক মহড়ায় সমন্বয় জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা হবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত বহুজাতিক অস্ত্র সরবরাহকারীদের দিকে নজর বাড়ালেও রাশিয়া এখনো তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা অংশীদার। পুতিনের সফরকে সেই সম্পর্কটি আরও দৃঢ় করার বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে বলে দুই দেশই নিশ্চিত করেছে।
রাষ্ট্রীয় সফরে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভারতে পৌঁছে পরদিন শুক্রবার মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন পুতিন। এই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি পর্যালোচনা ছাড়াও নতুন কয়েকটি আন্তদপ্তর ও বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা এবং একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব ধরে রাখতে ভারতের নীতির জন্য এই বৈঠক একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাশিয়া থেকে ডিসকাউন্টে ভারতের তেল কেনা দীর্ঘদিন ধরেই ওয়াশিংটনকে অসন্তুষ্ট করে আসছে। এই অসন্তুষ্টি থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা মোট শুল্ককে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছে। তবে ভারত বলছে, তারা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার বিরোধী নয়, কিন্তু ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানি চাহিদা মেটাতেই বাধ্য হয়ে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা হচ্ছে। নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ‘রসনেফত’ ও ‘লুকওইল’ এর মতো রাশিয়ার কিছু কোম্পানি থেকে ভারত তেল কিনবে না বলে জানিয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞামুক্ত রুশ সরবরাহকারীদের সঙ্গে বাণিজ্য চালু থাকবে।
পুতিনের এই সফরে দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হবে। ভারত রাশিয়ায় ওষুধ, কৃষিপণ্য ও টেক্সটাইল রপ্তানি বাড়াতে চায় এবং পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের অনুরোধ জানাবে। এ ছাড়া সার সরবরাহের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি এবং রাশিয়ায় ভারতীয় দক্ষ জনশক্তির নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন নিয়ে আলোচনা এগোতে পারে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, সমুদ্র পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা ও গণমাধ্যম সহযোগিতা বিষয়ক নথিপত্র চূড়ান্তের কাজও চলছে।
বুধবার এই বিষয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্টের এক নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, জ্বালানি সহযোগিতাই পুতিন-মোদি আলোচনার বড় অংশ দখল করবে। ভারতের ফার ইস্টে বিনিয়োগ, রাশিয়ার সঙ্গে বেসামরিক পারমাণবিক প্রকল্প এবং কুদানকুলাম প্রকল্পের সম্প্রসারণ নিয়ে অগ্রগতি পর্যালোচনা হবে। স্থানীয়ভাবে যন্ত্রাংশ উৎপাদন এবং তৃতীয় দেশে যৌথ পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হবে।
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এই সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ২০১৮ সালের ৫.৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির আওতায় ভারতের হাতে ইতিমধ্যে রাশিয়ার তিনটি এস-৪০০ স্কোয়াড্রন এসেছে। যুদ্ধজনিত কারণে বাকিগুলোর সরবরাহে যুদ্ধজনিত বিলম্ব হচ্ছে। ভারত এই সরবরাহ দ্রুত নিশ্চিত করতে চাপ দেবে। পাশাপাশি আরও এস-৪০০ কেনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়নি, যদিও বৈঠক থেকে কোনো ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা কম। রুশ নির্মিত এসইউ-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান আপগ্রেড, অস্ত্র সরবরাহ দ্রুততর করা এবং যৌথ সামরিক মহড়ায় সমন্বয় জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা হবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত বহুজাতিক অস্ত্র সরবরাহকারীদের দিকে নজর বাড়ালেও রাশিয়া এখনো তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা অংশীদার। পুতিনের সফরকে সেই সম্পর্কটি আরও দৃঢ় করার বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আপাতদৃষ্টিতে মিয়ানমারে মূল খেলোয়াড় জান্তা সরকার ও বিদ্রোহীরা হলেও দেশটির রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যুতে চীন দীর্ঘদিনের নীরব কিন্তু শক্তিশালী খেলোয়াড়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে বেইজিং ‘হস্তক্ষেপ না করার’ নীতি মেনে চলার কথা বলে।
২৬ এপ্রিল ২০২৫
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
২১ ঘণ্টা আগে
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
১ দিন আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
২ দিন আগে