
পশ্চিম ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুরা স্পিড বোটে করে যখন বাংলাদেশি জাহাজ আবদুল্লাহকে ধাওয়া করেছিল নাবিকেরা তখন জরুরি সতর্ক সংকেত পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সময়মতো তাঁদের কাছে কেউ পৌঁছায়নি। ফলে জলদস্যুরা আবদুল্লাহর ওপরে উঠে পড়ে ফাঁকা গুলি চালায় এবং ক্যাপ্টেন ও সেকেন্ড অফিসারকে জিম্মি করে।
জাহাজটির প্রধান কর্মকর্তা আতিক উল্লাহ খান জাহাজ মালিকদের কাছে একটি অডিও বার্তায় এমনটাই জানিয়েছিলেন।
আবদুল্লাহ জাহাজের মালিক কোম্পানি এসআর শিপিং ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে রেকর্ডিংটি শেয়ার করেছে। জলদস্যুরা নাবিকদের ফোন নিয়ে যাওয়ার আগে রেকর্ড করা বার্তায় আতিক উল্লাহ খান বলেছিলেন, ‘আল্লাহর রহমতে এখন পর্যন্ত কেউ ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি।’
এর এক সপ্তাহ পরে জলদস্যুতার সর্বশেষ শিকার জাহাজ আবদুল্লাহ সোমালিয়ার উপকূলে নোঙর করা হয়। এই ঘটনা শিপিং কোম্পানিগুলোর ঝুঁকি এবং পরিবহণ খরচ বাড়াচ্ছে। এ ছাড়া লোহিত সাগর এবং আশেপাশের জলরাশিতে ইয়েমেনের হুথিরা বারবার ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রেখেছে।
বৃহৎ পাঁচটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের মতে, নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ২০ টিরও বেশি জাহাজ ছিনতাইচেষ্টার কারণে সশস্ত্র নিরাপত্তা রক্ষী এবং বীমার দাম বেড়েছে। একইসঙ্গে মুক্তিপণের ভীতিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
দুই সোমালি জলদস্যু গ্যাং সদস্য রয়টার্সকে বলেছেন, তাঁরা প্রায় এক দশক ধরে সুপ্ত থাকার পরে জলদস্যুতায় ফেরার জন্য কয়েকশ নটিক্যাল মাইল উত্তরে হুথি হামলার ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে।
সোমালিয়া জলদস্যুদের অর্থায়নকারী ইসমাইল ইসের (ছদ্মনাম) সঙ্গে কথা হয়েছে রয়টার্সের। ইসমাইল গত বছরের ডিসেম্বরে অন্য একটি বাল্ক ক্যারিয়ারের হাইজ্যাকিংয়ে অর্থায়ন করেছিলেন। ইসমাইল রয়টার্সকে বলেন, ‘হুথিদের হামলা সামলাতে গিয়ে আন্তর্জাতিক নৌ-বাহিনী সোমালিয়ার উপকূলে কার্যক্রম কমিয়ে দিয়েছে। আর সেই সুযোগটাই নিচ্ছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা।’
ইসমাইল সোমালিয়ার আধা-স্বায়ত্তশাসিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পুন্টল্যান্ডের উপকূলীয় অঞ্চল হুল আনোদ থেকে মোবাইল ফোনে রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলেন। ওই এলাকাতেই ছিনতাই হওয়া ভারতীয় জাহাজ রুয়েনকে কয়েক সপ্তাহ ধরে নোঙর করে রাখা হয়েছিল।
এবারের জলদ্যসুদের উত্থান ২০০৮-২০১৪ সালের মতো গুরুতর না হলেও আঞ্চলিক কর্মকর্তারা এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর সোর্সেরা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তঁদের ধারণা, সমস্যাটি আরও সংকটময় পরিস্থিতির দিকে যেতে পারে।
সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট হাসান শেখ মোহাম্মদ গত মাসে তাঁর আর্ট ডেকো প্যালেসে রয়টার্সকে বলেছিলেন, ‘যদি আমরা এটি এখনই বন্ধ না করি তবে আগের মতোই ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।’
ছিনতাইয়ের এক সপ্তাহ পর মাল্টার পতাকাবাহী রুয়েনকে মুক্ত করে ভারতীয় নৌবাহিনী। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলদস্যুতা বিরোধী মিশন ইউনাভফোর আটলান্টা বলেছে, জলদস্যুরা হয়ত জাহাজ আবদুল্লাহকে আক্রমণ করার জন্য রুয়েনকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করছে।
ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে, রুয়েনে থাকা ৩৫ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছে এবং ১৭ জিম্মিকে অক্ষত উদ্ধার করা হয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের অপরাধ বিরোধী শাখার ডেপুটি ডিরেক্টর সাইরাস মোডি বলেছেন, লোহিত সাগরের পূর্বে ভারতীয় নৌবাহিনীর অন্তত এক ডজন যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। এটি জলদস্যুদের ঘায়েল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ভারতীয় নৌবাহিনীর সর্বশেষ অভিযানে স্পষ্ট যে, জলদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযান চালনার লাভ ঝুঁকির চেয়ে অনেক বেশি। আশা করি, নতুন কোনো জাহাজ ছিনতাইয়ে যাওয়ার আগে এটি তাঁদের (জলদস্যু) কয়েকবার ভাবতে বাধ্য করবে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, সরকার আবদুল্লাহকে মুক্ত করতে কোনো ধরনের সামরিক পদক্ষেপের পক্ষে নয়। ঘটনা সোমালি উপকূলের কাছাকাছি হওয়ায় জলদস্যুরা পরিস্থিতি নিজেদের অনূকুলে রাখতে পারছে বলেও জানান তিনি।
বিশ্ব বাণিজ্যর পরিবহন খরচ বৃদ্ধি
বিশ্বের ব্যস্ততম শিপিং লেনগুলোর কয়েকটি সোমালিয়ার জলপথের মধ্যে রয়েছে। প্রতিবছর আনুমানিক ২০ হাজার জাহাজ আসবাবপত্র-পোশাক থেকে শুরু করে শস্য এবং জ্বালানিসিহ নানা পণ্য নিয়ে এই রুটে চলাচল করে। জাহাজগুলো এডেন উপসাগর দিয়ে লোহিত সাগর এবং সুয়েজ খাল হয়ে ইউরোপ এবং এশিয়ায় যায়।
ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ব্যুরো জানিয়েছে, সোমালিয়া জলদস্যুদের উৎপাত মাথায় চড়েছিল ২০১১ সালে। ওই বছর সোমালি জলদস্যুরা ২৩৭টি জাহাজে হামলা চালায় এবং শতাধিক মানুষকে জিম্মি করে। সেই বছর ওসেনস বিয়ন্ড পাইরেসি মনিটরিং গ্রুপ অনুমান করেছিল, জলদস্যুতার কারণে বিশ্ব অর্থনীতির প্রায় ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছিল। এর মধ্যে কয়েক মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ দিতে হয়েছিল জলদস্যুদের।
সামুদ্রিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপক এবং বীমাকারীরা বলেছেন, কম টহলযুক্ত জলরাশিতে বর্তমানে ছোট জাহাজকে লক্ষ্য করে জলদস্যুদের আক্রমণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কম। ইউনাভফোরের তথ্যও বলছে একই কথা। সংস্থাটির তথ্য অনুসারে, নভেম্বর থেকে জলদস্যুরা সফলভাবে কমপক্ষে দুটি পণ্যবাহী জাহাজ এবং ১২টি মাছ ধরার জাহাজ ছিনতাই করেছে।
ইউনাভফোর মিশনের তথ্যমতে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এডেন উপসাগর এবং সোমালিয়া উপকূলে জলদস্যুদের পাঁচটি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। এই তথ্যকে প্রাধান্য দিয়ে সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, এই মাসে বর্ষাকাল শেষ হওয়ার পর জলদস্যুরা আরও দক্ষিণ এবং পূর্ব দিকে দস্যুতা চালাতে পারে।
বিশ্ব বাণিজ্যের বীমা শিল্পের কর্মকর্তারা বলেছেন, জলদস্যুদের অভিযান চালানো এলাকা এখন আগের চেয়ে বড় হয়েছে। বীমাকারীরা ওই এলাকায় জাহাজে চলাচলের ওপর অতিরিক্ত যুদ্ধের ঝুঁকি আরোপ করেছে। ফলে অ্যাডেন উপসাগর এবং লোহিত সাগরে সমুদ্রযাত্রা আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে। এখন সাত দিনের সমুদ্রযাত্রার জন্য কয়েক হাজার ডলার অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে।
ব্যক্তিগত সশস্ত্র রক্ষীদের চাহিদা বাড়ায় এই খাতেও খরচ বাড়ছে। মেরিটাইম সিকিউরিটি সূত্র জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসে তিন দিনের জন্য একটি সশস্ত্র রক্ষী টিম নিয়োগের খরচ প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এখন এমন একটি নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী রাখতে ৪ হাজার থেকে ১৫ হাজার মার্কিন ডলার গুনতে হচ্ছে। হুথি ক্ষেপণাস্ত্র এবং সশস্ত্র ড্রোনের বিরুদ্ধে এসব নিরাপত্তা রক্ষীরা কাজে না আসলেও জলদস্যুদের আক্রমণ ঠেকাতে বেশ কার্যকর প্রমাণ হয়েছে।
এদিকে জলদস্যুদের এই নয়া উত্থানের পর্বে এখন পর্যন্ত কোনো মুক্তিপণ দেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তবে জলদস্যুদের অর্থায়নকারী ইসমাইল ইসসে ও বিষয়টির সঙ্গে জড়িত আরেকটি সূত্র দাবি করেছে, রুয়েনের মুক্তির জন্য কয়েক মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
জাহাজটি পরিচালনাকারী বুলগেরিয়ান কোম্পানি নাভিবুলগারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তাঁরা এখন মুক্তিপণ নিয়ে আলোচনার বিষয়ে মন্তব্য করতে পারছে না। তবে নাবিকদের মুক্ত করার জন্য ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রতি তাঁরা কৃতজ্ঞ।
বাংলাদেশি জাহাজ আবদুল্লাহর মালিক এসআর শিপিংয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, জলদস্যুরা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছিল। কিন্তু কোম্পানিটি কোনো মুক্তিপণের প্রস্তাব পায়নি।
সমাধান কিসে
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হুথি এবং সোমালি জলদস্যুদের মধ্যে সরাসরি সম্পর্কের কোনো প্রমাণ নেই। তবে ইসমাইল বলেছেন, হুথি বিদ্রোহীদের আক্রমণ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই দস্যুতায় নেমেছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা।
এক দশক আগে জলদস্যুদের প্রতিরোধে শিপিং কোম্পানিগুলো জাহাজে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছিল। ন্যাটো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী জলদস্যু নির্মুল অভিযানে যোগ দিয়েছিল। ১৪টি দেশের ২০ টির মতো যুদ্ধজাহাজ এডেন উপসাগর এবং ভারত মহাসাগরের জাহাজ চলাচলের রুটগুলোতে টহল দিত। কখনো কখনো ভূমধ্যসাগর এবং লোহিত সাগরেও এই টহল চলত।
জাতিসংঘের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সোমালিয়া শাখার কাউন্টার-পাইরেসি ইউনিটের সাবেক প্রধান জন স্টিড বলেছেন, ‘এই পদক্ষেপগুলো জলদস্যুদের আক্রমণ নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছিল। ধীরে ধীরে জলদস্যুদের হুমকি কমে গেলে দেশগুলো টহলরত যুদ্ধজাহাজের সংখ্যাও কমিয়ে দেয়। টহলের জাহাজগুলো বিভিন্ন মিশনে গিয়ে ডুবে যায় এবং জাতীয় কমান্ডে ফিরে যায়।’
ইউনাভফোর, ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং ব্রিটিশ নৌবাহিনী বলেছে, তাঁরা সোমালিয়াকে জলদস্যুতা মোকাবিলায় সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে টহল কমে যাওয়া ও অতিরিক্ত সংস্থান করবে কি না সে সম্পর্কে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়নি।
স্টিড বলেছেন, আরেকটি সমস্যা হল ২০২২ সালে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবের ব্যত্যয়। যার ফলে বিদেশি জাহাজগুলো সোমালিয়ার জলসীমায় টহল দেওয়ার অনুমতি পায়।
সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট মোহামুদ বলেছেন, আগেরবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পেছনে বড় কারণ ছিল জলে এবং স্থলে কঠোরভাবে সোমালিয়ার আইন প্রয়োগ, অসংখ্য আন্তর্জাতিক জাহাজ পাঠানো নয়।
সোমালিয়া সরকারের তথ্য অনুযায়ী, কোস্টগার্ডের ৭২০ জন প্রশিক্ষিত সদস্য রয়েছে। কিন্তু বাহিনীটির চারটি নৌযানের মধ্যে মাত্র একটি কার্যকরী। রাজধানী মোগাদিশু, পুন্টল্যান্ড এবং বিচ্ছিন্ন সোমালিল্যান্ড অঞ্চলেও সীমিত অস্ত্রসহ সামুদ্রিক পুলিশ বাহিনী রয়েছে।

পশ্চিম ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুরা স্পিড বোটে করে যখন বাংলাদেশি জাহাজ আবদুল্লাহকে ধাওয়া করেছিল নাবিকেরা তখন জরুরি সতর্ক সংকেত পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সময়মতো তাঁদের কাছে কেউ পৌঁছায়নি। ফলে জলদস্যুরা আবদুল্লাহর ওপরে উঠে পড়ে ফাঁকা গুলি চালায় এবং ক্যাপ্টেন ও সেকেন্ড অফিসারকে জিম্মি করে।
জাহাজটির প্রধান কর্মকর্তা আতিক উল্লাহ খান জাহাজ মালিকদের কাছে একটি অডিও বার্তায় এমনটাই জানিয়েছিলেন।
আবদুল্লাহ জাহাজের মালিক কোম্পানি এসআর শিপিং ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে রেকর্ডিংটি শেয়ার করেছে। জলদস্যুরা নাবিকদের ফোন নিয়ে যাওয়ার আগে রেকর্ড করা বার্তায় আতিক উল্লাহ খান বলেছিলেন, ‘আল্লাহর রহমতে এখন পর্যন্ত কেউ ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি।’
এর এক সপ্তাহ পরে জলদস্যুতার সর্বশেষ শিকার জাহাজ আবদুল্লাহ সোমালিয়ার উপকূলে নোঙর করা হয়। এই ঘটনা শিপিং কোম্পানিগুলোর ঝুঁকি এবং পরিবহণ খরচ বাড়াচ্ছে। এ ছাড়া লোহিত সাগর এবং আশেপাশের জলরাশিতে ইয়েমেনের হুথিরা বারবার ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রেখেছে।
বৃহৎ পাঁচটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের মতে, নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ২০ টিরও বেশি জাহাজ ছিনতাইচেষ্টার কারণে সশস্ত্র নিরাপত্তা রক্ষী এবং বীমার দাম বেড়েছে। একইসঙ্গে মুক্তিপণের ভীতিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
দুই সোমালি জলদস্যু গ্যাং সদস্য রয়টার্সকে বলেছেন, তাঁরা প্রায় এক দশক ধরে সুপ্ত থাকার পরে জলদস্যুতায় ফেরার জন্য কয়েকশ নটিক্যাল মাইল উত্তরে হুথি হামলার ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে।
সোমালিয়া জলদস্যুদের অর্থায়নকারী ইসমাইল ইসের (ছদ্মনাম) সঙ্গে কথা হয়েছে রয়টার্সের। ইসমাইল গত বছরের ডিসেম্বরে অন্য একটি বাল্ক ক্যারিয়ারের হাইজ্যাকিংয়ে অর্থায়ন করেছিলেন। ইসমাইল রয়টার্সকে বলেন, ‘হুথিদের হামলা সামলাতে গিয়ে আন্তর্জাতিক নৌ-বাহিনী সোমালিয়ার উপকূলে কার্যক্রম কমিয়ে দিয়েছে। আর সেই সুযোগটাই নিচ্ছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা।’
ইসমাইল সোমালিয়ার আধা-স্বায়ত্তশাসিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পুন্টল্যান্ডের উপকূলীয় অঞ্চল হুল আনোদ থেকে মোবাইল ফোনে রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলেন। ওই এলাকাতেই ছিনতাই হওয়া ভারতীয় জাহাজ রুয়েনকে কয়েক সপ্তাহ ধরে নোঙর করে রাখা হয়েছিল।
এবারের জলদ্যসুদের উত্থান ২০০৮-২০১৪ সালের মতো গুরুতর না হলেও আঞ্চলিক কর্মকর্তারা এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর সোর্সেরা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তঁদের ধারণা, সমস্যাটি আরও সংকটময় পরিস্থিতির দিকে যেতে পারে।
সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট হাসান শেখ মোহাম্মদ গত মাসে তাঁর আর্ট ডেকো প্যালেসে রয়টার্সকে বলেছিলেন, ‘যদি আমরা এটি এখনই বন্ধ না করি তবে আগের মতোই ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।’
ছিনতাইয়ের এক সপ্তাহ পর মাল্টার পতাকাবাহী রুয়েনকে মুক্ত করে ভারতীয় নৌবাহিনী। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলদস্যুতা বিরোধী মিশন ইউনাভফোর আটলান্টা বলেছে, জলদস্যুরা হয়ত জাহাজ আবদুল্লাহকে আক্রমণ করার জন্য রুয়েনকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করছে।
ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে, রুয়েনে থাকা ৩৫ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছে এবং ১৭ জিম্মিকে অক্ষত উদ্ধার করা হয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের অপরাধ বিরোধী শাখার ডেপুটি ডিরেক্টর সাইরাস মোডি বলেছেন, লোহিত সাগরের পূর্বে ভারতীয় নৌবাহিনীর অন্তত এক ডজন যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। এটি জলদস্যুদের ঘায়েল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ভারতীয় নৌবাহিনীর সর্বশেষ অভিযানে স্পষ্ট যে, জলদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযান চালনার লাভ ঝুঁকির চেয়ে অনেক বেশি। আশা করি, নতুন কোনো জাহাজ ছিনতাইয়ে যাওয়ার আগে এটি তাঁদের (জলদস্যু) কয়েকবার ভাবতে বাধ্য করবে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, সরকার আবদুল্লাহকে মুক্ত করতে কোনো ধরনের সামরিক পদক্ষেপের পক্ষে নয়। ঘটনা সোমালি উপকূলের কাছাকাছি হওয়ায় জলদস্যুরা পরিস্থিতি নিজেদের অনূকুলে রাখতে পারছে বলেও জানান তিনি।
বিশ্ব বাণিজ্যর পরিবহন খরচ বৃদ্ধি
বিশ্বের ব্যস্ততম শিপিং লেনগুলোর কয়েকটি সোমালিয়ার জলপথের মধ্যে রয়েছে। প্রতিবছর আনুমানিক ২০ হাজার জাহাজ আসবাবপত্র-পোশাক থেকে শুরু করে শস্য এবং জ্বালানিসিহ নানা পণ্য নিয়ে এই রুটে চলাচল করে। জাহাজগুলো এডেন উপসাগর দিয়ে লোহিত সাগর এবং সুয়েজ খাল হয়ে ইউরোপ এবং এশিয়ায় যায়।
ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ব্যুরো জানিয়েছে, সোমালিয়া জলদস্যুদের উৎপাত মাথায় চড়েছিল ২০১১ সালে। ওই বছর সোমালি জলদস্যুরা ২৩৭টি জাহাজে হামলা চালায় এবং শতাধিক মানুষকে জিম্মি করে। সেই বছর ওসেনস বিয়ন্ড পাইরেসি মনিটরিং গ্রুপ অনুমান করেছিল, জলদস্যুতার কারণে বিশ্ব অর্থনীতির প্রায় ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছিল। এর মধ্যে কয়েক মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ দিতে হয়েছিল জলদস্যুদের।
সামুদ্রিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপক এবং বীমাকারীরা বলেছেন, কম টহলযুক্ত জলরাশিতে বর্তমানে ছোট জাহাজকে লক্ষ্য করে জলদস্যুদের আক্রমণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কম। ইউনাভফোরের তথ্যও বলছে একই কথা। সংস্থাটির তথ্য অনুসারে, নভেম্বর থেকে জলদস্যুরা সফলভাবে কমপক্ষে দুটি পণ্যবাহী জাহাজ এবং ১২টি মাছ ধরার জাহাজ ছিনতাই করেছে।
ইউনাভফোর মিশনের তথ্যমতে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এডেন উপসাগর এবং সোমালিয়া উপকূলে জলদস্যুদের পাঁচটি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। এই তথ্যকে প্রাধান্য দিয়ে সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, এই মাসে বর্ষাকাল শেষ হওয়ার পর জলদস্যুরা আরও দক্ষিণ এবং পূর্ব দিকে দস্যুতা চালাতে পারে।
বিশ্ব বাণিজ্যের বীমা শিল্পের কর্মকর্তারা বলেছেন, জলদস্যুদের অভিযান চালানো এলাকা এখন আগের চেয়ে বড় হয়েছে। বীমাকারীরা ওই এলাকায় জাহাজে চলাচলের ওপর অতিরিক্ত যুদ্ধের ঝুঁকি আরোপ করেছে। ফলে অ্যাডেন উপসাগর এবং লোহিত সাগরে সমুদ্রযাত্রা আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে। এখন সাত দিনের সমুদ্রযাত্রার জন্য কয়েক হাজার ডলার অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে।
ব্যক্তিগত সশস্ত্র রক্ষীদের চাহিদা বাড়ায় এই খাতেও খরচ বাড়ছে। মেরিটাইম সিকিউরিটি সূত্র জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসে তিন দিনের জন্য একটি সশস্ত্র রক্ষী টিম নিয়োগের খরচ প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এখন এমন একটি নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী রাখতে ৪ হাজার থেকে ১৫ হাজার মার্কিন ডলার গুনতে হচ্ছে। হুথি ক্ষেপণাস্ত্র এবং সশস্ত্র ড্রোনের বিরুদ্ধে এসব নিরাপত্তা রক্ষীরা কাজে না আসলেও জলদস্যুদের আক্রমণ ঠেকাতে বেশ কার্যকর প্রমাণ হয়েছে।
এদিকে জলদস্যুদের এই নয়া উত্থানের পর্বে এখন পর্যন্ত কোনো মুক্তিপণ দেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তবে জলদস্যুদের অর্থায়নকারী ইসমাইল ইসসে ও বিষয়টির সঙ্গে জড়িত আরেকটি সূত্র দাবি করেছে, রুয়েনের মুক্তির জন্য কয়েক মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
জাহাজটি পরিচালনাকারী বুলগেরিয়ান কোম্পানি নাভিবুলগারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তাঁরা এখন মুক্তিপণ নিয়ে আলোচনার বিষয়ে মন্তব্য করতে পারছে না। তবে নাবিকদের মুক্ত করার জন্য ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রতি তাঁরা কৃতজ্ঞ।
বাংলাদেশি জাহাজ আবদুল্লাহর মালিক এসআর শিপিংয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, জলদস্যুরা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছিল। কিন্তু কোম্পানিটি কোনো মুক্তিপণের প্রস্তাব পায়নি।
সমাধান কিসে
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হুথি এবং সোমালি জলদস্যুদের মধ্যে সরাসরি সম্পর্কের কোনো প্রমাণ নেই। তবে ইসমাইল বলেছেন, হুথি বিদ্রোহীদের আক্রমণ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই দস্যুতায় নেমেছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা।
এক দশক আগে জলদস্যুদের প্রতিরোধে শিপিং কোম্পানিগুলো জাহাজে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছিল। ন্যাটো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী জলদস্যু নির্মুল অভিযানে যোগ দিয়েছিল। ১৪টি দেশের ২০ টির মতো যুদ্ধজাহাজ এডেন উপসাগর এবং ভারত মহাসাগরের জাহাজ চলাচলের রুটগুলোতে টহল দিত। কখনো কখনো ভূমধ্যসাগর এবং লোহিত সাগরেও এই টহল চলত।
জাতিসংঘের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সোমালিয়া শাখার কাউন্টার-পাইরেসি ইউনিটের সাবেক প্রধান জন স্টিড বলেছেন, ‘এই পদক্ষেপগুলো জলদস্যুদের আক্রমণ নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছিল। ধীরে ধীরে জলদস্যুদের হুমকি কমে গেলে দেশগুলো টহলরত যুদ্ধজাহাজের সংখ্যাও কমিয়ে দেয়। টহলের জাহাজগুলো বিভিন্ন মিশনে গিয়ে ডুবে যায় এবং জাতীয় কমান্ডে ফিরে যায়।’
ইউনাভফোর, ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং ব্রিটিশ নৌবাহিনী বলেছে, তাঁরা সোমালিয়াকে জলদস্যুতা মোকাবিলায় সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে টহল কমে যাওয়া ও অতিরিক্ত সংস্থান করবে কি না সে সম্পর্কে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়নি।
স্টিড বলেছেন, আরেকটি সমস্যা হল ২০২২ সালে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবের ব্যত্যয়। যার ফলে বিদেশি জাহাজগুলো সোমালিয়ার জলসীমায় টহল দেওয়ার অনুমতি পায়।
সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট মোহামুদ বলেছেন, আগেরবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পেছনে বড় কারণ ছিল জলে এবং স্থলে কঠোরভাবে সোমালিয়ার আইন প্রয়োগ, অসংখ্য আন্তর্জাতিক জাহাজ পাঠানো নয়।
সোমালিয়া সরকারের তথ্য অনুযায়ী, কোস্টগার্ডের ৭২০ জন প্রশিক্ষিত সদস্য রয়েছে। কিন্তু বাহিনীটির চারটি নৌযানের মধ্যে মাত্র একটি কার্যকরী। রাজধানী মোগাদিশু, পুন্টল্যান্ড এবং বিচ্ছিন্ন সোমালিল্যান্ড অঞ্চলেও সীমিত অস্ত্রসহ সামুদ্রিক পুলিশ বাহিনী রয়েছে।

গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৩ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১৮ ঘণ্টা আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

পশ্চিম ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুরা স্পিড বোটে করে বাংলাদেশি জাহাজ আবদুল্লাহকে ধাওয়া করলে নাবিকেরা জরুরি সতর্ক সংকেত পাঠিয়েছিল। কিন্তু সময়মতো তাঁদের কাছে কেউ পৌঁছায়নি। ফলে জলদস্যুরা আবদুল্লাহর ওপরে উঠে পড়ে ফাঁকা গুলি চালায় এবং ক্যাপ্টেন ও সেকেন্ড অফিসারকে জিম্মি করে।
২১ মার্চ ২০২৪
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১৮ ঘণ্টা আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

পশ্চিম ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুরা স্পিড বোটে করে বাংলাদেশি জাহাজ আবদুল্লাহকে ধাওয়া করলে নাবিকেরা জরুরি সতর্ক সংকেত পাঠিয়েছিল। কিন্তু সময়মতো তাঁদের কাছে কেউ পৌঁছায়নি। ফলে জলদস্যুরা আবদুল্লাহর ওপরে উঠে পড়ে ফাঁকা গুলি চালায় এবং ক্যাপ্টেন ও সেকেন্ড অফিসারকে জিম্মি করে।
২১ মার্চ ২০২৪
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৩ ঘণ্টা আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

পশ্চিম ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুরা স্পিড বোটে করে বাংলাদেশি জাহাজ আবদুল্লাহকে ধাওয়া করলে নাবিকেরা জরুরি সতর্ক সংকেত পাঠিয়েছিল। কিন্তু সময়মতো তাঁদের কাছে কেউ পৌঁছায়নি। ফলে জলদস্যুরা আবদুল্লাহর ওপরে উঠে পড়ে ফাঁকা গুলি চালায় এবং ক্যাপ্টেন ও সেকেন্ড অফিসারকে জিম্মি করে।
২১ মার্চ ২০২৪
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৩ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১৮ ঘণ্টা আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

পশ্চিম ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুরা স্পিড বোটে করে বাংলাদেশি জাহাজ আবদুল্লাহকে ধাওয়া করলে নাবিকেরা জরুরি সতর্ক সংকেত পাঠিয়েছিল। কিন্তু সময়মতো তাঁদের কাছে কেউ পৌঁছায়নি। ফলে জলদস্যুরা আবদুল্লাহর ওপরে উঠে পড়ে ফাঁকা গুলি চালায় এবং ক্যাপ্টেন ও সেকেন্ড অফিসারকে জিম্মি করে।
২১ মার্চ ২০২৪
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৩ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১৮ ঘণ্টা আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে