আব্দুর রহমান

ফুটবল বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে ৯২ বছর হয়ে গেল। তবে এই ফুটবল বিশ্বকাপ কেবলই খেলা নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিও। যেমন রাশিয়া বিশ্বকাপকে দেশটি ব্যবহার করেছে পশ্চিমা বিশ্বের অবরোধের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে, দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপকে ব্যবহার করেছে অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে। ব্রাজিল ব্যবহার করেছে দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত সরকারকে দেশের মানুষের চোখে ভালো সাজাতে। তবে ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনায় আয়োজিত বিশ্বকাপকে দেশটির তৎকালীন স্বৈরশাসক যেভাবে ব্যবহার করেছে, তা আর কোনো দেশের শাসকই পারেনি!
প্রায় এক যুগ আগেই নির্ধারিত ছিল যে, ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপ হবে আর্জেন্টিনায়। কিন্তু তখন কেউই জানত না যে বিশ্বকাপের সময় দেশটির ক্ষমতা দখল করে থাকবে এক কুখ্যাত স্বৈরশাসক। সেই স্বৈরশাসক বিশ্বকাপকে হাতিয়ার করে দেশে চলমান দুর্নীতি, খুন-গুম, অর্থনৈতিক সংকট, গণতন্ত্রহীনতা ইত্যাদি থেকে দেশ ও বিশ্ববাসীর দৃষ্টি সরিয়ে দেবে, তা কেউই হয়তো সেভাবে অনুমান করতে পারেনি। কিন্তু এমনটাই হয়েছে।
ঘটনার শুরু ১৯৭৬ সালে। সেবারের মার্চে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইসাবেলা পেরনকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন জেনারেল জর্জ রাফায়েল ভিদেলা। ক্ষমতা দখলের পরপরই শুরু হয় দমন-পীড়ন। গুম-খুন নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তাঁর শাসনামলে ৩০ হাজার মানুষ স্রেফ গায়েব হয়ে গেছে। তারা আর কখনো ফেরেনি।
সাধারণ জনগণকে স্বাধীনভাবে রাস্তায় চলাফেরা করতেও দেওয়া হতো না। বের হলেই চলত জিজ্ঞাসাবাদ-গ্রেপ্তার। ছাড়া পেতে ঘুষ দিতে হতো জান্তা সদস্যদের। কেউ সামান্য প্রতিবাদ করলেই তুলে নিয়ে যাওয়া হতো, নির্যাতন করা হতো সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন কার্যালয়ে বন্দী করে। সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা হতো কঠোর হাতে।
এত সব করেও দেশের অর্থনীতিকে বশে রাখতে পারছিলেন না ভিদেলা। এই সময়ই তাঁর হাতে সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে ধরা দেয় ১৯৭৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজন। এ বিষয়ে ভিদেলাকে উৎসাহিত করেন ১৯৭৬ সালের সেনা অভ্যুত্থানের অন্যতম কুশীলব অ্যাডমিরাল এমিলো মাসেরা। তিনি বলেন, ‘টুর্নামেন্টের আয়োজন বিশ্বকে দেখাবে যে আর্জেন্টিনা একটি বিশ্বস্ত দেশ, বড় ধরনের প্রকল্প পরিচালনায় সক্ষম।’
ঠান্ডা মাথার শীতল-ক্রূর চাহনির এই স্বৈরশাসক ফুটবল পছন্দ করতেন না। খেলা তো দূরের কথা, তিনি কখনো ফুটবল খেলা দেখেছেন—এমনটাও কেউ বলতে পারে না। যাহোক, এই অবস্থায় ফুটবল বিশ্বকাপকে তিনি তাঁর ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করা এবং জনগণসহ বিশ্ববাসীর দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর এক অনন্য সুযোগ হিসেবে দেখেন। তবে তাঁর এই ইচ্ছায় বাদ সাধে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। প্রতিষ্ঠানটির নিয়ম অনুযায়ী কোনো দেশের সরকার সরাসরি বিশ্বকাপ আয়োজনে জড়িত থাকতে পারবে না। তাই রাতারাতি ভিদেলা একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন এবং দায়িত্ব দেন বিশ্বকাপ আয়োজনের। এমনকি তাঁকে সে সময় সতর্ক করা হয়েছিল—এই আয়োজনের ফলে দেশ দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে। কিন্তু ভিদেলা কারও কথায় কান দেননি।
শুরু হয় কর্মযজ্ঞ। রাজধানী বুয়েনস এইরেসে নির্মাণ করা হয় এস্তাদিও মনুমেন্তাল। ৬৭ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়াম নির্মাণ করতে গিয়ে সেখানকার কয়েক হাজার বস্তিবাসীকে কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ ছাড়াই উচ্ছেদ করা হয়। রাস্তাঘাট চওড়া করতে উচ্ছেদ করা হয় আরও কয়েক হাজার মানুষকে। খেলার ভেন্যুগুলোর আশপাশ থেকে গরিব লোকদের বিনা নোটিশে উচ্ছেদ করা হয়। এই নিপীড়িত মানুষগুলোর আওয়াজ বিশ্বের কাছে পৌঁছাতে পারেনি। কারণ, ভিদেলা দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোর গলাও চেপে ধরেছিলেন দৃঢ় হস্তে। সংবাদমাধ্যমগুলো কেবল সেটিই প্রকাশ করতে পারত, যা জান্তা বাহিনী অনুমোদন করত। সংবাদমাধ্যমগুলোকে ‘আপনার আর্জেন্টিনাকে রক্ষা করুন’, ‘বিশ্বকে সত্য দেখিয়ে দাও’—এমন স্লোগান ও মোটিফকে কেন্দ্র করে সংবাদ ছাপাতে বাধ্য করা হতো।
কেবল তা-ই নয়, ভিদেলা সরকার মার্কিন জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান বারসন-মার্স্টেলারকে ১০ লাখ ডলার চুক্তিতে নিয়োগ করেছিল। জান্তা সরকারের প্রত্যাশা ছিল—আর্জেন্টিনার বাইরে দেশ ও সরকারের প্রতি আস্থা ও সদিচ্ছার বিষয়টি প্রচারে সহায়তা করবে তারা। তাদের মূল কাজ ছিল ‘স্থিতিশীল’ ও ‘উন্নয়নশীল’ আর্জেন্টিনার একটি ‘নয়া চিত্র’ তুলে ধরা। যে পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল বিশ্বকাপ। এ ছাড়া বিশ্বজুড়ে ভিদেলা সরকারের বিরুদ্ধে চলমান বিভিন্ন নেতিবাচক প্রচারের জবাব দেওয়ার জন্যও দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানটিকে।
ভিদেলা যে শুধু বন্দুকের জোরে এমনটা করছিলেন, তা কিন্তু নয়। ফিফার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ব্রাজিলের নাগরিক জোয়াঁও হ্যাভেলঞ্জ এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারও তাল দিয়েছিলেন ভিদেলার সঙ্গে। বিশ্বকাপ শুরুর সপ্তাহখানেক আগে ২৩ মে ভিদেলার হয়ে ওকালতি করেন ফিফার প্রেসিডেন্ট। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি হতাশ নই, বরং আমি গর্বিত যে আর্জেন্টিনার সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো ছিল, তা দারুণভাবে সামলে নিয়েছে।’ আর হেনরি কিসিঞ্জার তো বিশ্বকাপ চলাকালে আর্জেন্টিনায় উপস্থিত হয়ে ভিদেলার সঙ্গে থেকে সেমি এবং ফাইনাল ম্যাচ উপভোগ করেন!
অবশ্য স্বৈরশাসকের বিশ্বকাপ আয়োজনের বিষয়টি ভালো চোখে দেখেনি অনেকেই। এ নিয়ে ১৯৭৭ সালের শেষ দিকে একদল ফরাসি সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী আর্জেন্টিনায় বিশ্বকাপ আয়োজনের বিরোধিতা করে ‘অর্গানাইজিং কমিটি ফর দ্য বয়কট অব দ্য আর্জেন্টিনা ওয়ার্ল্ড কাপ’ প্রতিষ্ঠা করেন, যার ফরাসি নামের সংক্ষেপ ছিল সিওবিএ। সে সময় ফ্রান্স ফুটবল দলের অধিনায়ক ছিলেন মিশেল প্লাতিনি। সংগঠনটি প্লাতিনি এবং ফরাসি ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে অনুরোধ করে, যেন তারা আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপে না যায়। কেবল ফ্রান্সেই নয়, সংগঠনটি ইতালি, স্পেন, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, স্কটল্যান্ডকেও অনুরোধ করেছিল অংশ না নিতে। এমনকি একাধিক ব্যঙ্গাত্মক পোস্টারও ছড়িয়ে দিয়েছিল ইউরোপজুড়ে।
কিন্তু কোনো কিছুই বন্ধ করতে পারেনি ওই বিশ্বকাপ। সব প্রচারণা, আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে ১৯৭৮ সালের ১ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় বিশ্বকাপের ১১তম আসর। আর্জেন্টিনার পাঁচটি শহরের ছয় ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হয় ম্যাচগুলো। ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেবারই টাইব্রেকার নিয়ম চালু হয়। ১৬ দেশের ওই বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় স্বাগতিক আর্জেন্টিনাই। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিদেলা বলেন, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় অঞ্চলের এই দেশ সফরের জন্য হাজার হাজার নারী-পুরুষকে আমরা সম্মান জানাচ্ছি। আমরা আশা করব, এই উৎসব একটি ভালোবাসা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার পরিবেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।’
কিন্তু এখানেই শেষ হয়নি বিষয়টি। গুঞ্জন ছিল এবং এখনো রয়েছে—আর্জেন্টিনা তাদের সেমিফাইনালের প্রতিপক্ষ পেরুকে ভয় দেখিয়েছে, ঘুষ দিয়ে এবং দেশটির স্বৈরশাসক জেনারেল মোরালেস বারমুদেজের সঙ্গে ভিদেলা সরকারের গোপন আঁতাত হয়েছে। টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত খেলেছিল পেরু। নিয়ম অনুসারে ফাইনালে যেতে হলে অন্তত ৪ গোলের ব্যবধানে জিততে হবে। কিন্তু ভালো খেলা পেরু সেটি করতে পারেনি। তারা হেরে যায় ৬-০ গোলের ব্যবধানে।
সেমিফাইনাল ম্যাচের আগে নানাভাবে হয়রানি করা হয় পেরুর খেলোয়াড়দের। ম্যাচের আগের রাতে যে হোটেলে তাঁরা অবস্থান করছিলেন, সেখান থেকে পাহারায় থাকা সেনাবাহিনীর সদস্যরা হঠাৎ করে গায়েব হয়ে যান। আর্জেন্টাইন সমর্থকেরা হোটেলের বাইরে এসে চিৎকার-চেঁচামেচি এবং তীব্র স্বরে গাড়ির হর্ন বাজাতে থাকে। হোটেল থেকে স্টেডিয়ামে নেওয়ার রাস্তা যেখানে মাত্র ৩০ মিনিটের পথ, সেখানে নানা রাস্তা দিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ঘুরিয়ে তাঁদের স্টেডিয়ামে নেওয়া হয়।
রাতে ঘুম না হওয়ায় এবং দীর্ঘ বাস জার্নিতে এমনিতেই ক্লান্ত ছিলেন পেরুর খেলোয়াড়েরা। এরপর তাঁদের জন্য আরও চমক অপেক্ষা করছিল। খেলা শুরুর মাত্র ৩০ মিনিট আগে রাফায়েল ভিদেলা পেরুর ড্রেসিংরুমে যান এবং খেলোয়াড়দের সঙ্গে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ আলাপ করেন। আলাপকালে ভিদেলা বলেন, ‘আমি আপনাদের বলতে চাই যে, আজ রাতের এই ম্যাচ ভাইয়ের সঙ্গে ভাইয়ের। আমি এখানে লাতিন ভ্রাতৃত্বের দাবি নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি, সবকিছু ঠিকঠাকভাবে শেষ হবে।’ ভাষণের পর ভিদেলা পেরুর ফুটবলারদের দেশটির প্রেসিডেন্ট জেনারেল মোরালেস বারমুদেজের একটি চিঠি পড়ে শোনান।
এখানেই শেষ নয়, গুজব শোনা যায়—আর্জেন্টিনা পেরু সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের তৎকালীন ৫ কোটি ডলার অর্থ ও খাদ্যসহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এমনকি খাদ্যশস্য নিয়ে একটি চালান পেরুতে পর্যন্ত গিয়েছিল। এ ছাড়া পেরুর খেলোয়াড়দের নগদ অর্থ এবং উন্নত বাসস্থানের লোভও দেখানো হয়েছিল। খেলোয়াড়দের মধ্যে পেরুর ডিফেন্ডার রুদলফো মাঞ্জোকে ৫০ হাজার ডলার ঘুষ সাধা হয়েছিল বলেও শোনা যায়। এমনকি দলের অন্য খেলোয়াড়দের সব মিলিয়ে আড়াই লাখ ডলার সাধা হয়েছিল হারের বিপরীতে।
যা-ই হয়ে থাকুক, সেমিফাইনালে সেই ম্যাচে পেরু সুবিধা করতে পারেনি। বিশাল ব্যবধানে হেরেছিল। ফাইনালে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ ছিল নেদারল্যান্ডস। সেই ম্যাচে আর্জেন্টিনা জিতে গিয়েছিল ৩-১ ব্যবধানে। ফাইনালে আর্জেন্টিনার জয়ে যখন ৬০ হাজারের বেশি মানুষ এস্তাদিও মনুমেন্তালে হর্ষধ্বনি দিচ্ছিল, ঠিক সেই সময়েই হয়তো স্টেডিয়াম থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরের নেভি হেডকোয়ার্টার্সে নির্যাতনের শিকার হয়ে গোঙাচ্ছিলেন কোনো নিরপরাধ নাগরিক!
খেলা নিয়ে গুজব যা-ই থাক, ভিদেলা যে সেই বিশ্বকাপকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করেছিলেন, তাতে সন্দেহ নেই। বামপন্থী সশস্ত্র যোদ্ধাদের দমন, অর্থনীতির সংকট থেকে দৃষ্টি ফেরানোসহ স্বৈরশাসনের সব নেতিবাচক দিক ঢাকতে ভিদেলা বিশ্বকাপকে ব্যবহার করেছিলেন। আর্জেন্টিনার খেলা শেষে সরকার গুম করা ব্যক্তিদের হঠাৎ হাজির করত। তাদের নিয়ে বের হতো শহরে শহরে। দেখাত যে মানুষ কত আনন্দের মধ্যে রয়েছে।
যাহোক, সেই আগের পরিস্থিতি আবারও অনেকটাই যেন ফিরে এসেছে আর্জেন্টিনায়। দেশটিতে আবারও অর্থনৈতিক সংকট ফিরে এসেছে। এরই মধ্যে পদত্যাগ করেছেন বেশ কয়েকজন মন্ত্রী। সংকট এতটাই গভীর যে, দেশটির অনেকেই চান না আর্জেন্টিনা এবার বিশ্বকাপ জিতুক। কারণ, তাতে পরিস্থিতি দীর্ঘ সময়ের জন্য আবারও চাপা পড়ে যাবে। এদেরই একজন হলেন লিওনেল মেসির ক্যারিয়ারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা চিকিৎসক দিয়েগো শোয়ার্জস্টাইন। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি চান না আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতুক। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এমন কথাই স্পষ্ট করে বলেছেন।
যেসব উদ্দেশ্য নিয়ে বিশ্বকাপ ফুটবল চালু হয়েছিল, তার কতটা অর্জিত হয়েছে, কত দূর মূল লক্ষ্য থেকে সরে গেছে, তা বিতর্কের বিষয়। তেমনি বিতর্কের বিষয় আর্জেন্টিনার ১৯৭৮ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন। সেই বিশ্বকাপ যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, স্বৈরশাসকেরা নিজেদের টিকিয়ে রাখতে হেন কোনো কাজ নেই, যা করে না!
তথ্যসূত্র: এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা, হিস্টোরি ডট কম, স্পোর্টস বাইবেল, দ্য টাইমস এবং পেপেলিতোস

ফুটবল বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে ৯২ বছর হয়ে গেল। তবে এই ফুটবল বিশ্বকাপ কেবলই খেলা নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিও। যেমন রাশিয়া বিশ্বকাপকে দেশটি ব্যবহার করেছে পশ্চিমা বিশ্বের অবরোধের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে, দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপকে ব্যবহার করেছে অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে। ব্রাজিল ব্যবহার করেছে দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত সরকারকে দেশের মানুষের চোখে ভালো সাজাতে। তবে ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনায় আয়োজিত বিশ্বকাপকে দেশটির তৎকালীন স্বৈরশাসক যেভাবে ব্যবহার করেছে, তা আর কোনো দেশের শাসকই পারেনি!
প্রায় এক যুগ আগেই নির্ধারিত ছিল যে, ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপ হবে আর্জেন্টিনায়। কিন্তু তখন কেউই জানত না যে বিশ্বকাপের সময় দেশটির ক্ষমতা দখল করে থাকবে এক কুখ্যাত স্বৈরশাসক। সেই স্বৈরশাসক বিশ্বকাপকে হাতিয়ার করে দেশে চলমান দুর্নীতি, খুন-গুম, অর্থনৈতিক সংকট, গণতন্ত্রহীনতা ইত্যাদি থেকে দেশ ও বিশ্ববাসীর দৃষ্টি সরিয়ে দেবে, তা কেউই হয়তো সেভাবে অনুমান করতে পারেনি। কিন্তু এমনটাই হয়েছে।
ঘটনার শুরু ১৯৭৬ সালে। সেবারের মার্চে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইসাবেলা পেরনকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন জেনারেল জর্জ রাফায়েল ভিদেলা। ক্ষমতা দখলের পরপরই শুরু হয় দমন-পীড়ন। গুম-খুন নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তাঁর শাসনামলে ৩০ হাজার মানুষ স্রেফ গায়েব হয়ে গেছে। তারা আর কখনো ফেরেনি।
সাধারণ জনগণকে স্বাধীনভাবে রাস্তায় চলাফেরা করতেও দেওয়া হতো না। বের হলেই চলত জিজ্ঞাসাবাদ-গ্রেপ্তার। ছাড়া পেতে ঘুষ দিতে হতো জান্তা সদস্যদের। কেউ সামান্য প্রতিবাদ করলেই তুলে নিয়ে যাওয়া হতো, নির্যাতন করা হতো সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন কার্যালয়ে বন্দী করে। সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা হতো কঠোর হাতে।
এত সব করেও দেশের অর্থনীতিকে বশে রাখতে পারছিলেন না ভিদেলা। এই সময়ই তাঁর হাতে সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে ধরা দেয় ১৯৭৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজন। এ বিষয়ে ভিদেলাকে উৎসাহিত করেন ১৯৭৬ সালের সেনা অভ্যুত্থানের অন্যতম কুশীলব অ্যাডমিরাল এমিলো মাসেরা। তিনি বলেন, ‘টুর্নামেন্টের আয়োজন বিশ্বকে দেখাবে যে আর্জেন্টিনা একটি বিশ্বস্ত দেশ, বড় ধরনের প্রকল্প পরিচালনায় সক্ষম।’
ঠান্ডা মাথার শীতল-ক্রূর চাহনির এই স্বৈরশাসক ফুটবল পছন্দ করতেন না। খেলা তো দূরের কথা, তিনি কখনো ফুটবল খেলা দেখেছেন—এমনটাও কেউ বলতে পারে না। যাহোক, এই অবস্থায় ফুটবল বিশ্বকাপকে তিনি তাঁর ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করা এবং জনগণসহ বিশ্ববাসীর দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর এক অনন্য সুযোগ হিসেবে দেখেন। তবে তাঁর এই ইচ্ছায় বাদ সাধে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। প্রতিষ্ঠানটির নিয়ম অনুযায়ী কোনো দেশের সরকার সরাসরি বিশ্বকাপ আয়োজনে জড়িত থাকতে পারবে না। তাই রাতারাতি ভিদেলা একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন এবং দায়িত্ব দেন বিশ্বকাপ আয়োজনের। এমনকি তাঁকে সে সময় সতর্ক করা হয়েছিল—এই আয়োজনের ফলে দেশ দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে। কিন্তু ভিদেলা কারও কথায় কান দেননি।
শুরু হয় কর্মযজ্ঞ। রাজধানী বুয়েনস এইরেসে নির্মাণ করা হয় এস্তাদিও মনুমেন্তাল। ৬৭ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়াম নির্মাণ করতে গিয়ে সেখানকার কয়েক হাজার বস্তিবাসীকে কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ ছাড়াই উচ্ছেদ করা হয়। রাস্তাঘাট চওড়া করতে উচ্ছেদ করা হয় আরও কয়েক হাজার মানুষকে। খেলার ভেন্যুগুলোর আশপাশ থেকে গরিব লোকদের বিনা নোটিশে উচ্ছেদ করা হয়। এই নিপীড়িত মানুষগুলোর আওয়াজ বিশ্বের কাছে পৌঁছাতে পারেনি। কারণ, ভিদেলা দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোর গলাও চেপে ধরেছিলেন দৃঢ় হস্তে। সংবাদমাধ্যমগুলো কেবল সেটিই প্রকাশ করতে পারত, যা জান্তা বাহিনী অনুমোদন করত। সংবাদমাধ্যমগুলোকে ‘আপনার আর্জেন্টিনাকে রক্ষা করুন’, ‘বিশ্বকে সত্য দেখিয়ে দাও’—এমন স্লোগান ও মোটিফকে কেন্দ্র করে সংবাদ ছাপাতে বাধ্য করা হতো।
কেবল তা-ই নয়, ভিদেলা সরকার মার্কিন জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান বারসন-মার্স্টেলারকে ১০ লাখ ডলার চুক্তিতে নিয়োগ করেছিল। জান্তা সরকারের প্রত্যাশা ছিল—আর্জেন্টিনার বাইরে দেশ ও সরকারের প্রতি আস্থা ও সদিচ্ছার বিষয়টি প্রচারে সহায়তা করবে তারা। তাদের মূল কাজ ছিল ‘স্থিতিশীল’ ও ‘উন্নয়নশীল’ আর্জেন্টিনার একটি ‘নয়া চিত্র’ তুলে ধরা। যে পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল বিশ্বকাপ। এ ছাড়া বিশ্বজুড়ে ভিদেলা সরকারের বিরুদ্ধে চলমান বিভিন্ন নেতিবাচক প্রচারের জবাব দেওয়ার জন্যও দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানটিকে।
ভিদেলা যে শুধু বন্দুকের জোরে এমনটা করছিলেন, তা কিন্তু নয়। ফিফার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ব্রাজিলের নাগরিক জোয়াঁও হ্যাভেলঞ্জ এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারও তাল দিয়েছিলেন ভিদেলার সঙ্গে। বিশ্বকাপ শুরুর সপ্তাহখানেক আগে ২৩ মে ভিদেলার হয়ে ওকালতি করেন ফিফার প্রেসিডেন্ট। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি হতাশ নই, বরং আমি গর্বিত যে আর্জেন্টিনার সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো ছিল, তা দারুণভাবে সামলে নিয়েছে।’ আর হেনরি কিসিঞ্জার তো বিশ্বকাপ চলাকালে আর্জেন্টিনায় উপস্থিত হয়ে ভিদেলার সঙ্গে থেকে সেমি এবং ফাইনাল ম্যাচ উপভোগ করেন!
অবশ্য স্বৈরশাসকের বিশ্বকাপ আয়োজনের বিষয়টি ভালো চোখে দেখেনি অনেকেই। এ নিয়ে ১৯৭৭ সালের শেষ দিকে একদল ফরাসি সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী আর্জেন্টিনায় বিশ্বকাপ আয়োজনের বিরোধিতা করে ‘অর্গানাইজিং কমিটি ফর দ্য বয়কট অব দ্য আর্জেন্টিনা ওয়ার্ল্ড কাপ’ প্রতিষ্ঠা করেন, যার ফরাসি নামের সংক্ষেপ ছিল সিওবিএ। সে সময় ফ্রান্স ফুটবল দলের অধিনায়ক ছিলেন মিশেল প্লাতিনি। সংগঠনটি প্লাতিনি এবং ফরাসি ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে অনুরোধ করে, যেন তারা আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপে না যায়। কেবল ফ্রান্সেই নয়, সংগঠনটি ইতালি, স্পেন, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, স্কটল্যান্ডকেও অনুরোধ করেছিল অংশ না নিতে। এমনকি একাধিক ব্যঙ্গাত্মক পোস্টারও ছড়িয়ে দিয়েছিল ইউরোপজুড়ে।
কিন্তু কোনো কিছুই বন্ধ করতে পারেনি ওই বিশ্বকাপ। সব প্রচারণা, আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে ১৯৭৮ সালের ১ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় বিশ্বকাপের ১১তম আসর। আর্জেন্টিনার পাঁচটি শহরের ছয় ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হয় ম্যাচগুলো। ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেবারই টাইব্রেকার নিয়ম চালু হয়। ১৬ দেশের ওই বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় স্বাগতিক আর্জেন্টিনাই। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিদেলা বলেন, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় অঞ্চলের এই দেশ সফরের জন্য হাজার হাজার নারী-পুরুষকে আমরা সম্মান জানাচ্ছি। আমরা আশা করব, এই উৎসব একটি ভালোবাসা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার পরিবেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।’
কিন্তু এখানেই শেষ হয়নি বিষয়টি। গুঞ্জন ছিল এবং এখনো রয়েছে—আর্জেন্টিনা তাদের সেমিফাইনালের প্রতিপক্ষ পেরুকে ভয় দেখিয়েছে, ঘুষ দিয়ে এবং দেশটির স্বৈরশাসক জেনারেল মোরালেস বারমুদেজের সঙ্গে ভিদেলা সরকারের গোপন আঁতাত হয়েছে। টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত খেলেছিল পেরু। নিয়ম অনুসারে ফাইনালে যেতে হলে অন্তত ৪ গোলের ব্যবধানে জিততে হবে। কিন্তু ভালো খেলা পেরু সেটি করতে পারেনি। তারা হেরে যায় ৬-০ গোলের ব্যবধানে।
সেমিফাইনাল ম্যাচের আগে নানাভাবে হয়রানি করা হয় পেরুর খেলোয়াড়দের। ম্যাচের আগের রাতে যে হোটেলে তাঁরা অবস্থান করছিলেন, সেখান থেকে পাহারায় থাকা সেনাবাহিনীর সদস্যরা হঠাৎ করে গায়েব হয়ে যান। আর্জেন্টাইন সমর্থকেরা হোটেলের বাইরে এসে চিৎকার-চেঁচামেচি এবং তীব্র স্বরে গাড়ির হর্ন বাজাতে থাকে। হোটেল থেকে স্টেডিয়ামে নেওয়ার রাস্তা যেখানে মাত্র ৩০ মিনিটের পথ, সেখানে নানা রাস্তা দিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ঘুরিয়ে তাঁদের স্টেডিয়ামে নেওয়া হয়।
রাতে ঘুম না হওয়ায় এবং দীর্ঘ বাস জার্নিতে এমনিতেই ক্লান্ত ছিলেন পেরুর খেলোয়াড়েরা। এরপর তাঁদের জন্য আরও চমক অপেক্ষা করছিল। খেলা শুরুর মাত্র ৩০ মিনিট আগে রাফায়েল ভিদেলা পেরুর ড্রেসিংরুমে যান এবং খেলোয়াড়দের সঙ্গে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ আলাপ করেন। আলাপকালে ভিদেলা বলেন, ‘আমি আপনাদের বলতে চাই যে, আজ রাতের এই ম্যাচ ভাইয়ের সঙ্গে ভাইয়ের। আমি এখানে লাতিন ভ্রাতৃত্বের দাবি নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি, সবকিছু ঠিকঠাকভাবে শেষ হবে।’ ভাষণের পর ভিদেলা পেরুর ফুটবলারদের দেশটির প্রেসিডেন্ট জেনারেল মোরালেস বারমুদেজের একটি চিঠি পড়ে শোনান।
এখানেই শেষ নয়, গুজব শোনা যায়—আর্জেন্টিনা পেরু সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের তৎকালীন ৫ কোটি ডলার অর্থ ও খাদ্যসহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এমনকি খাদ্যশস্য নিয়ে একটি চালান পেরুতে পর্যন্ত গিয়েছিল। এ ছাড়া পেরুর খেলোয়াড়দের নগদ অর্থ এবং উন্নত বাসস্থানের লোভও দেখানো হয়েছিল। খেলোয়াড়দের মধ্যে পেরুর ডিফেন্ডার রুদলফো মাঞ্জোকে ৫০ হাজার ডলার ঘুষ সাধা হয়েছিল বলেও শোনা যায়। এমনকি দলের অন্য খেলোয়াড়দের সব মিলিয়ে আড়াই লাখ ডলার সাধা হয়েছিল হারের বিপরীতে।
যা-ই হয়ে থাকুক, সেমিফাইনালে সেই ম্যাচে পেরু সুবিধা করতে পারেনি। বিশাল ব্যবধানে হেরেছিল। ফাইনালে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ ছিল নেদারল্যান্ডস। সেই ম্যাচে আর্জেন্টিনা জিতে গিয়েছিল ৩-১ ব্যবধানে। ফাইনালে আর্জেন্টিনার জয়ে যখন ৬০ হাজারের বেশি মানুষ এস্তাদিও মনুমেন্তালে হর্ষধ্বনি দিচ্ছিল, ঠিক সেই সময়েই হয়তো স্টেডিয়াম থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরের নেভি হেডকোয়ার্টার্সে নির্যাতনের শিকার হয়ে গোঙাচ্ছিলেন কোনো নিরপরাধ নাগরিক!
খেলা নিয়ে গুজব যা-ই থাক, ভিদেলা যে সেই বিশ্বকাপকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করেছিলেন, তাতে সন্দেহ নেই। বামপন্থী সশস্ত্র যোদ্ধাদের দমন, অর্থনীতির সংকট থেকে দৃষ্টি ফেরানোসহ স্বৈরশাসনের সব নেতিবাচক দিক ঢাকতে ভিদেলা বিশ্বকাপকে ব্যবহার করেছিলেন। আর্জেন্টিনার খেলা শেষে সরকার গুম করা ব্যক্তিদের হঠাৎ হাজির করত। তাদের নিয়ে বের হতো শহরে শহরে। দেখাত যে মানুষ কত আনন্দের মধ্যে রয়েছে।
যাহোক, সেই আগের পরিস্থিতি আবারও অনেকটাই যেন ফিরে এসেছে আর্জেন্টিনায়। দেশটিতে আবারও অর্থনৈতিক সংকট ফিরে এসেছে। এরই মধ্যে পদত্যাগ করেছেন বেশ কয়েকজন মন্ত্রী। সংকট এতটাই গভীর যে, দেশটির অনেকেই চান না আর্জেন্টিনা এবার বিশ্বকাপ জিতুক। কারণ, তাতে পরিস্থিতি দীর্ঘ সময়ের জন্য আবারও চাপা পড়ে যাবে। এদেরই একজন হলেন লিওনেল মেসির ক্যারিয়ারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা চিকিৎসক দিয়েগো শোয়ার্জস্টাইন। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি চান না আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতুক। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এমন কথাই স্পষ্ট করে বলেছেন।
যেসব উদ্দেশ্য নিয়ে বিশ্বকাপ ফুটবল চালু হয়েছিল, তার কতটা অর্জিত হয়েছে, কত দূর মূল লক্ষ্য থেকে সরে গেছে, তা বিতর্কের বিষয়। তেমনি বিতর্কের বিষয় আর্জেন্টিনার ১৯৭৮ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন। সেই বিশ্বকাপ যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, স্বৈরশাসকেরা নিজেদের টিকিয়ে রাখতে হেন কোনো কাজ নেই, যা করে না!
তথ্যসূত্র: এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা, হিস্টোরি ডট কম, স্পোর্টস বাইবেল, দ্য টাইমস এবং পেপেলিতোস

গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১৭ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
২ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

আর্জেন্টিনা পেরুর সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থ এবং খাদ্যসহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এমনকি খাদ্যশস্য নিয়ে একটি চালান পেরুতে পর্যন্ত গিয়েছিল। এ ছাড়া পেরুর খেলোয়াড়দের নগদ অর্থ এবং উন্নত বাসস্থানের লোভও দেখানো হয়েছিল। খেলোয়াড়দের মধ্যে পেরুর ডিফেন্ডার রুডলফো মাঞ্জোকে ৫০ হা
৩০ নভেম্বর ২০২২
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
২ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

আর্জেন্টিনা পেরুর সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থ এবং খাদ্যসহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এমনকি খাদ্যশস্য নিয়ে একটি চালান পেরুতে পর্যন্ত গিয়েছিল। এ ছাড়া পেরুর খেলোয়াড়দের নগদ অর্থ এবং উন্নত বাসস্থানের লোভও দেখানো হয়েছিল। খেলোয়াড়দের মধ্যে পেরুর ডিফেন্ডার রুডলফো মাঞ্জোকে ৫০ হা
৩০ নভেম্বর ২০২২
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১৭ ঘণ্টা আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
২ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

আর্জেন্টিনা পেরুর সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থ এবং খাদ্যসহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এমনকি খাদ্যশস্য নিয়ে একটি চালান পেরুতে পর্যন্ত গিয়েছিল। এ ছাড়া পেরুর খেলোয়াড়দের নগদ অর্থ এবং উন্নত বাসস্থানের লোভও দেখানো হয়েছিল। খেলোয়াড়দের মধ্যে পেরুর ডিফেন্ডার রুডলফো মাঞ্জোকে ৫০ হা
৩০ নভেম্বর ২০২২
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১৭ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

আর্জেন্টিনা পেরুর সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থ এবং খাদ্যসহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এমনকি খাদ্যশস্য নিয়ে একটি চালান পেরুতে পর্যন্ত গিয়েছিল। এ ছাড়া পেরুর খেলোয়াড়দের নগদ অর্থ এবং উন্নত বাসস্থানের লোভও দেখানো হয়েছিল। খেলোয়াড়দের মধ্যে পেরুর ডিফেন্ডার রুডলফো মাঞ্জোকে ৫০ হা
৩০ নভেম্বর ২০২২
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১৭ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
২ দিন আগে