
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব নেওয়ার পর দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ব্যাপক আলোচনা যে হবে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। এই আলোচনায় পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সম্পর্ক কেমন হবে সেই বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে। আগেরবারের দেশ দুটি ঘিরে নীতিমালায় যে অসামঞ্জস্য ছিল, সেগুলো টিকে থাকবে, নাকি ভারসাম্যপূর্ণ ও সুসংগত হবে, তা লক্ষ করার বিষয়। এ ক্ষেত্রে ২০২৪ সালে উভয় দেশের সাধারণ নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ একটা গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হতে পারে।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে যথাক্রমে ২০২৪ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উভয় ক্ষেত্রেই নির্বাচনের গণতান্ত্রিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বাংলাদেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী দল, সাংবাদিক ও ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর সরকারের দমন-পীড়ন ছিল প্রকট। নির্বাচনের কয়েক মাস আগে নতুন সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট পাস হয়। এই আইনকে ২০১৮ সালের নিবর্তনমূলক ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের নতুন সংস্করণ বলে মনে করা হতো। উভয় আইনেই ‘অনলাইনে সরকারবিরোধী কোনো বিষয়বস্তু মুছে ফেলার’ ক্ষমতা জাতীয় সাইবার সিকিউরিটি মহাপরিচালককে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গুরুতর বিষয় হলো, কথিত ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ আচরণের অভিযোগে জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে এতে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের প্রায় ৪০ শতাংশই বিরোধী দল বিএনপির সদস্য বা সমর্থক। এসব পরিস্থিতির কারণে বিএনপি ২০২৪ সালের নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে ভোট বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয়।
বাংলাদেশের এক মাস পর পাকিস্তানেও নির্বাচনয়, সেখানেও একই ধরনের অভিযোগ ওঠে। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এখনো ‘দুর্নীতির মিথ্যা’ অভিযোগে জেল খাটছেন। তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) এখনো পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল হিসেবে ধরা হয়। নির্বাচনের আগে বিচার বিভাগের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রতীক ব্যবহারের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সরকার একদলীয় শাসনের অভিযোগ এড়াতে বিএনপি এবং পিটিআইকে পুরোপুরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে নিষিদ্ধ করেনি। তবে পিটিআই প্রার্থীদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করা হয় এবং পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সরকার বিরোধী দলগুলোর নির্বাচনী সাফল্যের সম্ভাবনা কমানোর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিকদের তোলা ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, নির্বাচনের দিন ফলাফলকে সুস্পষ্টভাবে বিকৃত করার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একটি ছবিতে নির্বাচন কমিশনের আসল একটি ফরম দেখা যায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এক পিটিআই প্রার্থী পেয়েছেন ৫৮৪ ভোট। তবে একই ফরমের অন্য একটি সংস্করণে দেখা যায়, ওই অঙ্কের ৫ কেটে দিয়ে ভোটের সংখ্যা ৮৪ দেখানো হয়েছে। পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ইতিহাস সব সময়ই চ্যালেঞ্জের মুখে ছিল। কিন্তু এই সাম্প্রতিক নির্বাচনী কারচুপি গণতন্ত্রের প্রতি পাকিস্তানি শাসকদের নজিরবিহীন অবজ্ঞার প্রমাণ।
তা ছাড়া ২০২৪ সালের নির্বাচনের সময় পাকিস্তান ও বাংলাদেশ উভয় দেশেই ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছিল। সাধারণত পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের দিন নাগরিকেরা নির্দিষ্ট নম্বরে খুদেবার্তা পাঠিয়ে তাদের ভোটকেন্দ্রের অবস্থান জানতে পারেন। কিন্তু সেদিন মোবাইল ফোন–সেবা বন্ধ থাকায় তারা তা করতে পারেননি। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে ভোটকেন্দ্র হঠাৎ করে নতুন স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং একই পরিবারের সদস্যদের দূর-দূরান্তের কেন্দ্রে পাঠানো হয়। বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনা কম নয়, তবে সাধারণত বিএনপির পূর্বনির্ধারিত সমাবেশের আগে বন্ধ করা হতো।
পাকিস্তান ও বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্যে মিল থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের ভিন্ন ভিন্ন আচরণ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিশেষ নজর কাড়ছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, ‘হাজার হাজার বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী গ্রেপ্তার এবং নির্বাচনের দিন অনিয়মের খবরে আমরা উদ্বিগ্ন।’ আগেও বিভিন্ন দেশে নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ তোলার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে এ ধরনের শব্দচয়ন দেখা গেছে।
কিন্তু পাকিস্তানের নির্বাচনী অনিয়ম নিয়ে কোনো বিবৃতি দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। বরং, পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা জেন সাকি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও তাঁর দলের নির্বাচনী সাফল্যের জন্য আমরা অভিনন্দন জানাই এবং গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত পাকিস্তানের নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার প্রত্যাশা করি।’ সরকারকে ‘গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত’ বলে অভিহিত করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বুঝিয়ে দেয় যে, পাকিস্তানের নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তারা আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন করে না, যেমনটি তারা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে করেছে।
বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সতর্ক করেন, যারা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন প্রক্রিয়া নষ্ট করবে, তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, দোষী কর্মকর্তা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ভিসা বাতিল করা হতে পারে।
এ ধরনের পদক্ষেপ পাকিস্তানের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিন্ন মনোভাব প্রকাশ করে, যেখানে আরও স্পষ্ট, নির্বাচনী অনিয়মের প্রতি তেমন কোনো কড়া প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে ভার্চুয়ালি আয়োজিত গণতন্ত্র সম্মেলনেও বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, কিন্তু পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। যদিও পাকিস্তান সেই সম্মেলনে অংশ নেয়নি। অনেকের মতে, এটি চীনা মিত্রদের খুশি রাখতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে উদ্যোগগুলোর সঙ্গে অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠতা দেখাতে না চাওয়ার কৌশল ছিল। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই দ্বৈত নীতির ফলে ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক কিছুটা তিক্ত হয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বিবৃতিতে সতর্ক করেন যে, ‘বিশ্বে আরও অনেক দেশ ও মহাদেশ রয়েছে এবং আমরা তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলব।’
বঙ্গোপসাগরের উত্তর প্রান্তে বাংলাদেশের ভূকৌশলগত অবস্থান চীনের মতো মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বীদের মাথাব্যথার কারণ। এই প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার বক্তব্য হয়তো চীনের ঘনিষ্ঠ হওয়ার প্রচেষ্টার প্রতি ইঙ্গিত হতে পারে। তবে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াকে যুক্তরাষ্ট্র তার ‘মুক্ত নির্বাচনের পক্ষে অবস্থানের’ প্রমাণ হিসেবে দেখাতে পারত। কিন্তু তাদের বিতর্কিত পদক্ষেপগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তাদের সুনাম—দুটোকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
এই অসামঞ্জস্যপূর্ণ নীতির মধ্যে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অভিযোগ করেন শেখ হাসিনা। তাঁর দাবি, নির্বাচনের আগে ওয়াশিংটন তাঁকে প্রস্তাব দিয়েছিল যে, তিনি যদি বাংলাদেশের ভূখণ্ডে একটি ঘাঁটি নির্মাণে সম্মতি দেন, তবে তারা তাঁর দলের পক্ষে মসৃণ নির্বাচন নিশ্চিত করবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এই অভিযোগকে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে।
সাধারণ নির্বাচনের পরে চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরু হয়, যা হাসিনা সরকারের পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর হাসিনার মতো একই ধরনের অভিযোগ তোলেন। তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাঁকে সরানো হয়েছে। কারণ, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা মেনে নিতে অস্বীকার করেছিলেন।
এই অভিযোগ এমন এক সময়ে এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করছে। ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা গেছে, সম্প্রতি ইউক্রেন এবং ইসরায়েলের জন্য অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করেছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। যদিও দেশ দুটির সঙ্গে পাকিস্তানের স্পষ্ট মতাদর্শিক পার্থক্য রয়েছে।
মূলত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কই ইসলামাবাদ ও ঢাকার অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের প্রতি ভিন্ন আচরণের কারণ। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী মিত্র। স্নায়ুযুদ্ধের সময় শুরু হওয়া এই সম্পর্ক এখন পর্যন্ত টিকে আছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী যথেষ্ট মালপানি পেলে মতাদর্শিক পার্থক্য উপেক্ষা করে। ইউক্রেন যুদ্ধে ইমরান খানের নিরপেক্ষতা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তাঁর সরকারের কৌশলগত মূল্য কমিয়ে দিয়েছিল।
বাংলাদেশকে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করা যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের জন্য অত্যন্ত লাভজনক হতে পারে। তবু ওয়াশিংটন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকারের অভাবকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরতে বেশি আগ্রহী। কিন্তু এই কৌশল প্রতিদিন বাংলাদেশকে চীনের কাছে আরও কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছে।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের সদস্য হয় এবং তারপর থেকে তারা ২৪ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর পর থেকেই চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ হয়ে উঠেছে এবং ২০১৮-২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অস্ত্র আমদানির ৭৩ শতাংশ চীন থেকে এসেছে। যখন বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র শীর্ষ সম্মেলন থেকে বাদ দেওয়া হয়, তখন সি চিন পিং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি চীনের জনসমক্ষে সমর্থন জানিয়ে এবং যুক্তরাষ্ট্রের চাপের বিরুদ্ধে কথা বলেন।
হাসিনা পদত্যাগে বাধ্য হওয়ার পর চীন যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করে যে, তারা কয়েক বছর ধরে আন্দোলনকারীদের সমর্থন দিয়ে বাংলাদেশে সরকার উৎখাত করার চেষ্টা করেছে। চীন যে বাংলাদেশে ঘটমান ঘটনাগুলোর প্রতি নজর রেখেছে এবং সে সবের প্রতি দৃঢ় মনোযোগ ও সমর্থন দেখিয়েছে। চীন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের উত্তেজনা সম্পর্কে সচেতন এবং এর সুযোগ নিয়ে নিজেদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে।
ওয়াশিংটনের অবাস্তব আচরণ বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র রক্ষা করার ক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে এবং এতে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র বাংলাদেশকে দূরে ঠেলে দিয়েছে। এটা কৌশলের ব্যর্থতা, নাকি কৌশলের অনুপস্থিতি, তা জানা না গেলেও দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের ধারা পরিবর্তন করতে চাইবে কি না, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তবে, সেটা চাইলে যুক্তরাষ্ট্র বড় ধরনের সংশোধন করতে হবে।
(কানাডার ভূরাজনীতিবিষয়ক প্ল্যাটফর্ম জিওপলিটিক্যাল মনিটরের নিবন্ধ, অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান)

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব নেওয়ার পর দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ব্যাপক আলোচনা যে হবে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। এই আলোচনায় পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সম্পর্ক কেমন হবে সেই বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে। আগেরবারের দেশ দুটি ঘিরে নীতিমালায় যে অসামঞ্জস্য ছিল, সেগুলো টিকে থাকবে, নাকি ভারসাম্যপূর্ণ ও সুসংগত হবে, তা লক্ষ করার বিষয়। এ ক্ষেত্রে ২০২৪ সালে উভয় দেশের সাধারণ নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ একটা গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হতে পারে।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে যথাক্রমে ২০২৪ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উভয় ক্ষেত্রেই নির্বাচনের গণতান্ত্রিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বাংলাদেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী দল, সাংবাদিক ও ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর সরকারের দমন-পীড়ন ছিল প্রকট। নির্বাচনের কয়েক মাস আগে নতুন সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট পাস হয়। এই আইনকে ২০১৮ সালের নিবর্তনমূলক ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের নতুন সংস্করণ বলে মনে করা হতো। উভয় আইনেই ‘অনলাইনে সরকারবিরোধী কোনো বিষয়বস্তু মুছে ফেলার’ ক্ষমতা জাতীয় সাইবার সিকিউরিটি মহাপরিচালককে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গুরুতর বিষয় হলো, কথিত ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ আচরণের অভিযোগে জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে এতে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের প্রায় ৪০ শতাংশই বিরোধী দল বিএনপির সদস্য বা সমর্থক। এসব পরিস্থিতির কারণে বিএনপি ২০২৪ সালের নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে ভোট বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয়।
বাংলাদেশের এক মাস পর পাকিস্তানেও নির্বাচনয়, সেখানেও একই ধরনের অভিযোগ ওঠে। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এখনো ‘দুর্নীতির মিথ্যা’ অভিযোগে জেল খাটছেন। তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) এখনো পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল হিসেবে ধরা হয়। নির্বাচনের আগে বিচার বিভাগের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রতীক ব্যবহারের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সরকার একদলীয় শাসনের অভিযোগ এড়াতে বিএনপি এবং পিটিআইকে পুরোপুরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে নিষিদ্ধ করেনি। তবে পিটিআই প্রার্থীদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করা হয় এবং পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সরকার বিরোধী দলগুলোর নির্বাচনী সাফল্যের সম্ভাবনা কমানোর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিকদের তোলা ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, নির্বাচনের দিন ফলাফলকে সুস্পষ্টভাবে বিকৃত করার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একটি ছবিতে নির্বাচন কমিশনের আসল একটি ফরম দেখা যায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এক পিটিআই প্রার্থী পেয়েছেন ৫৮৪ ভোট। তবে একই ফরমের অন্য একটি সংস্করণে দেখা যায়, ওই অঙ্কের ৫ কেটে দিয়ে ভোটের সংখ্যা ৮৪ দেখানো হয়েছে। পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ইতিহাস সব সময়ই চ্যালেঞ্জের মুখে ছিল। কিন্তু এই সাম্প্রতিক নির্বাচনী কারচুপি গণতন্ত্রের প্রতি পাকিস্তানি শাসকদের নজিরবিহীন অবজ্ঞার প্রমাণ।
তা ছাড়া ২০২৪ সালের নির্বাচনের সময় পাকিস্তান ও বাংলাদেশ উভয় দেশেই ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছিল। সাধারণত পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের দিন নাগরিকেরা নির্দিষ্ট নম্বরে খুদেবার্তা পাঠিয়ে তাদের ভোটকেন্দ্রের অবস্থান জানতে পারেন। কিন্তু সেদিন মোবাইল ফোন–সেবা বন্ধ থাকায় তারা তা করতে পারেননি। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে ভোটকেন্দ্র হঠাৎ করে নতুন স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং একই পরিবারের সদস্যদের দূর-দূরান্তের কেন্দ্রে পাঠানো হয়। বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনা কম নয়, তবে সাধারণত বিএনপির পূর্বনির্ধারিত সমাবেশের আগে বন্ধ করা হতো।
পাকিস্তান ও বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্যে মিল থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের ভিন্ন ভিন্ন আচরণ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিশেষ নজর কাড়ছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, ‘হাজার হাজার বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী গ্রেপ্তার এবং নির্বাচনের দিন অনিয়মের খবরে আমরা উদ্বিগ্ন।’ আগেও বিভিন্ন দেশে নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ তোলার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে এ ধরনের শব্দচয়ন দেখা গেছে।
কিন্তু পাকিস্তানের নির্বাচনী অনিয়ম নিয়ে কোনো বিবৃতি দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। বরং, পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা জেন সাকি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও তাঁর দলের নির্বাচনী সাফল্যের জন্য আমরা অভিনন্দন জানাই এবং গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত পাকিস্তানের নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার প্রত্যাশা করি।’ সরকারকে ‘গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত’ বলে অভিহিত করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বুঝিয়ে দেয় যে, পাকিস্তানের নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তারা আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন করে না, যেমনটি তারা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে করেছে।
বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সতর্ক করেন, যারা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন প্রক্রিয়া নষ্ট করবে, তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, দোষী কর্মকর্তা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ভিসা বাতিল করা হতে পারে।
এ ধরনের পদক্ষেপ পাকিস্তানের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিন্ন মনোভাব প্রকাশ করে, যেখানে আরও স্পষ্ট, নির্বাচনী অনিয়মের প্রতি তেমন কোনো কড়া প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে ভার্চুয়ালি আয়োজিত গণতন্ত্র সম্মেলনেও বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, কিন্তু পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। যদিও পাকিস্তান সেই সম্মেলনে অংশ নেয়নি। অনেকের মতে, এটি চীনা মিত্রদের খুশি রাখতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে উদ্যোগগুলোর সঙ্গে অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠতা দেখাতে না চাওয়ার কৌশল ছিল। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই দ্বৈত নীতির ফলে ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক কিছুটা তিক্ত হয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বিবৃতিতে সতর্ক করেন যে, ‘বিশ্বে আরও অনেক দেশ ও মহাদেশ রয়েছে এবং আমরা তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলব।’
বঙ্গোপসাগরের উত্তর প্রান্তে বাংলাদেশের ভূকৌশলগত অবস্থান চীনের মতো মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বীদের মাথাব্যথার কারণ। এই প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার বক্তব্য হয়তো চীনের ঘনিষ্ঠ হওয়ার প্রচেষ্টার প্রতি ইঙ্গিত হতে পারে। তবে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াকে যুক্তরাষ্ট্র তার ‘মুক্ত নির্বাচনের পক্ষে অবস্থানের’ প্রমাণ হিসেবে দেখাতে পারত। কিন্তু তাদের বিতর্কিত পদক্ষেপগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তাদের সুনাম—দুটোকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
এই অসামঞ্জস্যপূর্ণ নীতির মধ্যে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অভিযোগ করেন শেখ হাসিনা। তাঁর দাবি, নির্বাচনের আগে ওয়াশিংটন তাঁকে প্রস্তাব দিয়েছিল যে, তিনি যদি বাংলাদেশের ভূখণ্ডে একটি ঘাঁটি নির্মাণে সম্মতি দেন, তবে তারা তাঁর দলের পক্ষে মসৃণ নির্বাচন নিশ্চিত করবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এই অভিযোগকে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে।
সাধারণ নির্বাচনের পরে চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরু হয়, যা হাসিনা সরকারের পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর হাসিনার মতো একই ধরনের অভিযোগ তোলেন। তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাঁকে সরানো হয়েছে। কারণ, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা মেনে নিতে অস্বীকার করেছিলেন।
এই অভিযোগ এমন এক সময়ে এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করছে। ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা গেছে, সম্প্রতি ইউক্রেন এবং ইসরায়েলের জন্য অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করেছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। যদিও দেশ দুটির সঙ্গে পাকিস্তানের স্পষ্ট মতাদর্শিক পার্থক্য রয়েছে।
মূলত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কই ইসলামাবাদ ও ঢাকার অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের প্রতি ভিন্ন আচরণের কারণ। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী মিত্র। স্নায়ুযুদ্ধের সময় শুরু হওয়া এই সম্পর্ক এখন পর্যন্ত টিকে আছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী যথেষ্ট মালপানি পেলে মতাদর্শিক পার্থক্য উপেক্ষা করে। ইউক্রেন যুদ্ধে ইমরান খানের নিরপেক্ষতা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তাঁর সরকারের কৌশলগত মূল্য কমিয়ে দিয়েছিল।
বাংলাদেশকে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করা যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের জন্য অত্যন্ত লাভজনক হতে পারে। তবু ওয়াশিংটন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকারের অভাবকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরতে বেশি আগ্রহী। কিন্তু এই কৌশল প্রতিদিন বাংলাদেশকে চীনের কাছে আরও কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছে।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের সদস্য হয় এবং তারপর থেকে তারা ২৪ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর পর থেকেই চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ হয়ে উঠেছে এবং ২০১৮-২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অস্ত্র আমদানির ৭৩ শতাংশ চীন থেকে এসেছে। যখন বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র শীর্ষ সম্মেলন থেকে বাদ দেওয়া হয়, তখন সি চিন পিং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি চীনের জনসমক্ষে সমর্থন জানিয়ে এবং যুক্তরাষ্ট্রের চাপের বিরুদ্ধে কথা বলেন।
হাসিনা পদত্যাগে বাধ্য হওয়ার পর চীন যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করে যে, তারা কয়েক বছর ধরে আন্দোলনকারীদের সমর্থন দিয়ে বাংলাদেশে সরকার উৎখাত করার চেষ্টা করেছে। চীন যে বাংলাদেশে ঘটমান ঘটনাগুলোর প্রতি নজর রেখেছে এবং সে সবের প্রতি দৃঢ় মনোযোগ ও সমর্থন দেখিয়েছে। চীন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের উত্তেজনা সম্পর্কে সচেতন এবং এর সুযোগ নিয়ে নিজেদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে।
ওয়াশিংটনের অবাস্তব আচরণ বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র রক্ষা করার ক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে এবং এতে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র বাংলাদেশকে দূরে ঠেলে দিয়েছে। এটা কৌশলের ব্যর্থতা, নাকি কৌশলের অনুপস্থিতি, তা জানা না গেলেও দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের ধারা পরিবর্তন করতে চাইবে কি না, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তবে, সেটা চাইলে যুক্তরাষ্ট্র বড় ধরনের সংশোধন করতে হবে।
(কানাডার ভূরাজনীতিবিষয়ক প্ল্যাটফর্ম জিওপলিটিক্যাল মনিটরের নিবন্ধ, অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান)

গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৯ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সম্পর্ক কেমন হবে, সেই বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে। আগেরবারের দেশ দুটিকে ঘিরে নীতিমালায় যে অসামঞ্জস্য ছিল, সেগুলো টিকে থাকবে নাকি ভারসাম্যপূর্ণ ও সুসংগত হবে, তা লক্ষ্য করার বিষয়। এক্ষেত্রে ২০২৪ সালে উভয় দেশের সাধারণ নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ একটা গুরুত্বপ
১৭ জানুয়ারি ২০২৫
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সম্পর্ক কেমন হবে, সেই বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে। আগেরবারের দেশ দুটিকে ঘিরে নীতিমালায় যে অসামঞ্জস্য ছিল, সেগুলো টিকে থাকবে নাকি ভারসাম্যপূর্ণ ও সুসংগত হবে, তা লক্ষ্য করার বিষয়। এক্ষেত্রে ২০২৪ সালে উভয় দেশের সাধারণ নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ একটা গুরুত্বপ
১৭ জানুয়ারি ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৯ ঘণ্টা আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সম্পর্ক কেমন হবে, সেই বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে। আগেরবারের দেশ দুটিকে ঘিরে নীতিমালায় যে অসামঞ্জস্য ছিল, সেগুলো টিকে থাকবে নাকি ভারসাম্যপূর্ণ ও সুসংগত হবে, তা লক্ষ্য করার বিষয়। এক্ষেত্রে ২০২৪ সালে উভয় দেশের সাধারণ নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ একটা গুরুত্বপ
১৭ জানুয়ারি ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৯ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সম্পর্ক কেমন হবে, সেই বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে। আগেরবারের দেশ দুটিকে ঘিরে নীতিমালায় যে অসামঞ্জস্য ছিল, সেগুলো টিকে থাকবে নাকি ভারসাম্যপূর্ণ ও সুসংগত হবে, তা লক্ষ্য করার বিষয়। এক্ষেত্রে ২০২৪ সালে উভয় দেশের সাধারণ নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ একটা গুরুত্বপ
১৭ জানুয়ারি ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৯ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে