শাহাদাত স্বাধীন

২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সমাজ একটি ক্রমবর্ধমান দমবন্ধ রাজনৈতিক পরিবেশের মধ্য দিয়ে গেছে। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার প্রতি গভীর হতাশা জমা হচ্ছিল–ক্রোধ সর্বদা দৃশ্যমান না হলেও রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির আড়ালে সর্বদা উপস্থিত ছিল।
বাংলাদেশ রাষ্ট্র কঠোর নিয়ন্ত্রণের মডেলে চলছিল। শেখ হাসিনার সরকার ভিন্নমত দমনে দ্বিধা করেনি, যা বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং গুমকে স্বাভাবিক করে তুলেছিল। হাসিনার শাসনামলে ১ হাজার ৯২৬টি বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং ১ হাজার ৬৭৬টি গুমের অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক বিরোধী, কর্মী এবং ভিন্ন মতাদর্শের সমালোচকদের ওপর নিষ্ঠুর দমনপীড়ন চালানো হয়েছিল। অনেককে গোপন বন্দিশালায় রাখা হয়েছিল, যেগুলো ‘আয়না ঘর’ নামে কুখ্যাত।
হাসিনার নিয়ন্ত্রণ শুধু ভৌত জগতেই সীমাবদ্ধ ছিল না, ভার্চুয়াল জগতেও বিস্তৃত ছিল। ২০১৮ সালের একপক্ষীয় নির্বাচনের আগে, তিনি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নামে একটি কঠোর আইন প্রণয়ন করেন, যা সাংবাদিক এবং সোশ্যাল মিডিয়া কর্মীদের লক্ষ্য করে প্রণীত। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এই আইনের অধীনে ১ হাজার ১০৯টি মামলা করা হয়, যার ফলে ১৬১ জন বিরোধী রাজনীতিবিদ এবং ১৩৮ জন সাংবাদিক গ্রেপ্তার হন।
২০২৪ সালে ছাত্র এবং সাধারণ নাগরিকদের নেতৃত্বে একটি গণ–অভ্যুত্থান শুরু হয়। ৫ আগস্ট প্রচণ্ড প্রতিরোধের মুখে হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। এর মাধ্যমে তাঁর প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। তবে তাঁর প্রস্থান এসেছে অনেক প্রাণের বিনিময়ে। এই সময় সরকারের দমনপীড়নে ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায় এবং ১৯ হাজার মানুষ আহত হয়। শাসনক্ষমতা ধরে রাখতে হাসিনার সরকার মরিয়া চেষ্টা করেছিল।
বিপ্লব প্রায়শই একটি অস্থির শূন্যতা রেখে যায়, বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। পরবর্তীতে বিপ্লবের কৃতিত্বের দাবি নিয়ে গোষ্ঠীগত বিরোধ দেখা দেয়। মূলত প্রতিবিপ্লব এবং গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেওয়ার মুহূর্তে এমনটি হয়েছে। সিরিয়ার সংঘাত এর একটি মর্মান্তিক অনুস্মারক। কীভাবে আরব বসন্তের মতো বিপ্লবগুলো দীর্ঘস্থায়ী অস্থিরতা এবং বিশৃঙ্খলার দিকে নিয়ে যেতে পারে সেটিও স্মরণযোগ্য।
৮ আগস্ট, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়। বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় এই সরকার: দেশের রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করা, শাসন ব্যবস্থাকে স্থিতিশীল করা এবং তরুণ–যুবকদের আন্দোলনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা–এর প্রাথমিক অগ্রাধিকার হয়ে ওঠে। এই বাধা সত্ত্বেও, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গৃহযুদ্ধ বা সম্প্রদায়গত সংঘাতের সম্ভাবনা রোধ করতে সক্ষম হয়েছিল। এই অর্জন উপেক্ষা করা যায় না।
বৈশ্বিক শক্তি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দ্রুত স্বীকৃতি এবং সমর্থন সত্ত্বেও, ভারত শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব দেখিয়েছে। এটি নয়াদিল্লির ঐতিহ্যবাহী অবস্থানের ধারাবাহিকতাকেই চিহ্নিত করে, যারা দীর্ঘদিন ধরে হাসিনার প্রতি অটল সমর্থন দিয়ে এসেছে। তাঁর (শেখ হাসিনা) বাবার যুগ থেকে ভারতের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল, এমনকি ১৯৭৫ সালে তাঁর পরিবার খুন হওয়ার পর ছয় বছর সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালে হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর আওয়ামী লীগের ১ হাজারের বেশি নেতা ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
ঢাকায় ক্ষমতার এই আকস্মিক পরিবর্তন নয়াদিল্লির জন্য একটি বড় বৈদেশিক নীতি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতীয় মিডিয়া আউটলেটগুলো বাংলাদেশের নতুন সরকারের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য প্রচারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, যা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
বিদেশি হস্তক্ষেপের গুঞ্জন
ভূ–রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে, পশ্চিমা–সমর্থিত শাসন পরিবর্তনের অভিযোগ প্রচারিত হতে শুরু করে। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন সাবেক কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, ইউএসএআইডি বাংলাদেশের রাজনীতিকে ‘অস্থিতিশীল’ করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। তবে, এই ধরনের দাবিগুলো মূলত অভ্যুত্থানের স্বাভাবিক (অরগানিক) প্রকৃতিকে উপেক্ষা করে। যারা ‘মনসুন বিপ্লব’ প্রত্যক্ষ করেছেন তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, এটি দীর্ঘদিন ধরে জমছিল—বছরের পর বছর ধরে চলা পদ্ধতিগত নিপীড়ন, যুব আন্দোলন এবং সম্মিলিত চাপা ক্ষোভের মধ্যে এর শিকড় প্রোথিত ছিল।
এই আন্দোলন কোনো বিদেশি অর্থায়নে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপে ঘটেনি। এটি বছরের পর বছর ধরে চলা দমনমূলক শাসন এবং হাসিনার নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে গড়ে ওঠা মতাদর্শগত ঐক্যের ফল। এই আন্দোলনের বীজ ২০১৮ সালেই বপন করা হয়েছিল, যখন দুটি উল্লেখযোগ্য যুব আন্দোলন—কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলন—রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করেছিল। যদিও হাসিনা গ্রেপ্তার এবং ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে এই আন্দোলনগুলো দমন করতে সক্ষম হয়েছিলেন, তবে সেগুলো ২০২৪ সালের ঘটনার ভিত্তি তৈরি করেছিল।
২০১৮ সালে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া স্কুলছাত্ররা ২০২৪ সালের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা হয়ে উঠেছিল, যারা সংগঠিত করা, রাষ্ট্রীয় নজরদারি এড়ানো এবং একটি কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিল। মনসুন বিপ্লব শুরু হওয়ার সময়, তারা অতীতের ভুলগুলো থেকে শিখেছিল এবং নিশ্চিত করেছিল যে তাদের আন্দোলনের ঐক্য সহজে ভেঙে দেওয়া যাবে না।
বিক্ষোভগুলো মূলত অরগানিক ছিল, মানুষ স্বাধীনভাবে সংগঠিত হচ্ছিল। বিক্ষোভকারীরা বিদেশি আর্থিক সহায়তার পরিবর্তে ঘরে তৈরি খাবার এবং স্থানীয় সংগঠনের ওপর নির্ভর করেছিল। তা ছাড়া, আন্দোলনটি ব্যাপকভাবে বিস্তৃতি পেয়েছিল শুধু হাসিনা প্রশাসন হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানো এবং দেহ পোড়ানোর মতো চরম বলপ্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানানোর পর। এটি স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে আন্দোলনটি বিদেশি হস্তক্ষেপের পরিবর্তে ন্যায়বিচারের সম্মিলিত দাবির দ্বারা চালিত হয়েছিল।
আন্দোলনের বিস্তার এতটাই বিশাল ছিল যে বিদেশি কুশীলবদের কয়েকশ ডলার দিয়ে এটি সংগঠিত করার ধারণা অবান্তর। এটি ছিল একটি জনগণের আন্দোলন—যা বাংলাদেশি সমাজের প্রকৃত দাবির দ্বারা চালিত হয়েছিল। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সুপ্রতিষ্ঠিত স্বৈরশাসকের পতনের মাধ্যমে এর পরিণতি ঘটে।
মাইক বেনজ বিতর্ক
বিদেশি হস্তক্ষেপের দাবিগুলো একটি সন্দেহজনক উৎস থেকে এসেছে। এগুলোতে বেশ কয়েকটি তথ্যগত ভুল রয়েছে।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাবেক কর্মকর্তা মাইক বেনজ অভিযোগ করেন, ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) গত বছর বাংলাদেশের শাসন পরিবর্তনে একটি ভূমিকা রেখেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিতর্কিত রক্ষণশীল পডকাস্টার টাকার কার্লসনের সঙ্গে কথা বলার সময়, বেনজ দাবি করেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনকে সমর্থন করেছিল, কারণ তিনি চীনের প্রভাব মোকাবিলায় এই অঞ্চলে একটি সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের জন্য ওয়াশিংটনের প্রচেষ্টার বিরোধিতা করেছিলেন।
বেনজ দাবি করেন, স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং ইউএসএআইডি দ্বারা সমর্থিত যুক্তরাষ্ট্র–ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) বাংলাদেশের রাজনীতিকে ‘অস্থিতিশীল’ করার জন্য কাজ করেছিল। তিনি আরও দাবি করেন, মনসুন বিপ্লব এলজিবিটি কর্মী, জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী এবং ছাত্র সংগঠন দ্বারা চালিত হয়েছিল, যারা ইউএসএআইডি থেকে আর্থিক সহায়তা পেয়েছিল।
আইআরআই হাসিনা–বিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন করেছিল, বেনজের এই দাবি বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বাংলাদেশে আইআরআই হাসিনার সরকারের পক্ষে সমীক্ষা প্রকাশের জন্য পরিচিত। ২০১৮ সালে যখন সমগ্র বাংলাদেশ হাসিনার দমনপীড়ন এবং গুমের নৈরাজ্যের মুখোমুখি, তখন ইনস্টিটিউটটি দাবি করেছিল যে,৬৬ শতাংশ বাংলাদেশি শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সমর্থন করে। এই বৈধতা ২০১৮ সালে আরেকটি একদলীয় নির্বাচনের জন্য তাঁর প্রচেষ্টাকে জোরদার করতে সাহায্য করেছিল। প্রকৃতপক্ষে, অনেক হাসিনা–বিরোধী কর্মী আইআরআইকে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য সমালোচনা করেছেন।
আন্দোলনটি এলজিবিটি কর্মীদের দ্বারা সমর্থিত ছিল, বেনজের এই দাবিও অপ্রমাণিত। বাংলাদেশ একটি গভীরভাবে রক্ষণশীল সমাজ, যেখানে এলজিবিটি অধিকার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এলজিবিটি সম্প্রদায়ের অংশ হিসেবে প্রকাশ্যে নিজেকে চিহ্নিত করার ঘটনা এখানে বিরল। এলজিবিটি অধিকারের জন্য আন্দোলন ভারত এবং নেপালের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় খুবই কম। সামাজিক এবং আইনি সীমাবদ্ধতাগুলো বিবেচনা করে, এলজিবিটি কর্মীরা আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন, এই অসম্ভব।
বাংলাদেশের জাতিগত সংখ্যালঘুরা, যারা জনসংখ্যার ১ শতাংশেরও কম, দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার সমাজে অন্তর্ভুক্তির জন্য সংগ্রাম করে আসছে। তাদের সীমিত রাজনৈতিক প্রভাব এবং চলমান প্রান্তিকীকরণের কারণে এটি সম্ভব যে, তারা কোনো গণ–আন্দোলনের মূল অংশীদার হতে পারে।
বেনজের যুক্তি এই বাস্তবতাগুলোকে উপেক্ষা করে। পরিবর্তে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক আলাপকে বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে মনে হচ্ছে।
বেনজের এসব যুক্তিকে বরং একটি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক এজেন্ডা উপস্থাপনের পাঁয়তারা বলেই মনে হয়। এটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সঠিক বিবরণ উপস্থাপন করে না। বাংলাদেশের রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে অপ্রাসঙ্গিক হওয়া সত্ত্বেও এলজিবিটি বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীল শ্রোতাদের কাছে আবেদন তৈরির চেষ্টা করছেন বলে মনে হয়। তিনি ইউএসএআইডির সম্পৃক্ততার ওপর জোর দিয়েছিলেন এমন সময়ে যখন ট্রাম্প প্রশাসন এই সংস্থার ওপর খড়গহস্ত হয়েছেন। বেনজের অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে, যার লক্ষ্য শ্রোতা এবং ট্রাম্প প্রশাসনের মনোযোগ আকর্ষণ।
বাংলাদেশের মনসুন বিপ্লবের পেছনের বাস্তবতা
২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টে বাংলাদেশের ঘটনাগুলো কোনো বিদেশি অর্থায়নে ষড়যন্ত্রের ফলাফল ছিল না। বরং এটি ছিল একটি স্বতঃস্ফূর্ত গণ–আন্দোলন যাতে ছাত্র, নাগরিক, নারী, সংখ্যালঘু এবং সমাজের সব স্তরের মানুষ জড়িত ছিল। এই আন্দোলনের পেছনের কারণ ছিল হাসিনা প্রশাসনের প্রতি গভীর হতাশা, এতে কোনো বহিরাগত প্রভাব ছিল না।
সামান্য বিদেশি টাকায় এত বড় আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে বলে দাবি করা মানে হলো সেসব মানুষের ত্যাগ এবং সংগ্রামকে খাটো করা, যারা তাঁদের অধিকারের জন্য রাস্তায় নেমেছিলেন।
বেনজের দাবিগুলো আন্দোলনের বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাঁর বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের প্রকৃত গতিশীলতা প্রতিফলিত করার পরিবর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক আলাপ পরিবেশন করার সঙ্গে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে হয়। তবুও, এই আলাপ কিছু পক্ষের স্বার্থের সঙ্গে মিলে যাওয়ায়, বেনজের মন্তব্যগুলো যোগ্যতার চেয়ে বেশি মনোযোগ পেয়েছে।
লেখক:
শাহাদাত স্বাধীন একজন বাংলাদেশি সাংবাদিক এবং স্কলার, বর্তমানে নয়াদিল্লির সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে গবেষণা করছেন।

২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সমাজ একটি ক্রমবর্ধমান দমবন্ধ রাজনৈতিক পরিবেশের মধ্য দিয়ে গেছে। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার প্রতি গভীর হতাশা জমা হচ্ছিল–ক্রোধ সর্বদা দৃশ্যমান না হলেও রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির আড়ালে সর্বদা উপস্থিত ছিল।
বাংলাদেশ রাষ্ট্র কঠোর নিয়ন্ত্রণের মডেলে চলছিল। শেখ হাসিনার সরকার ভিন্নমত দমনে দ্বিধা করেনি, যা বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং গুমকে স্বাভাবিক করে তুলেছিল। হাসিনার শাসনামলে ১ হাজার ৯২৬টি বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং ১ হাজার ৬৭৬টি গুমের অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক বিরোধী, কর্মী এবং ভিন্ন মতাদর্শের সমালোচকদের ওপর নিষ্ঠুর দমনপীড়ন চালানো হয়েছিল। অনেককে গোপন বন্দিশালায় রাখা হয়েছিল, যেগুলো ‘আয়না ঘর’ নামে কুখ্যাত।
হাসিনার নিয়ন্ত্রণ শুধু ভৌত জগতেই সীমাবদ্ধ ছিল না, ভার্চুয়াল জগতেও বিস্তৃত ছিল। ২০১৮ সালের একপক্ষীয় নির্বাচনের আগে, তিনি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নামে একটি কঠোর আইন প্রণয়ন করেন, যা সাংবাদিক এবং সোশ্যাল মিডিয়া কর্মীদের লক্ষ্য করে প্রণীত। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এই আইনের অধীনে ১ হাজার ১০৯টি মামলা করা হয়, যার ফলে ১৬১ জন বিরোধী রাজনীতিবিদ এবং ১৩৮ জন সাংবাদিক গ্রেপ্তার হন।
২০২৪ সালে ছাত্র এবং সাধারণ নাগরিকদের নেতৃত্বে একটি গণ–অভ্যুত্থান শুরু হয়। ৫ আগস্ট প্রচণ্ড প্রতিরোধের মুখে হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। এর মাধ্যমে তাঁর প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। তবে তাঁর প্রস্থান এসেছে অনেক প্রাণের বিনিময়ে। এই সময় সরকারের দমনপীড়নে ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায় এবং ১৯ হাজার মানুষ আহত হয়। শাসনক্ষমতা ধরে রাখতে হাসিনার সরকার মরিয়া চেষ্টা করেছিল।
বিপ্লব প্রায়শই একটি অস্থির শূন্যতা রেখে যায়, বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। পরবর্তীতে বিপ্লবের কৃতিত্বের দাবি নিয়ে গোষ্ঠীগত বিরোধ দেখা দেয়। মূলত প্রতিবিপ্লব এবং গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেওয়ার মুহূর্তে এমনটি হয়েছে। সিরিয়ার সংঘাত এর একটি মর্মান্তিক অনুস্মারক। কীভাবে আরব বসন্তের মতো বিপ্লবগুলো দীর্ঘস্থায়ী অস্থিরতা এবং বিশৃঙ্খলার দিকে নিয়ে যেতে পারে সেটিও স্মরণযোগ্য।
৮ আগস্ট, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়। বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় এই সরকার: দেশের রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করা, শাসন ব্যবস্থাকে স্থিতিশীল করা এবং তরুণ–যুবকদের আন্দোলনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা–এর প্রাথমিক অগ্রাধিকার হয়ে ওঠে। এই বাধা সত্ত্বেও, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গৃহযুদ্ধ বা সম্প্রদায়গত সংঘাতের সম্ভাবনা রোধ করতে সক্ষম হয়েছিল। এই অর্জন উপেক্ষা করা যায় না।
বৈশ্বিক শক্তি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দ্রুত স্বীকৃতি এবং সমর্থন সত্ত্বেও, ভারত শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব দেখিয়েছে। এটি নয়াদিল্লির ঐতিহ্যবাহী অবস্থানের ধারাবাহিকতাকেই চিহ্নিত করে, যারা দীর্ঘদিন ধরে হাসিনার প্রতি অটল সমর্থন দিয়ে এসেছে। তাঁর (শেখ হাসিনা) বাবার যুগ থেকে ভারতের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল, এমনকি ১৯৭৫ সালে তাঁর পরিবার খুন হওয়ার পর ছয় বছর সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালে হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর আওয়ামী লীগের ১ হাজারের বেশি নেতা ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
ঢাকায় ক্ষমতার এই আকস্মিক পরিবর্তন নয়াদিল্লির জন্য একটি বড় বৈদেশিক নীতি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতীয় মিডিয়া আউটলেটগুলো বাংলাদেশের নতুন সরকারের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য প্রচারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, যা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
বিদেশি হস্তক্ষেপের গুঞ্জন
ভূ–রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে, পশ্চিমা–সমর্থিত শাসন পরিবর্তনের অভিযোগ প্রচারিত হতে শুরু করে। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন সাবেক কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, ইউএসএআইডি বাংলাদেশের রাজনীতিকে ‘অস্থিতিশীল’ করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। তবে, এই ধরনের দাবিগুলো মূলত অভ্যুত্থানের স্বাভাবিক (অরগানিক) প্রকৃতিকে উপেক্ষা করে। যারা ‘মনসুন বিপ্লব’ প্রত্যক্ষ করেছেন তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, এটি দীর্ঘদিন ধরে জমছিল—বছরের পর বছর ধরে চলা পদ্ধতিগত নিপীড়ন, যুব আন্দোলন এবং সম্মিলিত চাপা ক্ষোভের মধ্যে এর শিকড় প্রোথিত ছিল।
এই আন্দোলন কোনো বিদেশি অর্থায়নে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপে ঘটেনি। এটি বছরের পর বছর ধরে চলা দমনমূলক শাসন এবং হাসিনার নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে গড়ে ওঠা মতাদর্শগত ঐক্যের ফল। এই আন্দোলনের বীজ ২০১৮ সালেই বপন করা হয়েছিল, যখন দুটি উল্লেখযোগ্য যুব আন্দোলন—কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলন—রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করেছিল। যদিও হাসিনা গ্রেপ্তার এবং ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে এই আন্দোলনগুলো দমন করতে সক্ষম হয়েছিলেন, তবে সেগুলো ২০২৪ সালের ঘটনার ভিত্তি তৈরি করেছিল।
২০১৮ সালে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া স্কুলছাত্ররা ২০২৪ সালের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা হয়ে উঠেছিল, যারা সংগঠিত করা, রাষ্ট্রীয় নজরদারি এড়ানো এবং একটি কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিল। মনসুন বিপ্লব শুরু হওয়ার সময়, তারা অতীতের ভুলগুলো থেকে শিখেছিল এবং নিশ্চিত করেছিল যে তাদের আন্দোলনের ঐক্য সহজে ভেঙে দেওয়া যাবে না।
বিক্ষোভগুলো মূলত অরগানিক ছিল, মানুষ স্বাধীনভাবে সংগঠিত হচ্ছিল। বিক্ষোভকারীরা বিদেশি আর্থিক সহায়তার পরিবর্তে ঘরে তৈরি খাবার এবং স্থানীয় সংগঠনের ওপর নির্ভর করেছিল। তা ছাড়া, আন্দোলনটি ব্যাপকভাবে বিস্তৃতি পেয়েছিল শুধু হাসিনা প্রশাসন হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানো এবং দেহ পোড়ানোর মতো চরম বলপ্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানানোর পর। এটি স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে আন্দোলনটি বিদেশি হস্তক্ষেপের পরিবর্তে ন্যায়বিচারের সম্মিলিত দাবির দ্বারা চালিত হয়েছিল।
আন্দোলনের বিস্তার এতটাই বিশাল ছিল যে বিদেশি কুশীলবদের কয়েকশ ডলার দিয়ে এটি সংগঠিত করার ধারণা অবান্তর। এটি ছিল একটি জনগণের আন্দোলন—যা বাংলাদেশি সমাজের প্রকৃত দাবির দ্বারা চালিত হয়েছিল। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সুপ্রতিষ্ঠিত স্বৈরশাসকের পতনের মাধ্যমে এর পরিণতি ঘটে।
মাইক বেনজ বিতর্ক
বিদেশি হস্তক্ষেপের দাবিগুলো একটি সন্দেহজনক উৎস থেকে এসেছে। এগুলোতে বেশ কয়েকটি তথ্যগত ভুল রয়েছে।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাবেক কর্মকর্তা মাইক বেনজ অভিযোগ করেন, ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) গত বছর বাংলাদেশের শাসন পরিবর্তনে একটি ভূমিকা রেখেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিতর্কিত রক্ষণশীল পডকাস্টার টাকার কার্লসনের সঙ্গে কথা বলার সময়, বেনজ দাবি করেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনকে সমর্থন করেছিল, কারণ তিনি চীনের প্রভাব মোকাবিলায় এই অঞ্চলে একটি সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের জন্য ওয়াশিংটনের প্রচেষ্টার বিরোধিতা করেছিলেন।
বেনজ দাবি করেন, স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং ইউএসএআইডি দ্বারা সমর্থিত যুক্তরাষ্ট্র–ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) বাংলাদেশের রাজনীতিকে ‘অস্থিতিশীল’ করার জন্য কাজ করেছিল। তিনি আরও দাবি করেন, মনসুন বিপ্লব এলজিবিটি কর্মী, জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী এবং ছাত্র সংগঠন দ্বারা চালিত হয়েছিল, যারা ইউএসএআইডি থেকে আর্থিক সহায়তা পেয়েছিল।
আইআরআই হাসিনা–বিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন করেছিল, বেনজের এই দাবি বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বাংলাদেশে আইআরআই হাসিনার সরকারের পক্ষে সমীক্ষা প্রকাশের জন্য পরিচিত। ২০১৮ সালে যখন সমগ্র বাংলাদেশ হাসিনার দমনপীড়ন এবং গুমের নৈরাজ্যের মুখোমুখি, তখন ইনস্টিটিউটটি দাবি করেছিল যে,৬৬ শতাংশ বাংলাদেশি শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সমর্থন করে। এই বৈধতা ২০১৮ সালে আরেকটি একদলীয় নির্বাচনের জন্য তাঁর প্রচেষ্টাকে জোরদার করতে সাহায্য করেছিল। প্রকৃতপক্ষে, অনেক হাসিনা–বিরোধী কর্মী আইআরআইকে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য সমালোচনা করেছেন।
আন্দোলনটি এলজিবিটি কর্মীদের দ্বারা সমর্থিত ছিল, বেনজের এই দাবিও অপ্রমাণিত। বাংলাদেশ একটি গভীরভাবে রক্ষণশীল সমাজ, যেখানে এলজিবিটি অধিকার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এলজিবিটি সম্প্রদায়ের অংশ হিসেবে প্রকাশ্যে নিজেকে চিহ্নিত করার ঘটনা এখানে বিরল। এলজিবিটি অধিকারের জন্য আন্দোলন ভারত এবং নেপালের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় খুবই কম। সামাজিক এবং আইনি সীমাবদ্ধতাগুলো বিবেচনা করে, এলজিবিটি কর্মীরা আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন, এই অসম্ভব।
বাংলাদেশের জাতিগত সংখ্যালঘুরা, যারা জনসংখ্যার ১ শতাংশেরও কম, দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার সমাজে অন্তর্ভুক্তির জন্য সংগ্রাম করে আসছে। তাদের সীমিত রাজনৈতিক প্রভাব এবং চলমান প্রান্তিকীকরণের কারণে এটি সম্ভব যে, তারা কোনো গণ–আন্দোলনের মূল অংশীদার হতে পারে।
বেনজের যুক্তি এই বাস্তবতাগুলোকে উপেক্ষা করে। পরিবর্তে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক আলাপকে বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে মনে হচ্ছে।
বেনজের এসব যুক্তিকে বরং একটি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক এজেন্ডা উপস্থাপনের পাঁয়তারা বলেই মনে হয়। এটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সঠিক বিবরণ উপস্থাপন করে না। বাংলাদেশের রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে অপ্রাসঙ্গিক হওয়া সত্ত্বেও এলজিবিটি বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীল শ্রোতাদের কাছে আবেদন তৈরির চেষ্টা করছেন বলে মনে হয়। তিনি ইউএসএআইডির সম্পৃক্ততার ওপর জোর দিয়েছিলেন এমন সময়ে যখন ট্রাম্প প্রশাসন এই সংস্থার ওপর খড়গহস্ত হয়েছেন। বেনজের অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে, যার লক্ষ্য শ্রোতা এবং ট্রাম্প প্রশাসনের মনোযোগ আকর্ষণ।
বাংলাদেশের মনসুন বিপ্লবের পেছনের বাস্তবতা
২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টে বাংলাদেশের ঘটনাগুলো কোনো বিদেশি অর্থায়নে ষড়যন্ত্রের ফলাফল ছিল না। বরং এটি ছিল একটি স্বতঃস্ফূর্ত গণ–আন্দোলন যাতে ছাত্র, নাগরিক, নারী, সংখ্যালঘু এবং সমাজের সব স্তরের মানুষ জড়িত ছিল। এই আন্দোলনের পেছনের কারণ ছিল হাসিনা প্রশাসনের প্রতি গভীর হতাশা, এতে কোনো বহিরাগত প্রভাব ছিল না।
সামান্য বিদেশি টাকায় এত বড় আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে বলে দাবি করা মানে হলো সেসব মানুষের ত্যাগ এবং সংগ্রামকে খাটো করা, যারা তাঁদের অধিকারের জন্য রাস্তায় নেমেছিলেন।
বেনজের দাবিগুলো আন্দোলনের বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাঁর বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের প্রকৃত গতিশীলতা প্রতিফলিত করার পরিবর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক আলাপ পরিবেশন করার সঙ্গে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে হয়। তবুও, এই আলাপ কিছু পক্ষের স্বার্থের সঙ্গে মিলে যাওয়ায়, বেনজের মন্তব্যগুলো যোগ্যতার চেয়ে বেশি মনোযোগ পেয়েছে।
লেখক:
শাহাদাত স্বাধীন একজন বাংলাদেশি সাংবাদিক এবং স্কলার, বর্তমানে নয়াদিল্লির সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে গবেষণা করছেন।

গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১৮ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
২ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

বিপ্লব প্রায়শই একটি অস্থির শূন্যতা রেখে যায়, বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। পরবর্তীতে বিপ্লবের কৃতিত্বের দাবি নিয়ে গোষ্ঠীগত বিরোধ দেখা দেয়। মূলত প্রতিবিপ্লব এবং গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেওয়ার মুহূর্তে এমনটি হয়েছে। সিরিয়ার সংঘাত এর একটি মর্মান্তিক অনুস্মারক। কীভাবে আরব বসন্তের মতো বিপ্লবগুলো দীর্ঘস্থায়ী..
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
২ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

বিপ্লব প্রায়শই একটি অস্থির শূন্যতা রেখে যায়, বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। পরবর্তীতে বিপ্লবের কৃতিত্বের দাবি নিয়ে গোষ্ঠীগত বিরোধ দেখা দেয়। মূলত প্রতিবিপ্লব এবং গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেওয়ার মুহূর্তে এমনটি হয়েছে। সিরিয়ার সংঘাত এর একটি মর্মান্তিক অনুস্মারক। কীভাবে আরব বসন্তের মতো বিপ্লবগুলো দীর্ঘস্থায়ী..
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১৮ ঘণ্টা আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
২ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

বিপ্লব প্রায়শই একটি অস্থির শূন্যতা রেখে যায়, বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। পরবর্তীতে বিপ্লবের কৃতিত্বের দাবি নিয়ে গোষ্ঠীগত বিরোধ দেখা দেয়। মূলত প্রতিবিপ্লব এবং গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেওয়ার মুহূর্তে এমনটি হয়েছে। সিরিয়ার সংঘাত এর একটি মর্মান্তিক অনুস্মারক। কীভাবে আরব বসন্তের মতো বিপ্লবগুলো দীর্ঘস্থায়ী..
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১৮ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

বিপ্লব প্রায়শই একটি অস্থির শূন্যতা রেখে যায়, বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। পরবর্তীতে বিপ্লবের কৃতিত্বের দাবি নিয়ে গোষ্ঠীগত বিরোধ দেখা দেয়। মূলত প্রতিবিপ্লব এবং গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেওয়ার মুহূর্তে এমনটি হয়েছে। সিরিয়ার সংঘাত এর একটি মর্মান্তিক অনুস্মারক। কীভাবে আরব বসন্তের মতো বিপ্লবগুলো দীর্ঘস্থায়ী..
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১৮ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
২ দিন আগে