
আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। তিনি দেশ ছেড়ে চলে যান ভারতে। তার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় নেওয়া যেমন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য অস্বস্তিকর, তেমনি এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে বিস্মিত হয়েছে ভারত।
শেখ হাসিনাকে ভারতপন্থী হিসেবেই দেখা হয় এবং তাঁর ১৫ বছরের শাসনামলে দুই দেশ ঘনিষ্ঠ কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উপভোগ করেছে। তাঁর ক্ষমতায় থাকার সময়টি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও বেশ সুবিধাজনক ছিল। কারণ, তিনি বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত কিছু ভারতবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠী দমন করেছিলেন এবং সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করেছিলেন। কিন্তু ভারতে তাঁর উপস্থিতি, তিনি কত দিন সেখানে থাকবেন সে বিষয়ে কোনো স্পষ্টতা না থাকায় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎকার থেকে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে। গত সপ্তাহে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, দিল্লি যদি শেখ হাসিনাকে ভারতে রাখতে চায়, তবে তাঁকে যেন রাজনৈতিক বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত রাখে। ড. ইউনূস বলেছিলেন, ‘যদি বাংলাদেশ (সরকার) তাঁকে (শেখ হাসিনা) ফেরত না নেওয়া পর্যন্ত ভারত তাঁকে রাখতে চায়, তবে শর্ত হলো—তাঁকে চুপ থাকতে হবে।’
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক তলানিতে আছে উল্লেখ করে বলেছিলেন, উভয় দেশকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতির জন্য একযোগে কাজ করতে হবে। তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা বিশেষ করে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেনি। তবে বাংলাদেশ ইস্যুতে কর্মকর্তারা ‘বিচলিত’ বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয় কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, ‘ভারত এখন অপেক্ষা করছে এবং বাংলাদেশের কী ঘটছে তা পর্যবেক্ষণ করছে। এ ছাড়া ঢাকা থেকে প্রকাশিত বিবৃতিগুলোকে বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখছে—যা মূলত সরকারি মতামত এবং নাগরিক সমাজে প্রতিনিধিরা বলছেন।’
ভারতের সাবেক কূটনীতিক ও বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রি বলেছেন, ‘আমরা বিস্মিত যে বাংলাদেশ গণমাধ্যমের মাধ্যমে বিতর্কিত দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করছে। ড. ইউনূস এই বিষয়টিকে “মেগাফোন কূটনীতি” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।’
বীণা সিক্রি বলেন, ‘ভারত (বাংলাদেশের) অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কথা বলার জন্য এবং বাংলাদেশ ও ভারতের সব উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করার জন্য তার প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিয়েছে।’ সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, সমস্যাগুলো দীর্ঘ আলোচনা সাপেক্ষ কিসের ভিত্তিতে (ড. ইউনূস) দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ‘তলানিতে’ বলে উল্লেখ করেছেন তা স্পষ্ট নয়।
তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বিবিসিকে বলেছেন, ‘ভারতীয় নেতারা কি কোনো গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন না? ড. ইউনূসকে যদি নির্দিষ্ট বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি অবশ্যই তাঁর মতামত প্রকাশ করতে পারেন। আপনি যদি সমালোচনা করতে চান, তবে যেকোনো বিষয়েই সমালোচনা করতে পারেন।’
কয়েক সপ্তাহ আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ড. ইউনূস টেলিফোনে কথা বললেও এখন পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ের কোনো বৈঠক হয়নি। তবে ভারতে একটি বিষয়ে সবাই একমত যে যতক্ষণ না অন্য দেশ তাঁকে যাওয়ার অনুমতি দেয়, ততক্ষণ শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করতে পারবেন।
তবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নবনিযুক্ত প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিচার করার জন্য তাঁরা শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু তাঁকে বাংলাদেশে গণহত্যার প্রধান আসামি করা হয়েছে, আমরা তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য আইনগতভাবে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।’
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করলেও হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করার সম্ভাবনা কম। এ বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস বলেন, ‘তিনি এখানে ভারতের অতিথি হিসেবে অবস্থান করছেন। আমরা যদি আমাদের দীর্ঘদিনের বন্ধুর প্রতি মৌলিক সৌজন্য প্রকাশ না করি, তাহলে ভবিষ্যতে কেন কেউ আমাদের বন্ধু হিসেবে গুরুত্ব সহকারে নেবে?’
বাংলাদেশে কেবল আওয়ামী লীগকে প্রাধান্য দিয়ে অন্য বিরোধী দলগুলোকে আমলে না নেওয়ায় ভারতের সমালোচনা করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, কেবল শেখ হাসিনার নেতৃত্বই বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে—নয়াদিল্লিকে এই ন্যারেটিভ বাদ দিতে হবে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আগামীর পথ হলো ভারতের এই ন্যারেটিভ থেকে বেরিয়ে আসা। ন্যারেটিভটি হলো—সবাই ইসলামপন্থী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ইসলামপন্থী এবং বাকি সবাই ইসলামপন্থী এবং এই দেশ আফগানিস্তানে পরিণত হবে। আর শেখ হাসিনার হাতে বাংলাদেশ নিরাপদ। ভারত এই আখ্যানে বিমোহিত। ভারতকে এই আখ্যান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও আরেকটি প্রতিবেশী—এটিও ভারতকে মনে রাখতে হবে।’
তবে ভারতীয় বিশ্লেষকেরা ড. ইউনূসের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন। যেমন বীণা সিক্রি বলেন, ‘আমি এই বক্তব্যের সঙ্গে একেবারেই একমত নই। বাংলাদেশে আমাদের হাইকমিশনাররা কোনো ধরনের বৈষম্য না করেই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলেন।’
২০০১—২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন বিএনপির জোট সরকারের সময় ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি ঘটে। বিশেষ করে, দিল্লি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর বিদ্রোহীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য ঢাকাকে অভিযুক্ত করে। কিন্তু বিএনপি তা বরাবরই অস্বীকার করেছে।
তবে বাংলাদেশের অনেকেই উল্লেখ করেছেন, ভারতের উচিত বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ করা। কারণ, দলটি যখনই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক না কেন—জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘৫ আগস্টের (হাসিনার সরকার পতনের) পর থেকে কোনো ভারতীয় কর্মকর্তা আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। কেন করেননি, তার কারণ আমি জানি না।’ পক্ষান্তরে, বিএনপির সঙ্গে ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূত ও ইউরোপীয় দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতেরা নিয়মিত বৈঠক করছেন।
হাসিনার পতনের পরের দিনগুলোতে বাংলাদেশে নিরাপত্তার অভাব ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হিন্দুদের ওপর হামলার খবরে ভারত বেশ কয়েকবার উদ্বেগও প্রকাশ করেছে। গত কয়েক সপ্তাহে বেশ কয়েকটি মাজারও কট্টর ইসলামপন্থীরা ভাঙচুর করেছে। সিরাজগঞ্জের আলী খাজা আলী পাগলা পীরের মাজারের তত্ত্বাবধায়কের স্ত্রী তামান্না আক্তার বলেন, ‘কয়েক দিন আগে একদল লোক এসে আমার শ্বশুরের সমাধি ভাঙচুর করে এবং কোনো অনৈসলামিক অনুষ্ঠান না করার জন্য আমাদের সতর্ক করে।’
অন্তর্বর্তী সরকারে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসাইন বলেছেন, যারা ধর্মীয় স্থাপনাকে টার্গেট করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কট্টর ইসলামপন্থীরা যদি একটি দৃঢ় উপস্থিতি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে বাংলাদেশে—তা আকারে যত ছোটই হোক না কেন—তা দিল্লির জন্য বিপদের ঘণ্টা বাজিয়ে দেবে।
গত কয়েক সপ্তাহে একজন দণ্ডিত জঙ্গিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। নয়জন সন্দেহভাজন কট্টরপন্থী গত মাসে জেলে আগুনের ঘটনার সময় পালিয়ে গিয়েছিলেন। পরে তাদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের—যেটিকে ২০১৬ সালে হাসিনার সরকার সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল—প্রধান জসিমুদ্দিন রহমানীও গত মাসে কারাগার থেকে বেরিয়ে এসেছেন। ২০১৫ সালে এক ব্লগার হত্যার অভিযোগে তাঁকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। অন্যান্য বিচারাধীন মামলার কারণে কারাবন্দিত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তিনি কারাগারে ছিলেন।
এ বিষয়ে রিভা গাঙ্গুলি দাস বলেন, ‘গত মাসে বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে মুক্ত দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন ভারতের কাছে পরিচিত।’ সাবেক কূটনীতিক এটিকে একটি ‘গুরুতর বিষয়’ বলে অভিহিত করেন।
অনুবাদ করেছেন: আব্দুর রহমান

আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। তিনি দেশ ছেড়ে চলে যান ভারতে। তার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় নেওয়া যেমন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য অস্বস্তিকর, তেমনি এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে বিস্মিত হয়েছে ভারত।
শেখ হাসিনাকে ভারতপন্থী হিসেবেই দেখা হয় এবং তাঁর ১৫ বছরের শাসনামলে দুই দেশ ঘনিষ্ঠ কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উপভোগ করেছে। তাঁর ক্ষমতায় থাকার সময়টি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও বেশ সুবিধাজনক ছিল। কারণ, তিনি বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত কিছু ভারতবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠী দমন করেছিলেন এবং সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করেছিলেন। কিন্তু ভারতে তাঁর উপস্থিতি, তিনি কত দিন সেখানে থাকবেন সে বিষয়ে কোনো স্পষ্টতা না থাকায় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎকার থেকে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে। গত সপ্তাহে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, দিল্লি যদি শেখ হাসিনাকে ভারতে রাখতে চায়, তবে তাঁকে যেন রাজনৈতিক বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত রাখে। ড. ইউনূস বলেছিলেন, ‘যদি বাংলাদেশ (সরকার) তাঁকে (শেখ হাসিনা) ফেরত না নেওয়া পর্যন্ত ভারত তাঁকে রাখতে চায়, তবে শর্ত হলো—তাঁকে চুপ থাকতে হবে।’
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক তলানিতে আছে উল্লেখ করে বলেছিলেন, উভয় দেশকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতির জন্য একযোগে কাজ করতে হবে। তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা বিশেষ করে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেনি। তবে বাংলাদেশ ইস্যুতে কর্মকর্তারা ‘বিচলিত’ বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয় কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, ‘ভারত এখন অপেক্ষা করছে এবং বাংলাদেশের কী ঘটছে তা পর্যবেক্ষণ করছে। এ ছাড়া ঢাকা থেকে প্রকাশিত বিবৃতিগুলোকে বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখছে—যা মূলত সরকারি মতামত এবং নাগরিক সমাজে প্রতিনিধিরা বলছেন।’
ভারতের সাবেক কূটনীতিক ও বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রি বলেছেন, ‘আমরা বিস্মিত যে বাংলাদেশ গণমাধ্যমের মাধ্যমে বিতর্কিত দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করছে। ড. ইউনূস এই বিষয়টিকে “মেগাফোন কূটনীতি” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।’
বীণা সিক্রি বলেন, ‘ভারত (বাংলাদেশের) অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কথা বলার জন্য এবং বাংলাদেশ ও ভারতের সব উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করার জন্য তার প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিয়েছে।’ সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, সমস্যাগুলো দীর্ঘ আলোচনা সাপেক্ষ কিসের ভিত্তিতে (ড. ইউনূস) দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ‘তলানিতে’ বলে উল্লেখ করেছেন তা স্পষ্ট নয়।
তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বিবিসিকে বলেছেন, ‘ভারতীয় নেতারা কি কোনো গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন না? ড. ইউনূসকে যদি নির্দিষ্ট বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি অবশ্যই তাঁর মতামত প্রকাশ করতে পারেন। আপনি যদি সমালোচনা করতে চান, তবে যেকোনো বিষয়েই সমালোচনা করতে পারেন।’
কয়েক সপ্তাহ আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ড. ইউনূস টেলিফোনে কথা বললেও এখন পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ের কোনো বৈঠক হয়নি। তবে ভারতে একটি বিষয়ে সবাই একমত যে যতক্ষণ না অন্য দেশ তাঁকে যাওয়ার অনুমতি দেয়, ততক্ষণ শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করতে পারবেন।
তবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নবনিযুক্ত প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিচার করার জন্য তাঁরা শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু তাঁকে বাংলাদেশে গণহত্যার প্রধান আসামি করা হয়েছে, আমরা তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য আইনগতভাবে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।’
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করলেও হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করার সম্ভাবনা কম। এ বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস বলেন, ‘তিনি এখানে ভারতের অতিথি হিসেবে অবস্থান করছেন। আমরা যদি আমাদের দীর্ঘদিনের বন্ধুর প্রতি মৌলিক সৌজন্য প্রকাশ না করি, তাহলে ভবিষ্যতে কেন কেউ আমাদের বন্ধু হিসেবে গুরুত্ব সহকারে নেবে?’
বাংলাদেশে কেবল আওয়ামী লীগকে প্রাধান্য দিয়ে অন্য বিরোধী দলগুলোকে আমলে না নেওয়ায় ভারতের সমালোচনা করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, কেবল শেখ হাসিনার নেতৃত্বই বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে—নয়াদিল্লিকে এই ন্যারেটিভ বাদ দিতে হবে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আগামীর পথ হলো ভারতের এই ন্যারেটিভ থেকে বেরিয়ে আসা। ন্যারেটিভটি হলো—সবাই ইসলামপন্থী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ইসলামপন্থী এবং বাকি সবাই ইসলামপন্থী এবং এই দেশ আফগানিস্তানে পরিণত হবে। আর শেখ হাসিনার হাতে বাংলাদেশ নিরাপদ। ভারত এই আখ্যানে বিমোহিত। ভারতকে এই আখ্যান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও আরেকটি প্রতিবেশী—এটিও ভারতকে মনে রাখতে হবে।’
তবে ভারতীয় বিশ্লেষকেরা ড. ইউনূসের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন। যেমন বীণা সিক্রি বলেন, ‘আমি এই বক্তব্যের সঙ্গে একেবারেই একমত নই। বাংলাদেশে আমাদের হাইকমিশনাররা কোনো ধরনের বৈষম্য না করেই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলেন।’
২০০১—২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন বিএনপির জোট সরকারের সময় ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি ঘটে। বিশেষ করে, দিল্লি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর বিদ্রোহীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য ঢাকাকে অভিযুক্ত করে। কিন্তু বিএনপি তা বরাবরই অস্বীকার করেছে।
তবে বাংলাদেশের অনেকেই উল্লেখ করেছেন, ভারতের উচিত বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ করা। কারণ, দলটি যখনই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক না কেন—জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘৫ আগস্টের (হাসিনার সরকার পতনের) পর থেকে কোনো ভারতীয় কর্মকর্তা আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। কেন করেননি, তার কারণ আমি জানি না।’ পক্ষান্তরে, বিএনপির সঙ্গে ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূত ও ইউরোপীয় দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতেরা নিয়মিত বৈঠক করছেন।
হাসিনার পতনের পরের দিনগুলোতে বাংলাদেশে নিরাপত্তার অভাব ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হিন্দুদের ওপর হামলার খবরে ভারত বেশ কয়েকবার উদ্বেগও প্রকাশ করেছে। গত কয়েক সপ্তাহে বেশ কয়েকটি মাজারও কট্টর ইসলামপন্থীরা ভাঙচুর করেছে। সিরাজগঞ্জের আলী খাজা আলী পাগলা পীরের মাজারের তত্ত্বাবধায়কের স্ত্রী তামান্না আক্তার বলেন, ‘কয়েক দিন আগে একদল লোক এসে আমার শ্বশুরের সমাধি ভাঙচুর করে এবং কোনো অনৈসলামিক অনুষ্ঠান না করার জন্য আমাদের সতর্ক করে।’
অন্তর্বর্তী সরকারে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসাইন বলেছেন, যারা ধর্মীয় স্থাপনাকে টার্গেট করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কট্টর ইসলামপন্থীরা যদি একটি দৃঢ় উপস্থিতি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে বাংলাদেশে—তা আকারে যত ছোটই হোক না কেন—তা দিল্লির জন্য বিপদের ঘণ্টা বাজিয়ে দেবে।
গত কয়েক সপ্তাহে একজন দণ্ডিত জঙ্গিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। নয়জন সন্দেহভাজন কট্টরপন্থী গত মাসে জেলে আগুনের ঘটনার সময় পালিয়ে গিয়েছিলেন। পরে তাদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের—যেটিকে ২০১৬ সালে হাসিনার সরকার সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল—প্রধান জসিমুদ্দিন রহমানীও গত মাসে কারাগার থেকে বেরিয়ে এসেছেন। ২০১৫ সালে এক ব্লগার হত্যার অভিযোগে তাঁকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। অন্যান্য বিচারাধীন মামলার কারণে কারাবন্দিত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তিনি কারাগারে ছিলেন।
এ বিষয়ে রিভা গাঙ্গুলি দাস বলেন, ‘গত মাসে বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে মুক্ত দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন ভারতের কাছে পরিচিত।’ সাবেক কূটনীতিক এটিকে একটি ‘গুরুতর বিষয়’ বলে অভিহিত করেন।
অনুবাদ করেছেন: আব্দুর রহমান

আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। তিনি দেশ ছেড়ে চলে যান ভারতে। তার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় নেওয়া যেমন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য অস্বস্তিকর, তেমনি এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে বিস্মিত হয়েছে ভারত।
শেখ হাসিনাকে ভারতপন্থী হিসেবেই দেখা হয় এবং তাঁর ১৫ বছরের শাসনামলে দুই দেশ ঘনিষ্ঠ কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উপভোগ করেছে। তাঁর ক্ষমতায় থাকার সময়টি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও বেশ সুবিধাজনক ছিল। কারণ, তিনি বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত কিছু ভারতবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠী দমন করেছিলেন এবং সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করেছিলেন। কিন্তু ভারতে তাঁর উপস্থিতি, তিনি কত দিন সেখানে থাকবেন সে বিষয়ে কোনো স্পষ্টতা না থাকায় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎকার থেকে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে। গত সপ্তাহে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, দিল্লি যদি শেখ হাসিনাকে ভারতে রাখতে চায়, তবে তাঁকে যেন রাজনৈতিক বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত রাখে। ড. ইউনূস বলেছিলেন, ‘যদি বাংলাদেশ (সরকার) তাঁকে (শেখ হাসিনা) ফেরত না নেওয়া পর্যন্ত ভারত তাঁকে রাখতে চায়, তবে শর্ত হলো—তাঁকে চুপ থাকতে হবে।’
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক তলানিতে আছে উল্লেখ করে বলেছিলেন, উভয় দেশকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতির জন্য একযোগে কাজ করতে হবে। তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা বিশেষ করে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেনি। তবে বাংলাদেশ ইস্যুতে কর্মকর্তারা ‘বিচলিত’ বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয় কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, ‘ভারত এখন অপেক্ষা করছে এবং বাংলাদেশের কী ঘটছে তা পর্যবেক্ষণ করছে। এ ছাড়া ঢাকা থেকে প্রকাশিত বিবৃতিগুলোকে বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখছে—যা মূলত সরকারি মতামত এবং নাগরিক সমাজে প্রতিনিধিরা বলছেন।’
ভারতের সাবেক কূটনীতিক ও বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রি বলেছেন, ‘আমরা বিস্মিত যে বাংলাদেশ গণমাধ্যমের মাধ্যমে বিতর্কিত দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করছে। ড. ইউনূস এই বিষয়টিকে “মেগাফোন কূটনীতি” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।’
বীণা সিক্রি বলেন, ‘ভারত (বাংলাদেশের) অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কথা বলার জন্য এবং বাংলাদেশ ও ভারতের সব উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করার জন্য তার প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিয়েছে।’ সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, সমস্যাগুলো দীর্ঘ আলোচনা সাপেক্ষ কিসের ভিত্তিতে (ড. ইউনূস) দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ‘তলানিতে’ বলে উল্লেখ করেছেন তা স্পষ্ট নয়।
তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বিবিসিকে বলেছেন, ‘ভারতীয় নেতারা কি কোনো গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন না? ড. ইউনূসকে যদি নির্দিষ্ট বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি অবশ্যই তাঁর মতামত প্রকাশ করতে পারেন। আপনি যদি সমালোচনা করতে চান, তবে যেকোনো বিষয়েই সমালোচনা করতে পারেন।’
কয়েক সপ্তাহ আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ড. ইউনূস টেলিফোনে কথা বললেও এখন পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ের কোনো বৈঠক হয়নি। তবে ভারতে একটি বিষয়ে সবাই একমত যে যতক্ষণ না অন্য দেশ তাঁকে যাওয়ার অনুমতি দেয়, ততক্ষণ শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করতে পারবেন।
তবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নবনিযুক্ত প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিচার করার জন্য তাঁরা শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু তাঁকে বাংলাদেশে গণহত্যার প্রধান আসামি করা হয়েছে, আমরা তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য আইনগতভাবে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।’
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করলেও হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করার সম্ভাবনা কম। এ বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস বলেন, ‘তিনি এখানে ভারতের অতিথি হিসেবে অবস্থান করছেন। আমরা যদি আমাদের দীর্ঘদিনের বন্ধুর প্রতি মৌলিক সৌজন্য প্রকাশ না করি, তাহলে ভবিষ্যতে কেন কেউ আমাদের বন্ধু হিসেবে গুরুত্ব সহকারে নেবে?’
বাংলাদেশে কেবল আওয়ামী লীগকে প্রাধান্য দিয়ে অন্য বিরোধী দলগুলোকে আমলে না নেওয়ায় ভারতের সমালোচনা করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, কেবল শেখ হাসিনার নেতৃত্বই বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে—নয়াদিল্লিকে এই ন্যারেটিভ বাদ দিতে হবে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আগামীর পথ হলো ভারতের এই ন্যারেটিভ থেকে বেরিয়ে আসা। ন্যারেটিভটি হলো—সবাই ইসলামপন্থী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ইসলামপন্থী এবং বাকি সবাই ইসলামপন্থী এবং এই দেশ আফগানিস্তানে পরিণত হবে। আর শেখ হাসিনার হাতে বাংলাদেশ নিরাপদ। ভারত এই আখ্যানে বিমোহিত। ভারতকে এই আখ্যান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও আরেকটি প্রতিবেশী—এটিও ভারতকে মনে রাখতে হবে।’
তবে ভারতীয় বিশ্লেষকেরা ড. ইউনূসের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন। যেমন বীণা সিক্রি বলেন, ‘আমি এই বক্তব্যের সঙ্গে একেবারেই একমত নই। বাংলাদেশে আমাদের হাইকমিশনাররা কোনো ধরনের বৈষম্য না করেই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলেন।’
২০০১—২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন বিএনপির জোট সরকারের সময় ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি ঘটে। বিশেষ করে, দিল্লি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর বিদ্রোহীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য ঢাকাকে অভিযুক্ত করে। কিন্তু বিএনপি তা বরাবরই অস্বীকার করেছে।
তবে বাংলাদেশের অনেকেই উল্লেখ করেছেন, ভারতের উচিত বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ করা। কারণ, দলটি যখনই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক না কেন—জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘৫ আগস্টের (হাসিনার সরকার পতনের) পর থেকে কোনো ভারতীয় কর্মকর্তা আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। কেন করেননি, তার কারণ আমি জানি না।’ পক্ষান্তরে, বিএনপির সঙ্গে ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূত ও ইউরোপীয় দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতেরা নিয়মিত বৈঠক করছেন।
হাসিনার পতনের পরের দিনগুলোতে বাংলাদেশে নিরাপত্তার অভাব ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হিন্দুদের ওপর হামলার খবরে ভারত বেশ কয়েকবার উদ্বেগও প্রকাশ করেছে। গত কয়েক সপ্তাহে বেশ কয়েকটি মাজারও কট্টর ইসলামপন্থীরা ভাঙচুর করেছে। সিরাজগঞ্জের আলী খাজা আলী পাগলা পীরের মাজারের তত্ত্বাবধায়কের স্ত্রী তামান্না আক্তার বলেন, ‘কয়েক দিন আগে একদল লোক এসে আমার শ্বশুরের সমাধি ভাঙচুর করে এবং কোনো অনৈসলামিক অনুষ্ঠান না করার জন্য আমাদের সতর্ক করে।’
অন্তর্বর্তী সরকারে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসাইন বলেছেন, যারা ধর্মীয় স্থাপনাকে টার্গেট করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কট্টর ইসলামপন্থীরা যদি একটি দৃঢ় উপস্থিতি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে বাংলাদেশে—তা আকারে যত ছোটই হোক না কেন—তা দিল্লির জন্য বিপদের ঘণ্টা বাজিয়ে দেবে।
গত কয়েক সপ্তাহে একজন দণ্ডিত জঙ্গিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। নয়জন সন্দেহভাজন কট্টরপন্থী গত মাসে জেলে আগুনের ঘটনার সময় পালিয়ে গিয়েছিলেন। পরে তাদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের—যেটিকে ২০১৬ সালে হাসিনার সরকার সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল—প্রধান জসিমুদ্দিন রহমানীও গত মাসে কারাগার থেকে বেরিয়ে এসেছেন। ২০১৫ সালে এক ব্লগার হত্যার অভিযোগে তাঁকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। অন্যান্য বিচারাধীন মামলার কারণে কারাবন্দিত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তিনি কারাগারে ছিলেন।
এ বিষয়ে রিভা গাঙ্গুলি দাস বলেন, ‘গত মাসে বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে মুক্ত দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন ভারতের কাছে পরিচিত।’ সাবেক কূটনীতিক এটিকে একটি ‘গুরুতর বিষয়’ বলে অভিহিত করেন।
অনুবাদ করেছেন: আব্দুর রহমান

আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। তিনি দেশ ছেড়ে চলে যান ভারতে। তার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় নেওয়া যেমন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য অস্বস্তিকর, তেমনি এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে বিস্মিত হয়েছে ভারত।
শেখ হাসিনাকে ভারতপন্থী হিসেবেই দেখা হয় এবং তাঁর ১৫ বছরের শাসনামলে দুই দেশ ঘনিষ্ঠ কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উপভোগ করেছে। তাঁর ক্ষমতায় থাকার সময়টি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও বেশ সুবিধাজনক ছিল। কারণ, তিনি বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত কিছু ভারতবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠী দমন করেছিলেন এবং সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করেছিলেন। কিন্তু ভারতে তাঁর উপস্থিতি, তিনি কত দিন সেখানে থাকবেন সে বিষয়ে কোনো স্পষ্টতা না থাকায় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎকার থেকে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে। গত সপ্তাহে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, দিল্লি যদি শেখ হাসিনাকে ভারতে রাখতে চায়, তবে তাঁকে যেন রাজনৈতিক বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত রাখে। ড. ইউনূস বলেছিলেন, ‘যদি বাংলাদেশ (সরকার) তাঁকে (শেখ হাসিনা) ফেরত না নেওয়া পর্যন্ত ভারত তাঁকে রাখতে চায়, তবে শর্ত হলো—তাঁকে চুপ থাকতে হবে।’
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক তলানিতে আছে উল্লেখ করে বলেছিলেন, উভয় দেশকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতির জন্য একযোগে কাজ করতে হবে। তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা বিশেষ করে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেনি। তবে বাংলাদেশ ইস্যুতে কর্মকর্তারা ‘বিচলিত’ বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয় কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, ‘ভারত এখন অপেক্ষা করছে এবং বাংলাদেশের কী ঘটছে তা পর্যবেক্ষণ করছে। এ ছাড়া ঢাকা থেকে প্রকাশিত বিবৃতিগুলোকে বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখছে—যা মূলত সরকারি মতামত এবং নাগরিক সমাজে প্রতিনিধিরা বলছেন।’
ভারতের সাবেক কূটনীতিক ও বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রি বলেছেন, ‘আমরা বিস্মিত যে বাংলাদেশ গণমাধ্যমের মাধ্যমে বিতর্কিত দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করছে। ড. ইউনূস এই বিষয়টিকে “মেগাফোন কূটনীতি” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।’
বীণা সিক্রি বলেন, ‘ভারত (বাংলাদেশের) অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কথা বলার জন্য এবং বাংলাদেশ ও ভারতের সব উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করার জন্য তার প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিয়েছে।’ সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, সমস্যাগুলো দীর্ঘ আলোচনা সাপেক্ষ কিসের ভিত্তিতে (ড. ইউনূস) দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ‘তলানিতে’ বলে উল্লেখ করেছেন তা স্পষ্ট নয়।
তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বিবিসিকে বলেছেন, ‘ভারতীয় নেতারা কি কোনো গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন না? ড. ইউনূসকে যদি নির্দিষ্ট বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি অবশ্যই তাঁর মতামত প্রকাশ করতে পারেন। আপনি যদি সমালোচনা করতে চান, তবে যেকোনো বিষয়েই সমালোচনা করতে পারেন।’
কয়েক সপ্তাহ আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ড. ইউনূস টেলিফোনে কথা বললেও এখন পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ের কোনো বৈঠক হয়নি। তবে ভারতে একটি বিষয়ে সবাই একমত যে যতক্ষণ না অন্য দেশ তাঁকে যাওয়ার অনুমতি দেয়, ততক্ষণ শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করতে পারবেন।
তবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নবনিযুক্ত প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিচার করার জন্য তাঁরা শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু তাঁকে বাংলাদেশে গণহত্যার প্রধান আসামি করা হয়েছে, আমরা তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য আইনগতভাবে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।’
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করলেও হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করার সম্ভাবনা কম। এ বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস বলেন, ‘তিনি এখানে ভারতের অতিথি হিসেবে অবস্থান করছেন। আমরা যদি আমাদের দীর্ঘদিনের বন্ধুর প্রতি মৌলিক সৌজন্য প্রকাশ না করি, তাহলে ভবিষ্যতে কেন কেউ আমাদের বন্ধু হিসেবে গুরুত্ব সহকারে নেবে?’
বাংলাদেশে কেবল আওয়ামী লীগকে প্রাধান্য দিয়ে অন্য বিরোধী দলগুলোকে আমলে না নেওয়ায় ভারতের সমালোচনা করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, কেবল শেখ হাসিনার নেতৃত্বই বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে—নয়াদিল্লিকে এই ন্যারেটিভ বাদ দিতে হবে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আগামীর পথ হলো ভারতের এই ন্যারেটিভ থেকে বেরিয়ে আসা। ন্যারেটিভটি হলো—সবাই ইসলামপন্থী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ইসলামপন্থী এবং বাকি সবাই ইসলামপন্থী এবং এই দেশ আফগানিস্তানে পরিণত হবে। আর শেখ হাসিনার হাতে বাংলাদেশ নিরাপদ। ভারত এই আখ্যানে বিমোহিত। ভারতকে এই আখ্যান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও আরেকটি প্রতিবেশী—এটিও ভারতকে মনে রাখতে হবে।’
তবে ভারতীয় বিশ্লেষকেরা ড. ইউনূসের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন। যেমন বীণা সিক্রি বলেন, ‘আমি এই বক্তব্যের সঙ্গে একেবারেই একমত নই। বাংলাদেশে আমাদের হাইকমিশনাররা কোনো ধরনের বৈষম্য না করেই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলেন।’
২০০১—২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন বিএনপির জোট সরকারের সময় ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি ঘটে। বিশেষ করে, দিল্লি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর বিদ্রোহীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য ঢাকাকে অভিযুক্ত করে। কিন্তু বিএনপি তা বরাবরই অস্বীকার করেছে।
তবে বাংলাদেশের অনেকেই উল্লেখ করেছেন, ভারতের উচিত বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ করা। কারণ, দলটি যখনই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক না কেন—জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘৫ আগস্টের (হাসিনার সরকার পতনের) পর থেকে কোনো ভারতীয় কর্মকর্তা আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। কেন করেননি, তার কারণ আমি জানি না।’ পক্ষান্তরে, বিএনপির সঙ্গে ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূত ও ইউরোপীয় দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতেরা নিয়মিত বৈঠক করছেন।
হাসিনার পতনের পরের দিনগুলোতে বাংলাদেশে নিরাপত্তার অভাব ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হিন্দুদের ওপর হামলার খবরে ভারত বেশ কয়েকবার উদ্বেগও প্রকাশ করেছে। গত কয়েক সপ্তাহে বেশ কয়েকটি মাজারও কট্টর ইসলামপন্থীরা ভাঙচুর করেছে। সিরাজগঞ্জের আলী খাজা আলী পাগলা পীরের মাজারের তত্ত্বাবধায়কের স্ত্রী তামান্না আক্তার বলেন, ‘কয়েক দিন আগে একদল লোক এসে আমার শ্বশুরের সমাধি ভাঙচুর করে এবং কোনো অনৈসলামিক অনুষ্ঠান না করার জন্য আমাদের সতর্ক করে।’
অন্তর্বর্তী সরকারে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসাইন বলেছেন, যারা ধর্মীয় স্থাপনাকে টার্গেট করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কট্টর ইসলামপন্থীরা যদি একটি দৃঢ় উপস্থিতি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে বাংলাদেশে—তা আকারে যত ছোটই হোক না কেন—তা দিল্লির জন্য বিপদের ঘণ্টা বাজিয়ে দেবে।
গত কয়েক সপ্তাহে একজন দণ্ডিত জঙ্গিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। নয়জন সন্দেহভাজন কট্টরপন্থী গত মাসে জেলে আগুনের ঘটনার সময় পালিয়ে গিয়েছিলেন। পরে তাদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের—যেটিকে ২০১৬ সালে হাসিনার সরকার সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল—প্রধান জসিমুদ্দিন রহমানীও গত মাসে কারাগার থেকে বেরিয়ে এসেছেন। ২০১৫ সালে এক ব্লগার হত্যার অভিযোগে তাঁকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। অন্যান্য বিচারাধীন মামলার কারণে কারাবন্দিত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তিনি কারাগারে ছিলেন।
এ বিষয়ে রিভা গাঙ্গুলি দাস বলেন, ‘গত মাসে বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে মুক্ত দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন ভারতের কাছে পরিচিত।’ সাবেক কূটনীতিক এটিকে একটি ‘গুরুতর বিষয়’ বলে অভিহিত করেন।
অনুবাদ করেছেন: আব্দুর রহমান

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
২০ ঘণ্টা আগে
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
১ দিন আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
১ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
উশাকভ মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের সম্পূর্ণ এলাকার ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ দাবির কথাই বলেছিলেন। পুতিন ইউক্রেনে হাজার হাজার সৈন্য পাঠানোর প্রায় ৪ বছর পরও এবং দোনেৎস্কে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহের এক দশকেরও বেশি সময় পর অঞ্চলটির কিছু অংশ এখনো ইউক্রেনের হাতে আছে।
প্রায় সব দেশই দোনেৎস্ককে ইউক্রেনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু এটি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের চারটি অঞ্চলের মধ্যে একটি, যা মস্কো ২০২২ সালে একটি গণভোটের পর সংযুক্ত করার কথা ঘোষণা করে। কিয়েভ ও পশ্চিমা দেশগুলো সেই গণভোটকে ‘প্রহসন’ বলে বাতিল করে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফক্স নিউজকে বলেছিলেন, যুদ্ধটি এখন দোনেৎস্কের সেই ২০ শতাংশ বা ৫ হাজার বর্গকিলোমিটারের এলাকা নিয়ে, যা রাশিয়া নিয়ন্ত্রণ করে না কিন্তু চায়।
পুতিন ২০২২ সালে ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর সময় বলেছিলেন, তাঁর লক্ষ্য হলো ‘গত আট বছর ধরে যারা ভয়ভীতি ও গণহত্যার শিকার হয়েছেন...সেই মানুষগুলোকে রক্ষা করা।’ ইউক্রেন এবং তার মিত্ররা বলেছিল, পুতিনের এই দাবি ঔপনিবেশিক ধাঁচের এবং এলাকা দখলের জন্য একটি মিথ্যা অজুহাত মাত্র।
পুতিনের এই দাবি মূলত দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ের দিকে ইঙ্গিত করে, যারা ২০১৪ সালে ইউক্রেনীয় সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিছু এলাকা দখল করেছিল। পূর্ব ইউক্রেনে এর পরের সংঘর্ষে উভয় পক্ষই শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছিল। মস্কো এই অঞ্চলের বিশাল রুশভাষী জনসংখ্যাকে উদ্ধৃত করে বলেছিল যে,২০২২ সালে হস্তক্ষেপ করা তাদের নৈতিক কর্তব্য।
কিয়েভ বলেছিল, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় শক্তি দিয়ে জবাব দেওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় ছিল না এবং তারাও বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীর বিরুদ্ধে শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের অভিযোগ এনেছিল। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সালের শুরু পর্যন্ত ইউক্রেনীয় সরকারি বাহিনী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে সংঘাতে উভয় পক্ষে ৩ হাজার ১০৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৯ হাজার বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছিলেন।
দোনেৎস্কের বাকি যে অংশটি রাশিয়া চায়, তার মধ্যে রয়েছে স্লোভিয়ানস্ক এবং ক্রামাতোরস্ক—দুটি ‘দুর্গনগরী’ যা ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এই শহরগুলো ইউক্রেনের বাকি অঞ্চল রক্ষার জন্য কিয়েভের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দোনেৎস্কের পশ্চিমের ভূমি অনেকটাই সমতল এবং বিশাল খোলা মাঠ; যা রাশিয়াকে দোনেৎস্কের বাইরে অগ্রসর হতে এবং দিনিপ্রো নদীর পূর্ব তীর পর্যন্ত এলাকা দখল করার পথ সহজ করে দেবে।
শহরগুলো পরিখা, ট্যাংক-বিধ্বংসী বাধা, বাংকার এবং মাইনক্ষেত্রসহ অত্যন্ত সুরক্ষিত প্রতিরক্ষা লাইনের অংশ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, গণভোট ছাড়া দোনেৎস্কের বাকি অংশ রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়া অবৈধ হবে এবং তা ভবিষ্যতে ইউক্রেনের গভীরে আক্রমণের জন্য রাশিয়াকে একটি পথ খুলে দেবে।
কিয়েভের আশঙ্কা, যদি তারা দোনেৎস্কের বাকি অংশ ছেড়ে দেয়, তবে রাশিয়া আবার অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হবে এবং একসময় দোনেৎস্ক ব্যবহার করে পশ্চিম দিকে আক্রমণ চালাবে।
উভয় পক্ষই দোনেৎস্ককে কেন্দ্র করে যুদ্ধে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে এবং প্রচুর অর্থ ও সরঞ্জাম ব্যয় করেছে। এর মধ্যে বাখমুত শহরের লড়াইও রয়েছে। যেখানে রাশিয়া হাজার হাজার দণ্ডিত অপরাধীকে ভাড়াটে সৈন্যে পরিণত করে রণক্ষেত্রে নামিয়েছিল। এ কারণে, দোনেৎস্ক উভয় দেশের জনমানসে আরও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ফলে কারও পক্ষে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করা কঠিন।
ইউক্রেন চায় না যে, রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে জয় করতে ব্যর্থ হওয়া ভূখণ্ডকে উপহার হিসেবে পাক এবং জেলেনস্কি বলেছেন, যে যুদ্ধ রাশিয়া শুরু করেছে, তার জন্য তাদের পুরস্কৃত করা উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার অক্টোবর মাসে বলেছিল, রাশিয়ার অগ্রগতির হার দেখে মনে হয় না যে তারা খুব শিগগিরই দোনেৎস্কের বাকি অংশ দখল করতে চলেছে। তবে ‘রাশিয়ার অগ্রগতির একটি অপরিবর্তনীয় হার ধরে নিলে’ তারা ২০২৭ সালের আগস্টের মধ্যে তা নিতে পারে।
রাশিয়ার কমান্ডাররা অবশ্য আরও বেশি আশাবাদী। জেনারেল স্টাফের প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ রোববার পুতিনকে বলেছেন, মস্কোর বাহিনী পুরো ফ্রন্ট লাইন বরাবর অগ্রসর হচ্ছে এবং দনবাসের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য কাজ করছে।
দোনেৎস্ক বন্দর, রেলপথ এবং অন্যান্য ভারী শিল্পের কেন্দ্র। এটি একসময় ইউক্রেনের কয়লা, পরিশোধিত ইস্পাত, কোক, ঢালাই লোহা এবং ইস্পাত উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি সরবরাহ করত, তবে যুদ্ধের কারণে অনেক খনি ও কারখানা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া, দোনেৎস্কে বিরল মৃত্তিকা, টাইটানিয়াম এবং জিরকোনিয়াম রয়েছে—যা এটিকে নিয়ন্ত্রণকারী পক্ষের জন্য আয়ের উৎস।
দোনেৎস্কের ভাগ্য পুতিন এবং জেলেনস্কি উভয়ের ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারকে প্রভাবিত করতে পারে। পুতিন নিজেকে জাতিগত রুশদের রক্ষক হিসেবে তুলে ধরেছেন, তারা যেখানেই থাকুক না কেন। পুরো দোনেৎস্ককে সুরক্ষিত করা এই বক্তব্যের মূল কেন্দ্রবিন্দু। জেলেনস্কি ২০১৯ সালে পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধ অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। ২০২২ সাল থেকে তিনি অনেক বড়, বৈরী প্রতিবেশীর মুখে অস্ত্র এবং সংখ্যায় কম ইউক্রেনের এক দৃঢ় রক্ষক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন।
লড়াই না করে দোনেৎস্ক ছেড়ে দেওয়া—যেখানে অন্তত আড়াই লাখ ইউক্রেনীয় বাস করে—ইউক্রেনীয়দের কাছে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখা হতে পারে, যাদের অনেকেই যুদ্ধক্ষেত্রে স্বজন হারিয়েছেন। কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজির সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুসারে, ইউক্রেনীয়দের একটি সংকীর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এখনো আঞ্চলিক ছাড়ের বিরোধিতা করে।
জেলেনস্কিসহ ইউক্রেনের কর্মকর্তারা যেকোনো শান্তি চুক্তির অধীনে কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূমি ছাড়ার সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। জেলেনস্কি বলেন, তাঁর ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার কোনো ম্যান্ডেট নেই এবং রাষ্ট্রের ভূমি ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো কেনা-বেচা করা যায় না। ইউক্রেনের সংবিধান অনুসারে, আঞ্চলিক পরিবর্তন অবশ্যই একটি গণভোটের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে, যা ইউক্রেনের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ, অন্তত ৩০ লাখ ইউক্রেনীয় ভোটারের স্বাক্ষর থাকলে আয়োজন করা যেতে পারে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই গণভোটের বিষয়টির সমালোচনা করেছেন এবং তিনি বলেছিলেন, ‘কিছু ভূমি অদল-বদল হবে।’ এখন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা মূলত এই দোনেৎস্কের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে যাবে সেটাই নিয়েই থমকে আছে।
রয়টার্স থেকে পরিমার্জিত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
উশাকভ মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের সম্পূর্ণ এলাকার ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ দাবির কথাই বলেছিলেন। পুতিন ইউক্রেনে হাজার হাজার সৈন্য পাঠানোর প্রায় ৪ বছর পরও এবং দোনেৎস্কে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহের এক দশকেরও বেশি সময় পর অঞ্চলটির কিছু অংশ এখনো ইউক্রেনের হাতে আছে।
প্রায় সব দেশই দোনেৎস্ককে ইউক্রেনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু এটি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের চারটি অঞ্চলের মধ্যে একটি, যা মস্কো ২০২২ সালে একটি গণভোটের পর সংযুক্ত করার কথা ঘোষণা করে। কিয়েভ ও পশ্চিমা দেশগুলো সেই গণভোটকে ‘প্রহসন’ বলে বাতিল করে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফক্স নিউজকে বলেছিলেন, যুদ্ধটি এখন দোনেৎস্কের সেই ২০ শতাংশ বা ৫ হাজার বর্গকিলোমিটারের এলাকা নিয়ে, যা রাশিয়া নিয়ন্ত্রণ করে না কিন্তু চায়।
পুতিন ২০২২ সালে ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর সময় বলেছিলেন, তাঁর লক্ষ্য হলো ‘গত আট বছর ধরে যারা ভয়ভীতি ও গণহত্যার শিকার হয়েছেন...সেই মানুষগুলোকে রক্ষা করা।’ ইউক্রেন এবং তার মিত্ররা বলেছিল, পুতিনের এই দাবি ঔপনিবেশিক ধাঁচের এবং এলাকা দখলের জন্য একটি মিথ্যা অজুহাত মাত্র।
পুতিনের এই দাবি মূলত দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ের দিকে ইঙ্গিত করে, যারা ২০১৪ সালে ইউক্রেনীয় সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিছু এলাকা দখল করেছিল। পূর্ব ইউক্রেনে এর পরের সংঘর্ষে উভয় পক্ষই শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছিল। মস্কো এই অঞ্চলের বিশাল রুশভাষী জনসংখ্যাকে উদ্ধৃত করে বলেছিল যে,২০২২ সালে হস্তক্ষেপ করা তাদের নৈতিক কর্তব্য।
কিয়েভ বলেছিল, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় শক্তি দিয়ে জবাব দেওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় ছিল না এবং তারাও বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীর বিরুদ্ধে শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের অভিযোগ এনেছিল। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সালের শুরু পর্যন্ত ইউক্রেনীয় সরকারি বাহিনী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে সংঘাতে উভয় পক্ষে ৩ হাজার ১০৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৯ হাজার বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছিলেন।
দোনেৎস্কের বাকি যে অংশটি রাশিয়া চায়, তার মধ্যে রয়েছে স্লোভিয়ানস্ক এবং ক্রামাতোরস্ক—দুটি ‘দুর্গনগরী’ যা ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এই শহরগুলো ইউক্রেনের বাকি অঞ্চল রক্ষার জন্য কিয়েভের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দোনেৎস্কের পশ্চিমের ভূমি অনেকটাই সমতল এবং বিশাল খোলা মাঠ; যা রাশিয়াকে দোনেৎস্কের বাইরে অগ্রসর হতে এবং দিনিপ্রো নদীর পূর্ব তীর পর্যন্ত এলাকা দখল করার পথ সহজ করে দেবে।
শহরগুলো পরিখা, ট্যাংক-বিধ্বংসী বাধা, বাংকার এবং মাইনক্ষেত্রসহ অত্যন্ত সুরক্ষিত প্রতিরক্ষা লাইনের অংশ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, গণভোট ছাড়া দোনেৎস্কের বাকি অংশ রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়া অবৈধ হবে এবং তা ভবিষ্যতে ইউক্রেনের গভীরে আক্রমণের জন্য রাশিয়াকে একটি পথ খুলে দেবে।
কিয়েভের আশঙ্কা, যদি তারা দোনেৎস্কের বাকি অংশ ছেড়ে দেয়, তবে রাশিয়া আবার অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হবে এবং একসময় দোনেৎস্ক ব্যবহার করে পশ্চিম দিকে আক্রমণ চালাবে।
উভয় পক্ষই দোনেৎস্ককে কেন্দ্র করে যুদ্ধে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে এবং প্রচুর অর্থ ও সরঞ্জাম ব্যয় করেছে। এর মধ্যে বাখমুত শহরের লড়াইও রয়েছে। যেখানে রাশিয়া হাজার হাজার দণ্ডিত অপরাধীকে ভাড়াটে সৈন্যে পরিণত করে রণক্ষেত্রে নামিয়েছিল। এ কারণে, দোনেৎস্ক উভয় দেশের জনমানসে আরও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ফলে কারও পক্ষে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করা কঠিন।
ইউক্রেন চায় না যে, রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে জয় করতে ব্যর্থ হওয়া ভূখণ্ডকে উপহার হিসেবে পাক এবং জেলেনস্কি বলেছেন, যে যুদ্ধ রাশিয়া শুরু করেছে, তার জন্য তাদের পুরস্কৃত করা উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার অক্টোবর মাসে বলেছিল, রাশিয়ার অগ্রগতির হার দেখে মনে হয় না যে তারা খুব শিগগিরই দোনেৎস্কের বাকি অংশ দখল করতে চলেছে। তবে ‘রাশিয়ার অগ্রগতির একটি অপরিবর্তনীয় হার ধরে নিলে’ তারা ২০২৭ সালের আগস্টের মধ্যে তা নিতে পারে।
রাশিয়ার কমান্ডাররা অবশ্য আরও বেশি আশাবাদী। জেনারেল স্টাফের প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ রোববার পুতিনকে বলেছেন, মস্কোর বাহিনী পুরো ফ্রন্ট লাইন বরাবর অগ্রসর হচ্ছে এবং দনবাসের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য কাজ করছে।
দোনেৎস্ক বন্দর, রেলপথ এবং অন্যান্য ভারী শিল্পের কেন্দ্র। এটি একসময় ইউক্রেনের কয়লা, পরিশোধিত ইস্পাত, কোক, ঢালাই লোহা এবং ইস্পাত উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি সরবরাহ করত, তবে যুদ্ধের কারণে অনেক খনি ও কারখানা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া, দোনেৎস্কে বিরল মৃত্তিকা, টাইটানিয়াম এবং জিরকোনিয়াম রয়েছে—যা এটিকে নিয়ন্ত্রণকারী পক্ষের জন্য আয়ের উৎস।
দোনেৎস্কের ভাগ্য পুতিন এবং জেলেনস্কি উভয়ের ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারকে প্রভাবিত করতে পারে। পুতিন নিজেকে জাতিগত রুশদের রক্ষক হিসেবে তুলে ধরেছেন, তারা যেখানেই থাকুক না কেন। পুরো দোনেৎস্ককে সুরক্ষিত করা এই বক্তব্যের মূল কেন্দ্রবিন্দু। জেলেনস্কি ২০১৯ সালে পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধ অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। ২০২২ সাল থেকে তিনি অনেক বড়, বৈরী প্রতিবেশীর মুখে অস্ত্র এবং সংখ্যায় কম ইউক্রেনের এক দৃঢ় রক্ষক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন।
লড়াই না করে দোনেৎস্ক ছেড়ে দেওয়া—যেখানে অন্তত আড়াই লাখ ইউক্রেনীয় বাস করে—ইউক্রেনীয়দের কাছে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখা হতে পারে, যাদের অনেকেই যুদ্ধক্ষেত্রে স্বজন হারিয়েছেন। কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজির সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুসারে, ইউক্রেনীয়দের একটি সংকীর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এখনো আঞ্চলিক ছাড়ের বিরোধিতা করে।
জেলেনস্কিসহ ইউক্রেনের কর্মকর্তারা যেকোনো শান্তি চুক্তির অধীনে কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূমি ছাড়ার সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। জেলেনস্কি বলেন, তাঁর ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার কোনো ম্যান্ডেট নেই এবং রাষ্ট্রের ভূমি ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো কেনা-বেচা করা যায় না। ইউক্রেনের সংবিধান অনুসারে, আঞ্চলিক পরিবর্তন অবশ্যই একটি গণভোটের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে, যা ইউক্রেনের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ, অন্তত ৩০ লাখ ইউক্রেনীয় ভোটারের স্বাক্ষর থাকলে আয়োজন করা যেতে পারে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই গণভোটের বিষয়টির সমালোচনা করেছেন এবং তিনি বলেছিলেন, ‘কিছু ভূমি অদল-বদল হবে।’ এখন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা মূলত এই দোনেৎস্কের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে যাবে সেটাই নিয়েই থমকে আছে।
রয়টার্স থেকে পরিমার্জিত

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের সঙ্গে বিতর্কিত দ্বিপক্ষীয় ইস্যু গণমাধ্যমে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করছেন বলে বিস্ময় প্রকাশ করেছে প্রতিবেশী দেশটির কূটনীতিক মহল। বিষয়টিকে ‘মেগাফোন কূটনীতি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন একজন বিশ্লেষক।
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
১ দিন আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
১ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
সম্প্রতি টেসলার মালিক ইলন মাস্ক গত নভেম্বরে এমন এক পে-অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, যা তাঁকে একজন ট্রিলিয়ন ডলারের মালিকে পরিণত করতে পারে। তিনি ইতিমধ্যেই বিশ্বের শীর্ষ ধনী। যদি তিনি প্রস্তাবিত পূর্ণ প্যাকেজটি পান, তাহলে তিনি বিশ্বের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হবেন। ফোর্বসের হিসেবে বর্তমানে বিশ্বের ৩ হাজার ২৮ জন বিলিয়নিয়ার আছেন। তাঁদের মোট সম্পদ প্রায় ১৬.১ ট্রিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে পৃথিবীতে এখনো প্রায় ৮৩ কোটি ১০ লাখ মানুষ দৈনিক তিন ডলারের নিচে আয় করে চরম দারিদ্র্যে দিন কাটান।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের এই বিপুল সম্পদ বৈষম্য শুধু অর্থনীতিকে নয়, রাজনীতি, মিডিয়া ও চিন্তাকেও প্রভাবিত করে। অনেকেই মনে করেন, বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ ও ক্ষমতা বিশ্বব্যবস্থাকে ‘অতি ধনীদের স্বার্থে’ পুনর্গঠন করছে। আবার অন্য একটি মত বলছে, বিলিয়নিয়ারেরা না থাকলে উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও অগ্রগতি থমকে যাবে। কারণ বৃহৎ বিনিয়োগই গড়ে তোলে নতুন সমাধান।
উদ্ভাবন কি থেমে যাবে
অ্যাডাম স্মিথ ইনস্টিটিউটের ম্যাক্সওয়েল মার্লোর মতে, বিলিয়নিয়ারদের বিলোপ করা হলে পশ্চিমা অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে। তাঁর দাবি, অধিকাংশ বিলিয়নিয়ার তাঁদের সম্পদের মালিক হয়েছেন সমাজের চাহিদামতো পণ্য ও প্রযুক্তি তৈরি করে। তাঁদের সম্পদ মূলত কোম্পানির শেয়ার, মেধাস্বত্ব অথবা সম্পত্তি—যা দিনে দিনে ওঠানামা করে। তাঁর মতে, এই ধনী ব্যক্তিদের প্রণোদনাই উদ্ভাবনে গতি আনে; তা না থাকলে উন্নয়ন থেমে যাবে।
যদি ন্যায্যভাবে সম্পদ বণ্টিত হতো
গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ট্যাক্স জাস্টিসের ডেরেজে আলেমায়েহুর মতে, শুধু বিলিয়নিয়ার কর আরোপ নয়—প্রশ্ন হচ্ছে, সেই কর কোথায় যাবে। দক্ষিণ বিশ্বের শ্রম ও সম্পদ থেকেই যে বিপুল সম্পদ তৈরি হয়, তাই তার ন্যায্য অংশ দক্ষিণেই ফিরে আসা উচিত। তিনি বলেন, বৈষম্য কমাতে শুধু অর্থ হস্তান্তর নয়, বৈশ্বিক আর্থিক কাঠামো পুনর্গঠন জরুরি; নইলে বৈষম্য আরও গভীর হবে।
বিধিনিষেধ কি বদলাতে হবে
ডেনিসন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ফাদেল কাবুব বলেন, বিলিয়নিয়ারেরা আসলে ব্যর্থ নীতির ফল। সিস্টেম যেভাবে সাজানো, তাতে সম্পদ একদিকে কেন্দ্রীভূত হওয়াই স্বাভাবিক। তাঁর মতে, বিলিয়নিয়ার শ্রেণিকে বিলোপ করতে হলে আধুনিক অ্যান্টি ট্রাস্ট ও কঠোর বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
মিডিয়ার ওপর প্রভাব কমবে
গোল্ডস্মিথস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেস ফ্রিডম্যান মনে করেন, বিলিয়নিয়ারেরা পুরো মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কিনে ফেলতে সক্ষম হওয়ায় তথ্যপ্রবাহ তাঁদের স্বার্থেই নিয়ন্ত্রিত হয়। যেমন—বেজোস বা ইলন মাস্কের গণমাধ্যম মালিকানা এই অঙ্গনের স্বাধীনতাকে দীর্ঘমেয়াদে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাই বিলিয়নিয়ার প্রভাব সীমিত হলে তথ্যের উৎসও আরও স্বাধীন হতে পারে।
চরম সম্পদ কি সত্যিই বিলোপ করা সম্ভব
বিশ্ব ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাবের লুকাস শ্যানসেলের মতে, ইতিহাসে এর নজির আছে। উদাহরণস্বরূপ—রকেফেলারের একচেটিয়া সাম্রাজ্য ভেঙে দেওয়া, কিংবা রুজভেল্টের সময় সর্বোচ্চ করহার ৯৪ শতাংশে উন্নীত করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পানামা পেপারসের মতো ফাঁস যেমন দুর্দান্ত স্বচ্ছতা তৈরি করেছে, তেমনি তা পরিবর্তনের সুযোগও তৈরি করছে। তিনি মনে করেন, ধনীদের ওপর কর আরোপের মতো ধারণা এখন আর ‘যদি’ নয়, বরং ‘কখন’ করা হবে—এ প্রশ্নে এসে দাঁড়িয়েছে।
আল-জাজিরা অবলম্বনে

বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
সম্প্রতি টেসলার মালিক ইলন মাস্ক গত নভেম্বরে এমন এক পে-অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, যা তাঁকে একজন ট্রিলিয়ন ডলারের মালিকে পরিণত করতে পারে। তিনি ইতিমধ্যেই বিশ্বের শীর্ষ ধনী। যদি তিনি প্রস্তাবিত পূর্ণ প্যাকেজটি পান, তাহলে তিনি বিশ্বের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হবেন। ফোর্বসের হিসেবে বর্তমানে বিশ্বের ৩ হাজার ২৮ জন বিলিয়নিয়ার আছেন। তাঁদের মোট সম্পদ প্রায় ১৬.১ ট্রিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে পৃথিবীতে এখনো প্রায় ৮৩ কোটি ১০ লাখ মানুষ দৈনিক তিন ডলারের নিচে আয় করে চরম দারিদ্র্যে দিন কাটান।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের এই বিপুল সম্পদ বৈষম্য শুধু অর্থনীতিকে নয়, রাজনীতি, মিডিয়া ও চিন্তাকেও প্রভাবিত করে। অনেকেই মনে করেন, বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ ও ক্ষমতা বিশ্বব্যবস্থাকে ‘অতি ধনীদের স্বার্থে’ পুনর্গঠন করছে। আবার অন্য একটি মত বলছে, বিলিয়নিয়ারেরা না থাকলে উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও অগ্রগতি থমকে যাবে। কারণ বৃহৎ বিনিয়োগই গড়ে তোলে নতুন সমাধান।
উদ্ভাবন কি থেমে যাবে
অ্যাডাম স্মিথ ইনস্টিটিউটের ম্যাক্সওয়েল মার্লোর মতে, বিলিয়নিয়ারদের বিলোপ করা হলে পশ্চিমা অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে। তাঁর দাবি, অধিকাংশ বিলিয়নিয়ার তাঁদের সম্পদের মালিক হয়েছেন সমাজের চাহিদামতো পণ্য ও প্রযুক্তি তৈরি করে। তাঁদের সম্পদ মূলত কোম্পানির শেয়ার, মেধাস্বত্ব অথবা সম্পত্তি—যা দিনে দিনে ওঠানামা করে। তাঁর মতে, এই ধনী ব্যক্তিদের প্রণোদনাই উদ্ভাবনে গতি আনে; তা না থাকলে উন্নয়ন থেমে যাবে।
যদি ন্যায্যভাবে সম্পদ বণ্টিত হতো
গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ট্যাক্স জাস্টিসের ডেরেজে আলেমায়েহুর মতে, শুধু বিলিয়নিয়ার কর আরোপ নয়—প্রশ্ন হচ্ছে, সেই কর কোথায় যাবে। দক্ষিণ বিশ্বের শ্রম ও সম্পদ থেকেই যে বিপুল সম্পদ তৈরি হয়, তাই তার ন্যায্য অংশ দক্ষিণেই ফিরে আসা উচিত। তিনি বলেন, বৈষম্য কমাতে শুধু অর্থ হস্তান্তর নয়, বৈশ্বিক আর্থিক কাঠামো পুনর্গঠন জরুরি; নইলে বৈষম্য আরও গভীর হবে।
বিধিনিষেধ কি বদলাতে হবে
ডেনিসন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ফাদেল কাবুব বলেন, বিলিয়নিয়ারেরা আসলে ব্যর্থ নীতির ফল। সিস্টেম যেভাবে সাজানো, তাতে সম্পদ একদিকে কেন্দ্রীভূত হওয়াই স্বাভাবিক। তাঁর মতে, বিলিয়নিয়ার শ্রেণিকে বিলোপ করতে হলে আধুনিক অ্যান্টি ট্রাস্ট ও কঠোর বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
মিডিয়ার ওপর প্রভাব কমবে
গোল্ডস্মিথস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেস ফ্রিডম্যান মনে করেন, বিলিয়নিয়ারেরা পুরো মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কিনে ফেলতে সক্ষম হওয়ায় তথ্যপ্রবাহ তাঁদের স্বার্থেই নিয়ন্ত্রিত হয়। যেমন—বেজোস বা ইলন মাস্কের গণমাধ্যম মালিকানা এই অঙ্গনের স্বাধীনতাকে দীর্ঘমেয়াদে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাই বিলিয়নিয়ার প্রভাব সীমিত হলে তথ্যের উৎসও আরও স্বাধীন হতে পারে।
চরম সম্পদ কি সত্যিই বিলোপ করা সম্ভব
বিশ্ব ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাবের লুকাস শ্যানসেলের মতে, ইতিহাসে এর নজির আছে। উদাহরণস্বরূপ—রকেফেলারের একচেটিয়া সাম্রাজ্য ভেঙে দেওয়া, কিংবা রুজভেল্টের সময় সর্বোচ্চ করহার ৯৪ শতাংশে উন্নীত করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পানামা পেপারসের মতো ফাঁস যেমন দুর্দান্ত স্বচ্ছতা তৈরি করেছে, তেমনি তা পরিবর্তনের সুযোগও তৈরি করছে। তিনি মনে করেন, ধনীদের ওপর কর আরোপের মতো ধারণা এখন আর ‘যদি’ নয়, বরং ‘কখন’ করা হবে—এ প্রশ্নে এসে দাঁড়িয়েছে।
আল-জাজিরা অবলম্বনে

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের সঙ্গে বিতর্কিত দ্বিপক্ষীয় ইস্যু গণমাধ্যমে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করছেন বলে বিস্ময় প্রকাশ করেছে প্রতিবেশী দেশটির কূটনীতিক মহল। বিষয়টিকে ‘মেগাফোন কূটনীতি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন একজন বিশ্লেষক।
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
২০ ঘণ্টা আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
১ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে। এই পরিচয়টিকে তাকাইচি নিজেও গর্বের সঙ্গে গ্রহণ করেন। মার্গারেট থ্যাচারের অনুরাগী এই রক্ষণশীল নেতা ঘরোয়া অর্থনীতি থেকে শুরু করে পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা—সব ক্ষেত্রেই শক্ত অবস্থানের বার্তা দিয়েছেন।
তাকাইচির রাজনৈতিক পরিচয়ের মূল কেন্দ্রে রয়েছে ‘নিপ্পন কেইগি’ নামে জাপানের সবচেয়ে প্রভাবশালী জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী। এই সংগঠন জাপানের সংবিধানের যুদ্ধবিরোধী ৯ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠন এবং ঐতিহ্যবাদী মূল্যবোধে প্রত্যাবর্তনের পক্ষে। পূর্বসুরী শিনজো আবের মতো তাই তাকাইচিও জাপানকে স্বাভাবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান, যেখানে গোয়েন্দা সংস্থা, আধুনিক সেনাবাহিনী এবং কঠোর নিরাপত্তা আইন থাকবে।
অর্থনীতির ক্ষেত্রে তিনি জাতীয় শিল্পকে শক্তিশালী করা, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানো এবং রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বৃদ্ধির পক্ষে। একই সঙ্গে কঠোর অভিবাসন নীতি ও রক্ষণশীল মূল্যবোধের প্রচারও তাঁকে ডানপন্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় করেছে। তবে এই অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এখন আন্তর্জাতিক উত্তেজনার সঙ্গে গেঁথে গেছে—বিশেষ করে, তাইওয়ান ইস্যুতে তাঁর অবস্থানের কারণে।
তাকাইচি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চীনের প্রতি কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছেন। বেইজিংকে তিনি কৌশলগত হুমকি হিসেবে দেখেন এবং প্রতিরোধমূলক সামরিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপের পক্ষে জোর দিচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে অক্টোবরের শেষ দিকে তাঁর ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাৎ দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন সোনালি যুগে প্রবেশ করানোর আভাস দেয়। জাপান প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির কমপক্ষে ২ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আর যুক্তরাষ্ট্র বিরল ধাতুর সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ অর্থনৈতিক সহায়তার ঘোষণা দেয়।
তবে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো তাইওয়ানের সঙ্গে তাকাইচির ঘনিষ্ঠতা। তিনি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, যা চীনের কাছে স্পষ্ট উত্তেজনাকর পদক্ষেপ হিসেবে ধরা পড়েছে। আরও বিতর্ক সৃষ্টি হয় যখন তাকাইচি প্রকাশ্যে বলেন, তাইওয়ানের নিরাপত্তা জাপানের নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এমনকি তাইওয়ানে চীনা হামলার ক্ষেত্রে জাপানের আত্মরক্ষা বাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
এ ক্ষেত্রে চীনের প্রতিক্রিয়াও ছিল কঠোর ও দ্রুত। তারা তাকাইচির বিরুদ্ধে ‘পুরোনো সামরিকতাবাদকে পুনরুজ্জীবিত করার’ অভিযোগ তোলে, রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এবং জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাঠায়। পাশাপাশি সামুদ্রিক এলাকায় কোস্টগার্ডের টহল বাড়ায় চীন, জাপানি সামুদ্রিক পণ্যে সীমাবদ্ধতা আরোপের হুমকি দেয় এবং উত্তেজনাপূর্ণ নানা বিবৃতি দেয়।
এদিকে জাপানও পশ্চিম সীমান্তের ইয়োনাগুনি দ্বীপে বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও একই দ্বীপে সামরিক অবকাঠামো শক্তিশালী করছে। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করছে।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি তাকাইচিকে উত্তেজনা না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ আগামী এপ্রিলে তিনি বেইজিং সফর করতে চান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাকাইচির নেতৃত্বে জাপান নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রবেশ করেছে। তাঁর দৃঢ় অবস্থান দেশকে হয় পুনরুত্থানের পথে নেবে—নয়তো চীন–তাইওয়ান উত্তেজনার কেন্দ্রে ঠেলে দেবে। ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তিনি কোন পথে হাঁটবেন তার ওপর।

জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে। এই পরিচয়টিকে তাকাইচি নিজেও গর্বের সঙ্গে গ্রহণ করেন। মার্গারেট থ্যাচারের অনুরাগী এই রক্ষণশীল নেতা ঘরোয়া অর্থনীতি থেকে শুরু করে পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা—সব ক্ষেত্রেই শক্ত অবস্থানের বার্তা দিয়েছেন।
তাকাইচির রাজনৈতিক পরিচয়ের মূল কেন্দ্রে রয়েছে ‘নিপ্পন কেইগি’ নামে জাপানের সবচেয়ে প্রভাবশালী জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী। এই সংগঠন জাপানের সংবিধানের যুদ্ধবিরোধী ৯ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠন এবং ঐতিহ্যবাদী মূল্যবোধে প্রত্যাবর্তনের পক্ষে। পূর্বসুরী শিনজো আবের মতো তাই তাকাইচিও জাপানকে স্বাভাবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান, যেখানে গোয়েন্দা সংস্থা, আধুনিক সেনাবাহিনী এবং কঠোর নিরাপত্তা আইন থাকবে।
অর্থনীতির ক্ষেত্রে তিনি জাতীয় শিল্পকে শক্তিশালী করা, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানো এবং রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বৃদ্ধির পক্ষে। একই সঙ্গে কঠোর অভিবাসন নীতি ও রক্ষণশীল মূল্যবোধের প্রচারও তাঁকে ডানপন্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় করেছে। তবে এই অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এখন আন্তর্জাতিক উত্তেজনার সঙ্গে গেঁথে গেছে—বিশেষ করে, তাইওয়ান ইস্যুতে তাঁর অবস্থানের কারণে।
তাকাইচি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চীনের প্রতি কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছেন। বেইজিংকে তিনি কৌশলগত হুমকি হিসেবে দেখেন এবং প্রতিরোধমূলক সামরিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপের পক্ষে জোর দিচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে অক্টোবরের শেষ দিকে তাঁর ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাৎ দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন সোনালি যুগে প্রবেশ করানোর আভাস দেয়। জাপান প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির কমপক্ষে ২ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আর যুক্তরাষ্ট্র বিরল ধাতুর সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ অর্থনৈতিক সহায়তার ঘোষণা দেয়।
তবে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো তাইওয়ানের সঙ্গে তাকাইচির ঘনিষ্ঠতা। তিনি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, যা চীনের কাছে স্পষ্ট উত্তেজনাকর পদক্ষেপ হিসেবে ধরা পড়েছে। আরও বিতর্ক সৃষ্টি হয় যখন তাকাইচি প্রকাশ্যে বলেন, তাইওয়ানের নিরাপত্তা জাপানের নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এমনকি তাইওয়ানে চীনা হামলার ক্ষেত্রে জাপানের আত্মরক্ষা বাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
এ ক্ষেত্রে চীনের প্রতিক্রিয়াও ছিল কঠোর ও দ্রুত। তারা তাকাইচির বিরুদ্ধে ‘পুরোনো সামরিকতাবাদকে পুনরুজ্জীবিত করার’ অভিযোগ তোলে, রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এবং জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাঠায়। পাশাপাশি সামুদ্রিক এলাকায় কোস্টগার্ডের টহল বাড়ায় চীন, জাপানি সামুদ্রিক পণ্যে সীমাবদ্ধতা আরোপের হুমকি দেয় এবং উত্তেজনাপূর্ণ নানা বিবৃতি দেয়।
এদিকে জাপানও পশ্চিম সীমান্তের ইয়োনাগুনি দ্বীপে বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও একই দ্বীপে সামরিক অবকাঠামো শক্তিশালী করছে। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করছে।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি তাকাইচিকে উত্তেজনা না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ আগামী এপ্রিলে তিনি বেইজিং সফর করতে চান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাকাইচির নেতৃত্বে জাপান নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রবেশ করেছে। তাঁর দৃঢ় অবস্থান দেশকে হয় পুনরুত্থানের পথে নেবে—নয়তো চীন–তাইওয়ান উত্তেজনার কেন্দ্রে ঠেলে দেবে। ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তিনি কোন পথে হাঁটবেন তার ওপর।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের সঙ্গে বিতর্কিত দ্বিপক্ষীয় ইস্যু গণমাধ্যমে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করছেন বলে বিস্ময় প্রকাশ করেছে প্রতিবেশী দেশটির কূটনীতিক মহল। বিষয়টিকে ‘মেগাফোন কূটনীতি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন একজন বিশ্লেষক।
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
২০ ঘণ্টা আগে
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
১ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে বলে দুই দেশই নিশ্চিত করেছে।
রাষ্ট্রীয় সফরে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভারতে পৌঁছে পরদিন শুক্রবার মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন পুতিন। এই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি পর্যালোচনা ছাড়াও নতুন কয়েকটি আন্তদপ্তর ও বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা এবং একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব ধরে রাখতে ভারতের নীতির জন্য এই বৈঠক একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাশিয়া থেকে ডিসকাউন্টে ভারতের তেল কেনা দীর্ঘদিন ধরেই ওয়াশিংটনকে অসন্তুষ্ট করে আসছে। এই অসন্তুষ্টি থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা মোট শুল্ককে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছে। তবে ভারত বলছে, তারা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার বিরোধী নয়, কিন্তু ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানি চাহিদা মেটাতেই বাধ্য হয়ে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা হচ্ছে। নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ‘রসনেফত’ ও ‘লুকওইল’ এর মতো রাশিয়ার কিছু কোম্পানি থেকে ভারত তেল কিনবে না বলে জানিয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞামুক্ত রুশ সরবরাহকারীদের সঙ্গে বাণিজ্য চালু থাকবে।
পুতিনের এই সফরে দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হবে। ভারত রাশিয়ায় ওষুধ, কৃষিপণ্য ও টেক্সটাইল রপ্তানি বাড়াতে চায় এবং পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের অনুরোধ জানাবে। এ ছাড়া সার সরবরাহের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি এবং রাশিয়ায় ভারতীয় দক্ষ জনশক্তির নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন নিয়ে আলোচনা এগোতে পারে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, সমুদ্র পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা ও গণমাধ্যম সহযোগিতা বিষয়ক নথিপত্র চূড়ান্তের কাজও চলছে।
বুধবার এই বিষয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্টের এক নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, জ্বালানি সহযোগিতাই পুতিন-মোদি আলোচনার বড় অংশ দখল করবে। ভারতের ফার ইস্টে বিনিয়োগ, রাশিয়ার সঙ্গে বেসামরিক পারমাণবিক প্রকল্প এবং কুদানকুলাম প্রকল্পের সম্প্রসারণ নিয়ে অগ্রগতি পর্যালোচনা হবে। স্থানীয়ভাবে যন্ত্রাংশ উৎপাদন এবং তৃতীয় দেশে যৌথ পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হবে।
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এই সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ২০১৮ সালের ৫.৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির আওতায় ভারতের হাতে ইতিমধ্যে রাশিয়ার তিনটি এস-৪০০ স্কোয়াড্রন এসেছে। যুদ্ধজনিত কারণে বাকিগুলোর সরবরাহে যুদ্ধজনিত বিলম্ব হচ্ছে। ভারত এই সরবরাহ দ্রুত নিশ্চিত করতে চাপ দেবে। পাশাপাশি আরও এস-৪০০ কেনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়নি, যদিও বৈঠক থেকে কোনো ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা কম। রুশ নির্মিত এসইউ-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান আপগ্রেড, অস্ত্র সরবরাহ দ্রুততর করা এবং যৌথ সামরিক মহড়ায় সমন্বয় জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা হবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত বহুজাতিক অস্ত্র সরবরাহকারীদের দিকে নজর বাড়ালেও রাশিয়া এখনো তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা অংশীদার। পুতিনের সফরকে সেই সম্পর্কটি আরও দৃঢ় করার বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে বলে দুই দেশই নিশ্চিত করেছে।
রাষ্ট্রীয় সফরে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভারতে পৌঁছে পরদিন শুক্রবার মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন পুতিন। এই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি পর্যালোচনা ছাড়াও নতুন কয়েকটি আন্তদপ্তর ও বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা এবং একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব ধরে রাখতে ভারতের নীতির জন্য এই বৈঠক একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাশিয়া থেকে ডিসকাউন্টে ভারতের তেল কেনা দীর্ঘদিন ধরেই ওয়াশিংটনকে অসন্তুষ্ট করে আসছে। এই অসন্তুষ্টি থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা মোট শুল্ককে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছে। তবে ভারত বলছে, তারা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার বিরোধী নয়, কিন্তু ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানি চাহিদা মেটাতেই বাধ্য হয়ে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা হচ্ছে। নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ‘রসনেফত’ ও ‘লুকওইল’ এর মতো রাশিয়ার কিছু কোম্পানি থেকে ভারত তেল কিনবে না বলে জানিয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞামুক্ত রুশ সরবরাহকারীদের সঙ্গে বাণিজ্য চালু থাকবে।
পুতিনের এই সফরে দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হবে। ভারত রাশিয়ায় ওষুধ, কৃষিপণ্য ও টেক্সটাইল রপ্তানি বাড়াতে চায় এবং পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের অনুরোধ জানাবে। এ ছাড়া সার সরবরাহের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি এবং রাশিয়ায় ভারতীয় দক্ষ জনশক্তির নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন নিয়ে আলোচনা এগোতে পারে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, সমুদ্র পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা ও গণমাধ্যম সহযোগিতা বিষয়ক নথিপত্র চূড়ান্তের কাজও চলছে।
বুধবার এই বিষয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্টের এক নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, জ্বালানি সহযোগিতাই পুতিন-মোদি আলোচনার বড় অংশ দখল করবে। ভারতের ফার ইস্টে বিনিয়োগ, রাশিয়ার সঙ্গে বেসামরিক পারমাণবিক প্রকল্প এবং কুদানকুলাম প্রকল্পের সম্প্রসারণ নিয়ে অগ্রগতি পর্যালোচনা হবে। স্থানীয়ভাবে যন্ত্রাংশ উৎপাদন এবং তৃতীয় দেশে যৌথ পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হবে।
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এই সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ২০১৮ সালের ৫.৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির আওতায় ভারতের হাতে ইতিমধ্যে রাশিয়ার তিনটি এস-৪০০ স্কোয়াড্রন এসেছে। যুদ্ধজনিত কারণে বাকিগুলোর সরবরাহে যুদ্ধজনিত বিলম্ব হচ্ছে। ভারত এই সরবরাহ দ্রুত নিশ্চিত করতে চাপ দেবে। পাশাপাশি আরও এস-৪০০ কেনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়নি, যদিও বৈঠক থেকে কোনো ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা কম। রুশ নির্মিত এসইউ-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান আপগ্রেড, অস্ত্র সরবরাহ দ্রুততর করা এবং যৌথ সামরিক মহড়ায় সমন্বয় জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা হবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত বহুজাতিক অস্ত্র সরবরাহকারীদের দিকে নজর বাড়ালেও রাশিয়া এখনো তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা অংশীদার। পুতিনের সফরকে সেই সম্পর্কটি আরও দৃঢ় করার বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের সঙ্গে বিতর্কিত দ্বিপক্ষীয় ইস্যু গণমাধ্যমে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করছেন বলে বিস্ময় প্রকাশ করেছে প্রতিবেশী দেশটির কূটনীতিক মহল। বিষয়টিকে ‘মেগাফোন কূটনীতি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন একজন বিশ্লেষক।
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
২০ ঘণ্টা আগে
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
১ দিন আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
১ দিন আগে