জাহীদ রেজা নূর

কাফকার গ্রেগর সামসা হঠাৎ একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখতে পেয়েছিল সে পোকা হয়ে গেছে। ৭০ বছরের সোভিয়েত শাসনের পর সমাজতন্ত্র ভেঙে গণতন্ত্র কায়েম হলে রুশ বুড়ো-বুড়িরা হঠাৎ একদিন দেখল, তাদের পেনশনের টাকা কাগজে পরিণত হয়ে গেছে। দুটো ঘটনার মধ্যে আমি মিল খুঁজে পাই। পোস্ট অফিসে টাকা জমা রাখতেন সোভিয়েত ইউনিয়নের বর্ষীয়ান মানুষেরা। ভাবতেন, অবসরগ্রহণের পর জীবন চালিয়ে নেওয়ার জন্য এ টাকাই দেবে নির্ভরতা। কিন্তু যেভাবে মুদ্রাস্ফীতি হতে থাকল, যেভাবে সমাজতন্ত্র আর গণতন্ত্রের মাঝে টাগ অব ওয়ার শুরু হলো, তাতে আসলে পিষে মারা হলো বুড়ো-বুড়িদের। ওই গ্রেগর সামসার মতোই।
পেনশনভোগীদের বহুদিনের স্বপ্ন গচ্ছিত ছিল পোস্ট অফিসের সঞ্চয়ে, তা হঠাৎ করে নিছক কাগজে পরিণত হলে তাঁরা চোখে সর্ষে ফুল দেখেছিলেন। তেমনি একটা ঘটনার সাক্ষী আমি। আমার চোখের সামনে ঘটেছিল সেই ঘটনা। আমার তো অভ্যাস ছিল ক্লাস ছাড়া অন্য সময়টা বাজারে বাজারে ঘুরে ভালো কিছু পেলে কিনে ফেলা। যেকোনো সময় চড়ে বসতাম ট্রামে, চলে যেতাম ভাস্তোচনোয়ে দিপো, কো-অপারেতিভনি রিনোক অথবা কালখোজনি রিনোকে।
যে সময়ের কথা বলছি, সেটা বোধ হয় ১৯৯১ সালের শেষ অথবা তার পরের বছরের শুরু।
ট্রাম থেকে নেমে কো-অপারেতিভনি রিনোকের দিকে যাচ্ছি, এ সময় দেখি এক বুড়ো-বুড়ি দম্পতি ট্রামলাইন পার হচ্ছেন। সে সময় হঠাৎ করেই রাস্তায় রাস্তায় দোকানের ঘনঘটা দেখা দিয়েছিল। বিশেষ করে খাবারের দোকান। সে এক আজব সময়। একদিকে নিঃস্ব হচ্ছে সাধারণ মানুষ, আরেক দিকে আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে আরেক দল মানুষ। এই নব্য রুশদের পকেটভর্তি টাকা। নানা ধরনের ব্যবসা করে তারা এই টাকা কামিয়েছে। তাদের ব্যবসাগুলো মোটেই বৈধ ছিল না। কিন্তু পুরো সোভিয়েত ইউনিয়নে তখন বৈধ-অবৈধের সীমারেখা গিয়েছিল উঠে।
সত্যের খাতিরে অবশ্য বলতে হয়, এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আরও অনেক আগে। কমিউনিস্ট পার্টির বড় একটা অংশ নানাভাবে অবৈধ আয়ের অধিকারী হয়েছিল। ক্ষমতা যে মানুষকে দুর্নীতিগ্রস্ত করে তোলে, তা সোভিয়েত আমলাদের জীবনাচরণ পদ্ধতির দিকে চোখ রাখলেই বোঝা যায়। তারাই নানাভাবে এই সময়কে কাজে লাগিয়েছে। ভোল পাল্টে নিমেষে তারা হয়ে গেছে গণতন্ত্রী। অথচ একসময় সমাজতন্ত্রের জন্য জীবন বাজি রাখার শপথ নিয়েছিল এরা।
একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, সোভিয়েত-পরবর্তী সময়ে যাদের হাতে অনেক টাকা এসে গেল, তাদের সবার অতীত কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত। অর্থাৎ, সেই সময়ের আইনশৃঙ্খলাসহ নানা বিষয়ে যে বাধা আসার শঙ্কা ছিল, সেগুলো পার্টির ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে এড়িয়ে যাওয়া গেছে। এই আলোচনা আর না বাড়িয়ে আমরা বরং ট্রামলাইনের পাশ দিয়ে এগিয়ে যাওয়া বুড়োবুড়ির কথোপকথনের দিকে কান পাতি।
তার আগে একটা কথা বলে রাখি। তখন গরুর মাংসের কেজি ছিল ৬০ রুবল।
বুড়ো বলছিলেন, ‘বুড়ি, খিদে পেয়ে গেছে। কিছু খাবে তুমি?’
‘খেলে অনেকগুলো টাকা বেরিয়ে যাবে। তার চেয়ে অপেক্ষা করি। কিছুক্ষণ পর বাড়ি গিয়ে খাব। কিছু না কিছু তো পেয়েই যাব। খাওয়া যাবে।’
বুড়োর মনে সম্ভবত বুড়ির প্রতি ভালোবাসা আর আদরের জন্ম হলো। তিনি বললেন, ‘এক দিনই তো বাইরে খেতে বলছি! এত হিসাব করে চললে কি আর বাঁচা যাবে?’
বুড়ির মনে আনন্দ জেগে উঠল। তিনি বললেন, ‘তাহলে এসো শাশলিক খাই! কখনো তো খাইনি! দেখি না খেতে কেমন!’
বড়লোকদের জন্য নতুন পয়দা হওয়া রাস্তার পাশের দোকানগুলোর দিকে এগিয়ে গেলেন বৃদ্ধ। কয়লার লকলকে জিহ্বার ওপর শিক কাবাবের মতো সুগন্ধি শাশলিক দেখা যাচ্ছে।
বৃদ্ধ কাছে গিয়ে দাম দেখলেন। সেখানে লেখা, ‘১০০ গ্রাম ৬০ রুবল’।
কিছুক্ষণ পাথরের মতো সেখানে দাঁড়িয়ে থাকলেন বৃদ্ধ। সম্ভবত হিসাব করলেন, স্রেফ আগুনের ওপর কিছু মাংস রেখেই ১০ গুণ বাড়িয়ে নিয়েছে দাম! আসলে তখন বুড়ো-বুড়িদের আর্থিক যে অবস্থা ছিল, তাতে মাংস কেনা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছিল।
বুড়োকে থমকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বুড়ি তার পাশে এসে দাঁড়ালেন। শাশলিকের দাম দেখলেন। তারপর বোকার মতো হাসতে হাসতে বিড়বিড় করে বুড়োকে বললেন, ‘আরে! আমি তো মজা করেছি! আমি কি সত্যিই শাশলিক খেতে চাই? আমার দাঁতগুলো নড়বড়ে হয়ে গেছে। মাংস চিবাতে পারব না। এত শক্ত মাংস খেলে দাঁতই পড়ে যাবে!’
বুড়োর মেজাজ তখন চড়ে গেছে। তিনি অস্থির হয়ে অভিশাপ দিতে থাকলেন শাশলিকওয়ালাদের। বুড়ি তাঁকে টানতে টানতে অন্যদিকে নিয়ে গেলেন।
এই দৃশ্য কোনো দিন ভোলার নয়। আর কোনো দিন এই দম্পতিকে দেখিনি। কিন্তু শাশলিকের দিকে চোখ গেলে এখনো মনে পড়ে তাঁদের কথা।

কাফকার গ্রেগর সামসা হঠাৎ একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখতে পেয়েছিল সে পোকা হয়ে গেছে। ৭০ বছরের সোভিয়েত শাসনের পর সমাজতন্ত্র ভেঙে গণতন্ত্র কায়েম হলে রুশ বুড়ো-বুড়িরা হঠাৎ একদিন দেখল, তাদের পেনশনের টাকা কাগজে পরিণত হয়ে গেছে। দুটো ঘটনার মধ্যে আমি মিল খুঁজে পাই। পোস্ট অফিসে টাকা জমা রাখতেন সোভিয়েত ইউনিয়নের বর্ষীয়ান মানুষেরা। ভাবতেন, অবসরগ্রহণের পর জীবন চালিয়ে নেওয়ার জন্য এ টাকাই দেবে নির্ভরতা। কিন্তু যেভাবে মুদ্রাস্ফীতি হতে থাকল, যেভাবে সমাজতন্ত্র আর গণতন্ত্রের মাঝে টাগ অব ওয়ার শুরু হলো, তাতে আসলে পিষে মারা হলো বুড়ো-বুড়িদের। ওই গ্রেগর সামসার মতোই।
পেনশনভোগীদের বহুদিনের স্বপ্ন গচ্ছিত ছিল পোস্ট অফিসের সঞ্চয়ে, তা হঠাৎ করে নিছক কাগজে পরিণত হলে তাঁরা চোখে সর্ষে ফুল দেখেছিলেন। তেমনি একটা ঘটনার সাক্ষী আমি। আমার চোখের সামনে ঘটেছিল সেই ঘটনা। আমার তো অভ্যাস ছিল ক্লাস ছাড়া অন্য সময়টা বাজারে বাজারে ঘুরে ভালো কিছু পেলে কিনে ফেলা। যেকোনো সময় চড়ে বসতাম ট্রামে, চলে যেতাম ভাস্তোচনোয়ে দিপো, কো-অপারেতিভনি রিনোক অথবা কালখোজনি রিনোকে।
যে সময়ের কথা বলছি, সেটা বোধ হয় ১৯৯১ সালের শেষ অথবা তার পরের বছরের শুরু।
ট্রাম থেকে নেমে কো-অপারেতিভনি রিনোকের দিকে যাচ্ছি, এ সময় দেখি এক বুড়ো-বুড়ি দম্পতি ট্রামলাইন পার হচ্ছেন। সে সময় হঠাৎ করেই রাস্তায় রাস্তায় দোকানের ঘনঘটা দেখা দিয়েছিল। বিশেষ করে খাবারের দোকান। সে এক আজব সময়। একদিকে নিঃস্ব হচ্ছে সাধারণ মানুষ, আরেক দিকে আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে আরেক দল মানুষ। এই নব্য রুশদের পকেটভর্তি টাকা। নানা ধরনের ব্যবসা করে তারা এই টাকা কামিয়েছে। তাদের ব্যবসাগুলো মোটেই বৈধ ছিল না। কিন্তু পুরো সোভিয়েত ইউনিয়নে তখন বৈধ-অবৈধের সীমারেখা গিয়েছিল উঠে।
সত্যের খাতিরে অবশ্য বলতে হয়, এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আরও অনেক আগে। কমিউনিস্ট পার্টির বড় একটা অংশ নানাভাবে অবৈধ আয়ের অধিকারী হয়েছিল। ক্ষমতা যে মানুষকে দুর্নীতিগ্রস্ত করে তোলে, তা সোভিয়েত আমলাদের জীবনাচরণ পদ্ধতির দিকে চোখ রাখলেই বোঝা যায়। তারাই নানাভাবে এই সময়কে কাজে লাগিয়েছে। ভোল পাল্টে নিমেষে তারা হয়ে গেছে গণতন্ত্রী। অথচ একসময় সমাজতন্ত্রের জন্য জীবন বাজি রাখার শপথ নিয়েছিল এরা।
একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, সোভিয়েত-পরবর্তী সময়ে যাদের হাতে অনেক টাকা এসে গেল, তাদের সবার অতীত কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত। অর্থাৎ, সেই সময়ের আইনশৃঙ্খলাসহ নানা বিষয়ে যে বাধা আসার শঙ্কা ছিল, সেগুলো পার্টির ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে এড়িয়ে যাওয়া গেছে। এই আলোচনা আর না বাড়িয়ে আমরা বরং ট্রামলাইনের পাশ দিয়ে এগিয়ে যাওয়া বুড়োবুড়ির কথোপকথনের দিকে কান পাতি।
তার আগে একটা কথা বলে রাখি। তখন গরুর মাংসের কেজি ছিল ৬০ রুবল।
বুড়ো বলছিলেন, ‘বুড়ি, খিদে পেয়ে গেছে। কিছু খাবে তুমি?’
‘খেলে অনেকগুলো টাকা বেরিয়ে যাবে। তার চেয়ে অপেক্ষা করি। কিছুক্ষণ পর বাড়ি গিয়ে খাব। কিছু না কিছু তো পেয়েই যাব। খাওয়া যাবে।’
বুড়োর মনে সম্ভবত বুড়ির প্রতি ভালোবাসা আর আদরের জন্ম হলো। তিনি বললেন, ‘এক দিনই তো বাইরে খেতে বলছি! এত হিসাব করে চললে কি আর বাঁচা যাবে?’
বুড়ির মনে আনন্দ জেগে উঠল। তিনি বললেন, ‘তাহলে এসো শাশলিক খাই! কখনো তো খাইনি! দেখি না খেতে কেমন!’
বড়লোকদের জন্য নতুন পয়দা হওয়া রাস্তার পাশের দোকানগুলোর দিকে এগিয়ে গেলেন বৃদ্ধ। কয়লার লকলকে জিহ্বার ওপর শিক কাবাবের মতো সুগন্ধি শাশলিক দেখা যাচ্ছে।
বৃদ্ধ কাছে গিয়ে দাম দেখলেন। সেখানে লেখা, ‘১০০ গ্রাম ৬০ রুবল’।
কিছুক্ষণ পাথরের মতো সেখানে দাঁড়িয়ে থাকলেন বৃদ্ধ। সম্ভবত হিসাব করলেন, স্রেফ আগুনের ওপর কিছু মাংস রেখেই ১০ গুণ বাড়িয়ে নিয়েছে দাম! আসলে তখন বুড়ো-বুড়িদের আর্থিক যে অবস্থা ছিল, তাতে মাংস কেনা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছিল।
বুড়োকে থমকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বুড়ি তার পাশে এসে দাঁড়ালেন। শাশলিকের দাম দেখলেন। তারপর বোকার মতো হাসতে হাসতে বিড়বিড় করে বুড়োকে বললেন, ‘আরে! আমি তো মজা করেছি! আমি কি সত্যিই শাশলিক খেতে চাই? আমার দাঁতগুলো নড়বড়ে হয়ে গেছে। মাংস চিবাতে পারব না। এত শক্ত মাংস খেলে দাঁতই পড়ে যাবে!’
বুড়োর মেজাজ তখন চড়ে গেছে। তিনি অস্থির হয়ে অভিশাপ দিতে থাকলেন শাশলিকওয়ালাদের। বুড়ি তাঁকে টানতে টানতে অন্যদিকে নিয়ে গেলেন।
এই দৃশ্য কোনো দিন ভোলার নয়। আর কোনো দিন এই দম্পতিকে দেখিনি। কিন্তু শাশলিকের দিকে চোখ গেলে এখনো মনে পড়ে তাঁদের কথা।

ভালো-মন্দ সব জায়গাতেই আছে। সাহিত্য জগতেও যে ভালো মানুষ পাইনি, তা তো নয়। একজন লেখক অসম্ভব স্পর্শকাতর এবং সংবেদনশীল মানুষ। লেখালেখি বিষয়টাই তো সাংঘাতিক স্পর্শকাতর—লেখক এবং লেখা উভয়েই সামান্য কারণে আহত হয়!
২১ ঘণ্টা আগে
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রহর। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ ডিসেম্বর চলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যা। শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পারে খলাপাড়া গ্রামে ‘ন্যাশনাল জুট মিলস লি.’ নামে যে কারখানাটি অবস্থিত, সেখানেই নারকীয়ভাবে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধাসহ মিলের মুক্তিকামী শ্রমিক-কর্মচারীদের।
২ দিন আগে
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা।
৩ দিন আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে।
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়

ভালো-মন্দ সব জায়গাতেই আছে। সাহিত্য জগতেও যে ভালো মানুষ পাইনি, তা তো নয়। একজন লেখক অসম্ভব স্পর্শকাতর এবং সংবেদনশীল মানুষ। লেখালেখি বিষয়টাই তো সাংঘাতিক স্পর্শকাতর—লেখক এবং লেখা উভয়েই সামান্য কারণে আহত হয়!
...লেখালেখি বিষয়টি একজন লেখকের কাছে সবচেয়ে কোমল আর সূক্ষ্ম অনুভূতি দাবি করে, সবচেয়ে গভীর মনোযোগ দাবি করে, আমার তো এ-ও মনে হয় যে ধ্যানমগ্নতা ছাড়া একজনের পক্ষে লেখকই হওয়া সম্ভব নয়। তো সতীর্থদের নোংরামি দেখে, ভণ্ডামি দেখে, বদমায়েশি দেখে কি একজন প্রকৃত লেখকের আহত হওয়ার কথা নয়?
...আমি তো সব সময় বিশ্বাস করে এসেছি—শিল্পীদের লোভ থাকতে নেই। লোভ থাকলে শিল্প হয় না, যেমন হয় না অসৎ মানুষেরও। শিল্পীর সততা থাকাটা খুব জরুরি, আমি বলব অপরিহার্য। যাই হোক, আমি শুধু সাহিত্য জগতের ভণ্ডামি দেখে লেখালেখি থেকে দূরে সরে এসেছি, সেটা বলা ঠিক হবে না। এটা একটা কারণ ছিল বটে, তবে আরও কারণ নিশ্চয়ই আছে।
আগেই তো তোমাকে বলেছি, আমি শেষের দিকে এসে একঘেয়েমিতে ভুগছিলাম। তা ছাড়া একটা সময় এসব কিছুকেই ভীষণ অর্থহীন মনে হলো আমার কাছে। কী করছি, কেন করছি, এসবের ফলাফল কী, আদৌ এসব করার কোনো অর্থ হয় কি না—এই সব আরকি! সব মিলিয়ে লেখালেখিটা আর ভালো লাগেনি। অবশ্য একবারে পরিকল্পনা করে, সিদ্ধান্ত নিয়ে লেখালেখি বন্ধ করেছিলাম, তা নয়। এ রকম তো সব লেখকেরই হয় যে মাঝে মাঝে ক্লান্তি আসে, মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিতে ইচ্ছে করে, মাঝে মাঝে বন্ধ্যত্বও দেখা দেয়। আমার সেটাই হয়েছিল। কিন্তু সব লেখকই সেই সময়টি পেরিয়ে আবার লেখালেখিতে আসেন। আমার আর ফিরে আসা সম্ভব হয়নি। আর এখন তো শারীরিক কারণেই অনেক কিছু করা সম্ভব হয় না। যে উদ্দাম জীবন আমি যাপন করেছি, সেটা শুনলে তোমরা অবাক হয়ে যাবে, আর এখন তো দিনের পর দিন ঘরে বন্দী হয়ে থাকি, বেরুতেই পারি না...
সূত্র: আহমাদ মোস্তফা কামাল কর্তৃক মাহমুদুল হকের সাক্ষাৎকার গ্রহণ, ‘হিরণ্ময় কথকতা’, পৃষ্ঠা ৯০-৯১

ভালো-মন্দ সব জায়গাতেই আছে। সাহিত্য জগতেও যে ভালো মানুষ পাইনি, তা তো নয়। একজন লেখক অসম্ভব স্পর্শকাতর এবং সংবেদনশীল মানুষ। লেখালেখি বিষয়টাই তো সাংঘাতিক স্পর্শকাতর—লেখক এবং লেখা উভয়েই সামান্য কারণে আহত হয়!
...লেখালেখি বিষয়টি একজন লেখকের কাছে সবচেয়ে কোমল আর সূক্ষ্ম অনুভূতি দাবি করে, সবচেয়ে গভীর মনোযোগ দাবি করে, আমার তো এ-ও মনে হয় যে ধ্যানমগ্নতা ছাড়া একজনের পক্ষে লেখকই হওয়া সম্ভব নয়। তো সতীর্থদের নোংরামি দেখে, ভণ্ডামি দেখে, বদমায়েশি দেখে কি একজন প্রকৃত লেখকের আহত হওয়ার কথা নয়?
...আমি তো সব সময় বিশ্বাস করে এসেছি—শিল্পীদের লোভ থাকতে নেই। লোভ থাকলে শিল্প হয় না, যেমন হয় না অসৎ মানুষেরও। শিল্পীর সততা থাকাটা খুব জরুরি, আমি বলব অপরিহার্য। যাই হোক, আমি শুধু সাহিত্য জগতের ভণ্ডামি দেখে লেখালেখি থেকে দূরে সরে এসেছি, সেটা বলা ঠিক হবে না। এটা একটা কারণ ছিল বটে, তবে আরও কারণ নিশ্চয়ই আছে।
আগেই তো তোমাকে বলেছি, আমি শেষের দিকে এসে একঘেয়েমিতে ভুগছিলাম। তা ছাড়া একটা সময় এসব কিছুকেই ভীষণ অর্থহীন মনে হলো আমার কাছে। কী করছি, কেন করছি, এসবের ফলাফল কী, আদৌ এসব করার কোনো অর্থ হয় কি না—এই সব আরকি! সব মিলিয়ে লেখালেখিটা আর ভালো লাগেনি। অবশ্য একবারে পরিকল্পনা করে, সিদ্ধান্ত নিয়ে লেখালেখি বন্ধ করেছিলাম, তা নয়। এ রকম তো সব লেখকেরই হয় যে মাঝে মাঝে ক্লান্তি আসে, মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিতে ইচ্ছে করে, মাঝে মাঝে বন্ধ্যত্বও দেখা দেয়। আমার সেটাই হয়েছিল। কিন্তু সব লেখকই সেই সময়টি পেরিয়ে আবার লেখালেখিতে আসেন। আমার আর ফিরে আসা সম্ভব হয়নি। আর এখন তো শারীরিক কারণেই অনেক কিছু করা সম্ভব হয় না। যে উদ্দাম জীবন আমি যাপন করেছি, সেটা শুনলে তোমরা অবাক হয়ে যাবে, আর এখন তো দিনের পর দিন ঘরে বন্দী হয়ে থাকি, বেরুতেই পারি না...
সূত্র: আহমাদ মোস্তফা কামাল কর্তৃক মাহমুদুল হকের সাক্ষাৎকার গ্রহণ, ‘হিরণ্ময় কথকতা’, পৃষ্ঠা ৯০-৯১

কাফকার গ্রেগর সামসা হঠাৎ একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখতে পেয়েছিল সে পোকা হয়ে গেছে। ৭০ বছরের সোভিয়েত শাসনের পর সমাজতন্ত্র ভেঙে গণতন্ত্র কায়েম হলে রুশ বুড়ো-বুড়িরা হঠাৎ একদিন দেখল, তাদের পেনশনের টাকা কাগজে পরিণত হয়ে গেছে। দুটো ঘটনার মধ্যে আমি মিল খুঁজে পাই। পোস্ট অফিসে টাকা জমা রাখতেন...
১৫ মে ২০২২
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রহর। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ ডিসেম্বর চলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যা। শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পারে খলাপাড়া গ্রামে ‘ন্যাশনাল জুট মিলস লি.’ নামে যে কারখানাটি অবস্থিত, সেখানেই নারকীয়ভাবে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধাসহ মিলের মুক্তিকামী শ্রমিক-কর্মচারীদের।
২ দিন আগে
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা।
৩ দিন আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে।
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রহর। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ ডিসেম্বর চলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যা। শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পারে খলাপাড়া গ্রামে ‘ন্যাশনাল জুট মিলস লি.’ নামে যে কারখানাটি অবস্থিত, সেখানেই নারকীয়ভাবে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধাসহ মিলের মুক্তিকামী শ্রমিক-কর্মচারীদের। শতাধিক বাঙালিকে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে পাকিস্তানি সেনারা। তাঁদের অপরাধ ছিল একটাই—মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের পরিকল্পনা করা। গণহত্যার পর হানাদার বাহিনী মিলের দক্ষিণ দিকের দেয়াল ভেঙে চলে যায়। মরদেহগুলো তিন-চার দিন মিলের সুপারিবাগানে পড়ে থাকে। শিয়াল-শকুন খুবলে খায় সেগুলো। দেশ স্বাধীন হলে গ্রামবাসী মিলের ভেতরে গিয়ে ১৩৬ জনের লাশ পান। মিলের দক্ষিণ পাশে ১০৬ জনের মৃতদেহকে গণকবরে শায়িত করা হয়। বাকিদের মরদেহ নিয়ে যান স্বজনেরা। ১৯৯৬ সালে শহীদদের সম্মানে মিল কর্তৃপক্ষ ‘শহীদ স্মরণে’ স্মৃতিফলকটি নির্মাণ করে গণকবরের জায়গাটিতে।
ছবি: সংগৃহীত

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রহর। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ ডিসেম্বর চলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যা। শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পারে খলাপাড়া গ্রামে ‘ন্যাশনাল জুট মিলস লি.’ নামে যে কারখানাটি অবস্থিত, সেখানেই নারকীয়ভাবে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধাসহ মিলের মুক্তিকামী শ্রমিক-কর্মচারীদের। শতাধিক বাঙালিকে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে পাকিস্তানি সেনারা। তাঁদের অপরাধ ছিল একটাই—মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের পরিকল্পনা করা। গণহত্যার পর হানাদার বাহিনী মিলের দক্ষিণ দিকের দেয়াল ভেঙে চলে যায়। মরদেহগুলো তিন-চার দিন মিলের সুপারিবাগানে পড়ে থাকে। শিয়াল-শকুন খুবলে খায় সেগুলো। দেশ স্বাধীন হলে গ্রামবাসী মিলের ভেতরে গিয়ে ১৩৬ জনের লাশ পান। মিলের দক্ষিণ পাশে ১০৬ জনের মৃতদেহকে গণকবরে শায়িত করা হয়। বাকিদের মরদেহ নিয়ে যান স্বজনেরা। ১৯৯৬ সালে শহীদদের সম্মানে মিল কর্তৃপক্ষ ‘শহীদ স্মরণে’ স্মৃতিফলকটি নির্মাণ করে গণকবরের জায়গাটিতে।
ছবি: সংগৃহীত

কাফকার গ্রেগর সামসা হঠাৎ একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখতে পেয়েছিল সে পোকা হয়ে গেছে। ৭০ বছরের সোভিয়েত শাসনের পর সমাজতন্ত্র ভেঙে গণতন্ত্র কায়েম হলে রুশ বুড়ো-বুড়িরা হঠাৎ একদিন দেখল, তাদের পেনশনের টাকা কাগজে পরিণত হয়ে গেছে। দুটো ঘটনার মধ্যে আমি মিল খুঁজে পাই। পোস্ট অফিসে টাকা জমা রাখতেন...
১৫ মে ২০২২
ভালো-মন্দ সব জায়গাতেই আছে। সাহিত্য জগতেও যে ভালো মানুষ পাইনি, তা তো নয়। একজন লেখক অসম্ভব স্পর্শকাতর এবং সংবেদনশীল মানুষ। লেখালেখি বিষয়টাই তো সাংঘাতিক স্পর্শকাতর—লেখক এবং লেখা উভয়েই সামান্য কারণে আহত হয়!
২১ ঘণ্টা আগে
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা।
৩ দিন আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে।
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা। চা-শ্রমিক ও বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এখানে এসে পূজা দিত, মনোবাসনা পূরণে মানত করত। সবাই জায়গাটিকে চিনত ‘সাধু বাবার থলি’ নামে। যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এখানে এনে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। হত্যার আগে বটগাছের ডালে ঝুলিয়ে তাঁদের ওপর অমানবিক অত্যাচার চালানো হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজন ও মুক্তিকামী সাধারণ মানুষও বাদ যাননি। গাছের ডালে উল্টো করে বেঁধে রাখা হতো তাঁদের। নির্যাতনের যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে তাঁরা শহীদ হন। সেই সব শহীদের ত্যাগকে অমর করে রাখতে এখানে নির্মিত হয় ‘বধ্যভূমি ৭১’ নামের স্মৃতিস্তম্ভটি। একাত্তরের স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমিটিতে আরও রয়েছে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী ৭১’ নামে একটি ভাস্কর্য।
ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা। চা-শ্রমিক ও বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এখানে এসে পূজা দিত, মনোবাসনা পূরণে মানত করত। সবাই জায়গাটিকে চিনত ‘সাধু বাবার থলি’ নামে। যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এখানে এনে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। হত্যার আগে বটগাছের ডালে ঝুলিয়ে তাঁদের ওপর অমানবিক অত্যাচার চালানো হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজন ও মুক্তিকামী সাধারণ মানুষও বাদ যাননি। গাছের ডালে উল্টো করে বেঁধে রাখা হতো তাঁদের। নির্যাতনের যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে তাঁরা শহীদ হন। সেই সব শহীদের ত্যাগকে অমর করে রাখতে এখানে নির্মিত হয় ‘বধ্যভূমি ৭১’ নামের স্মৃতিস্তম্ভটি। একাত্তরের স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমিটিতে আরও রয়েছে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী ৭১’ নামে একটি ভাস্কর্য।
ছবি: সংগৃহীত

কাফকার গ্রেগর সামসা হঠাৎ একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখতে পেয়েছিল সে পোকা হয়ে গেছে। ৭০ বছরের সোভিয়েত শাসনের পর সমাজতন্ত্র ভেঙে গণতন্ত্র কায়েম হলে রুশ বুড়ো-বুড়িরা হঠাৎ একদিন দেখল, তাদের পেনশনের টাকা কাগজে পরিণত হয়ে গেছে। দুটো ঘটনার মধ্যে আমি মিল খুঁজে পাই। পোস্ট অফিসে টাকা জমা রাখতেন...
১৫ মে ২০২২
ভালো-মন্দ সব জায়গাতেই আছে। সাহিত্য জগতেও যে ভালো মানুষ পাইনি, তা তো নয়। একজন লেখক অসম্ভব স্পর্শকাতর এবং সংবেদনশীল মানুষ। লেখালেখি বিষয়টাই তো সাংঘাতিক স্পর্শকাতর—লেখক এবং লেখা উভয়েই সামান্য কারণে আহত হয়!
২১ ঘণ্টা আগে
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রহর। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ ডিসেম্বর চলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যা। শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পারে খলাপাড়া গ্রামে ‘ন্যাশনাল জুট মিলস লি.’ নামে যে কারখানাটি অবস্থিত, সেখানেই নারকীয়ভাবে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধাসহ মিলের মুক্তিকামী শ্রমিক-কর্মচারীদের।
২ দিন আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে।
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে। শহীদদের সংখ্যাটা প্রায় ১০ হাজার! রহনপুর সরকারি এ বি উচ্চবিদ্যালয়ে ছিল পাকিস্তানিদের ক্যাম্প। এখানেও শত শত মানুষকে ধরে এনে হত্যা করা হয়। বধ্যভূমির যে স্থানে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, সেখানেই শহীদদের সম্মানে নির্মিত হয়েছে একটি স্মৃতিস্তম্ভ। এই বধ্যভূমিটি রহনপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর নামে পরিচিত।
ছবি: সংগৃহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে। শহীদদের সংখ্যাটা প্রায় ১০ হাজার! রহনপুর সরকারি এ বি উচ্চবিদ্যালয়ে ছিল পাকিস্তানিদের ক্যাম্প। এখানেও শত শত মানুষকে ধরে এনে হত্যা করা হয়। বধ্যভূমির যে স্থানে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, সেখানেই শহীদদের সম্মানে নির্মিত হয়েছে একটি স্মৃতিস্তম্ভ। এই বধ্যভূমিটি রহনপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর নামে পরিচিত।
ছবি: সংগৃহীত

কাফকার গ্রেগর সামসা হঠাৎ একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখতে পেয়েছিল সে পোকা হয়ে গেছে। ৭০ বছরের সোভিয়েত শাসনের পর সমাজতন্ত্র ভেঙে গণতন্ত্র কায়েম হলে রুশ বুড়ো-বুড়িরা হঠাৎ একদিন দেখল, তাদের পেনশনের টাকা কাগজে পরিণত হয়ে গেছে। দুটো ঘটনার মধ্যে আমি মিল খুঁজে পাই। পোস্ট অফিসে টাকা জমা রাখতেন...
১৫ মে ২০২২
ভালো-মন্দ সব জায়গাতেই আছে। সাহিত্য জগতেও যে ভালো মানুষ পাইনি, তা তো নয়। একজন লেখক অসম্ভব স্পর্শকাতর এবং সংবেদনশীল মানুষ। লেখালেখি বিষয়টাই তো সাংঘাতিক স্পর্শকাতর—লেখক এবং লেখা উভয়েই সামান্য কারণে আহত হয়!
২১ ঘণ্টা আগে
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রহর। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ ডিসেম্বর চলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যা। শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পারে খলাপাড়া গ্রামে ‘ন্যাশনাল জুট মিলস লি.’ নামে যে কারখানাটি অবস্থিত, সেখানেই নারকীয়ভাবে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধাসহ মিলের মুক্তিকামী শ্রমিক-কর্মচারীদের।
২ দিন আগে
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা।
৩ দিন আগে