Ajker Patrika

অনুকূল আবহাওয়ায় বাড়ছে এডিস, ডেঙ্গুতে মৃত্যুহারে শীর্ষে বাংলাদেশ

মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা
অনুকূল আবহাওয়ায় বাড়ছে এডিস, ডেঙ্গুতে মৃত্যুহারে শীর্ষে বাংলাদেশ

বাংলাদেশে প্রথম ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয় ছয় দশক আগে। সে সময় রোগটি ‘ঢাকা ফিভার’ নামে পরিচিতি পায়। ২০০০ সালে এসে এডিস মশাবাহিত এই ভাইরাস ডেঙ্গু নামে সরকারের গুরুত্ব পায়। তারপর পেরিয়েছে দুই যুগ। দিনে দিনে ভাইরাসটির সংক্রমণ বেড়েছে। মৌসুমি রোগ থেকে ডেঙ্গু হয়ে উঠেছে সারা বছরের রোগ। তবে এক দশক ধরে ডেঙ্গুতে মৃত্যুহার ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা মশকনিধন ও রোগী ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণগুলোকে দায়ী করেছেন।

রোগতত্ত্ববিদ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশের রোগ ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার বাংলাদেশেই বেশি। শতাধিক দেশে এই রোগের বিস্তার থাকলেও সেসব দেশে মৃত্যুহার তুলনামূলক কম। দুই যুগ ধরে বাংলাদেশ ডেঙ্গু মোকাবিলা করলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে এই রোগের বিস্তার ঠেকাতে বিজ্ঞানভিত্তিক পদক্ষেপে ঘাটতি রয়ে গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বছরভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশে ২০০০ সাল সাড়ে ৫ হাজার ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়, মৃত্যু হয় ৯৩ জনের। মৃত্যুহার ছিল শতকরা ১ দশমিক ৬৭ জন। এরপর ২০০৬ সাল পর্যন্ত কোনো বছর মৃত্যুহার ছিল ২ শতাংশ, কোনো বছর তা শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে কোনো মৃত্যু ঘটেনি। ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত মৃত্যুহার ছিল ১ শতাংশের কম। ২০১৪ সালেও কোনো মৃত্যু হয়নি। কিন্তু এর পর থেকেই দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যুহার ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। মাঝে কেবল ২০১৯ সালে মৃত্যুহার কমেছিল।

দেশে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২০২২ সালে, ৩ লাখ ২১ হাজার জন। ওই বছর মৃত্যু হয়েছিল ১ হাজার ৭০০ রোগীর। মৃত্যুহার ছিল শূন্য দশমিক ৫৩ শতাংশ। আর চলতি বছর ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত ৫৪ হাজারের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, মারা গেছে ২৬৮ জন।

ডব্লিউএইচও বলছে, বাংলাদেশে পাঁচ বছর ধরে এডিস মশার ঘনত্ব এবং সম্ভাব্য হটস্পট বাড়ছে। আর্দ্রতার সঙ্গে অস্বাভাবিক বৃষ্টি সারা দেশে মশার সংখ্যা বাড়িয়েছে। পাশাপাশি জলাবদ্ধতা, বন্যা, তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও ঋতুর অস্বাভাবিক পরিবর্তনও ভূমিকা রেখেছে।

মেডিকেল এন্টোমলজিস্ট ও জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. গোলাম সারোয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, পরিবর্তিত পরিবেশ এডিস মশার স্বভাব ও ভাইরাসের শক্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমান আবহাওয়া শুধু যে এডিস মশা বৃদ্ধির জন্য উপযোগী তা নয়, বরং মশার মধ্যে ভাইরাসের মিউটেশন (রূপান্তর) বেশি হচ্ছে। এতে আক্রমণের তীব্রতা বেড়েছে, পরিবর্তন হয়েছে মশার স্বভাব। মশা নির্মূলে যে কীটনাশক দেওয়া হচ্ছে, তা কাজে আসছে না। বরং মশার জন্য যেসব পরিবেশ ক্ষতিকর, তা ধ্বংস হচ্ছে। এতে আক্রান্ত ও মৃত্যুহার বাড়ছে।

বৈশ্বিকভাবে ডেঙ্গুতে বাংলাদেশে মৃত্যুহার শীর্ষে বলে ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোলের (ইসিডিসি) তথ্য বিশ্লেষণেও পাওয়া গেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই সংস্থাটি বলছে, চলতি বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেড় কোটি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট মৃত্যু ৬ হাজার। এই দেড় কোটি রোগীর বেশির ভাগই দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশের বাসিন্দা। এর মধ্যে ১ কোটিই ব্রাজিলের রোগী। ১০ লাখ রোগী দক্ষিণ আমেরিকার অন্যান্য দেশের। দক্ষিণ আমেরিকার এসব দেশে রোগীর বিপরীতে মৃত্যুহার শতকরা শূন্য দশমিক শূন্য ৫৭ শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশে এই হার শূন্য দশমিক ৪৯ শতাংশ।

রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও সংস্থাটির পরামর্শক মুশতাক হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যে সংখ্যক রোগীর তথ্য আমরা সরকারের পক্ষ থেকে পাচ্ছি, প্রকৃত রোগী তার কয়েক গুণ বেশি। যারা হাসপাতাল ভর্তি হচ্ছে তাদের সংখ্যাই আমরা জানি। এর বাইরে বহু রোগী বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছে, মারা যাচ্ছে, সেই সংখ্যা আমাদের জানা নেই। তা ছাড়া, শনাক্ত হয়নি কিন্তু ডেঙ্গু আক্রান্ত—এমন রোগীর সংখ্যাও কম নয়। আমরা বহু বছর ধরে বলে আসছি, মশা নির্মূল ও রোগী ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে হচ্ছে না। ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়নি। এটাও একটি বড় সমস্যা।’

তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগনিয়ন্ত্রণ) শেখ দাউদ আদনান দাবি করেছেন, সারা দেশে একই চিকিৎসা প্রটোকল (চিকিৎসা নির্দেশিকা) মেনে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা চিকিৎসা প্রটোকল রিভাইস করছি। হাসপাতালে রোগী ব্যবস্থাপনায় কোনো ঘাটতি নেই।’

আরও ৪ জনের মৃত্যু
দেশে ডেঙ্গুতে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৬৮ জন হলো। ওই ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ২৯ জন। এ নিয়ে এ বছর মোট হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে হলো ৫৪ হাজার ২২৫ জন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রেনের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের দাবি জাতীয় কমিটির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজশাহী ছাড়ার পর থেমে থেমে যায় মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী ছাড়ার পর থেমে থেমে যায় মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাষ্ট্রীয় গণপরিবহন ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি।

আজ রোববার সংগঠনের সভাপতি হাজি মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এক বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, রেল কর্তৃপক্ষ ঢাকা-কক্সবাজারসহ পূর্বাঞ্চর রেলের ছয় রুটে ট্রেনের ভাড়া বাড়িয়েছে, যা গতকাল শনিবার থেকে কার্যকর হয়েছে।

বিভিন্ন রেলসেতুর মাশুল বাড়িয়ে পূর্বাঞ্চল রেলের যাত্রীদের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে ‘হঠকারী’ উল্লেখ করে নাগরিক সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, এ নিয়ে ছয় রুটে গত ১৩ বছরে পাঁচ দফা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

বিবৃতিতে জাতীয় কমিটির নেতারা বলেন, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় আকস্মিক ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির কারণে এসব রুটের নিয়মিত যাত্রীদের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোটের আগে তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে ইসির বৈঠক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৩৭
নির্বাচন ভবনে পৌঁছালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবলায়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ তিন বাহিনী প্রধানকে আলাদা আলাদাভাবে অভ্যর্থনা জানান। ছবি : আজকের পত্রিকা
নির্বাচন ভবনে পৌঁছালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবলায়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ তিন বাহিনী প্রধানকে আলাদা আলাদাভাবে অভ্যর্থনা জানান। ছবি : আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় তিন বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ রোববার দুপুর ১২টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে এই বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত রয়েছেন। ভোটের তফসিল ঘোষণার পর তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের এটি প্রথম সাক্ষাৎ।

বৈঠকে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন উপস্থিত রয়েছেন। নির্বাচন ভবনে পৌঁছালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ তিন বাহিনীর প্রধানদের আলাদাভাবে অভ্যর্থনা জানান।

বৈঠকে ১২ ফেব্রুয়ারির ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোট উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা হতে পারে।

এদিকে আজ বেলা আড়াইটায় নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে সিইসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় সভায় প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান বা তাঁদের উপযুক্ত প্রতিনিধি, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি), এনএসআই, ডিজিএফআই, কোস্ট গার্ড, বিজিবি, র‍্যাব, আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার উপস্থিত থাকবেন।

ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক জানান, দুপুর ১২টায় তিন বাহিনীর প্রধানেরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বেলা আড়াইটায় আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভা শেষে বেসমেন্টে গণমাধ্যমে এ বিষয়ে ব্রিফিং করা হবে।

নির্বাচন ভবনে পৌঁছালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবলায়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ তিন বাহিনী প্রধানকে আলাদা আলাদাভাবে অভ্যর্থনা জানান। ছবি : আজকের পত্রিকা
নির্বাচন ভবনে পৌঁছালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবলায়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ তিন বাহিনী প্রধানকে আলাদা আলাদাভাবে অভ্যর্থনা জানান। ছবি : আজকের পত্রিকা

সভার আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে নির্বাচন-পূর্ব আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম রোধে যৌথ বাহিনীর কার্যক্রম, প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের জন্য প্রণীত আচরণ বিধিমালা, ২০২৫ অনুযায়ী আচরণবিধি প্রতিপালন এবং নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি পর্যালোচনা এবং বিবিধ বিষয়ে আলোচনা হবে।

নির্বাচন ভবনে পৌঁছালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবলায়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ তিন বাহিনী প্রধানকে আলাদা আলাদাভাবে অভ্যর্থনা জানান। ছবি : আজকের পত্রিকা
নির্বাচন ভবনে পৌঁছালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবলায়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ তিন বাহিনী প্রধানকে আলাদা আলাদাভাবে অভ্যর্থনা জানান। ছবি : আজকের পত্রিকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে ভারতীয় ভিসা সেন্টার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ১৩
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ঝুঁকির কারণে চট্টগ্রামে ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার (আইভ্যাক) বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

নির্দেশনায় বলা হয়, চট্টগ্রামের ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনে (এএইচসিআই) সাম্প্রতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে চট্টগ্রাম আইভিএসি বা আইভ্যাকে ভারতীয় ভিসা কার্যক্রম আজ রোববার, অর্থাৎ ২১ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ভিসা সেন্টার পুনরায় খোলার ঘোষণা দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দক্ষিণ সুদানে নিহত ৬ শান্তিরক্ষীর জানাজা সম্পন্ন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৫১
রোববার ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে ৬ শান্তিরক্ষীর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত
রোববার ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে ৬ শান্তিরক্ষীর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত বাংলাদেশি ছয় সেনাসদস্যের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার সকাল সোয়া ৯টার পর ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে তাঁদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

নিহত ছয় শান্তিরক্ষী হলেন নাটোরের বাসিন্দা করপোরাল মো. মাসুদ রানা, কুড়িগ্রামের বাসিন্দা সৈনিক মো. মমিনুল ইসলাম ও সৈনিক শান্ত মণ্ডল, রাজবাড়ীর বাসিন্দা সৈনিক শামীম রেজা, কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং গাইবান্ধার বাসিন্দা লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়া।

জানাজার আগে নিহত সেনাসদস্যদের জীবনবৃত্তান্ত পড়ে শোনানো হয়। পাশাপাশি তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

জানাজায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান ও বিমানবাহিনীন প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁনসহ সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় নিহত শান্তিরক্ষীদের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

জানাজার পর নিহত শান্তিরক্ষীদের কফিনে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে ছয় সেনাসদস্যের মরদেহ হেলিকপ্টারে করে তাঁদের নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়।

১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিকস বেসে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর ড্রোন হামলায় দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী নিহত হন। আহত হন আরও ৯ শান্তিরক্ষী। তাঁরা হলেন কুষ্টিয়ার বাসিন্দা লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার খালেকুজ্জামান, দিনাজপুরের বাসিন্দা সার্জেন্ট মো. মোস্তাকিম হোসেন, ঢাকার বাসিন্দা করপোরাল আফরোজা পারভিন ইতি, বরগুনার বাসিন্দা ল্যান্স করপোরাল মহিবুল ইসলাম, কুড়িগ্রামের বাসিন্দা সৈনিক মো. মেজবাউল কবির, রংপুরের বাসিন্দা সৈনিক মোসা. উম্মে হানি আক্তার, মানিকগঞ্জের বাসিন্দা সৈনিক চুমকি আক্তার এবং নোয়াখালীর বাসিন্দা সৈনিক মো. মানাজির আহসান।

গতকাল শনিবার সকালে ছয় শান্তিরক্ষীর মরদেহ বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় আনা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত