Ajker Patrika

চেয়ারম্যানরা লাপাত্তা, ব্যাহত ত্রাণ কার্যক্রম

আপডেট : ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১০: ১০
চেয়ারম্যানরা লাপাত্তা, ব্যাহত ত্রাণ কার্যক্রম

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কয়েক দিনের মধ্যেই সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়র এবং জেলা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের অপসারণ করা হয়। তবে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানরা পদে থাকলেও আওয়ামী লীগ মনোনীত অধিকাংশ চেয়ারম্যান আত্মগোপনে রয়েছেন। এর প্রভাব পড়েছে বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে। দুর্যোগের এই সময়ে তাঁদের পাশে পাচ্ছে না বন্যাদুর্গতরা। আবার তাঁদের অনুপস্থিতিতে ব্যাহত হয় উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম। ত্রাণ বিতরণেও দেখা দেয় সমন্বয়হীনতা।

বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের অভিযোগ, চেয়ারম্যান না থাকায় ইউপি সদস্যদের কাছে গিয়েও তাঁরা ত্রাণ পাচ্ছেন না। তবে প্রশাসন বলছে, প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার যেন সহযোগিতা পায়, সেটা নিশ্চিতে তারা কাজ করছে।

ফেনীতে ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়হীনতা
উজানের পানি ও ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা ভয়াবহ রূপ ধারণ করে ফেনীতে। এক সপ্তাহের বেশি সময় জেলার ছয় উপজেলার প্রায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এ সময় চরম খাদ্যসংকট মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ করা হলেও সমন্বয়হীনতার কারণে দুর্গম বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয় না করে অনেক সংগঠন ত্রাণ বিতরণ করায় সঠিক বণ্টন হচ্ছে না দাবি অনেকের।

জেলা প্রশাসন বলছে, চাহিদা অনুযায়ী এলাকাভিত্তিক সুষ্ঠুভাবে ত্রাণ বিতরণের জন্য বেসরকারিভাবে আগ্রহী ব্যক্তিদের সুনির্দিষ্ট সংগঠনের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে জানাতে বলা হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন সংগঠন নিজ উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করছে। 

পরশুরাম উপজেলার চারিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা রাজু আহমেদ বলেন, ‘বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি ডুবে গেলে ২১ আগস্ট থেকে পাশের এক প্রতিবেশীর তিনতলা ভবনের ছাদে আশ্রয় নিয়েছি। তিন দিনে মাত্র একটি সংগঠন থেকে শুকনো খাবার পেয়েছি। সেই খাবার খেয়েই কোনো রকম বেঁচে ছিলাম।’

একই গ্রামের ষাটোর্ধ্ব শাহেনা বেগম বলেন, ‘লোকজন বলাবলি করছে, সরকারি-বেসরকারিভাবে অনেক ত্রাণ আসছে। আমরা তো সেই ত্রাণ চোখেও দেখলাম না। ২৩ আগস্ট বিকেলে কয়েকজন ছেলে নৌকায় করে এসে এক প্যাকেট শুকনা খাবার দিয়ে গেছিল। এর দুই দিন পর আমাদের এলাকার কয়েকজন এসে একটা শাড়ি দিয়ে গেছে।’

ফেনী সদর উপজেলা পরিষদসংলগ্ন সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল কাদের বলেন, ‘চোখের সামনে দিয়ে কত ত্রাণের গাড়ি যেতে দেখেছি। যাদের কাছেই হাত পেতেছি, তারা বলেছে এগুলো (ত্রাণ) পরশুরাম-ফুলগাজী এলাকায় নেওয়া হচ্ছে। বন্যার্তদের জন্য এত ত্রাণ এসেছে, অথচ শহরের অনেকে ত্রাণ পায়নি। সমন্বয় করে ত্রাণ বিতরণ করা হলে এ বৈষম্য হতো না।’

জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, ‘ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। যাঁরা ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করছেন, তাঁদের প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে বিতরণের অনুরোধ করছি।’ 

লক্ষ্মীপুরে ত্রাণ কার্যক্রম ব্যাহত
লক্ষ্মীপুরের ৫৮টি ইউনিয়নের বেশির ভাগ চেয়ারম্যান লাপাত্তা। ফলে বন্যায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, তাঁরা ত্রাণ পাচ্ছেন না।

সদর উপজেলার লাহারকান্দির বাসিন্দা মোস্তফা জানান, ‘চেয়ারম্যান না থাকায় স্থানীয় মেম্বারের কাছে কয়েক দিন গিয়েছি। কিন্তু কোনো চাল ও বা কোনো ত্রাণ পাইনি। পানি দিয়ে যেতে অনেক কষ্টে হয়েছে। কিন্তু খালি হাতে ফিরতে হয়েছে।’ তাঁর মতো একই চিত্র জেলার বন্যাকবলিত অনেক মানুষের।

তবে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান বলেন, প্রতিনিধিদের অনুপস্থিতিতে ত্রাণ কার্যক্রমে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার যেন সহযোগিতা পায়, সেটা নিশ্চিতে তাঁরা কাজ করছেন।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৭৮৯ টন চাল এবং ২০ লাখ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে জেলার বন্যাকবলিত এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করলেও পরিস্থিতির তেমন উন্নতি নেই। এখনো পানিবন্দী কয়েক লাখ মানুষ। সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন সড়ক থেকে পানি কিছুটা নামলেও এখনো বাসাবাড়ি তলিয়ে রয়েছে। 

‘চিড়া-মুড়ি আর ভালো লাগে না’
ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়হীনতার চিত্র ফুটে উঠেছে কুমিল্লার গোমতী বেড়িবাঁধের পালপাড়া এলাকায় সড়কের ওপর আশ্রয় নেওয়া মনো রবি দাসের কথায়। তিনি জানান, গত আট দিনে কোনো সরকারি ত্রাণ পাননি। এলাকার কোনো মেম্বার ও চেয়ারম্যান আসেননি। যুবকেরা কিছু শুকনা খাবার দিয়ে গেছেন, তা খাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘চিড়া-মুড়ি খেতে আর ভালো লাগে না।’

একই বাঁধে আশ্রয় নেওয়া মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘কত দিন ভাত খাই না। প্রতি বেলা কেক, পাউরুটি, চিড়া, মুড়ি খেতে হচ্ছে। পানি নামতে শুরু করেছে; আশা করি, বাড়িতে গিয়ে রান্না করব। সরকার থেকে আমাদের কিছু চাইল-ডাইলের ব্যবস্থা কইরা দিয়েন।’

এদিকে সরকারের পতনের পর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার একটি পৌরসভার মেয়র ও ১৩টি ইউপির চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর ও ইউপি সদস্যরা আত্মগোপনে চলে গেছেন। ইউপির জরুরি কার্যক্রম পরিচালনা করছেন প্রশাসকেরা। কঠিন এই সময়ে জনপ্রতিনিধিদের পাশে না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন বন্যাদুর্গতরা।

নোয়াখালীতে নামছে বন্যার পানি
নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গত বুধবার দুপুরের পর থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত জেলায় তেমন একটা বৃষ্টিপাত হয়নি। বিভিন্ন উঁচু এলাকা থেকে এ পর্যন্ত তিন-চার ইঞ্চি করে পানি নেমেছে। তবে এখনো নিচু এলাকার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছে। ওই সব এলাকায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নভেম্বরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৯৪ জন: রোড সেফটি ফাউন্ডেশন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গত নভেম্বর মাসে দেশে ৫৩৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৩ জন নিহত ও ১ হাজার ৩১৭ জন আহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ৬৪ জন (১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ) ও শিশু ৭১টি (১৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ)। এর মধ্যে ২২৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৯৪ জন নিহত হয়েছে, যা মোট প্রাণহানির ৪০ দশমিক ১৬ শতাংশ। এ সময়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ছিল ৪২ দশমিক ৫০ শতাংশ।

এ ছাড়া দুর্ঘটনায় ১০৬ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২১ দশমিক ৯৪ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৭ জন (১১ দশমিক ৮০ শতাংশ)।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। নয়টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

দুর্ঘটনার মধ্যে ২৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ ঘটেছে জাতীয় মহাসড়কে, ৪৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ আঞ্চলিক সড়কে, ১৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ গ্রামীণ সড়কে এবং ১৩ দশমিক ২৯ শতাংশ শহরের সড়কে। অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে (৪৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ) ও মুখোমুখি সংঘর্ষে (২২ দশমিক ৮৪ শতাংশ)।

দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের তালিকায় সবচেয়ে বেশি রয়েছে মোটরসাইকেল (২৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ), এরপর ট্রাক ও ভারী যানবাহন (২৫ দশমিক ৯১ শতাংশ) এবং থ্রি-হুইলার (১৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ)। সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে সকালে ও সন্ধ্যায়।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, অতিরিক্ত গতি, চালকদের মানসিক চাপ ও পথচারীদের অসচেতনতা দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। দুর্ঘটনা কমাতে গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির ব্যবহার, চালকদের প্রশিক্ষণ ও গণমাধ্যমে ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচারণার ওপর জোর দিয়েছে সংগঠনটি। পাশাপাশি পরিবহনশ্রমিকদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত এবং সড়ক পরিবহন খাতে কাঠামোগত সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইসির চিঠি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বৃহস্পতিবার ইসির উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন নির্দেশনা-সংক্রান্ত চিঠি স্বরাষ্ট্রসচিবকে পাঠিয়েছেন।

এতে বলা হয়েছে, ১১ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি জারি করা হয়েছে।

ইতিমধ্যে নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়সমূহের নির্বাচন-সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি, নির্বাচনী মালামাল, যন্ত্রপাতি সংরক্ষিত রয়েছে বিধায় ওই অফিসসমূহে নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় উক্ত অফিসসমূহে সংরক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ নথি, নির্বাচনী মালামালের সুরক্ষাসহ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক মর্মে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন।

এ অবস্থায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসসমূহের নিরাপত্তা বিধানে প্রয়োজনীয়সংখ্যক পুলিশ ফোর্স মোতায়েনের সদয় নির্দেশনা দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নিতে বলেছে কমিশন।

অপর দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্বাচনী অপরাধ তদন্ত ও সংক্ষিপ্ত বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিচারকদের নিয়ে গঠিত নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটিকে পুলিশি সহায়তার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির আইন শাখা থেকে নির্দেশনাটি ইতিমধ্যে সব বিভাগীয় কমিশনার ও পুলিশ সুপারদের পাঠানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটি নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকালে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার স্বার্থে কমিটির কর্মকর্তাদের সহিত পুলিশ বাহিনীর দুজন অস্ত্রধারী সদস্যকে নিয়োগ করার জন্য সব পুলিশ কমিশনার/পুলিশ সুপারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচনে অপতথ্য মনিটরিং সেল কাজ করবে ৭ দিন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

সংসদ ও গণভোটকে কেন্দ্র করে অপতথ্য নিয়ন্ত্রণে ভোটের আগে ও পরে মোট সাত দিন মনিটরিং সেল এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ করবে। একই সঙ্গে নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন বাহিনীর করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।

আজ বৃহস্পতিবার ইসির উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেনের স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করে মাঠ প্রশাসনকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করতে সব রাজনৈতিক দল ও প্রার্থী যাতে নির্বিঘ্নে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন, ভোটাররা নিরাপদে ভোট দিতে পারেন এবং ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়—সে লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে দায়িত্ব পালন করবে। ভোটকেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাঠামো অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে লিড মন্ত্রণালয় হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন-পূর্ব, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বাহিনী ও সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় বজায় রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। মাঠপর্যায়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুযায়ী অগ্রাধিকারভিত্তিতে সহায়তা দেওয়া হবে।

পরিপত্রে আরও বলা হয়, নির্বাচনের সময় বাহিনী মোতায়েনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রভিত্তিক স্থায়ী মোতায়েন, স্থায়ী ও অস্থায়ী চেকপোস্ট, মোবাইল টহল, আভিযানিক দল এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স সক্রিয় থাকবে। নির্বাচনের আগে চার দিন, ভোটের দিন এবং ভোটের পর দুই দিন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা ও অপতথ্য মনিটরিং সেল পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এ ছাড়া অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার, গুজব ও অপতথ্য রোধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে অতিরিক্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ, সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে কাভারেজ এবং বডি ক্যামেরার মাধ্যমে লাইভ পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করা হবে। ভোটাররা যেন স্বচ্ছ, নিরাপদ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন—সে লক্ষ্যেই এসব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের আবেদন করতে হবে ১৭ জানুয়ারির মধ্যে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের আবেদন করতে হবে ১৭ জানুয়ারির মধ্যে

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক এবং বিদেশি গণমাধ্যমকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইসি। এ ক্ষেত্রে তাদের আগামী ১৭ জানুয়ারির মধ্যে আবেদন করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত চিঠি থেকে বিষয়টি জানা যায়।

এতে বলা হয়, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সব কার্যক্রম দেশি ও বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। এই প্রেক্ষাপটে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক, পর্যবেক্ষক সংস্থা এবং বিদেশি গণমাধ্যমকে স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে সমন্বয় করে আসন্ন নির্বাচন ও গণভোট পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

এ চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, আগ্রহী আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক/পর্যবেক্ষক সংস্থা এবং বিদেশি গণমাধ্যমকে ‘আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক ও বিদেশি গণমাধ্যম নীতিমালা-২০২৫’ অনুযায়ী আবেদন করতে হবে। আবেদন জমা দেওয়ার শেষ সময় ১৭ জানুয়ারি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা তথ্যের প্রয়োজন হলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিকের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত