Ajker Patrika

মেয়রের ছেলেসহ ৪ কয়েদি একমাস ধরে যেভাবে কারাগারের ছাদ ফুটো করেন

গনেশ দাস, বগুড়া
আপডেট : ২৭ জুন ২০২৪, ১২: ০৩
মেয়রের ছেলেসহ ৪ কয়েদি একমাস ধরে যেভাবে কারাগারের ছাদ ফুটো করেন

বগুড়া জেলা কারাগারের কনডেম সেলের ছাদ ফুটো করে পালানোর পর আটক হয়েছেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার কয়েদি। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বগুড়া জেলা কারাগারের একতলা ভবনের কনডেম সেলের ২ নং ওয়ার্ড থেকে তাঁরা পালিয়ে যান।

এই চার কয়েদির মধ্যে মো. জাকারিয়া (৩৪) বগুড়ার কাহালু পৌরসভার মেয়র আবদুল মান্নানের ছেলে। তিনি উলট্ট গ্রামের বাসিন্দা। এক স্কুলছাত্রকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় ও হত্যার দায়ে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাকিরা হলেন, কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী থানার দিয়াডাঙ্গা গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে নজরুল ইসলাম  ওরফে মজনু ওরফে মঞ্জু(৬০), নরসিংদী জেলার মাধবদী থানার ফজরকান্দি গ্রামের মৃত ইসরাফিলের ছেলে আমির হামজা ওরফে আমির হোসেন (৪১) এবং বগুড়া সদরের কুটুরবাড়ি গ্রামের ইসরাইল শেখের ছেলে ফরিদ শেখ (৩০)।

জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আজ দুপুরে ঢাকা থেকে বগুড়ায় পৌঁছান অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল শেখ সুজাউর রহমান। তিনি বগুড়া জেলা কারাগার পরিদর্শন শেষে বলেন, বগুড়ার কারাগারটি অনেক পুরোনো, ১৮৩৩ সালে নির্মিত। ফলে ছাদ ছিদ্র করে তারা বেরিয়ে যায়। পুরো ঘটনাটি তদন্ত করা হবে। কীভাবে তারা সবার নজর ফাঁকি দিয়ে বেরিয়ে গেল। কার কী দায় ছিল সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

তিনি জানান, কারাগার থেকে আসামিদের পালিয়ে যাওয়ার কারণে এখানে নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি চিহ্নিত হয়েছে। এখন তদন্ত করে দেখতে হবে দুর্বলতা কোথায় ছিল? তারা পালিয়ে যাওয়ার সময়ের একটি সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে, সেটিকে তদন্তের কাজে সূত্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

নদীর পাড় ধরে পালানোর সময় ধরা পড়েন চার কয়েদি। ছবি: আজকের পত্রিকাএর আগে সকালে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে চার কয়েদি ছাদ ফুটো করে বের হয়। তারা বিছানার চাদর ব্যবহার করে দেয়াল টপকে বেরিয়ে যায়। রাত ৩টা ৫৫ মিনিটে পুলিশের একাধিক টিম সংবাদ পেয়ে শহরে তল্লাশি শুরু করে। ভোর ৪টা ১০ মিনিটে শহরের চেলোপাড়া চাষী বাজার থেকে চারজনকেই গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। 

যেভাবে আটক হলেন চার কয়েদি
বগুড়া শহরের চেলোপাড়ার আবু সাঈদ দুখু জানান, তিনি ঢাকা থেকে ফিরে রাত আড়াইটায় চেলোপাড়া পৌঁছান। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে তিনিসহ চার বন্ধু চেলোপাড়া করতোয়া নদীতে বাঁশের ব্রিজে বসে ছিলেন। রাত সাড়ে ৩টার পর নদীতে নির্মাণাধীন ব্রিজের কাছে অনেকগুলো কুকুর ঘেউ ঘেউ শুরু করে। তাঁরা সেখানে এগিয়ে গেলে দেখতে পান চারজন মানুষ নদীর হাঁটু পানিতে হামাগুড়ি দিয়ে তীরে ওঠার চেষ্টা করছেন। তাঁদের প্রত্যেকে সঙ্গে একটি করে ব্যাগ রয়েছে। চোর সন্দেহে চারজনকেই নদী থেকে তুলে এনে পাশের চাষী বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। চারজন নিজেদের রাজমিস্ত্রি পরিচয় দিয়ে বলেন, বেজোড়া এলাকায়  ঠিকাদার তাঁদের মারপিট করে নদীতে ফেলে দিয়েছেন। তাঁরা প্রাণ ভয়ে পালিয়ে এসেছেন।

তাঁদের অসংলগ্ন কথাবার্তা এবং একজনের পরনে কয়েদির পায়জামা থাকায় সন্দেহ হয়। তাঁদের ব্যাগ তল্লাশি করে নগদ ৯ হাজার টাকা, ৭০ প্যাকেট সিগারেট, একটি স্টিলের পাত, একটি স্ক্রু ড্রাইভার এবং কয়েদির কাগজ পাওয়া যায়। একপর্যায়ে তাঁরা নিজেদের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এবং জেলখানা থেকে পালানোর কথা স্বীকার করেন। 

আবু সাঈদ দুখু মিয়া আরও বলেন, রাজনৈতিক মামলায় আমি অসংখ্যবার জেলখানায় ছিলাম, সেখান থেকে পালানোর গুরুত্ব আমি বুঝতে পারি। এ কারণে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাটি পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল পরিমল চন্দ্র দাসকে জানাই। 

পৌর কাউন্সিলর পরিমল বলেন, দুখুর মাধ্যমে খবর পেয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানাই এবং আমি নিজে ঘটনাস্থলে যাই। এ সময় একজন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ এবং আমাদের লোকজন ধাওয়া করে তাঁকে আটক করে।

একমাস ধরে চলে খোঁড়াখুঁড়ি
আবু সাঈদ দুখু জানান, আটকের পর তাঁদের ব্যাগে একটি স্ক্রু ড্রাইভার ও স্টিলের পাত পাওয়া যায়। তাঁরা জানান, একমাস আগে তাঁরা একতলা ভবনের ছাদের এক কোনায় ফুটো করার পরিকল্পনা করেন। সেই অনুযায়ী স্ক্রু ড্রাইভার ও বালতির হাতল মেঝেতে ঘষে চোখা করেন। জাফলং নামের ভবনটির ছাদ অনেক পুরোনো চুন সুরকি ও মাটির টালি দিয়ে তৈরি। তাঁরা একমাস ধরে প্রতি রাতে একজনের ঘাড়ে আরেকজন চড়ে ছাদ ফুটো করতে শুরু করেন। গত শনিবার রাত ২টার পর থেকে সেই ফুটো দিয়ে কাপড় চোপড়সহ নিজেরা বের হওয়া শুরু করে। পরিধেয় বস্ত্র এবং বিছানার চাদর জোড়া দিয়ে রশি বানিয়ে দেয়াল টপকে পালিয়ে জেলখানা সংলগ্ন করতোয়া নদীতে নামেন। রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে লোকজন সন্দেহ করবে এ কারণে তাঁরা নদী দিয়ে যেতে থাকেন। 

দুখু বলেন, পলাতক চারজনের মধ্যে ফরিদ শেখের আত্মীয় বাড়ি চেলোপাড়ার পাশের নারুলীতে। তাঁরা সেখানে আশ্রয় নেওয়ার উদ্দেশে চেলোপাড়া ব্রিজের কাছে নদী থেকে তীরে ওঠার চেষ্টা করছিলেন। এমন সময় কুকুরের দল ঘেউ ঘেউ শুরু করলে আমরা চোর সন্দেহে নদী থেকে চারজনকে আটক করি।

এদিকে জেলাখানা থেকে পালানোর পর গ্রেপ্তার হওয়া চারজনের নামে বগুড়া সদর থানায় মামলা করেছেন বগুড়া জেলা কারাগারের জেলার ফরিদুর রহমান রুবেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বান্দরবানে সাবেক পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

বান্দরবান প্রতিনিধি
সাবেক পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের বাসভবনে গতকাল রাতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের বাসভবনে গতকাল রাতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বান্দরবানে সাবেক পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের বাসভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে জেলা শহরে এই ঘটনা ঘটে। এদিকে আজ বেলা ১১টা থেকে বীর বাহাদুর উশৈসিংকে গ্রেপ্তারের দাবিতে রেড জুলাইয়ের নেতা-কর্মীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে একদল ছাত্র-জনতা বান্দরবান জেলা শহরের রাজার মাঠসংলগ্ন এলাকায় বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের পাঁচতলা বাসভবনে হামলা চালায়। পরে ভবনের একাংশে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে ভবনের বেশির ভাগ অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভবনের নিচতলায় থাকা একটি পাজেরো, একটি প্রাইভেট কার, একটি মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন আসবাব পুড়ে যায়।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। অগ্নিকাণ্ডের সময় নিরাপত্তার স্বার্থে বান্দরবান শহরের বিদ্যুৎ-সংযোগ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়।

বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ফারুক আহমেদ জানান, অগ্নিকাণ্ডে গাড়ি ও আসবাবপত্রের ব্যাপক ক্ষতি হলেও কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত শেষে নির্ধারণ করা হবে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাতে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলের একাংশ সাবেক মন্ত্রীর বাসভবনের সামনে পৌঁছে ভাঙচুর চালায় এবং একপর্যায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার পর থেকে বান্দরবান জেলা শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ও রাজার মাঠ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার আবদুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে গিয়ে পুলিশের একজন সদস্য আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তিনি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।

এদিকে সাবেক পার্বত্যমন্ত্রী ও বান্দরবান আসনে সাতবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিংকে গ্রেপ্তারের দাবিতে রেড জুলাইয়ের নেতা-কর্মীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা থেকে তাঁরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকার পথে ওসমান হাদির পরিবার

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ঢাকার পথে রওনা হন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ঢাকার পথে রওনা হন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ঢাকার উদ্দেশে গ্রামের বাড়ি ছেড়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা ১টা ২০ মিনিটে ওসমান হাদির ছোট বোন মাসুমা ও তাঁর স্বামী আমির হোসেন হাওলাদার ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার খাসমহল এলাকা থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ওসমান হাদির বৃদ্ধ মা, স্ত্রী ও একমাত্র সন্তান দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় বসবাস করছে। হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার সকাল থেকে ঝালকাঠির নলছিটি শহরের খাসমহলের বাড়িতে আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা ভিড় করেন। পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে ছুটে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ আরও অনেকে।

হাদির স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে অনেকেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। এ সময় তাঁরা হাদির হত্যাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এলাকাবাসী এই বিপ্লবীকে শেষবারের মতো দেখার দাবিও জানান।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে রিকশাযোগে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা ওসমান হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যায়। গুরুতর অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে তিনি মারা যান।

ওসমান হাদির মরদেহ নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেছে। ফ্লাইটটি আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন আইজিপির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ০৩
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন করেন পুলিশের আইজি বাহারুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন করেন পুলিশের আইজি বাহারুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো ও ফার্মগেট এলাকায় দ্য ডেইলি স্টারের ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। আজ শুক্রবার দুপুরে এই ভবন দুটি পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শনকালে পুলিশের এই শীর্ষ কর্মকর্তা ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের আশপাশে ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা শোনেন। তবে পরিদর্শনকালে এ বিষয়ে আইজিপিকে প্রশ্ন করা হলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।

এর আগে, গতকাল রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে একদল বিক্ষুব্ধ ছাত্র–জনতা দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার ভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।

সরেজমিন দেখা গেছে, আগুনে ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর ভবন দুটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে গণমাধ্যম দুটির সব কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণাকালে রিকশায় ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন শরিফ ওসমান হাদি। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ওই দিনই এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ১৫ ডিসেম্বর তাঁকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিঙ্গাপুর থেকে ওসমান হাদির মরদেহ নিয়ে ঢাকার পথে বিমান বিজি ৫৮৫

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ২৩
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বিজি ৫৮৫ সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেছে। ফ্লাইটটি আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্র জানিয়েছে, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৩ মিনিটে (ঢাকার সময় বেলা ২টা ৩ মিনিটে) ফ্লাইট বিজি ৫৮৫ উড্ডয়ন করে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, বিমানটি সন্ধ্যা আনুমানিক ৫টা ৫০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে।

বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান বলেন, মরদেহটি মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এদিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে গভীর শোকের আবহ তৈরি হয়েছে।

আজ দুপুরে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে বলা হয়, ‘শহীদ ওসমান হাদিকে বহনকারী বিমানটি সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। আমাদের জুলাই জজবার প্রাণ, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অকুতোভয় বীরকে গ্রহণ করতে আমরা সবাই এয়ারপোর্ট থেকে শাহবাগগামী রাস্তার দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান গ্রহণ করব। সেখান থেকে শহীদ ওসমান হাদিকে সর্বসাধারণের সাক্ষাতের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে আনা হবে।’

ইনকিলাব মঞ্চ জানিয়েছে, আগামীকাল শনিবার জোহর নামাজের পর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ওসমান হাদির জানাজা হবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত