Ajker Patrika

বাজেট পর্যালোচনা: সংকট উত্তরণে দিশা নেই, বাড়বে ভোক্তার চাপ

ফারুক মেহেদী, ঢাকা
বাজেট পর্যালোচনা: সংকট উত্তরণে দিশা নেই, বাড়বে ভোক্তার চাপ

নতুন অর্থমন্ত্রীর প্রথম বাজেট। স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যাশাও ছিল নতুন কিছুর; কিন্তু তা আর হলো না। পূর্বসূরিদের পথেই হাঁটলেন নতুন অর্থমন্ত্রী। করের জাল বিছিয়ে চাপ বাড়ালেন জনগণের ওপর। কিন্তু উচ্চ মূল্যস্ফীতির ফাঁদে পড়ে মানুষের যে ত্রাহি অবস্থা, তা থেকে মুক্তির কোনো দিশা দেখাতে পারলেন না। অথচ ঠিকই ছাড় দিলেন কালোটাকার মালিকদের। ফলে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারলেন না অর্থনীতিবিদ, বিশ্লেষক, ব্যবসায়ী—কেউই।

প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা এখন তুঙ্গে। সংকটের সময়ে বাজেটের আকার নিয়ে যেমন কথা হচ্ছে, তেমনি অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল হাসান মাহমুদ আলীর গতানুগতিক বাজেটে সৃজনশীল কিছু না থাকার বিষয়টিও সামনে এসেছে। পাশাপাশি সমালোচনা হচ্ছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ না থাকা ও কালো-টাকার বৈধতা নিয়েও। কেউ কেউ বিপুল অঙ্কের ব্যাংকঋণ, শিল্পের কাঁচামালে ১ শতাংশ শুল্ক আরোপসহ মোটাদাগে অসংখ্য পণ্যে শুল্ক-কর বসিয়ে মানুষের ওপর করের বোঝা চাপানোর বিষয়টি নিয়েও সরব রয়েছেন।

বর্তমানে দেশে সরকারি হিসাবেই মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের কাছাকাছি। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি। এমন পরিস্থিতিতে বাজেটে অর্থমন্ত্রী মূল্যস্ফীতি কমিয়ে সাড়ে ৬ শতাংশে আনার সংকল্প নিয়েছেন। যদিও মূল্যস্ফীতি কমিয়ে কীভাবে কমবে, সে পথনকশা নেই তাঁর প্রস্তাবিত বাজেটে।

ট্যারিফ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আজিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কিছুই পেলাম না বাজেটে। বাজারে এমনিতেই জিনিসপত্রের লাগামহীন দাম। এর মধ্যে শুল্ক-কর আরোপের ফলে আরেক দফা দাম বাড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। উচিত ছিল কার্যকর কিছু পদক্ষেপ জানানো।’

এ ব্যাপারে অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শুধু মুদ্রানীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। কার কার গুদামে মজুত করে পণ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে, সেগুলো 
খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে। সব রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠানকে কার্যকর করতে হবে। শ্রীলঙ্কা যদি আকাশে উঠে যাওয়া মূল্যস্ফীতি কমিয়ে ৪-৫ শতাংশের ঘরে আনতে পারে, তাহলে আমরা কেন পারি না।’

এফিবিসিসিআইয়ের সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু আজকের পত্রিকাকে বলেন, কর বাড়ালে স্বাভাবিকভাবেই তা ভোক্তার ওপরই পড়ে। আপনি যতই ট্যাক্স বাড়ান, ঋণ বাড়ান—যা কিছুই করবেন না কেন, খরচ বাড়বে জনগণের।

তা পণ্যের ওপর যোগ হয়ে দাম বাড়বে। সরকার যতই বলুক, মুদ্রাস্ফীতি কমাতে পারবে—আসলে তো মুদ্রাস্ফীতি বাড়িয়ে দেবে।

অবাস্তব রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা 
বাজেটে গতানুগতিকভাবে আবারও বড় রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। আগেরটির সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রায়ও ১০ মাসে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি। সেখানে নতুন অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে অর্থমন্ত্রী আইএমএফের শর্ত মানতে গিয়ে অনেক করছাড় কমিয়েছেন। নতুন নতুন খাতে কর বসিয়েছেন। মানুষের নিত্য ব্যবহার হয়, এমন অনেক পণ্যে শুল্ক-কর বাড়িয়েছেন। ফলে সামনে জিনিসপত্রের দাম আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা। নতুন করদাতা খোঁজা বা কর ফাঁকিবাজদের করের জালে আনার তেমন পদক্ষেপ নেই বলেও সমালোচনা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে এনবিআরের আয়ের নীতির সদস্য ড. সৈয়দ আমিনুল করিম বলেন, ‘বাজেটে কর ফাঁকিবাজদের ধরতে তেমন কোনো কৌশলের দেখা পাইনি। নতুন করদাতা খুঁজতে হবে। আর বিদ্যমান কর কাঠামোতে কোনোভাবেই বিশাল রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব নয়। এ জন্য সৃজনশীল করনীতির দরকার ছিল। বাজেটে এ নিয়ে নতুন তেমন কিছুই দেখিনি।’ 

ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকঋণে নির্ভরতা 
অর্থমন্ত্রী প্রস্তাবিত বাজেটে শুধু ব্যাংক থেকেই ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছেন। ফলে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ কমে গিয়ে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। ফলে সরকারের পৌনে ৭ শতাংশের উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের যে লক্ষ্য, তা পূরণ হবে না বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

এ ব্যাপারে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট মীর নাসির হোসেন বলেন, ‘সংকটের সময় বাজেটটি আরও ছোট করা দরকার ছিল। তাতে রাজস্ব আয়ের ওপর চাপ কম হতো। আর ঘাটতি বাজেট মেটাতে ব্যাংক থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা নেওয়ার প্রয়োজন হতো না। এখন সরকার ব্যাংক থেকে বেশি ধার করবে। ফলে বেসরকারি খাত ঋণ পাবে না।’ 

কালোটাকা সাদা করার সুযোগ
বাজেটে বিনা প্রশ্নে মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, সৎ করদাতার ওপর সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে দেশজুড়ে। অভিযোগ করা হচ্ছে, এতে যাঁরা সৎ উপায়ে আয় করেন তাঁরা ওপর সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ কর দেবেন, এটা তাঁদের ওপর অবিচার করা হচ্ছে। এটা অনৈতিক। সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ কালোটাকা সাদা করার সুযোগের সমালোচনা করেছেন। তিনি মনে করেন, এ ধরনের অনৈতিক সুযোগ দেওয়া উচিত নয়।

এনবিআরের সাবেক সদস্য ড. সৈয়দ আমিনুল করিমও মনে করেন, এ ধরনের সুযোগ অনৈতিক কাজ, এটা হওয়া উচিত নয়। সম্ভবত সরকার বাধ্য হয়েই সুযোগটি দিয়েছে। কারণ দেশ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এটা ঠেকিয়ে অর্থনীতির মূলধারায় বিনিয়োগের সুযোগ দিতেই এটা করা হয়ে থাকতে পারে।

অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে বলে মনে করেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগে চুরি করবে। তারপর ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করবে। এটা তো চোরদের উৎসাহিত করা এবং সৎ লোকদের সাজা দেওয়ার সমান।’ 

শিল্পের কাঁচামালে ১ শতাংশ শুল্ক
এত দিন শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে শূন্য শুল্ক ছিল। প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী এতে ১ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। ফলে পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি রপ্তানিমুখী শিল্পের উৎপাদন খরচ বাড়বে বলে মনে করছেন এ খাতসংশ্লিষ্টরা। নিট পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক প্রেসিডেন্ট ফজলুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে খুবই সাদামাটা একটি বাজেট। সত্যি বলতে, আমি এতে কিছুই পাইনি। শুধু শিল্পের কাঁচামালেই নয়; বিভিন্ন খাতে কর আরোপ করা হয়েছে।

এমন একটা সময়ে এটা দরকার ছিল না।’ একই বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব গ্রাসরুট উইমেনের প্রেসিডেন্ট মৌসুমী ইসলাম বলেন, শিল্পের কাঁচামালে ১ শতাংশ শুল্ক বসালে উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। খরচ বেড়ে যাবে। ট্যারিফে যে সমতা থাকার কথা ছিল, সেটা রাখা হয়নি। এতে দেশীয় শিল্পের প্রসার বাধাগ্রস্ত হবে। 

সবার জন্য বাধ্যতামূলক পেনশন স্কিম
সরকারি চাকরিতে ঢুকলেই বাধ্যতামূলক সর্বজনীন পেনশন স্কিমে থাকতে হবে বলে বাজেটে ঘোষণা করা হয়েছে। সর্বজনীন পেনশন স্কিম চলতি অর্থবছরে চালু হলেও এর নানা প্যাকেজে অন্যান্য শ্রেণি-পেশার মানুষের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া এসেছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এ নিয়ে আন্দোলনও করছেন। তবে সাবেক সচিব ও ট্যারিফ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আজিজুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ‘এটা হতে পারে। তবে দেখতে হবে সুযোগ-সুবিধা যাতে না কমে; বরং সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দিলে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে প্রবেশে কোনো বাধা থাকার কথা নয়।’ 

সহায়তার বদলে পুঁজিবাজারে গেইন ট্যাক্স 
বাজেটে অর্থমন্ত্রী পুঁজিবাজারে ৫০ লাখ টাকার বেশি মূলধনি আয় হলে ১৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স আরোপের কথা বলেছেন। তিনি এমন এক সময়ে এ প্রস্তাব দিলেন, যখন পুঁজিবাজারে বড় পতনের ফলে তলানিতে এসে ঠেকেছে। বাজারে যেখানে বিনিয়োগকারীদের সহায়তা করার কথা বা প্রণোদনা দেওয়ার দাবি, সেখানে নতুন করে গেইন ট্যাক্স বাজারকে আরও অস্থির করবে বলে বেশ সমালোচনা হচ্ছে।

বরাবরের মতো এবারও বাজেটে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন সহায়ক নীতি-সহায়তা নেই জানিয়ে অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘শেয়ারবাজারে কিছু নেই। নীতি-সহায়তা না দিলে হবে না। এমন সময় আমাদের শেয়ারবাজার ছিল জিডিপির ৩৩ শতাংশ। এখন ১২ শতাংশে চলে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিল নগদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

সারা দেশের সাত হাজার ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সের মধ্য থেকে সেরা পারফরম্যান্সের জন্য ৭০ জনকে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে ডাক বিভাগের ডিজিটাল আর্থিক লেনদেন সেবা নগদ।

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ‘নগদ ফিল্ড চ্যাম্পিয়ন ২০২৫’ নামের এই সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠান চলাকালে ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সদের পারফরম্যান্সের জন্য বিশেষ বোনাসের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ৭০ জনের নগদ অ্যাকাউন্টে চলে যায় এই অর্থ।

দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ঢাকায় আসা-যাওয়া, খাওয়া, হোটেলে অবস্থানসহ অন্য সব খরচ নগদের পক্ষ থেকে বহন করা হয়।

সেরা পারফর্মারদের অভিনন্দন জানিয়ে নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, অনেক চ্যালেঞ্জের মাঝেও বাজারে নগদ একটা ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছে। বাংলাদেশে ক্যাশলেস লেনদেনের আরও প্রসার ঘটাতে নগদ ভূমিকা রাখবে বলে সরকারের নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাশা রয়েছে। সুতরাং, যত অপপ্রচারই নগদকে নিয়ে হোক না কেন, সেসবে কান না দিয়ে নগদের সাফল্যের জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।

নগদের সেবার প্রসার ঘটাতে এ সময় মোতাছিম বিল্লাহ ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সদের কাছ থেকে নগদ বিষয়ে পরামর্শ ও সুপারিশ জানতে চান। তাঁদের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে নগদ প্রশাসক বলেন, অল্প সময়ের ভেতরই সেবার কলেবর আরও বাড়বে নগদে। ফলে লেনদেনের অঙ্ক যেমন অনেক গুণ বাড়বে, একই সঙ্গে গ্রাহকেরাও অনেক বেশি উপকৃত হবেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত নগদের জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান, ডাক বিভাগনিযুক্ত নগদের জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. আবু তালেব, নগদের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মোহাম্মদ শাহীন সারওয়ার ভূঁইয়া বক্তব্য দেন।

বক্তারা বলেন, আগামী বছরে বিদেশ থেকে আসা রেমিট্যান্স, বাংলা কিউআর, সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের জন্য আন্তসংযোগ গেম চেঞ্জারের ভূমিকা পালন করবে নগদ। ফলে ২০২৬ সাল নগদের সেরা সাফল্যের বছর হবে বলেও মনে করেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করল ডিএসই

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করেছে ডিএসই। ছবি: সংগৃহীত
ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করেছে ডিএসই। ছবি: সংগৃহীত

তথ্যসেবা আরও সহজ ও কার্যকর করার লক্ষ্যে ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক স্থাপন করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আসাদুর রহমান এই ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. আসিফুর রহমান, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মো. ছামিউল ইসলাম, প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ ডিএসইর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মোহাম্মদ আসাদুর রহমান বলেন, ইনফরমেশন হেল্প ডেস্কের মাধ্যমে পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট তথ্য প্রদান আরও সহজ হবে এবং বিনিয়োগকারী ও অন্য অংশীজনদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার দ্রুত ও কার্যকর সমাধান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এর ফলে ডিএসইর সেবার মান আরও গ্রাহকবান্ধব ও স্বচ্ছ হবে।

ডিএসইর এমডি আশা প্রকাশ করেন, এই হেল্প ডেস্ক ডিএসইর বাজার অংশগ্রহণকারীদের আস্থা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পুঁজিবাজারসংক্রান্ত সব ধরনের তথ্যের জন্য +৮৮-০২-৪১০৪০১৮৯, ০৯৬৬৬৭০২০৭০ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

দেশের অন্যতম ভ্রমণ ও পর্যটনবিষয়ক প্রকাশনা বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ট্রাভেল, ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি অ্যাওয়ার্ড (BTTHA) ২০২৫’-এর লিড স্পনসর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে দেশের ভ্রমণশিল্পের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান গ্যালাক্সি গ্রুপ।

একই সঙ্গে পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা এই আয়োজনের হসপিটালিটি পার্টনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

দেশের ভ্রমণ, পর্যটন ও আতিথেয়তা শিল্পে একমাত্র স্বীকৃত এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি এবার দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

গতকাল বুধবার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট চুক্তিসমূহ স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশ মনিটরের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম। গ্যালাক্সি গ্রুপের পক্ষে লিড স্পনসর চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ। অন্যদিকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার পক্ষে হসপিটালিটি পার্টনার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন হোটেলটির জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড ও’ হ্যানলন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, গ্যালাক্সি ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার সম্পৃক্ততায় অ্যাওয়ার্ড প্রোগ্রামের মর্যাদা ও পরিসর আরও বৃদ্ধি পাবে। এর মাধ্যমে দেশের ভ্রমণ ও আতিথেয়তা শিল্পে উৎকর্ষতা অর্জন এবং উত্তম চর্চা উৎসাহিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

গ্যালাক্সি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ বলেন, পর্যটন ও আতিথেয়তা খাতে উদ্ভাবন, সেবার মান এবং টেকসই উন্নয়নকে স্বীকৃতি প্রদানকারী একটি মহতী উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে তারা গর্বিত।

ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড ও’ হ্যানলন বিশ্বমানের আতিথেয়তা প্রদানের পাশাপাশি অসাধারণ অর্জনকে স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে এমন একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

চলতি বছর ২৫টি ক্যাটাগরিতে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। শুধু আবেদনকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিত্বকারী অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিচারক প্যানেল বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন এবং পাবলিক ভোটিংয়ের ভিত্তিতে বিজয়ীদের চূড়ান্ত করবেন।

এবার নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে দুটি বিশেষ ক্যাটাগরি—সর্বাধিক পর্যটনবান্ধব বিদেশি গন্তব্য, বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় পর্যটন স্পট। এই দুটি ক্যাটাগরির বিজয়ী সরাসরি পাবলিক ভোটিংয়ের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।

বাংলাদেশের পর্যটন ইকোসিস্টেমের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা জানানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ মনিটর ২০২৪ সালে প্রথমবারের মতো এই পুরস্কারের প্রবর্তন করে।

প্রথম আসরের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এ বছর আরও বৃহৎ পরিসরে এই আয়োজন করা হচ্ছে, যেখানে অংশগ্রহণের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দৃশ্যমানতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল নজরদারি করবে এনবিআর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল আরও স্বচ্ছ ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ নামে নতুন একটি সাব-মডিউল চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মাধ্যমে প্রতিটি ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের প্রবেশ, অবস্থানকাল এবং খালি ট্রাকের ফেরত-সংক্রান্ত তথ্য ইলেকট্রনিকভাবে সংরক্ষণ করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় এনবিআর।

এনবিআর জানায়, প্রাথমিকভাবে যশোরের বেনাপোল কাস্টম হাউসে ১৫ ডিসেম্বর থেকে এই সাব-মডিউলের পাইলট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আগে ট্রাক প্রবেশ ও বহির্গমনের তথ্য ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হতো, যা সময়সাপেক্ষ ও ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার ঝুঁকি ছিল।

নতুন মডিউল চালুর ফলে ভারতীয় প্রতিটি ট্রাকের আগমন ও বহির্গমনের প্রকৃত তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংরক্ষিত থাকবে। এতে ট্রাকের অবস্থানকাল নির্ধারণ, সীমান্ত এলাকায় ট্রাক চলাচল কার্যকরভাবে মনিটরিং এবং রিয়েল-টাইম রিপোর্ট তৈরি করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি তথ্য ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়বে, রাজস্বহানি রোধে সহায়ক হবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে বলে জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সীমান্ত বাণিজ্য ব্যবস্থাপনায় এই ডিজিটাল উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ট্রাক চলাচলের নির্ভুল তথ্য থাকায় শুল্ক ও কর ব্যবস্থাপনায় নজরদারি জোরদার হবে, একই সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষাও বাড়বে।

খুব শিগগির দেশের সব স্থলবন্দরে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ সাব-মডিউলটি লাইভ অপারেশনে আনার পরিকল্পনা রয়েছে এনবিআরের। এতে স্থলবন্দরভিত্তিক আমদানি কার্যক্রম আরও গতিশীল ও আধুনিক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত