Ajker Patrika

রাতকানা রোগ প্রতিরোধে যা করতে হবে

ডা. মো. আরমান হোসেন রনি
রাতকানা রোগ প্রতিরোধে যা করতে হবে

জেরোপথ্যালমিয়া নামের একটি রোগ আছে যা ভিটামিন এ এর অভাবে হয়ে থাকে। এই রোগের ৮ থেকে ৯টি পর্যায় আছে। এর শেষ পর্যায় চোখের কর্নিয়া একদম নষ্ট হয়ে যাওয়া এবং রোগীর দৃষ্টিশক্তি হারানো। এই রোগের প্রথম পর্যায় রাতকানা রোগ। ভিটামিন এ এর অভাবে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে শিশুরা রাতকানা রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের দেশে ছয় বছর বয়সের শিশুরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। 

কারণ

  • শরীরে ভিটামিন এ এর অভাব। 
  • অল্প ওজনে শিশুর জন্ম নেওয়া অর্থাৎ অপুষ্টিতে ভোগা।
  • নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ইত্যাদি রোগ হওয়া। 
  • বাড়ন্ত বয়সের শিশুদের অতিরিক্ত খাদ্যের চাহিদা পূরণ না হওয়া।

লক্ষণ

  • প্রাথমিক পর্যায়ে ভোরের ও সন্ধ্যার অল্প আলোতে দেখতে অসুবিধে হওয়া। 
  • পরে চোখ শুষ্ক অনুভূত হওয়া। 
  • চোখে ছোট ছোট ছাই রঙের দাগ হওয়া।
  • চোখের কর্নিয়াতে ঘা হয়ে কর্নিয়া ঘোলাটে হয়ে যাওয়া। 
  • অনেক সময় কর্নিয়ায় ফোঁড়ার মতো দেখা দেওয়া।

 দেশ-জুড়ে ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত শিশুদের খাওয়ানো হচ্ছে ‘ভিটামিন এ’ ক্যাপসুল। আজিমপুর মাতৃসদন হাসপাতাল। ছবি: জাহিদুল ইসলামপ্রতিরোধ
মায়ের দুধে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ থাকে। তাই জন্মের পর শিশুকে মায়ের শালদুধ খাওয়াতে হবে। 
সন্তানকে জন্মের প্রথম পাঁচ সপ্তাহ মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। সম্ভব হলে ২ বছর পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানো অব্যাহত রাখতে হবে।

৯ মাস বয়সে শিশুকে হামের টিকার সঙ্গে একটি নীল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে।  
১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুকে বছরে দুবার ৬ মাস অন্তর অন্তর জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন বা জাতীয় টিকা দিবসের সময় একটি লাল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে। 
শিশুকে কোনোভাবে অপুষ্টিতে ভুগতে যাওয়া যাবে না। 
ছোটবেলা থেকে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে। 
শিশু হাম, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হলে দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডা. মো. আরমান হোসেন রনি, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সার্জন, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ থেকে 
ক্যাজুয়ালটির ইনচার্জ ডা. ধনদেব বর্মন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে তর্কে জড়ান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ক্যাজুয়ালটির ইনচার্জ ডা. ধনদেব বর্মন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে তর্কে জড়ান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে আসা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আবু জাফরের সঙ্গে তর্কাতর্কির ঘটনার পর সেই চিকিৎসককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অসদাচরণ করায়’ তাঁকে শোকজ নোটিশও দেওয়া হয়েছে। তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দিতে হবে।

আজ শনিবার বিকেলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নেয়। বিকেল ৪টার দিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস।

ওই চিকিৎসককে জরুরি বিভাগের ক্যাজুয়ালটি ইনচার্জের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি ও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মাইনউদ্দিন খান। তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা সরকারি চাকরি বিধিমালার পরিপন্থী।

উল্লেখ্য, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মিলনায়তনে আয়োজিত একটি সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিতে আসেন স্বাস্থ্যের ডিজি মো. আবু জাফর। সেমিনারে যোগ দেওয়ার আগে তিনি হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি অপারেশন থিয়েটার পরিদর্শনে গিয়ে ডিজি কক্ষের ভেতরে টেবিল থাকার কারণ জানতে চান চিকিৎসকদের কাছে। এ সময় জরুরি বিভাগের ক্যাজুয়ালটি ইনচার্জ ধনদেব চন্দ্র বর্মণ উত্তর দিতে গেলে দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়।

প্রসঙ্গত, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ সার্ভিসের ইনচার্জ হিসেবে ২০২৩ সালের ৮ আগস্ট থেকে দায়িত্ব পালন করছেন ধনদেব চন্দ্র বর্মণ। চলতি বছরের জুলাই মাসে আবাসিক সার্জন থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান তিনি।

মমেক হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের ইনচার্জ ও সহকারী অধ্যাপক ডা. ধনদেব বর্মণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি চাকরির শেষ বয়সে চলে এসেছি। আমার বন্ধুবান্ধব সবাই অধ্যাপক পদে রয়েছেন। আমাকে সারাজীবন লেকচারার হিসেবেই থাকতে হয়েছে। স্বাস্থ্যের ডিজি আমার সমবয়সী হবেন। আমি হাসপাতালের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা বলেছি তাঁকে। এটি শুনে তিনি রেগে গেছেন। রোগী ও ডাক্তারদের সামনে আমার সঙ্গে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি ডিজি তাই আমার সঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।’

ধনদেব বর্মণ আরও বলেন, ‘আমাকে নাকি শোকজ করা হয়েছে। আমি আর চাকরি করব না। নিজে থেকেই চলে যাব দু-এক দিনের মধ্যে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাক ডাকা: কারণ, ঝুঁকি এবং প্রতিকার

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১১
নাক ডাকা: কারণ, ঝুঁকি এবং প্রতিকার

ঘুমিয়ে পড়া কি আপনাকে লোকের সামনে হাসির পাত্র বানিয়ে তুলছে? এ জন্য কি কারও সঙ্গে ঘুমাতে সংকোচ বোধ করছেন? সোজাভাবে জিজ্ঞাসা করি, ঘুমালে কি আপনি নাক ডাকেন? নাক ডাকা একটি সাধারণ সমস্যা। কিন্তু এটি শুধু আপনার সঙ্গীর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় না, বরং অনেক সময় গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। যেমন অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া। গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ এই সমস্যায় ভোগেন।

পুরুষের মধ্যে এর প্রবণতা বেশি। পুরুষ ও নারী নাক ডাকার অনুপাত ২.৩: ১। নাক ডাকার প্রধান কারণ স্থূলতা হলেও এক-তৃতীয়াংশ হালকা-পাতলা মানুষও নাক ডাকেন। শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় বাতাসের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে গলার শিথিল টিস্যুগুলো কেঁপে ওঠে এবং জোরে শব্দ সৃষ্টি হয়। শিশুবিশেষজ্ঞ আমিনুল ইসলাম শেখ বলেন, শরীরের অতিরিক্ত ওজন নাক ডাকার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। বাড়তি ওজন নাকের ভেতরে বাতাস চলাচলের জায়গা সংকীর্ণ করে দেয়। এতে শ্বাসপ্রশ্বাস চলাচলের সময় শব্দের সৃষ্টি হয়। তাই ওজন কমালে এই সমস্যা থেকে অনেকটা রেহাই পাওয়া সম্ভব।

জীবনযাত্রার পরিবর্তন ও ঘরোয়া সমাধান

নাক ডাকার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ঘুমের অভ্যাস এবং জীবনধারা।

  1. এক পাশে কাত হয়ে ঘুমানো উচিত। চিত হয়ে ঘুমালে অনেক সময় জিহ্বা পেছনের দিকে চলে যায় এবং আংশিকভাবে শ্বাস পথ বন্ধ করে দেয়। এক পাশে কাত হয়ে ঘুমালে বাতাস সহজে চলাচল করতে পারে, যা নাক ডাকা কমাতে অথবা থামাতে সাহায্য করে।
  2. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। প্রাপ্তবয়স্ক একজন ব্যক্তির প্রতিদিন ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। ঘুমের ঘাটতি হলে গলার পেশি শিথিল হয়ে যায়, যা শ্বাস পথকে সংকুচিত করে এবং নাক ডাকার ঝুঁকি বাড়ায়। আমিনুল ইসলাম শেখ বলেন, দৈনিক ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা যদি ঘুম না হয়, তাহলে নাক ডাকা বেড়ে যেতে পারে।
  3. বিছানার মাথার দিকটি কয়েক ইঞ্চি উঁচু করে ঘুমালে শ্বাস পথ খোলা রাখতে সাহায্য করে। এর জন্য বিশেষভাবে তৈরি পিলো বা বেড রাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
  4. নাকের ওপর স্টিক-অন নেজাল স্ট্রিপ অথবা নাসারন্ধ্রের ওপর এক্সটারনাল নেজাল ডাইলেটর ব্যবহার করলে নাসারন্ধ্রের জায়গা বাড়ে, যা শ্বাস-প্রশ্বাসকে আরও কার্যকর করে তোলে এবং নাক ডাকা কমায়। ইন্টারনাল নেজাল ডাইলেটরও ব্যবহার করা যেতে পারে।
  5. অ্যালকোহলের অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করা ভালো। তবে ঘুমানোর অন্তত ৩ ঘণ্টা আগে অ্যালকোহল পান থেকে বিরত থাকুন। অ্যালকোহল গলার পেশিগুলো শিথিল করে দেয়, যা নাক ডাকার সৃষ্টি করে।
  6. ঘুমের ওষুধ বা উপশমকারী এড়িয়ে চলতে হবে। যদি আপনি ঘুমের ওষুধ বা সেডেটিভ গ্রহণ করেন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অ্যালকোহলের মতো এই ওষুধগুলোও গলার পেশিকে শিথিল করে নাক ডাকার সমস্যা বাড়াতে পারে।
  7. ধূমপানের অভ্যাস নাক ডাকার সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। ধূমপান ত্যাগ করার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  8. অতিরিক্ত ওজন থাকলে গলার চারপাশে চর্বি জমতে পারে, যা শ্বাস পথকে সংকুচিত করে। সুষম খাদ্য গ্রহণ, ক্যালরি বা কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে এবং প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখলে তা নাক ডাকা কমাতে সহায়ক হতে পারে।
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চোখের যেসব রোগ পুরুষদের বেশি হয়

ডা. মো. আরমান হোসেন রনি 
চোখের যেসব রোগ পুরুষদের বেশি হয়

চোখের রোগ বিভিন্ন কারণে হতে পারে এবং কিছু রোগ পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। পুরুষদের চোখের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করার জন্য অনেক ধরনের রোগ ও সমস্যার সৃষ্টি হয়, যেমন জেনেটিক ফ্যাক্টর, জীবনযাত্রার স্টাইল এবং পরিবেশগত কারণে। এখানে এমন কিছু চোখের রোগের কথা বলা হলো, যা পুরুষদের মধ্যে বেশি হয়।

চোখের মণির অস্বাভাবিকতা: পুরুষদের মধ্যে চোখের মণির অস্বাভাবিকতা বা চোখের মণি সঠিকভাবে কাজ না করা একটি সাধারণ সমস্যা। চোখের মণি বা কর্নিয়া হলো চোখের সামনের স্বচ্ছ অংশ, যা চোখে আসা আলোকে সঠিকভাবে লেন্সে নিয়ে যায়। কোনো কারণে যদি কর্নিয়ার গঠন পরিবর্তিত হয়, তাহলে সেটি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, পুরুষদের মধ্যে কর্নিয়া সমস্যা বেশি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

রেটিনাল ডিস্ট্রফি: রেটিনাল ডিস্ট্রফি একটি বিরল চোখের রোগ, যেখানে চোখের রেটিনা (যা চোখের পেছনের অংশে থাকে এবং দৃষ্টির জন্য দায়ী) ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে। এই রোগ পুরুষদের মধ্যে বেশি। রেটিনাল ডিস্ট্রফির কারণে দৃষ্টিশক্তি কমে এবং এটি সাধারণত প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চলে আসে।

গ্লুকোমা: গ্লুকোমা এমন একটি রোগ, যা চোখের চাপের কারণে রেটিনার স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত করে। পুরুষদের মধ্যে গ্লুকোমার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। গ্লুকোমা হলে দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমে যেতে পারে এবং এতে চোখের ভেতরে চাপ বাড়তে থাকে। এটি একধরনের নীরব রোগ। কারণ, এতে প্রথম দিকে কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। গ্লুকোমার কারণে যে কারও দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি হারিয়ে যেতে পারে।

ক্যাটারাক্ট: ক্যাটারাক্ট হলো চোখের লেন্সের ঘোলা হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া। ফলে দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। পুরুষদের মধ্যে বয়স হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই রোগ বেশি দেখা যায়। যদিও ক্যাটারাক্ট সাধারণত বৃদ্ধ বয়সে দেখা যায়, তবে কিছু বিশেষ কারণে এটি পুরুষদের মধ্যে কম বয়সেও হতে পারে। ক্যাটারাক্টের কারণে দৃষ্টিশক্তির সমস্যা সৃষ্টি হয় এবং এটি একমাত্র অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ঠিক করা সম্ভব।

ম্যাকুলার ডিজেনারেশন: ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হলো চোখের রেটিনার একটি অংশ, যা কেন্দ্রীয় দৃষ্টি নিয়ে কাজ করে, তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া। এটি সাধারণত বৃদ্ধ বয়সে দেখা যায়, কিন্তু পুরুষদের মধ্যে এটির প্রবণতা কিছুটা বেশি। এটি চোখের দৃষ্টি কমিয়ে আনে এবং ব্যক্তি নির্দিষ্ট কিছু কাজ করতে অক্ষম হতে পারে। যেমন পড়াশোনা কিংবা ছোটখাটো খুঁটিনাটি কাজ।

কনজাংটিভাইটিস: কনজাংটিভাইটিস কিংবা চোখের সাদা অংশে প্রদাহ একটি সাধারণ চোখের সমস্যা, যা পুরুষদের মধ্যে বেশি।

এটি সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া অথবা অ্যালার্জির কারণে হয়। কনজাংটিভাইটিসের লক্ষণ হিসেবে চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখে জ্বালা কিংবা অস্বস্তি অনুভব হওয়া এবং চোখ দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি হতে পারে। যদিও এটি সবার মধ্যে হতে পারে। তবে পুরুষদের মধ্যে এটি বেশি প্রকট হতে দেখা যায়।

প্রেসবায়োপিয়া বা চালশে: প্রেসবায়োপিয়া হলো চোখের এমন একটি অবস্থা, যেখানে বয়স্ক ব্যক্তির কাছে থেকে ছোট জিনিস পড়তে সমস্যা হয়। সাধারণত ৪০ বছর বয়সের পর এই রোগ দেখা যায়। যদিও এটি অনেক মানুষের মধ্যে হয়, তবে পুরুষদের মধ্যে এটি কিছুটা বেশি।

শুষ্ক চোখের সিনড্রোম: শুষ্ক চোখের সিনড্রোম হলো এমন একটি সমস্যা, যেখানে চোখের পৃষ্ঠে সঠিক পরিমাণে আর্দ্রতা থাকে না। এটি পুরুষদের মধ্যে বেশির ভাগ সময় দেখা যায়, বিশেষ করে যাদের দীর্ঘ সময় কম্পিউটার অথবা মোবাইল স্ক্রিনের সামনে বসে কাজ করতে হয়। শুষ্ক চোখের কারণে চোখে চুলকানি, লাল ভাব এবং চোখের চারপাশে চাপ অনুভূত হতে পারে।

রক্তনালিতে সমস্যা: ছেলেদের মধ্যে চোখের রক্তনালিতে সমস্যা হতে পারে এবং তা চোখে রক্তক্ষরণ সৃষ্টি করতে পারে। এই ধরনের সমস্যা সাধারণত রেটিনা অথবা চোখের অন্য অংশে রক্তপ্রবাহের সমস্যা সৃষ্টি করে এবং তা দৃষ্টির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

রং দেখার সমস্যা: রং দেখার সমস্যা কিংবা বর্ণান্ধতা একটি জেনেটিক রোগ, যা ছেলেদের মধ্যে অনেক বেশি দেখা যায়। এটি সাধারণত পুরুষদের মধ্যে ৮০% বেশি দেখা যায়। কারণ, এটি X-ক্রোমোজোমের ওপর নির্ভরশীল। রঙের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে না পারার কারণে কিছু সামাজিক বা পেশাগত কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও সার্জন, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পিঠব্যথা: কারণ, লক্ষণ ও করণীয়

ডা. অনিক সরকার পলাশ
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৩১
পিঠব্যথা: কারণ, লক্ষণ ও করণীয়

পিঠব্যথা বা লো ব্যাক পেইন সাধারণ কারণে শুরু হলেও সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে এটি দীর্ঘমেয়াদি অস্বস্তি, চলাফেরায় সীমাবদ্ধতা এবং দৈনন্দিন জীবনে নানা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।

পিঠব্যথার কারণ

পিঠে ব্যথা হওয়ার পেছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ কয়েকটি হলো—

ত্রুটিযুক্ত অঙ্গভঙ্গি

ভুলভাবে বসা, ঝুঁকে কাজ করা, মোবাইল বা ল্যাপটপ দীর্ঘ সময় ব্যবহার, নরম বিছানায় ঘুমানো সবই মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক অবস্থান নষ্ট করে ব্যথা বাড়াতে পারে।

ব্যায়ামের অভাব

দৈনন্দিন শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়ামের অভাবে পিঠের পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে সামান্য চাপেই ব্যথা দেখা দেয়।

পেশিতে টান বা মচকানো

হঠাৎ ভারী জিনিস তোলা, ভুলভাবে নড়াচড়া বা অতিরিক্ত শ্রমের কারণে পেশি ও লিগামেন্টে টান ধরে। এটিও তীব্র পিঠব্যথার সাধারণ কারণ।

বয়সজনিত সমস্যা

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেরুদণ্ডের ডিস্কগুলো ক্ষয় হতে থাকে। এর ফলে স্পন্ডাইলোসিস, সায়াটিকা ও ডিস্ক প্রল্যাপসের মতো রোগ দেখা দেয়।

অন্যান্য অভ্যন্তরীণ কারণ

অনেক সময় কিডনি, পিত্তথলি বা অগ্ন্যাশয়ের সমস্যা থেকেও পিঠব্যথা অনুভূত হতে পারে। তাই দীর্ঘস্থায়ী বা অস্বাভাবিক ব্যথার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা জরুরি।

লক্ষণ

পিঠব্যথা কম থেকে তীব্র—উভয় মাত্রার হতে পারে। কারও ব্যথা কয়েক দিনে কমে যায়, আবার

কারও ক্ষেত্রে সপ্তাহ বা মাস ধরে চলতে পারে। হাঁটতে গেলে ব্যথা বাড়া, পা পর্যন্ত ব্যথা ছড়িয়ে পড়া, কোমর শক্ত হয়ে যাওয়া কিংবা বারবার শোয়া-বসায় অস্বস্তি এসবই সাধারণ উপসর্গ।

যেভাবে প্রতিরোধ করবেন

অভ্যাস ও জীবনযাত্রায় কয়েকটি পরিবর্তন আনলে পিঠব্যথা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

সঠিক অঙ্গভঙ্গি বজায় রাখা: বসে অথবা দাঁড়িয়ে কাজ করার সময় মেরুদণ্ড সোজা রাখতে হবে। চেয়ারে বসলে কোমর পুরোটা ব্যাকরেস্টে ঠেকিয়ে বসা উচিত। ঘুমানোর সময় খুব নরম গদি এড়িয়ে চলুন।

নিয়মিত ব্যায়াম করা: পিঠের পেশি শক্তিশালী রাখতে প্রতিদিন কিছুক্ষণ হাঁটা, হালকা স্ট্রেচিং কিংবা ফিজিওথেরাপি,

এ ধরনের ব্যায়াম বেশ উপকারী। ব্যথা বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যায়াম না করাই ভালো।

ওজন নিয়ন্ত্রণ করা: অতিরিক্ত ওজন কোমরের নিচের দিকে বাড়তি চাপ তৈরি করে। সুস্থ খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত চলাফেরায় ওজন ঠিক রাখলে ব্যথা অনেকটা কমে।

একই ভঙ্গিতে দীর্ঘ সময় না থাকা: দীর্ঘ সময় একভাবে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকলে পেশিতে চাপ জমে। প্রতি ঘণ্টায় ২-৩ মিনিট হেঁটে নিন বা অঙ্গভঙ্গি পরিবর্তন করুন।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন

  • ব্যথা খুব তীব্র হলে বা কয়েক সপ্তাহেও না কমলে
  • ব্যথার সঙ্গে জ্বর, ওজন কমে যাওয়া, অসাড়তা বা প্রস্রাবে সমস্যা দেখা দিলে
  • হাঁটা-চলা বা দৈনন্দিন কাজকর্মে সমস্যার সৃষ্টি হলে
  • ব্যথা পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়লে
  • সময়মতো চিকিৎসা নিলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পিঠব্যথা নিয়ন্ত্রণে আনা যায় এবং জটিলতা এড়ানো সম্ভব।

অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ, আলোক হাসপাতাল, মিরপুর-৬

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত