Ajker Patrika

চীনের উৎপাদন হাব হয়ে উঠছে মেক্সিকো, নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে পণ্য যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে

আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০১: ১১
চীনের উৎপাদন হাব হয়ে উঠছে মেক্সিকো, নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে পণ্য যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেশী দেশ মেক্সিকোর মন্টেরের একটি আর্মচেয়ার ও লেদার সোফা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের নাম মান ওয়াহ। প্রতিষ্ঠানের নাম চীনা হলেও পণ্যের ট্যাগে ঠিকই লেখা হচ্ছে ‘মেড ইন মেক্সিকো’। এই আর্মচেয়ার ও সোফাগুলো খুব শিগগিরই সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় চেইনশপ কস্টকো, ওয়ালমার্টের মতো কোম্পানির গুদাম–শোরুমে ঢুকে পড়বে।

মেক্সিকোতে চীনের এমন হাজারো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যেগুলোর অর্থ লগ্নিকারী চীনা ব্যবসায়ীরা। মূলত চীনের ওপর আরোপিত মার্কিন শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞা এড়াতেই চীনা ব্যবসায়ীদের এমন কৌশল। বিনিয়োগস্থল মেক্সিকো হলেও মূলধন মুনাফাসমেত ঠিকই ফিরে আসছে চীনে।

যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও মেক্সিকোর মধ্যকার এই যে ত্রিমুখী বাণিজ্যিক–উৎপাদন সম্পর্ক, এটিকে বলা হয় ‘নিয়ারশোরিং’। মূলত যে দেশের বাজারে পণ্য রপ্তানি করা হবে সেই দেশের কাছাকাছি কোনো একটি দেশে উৎপাদন ব্যবস্থা স্থানান্তরকেই নিয়ারশোরিং বলে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনারা এমন হাজারো কোম্পানি মেক্সিকোয় সম্প্রসারিত করেছে। এর ফলে, একই সঙ্গে যেমন পরিবহন খরচ কমেছে, তেমনি ‘মেড ইন মেক্সিকো’ হওয়ায় শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞার কোপে পড়তে হচ্ছে না।

এ বিষয়ে মান ওয়াহ-এর মহাব্যবস্থাপক উ কেন ওয়েই জানান, চীন থেকে ব্যবসা মেক্সিকোতে স্থানান্তরের বিষয়টি অর্থনৈতিক ও লজিস্টিক সব বিবেচনায়ই ইতিবাচক। তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে (চীনের তুলনায়) অন্তত তিন থেকে চার গুণ বেশি উৎপাদন করতে পারি।’ মজার ব্যাপার হলো, তিনি পুরো আলাপ করেছেন স্প্যানিশে, একেবারে প্রায় স্থানীয়দের মতো উচ্চারণে।

মান ওয়াহ মেক্সিকোর মন্টেরিতে কার্যক্রম শুরু করে ২০২২ সালে। কিন্তু এরই মধ্যে দেশটিতে প্রায় ৪৫০ জনের কর্মসংস্থান করেছে কোম্পানিটি। উ কেন ওয়েই জানান,  কয়েক বছরের মধ্যে তাঁদের লক্ষ্য হলো কর্মীসংখ্যা ১ হাজার ২০০-তে উন্নীত করা এবং আরও কয়েকটি কারখানা চালু করা।

মেক্সিকোয় চীনা বাণিজ্যের বেশি সুবিধাও রয়েছে। বিষয়টি উঠে এসেছে মান ওয়াহের মহাব্যবস্থাপকের কথায়। তিনি বলেন, ‘মেক্সিকোর মানুষেরা বেশ পরিশ্রমী এবং তাঁরা দ্রুত সবকিছু শিখে নেন। আমরা খুব ভালো অপারেটর পেয়েছি এবং তাঁদের উৎপাদন দক্ষতাও খুবই উঁচুমানের। তাই আমি মনে করি, শ্রমের দিকটা বিবেচনায় কৌশলগতভাবে মেক্সিকোকে বাছাই করাটা ভালো।’

এই নিয়ারশোরিং যে কেবল চীনকেই সুবিধা দিচ্ছে তা কিন্তু নয়। গত বছরের জুন পর্যন্ত এর আগের বছরের তুলনায় দেশটির রপ্তানি ৫ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৫ হাজার ২৯০ কোটি ডলারে। এই প্রবৃদ্ধি শিগগির থেমে যাবে এমন কোনো আশঙ্কাও দেখা যাচ্ছে না। গত বছরের শেষ দুই মাসেই যে পরিমাণ বিনিয়োগের ঘোষণা এসেছে তা ২০২০ সালে সারা বছরের মোট বিনিয়োগের অর্ধেক।

মান ওয়াহ সোফা ফ্যাক্টরিটি মেক্সিকোর হফুসান নামে একটি চীন-মেক্সিকো শিল্প এলাকায় অবস্থিত। কোম্পানিটি অনেক দিন ধরেই নিজস্ব জায়গার জন্য আবেদন করছে। এমনকি উচ্চমূল্য দিয়ে হলেও নিতে রাজি। কিন্তু এলাকাটির সব প্লটই বিক্রি হয়ে গেছে। মেক্সিকোর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক অ্যাসোসিয়েশন জানাচ্ছে, ২০২৭ সালের মধ্যে যেসব ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপিত হবে, সেগুলোর প্লটও বিক্রি হয়ে গেছে।

মেক্সিকোর সাবেক বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক উপমন্ত্রী হুয়ান কার্লোস বেকার পিনেদা বলেন, ‘মেক্সিকোয় যারা (চীনা ব্যবসায়ীরা) মূলধন আনেন বা বিনিয়োগ করেন তার কাঠামোগত মূল কারণ হলো—এখানে এই দেশে থেকে যাওয়া। আমি এমন কোনো লক্ষণ দেখছি না যে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে তা শিগগির থেমে যাবে।’

পিনেদা এ সময় যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে আরও বলেন, ‘তবে মেক্সিকোয় চীনা মূলধনের প্রবেশ হয়তো কিছু দেশের নীতিমালার জন্য অস্বস্তিকর। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিয়ম অনুসারে সেই অর্থ দিয়ে নির্মিত সব পণ্যই যেকোনো বিবেচনায় মেক্সিকান।’

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের এই নিয়মই চীনকে মেক্সিকোয় পা রাখার সুযোগ দিয়েছে। একই সঙ্গে চীনকে হটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে মেক্সিকো। যদিও বিষয়টি একপ্রকার প্রতীকী অগ্রগতি, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ।

মেক্সিকোর এই বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়টি হতে পেরেছে ‘নিয়ারশোরিং’-এর কারণে। চীন তো আছেই, খোদ মার্কিন কোম্পানিগুলোও মেক্সিকোতে বিনিয়োগ করছে বিপুল পরিমাণে। বিশেষ করে যেসব মার্কিন কোম্পানি এশিয়া থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে, তারা নতুন উৎপাদন হাব হিসেবে বেছে নিয়েছে মেক্সিকোকে।

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কও তাঁর ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারেন মেক্সিকোতে। তাঁর বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার ‘গিগাফ্যাক্টরি’ স্থাপন করা হতে পারে মন্টেরির উপকণ্ঠে। এ বছরই সেই ঘোষণা দিতে পারেন মাস্ক। তবে ১ হাজার কোটি ডলারের সেই প্রকল্পটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। বিশেষ করে বৈশ্বিক অর্থনীতির বর্তমান গতিপথ বিবেচনায় টেসলার এই উদ্যোগ কিছুদিন পিছিয়ে যেতে পারে।

মেক্সিকোতে চীনা বিনিয়োগ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার ভূরাজনৈতিক যে টানাপোড়েন সেটিকেও উসকে দিতে পারে। এ বিষয়ে মেক্সিকোর ন্যাশনাল অটোনোমাস ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর চায়না-মেক্সিকো স্টাডিজের এনরিক ডুসেল বলেন, ‘এলাকার খানদানি ধনকুবের (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) শহরের নব্য ধনীর (চীন) সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়েছে। বিপরীতে মেক্সিকোর বর্তমান সরকারের এই সমস্যা নিরসনে এখন পর্যন্ত কোনো কৌশল নেই।’

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনে জো বাইডেন বা ডোনাল্ড ট্রাম্প যে-ই প্রেসিডেন্ট হয়ে আসেন না কেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে খুব একটা উন্নতি হবে বলে মনে হয় না। তবে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে কড়াকড়ি আসতে পারে। এনরিক ডুসেল মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-চীন ত্রিমুখী সম্পর্ককে ‘নিয়ারশোরিং’ না বলে বরং ‘সিকিউরিটি শোরিং’ বলা ভালো। কারণ, চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন সবার আগে তার জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিই বিবেচনা করবে। ফলে, এই দুই পরাশক্তির দ্বন্দ্বে মেক্সিকো মাঝপথে ধরা খেয়ে যাবে কি না সে বিষয়ে দেশটিকে সতর্ক থাকতে হবে।

এনরিক ডুসেল বলেন, এই টানাপোড়েনের মধ্যেই মেক্সিকো চীনকে স্বাগত জানাতে ‘মেক্সিকোয় স্বাগত’ বোর্ড টাঙিয়ে রেখেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মেক্সিকোর সম্পর্ক বিবেচনায় মধ্যবর্তী মেয়াদে এই বিষয়টি যে ভালো হবে না সেটি উপলব্ধি করার জন্য পিএইচডি ডিগ্রি নেওয়ার দরকার নেই!

তবে সবাই ডুসেলের মতো হতাশাবাদী নন। অনেকেই চীনের সঙ্গে মেক্সিকোর সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে বেশ ইতিবাচক। হুয়ান কার্লোস বেকার পিনেদার মতে, ‘আমার প্রশ্ন হলো, এই প্রবণতা (মেক্সিকোয় চীনা বিনিয়োগের ধারা) চলবে কি না এবং এই প্রবণতার কতটা সুবিধা আমরা নিতে পারব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে, কলম্বিয়া, ভিয়েতনাম ও কোস্টারিকাতেও মানুষ একই ধরনের (চীনা বিনিয়োগ নিয়ে) আলোচনা করছে। সুতরাং, যে শর্তগুলো (বিনিয়োগকারীদের) বিভিন্ন পক্ষ থেকে এসেছে, সেগুলোর সাপেক্ষে করপোরেট ও সরকারি সিদ্ধান্তগুলোকে সমন্বিত করে দীর্ঘমেয়াদে সেই প্রবণতা বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে মেক্সিকোকে।’

বিবিসি থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিল নগদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

সারা দেশের সাত হাজার ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সের মধ্য থেকে সেরা পারফরম্যান্সের জন্য ৭০ জনকে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে ডাক বিভাগের ডিজিটাল আর্থিক লেনদেন সেবা নগদ।

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ‘নগদ ফিল্ড চ্যাম্পিয়ন ২০২৫’ নামের এই সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠান চলাকালে ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সদের পারফরম্যান্সের জন্য বিশেষ বোনাসের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ৭০ জনের নগদ অ্যাকাউন্টে চলে যায় এই অর্থ।

দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ঢাকায় আসা-যাওয়া, খাওয়া, হোটেলে অবস্থানসহ অন্য সব খরচ নগদের পক্ষ থেকে বহন করা হয়।

সেরা পারফর্মারদের অভিনন্দন জানিয়ে নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, অনেক চ্যালেঞ্জের মাঝেও বাজারে নগদ একটা ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছে। বাংলাদেশে ক্যাশলেস লেনদেনের আরও প্রসার ঘটাতে নগদ ভূমিকা রাখবে বলে সরকারের নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাশা রয়েছে। সুতরাং, যত অপপ্রচারই নগদকে নিয়ে হোক না কেন, সেসবে কান না দিয়ে নগদের সাফল্যের জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।

নগদের সেবার প্রসার ঘটাতে এ সময় মোতাছিম বিল্লাহ ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সদের কাছ থেকে নগদ বিষয়ে পরামর্শ ও সুপারিশ জানতে চান। তাঁদের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে নগদ প্রশাসক বলেন, অল্প সময়ের ভেতরই সেবার কলেবর আরও বাড়বে নগদে। ফলে লেনদেনের অঙ্ক যেমন অনেক গুণ বাড়বে, একই সঙ্গে গ্রাহকেরাও অনেক বেশি উপকৃত হবেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত নগদের জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান, ডাক বিভাগনিযুক্ত নগদের জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. আবু তালেব, নগদের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মোহাম্মদ শাহীন সারওয়ার ভূঁইয়া বক্তব্য দেন।

বক্তারা বলেন, আগামী বছরে বিদেশ থেকে আসা রেমিট্যান্স, বাংলা কিউআর, সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের জন্য আন্তসংযোগ গেম চেঞ্জারের ভূমিকা পালন করবে নগদ। ফলে ২০২৬ সাল নগদের সেরা সাফল্যের বছর হবে বলেও মনে করেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করল ডিএসই

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করেছে ডিএসই। ছবি: সংগৃহীত
ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করেছে ডিএসই। ছবি: সংগৃহীত

তথ্যসেবা আরও সহজ ও কার্যকর করার লক্ষ্যে ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক স্থাপন করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আসাদুর রহমান এই ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. আসিফুর রহমান, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মো. ছামিউল ইসলাম, প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ ডিএসইর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মোহাম্মদ আসাদুর রহমান বলেন, ইনফরমেশন হেল্প ডেস্কের মাধ্যমে পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট তথ্য প্রদান আরও সহজ হবে এবং বিনিয়োগকারী ও অন্য অংশীজনদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার দ্রুত ও কার্যকর সমাধান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এর ফলে ডিএসইর সেবার মান আরও গ্রাহকবান্ধব ও স্বচ্ছ হবে।

ডিএসইর এমডি আশা প্রকাশ করেন, এই হেল্প ডেস্ক ডিএসইর বাজার অংশগ্রহণকারীদের আস্থা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পুঁজিবাজারসংক্রান্ত সব ধরনের তথ্যের জন্য +৮৮-০২-৪১০৪০১৮৯, ০৯৬৬৬৭০২০৭০ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

দেশের অন্যতম ভ্রমণ ও পর্যটনবিষয়ক প্রকাশনা বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ট্রাভেল, ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি অ্যাওয়ার্ড (BTTHA) ২০২৫’-এর লিড স্পনসর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে দেশের ভ্রমণশিল্পের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান গ্যালাক্সি গ্রুপ।

একই সঙ্গে পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা এই আয়োজনের হসপিটালিটি পার্টনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

দেশের ভ্রমণ, পর্যটন ও আতিথেয়তা শিল্পে একমাত্র স্বীকৃত এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি এবার দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

গতকাল বুধবার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট চুক্তিসমূহ স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশ মনিটরের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম। গ্যালাক্সি গ্রুপের পক্ষে লিড স্পনসর চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ। অন্যদিকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার পক্ষে হসপিটালিটি পার্টনার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন হোটেলটির জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড ও’ হ্যানলন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, গ্যালাক্সি ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার সম্পৃক্ততায় অ্যাওয়ার্ড প্রোগ্রামের মর্যাদা ও পরিসর আরও বৃদ্ধি পাবে। এর মাধ্যমে দেশের ভ্রমণ ও আতিথেয়তা শিল্পে উৎকর্ষতা অর্জন এবং উত্তম চর্চা উৎসাহিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

গ্যালাক্সি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ বলেন, পর্যটন ও আতিথেয়তা খাতে উদ্ভাবন, সেবার মান এবং টেকসই উন্নয়নকে স্বীকৃতি প্রদানকারী একটি মহতী উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে তারা গর্বিত।

ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড ও’ হ্যানলন বিশ্বমানের আতিথেয়তা প্রদানের পাশাপাশি অসাধারণ অর্জনকে স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে এমন একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

চলতি বছর ২৫টি ক্যাটাগরিতে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। শুধু আবেদনকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিত্বকারী অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিচারক প্যানেল বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন এবং পাবলিক ভোটিংয়ের ভিত্তিতে বিজয়ীদের চূড়ান্ত করবেন।

এবার নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে দুটি বিশেষ ক্যাটাগরি—সর্বাধিক পর্যটনবান্ধব বিদেশি গন্তব্য, বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় পর্যটন স্পট। এই দুটি ক্যাটাগরির বিজয়ী সরাসরি পাবলিক ভোটিংয়ের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।

বাংলাদেশের পর্যটন ইকোসিস্টেমের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা জানানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ মনিটর ২০২৪ সালে প্রথমবারের মতো এই পুরস্কারের প্রবর্তন করে।

প্রথম আসরের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এ বছর আরও বৃহৎ পরিসরে এই আয়োজন করা হচ্ছে, যেখানে অংশগ্রহণের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দৃশ্যমানতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল নজরদারি করবে এনবিআর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল আরও স্বচ্ছ ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ নামে নতুন একটি সাব-মডিউল চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মাধ্যমে প্রতিটি ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের প্রবেশ, অবস্থানকাল এবং খালি ট্রাকের ফেরত-সংক্রান্ত তথ্য ইলেকট্রনিকভাবে সংরক্ষণ করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় এনবিআর।

এনবিআর জানায়, প্রাথমিকভাবে যশোরের বেনাপোল কাস্টম হাউসে ১৫ ডিসেম্বর থেকে এই সাব-মডিউলের পাইলট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আগে ট্রাক প্রবেশ ও বহির্গমনের তথ্য ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হতো, যা সময়সাপেক্ষ ও ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার ঝুঁকি ছিল।

নতুন মডিউল চালুর ফলে ভারতীয় প্রতিটি ট্রাকের আগমন ও বহির্গমনের প্রকৃত তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংরক্ষিত থাকবে। এতে ট্রাকের অবস্থানকাল নির্ধারণ, সীমান্ত এলাকায় ট্রাক চলাচল কার্যকরভাবে মনিটরিং এবং রিয়েল-টাইম রিপোর্ট তৈরি করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি তথ্য ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়বে, রাজস্বহানি রোধে সহায়ক হবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে বলে জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সীমান্ত বাণিজ্য ব্যবস্থাপনায় এই ডিজিটাল উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ট্রাক চলাচলের নির্ভুল তথ্য থাকায় শুল্ক ও কর ব্যবস্থাপনায় নজরদারি জোরদার হবে, একই সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষাও বাড়বে।

খুব শিগগির দেশের সব স্থলবন্দরে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ সাব-মডিউলটি লাইভ অপারেশনে আনার পরিকল্পনা রয়েছে এনবিআরের। এতে স্থলবন্দরভিত্তিক আমদানি কার্যক্রম আরও গতিশীল ও আধুনিক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত