শাইখ সিরাজ

২০০৬ সাল থেকে ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ অনুষ্ঠানে প্রতিবছরই কৃষিঋণ নিয়ে কৃষকের দাবি উঠে আসছে। কৃষক সহজ শর্তে সহজে ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে চান। কারণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে তাঁকে সুদ দিতে হবে শতকরা ৪ থেকে ৮ টাকা। আর এনজিও থেকে ঋণ নিলে এর সুদের পরিমাণ ক্ষেত্রবিশেষে শতকরা ২০ থেকে ২৫ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়। আর মহাজনি ঋণের সুদ তো বিদ্যুতের গতিতে বাড়ে।
আমাদের কৃষকদের জন্য ঋণ পাওয়াটা একটা জটিল বিষয়। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (ইফপ্রি) ২০১৯ সালের একটি সমীক্ষা রয়েছে। সমীক্ষা বলছে, বাংলাদেশের কৃষকেরা সাধারণত এনজিও, আত্মীয়স্বজন, বেসরকারি ব্যাংক, দাদন ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন বেসরকারি উৎস থেকে ৮১ শতাংশের বেশি ঋণ নেন। আর এসব ঋণের সুদের হার ১৯ থেকে ৬৩ শতাংশ। অন্যদিকে কৃষি ব্যাংক থেকে যে ঋণ দেওয়া হয়, তার সুদের হার ৯ শতাংশ (এখন আরও কম)। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে কৃষকের মোট ঋণের মাত্র ৬ শতাংশ আসে কৃষি ব্যাংক থেকে। ইফপ্রির সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশে মোট ঋণের ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ নেওয়া হয় এনজিও থেকে। যেখানে কৃষককে ঋণের বিপরীতে অনেক ক্ষেত্রে ২০ শতাংশের ওপর সুদ দিতে হয়।
ইফপ্রির মতে, আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ঋণ নেন ১৯ শতাংশ কৃষক। জমির মালিকের কাছ থেকে ১৫ শতাংশ। মহাজন বা দাদন থেকে ১১ দশমিক ৪ এবং বিভিন্ন সমিতি থেকে আসে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ ঋণ। সরকারের কৃষি ব্যাংক থেকে আসা ৬ শতাংশ ঋণের সবচেয়ে বেশি অংশ পান বড় চাষিরা, প্রায় ১৫ শতাংশ। বড়, মাঝারি ও ছোট চাষি মিলে মোট ঋণের ৩৬ শতাংশ পান। আর প্রান্তিক চাষি পান ৫ শতাংশের মতো। বর্গাচাষি, অর্থাৎ অন্যের জমি ইজারা নিয়ে চাষ করেন—এমন কৃষকেরা এই ঋণ পান না। ফলে তাঁদের এনজিওসহ অন্য উৎসের ঋণের ওপর নির্ভর করতে হয়।
অথচ প্রকৃত কৃষক কখনো ঋণখেলাপি হন না—এর প্রমাণ আমরা সব সময়ই পেয়ে এসেছি; বিশেষ করে করোনার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পরিসংখ্যান তা স্পষ্ট করে দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর—এই ছয় মাসে ব্যাংকগুলো কৃষকদের ঋণ দিয়েছে ১২ হাজার ৭৭ কোটি টাকা। বিপরীতে একই সময়ে কৃষকদের কাছ থেকে আদায় করেছে ১৪ হাজার ৯১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ছয় মাসে ব্যাংকগুলো বিতরণের তুলনায় ২২ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেশি কৃষিঋণ আদায় করেছে; অর্থাৎ বলা যায়, মহামারিতে আমাদের কৃষকেরাই অর্থনীতির হাল ধরেছিলেন।
পাশাপাশি তাঁরা অন্যদের তুলনায় ব্যাংকের অর্থও বেশি পরিশোধ করেছেন। যদিও করোনার মাঝে কৃষকের ঋণের কিস্তি দেওয়ার ব্যাপারে বিশেষ শিথিলতা ছিল। সরকারের পক্ষ থেকে ঋণের কিস্তি আদায়ে কৃষককে বাধ্য করার ব্যাপারটিতে ছিল নিষেধাজ্ঞা, তারপরও বেশির ভাগ কৃষক ব্যাংকের ঋণের কিস্তি নিয়মিত পরিশোধ করেছেন। ২০২০ সালে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ৪ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করেছে। মহামারির মধ্যেও সে বছর কৃষি ব্যাংকের ৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ আদায় হয়েছে।
দেশের বহু ঋণদান প্রতিষ্ঠান ফুলেফেঁপে বড় হয়েছে। অথচ কৃষকের সে রকম কোনো পরিবর্তন হয় না। কৃষক ঋণের জালে আটকে যান। কখনো এনজিও, কখনো মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে দীর্ঘ ঋণের বোঝা টানতে থাকেন। আমার ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ অনুষ্ঠানের এক আসরে নাটোরে কৃষক রফিকুল ইসলাম ক্ষোভের সঙ্গে বলেছিলেন, ‘কখনো কোনো রাজনীতিবিদকে তো দেখি
নাই রাজনীতি করে নিঃস্ব হয়ে যেতে, সেটা সরকারি দলের হোক আর অন্য দলেরই হোক, কৃষক কেন কৃষি খেতি করে নিঃস্ব হয়, তার খোঁজখবর তো কেউ নেয় না। আপনারা তিল থেকে তাল হইছেন, শিল্পপতি হইছেন। আর আমাদের পুঁজি নাই, আমাদের বাজার নিয়ে কেউ ভাবে না, আমাদের কথা কেউ বলে না।’ এই ক্ষোভ শুধু রফিকুল ইসলামের নয়, প্রতিটি কৃষকের। মহাজন কিংবা মহাজনদের মতো যাঁরা কৃষকের দুরবস্থা পুঁজি করে নিজেদের ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করেছেন, তাঁরা কখনোই চান না মহাজনি দুষ্টচক্র থেকে কৃষক বের হয়ে যাক।
ফসলনির্ভর কৃষকের ঋণের বোঝা বাড়ে সাধারণত দুই কারণে। কৃষক ঋণ নিয়ে ফসল ফলান। মৌসুমে সেই ফসলের দাম পান না। কিন্তু ওই সময়টাতে তাঁর টাকা বেশি প্রয়োজন। কারণ, সার-ওষুধের দোকানের বাকি মেটাতে হবে, মহাজনের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ শোধ করতে হবে এবং পরবর্তী ফসলের জন্য জমি প্রস্তুত করতে হবে। তাই ওই সময়ে ফসলের দাম কম থাকা সত্ত্বেও সেই ফসল বিক্রি করে দেন। কম দামে ফসল বিক্রি করে দেনা শোধ করে, নতুন ফসল চাষে যেতে যেতে দেখা যায় তাঁর ঋণের পরিমাণ আগের চেয়ে বেড়ে গেছে।
সেদিন কথা হচ্ছিল বাংলাদেশ ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরের সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, মৌসুমের শুরুতেই এক মাসের মধ্যে উদ্বৃত্ত ধানের ৫২ শতাংশ বিক্রি করে দিতে হয় কৃষককে। এক থেকে দুই মাসের মধ্যে বিক্রি করতে হয় ২৫ শতাংশ ধান, দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে ১৮ শতাংশ এবং চার মাস বা এর বেশি সময়ের মধ্যে বিক্রি করতে হচ্ছে ৫ শতাংশ ধান। অথচ যদি ঋণ পরিশোধের জন্য তিন থেকে চারটা মাস সময় কৃষকের হাতে থাকত আর ফসল সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা থাকত, তাহলে কৃষক অনেক লাভবান থাকতে পারতেন।
শস্য গুদামজাত রেখে বিনিময়ে ঋণের একটি দারুণ প্রকল্প ছিল শগঋপ (শস্য গুদাম ঋণ প্রকল্প)। প্রজেক্টের মডেল অনুযায়ী কৃষক তাঁর উৎপাদিত ফসল গুদামে মজুত রেখে, সেই মজুতকৃত ফসলের ওপর ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারতেন। ঋণের টাকায় পরবর্তী চাষ কার্যক্রম পরিচালনা ও জীবন নির্বাহ করার সুযোগ পেতেন কৃষক। শস্যের বাজার দাম বেশি হলে গুদাম থেকে শস্য ছাড়িয়ে নিয়ে বাজারে বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করতেন। এ প্রজেক্টটি বেশ কার্যকর ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সফল এই কার্যক্রম হঠাৎ করেই যেন মুখ থুবড়ে পড়ে।
ঋণের ব্যাপারে আরেকটি সমস্যা হচ্ছে ভূমিহীন কৃষক ও বর্গাচাষিদের ঋণ নিয়ে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৩ কোটি ৫৫ লাখ কৃষির খানার ১৯ শতাংশই বর্গাচাষি। এ হিসাব অনুযায়ী, দেশে বর্গাচাষি পরিবারের সংখ্যা ৬৫ লাখের বেশি।
আবার সারা দেশে প্রায় ২৩ লাখ ২৩ হাজার ২৭০টি ভূমিহীন কৃষক পরিবার আছে। এসব পরিবার সরাসরি কৃষিকাজে নিয়োজিত, অন্যের জমি ভাড়া বা লিজ নিয়ে তাঁদের চাষ-আবাদ। সরকারের বিদ্যমান কৃষিঋণ নীতিমালা অনুযায়ী, ৫ একর বা ১৫ বিঘা পর্যন্ত জমির মালিক সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। সে জন্য তাঁদের জমির দলিল বন্ধক রাখতে হবে। যাঁদের জমি নেই, তাঁরাও এ ঋণ পাবেন, তবে সে ক্ষেত্রে কৃষক যাঁর জমি ভাড়া বা লিজ নিয়ে চাষ করেন, সেই ভাড়ার চুক্তিপত্র জমা দিতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন রকম।
করোনার কারণে সরকার যখন কৃষকদের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করল, শতকরা ৪ টাকা হার সুদে ঋণ দেওয়ার কথা বলল বাংলাদেশ ব্যাংক, তখন অসংখ্য বর্গাচাষি আমাকে ফোনে জানিয়েছিলেন তাঁদের ঋণ না পাওয়ার সমস্যা নিয়ে। বলছিলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে হলে তাঁদের জমির মালিকের সঙ্গে চুক্তিপত্র দেখাতে হবে। এখানেও একটি সমস্যা আছে। বর্গাচাষি জমি লিজ বা বর্গা নিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তাঁদের কোনো চুক্তিপত্র নেই। সাধারণত জমির মালিক লিখিত চুক্তির মাধ্যমে কোনো চাষিকে জমি বর্গা দিতে চান না। কারণ লিখিত চুক্তির মাধ্যমে জমি বর্গা দিলে জমির মালিককে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে ফি সরকারকে দিতে হয়। সেটি দিতে চান না বলে বেশির ভাগ জমির মালিক চুক্তিতে জমি বর্গা দেন না। ফলে চুক্তিপত্র না থাকার কারণে অনেক বর্গাচাষি প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন।
আমি মনে করি, কোনো রকম শর্ত ছাড়াই প্রকৃত কৃষক ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাওয়ার অধিকার রাখেন। বিভিন্ন এনজিও বা মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের বেড়াজালে কৃষককে উচ্চসুদে ঋণ নিতে হচ্ছে। যেখানে শিল্পোদ্যোক্তারা ঋণ পান ৯-১৫ শতাংশ হার সুদে, সেখানে ক্ষুদ্র কৃষককে ঋণ নিতে হয় ২০ শতাংশ হারের চেয়েও বেশি সুদে। ব্যাংক খাতে যে পরিমাণে ঋণখেলাপি, রাইট অফ, দুর্নীতি, অনিয়ম হয়, সেটা বিবেচনায় নিলে ১৫ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার তাবৎ কৃষিঋণ সরকার চাইলে বিনা সুদে দিতেই পারে।
আমাদের কৃষি সম্প্রসারিত হচ্ছে শিল্পের দিকে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ার কারণে বিভিন্ন পেশার মানুষ যুক্ত হচ্ছে কৃষিতে। শিল্পপতিরা কৃষিতে বিনিয়োগ করছেন। এই সময়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকদের টিকিয়ে রাখতে হবে। না হলে কৃষি থেকে কৃষকই ছিটকে পড়বেন। বাড়বে বেকারত্বের সংখ্যা। ছোট্ট ও ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলোকে সফল হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। এর জন্য কৃষিঋণ সহজ ও সহজলভ্য করতে হবে।
লেখক: পরিচালক ও বার্তাপ্রধান, চ্যানেল আই

২০০৬ সাল থেকে ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ অনুষ্ঠানে প্রতিবছরই কৃষিঋণ নিয়ে কৃষকের দাবি উঠে আসছে। কৃষক সহজ শর্তে সহজে ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে চান। কারণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে তাঁকে সুদ দিতে হবে শতকরা ৪ থেকে ৮ টাকা। আর এনজিও থেকে ঋণ নিলে এর সুদের পরিমাণ ক্ষেত্রবিশেষে শতকরা ২০ থেকে ২৫ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়। আর মহাজনি ঋণের সুদ তো বিদ্যুতের গতিতে বাড়ে।
আমাদের কৃষকদের জন্য ঋণ পাওয়াটা একটা জটিল বিষয়। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (ইফপ্রি) ২০১৯ সালের একটি সমীক্ষা রয়েছে। সমীক্ষা বলছে, বাংলাদেশের কৃষকেরা সাধারণত এনজিও, আত্মীয়স্বজন, বেসরকারি ব্যাংক, দাদন ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন বেসরকারি উৎস থেকে ৮১ শতাংশের বেশি ঋণ নেন। আর এসব ঋণের সুদের হার ১৯ থেকে ৬৩ শতাংশ। অন্যদিকে কৃষি ব্যাংক থেকে যে ঋণ দেওয়া হয়, তার সুদের হার ৯ শতাংশ (এখন আরও কম)। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে কৃষকের মোট ঋণের মাত্র ৬ শতাংশ আসে কৃষি ব্যাংক থেকে। ইফপ্রির সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশে মোট ঋণের ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ নেওয়া হয় এনজিও থেকে। যেখানে কৃষককে ঋণের বিপরীতে অনেক ক্ষেত্রে ২০ শতাংশের ওপর সুদ দিতে হয়।
ইফপ্রির মতে, আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ঋণ নেন ১৯ শতাংশ কৃষক। জমির মালিকের কাছ থেকে ১৫ শতাংশ। মহাজন বা দাদন থেকে ১১ দশমিক ৪ এবং বিভিন্ন সমিতি থেকে আসে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ ঋণ। সরকারের কৃষি ব্যাংক থেকে আসা ৬ শতাংশ ঋণের সবচেয়ে বেশি অংশ পান বড় চাষিরা, প্রায় ১৫ শতাংশ। বড়, মাঝারি ও ছোট চাষি মিলে মোট ঋণের ৩৬ শতাংশ পান। আর প্রান্তিক চাষি পান ৫ শতাংশের মতো। বর্গাচাষি, অর্থাৎ অন্যের জমি ইজারা নিয়ে চাষ করেন—এমন কৃষকেরা এই ঋণ পান না। ফলে তাঁদের এনজিওসহ অন্য উৎসের ঋণের ওপর নির্ভর করতে হয়।
অথচ প্রকৃত কৃষক কখনো ঋণখেলাপি হন না—এর প্রমাণ আমরা সব সময়ই পেয়ে এসেছি; বিশেষ করে করোনার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পরিসংখ্যান তা স্পষ্ট করে দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর—এই ছয় মাসে ব্যাংকগুলো কৃষকদের ঋণ দিয়েছে ১২ হাজার ৭৭ কোটি টাকা। বিপরীতে একই সময়ে কৃষকদের কাছ থেকে আদায় করেছে ১৪ হাজার ৯১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ছয় মাসে ব্যাংকগুলো বিতরণের তুলনায় ২২ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেশি কৃষিঋণ আদায় করেছে; অর্থাৎ বলা যায়, মহামারিতে আমাদের কৃষকেরাই অর্থনীতির হাল ধরেছিলেন।
পাশাপাশি তাঁরা অন্যদের তুলনায় ব্যাংকের অর্থও বেশি পরিশোধ করেছেন। যদিও করোনার মাঝে কৃষকের ঋণের কিস্তি দেওয়ার ব্যাপারে বিশেষ শিথিলতা ছিল। সরকারের পক্ষ থেকে ঋণের কিস্তি আদায়ে কৃষককে বাধ্য করার ব্যাপারটিতে ছিল নিষেধাজ্ঞা, তারপরও বেশির ভাগ কৃষক ব্যাংকের ঋণের কিস্তি নিয়মিত পরিশোধ করেছেন। ২০২০ সালে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ৪ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করেছে। মহামারির মধ্যেও সে বছর কৃষি ব্যাংকের ৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ আদায় হয়েছে।
দেশের বহু ঋণদান প্রতিষ্ঠান ফুলেফেঁপে বড় হয়েছে। অথচ কৃষকের সে রকম কোনো পরিবর্তন হয় না। কৃষক ঋণের জালে আটকে যান। কখনো এনজিও, কখনো মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে দীর্ঘ ঋণের বোঝা টানতে থাকেন। আমার ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ অনুষ্ঠানের এক আসরে নাটোরে কৃষক রফিকুল ইসলাম ক্ষোভের সঙ্গে বলেছিলেন, ‘কখনো কোনো রাজনীতিবিদকে তো দেখি
নাই রাজনীতি করে নিঃস্ব হয়ে যেতে, সেটা সরকারি দলের হোক আর অন্য দলেরই হোক, কৃষক কেন কৃষি খেতি করে নিঃস্ব হয়, তার খোঁজখবর তো কেউ নেয় না। আপনারা তিল থেকে তাল হইছেন, শিল্পপতি হইছেন। আর আমাদের পুঁজি নাই, আমাদের বাজার নিয়ে কেউ ভাবে না, আমাদের কথা কেউ বলে না।’ এই ক্ষোভ শুধু রফিকুল ইসলামের নয়, প্রতিটি কৃষকের। মহাজন কিংবা মহাজনদের মতো যাঁরা কৃষকের দুরবস্থা পুঁজি করে নিজেদের ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করেছেন, তাঁরা কখনোই চান না মহাজনি দুষ্টচক্র থেকে কৃষক বের হয়ে যাক।
ফসলনির্ভর কৃষকের ঋণের বোঝা বাড়ে সাধারণত দুই কারণে। কৃষক ঋণ নিয়ে ফসল ফলান। মৌসুমে সেই ফসলের দাম পান না। কিন্তু ওই সময়টাতে তাঁর টাকা বেশি প্রয়োজন। কারণ, সার-ওষুধের দোকানের বাকি মেটাতে হবে, মহাজনের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ শোধ করতে হবে এবং পরবর্তী ফসলের জন্য জমি প্রস্তুত করতে হবে। তাই ওই সময়ে ফসলের দাম কম থাকা সত্ত্বেও সেই ফসল বিক্রি করে দেন। কম দামে ফসল বিক্রি করে দেনা শোধ করে, নতুন ফসল চাষে যেতে যেতে দেখা যায় তাঁর ঋণের পরিমাণ আগের চেয়ে বেড়ে গেছে।
সেদিন কথা হচ্ছিল বাংলাদেশ ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরের সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, মৌসুমের শুরুতেই এক মাসের মধ্যে উদ্বৃত্ত ধানের ৫২ শতাংশ বিক্রি করে দিতে হয় কৃষককে। এক থেকে দুই মাসের মধ্যে বিক্রি করতে হয় ২৫ শতাংশ ধান, দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে ১৮ শতাংশ এবং চার মাস বা এর বেশি সময়ের মধ্যে বিক্রি করতে হচ্ছে ৫ শতাংশ ধান। অথচ যদি ঋণ পরিশোধের জন্য তিন থেকে চারটা মাস সময় কৃষকের হাতে থাকত আর ফসল সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা থাকত, তাহলে কৃষক অনেক লাভবান থাকতে পারতেন।
শস্য গুদামজাত রেখে বিনিময়ে ঋণের একটি দারুণ প্রকল্প ছিল শগঋপ (শস্য গুদাম ঋণ প্রকল্প)। প্রজেক্টের মডেল অনুযায়ী কৃষক তাঁর উৎপাদিত ফসল গুদামে মজুত রেখে, সেই মজুতকৃত ফসলের ওপর ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারতেন। ঋণের টাকায় পরবর্তী চাষ কার্যক্রম পরিচালনা ও জীবন নির্বাহ করার সুযোগ পেতেন কৃষক। শস্যের বাজার দাম বেশি হলে গুদাম থেকে শস্য ছাড়িয়ে নিয়ে বাজারে বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করতেন। এ প্রজেক্টটি বেশ কার্যকর ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সফল এই কার্যক্রম হঠাৎ করেই যেন মুখ থুবড়ে পড়ে।
ঋণের ব্যাপারে আরেকটি সমস্যা হচ্ছে ভূমিহীন কৃষক ও বর্গাচাষিদের ঋণ নিয়ে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৩ কোটি ৫৫ লাখ কৃষির খানার ১৯ শতাংশই বর্গাচাষি। এ হিসাব অনুযায়ী, দেশে বর্গাচাষি পরিবারের সংখ্যা ৬৫ লাখের বেশি।
আবার সারা দেশে প্রায় ২৩ লাখ ২৩ হাজার ২৭০টি ভূমিহীন কৃষক পরিবার আছে। এসব পরিবার সরাসরি কৃষিকাজে নিয়োজিত, অন্যের জমি ভাড়া বা লিজ নিয়ে তাঁদের চাষ-আবাদ। সরকারের বিদ্যমান কৃষিঋণ নীতিমালা অনুযায়ী, ৫ একর বা ১৫ বিঘা পর্যন্ত জমির মালিক সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। সে জন্য তাঁদের জমির দলিল বন্ধক রাখতে হবে। যাঁদের জমি নেই, তাঁরাও এ ঋণ পাবেন, তবে সে ক্ষেত্রে কৃষক যাঁর জমি ভাড়া বা লিজ নিয়ে চাষ করেন, সেই ভাড়ার চুক্তিপত্র জমা দিতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন রকম।
করোনার কারণে সরকার যখন কৃষকদের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করল, শতকরা ৪ টাকা হার সুদে ঋণ দেওয়ার কথা বলল বাংলাদেশ ব্যাংক, তখন অসংখ্য বর্গাচাষি আমাকে ফোনে জানিয়েছিলেন তাঁদের ঋণ না পাওয়ার সমস্যা নিয়ে। বলছিলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে হলে তাঁদের জমির মালিকের সঙ্গে চুক্তিপত্র দেখাতে হবে। এখানেও একটি সমস্যা আছে। বর্গাচাষি জমি লিজ বা বর্গা নিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তাঁদের কোনো চুক্তিপত্র নেই। সাধারণত জমির মালিক লিখিত চুক্তির মাধ্যমে কোনো চাষিকে জমি বর্গা দিতে চান না। কারণ লিখিত চুক্তির মাধ্যমে জমি বর্গা দিলে জমির মালিককে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে ফি সরকারকে দিতে হয়। সেটি দিতে চান না বলে বেশির ভাগ জমির মালিক চুক্তিতে জমি বর্গা দেন না। ফলে চুক্তিপত্র না থাকার কারণে অনেক বর্গাচাষি প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন।
আমি মনে করি, কোনো রকম শর্ত ছাড়াই প্রকৃত কৃষক ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাওয়ার অধিকার রাখেন। বিভিন্ন এনজিও বা মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের বেড়াজালে কৃষককে উচ্চসুদে ঋণ নিতে হচ্ছে। যেখানে শিল্পোদ্যোক্তারা ঋণ পান ৯-১৫ শতাংশ হার সুদে, সেখানে ক্ষুদ্র কৃষককে ঋণ নিতে হয় ২০ শতাংশ হারের চেয়েও বেশি সুদে। ব্যাংক খাতে যে পরিমাণে ঋণখেলাপি, রাইট অফ, দুর্নীতি, অনিয়ম হয়, সেটা বিবেচনায় নিলে ১৫ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার তাবৎ কৃষিঋণ সরকার চাইলে বিনা সুদে দিতেই পারে।
আমাদের কৃষি সম্প্রসারিত হচ্ছে শিল্পের দিকে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ার কারণে বিভিন্ন পেশার মানুষ যুক্ত হচ্ছে কৃষিতে। শিল্পপতিরা কৃষিতে বিনিয়োগ করছেন। এই সময়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকদের টিকিয়ে রাখতে হবে। না হলে কৃষি থেকে কৃষকই ছিটকে পড়বেন। বাড়বে বেকারত্বের সংখ্যা। ছোট্ট ও ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলোকে সফল হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। এর জন্য কৃষিঋণ সহজ ও সহজলভ্য করতে হবে।
লেখক: পরিচালক ও বার্তাপ্রধান, চ্যানেল আই
শাইখ সিরাজ

২০০৬ সাল থেকে ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ অনুষ্ঠানে প্রতিবছরই কৃষিঋণ নিয়ে কৃষকের দাবি উঠে আসছে। কৃষক সহজ শর্তে সহজে ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে চান। কারণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে তাঁকে সুদ দিতে হবে শতকরা ৪ থেকে ৮ টাকা। আর এনজিও থেকে ঋণ নিলে এর সুদের পরিমাণ ক্ষেত্রবিশেষে শতকরা ২০ থেকে ২৫ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়। আর মহাজনি ঋণের সুদ তো বিদ্যুতের গতিতে বাড়ে।
আমাদের কৃষকদের জন্য ঋণ পাওয়াটা একটা জটিল বিষয়। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (ইফপ্রি) ২০১৯ সালের একটি সমীক্ষা রয়েছে। সমীক্ষা বলছে, বাংলাদেশের কৃষকেরা সাধারণত এনজিও, আত্মীয়স্বজন, বেসরকারি ব্যাংক, দাদন ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন বেসরকারি উৎস থেকে ৮১ শতাংশের বেশি ঋণ নেন। আর এসব ঋণের সুদের হার ১৯ থেকে ৬৩ শতাংশ। অন্যদিকে কৃষি ব্যাংক থেকে যে ঋণ দেওয়া হয়, তার সুদের হার ৯ শতাংশ (এখন আরও কম)। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে কৃষকের মোট ঋণের মাত্র ৬ শতাংশ আসে কৃষি ব্যাংক থেকে। ইফপ্রির সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশে মোট ঋণের ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ নেওয়া হয় এনজিও থেকে। যেখানে কৃষককে ঋণের বিপরীতে অনেক ক্ষেত্রে ২০ শতাংশের ওপর সুদ দিতে হয়।
ইফপ্রির মতে, আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ঋণ নেন ১৯ শতাংশ কৃষক। জমির মালিকের কাছ থেকে ১৫ শতাংশ। মহাজন বা দাদন থেকে ১১ দশমিক ৪ এবং বিভিন্ন সমিতি থেকে আসে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ ঋণ। সরকারের কৃষি ব্যাংক থেকে আসা ৬ শতাংশ ঋণের সবচেয়ে বেশি অংশ পান বড় চাষিরা, প্রায় ১৫ শতাংশ। বড়, মাঝারি ও ছোট চাষি মিলে মোট ঋণের ৩৬ শতাংশ পান। আর প্রান্তিক চাষি পান ৫ শতাংশের মতো। বর্গাচাষি, অর্থাৎ অন্যের জমি ইজারা নিয়ে চাষ করেন—এমন কৃষকেরা এই ঋণ পান না। ফলে তাঁদের এনজিওসহ অন্য উৎসের ঋণের ওপর নির্ভর করতে হয়।
অথচ প্রকৃত কৃষক কখনো ঋণখেলাপি হন না—এর প্রমাণ আমরা সব সময়ই পেয়ে এসেছি; বিশেষ করে করোনার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পরিসংখ্যান তা স্পষ্ট করে দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর—এই ছয় মাসে ব্যাংকগুলো কৃষকদের ঋণ দিয়েছে ১২ হাজার ৭৭ কোটি টাকা। বিপরীতে একই সময়ে কৃষকদের কাছ থেকে আদায় করেছে ১৪ হাজার ৯১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ছয় মাসে ব্যাংকগুলো বিতরণের তুলনায় ২২ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেশি কৃষিঋণ আদায় করেছে; অর্থাৎ বলা যায়, মহামারিতে আমাদের কৃষকেরাই অর্থনীতির হাল ধরেছিলেন।
পাশাপাশি তাঁরা অন্যদের তুলনায় ব্যাংকের অর্থও বেশি পরিশোধ করেছেন। যদিও করোনার মাঝে কৃষকের ঋণের কিস্তি দেওয়ার ব্যাপারে বিশেষ শিথিলতা ছিল। সরকারের পক্ষ থেকে ঋণের কিস্তি আদায়ে কৃষককে বাধ্য করার ব্যাপারটিতে ছিল নিষেধাজ্ঞা, তারপরও বেশির ভাগ কৃষক ব্যাংকের ঋণের কিস্তি নিয়মিত পরিশোধ করেছেন। ২০২০ সালে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ৪ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করেছে। মহামারির মধ্যেও সে বছর কৃষি ব্যাংকের ৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ আদায় হয়েছে।
দেশের বহু ঋণদান প্রতিষ্ঠান ফুলেফেঁপে বড় হয়েছে। অথচ কৃষকের সে রকম কোনো পরিবর্তন হয় না। কৃষক ঋণের জালে আটকে যান। কখনো এনজিও, কখনো মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে দীর্ঘ ঋণের বোঝা টানতে থাকেন। আমার ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ অনুষ্ঠানের এক আসরে নাটোরে কৃষক রফিকুল ইসলাম ক্ষোভের সঙ্গে বলেছিলেন, ‘কখনো কোনো রাজনীতিবিদকে তো দেখি
নাই রাজনীতি করে নিঃস্ব হয়ে যেতে, সেটা সরকারি দলের হোক আর অন্য দলেরই হোক, কৃষক কেন কৃষি খেতি করে নিঃস্ব হয়, তার খোঁজখবর তো কেউ নেয় না। আপনারা তিল থেকে তাল হইছেন, শিল্পপতি হইছেন। আর আমাদের পুঁজি নাই, আমাদের বাজার নিয়ে কেউ ভাবে না, আমাদের কথা কেউ বলে না।’ এই ক্ষোভ শুধু রফিকুল ইসলামের নয়, প্রতিটি কৃষকের। মহাজন কিংবা মহাজনদের মতো যাঁরা কৃষকের দুরবস্থা পুঁজি করে নিজেদের ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করেছেন, তাঁরা কখনোই চান না মহাজনি দুষ্টচক্র থেকে কৃষক বের হয়ে যাক।
ফসলনির্ভর কৃষকের ঋণের বোঝা বাড়ে সাধারণত দুই কারণে। কৃষক ঋণ নিয়ে ফসল ফলান। মৌসুমে সেই ফসলের দাম পান না। কিন্তু ওই সময়টাতে তাঁর টাকা বেশি প্রয়োজন। কারণ, সার-ওষুধের দোকানের বাকি মেটাতে হবে, মহাজনের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ শোধ করতে হবে এবং পরবর্তী ফসলের জন্য জমি প্রস্তুত করতে হবে। তাই ওই সময়ে ফসলের দাম কম থাকা সত্ত্বেও সেই ফসল বিক্রি করে দেন। কম দামে ফসল বিক্রি করে দেনা শোধ করে, নতুন ফসল চাষে যেতে যেতে দেখা যায় তাঁর ঋণের পরিমাণ আগের চেয়ে বেড়ে গেছে।
সেদিন কথা হচ্ছিল বাংলাদেশ ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরের সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, মৌসুমের শুরুতেই এক মাসের মধ্যে উদ্বৃত্ত ধানের ৫২ শতাংশ বিক্রি করে দিতে হয় কৃষককে। এক থেকে দুই মাসের মধ্যে বিক্রি করতে হয় ২৫ শতাংশ ধান, দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে ১৮ শতাংশ এবং চার মাস বা এর বেশি সময়ের মধ্যে বিক্রি করতে হচ্ছে ৫ শতাংশ ধান। অথচ যদি ঋণ পরিশোধের জন্য তিন থেকে চারটা মাস সময় কৃষকের হাতে থাকত আর ফসল সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা থাকত, তাহলে কৃষক অনেক লাভবান থাকতে পারতেন।
শস্য গুদামজাত রেখে বিনিময়ে ঋণের একটি দারুণ প্রকল্প ছিল শগঋপ (শস্য গুদাম ঋণ প্রকল্প)। প্রজেক্টের মডেল অনুযায়ী কৃষক তাঁর উৎপাদিত ফসল গুদামে মজুত রেখে, সেই মজুতকৃত ফসলের ওপর ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারতেন। ঋণের টাকায় পরবর্তী চাষ কার্যক্রম পরিচালনা ও জীবন নির্বাহ করার সুযোগ পেতেন কৃষক। শস্যের বাজার দাম বেশি হলে গুদাম থেকে শস্য ছাড়িয়ে নিয়ে বাজারে বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করতেন। এ প্রজেক্টটি বেশ কার্যকর ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সফল এই কার্যক্রম হঠাৎ করেই যেন মুখ থুবড়ে পড়ে।
ঋণের ব্যাপারে আরেকটি সমস্যা হচ্ছে ভূমিহীন কৃষক ও বর্গাচাষিদের ঋণ নিয়ে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৩ কোটি ৫৫ লাখ কৃষির খানার ১৯ শতাংশই বর্গাচাষি। এ হিসাব অনুযায়ী, দেশে বর্গাচাষি পরিবারের সংখ্যা ৬৫ লাখের বেশি।
আবার সারা দেশে প্রায় ২৩ লাখ ২৩ হাজার ২৭০টি ভূমিহীন কৃষক পরিবার আছে। এসব পরিবার সরাসরি কৃষিকাজে নিয়োজিত, অন্যের জমি ভাড়া বা লিজ নিয়ে তাঁদের চাষ-আবাদ। সরকারের বিদ্যমান কৃষিঋণ নীতিমালা অনুযায়ী, ৫ একর বা ১৫ বিঘা পর্যন্ত জমির মালিক সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। সে জন্য তাঁদের জমির দলিল বন্ধক রাখতে হবে। যাঁদের জমি নেই, তাঁরাও এ ঋণ পাবেন, তবে সে ক্ষেত্রে কৃষক যাঁর জমি ভাড়া বা লিজ নিয়ে চাষ করেন, সেই ভাড়ার চুক্তিপত্র জমা দিতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন রকম।
করোনার কারণে সরকার যখন কৃষকদের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করল, শতকরা ৪ টাকা হার সুদে ঋণ দেওয়ার কথা বলল বাংলাদেশ ব্যাংক, তখন অসংখ্য বর্গাচাষি আমাকে ফোনে জানিয়েছিলেন তাঁদের ঋণ না পাওয়ার সমস্যা নিয়ে। বলছিলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে হলে তাঁদের জমির মালিকের সঙ্গে চুক্তিপত্র দেখাতে হবে। এখানেও একটি সমস্যা আছে। বর্গাচাষি জমি লিজ বা বর্গা নিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তাঁদের কোনো চুক্তিপত্র নেই। সাধারণত জমির মালিক লিখিত চুক্তির মাধ্যমে কোনো চাষিকে জমি বর্গা দিতে চান না। কারণ লিখিত চুক্তির মাধ্যমে জমি বর্গা দিলে জমির মালিককে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে ফি সরকারকে দিতে হয়। সেটি দিতে চান না বলে বেশির ভাগ জমির মালিক চুক্তিতে জমি বর্গা দেন না। ফলে চুক্তিপত্র না থাকার কারণে অনেক বর্গাচাষি প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন।
আমি মনে করি, কোনো রকম শর্ত ছাড়াই প্রকৃত কৃষক ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাওয়ার অধিকার রাখেন। বিভিন্ন এনজিও বা মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের বেড়াজালে কৃষককে উচ্চসুদে ঋণ নিতে হচ্ছে। যেখানে শিল্পোদ্যোক্তারা ঋণ পান ৯-১৫ শতাংশ হার সুদে, সেখানে ক্ষুদ্র কৃষককে ঋণ নিতে হয় ২০ শতাংশ হারের চেয়েও বেশি সুদে। ব্যাংক খাতে যে পরিমাণে ঋণখেলাপি, রাইট অফ, দুর্নীতি, অনিয়ম হয়, সেটা বিবেচনায় নিলে ১৫ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার তাবৎ কৃষিঋণ সরকার চাইলে বিনা সুদে দিতেই পারে।
আমাদের কৃষি সম্প্রসারিত হচ্ছে শিল্পের দিকে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ার কারণে বিভিন্ন পেশার মানুষ যুক্ত হচ্ছে কৃষিতে। শিল্পপতিরা কৃষিতে বিনিয়োগ করছেন। এই সময়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকদের টিকিয়ে রাখতে হবে। না হলে কৃষি থেকে কৃষকই ছিটকে পড়বেন। বাড়বে বেকারত্বের সংখ্যা। ছোট্ট ও ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলোকে সফল হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। এর জন্য কৃষিঋণ সহজ ও সহজলভ্য করতে হবে।
লেখক: পরিচালক ও বার্তাপ্রধান, চ্যানেল আই

২০০৬ সাল থেকে ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ অনুষ্ঠানে প্রতিবছরই কৃষিঋণ নিয়ে কৃষকের দাবি উঠে আসছে। কৃষক সহজ শর্তে সহজে ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে চান। কারণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে তাঁকে সুদ দিতে হবে শতকরা ৪ থেকে ৮ টাকা। আর এনজিও থেকে ঋণ নিলে এর সুদের পরিমাণ ক্ষেত্রবিশেষে শতকরা ২০ থেকে ২৫ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়। আর মহাজনি ঋণের সুদ তো বিদ্যুতের গতিতে বাড়ে।
আমাদের কৃষকদের জন্য ঋণ পাওয়াটা একটা জটিল বিষয়। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (ইফপ্রি) ২০১৯ সালের একটি সমীক্ষা রয়েছে। সমীক্ষা বলছে, বাংলাদেশের কৃষকেরা সাধারণত এনজিও, আত্মীয়স্বজন, বেসরকারি ব্যাংক, দাদন ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন বেসরকারি উৎস থেকে ৮১ শতাংশের বেশি ঋণ নেন। আর এসব ঋণের সুদের হার ১৯ থেকে ৬৩ শতাংশ। অন্যদিকে কৃষি ব্যাংক থেকে যে ঋণ দেওয়া হয়, তার সুদের হার ৯ শতাংশ (এখন আরও কম)। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে কৃষকের মোট ঋণের মাত্র ৬ শতাংশ আসে কৃষি ব্যাংক থেকে। ইফপ্রির সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশে মোট ঋণের ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ নেওয়া হয় এনজিও থেকে। যেখানে কৃষককে ঋণের বিপরীতে অনেক ক্ষেত্রে ২০ শতাংশের ওপর সুদ দিতে হয়।
ইফপ্রির মতে, আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ঋণ নেন ১৯ শতাংশ কৃষক। জমির মালিকের কাছ থেকে ১৫ শতাংশ। মহাজন বা দাদন থেকে ১১ দশমিক ৪ এবং বিভিন্ন সমিতি থেকে আসে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ ঋণ। সরকারের কৃষি ব্যাংক থেকে আসা ৬ শতাংশ ঋণের সবচেয়ে বেশি অংশ পান বড় চাষিরা, প্রায় ১৫ শতাংশ। বড়, মাঝারি ও ছোট চাষি মিলে মোট ঋণের ৩৬ শতাংশ পান। আর প্রান্তিক চাষি পান ৫ শতাংশের মতো। বর্গাচাষি, অর্থাৎ অন্যের জমি ইজারা নিয়ে চাষ করেন—এমন কৃষকেরা এই ঋণ পান না। ফলে তাঁদের এনজিওসহ অন্য উৎসের ঋণের ওপর নির্ভর করতে হয়।
অথচ প্রকৃত কৃষক কখনো ঋণখেলাপি হন না—এর প্রমাণ আমরা সব সময়ই পেয়ে এসেছি; বিশেষ করে করোনার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পরিসংখ্যান তা স্পষ্ট করে দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর—এই ছয় মাসে ব্যাংকগুলো কৃষকদের ঋণ দিয়েছে ১২ হাজার ৭৭ কোটি টাকা। বিপরীতে একই সময়ে কৃষকদের কাছ থেকে আদায় করেছে ১৪ হাজার ৯১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ছয় মাসে ব্যাংকগুলো বিতরণের তুলনায় ২২ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেশি কৃষিঋণ আদায় করেছে; অর্থাৎ বলা যায়, মহামারিতে আমাদের কৃষকেরাই অর্থনীতির হাল ধরেছিলেন।
পাশাপাশি তাঁরা অন্যদের তুলনায় ব্যাংকের অর্থও বেশি পরিশোধ করেছেন। যদিও করোনার মাঝে কৃষকের ঋণের কিস্তি দেওয়ার ব্যাপারে বিশেষ শিথিলতা ছিল। সরকারের পক্ষ থেকে ঋণের কিস্তি আদায়ে কৃষককে বাধ্য করার ব্যাপারটিতে ছিল নিষেধাজ্ঞা, তারপরও বেশির ভাগ কৃষক ব্যাংকের ঋণের কিস্তি নিয়মিত পরিশোধ করেছেন। ২০২০ সালে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ৪ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করেছে। মহামারির মধ্যেও সে বছর কৃষি ব্যাংকের ৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ আদায় হয়েছে।
দেশের বহু ঋণদান প্রতিষ্ঠান ফুলেফেঁপে বড় হয়েছে। অথচ কৃষকের সে রকম কোনো পরিবর্তন হয় না। কৃষক ঋণের জালে আটকে যান। কখনো এনজিও, কখনো মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে দীর্ঘ ঋণের বোঝা টানতে থাকেন। আমার ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ অনুষ্ঠানের এক আসরে নাটোরে কৃষক রফিকুল ইসলাম ক্ষোভের সঙ্গে বলেছিলেন, ‘কখনো কোনো রাজনীতিবিদকে তো দেখি
নাই রাজনীতি করে নিঃস্ব হয়ে যেতে, সেটা সরকারি দলের হোক আর অন্য দলেরই হোক, কৃষক কেন কৃষি খেতি করে নিঃস্ব হয়, তার খোঁজখবর তো কেউ নেয় না। আপনারা তিল থেকে তাল হইছেন, শিল্পপতি হইছেন। আর আমাদের পুঁজি নাই, আমাদের বাজার নিয়ে কেউ ভাবে না, আমাদের কথা কেউ বলে না।’ এই ক্ষোভ শুধু রফিকুল ইসলামের নয়, প্রতিটি কৃষকের। মহাজন কিংবা মহাজনদের মতো যাঁরা কৃষকের দুরবস্থা পুঁজি করে নিজেদের ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করেছেন, তাঁরা কখনোই চান না মহাজনি দুষ্টচক্র থেকে কৃষক বের হয়ে যাক।
ফসলনির্ভর কৃষকের ঋণের বোঝা বাড়ে সাধারণত দুই কারণে। কৃষক ঋণ নিয়ে ফসল ফলান। মৌসুমে সেই ফসলের দাম পান না। কিন্তু ওই সময়টাতে তাঁর টাকা বেশি প্রয়োজন। কারণ, সার-ওষুধের দোকানের বাকি মেটাতে হবে, মহাজনের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ শোধ করতে হবে এবং পরবর্তী ফসলের জন্য জমি প্রস্তুত করতে হবে। তাই ওই সময়ে ফসলের দাম কম থাকা সত্ত্বেও সেই ফসল বিক্রি করে দেন। কম দামে ফসল বিক্রি করে দেনা শোধ করে, নতুন ফসল চাষে যেতে যেতে দেখা যায় তাঁর ঋণের পরিমাণ আগের চেয়ে বেড়ে গেছে।
সেদিন কথা হচ্ছিল বাংলাদেশ ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরের সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, মৌসুমের শুরুতেই এক মাসের মধ্যে উদ্বৃত্ত ধানের ৫২ শতাংশ বিক্রি করে দিতে হয় কৃষককে। এক থেকে দুই মাসের মধ্যে বিক্রি করতে হয় ২৫ শতাংশ ধান, দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে ১৮ শতাংশ এবং চার মাস বা এর বেশি সময়ের মধ্যে বিক্রি করতে হচ্ছে ৫ শতাংশ ধান। অথচ যদি ঋণ পরিশোধের জন্য তিন থেকে চারটা মাস সময় কৃষকের হাতে থাকত আর ফসল সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা থাকত, তাহলে কৃষক অনেক লাভবান থাকতে পারতেন।
শস্য গুদামজাত রেখে বিনিময়ে ঋণের একটি দারুণ প্রকল্প ছিল শগঋপ (শস্য গুদাম ঋণ প্রকল্প)। প্রজেক্টের মডেল অনুযায়ী কৃষক তাঁর উৎপাদিত ফসল গুদামে মজুত রেখে, সেই মজুতকৃত ফসলের ওপর ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারতেন। ঋণের টাকায় পরবর্তী চাষ কার্যক্রম পরিচালনা ও জীবন নির্বাহ করার সুযোগ পেতেন কৃষক। শস্যের বাজার দাম বেশি হলে গুদাম থেকে শস্য ছাড়িয়ে নিয়ে বাজারে বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করতেন। এ প্রজেক্টটি বেশ কার্যকর ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সফল এই কার্যক্রম হঠাৎ করেই যেন মুখ থুবড়ে পড়ে।
ঋণের ব্যাপারে আরেকটি সমস্যা হচ্ছে ভূমিহীন কৃষক ও বর্গাচাষিদের ঋণ নিয়ে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৩ কোটি ৫৫ লাখ কৃষির খানার ১৯ শতাংশই বর্গাচাষি। এ হিসাব অনুযায়ী, দেশে বর্গাচাষি পরিবারের সংখ্যা ৬৫ লাখের বেশি।
আবার সারা দেশে প্রায় ২৩ লাখ ২৩ হাজার ২৭০টি ভূমিহীন কৃষক পরিবার আছে। এসব পরিবার সরাসরি কৃষিকাজে নিয়োজিত, অন্যের জমি ভাড়া বা লিজ নিয়ে তাঁদের চাষ-আবাদ। সরকারের বিদ্যমান কৃষিঋণ নীতিমালা অনুযায়ী, ৫ একর বা ১৫ বিঘা পর্যন্ত জমির মালিক সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। সে জন্য তাঁদের জমির দলিল বন্ধক রাখতে হবে। যাঁদের জমি নেই, তাঁরাও এ ঋণ পাবেন, তবে সে ক্ষেত্রে কৃষক যাঁর জমি ভাড়া বা লিজ নিয়ে চাষ করেন, সেই ভাড়ার চুক্তিপত্র জমা দিতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন রকম।
করোনার কারণে সরকার যখন কৃষকদের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করল, শতকরা ৪ টাকা হার সুদে ঋণ দেওয়ার কথা বলল বাংলাদেশ ব্যাংক, তখন অসংখ্য বর্গাচাষি আমাকে ফোনে জানিয়েছিলেন তাঁদের ঋণ না পাওয়ার সমস্যা নিয়ে। বলছিলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে হলে তাঁদের জমির মালিকের সঙ্গে চুক্তিপত্র দেখাতে হবে। এখানেও একটি সমস্যা আছে। বর্গাচাষি জমি লিজ বা বর্গা নিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তাঁদের কোনো চুক্তিপত্র নেই। সাধারণত জমির মালিক লিখিত চুক্তির মাধ্যমে কোনো চাষিকে জমি বর্গা দিতে চান না। কারণ লিখিত চুক্তির মাধ্যমে জমি বর্গা দিলে জমির মালিককে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে ফি সরকারকে দিতে হয়। সেটি দিতে চান না বলে বেশির ভাগ জমির মালিক চুক্তিতে জমি বর্গা দেন না। ফলে চুক্তিপত্র না থাকার কারণে অনেক বর্গাচাষি প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন।
আমি মনে করি, কোনো রকম শর্ত ছাড়াই প্রকৃত কৃষক ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাওয়ার অধিকার রাখেন। বিভিন্ন এনজিও বা মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের বেড়াজালে কৃষককে উচ্চসুদে ঋণ নিতে হচ্ছে। যেখানে শিল্পোদ্যোক্তারা ঋণ পান ৯-১৫ শতাংশ হার সুদে, সেখানে ক্ষুদ্র কৃষককে ঋণ নিতে হয় ২০ শতাংশ হারের চেয়েও বেশি সুদে। ব্যাংক খাতে যে পরিমাণে ঋণখেলাপি, রাইট অফ, দুর্নীতি, অনিয়ম হয়, সেটা বিবেচনায় নিলে ১৫ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার তাবৎ কৃষিঋণ সরকার চাইলে বিনা সুদে দিতেই পারে।
আমাদের কৃষি সম্প্রসারিত হচ্ছে শিল্পের দিকে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ার কারণে বিভিন্ন পেশার মানুষ যুক্ত হচ্ছে কৃষিতে। শিল্পপতিরা কৃষিতে বিনিয়োগ করছেন। এই সময়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকদের টিকিয়ে রাখতে হবে। না হলে কৃষি থেকে কৃষকই ছিটকে পড়বেন। বাড়বে বেকারত্বের সংখ্যা। ছোট্ট ও ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলোকে সফল হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। এর জন্য কৃষিঋণ সহজ ও সহজলভ্য করতে হবে।
লেখক: পরিচালক ও বার্তাপ্রধান, চ্যানেল আই

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

২০০৬ সাল থেকে ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ অনুষ্ঠানে প্রতিবছরই কৃষিঋণ নিয়ে কৃষকের দাবি উঠে আসছে। কৃষক সহজ শর্তে সহজে ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে চান। কারণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে তাঁকে সুদ দিতে হবে শতকরা ৪ থেকে ৮ টাকা। আর এনজিও থেকে ঋণ নিলে এর সুদের পরিমাণ ক্ষেত্রবিশেষে শতকরা ২০ থেকে ২৫ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়। আর মহাজন
০২ এপ্রিল ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

২০০৬ সাল থেকে ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ অনুষ্ঠানে প্রতিবছরই কৃষিঋণ নিয়ে কৃষকের দাবি উঠে আসছে। কৃষক সহজ শর্তে সহজে ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে চান। কারণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে তাঁকে সুদ দিতে হবে শতকরা ৪ থেকে ৮ টাকা। আর এনজিও থেকে ঋণ নিলে এর সুদের পরিমাণ ক্ষেত্রবিশেষে শতকরা ২০ থেকে ২৫ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়। আর মহাজন
০২ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

২০০৬ সাল থেকে ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ অনুষ্ঠানে প্রতিবছরই কৃষিঋণ নিয়ে কৃষকের দাবি উঠে আসছে। কৃষক সহজ শর্তে সহজে ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে চান। কারণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে তাঁকে সুদ দিতে হবে শতকরা ৪ থেকে ৮ টাকা। আর এনজিও থেকে ঋণ নিলে এর সুদের পরিমাণ ক্ষেত্রবিশেষে শতকরা ২০ থেকে ২৫ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়। আর মহাজন
০২ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

২০০৬ সাল থেকে ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ অনুষ্ঠানে প্রতিবছরই কৃষিঋণ নিয়ে কৃষকের দাবি উঠে আসছে। কৃষক সহজ শর্তে সহজে ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে চান। কারণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে তাঁকে সুদ দিতে হবে শতকরা ৪ থেকে ৮ টাকা। আর এনজিও থেকে ঋণ নিলে এর সুদের পরিমাণ ক্ষেত্রবিশেষে শতকরা ২০ থেকে ২৫ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়। আর মহাজন
০২ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫