
মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সেনাপতি মীর বাকি ১৫২৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর আগে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশের দাবি, এই মসজিদটি হিন্দুধর্মের অন্যতম দেবতা রামের জন্মভূমির ওপর নির্মিত। সেই সূত্র ধরে বাবরি মসজিদকে কেন্দ্র করে প্রথম আপত্তি উত্থাপিত হয় ১৭৫১ সালে। এরপর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রামমন্দির। আজ সোমবার সেই মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
অযোধ্যার বাবরি মসজিদ বনাম রামমন্দিরের ২ দশমিক ৭৭ একর জায়গাকে কেন্দ্র করে মূল দ্বন্দ্ব। এই বাবরি মসজিদ বনাম রামমন্দিরকে ইস্যু করে বিজেপি ক্রমেই জনমত হাসিল করেছে। তার ফলাফল হিসেবে ১৯৮৪ সালে লোকসভায় মাত্র দুটি আসন পাওয়া বিজেপি ২০১৯ সালের নির্বাচনে ৩০৩টি আসন নিয়ে প্রধান দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
যা হোক, ১৫২৮ সালে মীর বাকির নির্মিত বাবরি মসজিদ নিয়ে প্রথম আপত্তি উত্থাপিত হয় ১৭৫১ সালে। মারাঠারা সে বছর অযোধ্যা, কাশী, মাথুরাসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ দাবি করে। এর ফলে বেশ কয়েক দফা বিবাদ-সংঘাত সংঘটিত হয়। যদিও এর কোনো রেকর্ড কোনো নথিপত্রে পাওয়া যায় না।
এরপর ১০০ বছরের বেশি সময় পর সিপাহি বিদ্রোহের ঠিক এক বছর পর ১৮৫৮ সালে নিহাং শিখরা অযোধ্যার বাবরি মসজিদে ভাঙচুর চালায় এবং ‘হওয়ান’ নামে একধরনের আচার পালন করে। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের পুলিশের নথি অনুসারে, বাবরি মসজিদ দখলের এটিই প্রথম প্রচেষ্টা। নিহাং শিখদের পর সে সময় স্থানীয় হিন্দুরা মসজিদে প্রবেশ করে পূজা করেছিল।
তবে আইনি দিক থেকে বাবরি মসজিদ নিয়ে প্রথম উদ্যোগ নেওয়া হয় ১৮৮৫ সালে। নির্মোহী আখড়া নামে একটি গোষ্ঠীর সন্ন্যাসী মোহন্ত রঘুবীর দাস উত্তর প্রদেশের ফয়জাবাদ জেলা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় রঘুবীর দাবি করেন, তাঁকে বাবরি মসজিদের বাইরের প্রাঙ্গণে একটি মন্দির তৈরির অনুমতি দেওয়া হোক। সে সময় আদালত সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
এ ঘটনার দীর্ঘদিন পর ১৯৪৯ সালে অর্থাৎ ভারত স্বাধীন হওয়ার দুই বছর পর বাবরি মসজিদের মূল গম্বুজের নিচে ‘রাম লাল্লার’ মূর্তি স্থাপন করা হয়। সে বছর ডিসেম্বরের ২২ ও ২৩ তারিখে একদল হিন্দু মসজিদের ভেতরে অবস্থান নেন। অনেকে দাবি করেন, সে সময় রামের সেই মূর্তি ‘অলৌকিকভাবে’ মসজিদের ভেতরে গিয়েছিল। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফয়জাবাদ আদালত মসজিদটিতে মুসলিম ও হিন্দু—দুই সম্প্রদায়ের জন্যই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন এবং সরকারের হাওলায় ছেড়ে দেন।
যা হোক, ১৯৪৯ সালে মসজিদের ভেতরে যে মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল, তা আর সরানো হয়নি। পরে ১৯৫০ সালে সেই মূর্তি পূজা করার অনুমতি চেয়ে গোপাল শিমলা বিশারদ নামে একজন ফয়জাবাদ আদালতে আবেদন করেন। এর প্রায় ৯ বছর পর নির্মোহী আখড়া আবারও দৃশ্যপটে হাজির হয়। সে বছর গোষ্ঠীটি বাবরি মসজিদের স্থানে মূর্তিপূজার অনুমতি চায়। ১৯৬১ সালে সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াক্ফ বোর্ড মসজিদ খুলে দেওয়ার আবেদন করে আদালতে।
১৯৮৪-৮৬ সালের মধ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু করে। ১৯৮৬ সালে স্থানীয় আদালত হিন্দুদের জন্য বাবরি মসজিদের তালা খোলার অনুমতি দেন। ধারণা করা হয়, সে সময় রাজীব গান্ধীর সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছিল। ১৯৮৬-৮৭ সালের মধ্যে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) বাবরি মসজিদ ও তৎসংলগ্ন জায়গা রাম জন্মভূমি ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তরের দাবি জানায়। পাশাপাশি গুজরাটের সোমনাথ মন্দিরের মতো একটি বিশাল মন্দির প্রতিষ্ঠারও দাবি জানায় গোষ্ঠীটি।
কিন্তু দুই বছর পরেই অর্থাৎ ১৯৮৯ সালের আগস্টে এলাহাবাদ হাইকোর্ট বিতর্কিত বাবরি মসজিদের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ পুনর্বহাল করেন। পরে ১৯৮৯ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের লক্ষ্ণৌ বেঞ্চে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ একটি আবেদন করে। আবেদনে বিতর্কিত জায়গাটিকে ভগবান রামের নামের ঘোষণা করার আরজি জানানো হয়।
একই বছরে ফয়জাবাদ আদালতে এ-সংক্রান্ত যত মামলা ঝুলে ছিল, তা হাইকোর্টে স্থানান্তর করা হয়। সে বছরের নভেম্বরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বিতর্কিত ভূমিসংলগ্ন একটি ভূমিতে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। সে মাসেই রাজীব গান্ধী জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করেন ফয়জাবাদ থেকে।
এ বছরই প্রথমবার রামমন্দির আন্দোলনে যোগ দেয় বিজেপি। দলটি পালামপুর অধিবেশনে একটি রাজনৈতিক প্রস্তাব পাস করে। সেখানে বলা হয়, বাবরি মসজিদকেন্দ্রিক বিরোধ দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। এটি সম্ভব না হলে সক্রিয় আইনের মাধ্যমে তা করা উচিত। তবে প্রস্তাবে আরও বলা হয়, এটা হিন্দুদের বিশ্বাসের বিষয় এবং তাই এটি কোনোভাবেই আইন দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না।
বিজেপির নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানি সোমনাথ মন্দির থেকে অযোধ্যা অভিমুখে একটি ‘যাত্রা’র আয়োজন করেন। তিনি দাবি করেন, অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সে বছরের অক্টোবরে বিহারে আদভানিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তিনি গ্রেপ্তার হলেও যাত্রা থামেনি। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আরএসএস এবং বিজেপির নেতা-কর্মীরা অযোধ্যা অভিমুখে যাত্রা এগিয়ে নেন এবং মসজিদ ভাঙচুর করার চেষ্টা করেন। অক্টোবরের ৩০ তারিখে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদবের সরকারের নেতৃত্বে পুলিশ যাত্রায় গুলি করে। ফলে বাবরি মসজিদ সে যাত্রায় রক্ষা পায়।
কিন্তু সেই ঘটনার মাত্র এক মাস ছয় দিনের মাথায় ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলেন আন্দোলনকারীরা। সে সময় উত্তর প্রদেশের ক্ষমতায় ছিলেন কল্যাণ সিং। ঘটনার দিন কয়েক হাজার করসেবক (বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আরএসএস এবং বিজেপির সমর্থক) মসজিদ ভেঙে ফেলেন।
তার আগে, বিজেপি নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানি, মুরলী মনোহর যোশী, নৃত্য গোপাল দাস ও সাধ্বী রীতাম্বরা সমবেত ব্যক্তিদের উদ্দেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন এবং মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর করসেবকেরা বাবরি মসজিদে হামলা চালিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুরো কাঠামো ভেঙে ফেলেন। সে সময় কল্যাণ সিং সরকার সুপ্রিম কোর্টকে মসজিদের ক্ষতি হবে না—এমন আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও পুলিশ করসেবকদের বিরুদ্ধে কোনো অ্যাকশনে যায়নি।
এই ভাঙচুরের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। একটিতে মসজিদ ধ্বংসের জন্য অজ্ঞাত করসেবকদের আসামি করা হয় এবং অপরটিতে বিজেপি নেতা আদভানি, যোশী, উমা ভারতী ও অন্যদের বিরুদ্ধে ধ্বংসের আগে সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। পরে অবশ্য সবাই অভিযোগ থেকে খালাস পান। এর পরপরই ভারতজুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে।
পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৯৩ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিতর্কিত স্থানসহ অযোধ্যায় ৬৭ দশমিক ৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে। সে বছরের অক্টোবরে সিবিআই আদভানি ও অন্যদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে চার্জশিট ফাইল করে। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৯৪ সালে জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট বহাল রাখেন। একই সময়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের লক্ষ্ণৌ বেঞ্চ বিতর্কিত এলাকার সব মামলার শুনানি শুরু করেন এবং সেখানে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের নির্দেশ দেন।
দীর্ঘ কয়েক বছর পর ২০০৩ সালে ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ বিতর্কিত স্থানটির খনন শুরু করে। ২০০৯ সালে লিবারহান কমিশন গঠনের ১৬ বছর পর তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করে। কমিশন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বিষয়টি স্বতঃস্ফূর্ত ছিল না; বরং এটি দীর্ঘদিনে শ্রমসাধ্য প্রস্তুতি ও পূর্বপরিকল্পনার মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়েছিল।
এরপর ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে এই বিতর্কিত ভূমিকে হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মালিকানাধীন বলে ঘোষণা দেন। পরে আদালত ২ দশমিক ৭৭ একর বিতর্কিত এলাকাটি সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া এবং রাম লাল্লার মধ্যে ভাগ করে দেন। পরে সে বছরের মে মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন এবং উভয় পক্ষের আপিলের ওপর স্টে অর্ডার দেন।
ভারতের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহার ২০১৭ সালের মার্চে বিরোধের বিষয়টি আদালতের বাইরে নিষ্পত্তির পরামর্শ দেন। সে বছরের আগস্টে বিরোধের বিভিন্ন পক্ষের আবেদনের শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্ট তিন বিচারপতির সমন্বয়ে একটি বেঞ্চ গঠন করে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জমি বিরোধ মামলার আপিলের শুনানি শুরু হয়।
এই মামলার শুনানির জন্য ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করা হয় ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে। সে বছরের ৯ নভেম্বর ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বিতর্কিত স্থানে মন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা, বিতর্কিত ২ দশমিক ৭৭ একর জমি রামমন্দির নির্মাণের জন্য সরকারের স্থাপিত একটি ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করা হবে। রায়ে আরও বলা হয়, ‘বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা, আইনের শাসনের গুরুতর লঙ্ঘন ছিল।’ রায়ে নতুন করে মসজিদ নির্মাণের জন্য অযোধ্যায় মুসলমানদের জন্য ৫ একর জায়গা বরাদ্দ করারও নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশটির পার্লামেন্টে জানান, মন্ত্রিসভা মন্দির নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য একটি স্বায়ত্তশাসিত ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার সভাপতি হবেন রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সভাপতি ও রাম জন্মভূমি নিবাসের প্রধান মহন্ত নৃত্য গোপাল দাস। পরে সে বছর ৫ আগস্ট রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মোদি।
পরে মন্দির নির্মাণের ব্যয় নির্বাহের জন্য ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ৪৫ দিনব্যাপী তহবিল সংগ্রহের অভিযান শুরু হয়। সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি রুপিরও বেশি সংগ্রহ করা হয় এবং সর্বশেষ স্থানীয় সময় আজ সোমবার দুপুরে মোদি এই মন্দিরের উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদি।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি ও টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া

মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সেনাপতি মীর বাকি ১৫২৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর আগে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশের দাবি, এই মসজিদটি হিন্দুধর্মের অন্যতম দেবতা রামের জন্মভূমির ওপর নির্মিত। সেই সূত্র ধরে বাবরি মসজিদকে কেন্দ্র করে প্রথম আপত্তি উত্থাপিত হয় ১৭৫১ সালে। এরপর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রামমন্দির। আজ সোমবার সেই মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
অযোধ্যার বাবরি মসজিদ বনাম রামমন্দিরের ২ দশমিক ৭৭ একর জায়গাকে কেন্দ্র করে মূল দ্বন্দ্ব। এই বাবরি মসজিদ বনাম রামমন্দিরকে ইস্যু করে বিজেপি ক্রমেই জনমত হাসিল করেছে। তার ফলাফল হিসেবে ১৯৮৪ সালে লোকসভায় মাত্র দুটি আসন পাওয়া বিজেপি ২০১৯ সালের নির্বাচনে ৩০৩টি আসন নিয়ে প্রধান দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
যা হোক, ১৫২৮ সালে মীর বাকির নির্মিত বাবরি মসজিদ নিয়ে প্রথম আপত্তি উত্থাপিত হয় ১৭৫১ সালে। মারাঠারা সে বছর অযোধ্যা, কাশী, মাথুরাসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ দাবি করে। এর ফলে বেশ কয়েক দফা বিবাদ-সংঘাত সংঘটিত হয়। যদিও এর কোনো রেকর্ড কোনো নথিপত্রে পাওয়া যায় না।
এরপর ১০০ বছরের বেশি সময় পর সিপাহি বিদ্রোহের ঠিক এক বছর পর ১৮৫৮ সালে নিহাং শিখরা অযোধ্যার বাবরি মসজিদে ভাঙচুর চালায় এবং ‘হওয়ান’ নামে একধরনের আচার পালন করে। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের পুলিশের নথি অনুসারে, বাবরি মসজিদ দখলের এটিই প্রথম প্রচেষ্টা। নিহাং শিখদের পর সে সময় স্থানীয় হিন্দুরা মসজিদে প্রবেশ করে পূজা করেছিল।
তবে আইনি দিক থেকে বাবরি মসজিদ নিয়ে প্রথম উদ্যোগ নেওয়া হয় ১৮৮৫ সালে। নির্মোহী আখড়া নামে একটি গোষ্ঠীর সন্ন্যাসী মোহন্ত রঘুবীর দাস উত্তর প্রদেশের ফয়জাবাদ জেলা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় রঘুবীর দাবি করেন, তাঁকে বাবরি মসজিদের বাইরের প্রাঙ্গণে একটি মন্দির তৈরির অনুমতি দেওয়া হোক। সে সময় আদালত সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
এ ঘটনার দীর্ঘদিন পর ১৯৪৯ সালে অর্থাৎ ভারত স্বাধীন হওয়ার দুই বছর পর বাবরি মসজিদের মূল গম্বুজের নিচে ‘রাম লাল্লার’ মূর্তি স্থাপন করা হয়। সে বছর ডিসেম্বরের ২২ ও ২৩ তারিখে একদল হিন্দু মসজিদের ভেতরে অবস্থান নেন। অনেকে দাবি করেন, সে সময় রামের সেই মূর্তি ‘অলৌকিকভাবে’ মসজিদের ভেতরে গিয়েছিল। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফয়জাবাদ আদালত মসজিদটিতে মুসলিম ও হিন্দু—দুই সম্প্রদায়ের জন্যই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন এবং সরকারের হাওলায় ছেড়ে দেন।
যা হোক, ১৯৪৯ সালে মসজিদের ভেতরে যে মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল, তা আর সরানো হয়নি। পরে ১৯৫০ সালে সেই মূর্তি পূজা করার অনুমতি চেয়ে গোপাল শিমলা বিশারদ নামে একজন ফয়জাবাদ আদালতে আবেদন করেন। এর প্রায় ৯ বছর পর নির্মোহী আখড়া আবারও দৃশ্যপটে হাজির হয়। সে বছর গোষ্ঠীটি বাবরি মসজিদের স্থানে মূর্তিপূজার অনুমতি চায়। ১৯৬১ সালে সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াক্ফ বোর্ড মসজিদ খুলে দেওয়ার আবেদন করে আদালতে।
১৯৮৪-৮৬ সালের মধ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু করে। ১৯৮৬ সালে স্থানীয় আদালত হিন্দুদের জন্য বাবরি মসজিদের তালা খোলার অনুমতি দেন। ধারণা করা হয়, সে সময় রাজীব গান্ধীর সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছিল। ১৯৮৬-৮৭ সালের মধ্যে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) বাবরি মসজিদ ও তৎসংলগ্ন জায়গা রাম জন্মভূমি ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তরের দাবি জানায়। পাশাপাশি গুজরাটের সোমনাথ মন্দিরের মতো একটি বিশাল মন্দির প্রতিষ্ঠারও দাবি জানায় গোষ্ঠীটি।
কিন্তু দুই বছর পরেই অর্থাৎ ১৯৮৯ সালের আগস্টে এলাহাবাদ হাইকোর্ট বিতর্কিত বাবরি মসজিদের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ পুনর্বহাল করেন। পরে ১৯৮৯ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের লক্ষ্ণৌ বেঞ্চে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ একটি আবেদন করে। আবেদনে বিতর্কিত জায়গাটিকে ভগবান রামের নামের ঘোষণা করার আরজি জানানো হয়।
একই বছরে ফয়জাবাদ আদালতে এ-সংক্রান্ত যত মামলা ঝুলে ছিল, তা হাইকোর্টে স্থানান্তর করা হয়। সে বছরের নভেম্বরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বিতর্কিত ভূমিসংলগ্ন একটি ভূমিতে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। সে মাসেই রাজীব গান্ধী জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করেন ফয়জাবাদ থেকে।
এ বছরই প্রথমবার রামমন্দির আন্দোলনে যোগ দেয় বিজেপি। দলটি পালামপুর অধিবেশনে একটি রাজনৈতিক প্রস্তাব পাস করে। সেখানে বলা হয়, বাবরি মসজিদকেন্দ্রিক বিরোধ দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। এটি সম্ভব না হলে সক্রিয় আইনের মাধ্যমে তা করা উচিত। তবে প্রস্তাবে আরও বলা হয়, এটা হিন্দুদের বিশ্বাসের বিষয় এবং তাই এটি কোনোভাবেই আইন দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না।
বিজেপির নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানি সোমনাথ মন্দির থেকে অযোধ্যা অভিমুখে একটি ‘যাত্রা’র আয়োজন করেন। তিনি দাবি করেন, অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সে বছরের অক্টোবরে বিহারে আদভানিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তিনি গ্রেপ্তার হলেও যাত্রা থামেনি। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আরএসএস এবং বিজেপির নেতা-কর্মীরা অযোধ্যা অভিমুখে যাত্রা এগিয়ে নেন এবং মসজিদ ভাঙচুর করার চেষ্টা করেন। অক্টোবরের ৩০ তারিখে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদবের সরকারের নেতৃত্বে পুলিশ যাত্রায় গুলি করে। ফলে বাবরি মসজিদ সে যাত্রায় রক্ষা পায়।
কিন্তু সেই ঘটনার মাত্র এক মাস ছয় দিনের মাথায় ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলেন আন্দোলনকারীরা। সে সময় উত্তর প্রদেশের ক্ষমতায় ছিলেন কল্যাণ সিং। ঘটনার দিন কয়েক হাজার করসেবক (বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আরএসএস এবং বিজেপির সমর্থক) মসজিদ ভেঙে ফেলেন।
তার আগে, বিজেপি নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানি, মুরলী মনোহর যোশী, নৃত্য গোপাল দাস ও সাধ্বী রীতাম্বরা সমবেত ব্যক্তিদের উদ্দেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন এবং মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর করসেবকেরা বাবরি মসজিদে হামলা চালিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুরো কাঠামো ভেঙে ফেলেন। সে সময় কল্যাণ সিং সরকার সুপ্রিম কোর্টকে মসজিদের ক্ষতি হবে না—এমন আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও পুলিশ করসেবকদের বিরুদ্ধে কোনো অ্যাকশনে যায়নি।
এই ভাঙচুরের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। একটিতে মসজিদ ধ্বংসের জন্য অজ্ঞাত করসেবকদের আসামি করা হয় এবং অপরটিতে বিজেপি নেতা আদভানি, যোশী, উমা ভারতী ও অন্যদের বিরুদ্ধে ধ্বংসের আগে সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। পরে অবশ্য সবাই অভিযোগ থেকে খালাস পান। এর পরপরই ভারতজুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে।
পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৯৩ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিতর্কিত স্থানসহ অযোধ্যায় ৬৭ দশমিক ৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে। সে বছরের অক্টোবরে সিবিআই আদভানি ও অন্যদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে চার্জশিট ফাইল করে। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৯৪ সালে জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট বহাল রাখেন। একই সময়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের লক্ষ্ণৌ বেঞ্চ বিতর্কিত এলাকার সব মামলার শুনানি শুরু করেন এবং সেখানে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের নির্দেশ দেন।
দীর্ঘ কয়েক বছর পর ২০০৩ সালে ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ বিতর্কিত স্থানটির খনন শুরু করে। ২০০৯ সালে লিবারহান কমিশন গঠনের ১৬ বছর পর তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করে। কমিশন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বিষয়টি স্বতঃস্ফূর্ত ছিল না; বরং এটি দীর্ঘদিনে শ্রমসাধ্য প্রস্তুতি ও পূর্বপরিকল্পনার মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়েছিল।
এরপর ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে এই বিতর্কিত ভূমিকে হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মালিকানাধীন বলে ঘোষণা দেন। পরে আদালত ২ দশমিক ৭৭ একর বিতর্কিত এলাকাটি সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া এবং রাম লাল্লার মধ্যে ভাগ করে দেন। পরে সে বছরের মে মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন এবং উভয় পক্ষের আপিলের ওপর স্টে অর্ডার দেন।
ভারতের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহার ২০১৭ সালের মার্চে বিরোধের বিষয়টি আদালতের বাইরে নিষ্পত্তির পরামর্শ দেন। সে বছরের আগস্টে বিরোধের বিভিন্ন পক্ষের আবেদনের শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্ট তিন বিচারপতির সমন্বয়ে একটি বেঞ্চ গঠন করে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জমি বিরোধ মামলার আপিলের শুনানি শুরু হয়।
এই মামলার শুনানির জন্য ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করা হয় ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে। সে বছরের ৯ নভেম্বর ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বিতর্কিত স্থানে মন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা, বিতর্কিত ২ দশমিক ৭৭ একর জমি রামমন্দির নির্মাণের জন্য সরকারের স্থাপিত একটি ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করা হবে। রায়ে আরও বলা হয়, ‘বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা, আইনের শাসনের গুরুতর লঙ্ঘন ছিল।’ রায়ে নতুন করে মসজিদ নির্মাণের জন্য অযোধ্যায় মুসলমানদের জন্য ৫ একর জায়গা বরাদ্দ করারও নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশটির পার্লামেন্টে জানান, মন্ত্রিসভা মন্দির নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য একটি স্বায়ত্তশাসিত ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার সভাপতি হবেন রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সভাপতি ও রাম জন্মভূমি নিবাসের প্রধান মহন্ত নৃত্য গোপাল দাস। পরে সে বছর ৫ আগস্ট রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মোদি।
পরে মন্দির নির্মাণের ব্যয় নির্বাহের জন্য ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ৪৫ দিনব্যাপী তহবিল সংগ্রহের অভিযান শুরু হয়। সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি রুপিরও বেশি সংগ্রহ করা হয় এবং সর্বশেষ স্থানীয় সময় আজ সোমবার দুপুরে মোদি এই মন্দিরের উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদি।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি ও টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া

মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সেনাপতি মীর বাকি ১৫২৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর আগে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশের দাবি, এই মসজিদটি হিন্দুধর্মের অন্যতম দেবতা রামের জন্মভূমির ওপর নির্মিত। সেই সূত্র ধরে বাবরি মসজিদকে কেন্দ্র করে প্রথম আপত্তি উত্থাপিত হয় ১৭৫১ সালে। এরপর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রামমন্দির। আজ সোমবার সেই মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
অযোধ্যার বাবরি মসজিদ বনাম রামমন্দিরের ২ দশমিক ৭৭ একর জায়গাকে কেন্দ্র করে মূল দ্বন্দ্ব। এই বাবরি মসজিদ বনাম রামমন্দিরকে ইস্যু করে বিজেপি ক্রমেই জনমত হাসিল করেছে। তার ফলাফল হিসেবে ১৯৮৪ সালে লোকসভায় মাত্র দুটি আসন পাওয়া বিজেপি ২০১৯ সালের নির্বাচনে ৩০৩টি আসন নিয়ে প্রধান দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
যা হোক, ১৫২৮ সালে মীর বাকির নির্মিত বাবরি মসজিদ নিয়ে প্রথম আপত্তি উত্থাপিত হয় ১৭৫১ সালে। মারাঠারা সে বছর অযোধ্যা, কাশী, মাথুরাসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ দাবি করে। এর ফলে বেশ কয়েক দফা বিবাদ-সংঘাত সংঘটিত হয়। যদিও এর কোনো রেকর্ড কোনো নথিপত্রে পাওয়া যায় না।
এরপর ১০০ বছরের বেশি সময় পর সিপাহি বিদ্রোহের ঠিক এক বছর পর ১৮৫৮ সালে নিহাং শিখরা অযোধ্যার বাবরি মসজিদে ভাঙচুর চালায় এবং ‘হওয়ান’ নামে একধরনের আচার পালন করে। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের পুলিশের নথি অনুসারে, বাবরি মসজিদ দখলের এটিই প্রথম প্রচেষ্টা। নিহাং শিখদের পর সে সময় স্থানীয় হিন্দুরা মসজিদে প্রবেশ করে পূজা করেছিল।
তবে আইনি দিক থেকে বাবরি মসজিদ নিয়ে প্রথম উদ্যোগ নেওয়া হয় ১৮৮৫ সালে। নির্মোহী আখড়া নামে একটি গোষ্ঠীর সন্ন্যাসী মোহন্ত রঘুবীর দাস উত্তর প্রদেশের ফয়জাবাদ জেলা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় রঘুবীর দাবি করেন, তাঁকে বাবরি মসজিদের বাইরের প্রাঙ্গণে একটি মন্দির তৈরির অনুমতি দেওয়া হোক। সে সময় আদালত সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
এ ঘটনার দীর্ঘদিন পর ১৯৪৯ সালে অর্থাৎ ভারত স্বাধীন হওয়ার দুই বছর পর বাবরি মসজিদের মূল গম্বুজের নিচে ‘রাম লাল্লার’ মূর্তি স্থাপন করা হয়। সে বছর ডিসেম্বরের ২২ ও ২৩ তারিখে একদল হিন্দু মসজিদের ভেতরে অবস্থান নেন। অনেকে দাবি করেন, সে সময় রামের সেই মূর্তি ‘অলৌকিকভাবে’ মসজিদের ভেতরে গিয়েছিল। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফয়জাবাদ আদালত মসজিদটিতে মুসলিম ও হিন্দু—দুই সম্প্রদায়ের জন্যই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন এবং সরকারের হাওলায় ছেড়ে দেন।
যা হোক, ১৯৪৯ সালে মসজিদের ভেতরে যে মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল, তা আর সরানো হয়নি। পরে ১৯৫০ সালে সেই মূর্তি পূজা করার অনুমতি চেয়ে গোপাল শিমলা বিশারদ নামে একজন ফয়জাবাদ আদালতে আবেদন করেন। এর প্রায় ৯ বছর পর নির্মোহী আখড়া আবারও দৃশ্যপটে হাজির হয়। সে বছর গোষ্ঠীটি বাবরি মসজিদের স্থানে মূর্তিপূজার অনুমতি চায়। ১৯৬১ সালে সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াক্ফ বোর্ড মসজিদ খুলে দেওয়ার আবেদন করে আদালতে।
১৯৮৪-৮৬ সালের মধ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু করে। ১৯৮৬ সালে স্থানীয় আদালত হিন্দুদের জন্য বাবরি মসজিদের তালা খোলার অনুমতি দেন। ধারণা করা হয়, সে সময় রাজীব গান্ধীর সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছিল। ১৯৮৬-৮৭ সালের মধ্যে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) বাবরি মসজিদ ও তৎসংলগ্ন জায়গা রাম জন্মভূমি ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তরের দাবি জানায়। পাশাপাশি গুজরাটের সোমনাথ মন্দিরের মতো একটি বিশাল মন্দির প্রতিষ্ঠারও দাবি জানায় গোষ্ঠীটি।
কিন্তু দুই বছর পরেই অর্থাৎ ১৯৮৯ সালের আগস্টে এলাহাবাদ হাইকোর্ট বিতর্কিত বাবরি মসজিদের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ পুনর্বহাল করেন। পরে ১৯৮৯ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের লক্ষ্ণৌ বেঞ্চে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ একটি আবেদন করে। আবেদনে বিতর্কিত জায়গাটিকে ভগবান রামের নামের ঘোষণা করার আরজি জানানো হয়।
একই বছরে ফয়জাবাদ আদালতে এ-সংক্রান্ত যত মামলা ঝুলে ছিল, তা হাইকোর্টে স্থানান্তর করা হয়। সে বছরের নভেম্বরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বিতর্কিত ভূমিসংলগ্ন একটি ভূমিতে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। সে মাসেই রাজীব গান্ধী জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করেন ফয়জাবাদ থেকে।
এ বছরই প্রথমবার রামমন্দির আন্দোলনে যোগ দেয় বিজেপি। দলটি পালামপুর অধিবেশনে একটি রাজনৈতিক প্রস্তাব পাস করে। সেখানে বলা হয়, বাবরি মসজিদকেন্দ্রিক বিরোধ দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। এটি সম্ভব না হলে সক্রিয় আইনের মাধ্যমে তা করা উচিত। তবে প্রস্তাবে আরও বলা হয়, এটা হিন্দুদের বিশ্বাসের বিষয় এবং তাই এটি কোনোভাবেই আইন দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না।
বিজেপির নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানি সোমনাথ মন্দির থেকে অযোধ্যা অভিমুখে একটি ‘যাত্রা’র আয়োজন করেন। তিনি দাবি করেন, অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সে বছরের অক্টোবরে বিহারে আদভানিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তিনি গ্রেপ্তার হলেও যাত্রা থামেনি। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আরএসএস এবং বিজেপির নেতা-কর্মীরা অযোধ্যা অভিমুখে যাত্রা এগিয়ে নেন এবং মসজিদ ভাঙচুর করার চেষ্টা করেন। অক্টোবরের ৩০ তারিখে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদবের সরকারের নেতৃত্বে পুলিশ যাত্রায় গুলি করে। ফলে বাবরি মসজিদ সে যাত্রায় রক্ষা পায়।
কিন্তু সেই ঘটনার মাত্র এক মাস ছয় দিনের মাথায় ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলেন আন্দোলনকারীরা। সে সময় উত্তর প্রদেশের ক্ষমতায় ছিলেন কল্যাণ সিং। ঘটনার দিন কয়েক হাজার করসেবক (বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আরএসএস এবং বিজেপির সমর্থক) মসজিদ ভেঙে ফেলেন।
তার আগে, বিজেপি নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানি, মুরলী মনোহর যোশী, নৃত্য গোপাল দাস ও সাধ্বী রীতাম্বরা সমবেত ব্যক্তিদের উদ্দেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন এবং মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর করসেবকেরা বাবরি মসজিদে হামলা চালিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুরো কাঠামো ভেঙে ফেলেন। সে সময় কল্যাণ সিং সরকার সুপ্রিম কোর্টকে মসজিদের ক্ষতি হবে না—এমন আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও পুলিশ করসেবকদের বিরুদ্ধে কোনো অ্যাকশনে যায়নি।
এই ভাঙচুরের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। একটিতে মসজিদ ধ্বংসের জন্য অজ্ঞাত করসেবকদের আসামি করা হয় এবং অপরটিতে বিজেপি নেতা আদভানি, যোশী, উমা ভারতী ও অন্যদের বিরুদ্ধে ধ্বংসের আগে সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। পরে অবশ্য সবাই অভিযোগ থেকে খালাস পান। এর পরপরই ভারতজুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে।
পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৯৩ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিতর্কিত স্থানসহ অযোধ্যায় ৬৭ দশমিক ৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে। সে বছরের অক্টোবরে সিবিআই আদভানি ও অন্যদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে চার্জশিট ফাইল করে। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৯৪ সালে জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট বহাল রাখেন। একই সময়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের লক্ষ্ণৌ বেঞ্চ বিতর্কিত এলাকার সব মামলার শুনানি শুরু করেন এবং সেখানে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের নির্দেশ দেন।
দীর্ঘ কয়েক বছর পর ২০০৩ সালে ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ বিতর্কিত স্থানটির খনন শুরু করে। ২০০৯ সালে লিবারহান কমিশন গঠনের ১৬ বছর পর তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করে। কমিশন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বিষয়টি স্বতঃস্ফূর্ত ছিল না; বরং এটি দীর্ঘদিনে শ্রমসাধ্য প্রস্তুতি ও পূর্বপরিকল্পনার মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়েছিল।
এরপর ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে এই বিতর্কিত ভূমিকে হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মালিকানাধীন বলে ঘোষণা দেন। পরে আদালত ২ দশমিক ৭৭ একর বিতর্কিত এলাকাটি সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া এবং রাম লাল্লার মধ্যে ভাগ করে দেন। পরে সে বছরের মে মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন এবং উভয় পক্ষের আপিলের ওপর স্টে অর্ডার দেন।
ভারতের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহার ২০১৭ সালের মার্চে বিরোধের বিষয়টি আদালতের বাইরে নিষ্পত্তির পরামর্শ দেন। সে বছরের আগস্টে বিরোধের বিভিন্ন পক্ষের আবেদনের শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্ট তিন বিচারপতির সমন্বয়ে একটি বেঞ্চ গঠন করে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জমি বিরোধ মামলার আপিলের শুনানি শুরু হয়।
এই মামলার শুনানির জন্য ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করা হয় ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে। সে বছরের ৯ নভেম্বর ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বিতর্কিত স্থানে মন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা, বিতর্কিত ২ দশমিক ৭৭ একর জমি রামমন্দির নির্মাণের জন্য সরকারের স্থাপিত একটি ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করা হবে। রায়ে আরও বলা হয়, ‘বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা, আইনের শাসনের গুরুতর লঙ্ঘন ছিল।’ রায়ে নতুন করে মসজিদ নির্মাণের জন্য অযোধ্যায় মুসলমানদের জন্য ৫ একর জায়গা বরাদ্দ করারও নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশটির পার্লামেন্টে জানান, মন্ত্রিসভা মন্দির নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য একটি স্বায়ত্তশাসিত ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার সভাপতি হবেন রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সভাপতি ও রাম জন্মভূমি নিবাসের প্রধান মহন্ত নৃত্য গোপাল দাস। পরে সে বছর ৫ আগস্ট রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মোদি।
পরে মন্দির নির্মাণের ব্যয় নির্বাহের জন্য ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ৪৫ দিনব্যাপী তহবিল সংগ্রহের অভিযান শুরু হয়। সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি রুপিরও বেশি সংগ্রহ করা হয় এবং সর্বশেষ স্থানীয় সময় আজ সোমবার দুপুরে মোদি এই মন্দিরের উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদি।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি ও টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া

মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সেনাপতি মীর বাকি ১৫২৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর আগে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশের দাবি, এই মসজিদটি হিন্দুধর্মের অন্যতম দেবতা রামের জন্মভূমির ওপর নির্মিত। সেই সূত্র ধরে বাবরি মসজিদকে কেন্দ্র করে প্রথম আপত্তি উত্থাপিত হয় ১৭৫১ সালে। এরপর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রামমন্দির। আজ সোমবার সেই মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
অযোধ্যার বাবরি মসজিদ বনাম রামমন্দিরের ২ দশমিক ৭৭ একর জায়গাকে কেন্দ্র করে মূল দ্বন্দ্ব। এই বাবরি মসজিদ বনাম রামমন্দিরকে ইস্যু করে বিজেপি ক্রমেই জনমত হাসিল করেছে। তার ফলাফল হিসেবে ১৯৮৪ সালে লোকসভায় মাত্র দুটি আসন পাওয়া বিজেপি ২০১৯ সালের নির্বাচনে ৩০৩টি আসন নিয়ে প্রধান দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
যা হোক, ১৫২৮ সালে মীর বাকির নির্মিত বাবরি মসজিদ নিয়ে প্রথম আপত্তি উত্থাপিত হয় ১৭৫১ সালে। মারাঠারা সে বছর অযোধ্যা, কাশী, মাথুরাসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ দাবি করে। এর ফলে বেশ কয়েক দফা বিবাদ-সংঘাত সংঘটিত হয়। যদিও এর কোনো রেকর্ড কোনো নথিপত্রে পাওয়া যায় না।
এরপর ১০০ বছরের বেশি সময় পর সিপাহি বিদ্রোহের ঠিক এক বছর পর ১৮৫৮ সালে নিহাং শিখরা অযোধ্যার বাবরি মসজিদে ভাঙচুর চালায় এবং ‘হওয়ান’ নামে একধরনের আচার পালন করে। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের পুলিশের নথি অনুসারে, বাবরি মসজিদ দখলের এটিই প্রথম প্রচেষ্টা। নিহাং শিখদের পর সে সময় স্থানীয় হিন্দুরা মসজিদে প্রবেশ করে পূজা করেছিল।
তবে আইনি দিক থেকে বাবরি মসজিদ নিয়ে প্রথম উদ্যোগ নেওয়া হয় ১৮৮৫ সালে। নির্মোহী আখড়া নামে একটি গোষ্ঠীর সন্ন্যাসী মোহন্ত রঘুবীর দাস উত্তর প্রদেশের ফয়জাবাদ জেলা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় রঘুবীর দাবি করেন, তাঁকে বাবরি মসজিদের বাইরের প্রাঙ্গণে একটি মন্দির তৈরির অনুমতি দেওয়া হোক। সে সময় আদালত সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
এ ঘটনার দীর্ঘদিন পর ১৯৪৯ সালে অর্থাৎ ভারত স্বাধীন হওয়ার দুই বছর পর বাবরি মসজিদের মূল গম্বুজের নিচে ‘রাম লাল্লার’ মূর্তি স্থাপন করা হয়। সে বছর ডিসেম্বরের ২২ ও ২৩ তারিখে একদল হিন্দু মসজিদের ভেতরে অবস্থান নেন। অনেকে দাবি করেন, সে সময় রামের সেই মূর্তি ‘অলৌকিকভাবে’ মসজিদের ভেতরে গিয়েছিল। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফয়জাবাদ আদালত মসজিদটিতে মুসলিম ও হিন্দু—দুই সম্প্রদায়ের জন্যই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন এবং সরকারের হাওলায় ছেড়ে দেন।
যা হোক, ১৯৪৯ সালে মসজিদের ভেতরে যে মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল, তা আর সরানো হয়নি। পরে ১৯৫০ সালে সেই মূর্তি পূজা করার অনুমতি চেয়ে গোপাল শিমলা বিশারদ নামে একজন ফয়জাবাদ আদালতে আবেদন করেন। এর প্রায় ৯ বছর পর নির্মোহী আখড়া আবারও দৃশ্যপটে হাজির হয়। সে বছর গোষ্ঠীটি বাবরি মসজিদের স্থানে মূর্তিপূজার অনুমতি চায়। ১৯৬১ সালে সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াক্ফ বোর্ড মসজিদ খুলে দেওয়ার আবেদন করে আদালতে।
১৯৮৪-৮৬ সালের মধ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু করে। ১৯৮৬ সালে স্থানীয় আদালত হিন্দুদের জন্য বাবরি মসজিদের তালা খোলার অনুমতি দেন। ধারণা করা হয়, সে সময় রাজীব গান্ধীর সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছিল। ১৯৮৬-৮৭ সালের মধ্যে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) বাবরি মসজিদ ও তৎসংলগ্ন জায়গা রাম জন্মভূমি ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তরের দাবি জানায়। পাশাপাশি গুজরাটের সোমনাথ মন্দিরের মতো একটি বিশাল মন্দির প্রতিষ্ঠারও দাবি জানায় গোষ্ঠীটি।
কিন্তু দুই বছর পরেই অর্থাৎ ১৯৮৯ সালের আগস্টে এলাহাবাদ হাইকোর্ট বিতর্কিত বাবরি মসজিদের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ পুনর্বহাল করেন। পরে ১৯৮৯ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের লক্ষ্ণৌ বেঞ্চে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ একটি আবেদন করে। আবেদনে বিতর্কিত জায়গাটিকে ভগবান রামের নামের ঘোষণা করার আরজি জানানো হয়।
একই বছরে ফয়জাবাদ আদালতে এ-সংক্রান্ত যত মামলা ঝুলে ছিল, তা হাইকোর্টে স্থানান্তর করা হয়। সে বছরের নভেম্বরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বিতর্কিত ভূমিসংলগ্ন একটি ভূমিতে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। সে মাসেই রাজীব গান্ধী জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করেন ফয়জাবাদ থেকে।
এ বছরই প্রথমবার রামমন্দির আন্দোলনে যোগ দেয় বিজেপি। দলটি পালামপুর অধিবেশনে একটি রাজনৈতিক প্রস্তাব পাস করে। সেখানে বলা হয়, বাবরি মসজিদকেন্দ্রিক বিরোধ দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। এটি সম্ভব না হলে সক্রিয় আইনের মাধ্যমে তা করা উচিত। তবে প্রস্তাবে আরও বলা হয়, এটা হিন্দুদের বিশ্বাসের বিষয় এবং তাই এটি কোনোভাবেই আইন দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না।
বিজেপির নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানি সোমনাথ মন্দির থেকে অযোধ্যা অভিমুখে একটি ‘যাত্রা’র আয়োজন করেন। তিনি দাবি করেন, অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সে বছরের অক্টোবরে বিহারে আদভানিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তিনি গ্রেপ্তার হলেও যাত্রা থামেনি। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আরএসএস এবং বিজেপির নেতা-কর্মীরা অযোধ্যা অভিমুখে যাত্রা এগিয়ে নেন এবং মসজিদ ভাঙচুর করার চেষ্টা করেন। অক্টোবরের ৩০ তারিখে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদবের সরকারের নেতৃত্বে পুলিশ যাত্রায় গুলি করে। ফলে বাবরি মসজিদ সে যাত্রায় রক্ষা পায়।
কিন্তু সেই ঘটনার মাত্র এক মাস ছয় দিনের মাথায় ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলেন আন্দোলনকারীরা। সে সময় উত্তর প্রদেশের ক্ষমতায় ছিলেন কল্যাণ সিং। ঘটনার দিন কয়েক হাজার করসেবক (বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আরএসএস এবং বিজেপির সমর্থক) মসজিদ ভেঙে ফেলেন।
তার আগে, বিজেপি নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানি, মুরলী মনোহর যোশী, নৃত্য গোপাল দাস ও সাধ্বী রীতাম্বরা সমবেত ব্যক্তিদের উদ্দেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন এবং মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর করসেবকেরা বাবরি মসজিদে হামলা চালিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুরো কাঠামো ভেঙে ফেলেন। সে সময় কল্যাণ সিং সরকার সুপ্রিম কোর্টকে মসজিদের ক্ষতি হবে না—এমন আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও পুলিশ করসেবকদের বিরুদ্ধে কোনো অ্যাকশনে যায়নি।
এই ভাঙচুরের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। একটিতে মসজিদ ধ্বংসের জন্য অজ্ঞাত করসেবকদের আসামি করা হয় এবং অপরটিতে বিজেপি নেতা আদভানি, যোশী, উমা ভারতী ও অন্যদের বিরুদ্ধে ধ্বংসের আগে সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। পরে অবশ্য সবাই অভিযোগ থেকে খালাস পান। এর পরপরই ভারতজুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে।
পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৯৩ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিতর্কিত স্থানসহ অযোধ্যায় ৬৭ দশমিক ৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে। সে বছরের অক্টোবরে সিবিআই আদভানি ও অন্যদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে চার্জশিট ফাইল করে। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৯৪ সালে জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট বহাল রাখেন। একই সময়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের লক্ষ্ণৌ বেঞ্চ বিতর্কিত এলাকার সব মামলার শুনানি শুরু করেন এবং সেখানে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের নির্দেশ দেন।
দীর্ঘ কয়েক বছর পর ২০০৩ সালে ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ বিতর্কিত স্থানটির খনন শুরু করে। ২০০৯ সালে লিবারহান কমিশন গঠনের ১৬ বছর পর তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করে। কমিশন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বিষয়টি স্বতঃস্ফূর্ত ছিল না; বরং এটি দীর্ঘদিনে শ্রমসাধ্য প্রস্তুতি ও পূর্বপরিকল্পনার মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়েছিল।
এরপর ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে এই বিতর্কিত ভূমিকে হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মালিকানাধীন বলে ঘোষণা দেন। পরে আদালত ২ দশমিক ৭৭ একর বিতর্কিত এলাকাটি সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া এবং রাম লাল্লার মধ্যে ভাগ করে দেন। পরে সে বছরের মে মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন এবং উভয় পক্ষের আপিলের ওপর স্টে অর্ডার দেন।
ভারতের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহার ২০১৭ সালের মার্চে বিরোধের বিষয়টি আদালতের বাইরে নিষ্পত্তির পরামর্শ দেন। সে বছরের আগস্টে বিরোধের বিভিন্ন পক্ষের আবেদনের শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্ট তিন বিচারপতির সমন্বয়ে একটি বেঞ্চ গঠন করে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জমি বিরোধ মামলার আপিলের শুনানি শুরু হয়।
এই মামলার শুনানির জন্য ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করা হয় ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে। সে বছরের ৯ নভেম্বর ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বিতর্কিত স্থানে মন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা, বিতর্কিত ২ দশমিক ৭৭ একর জমি রামমন্দির নির্মাণের জন্য সরকারের স্থাপিত একটি ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করা হবে। রায়ে আরও বলা হয়, ‘বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা, আইনের শাসনের গুরুতর লঙ্ঘন ছিল।’ রায়ে নতুন করে মসজিদ নির্মাণের জন্য অযোধ্যায় মুসলমানদের জন্য ৫ একর জায়গা বরাদ্দ করারও নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশটির পার্লামেন্টে জানান, মন্ত্রিসভা মন্দির নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য একটি স্বায়ত্তশাসিত ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার সভাপতি হবেন রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সভাপতি ও রাম জন্মভূমি নিবাসের প্রধান মহন্ত নৃত্য গোপাল দাস। পরে সে বছর ৫ আগস্ট রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মোদি।
পরে মন্দির নির্মাণের ব্যয় নির্বাহের জন্য ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ৪৫ দিনব্যাপী তহবিল সংগ্রহের অভিযান শুরু হয়। সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি রুপিরও বেশি সংগ্রহ করা হয় এবং সর্বশেষ স্থানীয় সময় আজ সোমবার দুপুরে মোদি এই মন্দিরের উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদি।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি ও টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া

ভারতের আসাম রাজ্যের হোজাই জেলায় এক মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল সাতটি বন্য হাতি। গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের সঙ্গে হাতির পালের এই ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। দুর্ঘটনায় একটি হাতি গুরুতর জখম হয়েছে, যার অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কাজনক।
৩ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পর আর কোনো যুদ্ধ হবে না—যদি পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে সম্মান করে এবং দেশটির নিরাপত্তাগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘ডিরেক্ট লাইন’-এ তিনি এই মন্তব্য করেন।
১৫ ঘণ্টা আগে
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার অভিযোগে করা মামলার মূল শুনানি আগামী জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) জানিয়েছে, এ মামলার শুনানি চলবে আগামী ১২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।
১৫ ঘণ্টা আগে
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির সেই বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ভূগোল পরিবর্তন করা যায় না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।
১৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারতের আসাম রাজ্যের হোজাই জেলায় এক মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল সাতটি বন্য হাতি। গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের সঙ্গে হাতির পালের এই ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। দুর্ঘটনায় একটি হাতি গুরুতর জখম হয়েছে, যার অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কাজনক।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সংঘর্ষের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে রাজধানী এক্সপ্রেসের শক্তিশালী ইঞ্জিনসহ পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। তবে বড় ধরনের দুর্ঘটনা সত্ত্বেও ট্রেনের যাত্রীরা সবাই সুরক্ষিত রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের লামডিং ডিভিশনের অন্তর্গত যমুনামুখ-কামপুর সেকশনে শুক্রবার রাত ২টো ১৭ মিনিটে এই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ও রেল সূত্রে জানা গেছে, ওই সময় ১১-১২টি হাতির একটি পাল রেললাইন পার হচ্ছিল। ঘন কুয়াশা ও রাতের অন্ধকারের মধ্যে দ্রুতগতিতে থাকা সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসটি হাতির পালের ওপর উঠে পড়ে। ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে সাতটি হাতি এবং ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। স্থানীয়দের দাবি, এই এলাকায় হাতির যাতায়াত থাকলেও ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করার মতো পর্যাপ্ত সতর্কতা ছিল না।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা কপিঞ্জলকিশোর শর্মা জানিয়েছেন, যে স্থানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে কোনো নির্ধারিত ‘এলিফ্যান্ট করিডর’ ছিল না। তিনি বলেন, ‘চালক লাইনের ওপর হাতির পাল দেখতে পেয়েই দ্রুত আপৎকালীন ব্রেক কষেছিলেন। কিন্তু ট্রেনের গতিবেগ অত্যন্ত বেশি থাকায় এবং দূরত্ব কম হওয়ায় ধাক্কা এড়ানো সম্ভব হয়নি।’
রেল কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর ট্রেনের কোনো যাত্রী আহত হননি এবং লাইনচ্যুত বগিগুলো উদ্ধার করে লাইন সচল করার কাজ চলছে।
দুর্ঘটনাস্থলটি আসামের গুয়াহাটি থেকে ১২৬ কিলোমিটার দূরে হোজাই জেলায় অবস্থিত। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, প্রকৌশলী এবং বন দপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। আটকে পড়া যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে রেলের পক্ষ থেকে দ্রুত বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই দুর্ঘটনার জেরে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাকি দেশের রেল যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়েছে। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের যাত্রাপথ রিশিডিউল করা হয়েছে এবং অনেক ট্রেনকে বিকল্প পথে চালানো হচ্ছে।
বন দপ্তরের বিশেষ দল ইতিমধ্যে মৃত হাতিগুলোর ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মৃত হাতিগুলোর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক হাতির পাশাপাশি শাবকও থাকতে পারে। রেললাইনটি হাতির চলাচলের স্বাভাবিক পথ না হওয়া সত্ত্বেও কেন সেখানে হাতির পাল এল এবং চালকের কোনো গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বন্য প্রাণীপ্রেমীরা এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং রেললাইনের ধারে সেন্সর বা আধুনিক নজরদারি ব্যবস্থা স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।

ভারতের আসাম রাজ্যের হোজাই জেলায় এক মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল সাতটি বন্য হাতি। গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের সঙ্গে হাতির পালের এই ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। দুর্ঘটনায় একটি হাতি গুরুতর জখম হয়েছে, যার অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কাজনক।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সংঘর্ষের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে রাজধানী এক্সপ্রেসের শক্তিশালী ইঞ্জিনসহ পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। তবে বড় ধরনের দুর্ঘটনা সত্ত্বেও ট্রেনের যাত্রীরা সবাই সুরক্ষিত রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের লামডিং ডিভিশনের অন্তর্গত যমুনামুখ-কামপুর সেকশনে শুক্রবার রাত ২টো ১৭ মিনিটে এই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ও রেল সূত্রে জানা গেছে, ওই সময় ১১-১২টি হাতির একটি পাল রেললাইন পার হচ্ছিল। ঘন কুয়াশা ও রাতের অন্ধকারের মধ্যে দ্রুতগতিতে থাকা সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসটি হাতির পালের ওপর উঠে পড়ে। ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে সাতটি হাতি এবং ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। স্থানীয়দের দাবি, এই এলাকায় হাতির যাতায়াত থাকলেও ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করার মতো পর্যাপ্ত সতর্কতা ছিল না।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা কপিঞ্জলকিশোর শর্মা জানিয়েছেন, যে স্থানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে কোনো নির্ধারিত ‘এলিফ্যান্ট করিডর’ ছিল না। তিনি বলেন, ‘চালক লাইনের ওপর হাতির পাল দেখতে পেয়েই দ্রুত আপৎকালীন ব্রেক কষেছিলেন। কিন্তু ট্রেনের গতিবেগ অত্যন্ত বেশি থাকায় এবং দূরত্ব কম হওয়ায় ধাক্কা এড়ানো সম্ভব হয়নি।’
রেল কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর ট্রেনের কোনো যাত্রী আহত হননি এবং লাইনচ্যুত বগিগুলো উদ্ধার করে লাইন সচল করার কাজ চলছে।
দুর্ঘটনাস্থলটি আসামের গুয়াহাটি থেকে ১২৬ কিলোমিটার দূরে হোজাই জেলায় অবস্থিত। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, প্রকৌশলী এবং বন দপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। আটকে পড়া যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে রেলের পক্ষ থেকে দ্রুত বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই দুর্ঘটনার জেরে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাকি দেশের রেল যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়েছে। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের যাত্রাপথ রিশিডিউল করা হয়েছে এবং অনেক ট্রেনকে বিকল্প পথে চালানো হচ্ছে।
বন দপ্তরের বিশেষ দল ইতিমধ্যে মৃত হাতিগুলোর ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মৃত হাতিগুলোর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক হাতির পাশাপাশি শাবকও থাকতে পারে। রেললাইনটি হাতির চলাচলের স্বাভাবিক পথ না হওয়া সত্ত্বেও কেন সেখানে হাতির পাল এল এবং চালকের কোনো গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বন্য প্রাণীপ্রেমীরা এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং রেললাইনের ধারে সেন্সর বা আধুনিক নজরদারি ব্যবস্থা স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।

মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সেনাপতি মীর বাকি ১৫২৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর আগে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। হিন্দুদের বড় একটি অংশের দাবি, এই মসজিদটি হিন্দুধর্মের অন্যতম দেবতা রামের জন্মভূমির ওপর নির্মিত। সেই সূত্র ধরে বাবরি মসজিদকে কেন্দ্
২২ জানুয়ারি ২০২৪
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পর আর কোনো যুদ্ধ হবে না—যদি পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে সম্মান করে এবং দেশটির নিরাপত্তাগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘ডিরেক্ট লাইন’-এ তিনি এই মন্তব্য করেন।
১৫ ঘণ্টা আগে
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার অভিযোগে করা মামলার মূল শুনানি আগামী জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) জানিয়েছে, এ মামলার শুনানি চলবে আগামী ১২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।
১৫ ঘণ্টা আগে
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির সেই বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ভূগোল পরিবর্তন করা যায় না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।
১৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পর আর কোনো যুদ্ধ হবে না—যদি পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে সম্মান করে এবং দেশটির নিরাপত্তাগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠান ‘ডিরেক্ট লাইন’-এ তিনি এই মন্তব্য করেন।
বিবিসির সাংবাদিক স্টিভ রোজেনবার্গের প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলোকে আক্রমণ করার যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ‘অর্থহীন’।
পুতিন দাবি করেন, রাশিয়ার প্রতি সম্মান দেখানো হলে এবং পূর্বদিকে ন্যাটোর সম্প্রসারণ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো ‘প্রতারণা’ বন্ধ করলে নতুন কোনো বিশেষ সামরিক অভিযান হবে না। তিনি তাঁর পুরোনো অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করে বলেন, ১৯৯০ সালে সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভকে ন্যাটো সম্প্রসারণ না করার যে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, পশ্চিম তা মানেনি।
মস্কোর একটি হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে পুতিনের পেছনে রাশিয়ার বিশাল মানচিত্র ঝুলছিল। এই মানচিত্রে ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চল, এমনকি ক্রিমিয়াও অন্তর্ভুক্ত ছিল। রুশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের দাবি, ওই অনুষ্ঠানটিতে পুতিনকে উদ্দেশ্য করে ৩০ লাখের বেশি প্রশ্ন জমা পড়েছিল।
ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে পুতিন বলেন, তিনি ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ যুদ্ধ শেষ করতে প্রস্তুত। তবে কোনো ধরনের আপসের ইঙ্গিত দেননি। তিনি আবারও দাবি করেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা বাদ দিতে হবে এবং রাশিয়ার দখল করা চারটি অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনা সরিয়ে নিতে হবে। আংশিকভাবে দখল করে নেওয়া ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চায় রাশিয়া।
দেশের অর্থনীতির প্রশ্নে মূল্যস্ফীতি, প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া এবং ভ্যাট বৃদ্ধির বিষয় স্বীকার করেন পুতিন। অনুষ্ঠানের মধ্যেই রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমিয়ে ১৬ শতাংশে নামানোর ঘোষণা দেয়। বিদেশনীতি, অর্থনীতি ও যুদ্ধের পাশাপাশি অনুষ্ঠানজুড়ে উঠে আসে মাতৃভূমি, প্রবীণ সেনাদের সম্মান এবং সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা।
পুতিন পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তারা ইউক্রেনের মাধ্যমে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের সঙ্গে ‘সমান মর্যাদা ও পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে’ কাজ করতে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন। রাশিয়া ভবিষ্যতে ন্যাটোর ওপর হামলা চালাতে পারে—পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এমন আশঙ্কার কথা আবারও তা নাকচ করে দেন তিনি।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পর আর কোনো যুদ্ধ হবে না—যদি পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে সম্মান করে এবং দেশটির নিরাপত্তাগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠান ‘ডিরেক্ট লাইন’-এ তিনি এই মন্তব্য করেন।
বিবিসির সাংবাদিক স্টিভ রোজেনবার্গের প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলোকে আক্রমণ করার যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ‘অর্থহীন’।
পুতিন দাবি করেন, রাশিয়ার প্রতি সম্মান দেখানো হলে এবং পূর্বদিকে ন্যাটোর সম্প্রসারণ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো ‘প্রতারণা’ বন্ধ করলে নতুন কোনো বিশেষ সামরিক অভিযান হবে না। তিনি তাঁর পুরোনো অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করে বলেন, ১৯৯০ সালে সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভকে ন্যাটো সম্প্রসারণ না করার যে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, পশ্চিম তা মানেনি।
মস্কোর একটি হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে পুতিনের পেছনে রাশিয়ার বিশাল মানচিত্র ঝুলছিল। এই মানচিত্রে ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চল, এমনকি ক্রিমিয়াও অন্তর্ভুক্ত ছিল। রুশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের দাবি, ওই অনুষ্ঠানটিতে পুতিনকে উদ্দেশ্য করে ৩০ লাখের বেশি প্রশ্ন জমা পড়েছিল।
ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে পুতিন বলেন, তিনি ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ যুদ্ধ শেষ করতে প্রস্তুত। তবে কোনো ধরনের আপসের ইঙ্গিত দেননি। তিনি আবারও দাবি করেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা বাদ দিতে হবে এবং রাশিয়ার দখল করা চারটি অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনা সরিয়ে নিতে হবে। আংশিকভাবে দখল করে নেওয়া ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চায় রাশিয়া।
দেশের অর্থনীতির প্রশ্নে মূল্যস্ফীতি, প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া এবং ভ্যাট বৃদ্ধির বিষয় স্বীকার করেন পুতিন। অনুষ্ঠানের মধ্যেই রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমিয়ে ১৬ শতাংশে নামানোর ঘোষণা দেয়। বিদেশনীতি, অর্থনীতি ও যুদ্ধের পাশাপাশি অনুষ্ঠানজুড়ে উঠে আসে মাতৃভূমি, প্রবীণ সেনাদের সম্মান এবং সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা।
পুতিন পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তারা ইউক্রেনের মাধ্যমে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের সঙ্গে ‘সমান মর্যাদা ও পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে’ কাজ করতে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন। রাশিয়া ভবিষ্যতে ন্যাটোর ওপর হামলা চালাতে পারে—পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এমন আশঙ্কার কথা আবারও তা নাকচ করে দেন তিনি।

মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সেনাপতি মীর বাকি ১৫২৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর আগে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। হিন্দুদের বড় একটি অংশের দাবি, এই মসজিদটি হিন্দুধর্মের অন্যতম দেবতা রামের জন্মভূমির ওপর নির্মিত। সেই সূত্র ধরে বাবরি মসজিদকে কেন্দ্
২২ জানুয়ারি ২০২৪
ভারতের আসাম রাজ্যের হোজাই জেলায় এক মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল সাতটি বন্য হাতি। গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের সঙ্গে হাতির পালের এই ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। দুর্ঘটনায় একটি হাতি গুরুতর জখম হয়েছে, যার অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কাজনক।
৩ ঘণ্টা আগে
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার অভিযোগে করা মামলার মূল শুনানি আগামী জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) জানিয়েছে, এ মামলার শুনানি চলবে আগামী ১২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।
১৫ ঘণ্টা আগে
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির সেই বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ভূগোল পরিবর্তন করা যায় না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।
১৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার অভিযোগে করা মামলার মূল শুনানি আগামী জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) জানিয়েছে, এ মামলার শুনানি চলবে আগামী ১২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।
এই শুনানি আন্তর্জাতিক আইনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এক দশকের বেশি সময় পর এটি হবে আইসিজেতে কোনো গণহত্যা মামলার মূল বিষয়ের ওপর শুনানি। একই সঙ্গে গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা মামলাতেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুনানির প্রথম সপ্তাহে (১২ থেকে ১৫ জানুয়ারি) মামলার বাদী দেশ গাম্বিয়া আদালতে তাদের অভিযোগ উপস্থাপন করবে। পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ গাম্বিয়া ২০১৯ সালে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সমর্থনে এ মামলা দায়ের করে। মামলায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনা হয়।
এরপর ১৬ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত মিয়ানমার তাদের অবস্থান তুলে ধরার সুযোগ পাবে। মিয়ানমার সরকার বরাবরই গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
আইসিজে জানিয়েছে, এ মামলায় তিন দিন সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে এসব শুনানি জনসাধারণ ও গণমাধ্যমের জন্য বন্ধ থাকবে।
জাতিসংঘের একটি তদন্ত মিশন ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানে ‘গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড’ সংঘটিত হয়েছিল বলে প্রতিবেদন দেয়। ওই অভিযানে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
মিয়ানমার অবশ্য জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও ত্রুটিপূর্ণ’ বলে দাবি করেছে। দেশটির বক্তব্য, সে সময়কার অভিযান ছিল রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে, যারা নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছিল।
মামলাটি ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের গণহত্যা সনদ অনুযায়ী দায়ের করা হয়েছে। নাৎসি জার্মানির হাতে ইহুদিদের গণহত্যার পর এ সনদ প্রণয়ন করা হয়। এতে গণহত্যা বলতে কোনো জাতিগত, ধর্মীয় বা নৃগোষ্ঠীকে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, গুরুতর শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি, কিংবা পুরোপুরি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে বোঝানো হয়েছে।
গাম্বিয়া ও মিয়ানমার—দুই দেশই এ সনদের স্বাক্ষরকারী হওয়ায় আইসিজের এ মামলার বিচারিক এখতিয়ার রয়েছে।
১৯৪৮ সালের গণহত্যা সনদের পর আইসিজে এখন পর্যন্ত মাত্র একবার গণহত্যার ঘটনা নিশ্চিত করেছে। এটি ছিল ১৯৯৫ সালে বসনিয়ার স্রেব্রেনিৎসায় প্রায় ৮ হাজার মুসলিম পুরুষ ও কিশোর হত্যাকাণ্ড।
গাম্বিয়া ও মামলায় হস্তক্ষেপকারী অন্য দেশগুলো হলো কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। এই পাঁচ দেশ আদালতে যুক্তি দিয়েছে, গণহত্যা শুধু ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তাদের মতে, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ এবং যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতাও গণহত্যার উদ্দেশ্য হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার অভিযোগে করা মামলার মূল শুনানি আগামী জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) জানিয়েছে, এ মামলার শুনানি চলবে আগামী ১২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।
এই শুনানি আন্তর্জাতিক আইনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এক দশকের বেশি সময় পর এটি হবে আইসিজেতে কোনো গণহত্যা মামলার মূল বিষয়ের ওপর শুনানি। একই সঙ্গে গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা মামলাতেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুনানির প্রথম সপ্তাহে (১২ থেকে ১৫ জানুয়ারি) মামলার বাদী দেশ গাম্বিয়া আদালতে তাদের অভিযোগ উপস্থাপন করবে। পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ গাম্বিয়া ২০১৯ সালে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সমর্থনে এ মামলা দায়ের করে। মামলায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনা হয়।
এরপর ১৬ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত মিয়ানমার তাদের অবস্থান তুলে ধরার সুযোগ পাবে। মিয়ানমার সরকার বরাবরই গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
আইসিজে জানিয়েছে, এ মামলায় তিন দিন সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে এসব শুনানি জনসাধারণ ও গণমাধ্যমের জন্য বন্ধ থাকবে।
জাতিসংঘের একটি তদন্ত মিশন ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানে ‘গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড’ সংঘটিত হয়েছিল বলে প্রতিবেদন দেয়। ওই অভিযানে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
মিয়ানমার অবশ্য জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও ত্রুটিপূর্ণ’ বলে দাবি করেছে। দেশটির বক্তব্য, সে সময়কার অভিযান ছিল রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে, যারা নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছিল।
মামলাটি ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের গণহত্যা সনদ অনুযায়ী দায়ের করা হয়েছে। নাৎসি জার্মানির হাতে ইহুদিদের গণহত্যার পর এ সনদ প্রণয়ন করা হয়। এতে গণহত্যা বলতে কোনো জাতিগত, ধর্মীয় বা নৃগোষ্ঠীকে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, গুরুতর শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি, কিংবা পুরোপুরি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে বোঝানো হয়েছে।
গাম্বিয়া ও মিয়ানমার—দুই দেশই এ সনদের স্বাক্ষরকারী হওয়ায় আইসিজের এ মামলার বিচারিক এখতিয়ার রয়েছে।
১৯৪৮ সালের গণহত্যা সনদের পর আইসিজে এখন পর্যন্ত মাত্র একবার গণহত্যার ঘটনা নিশ্চিত করেছে। এটি ছিল ১৯৯৫ সালে বসনিয়ার স্রেব্রেনিৎসায় প্রায় ৮ হাজার মুসলিম পুরুষ ও কিশোর হত্যাকাণ্ড।
গাম্বিয়া ও মামলায় হস্তক্ষেপকারী অন্য দেশগুলো হলো কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। এই পাঁচ দেশ আদালতে যুক্তি দিয়েছে, গণহত্যা শুধু ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তাদের মতে, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ এবং যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতাও গণহত্যার উদ্দেশ্য হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সেনাপতি মীর বাকি ১৫২৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর আগে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। হিন্দুদের বড় একটি অংশের দাবি, এই মসজিদটি হিন্দুধর্মের অন্যতম দেবতা রামের জন্মভূমির ওপর নির্মিত। সেই সূত্র ধরে বাবরি মসজিদকে কেন্দ্
২২ জানুয়ারি ২০২৪
ভারতের আসাম রাজ্যের হোজাই জেলায় এক মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল সাতটি বন্য হাতি। গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের সঙ্গে হাতির পালের এই ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। দুর্ঘটনায় একটি হাতি গুরুতর জখম হয়েছে, যার অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কাজনক।
৩ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পর আর কোনো যুদ্ধ হবে না—যদি পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে সম্মান করে এবং দেশটির নিরাপত্তাগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘ডিরেক্ট লাইন’-এ তিনি এই মন্তব্য করেন।
১৫ ঘণ্টা আগে
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির সেই বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ভূগোল পরিবর্তন করা যায় না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।
১৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। গতকাল বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ, সংবাদমাধ্যমের ভবনে অগ্নিসংযোগ এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ ও ভারতের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির (পররাষ্ট্রবিষয়ক) প্রধান শশী থারুর।
শশী থারুর সতর্ক করে বলেছেন, বাংলাদেশে চলমান এই সহিংসতা সাধারণ বাংলাদেশিদের সহায়তা করার ক্ষেত্রে ভারতের সক্ষমতাকে সংকুচিত করে দিচ্ছে। তিনি ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির সেই বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘ভূগোল পরিবর্তন করা যায় না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।’
বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলা এবং ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে থারুর বলেছেন, ‘সহিংসতার কারণে আমাদের দুটি ভিসা সেন্টার বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এটি অত্যন্ত হতাশাজনক। কারণ, যেসব বাংলাদেশি ভারতে আসতে চান, তাঁরাই এখন অভিযোগ করছেন যে আগে যেভাবে সহজে ভিসা পাওয়া যেত, এখন তা পাওয়া যাচ্ছে না।’
থারুর উল্লেখ করেন, বর্তমান পরিস্থিতি ভারত সরকারের পক্ষে সাধারণ বাংলাদেশিদের সাহায্য করা কঠিন করে তুলছে।
বাংলাদেশ সরকারকে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে থারুর বলেন, ‘আমি আশা করি পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে। আমি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে বলব যেন তারা প্রতিবেশীর সঙ্গে এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের গুরুত্ব বোঝে। বাজপেয়ি সাহেব পাকিস্তানের ক্ষেত্রে যেমনটি বলেছিলেন—আমরা আমাদের ভূগোল পরিবর্তন করতে পারি না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।’
শশী থারুর জানান, নয়াদিল্লি পুরো পরিস্থিতি খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় কর্মকর্তারা সরাসরি বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে এবং পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা করতে অনুরোধ জানাবে।’

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। গতকাল বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ, সংবাদমাধ্যমের ভবনে অগ্নিসংযোগ এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ ও ভারতের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির (পররাষ্ট্রবিষয়ক) প্রধান শশী থারুর।
শশী থারুর সতর্ক করে বলেছেন, বাংলাদেশে চলমান এই সহিংসতা সাধারণ বাংলাদেশিদের সহায়তা করার ক্ষেত্রে ভারতের সক্ষমতাকে সংকুচিত করে দিচ্ছে। তিনি ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির সেই বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘ভূগোল পরিবর্তন করা যায় না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।’
বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলা এবং ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে থারুর বলেছেন, ‘সহিংসতার কারণে আমাদের দুটি ভিসা সেন্টার বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এটি অত্যন্ত হতাশাজনক। কারণ, যেসব বাংলাদেশি ভারতে আসতে চান, তাঁরাই এখন অভিযোগ করছেন যে আগে যেভাবে সহজে ভিসা পাওয়া যেত, এখন তা পাওয়া যাচ্ছে না।’
থারুর উল্লেখ করেন, বর্তমান পরিস্থিতি ভারত সরকারের পক্ষে সাধারণ বাংলাদেশিদের সাহায্য করা কঠিন করে তুলছে।
বাংলাদেশ সরকারকে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে থারুর বলেন, ‘আমি আশা করি পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে। আমি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে বলব যেন তারা প্রতিবেশীর সঙ্গে এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের গুরুত্ব বোঝে। বাজপেয়ি সাহেব পাকিস্তানের ক্ষেত্রে যেমনটি বলেছিলেন—আমরা আমাদের ভূগোল পরিবর্তন করতে পারি না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।’
শশী থারুর জানান, নয়াদিল্লি পুরো পরিস্থিতি খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় কর্মকর্তারা সরাসরি বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে এবং পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা করতে অনুরোধ জানাবে।’

মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সেনাপতি মীর বাকি ১৫২৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর আগে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। হিন্দুদের বড় একটি অংশের দাবি, এই মসজিদটি হিন্দুধর্মের অন্যতম দেবতা রামের জন্মভূমির ওপর নির্মিত। সেই সূত্র ধরে বাবরি মসজিদকে কেন্দ্
২২ জানুয়ারি ২০২৪
ভারতের আসাম রাজ্যের হোজাই জেলায় এক মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল সাতটি বন্য হাতি। গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের সঙ্গে হাতির পালের এই ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। দুর্ঘটনায় একটি হাতি গুরুতর জখম হয়েছে, যার অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কাজনক।
৩ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পর আর কোনো যুদ্ধ হবে না—যদি পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে সম্মান করে এবং দেশটির নিরাপত্তাগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘ডিরেক্ট লাইন’-এ তিনি এই মন্তব্য করেন।
১৫ ঘণ্টা আগে
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার অভিযোগে করা মামলার মূল শুনানি আগামী জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) জানিয়েছে, এ মামলার শুনানি চলবে আগামী ১২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।
১৫ ঘণ্টা আগে