Ajker Patrika

দেশ কোন দিকে যাবে তা নির্ধারণ হচ্ছে দিল্লিতে: আনু মুহাম্মদ

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২২: ৪০
দেশ কোন দিকে যাবে তা নির্ধারণ হচ্ছে দিল্লিতে: আনু মুহাম্মদ

দেশ কোন নীতির দিকে যাবে—সহিংসতার দিকে যাবে, ভয়ংকর রকমের নিপীড়নের দিকে যাবে না কি বাংলাদেশের মানুষ শ্বাস ফেলার জায়গা পাবে, সেটা নির্ধারণ হচ্ছে দিল্লিতে। এমন মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। 

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার দাবিতে লেখক, শিল্পী, শিক্ষক ও সাংবাদিকদের এক সমাবেশে এ মন্তব্য করেন আনু মুহাম্মদ।

আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বাংলাদেশে আজ আমরা শাহবাগে আছি, আপনারা জানেন—দিল্লীতে অনেকগুলো ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন ৷ নরেন্দ্র মোদি আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সভা করেছেন, শেখ হাসিনা বাইডেন-মোদির সঙ্গে হাস্যমুখে ছবি তুলেছেন। কোন নীতির দিকে যাবে, সহিংসতার দিকে যাবে, ভয়ংকর রকমের নিপীড়নের দিকে যাবে নাকি বাংলাদেশের মানুষ শ্বাস ফেলার জায়গা পাবে, সেটা নির্ধারণ হচ্ছে দিল্লিতে। এটা আরেকটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক অবস্থা।’

আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘দিল্লিতে কেন বাইডেনের সঙ্গে, মোদির সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্ধারিত হবে। বাংলাদেশের ভাগ্য কেন দিল্লিতে, বেইজিংয়ে, ওয়াশিংটনে কিংবা মস্কোতে নির্ধারণ হবে। বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত নির্ধারিত হবে বাংলাদেশর মাটিতে। মত প্রকাশ ও ভোটাধিকারের আন্দোলন কার্যত বাংলাদেশের ভাগ্যকে ওয়াশিংটন কিংবা বেইজিং থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসার আন্দোলন। বাংলাদেশের মানুষ যাতে নিজেদের ভবিষ্যত নির্ধারণ করতে পারেন—সেই শক্তিকে অর্জন করা, সেই শক্তিকে সম্প্রসারিত করার জন্য এ আন্দোলনের সম্প্রসারণ দরকার। এই আন্দোলন (ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার) হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আন্দোলন। ’

বর্তমান সরকার উন্নয়নকে ধর্ম হিসেবে ব্যবহার করছে মন্তব্য করে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ করে লক্ষ কোটি কোটি টাকা পাচার করা—এটাকে উন্নয়ন বলে মানুষের সামনে হাজির করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের মাঝে এটি একটি প্রতিষ্ঠিত ধারণার কারণে সম্ভব হচ্ছে। উন্নয়ন মানে মানুষের শিক্ষা, খাদ্য, চিকিৎসা, অধিকার এবং নিরাপত্তা। সবচেয়ে বড় কথা হল দেশের ওপর তার মালিকানা, দেশের ওপর তার কর্তৃত্ব; এটা হল আসলে উন্নয়ন। কিন্তু বর্তমান সরকার উন্নয়নের যে ধর্ম দেখাচ্ছেন, রূপ ও ঝলমলে জিনিস দেখিয়ে নিজের স্বৈরতন্ত্র জায়েজ করতে চাচ্ছেন। 

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, ‘স্বৈরতন্ত্রের যা যা বৈশিষ্ট্য দরকার তা বর্তমান সরকারের রয়েছে। স্বৈরতন্ত্র যখন সম্মতি সমাজ তৈরি করে তখন ফ্যাসিবাদের দিকে যাত্রা করে। সম্মতি সমাজ তৈরি করার ক্ষেত্রে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ভূমিকা হচ্ছে ভয়ংকর। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতি ছিল। আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে, এরশাদের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বমূলক ভূমিকা ছিল। সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতশত শিক্ষক এখন স্বৈরতন্ত্রের পক্ষে বিবৃতি দিচ্ছে। তারা কিছুদিন পরপর স্বৈরতন্ত্রের পক্ষে, লুন্ঠনের পক্ষে, সম্পদ পাচারের পক্ষে বিবৃতি দেয়।’ 

ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার দাবিতে লেখক, শিল্পী, শিক্ষক ও সাংবাদিকদের সমাবেশে অতিথিরাজাহাঙ্গীরননগর বিশ্ববিদ্যালেয়র সাবেক এ অধ্যাপক বলেন, ‘এস আলম গ্রুপ হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে দিল, সামিট বাংলাদেশের সম্পদ পাচার করে সিঙ্গাপুরের অন্যতম ধনীতে পরিণত হয়েছে। সুন্দরবন বিনাশী প্রকল্প হচ্ছে, ভারতকে খুশি করার জন্য। রাশিয়াকে খুশি করার জন্য ভয়ংকর পারমাণবিক প্রকল্প করা হচ্ছে। ট্রানজিট করে ভারতকে বন্দর, সড়ক সব দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কোনোটার বিরুদ্ধে এ শিক্ষকদের দাড়াতে দেখি না। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের নামে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তুলে নেওয়া হচ্ছে, এই শিক্ষকদের আওয়াজ করতে দেখি নাই। এই ধরণের শিক্ষকেরা স্বৈরতন্ত্রকে ফ্যাসিবাদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের জীবন দুর্বিষহ হচ্ছে, ভবিষ্যত প্রজন্মের জীবন আরো দুর্বিষহ হবে—এখান থেকে মুক্তি পেতে হলে, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য আমাদের লড়াই করতে হবে।’ 

সমাবেশে অবাধ নির্বাচন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষতার পক্ষে এবং মত প্রকাশকে বাধাগ্রস্ত ও ভোটাধিকার হরণ করার বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার অঙ্গীকার করেন কবি-শিল্পীরা। শপথ বাক্য পাঠ করান মানবাধিকারকর্মী রাখাল রাহা। শপথ বাক্যে বলা হয়, ভোট হলো নাগরিকের মত প্রকাশের সর্বোচ্চ রূপ। ভোটাধিকার ছাড়া মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে পারে না। তাই যে দলই রাষ্ট্র পরিচালনা করুক, লেখক-শিল্পী-শিক্ষক-সাংবাদিকরা কখনও ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিপক্ষে যেতে পারেন না। তাই তারা ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য একত্র হয়েছেন। 

কথা সাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক মাহবুব মোর্শেদের আহ্বানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক এহসান মাহমুদ। সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান, মোহাম্মদ আজম, সামিনা লুৎফা, আলোকচিত্রী শহীদুল আলম প্রমুখ। বক্তব্য রাখেন ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর, পরিবেশকর্মী মাহা মির্জা, কথাসাহিত্যিক আফসানা বেগম, লেখক হেলাল মহিউদ্দিন, প্রগতি লেখক সংঘের অন্যতম সংগঠক শামসুজ্জামান ভুঁইয়া, আদর্শ প্রকাশনীর প্রকাশক মাহবুব রহমান, কবি ফিরোজ আহমেদ, কবি আহসান হাবীব, কবি সৈকত আমিন, কবি হাসান জামিল প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যমুনা রেলসেতু: মেয়াদ বাড়ছে, কমছে প্রকল্পের খরচ

তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
যমুনা রেলসেতু: মেয়াদ বাড়ছে, কমছে প্রকল্পের খরচ

যমুনা নদীর ওপর নির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনের যমুনা রেলসেতুতে ট্রেন চলাচল করলেও প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের মেয়াদ এই ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। তবে নতুন প্রস্তাবে এই মেয়াদ ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনীতে এই প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় ২৬৮ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা কমিয়ে ১৬ হাজার ৫১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, যমুনা রেলসেতুর কাঠামো ও রেললাইন নির্মাণকাজ শেষ হওয়ায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করা হয়। তবে ঠিকাদারের কাজের বিল বকেয়া রয়েছে। সংকেত (সিগন্যালিং) ব্যবস্থার কিছু কাজ এবং নতুন একটি প্যাকেজের আওতায় অবকাঠামো নির্মাণ-কাজ এখনো বাকি।

বিশেষ করে নতুন প্যাকেজের দরপত্র প্রক্রিয়াই শুরু করা যায়নি। ফলে প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পের মূল উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) যমুনা রেলসেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরে প্রথম সংশোধনীতে সেই মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।

প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডে এই প্রকল্পের ব্রিজ লাইটিংয়ের কিছু মালামাল পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব মালামাল ঠিকাদার নিজ দায়িত্বে আবার সংগ্রহ করে সরবরাহ করবে। এ ছাড়া ওই অগ্নিকাণ্ডের পর আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স কিছুদিন বন্ধ থাকায় সিগন্যালিং-সংক্রান্ত কিছু মালামাল আমদানিতে বিলম্ব হয়েছে। পরে রুট পরিবর্তন করে এসব মালামাল অন্য বন্দর দিয়ে আনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এ কারণে কাজ সম্পন্ন করতে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হচ্ছে।

প্রকল্পের আওতায় একটি বিশেষ নির্মাণ প্যাকেজের (ডব্লিউডি-৫) অধীনে রেলওয়ে সেতু জাদুঘর, পরিদর্শন বাংলো, ক্যাফেটেরিয়া, অভ্যন্তরীণ সড়ক, মাটি ভরাট ও ড্রেনেজ নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৪ কোটি টাকা। তবে ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্যাকেজে পরিবর্তন আনা হয়। সংশোধিত পরিকল্পনায় রেলওয়ে সেতু জাদুঘর বাদ দিয়ে পরিদর্শন বাংলো, অভ্যন্তরীণ সড়ক, ড্রেনেজ এবং সয়দাবাদ রেলওয়ে স্টেশনের অবকাঠামো নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিবর্তিত এই প্যাকেজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫৪ কোটি টাকা। তবে এখনো এই কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। দরপত্রপ্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং নির্মাণকাজ শেষ করতে অতিরিক্ত সময় লাগবে।

এদিকে প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ‘সিসিটিভি নজরদারি ব্যবস্থা’ শীর্ষক একটি আলাদা প্যাকেজ যুক্ত করা হয়েছে। এই প্যাকেজ বাস্তবায়নের কাজও বাকি রয়েছে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, সার্বিকভাবে যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৯ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮২ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব ইতিমধ্যে রেলপথ উপদেষ্টার অনুমোদন পেয়েছে। এখন এটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে। প্রকল্পের ভেতর এখনো কিছু ছোটখাটো কাজ বাকি থাকায় চূড়ান্তভাবে কাজ শেষ করতে এই অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন। তিনি বলেন, ডব্লিউডি-৫ প্যাকেজের কাজ শেষ করতে আনুমানিক ছয় মাস লাগতে পারে। তবে এ নিয়ে বড় কোনো জটিলতা নেই। সিগন্যালিংয়ের কাজ আগামী মধ্য জানুয়ারিতে শেষ হবে। বাড়তি সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের সব কাজ শেষ হবে বলে তাঁরা আশাবাদী।

প্রকল্পের ব্যয় কমেছে

প্রকল্পের আওতায় যমুনা রেলসেতুসহ ভায়াডাক্ট, অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট, লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। সয়দাবাদ ও ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন আধুনিকীকরণ, ইয়ার্ড রিমডেলিং, সিগন্যালিং ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সেতু রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিস ও আবাসন নির্মাণ করা হয়েছে।

মূল ডিপিপিতে প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। পরে প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ টাকায়। তবে দ্বিতীয় সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় ২৬৮ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা কমিয়ে ১৬ হাজার ৫১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।

এই প্রকল্পে ৪ হাজার ৬০৪ দশমিক ৪১ কোটি টাকা অর্থায়ন করা হয়েছে দেশীয় উৎস থেকে এবং বাকি ১১ হাজার ৯০৮ দশমিক ১১ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিয়েছে জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকা।

১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বহুমুখী সেতু দিয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুতে ফাটল দেখা দিলে ট্রেনের গতি সীমিত করা হয়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় তৎকালীন সরকার।

প্রকল্পের সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, মূল সেতু চালু হওয়ায় বড় অর্জন হয়েছে। তবে সিগন্যালিং, স্টেশন অবকাঠামো ও নিরাপত্তাব্যবস্থার মতো বিষয়গুলো সম্পূর্ণ না হলে কাঙ্ক্ষিত সুফল পুরোপুরি পাওয়া যাবে না। তাই প্রকল্পের মেয়াদ যৌক্তিকভাবে বাড়িয়ে কাজ শেষ করাই বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত। তবে পরিকল্পিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারা একটা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে, এটা বন্ধ করা দরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শুক্রবার সন্ধ্যায় দেশে আসবে ওসমান হাদির মরদেহ

বাসস, ঢাকা  
শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি
শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের অকুতোভয় যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে দেশে আনা হবে।

এনসিপির স্বাস্থ্য সেলের প্রধান ও হাদির চিকিৎসায় নিয়োজিত থাকা ডা. আব্দুল আহাদ সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৩টা ৫০ মিনিটে সিঙ্গাপুর থেকে রওনা হয়ে সম্ভাব্য সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ করবে।’

বাংলাদেশ সময় আজ বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি।

গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগে অংশ নিতে গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি করে আততায়ী। এ সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।

হাদির মৃত্যুতে শুক্রবার বিশেষ মোনাজাত ও শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অস্ত্রোপচারের সময় মারা যান ওসমান হাদি: ডা. আহাদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বন্দুকধারীর হামলায় গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি। রাজধানীর পল্টন এলাকায় তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। অস্ত্রোপচারের পর গতকাল তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বন্দুকধারীর হামলায় গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি। রাজধানীর পল্টন এলাকায় তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। অস্ত্রোপচারের পর গতকাল তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। অস্ত্রোপচারের পর তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্যসচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

ডা. আহাদ জানান, বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টার দিকে শরিফ ওসমান হাদির পরিবার অস্ত্রোপচারের জন্য সম্মতি দেয়। পরে তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘অপারেশন শেষ হওয়ার পর আর কোনো আপডেট পাওয়া যায়নি। পরে সরাসরি তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো হয়।’

এদিকে হাদির মরদেহ শুক্রবার সকালে দেশে এসে পৌঁছাবে বলেও জানিয়েছেন ডা. আহাদ।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগে অংশ নিতে গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি করে আততায়ী। এ সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।

হাদির মৃত্যুতে শুক্রবার বিশেষ মোনাজাত ও শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির মৃত্যুতে শুক্রবার বিশেষ মোনাজাত, শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৩৫
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভিডিও থেকে নেওয়া
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভিডিও থেকে নেওয়া

শহীদ শরিফ ওসমান হাদির অকাল মৃত্যুতে আগামী শনিবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এই ঘোষণা দেন তিনি।

সিঙ্গাপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন হাদি। এই উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক একটি সংবাদ নিয়ে। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের অকুতোভয় যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি আর আমাদের মাঝে নেই।’

শরিফ ওসমান হাদির এই অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে ড. ইউনূস বলেন, তাঁর প্রয়াণ দেশের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক পরিসরে এক অপূরণীয় ক্ষতি।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমি তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত স্ত্রী, পরিবারের সদস্যবৃন্দ, স্বজন ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। শহীদ ওসমান হাদির স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের দায়িত্ব সরকার গ্রহণ করবে।’

এ সময় হাদির মৃত্যুতে আগামী শনিবার (২০ ডিসেম্বর) এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, শহীদ শরিফ ওসমান হাদির অকাল মৃত্যুতে আগামী শনিবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করছি। এই উপলক্ষে শনিবার দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।

একই সঙ্গে আগামীকাল শুক্রবার বাদ জুমা দেশের প্রতিটি মসজিদে শহীদ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হবে বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়গুলোতেও আয়োজন হবে বিশেষ প্রার্থনার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত