বিভুরঞ্জন সরকার

ঈদের ছুটির মধ্যে রাজনীতি নিয়ে লেখা হয়তো পাঠকদের বিরক্তির কারণ হতে পারে। অসংখ্য মানুষ ঈদ উদ্যাপনের জন্য ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে। মানুষের এই যাওয়া ও আসা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন হোক, সেটাই কামনা করি। রাজনীতির প্রতি যতই বিরূপতা তৈরি হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত তো রাজনীতির কাছেই আমাদের ফিরে যেতে হয়। দেশ ভালো চলবে না খারাপ চলবে, তা-ও তো নির্ভর করে রাজনীতিরই ওপর। এবারের কোরবানির ঈদ উদ্যাপন করা হবে ‘ঈদের পর কঠিন আন্দোলন’ এই আশা কিংবা আশঙ্কা মাথায় নিয়েই।
দেশের অন্যতম বড় একটি রাজনৈতিক দল বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এক দফা দাবিতে ঈদের পর কঠিন আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। অবশ্য এটা বিএনপি বহু বছর ধরেই বলে আসছে।
দলটি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ক্ষমতা ছেড়েছে। তারপর প্রায় ১৭ বছর চলে গেছে। এর মধ্যে দুই বছরের মতো ছিল বিশেষ ধরনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার। শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে টানা ১৪ বছরের বেশি সময় ক্ষমতায়। ২০১০ সালের ঈদের সময় থেকেই বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া বলে আসছেন, ‘ইনশা আল্লাহ, ঈদের পর আন্দোলন শুরু করব। দুর্নীতিবাজ সরকারকে বিদায় করব। আন্দোলনের জন্য আপনারা প্রস্তুত হন।’
তারপর বহু ঈদ গেছে, কিন্তু না হয়েছে আন্দোলন, না সরকার বিদায় নিয়েছে। এবার বিএনপি ও তার মিত্ররা বলছে, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না। তারা দুটি লক্ষ্য ঘোষণা করেছে: বর্তমান সরকারের পতন এবং পছন্দের সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠন করে তাদের অধীনে নির্বাচন। এই লক্ষ্য অর্জনে তারা সফল হবে, তা কি দেশের মানুষ বিশ্বাস করে? লম্বা সময় ক্ষমতার বাইরে থাকায় বিএনপির মধ্যে নানা রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক সমস্যা তৈরি হয়েছে। দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে প্রকাশ্য রাজনীতি থেকে দূরে আছেন। শারীরিকভাবেও তিনি ফিট নন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে বসে দল চালান। ফলে দলটি এখন ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত নয়। এই অবস্থায় দলের সিনিয়র নেতাদের আন্দোলনসংক্রান্ত বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে একধরনের হাস্য-কৌতুক চলছে।
এবারও ঈদের পর জনগণ বিএনপি ও তার মিত্রদের ডাকে মাঠে নামবে–এমন লক্ষণ এখনো স্পষ্ট নয়।
দুই. ফেসবুকে কারও কারও বিভিন্ন বিষয়ে বিপ্লবী পোস্ট দেখে অনেক আগে শোনা একটি কৌতুক মনে পড়ছে। একদিন এক লোক একটি উঁচু পাহাড়ের সামনে দাঁড়িয়ে গম্ভীরভাবে কিছু ভাবছিলেন। আরেক লোক অনেকক্ষণ এটা দেখে কৌতূহল দমন করতে পারলেন না। অন্যের ব্যাপারে মানুষের কৌতূহল একটু বেশিই থাকে। তিনি ভাবুক ব্যক্তির কাছে গিয়ে বললেন, কিছু মনে না করলে আপনাকে একটি প্রশ্ন করতে পারি?
ভাবতে ভাবতেই তিনি জবাব দিলেন। করুন।
-আপনি কি কিছু নিয়ে বিশেষ চিন্তিত?
-হুম।
-কী নিয়ে?
-আমার মন চায়, এই পাহাড়টা তুইলা আছাড় মারি।
-ভালো তো। মারুন না। এখানে কেউ বাধা দেওয়ার নেই।
-ভাই রে, শক্তিতে যে কুলায় না!
কিছু করতে হলে শুধু ইচ্ছা থাকলেই হবে না। সামর্থ্যও থাকতে হবে। ফেসবুকে যাঁরা ঝড় তোলেন, তাঁরা খারাপ কিছু সহ্য করতে পারেন না। তাঁরা শুধু ভালোর প্রত্যাশা করেন। কিন্তু পৃথিবীতে ভালো-খারাপের দ্বন্দ্ব তো নতুন কিছু নয়। ভালো চাই, খারাপ করি।
পৃথিবীতে হয়তো ভালো মানুষের সংখ্যাই বেশি। খারাপ মানুষ কম। কিন্তু সংখ্যাগুরু ভালো মানুষেরা হলেন নির্বিরোধ ও নিষ্ক্রিয়।
সংখ্যালঘু খারাপ মানুষ আবার সক্রিয় এবং যা খুশি তা-ই করে ফেলতে পারে। তাই পৃথিবী নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ভালো মানুষের চেয়ে খারাপ মানুষের হাতেই বেশি থাকে বা চলে যায়।
ভালো মানুষ যদি ক্ষমতাবান হয়ে একটি খারাপ কাজ করে, তাহলে ক্ষমতার বাইরে থাকা ভালো মানুষেরা একযোগে তার বিরোধিতা করে, হইচই করে। খারাপ মানুষেরা খারাপ করলে হয়তো মৃদু সমালোচনা করে এবং তাড়াতাড়ি তা ভুলেও যায়।
আমরা ভালো মানুষের শাসন চাই, সুশাসন চাই–এটা যদি সত্য হয়, আন্তরিক হয়, তাহলে খারাপ শাসন চলে কীভাবে? আমাদের চাওয়ায় কি কোনো ভেজাল আছে, গলদ আছে?
আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায়। অনেক বছর ধরেই আছে। আমাদের দেশে শুধু নয়, অন্য অনেক দেশেও শেখ হাসিনার চেয়ে আর কেউ এত দীর্ঘ সময় সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। তিনি তাঁর শাসনকালে ভালো কাজ বেশি করেছেন, না খারাপ কাজ বেশি, সেটা একটা দীর্ঘ আলোচনা ও বিতর্কের বিষয়। কোনো দেশের কোনো সরকার শুধুই ভালো কাজ করে, তেমন নজির আছে কি?
একজন যদি বলেন, শেখ হাসিনা ভালো কাজ বেশি করেছেন, আবার কিছু মন্দ কাজও করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে আরেকজন তেড়ে উঠবেন—বলেন কী, শেখ হাসিনার মতো খারাপ শাসক আর হয় না।
যদি বলা হয়, তিনি তাহলে ক্ষমতায় টিকে আছেন কীভাবে?
জবাব পাওয়া যাবে: আরে, ক্ষমতায় তো আছেন জোর করে। সামরিক-বেসামরিক আমলাদের ওপর নির্ভর করে। বিরোধী দলকে ফ্যাসিস্ট কায়দায় দমন করে।
যদি প্রশ্ন করা হয়, হাসিনার আগে জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়াও তো জোর করে ক্ষমতায় থাকার নানা রকম চেষ্টা করেছেন। পারেননি কেন? শেখ হাসিনা কী কেবল জবরদস্তি করেই ক্ষমতায় আছেন, নাকি তার পেছনে জনসমর্থনও আছে?
অমনি জবাব পাওয়া যাবে, রাখেন আপনার দালালি। মানুষের ভোটের অধিকার একবার ফিরিয়ে দিতে বলেন, দেখেন জনসমর্থন কোন দিকে!
যদি বলা হয়, ঠিক আছে, লুটপাট, দুর্নীতি শেখ হাসিনার আমলেও হচ্ছে। কিন্তু শুধু কি আওয়ামী লীগের চাটার দলেরই পেট ভরছে? মানুষ কি কোনো উপকার পায়নি, পাচ্ছে না? বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি আছে। কিন্তু বিদ্যুতের সংকট দূর হয়েছে। খালেদা শুধু খাম্বা দিয়েই দায়িত্ব পালন করেছেন। খালেদার আমলে কৃষক সার পায়নি, পানি পায়নি, গুলি পেয়েছে। হাসিনার সময় কি সার বা কৃষি উপকরণের সংকট হয়েছে?
উত্তরে বলা হবে, কথায় কথায় খালেদা জিয়ার সময়ের উদাহরণ টানা কেন? খালেদা খারাপ বলেই তো মানুষ হাসিনার ওপর আস্থা রেখেছিল। হাসিনা মানুষের আস্থার মর্যাদা রাখতে পারেননি।
যদি প্রশ্ন করা হয়, আচ্ছা, শেখ হাসিনাকে ভোটের মাধ্যমে পরাজিত করে কাকে ক্ষমতায় আনা হবে?
জবাব দেওয়া হবে: মানুষ যাকে পছন্দ করবে, সে-ই ক্ষমতায় আসবে।
আচ্ছা, আমাদের ভোটের অভিজ্ঞতা কী বলে? মানুষ কি ভালো মানুষকে ভোট দেয়, নাকি দল এবং মার্কা দেখে ভোট দেয়? রাজনীতিতে ভালো মানুষ যাঁরা ছিলেন, তাঁরা বিলুপ্তপ্রায় হয়ে গেলেন কেন? ভালো রাজনীতিকের প্রতি মানুষের সমর্থন থাকলে রাজনৈতিক দলগুলো খারাপ মানুষকে কাছে টানার সাহস পায় কী করে?
রাজনৈতিক দলের প্রধান লক্ষ্য ক্ষমতা। রাজনৈতিক দলের নীতি, কৌশল, কর্মসূচি প্রণীত হয় ক্ষমতায় যাওয়ার পথ তৈরির জন্যই। আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম বা রামকৃষ্ণ মিশনের মতো শুধু সেবাদান কোনো রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নয়। জনসেবার ব্রতের কথা একসময় রাজনীতিকদের মুখে শোনা গেলেও এখন সময় পাল্টেছে। চিন্তার জগতেও এসেছে পরিবর্তন। এখন প্রতিযোগিতার সময়।
তার পরও এখনো কারও কারও নিজেকে ‘বিপ্লব স্পন্দিত বুকে মনে হয় আমিই লেনিন’। কিন্তু ওটা মুখে, কাজে নয়!
যেকোনো ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য হুজুগ নয়, দরকার হয় সচেতন ও সংগঠিত জনশক্তির। এখন আমরা অনেকেই ভাবুক হয়ে ভাবসাগরে হাবুডুবু খেতে ভালোবাসি। কিন্তু গায়ে-গতরে রোদ-মেঘ একটু মাখামাখি করুক তা চাই না। পাহাড় তুলে আছাড় মারার অবাস্তব কল্পনা নয়, এখন দরকার ভালোর পক্ষে জনমত বা শক্তি গড়ে তোলা। ‘এ’র বিকল্প ‘বি’—এই সনাতন চিন্তায় আটকে না থেকে ‘সি’ কিংবা ‘ডি’র পক্ষে সমবেত হওয়ার বাস্তব কাজে হাত দেওয়াই এখন জরুরি। সৎ ও সাহসী মানুষদের খোলস থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। জড়তা নয়, দরকার তীব্র একটি ঝাঁকি। সেই ঝাঁকি কে দেবে, তারই এখন অপেক্ষা।
তিন. আন্দোলন-সংগ্রাম নিয়ে দেশের মানুষের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। সফল গণ-আন্দোলনের কারণে সরকার বদল হয়, কিন্তু তাতে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। রাজনৈতিক নেতৃত্বে সৎ, মানবিক ও দায়িত্ববান মানুষের অভাব রয়েছে। দেশের ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতাপ্রত্যাশী বড় দুটি দলই চায় না দেশে মানুষের স্বার্থে লড়াই-সংগ্রাম করার মতো একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে উঠুক। মানুষ রাজনৈতিক নেতৃত্বের ধান্দা বুঝতে পারছে বলেই জীবনের ঝুঁকি আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত হতে চায় না। এখন আন্দোলন-সংগ্রামে দলের বাইরের একেবারে সাধারণ মানুষকে খুঁজে পাওয়া যায় না। আওয়ামী লীগে তবু একজন শেখ হাসিনা আছেন, যাঁর প্রতি মানুষের আস্থা-বিশ্বাস আছে। মানুষের আস্থাভাজন না হওয়ার কারণেই বিএনপি এখনো আওয়ামী লীগের বিকল্প হয়ে উঠতে পারছে না। সে জন্য ঈদের পরের আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগের বড় দুশ্চিন্তা হয়তো নেই। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের চারটিতেই আওয়ামী লীগের নৌকা জিতেছে। এতে দলটির আস্থা বেড়েছে। অন্যদিকে বিএনপির ভরসা ‘বাইরের চাপ’। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ভূরাজনীতির যে নিত্যনতুন মেরুকরণ, তা আওয়ামী লীগকে বড় চাপে ফেলতে পারবে বলে মনে হয় না।
বিভুরঞ্জন সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

ঈদের ছুটির মধ্যে রাজনীতি নিয়ে লেখা হয়তো পাঠকদের বিরক্তির কারণ হতে পারে। অসংখ্য মানুষ ঈদ উদ্যাপনের জন্য ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে। মানুষের এই যাওয়া ও আসা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন হোক, সেটাই কামনা করি। রাজনীতির প্রতি যতই বিরূপতা তৈরি হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত তো রাজনীতির কাছেই আমাদের ফিরে যেতে হয়। দেশ ভালো চলবে না খারাপ চলবে, তা-ও তো নির্ভর করে রাজনীতিরই ওপর। এবারের কোরবানির ঈদ উদ্যাপন করা হবে ‘ঈদের পর কঠিন আন্দোলন’ এই আশা কিংবা আশঙ্কা মাথায় নিয়েই।
দেশের অন্যতম বড় একটি রাজনৈতিক দল বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এক দফা দাবিতে ঈদের পর কঠিন আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। অবশ্য এটা বিএনপি বহু বছর ধরেই বলে আসছে।
দলটি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ক্ষমতা ছেড়েছে। তারপর প্রায় ১৭ বছর চলে গেছে। এর মধ্যে দুই বছরের মতো ছিল বিশেষ ধরনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার। শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে টানা ১৪ বছরের বেশি সময় ক্ষমতায়। ২০১০ সালের ঈদের সময় থেকেই বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া বলে আসছেন, ‘ইনশা আল্লাহ, ঈদের পর আন্দোলন শুরু করব। দুর্নীতিবাজ সরকারকে বিদায় করব। আন্দোলনের জন্য আপনারা প্রস্তুত হন।’
তারপর বহু ঈদ গেছে, কিন্তু না হয়েছে আন্দোলন, না সরকার বিদায় নিয়েছে। এবার বিএনপি ও তার মিত্ররা বলছে, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না। তারা দুটি লক্ষ্য ঘোষণা করেছে: বর্তমান সরকারের পতন এবং পছন্দের সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠন করে তাদের অধীনে নির্বাচন। এই লক্ষ্য অর্জনে তারা সফল হবে, তা কি দেশের মানুষ বিশ্বাস করে? লম্বা সময় ক্ষমতার বাইরে থাকায় বিএনপির মধ্যে নানা রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক সমস্যা তৈরি হয়েছে। দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে প্রকাশ্য রাজনীতি থেকে দূরে আছেন। শারীরিকভাবেও তিনি ফিট নন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে বসে দল চালান। ফলে দলটি এখন ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত নয়। এই অবস্থায় দলের সিনিয়র নেতাদের আন্দোলনসংক্রান্ত বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে একধরনের হাস্য-কৌতুক চলছে।
এবারও ঈদের পর জনগণ বিএনপি ও তার মিত্রদের ডাকে মাঠে নামবে–এমন লক্ষণ এখনো স্পষ্ট নয়।
দুই. ফেসবুকে কারও কারও বিভিন্ন বিষয়ে বিপ্লবী পোস্ট দেখে অনেক আগে শোনা একটি কৌতুক মনে পড়ছে। একদিন এক লোক একটি উঁচু পাহাড়ের সামনে দাঁড়িয়ে গম্ভীরভাবে কিছু ভাবছিলেন। আরেক লোক অনেকক্ষণ এটা দেখে কৌতূহল দমন করতে পারলেন না। অন্যের ব্যাপারে মানুষের কৌতূহল একটু বেশিই থাকে। তিনি ভাবুক ব্যক্তির কাছে গিয়ে বললেন, কিছু মনে না করলে আপনাকে একটি প্রশ্ন করতে পারি?
ভাবতে ভাবতেই তিনি জবাব দিলেন। করুন।
-আপনি কি কিছু নিয়ে বিশেষ চিন্তিত?
-হুম।
-কী নিয়ে?
-আমার মন চায়, এই পাহাড়টা তুইলা আছাড় মারি।
-ভালো তো। মারুন না। এখানে কেউ বাধা দেওয়ার নেই।
-ভাই রে, শক্তিতে যে কুলায় না!
কিছু করতে হলে শুধু ইচ্ছা থাকলেই হবে না। সামর্থ্যও থাকতে হবে। ফেসবুকে যাঁরা ঝড় তোলেন, তাঁরা খারাপ কিছু সহ্য করতে পারেন না। তাঁরা শুধু ভালোর প্রত্যাশা করেন। কিন্তু পৃথিবীতে ভালো-খারাপের দ্বন্দ্ব তো নতুন কিছু নয়। ভালো চাই, খারাপ করি।
পৃথিবীতে হয়তো ভালো মানুষের সংখ্যাই বেশি। খারাপ মানুষ কম। কিন্তু সংখ্যাগুরু ভালো মানুষেরা হলেন নির্বিরোধ ও নিষ্ক্রিয়।
সংখ্যালঘু খারাপ মানুষ আবার সক্রিয় এবং যা খুশি তা-ই করে ফেলতে পারে। তাই পৃথিবী নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ভালো মানুষের চেয়ে খারাপ মানুষের হাতেই বেশি থাকে বা চলে যায়।
ভালো মানুষ যদি ক্ষমতাবান হয়ে একটি খারাপ কাজ করে, তাহলে ক্ষমতার বাইরে থাকা ভালো মানুষেরা একযোগে তার বিরোধিতা করে, হইচই করে। খারাপ মানুষেরা খারাপ করলে হয়তো মৃদু সমালোচনা করে এবং তাড়াতাড়ি তা ভুলেও যায়।
আমরা ভালো মানুষের শাসন চাই, সুশাসন চাই–এটা যদি সত্য হয়, আন্তরিক হয়, তাহলে খারাপ শাসন চলে কীভাবে? আমাদের চাওয়ায় কি কোনো ভেজাল আছে, গলদ আছে?
আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায়। অনেক বছর ধরেই আছে। আমাদের দেশে শুধু নয়, অন্য অনেক দেশেও শেখ হাসিনার চেয়ে আর কেউ এত দীর্ঘ সময় সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। তিনি তাঁর শাসনকালে ভালো কাজ বেশি করেছেন, না খারাপ কাজ বেশি, সেটা একটা দীর্ঘ আলোচনা ও বিতর্কের বিষয়। কোনো দেশের কোনো সরকার শুধুই ভালো কাজ করে, তেমন নজির আছে কি?
একজন যদি বলেন, শেখ হাসিনা ভালো কাজ বেশি করেছেন, আবার কিছু মন্দ কাজও করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে আরেকজন তেড়ে উঠবেন—বলেন কী, শেখ হাসিনার মতো খারাপ শাসক আর হয় না।
যদি বলা হয়, তিনি তাহলে ক্ষমতায় টিকে আছেন কীভাবে?
জবাব পাওয়া যাবে: আরে, ক্ষমতায় তো আছেন জোর করে। সামরিক-বেসামরিক আমলাদের ওপর নির্ভর করে। বিরোধী দলকে ফ্যাসিস্ট কায়দায় দমন করে।
যদি প্রশ্ন করা হয়, হাসিনার আগে জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়াও তো জোর করে ক্ষমতায় থাকার নানা রকম চেষ্টা করেছেন। পারেননি কেন? শেখ হাসিনা কী কেবল জবরদস্তি করেই ক্ষমতায় আছেন, নাকি তার পেছনে জনসমর্থনও আছে?
অমনি জবাব পাওয়া যাবে, রাখেন আপনার দালালি। মানুষের ভোটের অধিকার একবার ফিরিয়ে দিতে বলেন, দেখেন জনসমর্থন কোন দিকে!
যদি বলা হয়, ঠিক আছে, লুটপাট, দুর্নীতি শেখ হাসিনার আমলেও হচ্ছে। কিন্তু শুধু কি আওয়ামী লীগের চাটার দলেরই পেট ভরছে? মানুষ কি কোনো উপকার পায়নি, পাচ্ছে না? বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি আছে। কিন্তু বিদ্যুতের সংকট দূর হয়েছে। খালেদা শুধু খাম্বা দিয়েই দায়িত্ব পালন করেছেন। খালেদার আমলে কৃষক সার পায়নি, পানি পায়নি, গুলি পেয়েছে। হাসিনার সময় কি সার বা কৃষি উপকরণের সংকট হয়েছে?
উত্তরে বলা হবে, কথায় কথায় খালেদা জিয়ার সময়ের উদাহরণ টানা কেন? খালেদা খারাপ বলেই তো মানুষ হাসিনার ওপর আস্থা রেখেছিল। হাসিনা মানুষের আস্থার মর্যাদা রাখতে পারেননি।
যদি প্রশ্ন করা হয়, আচ্ছা, শেখ হাসিনাকে ভোটের মাধ্যমে পরাজিত করে কাকে ক্ষমতায় আনা হবে?
জবাব দেওয়া হবে: মানুষ যাকে পছন্দ করবে, সে-ই ক্ষমতায় আসবে।
আচ্ছা, আমাদের ভোটের অভিজ্ঞতা কী বলে? মানুষ কি ভালো মানুষকে ভোট দেয়, নাকি দল এবং মার্কা দেখে ভোট দেয়? রাজনীতিতে ভালো মানুষ যাঁরা ছিলেন, তাঁরা বিলুপ্তপ্রায় হয়ে গেলেন কেন? ভালো রাজনীতিকের প্রতি মানুষের সমর্থন থাকলে রাজনৈতিক দলগুলো খারাপ মানুষকে কাছে টানার সাহস পায় কী করে?
রাজনৈতিক দলের প্রধান লক্ষ্য ক্ষমতা। রাজনৈতিক দলের নীতি, কৌশল, কর্মসূচি প্রণীত হয় ক্ষমতায় যাওয়ার পথ তৈরির জন্যই। আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম বা রামকৃষ্ণ মিশনের মতো শুধু সেবাদান কোনো রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নয়। জনসেবার ব্রতের কথা একসময় রাজনীতিকদের মুখে শোনা গেলেও এখন সময় পাল্টেছে। চিন্তার জগতেও এসেছে পরিবর্তন। এখন প্রতিযোগিতার সময়।
তার পরও এখনো কারও কারও নিজেকে ‘বিপ্লব স্পন্দিত বুকে মনে হয় আমিই লেনিন’। কিন্তু ওটা মুখে, কাজে নয়!
যেকোনো ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য হুজুগ নয়, দরকার হয় সচেতন ও সংগঠিত জনশক্তির। এখন আমরা অনেকেই ভাবুক হয়ে ভাবসাগরে হাবুডুবু খেতে ভালোবাসি। কিন্তু গায়ে-গতরে রোদ-মেঘ একটু মাখামাখি করুক তা চাই না। পাহাড় তুলে আছাড় মারার অবাস্তব কল্পনা নয়, এখন দরকার ভালোর পক্ষে জনমত বা শক্তি গড়ে তোলা। ‘এ’র বিকল্প ‘বি’—এই সনাতন চিন্তায় আটকে না থেকে ‘সি’ কিংবা ‘ডি’র পক্ষে সমবেত হওয়ার বাস্তব কাজে হাত দেওয়াই এখন জরুরি। সৎ ও সাহসী মানুষদের খোলস থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। জড়তা নয়, দরকার তীব্র একটি ঝাঁকি। সেই ঝাঁকি কে দেবে, তারই এখন অপেক্ষা।
তিন. আন্দোলন-সংগ্রাম নিয়ে দেশের মানুষের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। সফল গণ-আন্দোলনের কারণে সরকার বদল হয়, কিন্তু তাতে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। রাজনৈতিক নেতৃত্বে সৎ, মানবিক ও দায়িত্ববান মানুষের অভাব রয়েছে। দেশের ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতাপ্রত্যাশী বড় দুটি দলই চায় না দেশে মানুষের স্বার্থে লড়াই-সংগ্রাম করার মতো একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে উঠুক। মানুষ রাজনৈতিক নেতৃত্বের ধান্দা বুঝতে পারছে বলেই জীবনের ঝুঁকি আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত হতে চায় না। এখন আন্দোলন-সংগ্রামে দলের বাইরের একেবারে সাধারণ মানুষকে খুঁজে পাওয়া যায় না। আওয়ামী লীগে তবু একজন শেখ হাসিনা আছেন, যাঁর প্রতি মানুষের আস্থা-বিশ্বাস আছে। মানুষের আস্থাভাজন না হওয়ার কারণেই বিএনপি এখনো আওয়ামী লীগের বিকল্প হয়ে উঠতে পারছে না। সে জন্য ঈদের পরের আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগের বড় দুশ্চিন্তা হয়তো নেই। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের চারটিতেই আওয়ামী লীগের নৌকা জিতেছে। এতে দলটির আস্থা বেড়েছে। অন্যদিকে বিএনপির ভরসা ‘বাইরের চাপ’। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ভূরাজনীতির যে নিত্যনতুন মেরুকরণ, তা আওয়ামী লীগকে বড় চাপে ফেলতে পারবে বলে মনে হয় না।
বিভুরঞ্জন সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
বিভুরঞ্জন সরকার

ঈদের ছুটির মধ্যে রাজনীতি নিয়ে লেখা হয়তো পাঠকদের বিরক্তির কারণ হতে পারে। অসংখ্য মানুষ ঈদ উদ্যাপনের জন্য ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে। মানুষের এই যাওয়া ও আসা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন হোক, সেটাই কামনা করি। রাজনীতির প্রতি যতই বিরূপতা তৈরি হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত তো রাজনীতির কাছেই আমাদের ফিরে যেতে হয়। দেশ ভালো চলবে না খারাপ চলবে, তা-ও তো নির্ভর করে রাজনীতিরই ওপর। এবারের কোরবানির ঈদ উদ্যাপন করা হবে ‘ঈদের পর কঠিন আন্দোলন’ এই আশা কিংবা আশঙ্কা মাথায় নিয়েই।
দেশের অন্যতম বড় একটি রাজনৈতিক দল বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এক দফা দাবিতে ঈদের পর কঠিন আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। অবশ্য এটা বিএনপি বহু বছর ধরেই বলে আসছে।
দলটি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ক্ষমতা ছেড়েছে। তারপর প্রায় ১৭ বছর চলে গেছে। এর মধ্যে দুই বছরের মতো ছিল বিশেষ ধরনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার। শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে টানা ১৪ বছরের বেশি সময় ক্ষমতায়। ২০১০ সালের ঈদের সময় থেকেই বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া বলে আসছেন, ‘ইনশা আল্লাহ, ঈদের পর আন্দোলন শুরু করব। দুর্নীতিবাজ সরকারকে বিদায় করব। আন্দোলনের জন্য আপনারা প্রস্তুত হন।’
তারপর বহু ঈদ গেছে, কিন্তু না হয়েছে আন্দোলন, না সরকার বিদায় নিয়েছে। এবার বিএনপি ও তার মিত্ররা বলছে, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না। তারা দুটি লক্ষ্য ঘোষণা করেছে: বর্তমান সরকারের পতন এবং পছন্দের সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠন করে তাদের অধীনে নির্বাচন। এই লক্ষ্য অর্জনে তারা সফল হবে, তা কি দেশের মানুষ বিশ্বাস করে? লম্বা সময় ক্ষমতার বাইরে থাকায় বিএনপির মধ্যে নানা রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক সমস্যা তৈরি হয়েছে। দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে প্রকাশ্য রাজনীতি থেকে দূরে আছেন। শারীরিকভাবেও তিনি ফিট নন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে বসে দল চালান। ফলে দলটি এখন ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত নয়। এই অবস্থায় দলের সিনিয়র নেতাদের আন্দোলনসংক্রান্ত বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে একধরনের হাস্য-কৌতুক চলছে।
এবারও ঈদের পর জনগণ বিএনপি ও তার মিত্রদের ডাকে মাঠে নামবে–এমন লক্ষণ এখনো স্পষ্ট নয়।
দুই. ফেসবুকে কারও কারও বিভিন্ন বিষয়ে বিপ্লবী পোস্ট দেখে অনেক আগে শোনা একটি কৌতুক মনে পড়ছে। একদিন এক লোক একটি উঁচু পাহাড়ের সামনে দাঁড়িয়ে গম্ভীরভাবে কিছু ভাবছিলেন। আরেক লোক অনেকক্ষণ এটা দেখে কৌতূহল দমন করতে পারলেন না। অন্যের ব্যাপারে মানুষের কৌতূহল একটু বেশিই থাকে। তিনি ভাবুক ব্যক্তির কাছে গিয়ে বললেন, কিছু মনে না করলে আপনাকে একটি প্রশ্ন করতে পারি?
ভাবতে ভাবতেই তিনি জবাব দিলেন। করুন।
-আপনি কি কিছু নিয়ে বিশেষ চিন্তিত?
-হুম।
-কী নিয়ে?
-আমার মন চায়, এই পাহাড়টা তুইলা আছাড় মারি।
-ভালো তো। মারুন না। এখানে কেউ বাধা দেওয়ার নেই।
-ভাই রে, শক্তিতে যে কুলায় না!
কিছু করতে হলে শুধু ইচ্ছা থাকলেই হবে না। সামর্থ্যও থাকতে হবে। ফেসবুকে যাঁরা ঝড় তোলেন, তাঁরা খারাপ কিছু সহ্য করতে পারেন না। তাঁরা শুধু ভালোর প্রত্যাশা করেন। কিন্তু পৃথিবীতে ভালো-খারাপের দ্বন্দ্ব তো নতুন কিছু নয়। ভালো চাই, খারাপ করি।
পৃথিবীতে হয়তো ভালো মানুষের সংখ্যাই বেশি। খারাপ মানুষ কম। কিন্তু সংখ্যাগুরু ভালো মানুষেরা হলেন নির্বিরোধ ও নিষ্ক্রিয়।
সংখ্যালঘু খারাপ মানুষ আবার সক্রিয় এবং যা খুশি তা-ই করে ফেলতে পারে। তাই পৃথিবী নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ভালো মানুষের চেয়ে খারাপ মানুষের হাতেই বেশি থাকে বা চলে যায়।
ভালো মানুষ যদি ক্ষমতাবান হয়ে একটি খারাপ কাজ করে, তাহলে ক্ষমতার বাইরে থাকা ভালো মানুষেরা একযোগে তার বিরোধিতা করে, হইচই করে। খারাপ মানুষেরা খারাপ করলে হয়তো মৃদু সমালোচনা করে এবং তাড়াতাড়ি তা ভুলেও যায়।
আমরা ভালো মানুষের শাসন চাই, সুশাসন চাই–এটা যদি সত্য হয়, আন্তরিক হয়, তাহলে খারাপ শাসন চলে কীভাবে? আমাদের চাওয়ায় কি কোনো ভেজাল আছে, গলদ আছে?
আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায়। অনেক বছর ধরেই আছে। আমাদের দেশে শুধু নয়, অন্য অনেক দেশেও শেখ হাসিনার চেয়ে আর কেউ এত দীর্ঘ সময় সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। তিনি তাঁর শাসনকালে ভালো কাজ বেশি করেছেন, না খারাপ কাজ বেশি, সেটা একটা দীর্ঘ আলোচনা ও বিতর্কের বিষয়। কোনো দেশের কোনো সরকার শুধুই ভালো কাজ করে, তেমন নজির আছে কি?
একজন যদি বলেন, শেখ হাসিনা ভালো কাজ বেশি করেছেন, আবার কিছু মন্দ কাজও করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে আরেকজন তেড়ে উঠবেন—বলেন কী, শেখ হাসিনার মতো খারাপ শাসক আর হয় না।
যদি বলা হয়, তিনি তাহলে ক্ষমতায় টিকে আছেন কীভাবে?
জবাব পাওয়া যাবে: আরে, ক্ষমতায় তো আছেন জোর করে। সামরিক-বেসামরিক আমলাদের ওপর নির্ভর করে। বিরোধী দলকে ফ্যাসিস্ট কায়দায় দমন করে।
যদি প্রশ্ন করা হয়, হাসিনার আগে জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়াও তো জোর করে ক্ষমতায় থাকার নানা রকম চেষ্টা করেছেন। পারেননি কেন? শেখ হাসিনা কী কেবল জবরদস্তি করেই ক্ষমতায় আছেন, নাকি তার পেছনে জনসমর্থনও আছে?
অমনি জবাব পাওয়া যাবে, রাখেন আপনার দালালি। মানুষের ভোটের অধিকার একবার ফিরিয়ে দিতে বলেন, দেখেন জনসমর্থন কোন দিকে!
যদি বলা হয়, ঠিক আছে, লুটপাট, দুর্নীতি শেখ হাসিনার আমলেও হচ্ছে। কিন্তু শুধু কি আওয়ামী লীগের চাটার দলেরই পেট ভরছে? মানুষ কি কোনো উপকার পায়নি, পাচ্ছে না? বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি আছে। কিন্তু বিদ্যুতের সংকট দূর হয়েছে। খালেদা শুধু খাম্বা দিয়েই দায়িত্ব পালন করেছেন। খালেদার আমলে কৃষক সার পায়নি, পানি পায়নি, গুলি পেয়েছে। হাসিনার সময় কি সার বা কৃষি উপকরণের সংকট হয়েছে?
উত্তরে বলা হবে, কথায় কথায় খালেদা জিয়ার সময়ের উদাহরণ টানা কেন? খালেদা খারাপ বলেই তো মানুষ হাসিনার ওপর আস্থা রেখেছিল। হাসিনা মানুষের আস্থার মর্যাদা রাখতে পারেননি।
যদি প্রশ্ন করা হয়, আচ্ছা, শেখ হাসিনাকে ভোটের মাধ্যমে পরাজিত করে কাকে ক্ষমতায় আনা হবে?
জবাব দেওয়া হবে: মানুষ যাকে পছন্দ করবে, সে-ই ক্ষমতায় আসবে।
আচ্ছা, আমাদের ভোটের অভিজ্ঞতা কী বলে? মানুষ কি ভালো মানুষকে ভোট দেয়, নাকি দল এবং মার্কা দেখে ভোট দেয়? রাজনীতিতে ভালো মানুষ যাঁরা ছিলেন, তাঁরা বিলুপ্তপ্রায় হয়ে গেলেন কেন? ভালো রাজনীতিকের প্রতি মানুষের সমর্থন থাকলে রাজনৈতিক দলগুলো খারাপ মানুষকে কাছে টানার সাহস পায় কী করে?
রাজনৈতিক দলের প্রধান লক্ষ্য ক্ষমতা। রাজনৈতিক দলের নীতি, কৌশল, কর্মসূচি প্রণীত হয় ক্ষমতায় যাওয়ার পথ তৈরির জন্যই। আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম বা রামকৃষ্ণ মিশনের মতো শুধু সেবাদান কোনো রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নয়। জনসেবার ব্রতের কথা একসময় রাজনীতিকদের মুখে শোনা গেলেও এখন সময় পাল্টেছে। চিন্তার জগতেও এসেছে পরিবর্তন। এখন প্রতিযোগিতার সময়।
তার পরও এখনো কারও কারও নিজেকে ‘বিপ্লব স্পন্দিত বুকে মনে হয় আমিই লেনিন’। কিন্তু ওটা মুখে, কাজে নয়!
যেকোনো ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য হুজুগ নয়, দরকার হয় সচেতন ও সংগঠিত জনশক্তির। এখন আমরা অনেকেই ভাবুক হয়ে ভাবসাগরে হাবুডুবু খেতে ভালোবাসি। কিন্তু গায়ে-গতরে রোদ-মেঘ একটু মাখামাখি করুক তা চাই না। পাহাড় তুলে আছাড় মারার অবাস্তব কল্পনা নয়, এখন দরকার ভালোর পক্ষে জনমত বা শক্তি গড়ে তোলা। ‘এ’র বিকল্প ‘বি’—এই সনাতন চিন্তায় আটকে না থেকে ‘সি’ কিংবা ‘ডি’র পক্ষে সমবেত হওয়ার বাস্তব কাজে হাত দেওয়াই এখন জরুরি। সৎ ও সাহসী মানুষদের খোলস থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। জড়তা নয়, দরকার তীব্র একটি ঝাঁকি। সেই ঝাঁকি কে দেবে, তারই এখন অপেক্ষা।
তিন. আন্দোলন-সংগ্রাম নিয়ে দেশের মানুষের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। সফল গণ-আন্দোলনের কারণে সরকার বদল হয়, কিন্তু তাতে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। রাজনৈতিক নেতৃত্বে সৎ, মানবিক ও দায়িত্ববান মানুষের অভাব রয়েছে। দেশের ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতাপ্রত্যাশী বড় দুটি দলই চায় না দেশে মানুষের স্বার্থে লড়াই-সংগ্রাম করার মতো একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে উঠুক। মানুষ রাজনৈতিক নেতৃত্বের ধান্দা বুঝতে পারছে বলেই জীবনের ঝুঁকি আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত হতে চায় না। এখন আন্দোলন-সংগ্রামে দলের বাইরের একেবারে সাধারণ মানুষকে খুঁজে পাওয়া যায় না। আওয়ামী লীগে তবু একজন শেখ হাসিনা আছেন, যাঁর প্রতি মানুষের আস্থা-বিশ্বাস আছে। মানুষের আস্থাভাজন না হওয়ার কারণেই বিএনপি এখনো আওয়ামী লীগের বিকল্প হয়ে উঠতে পারছে না। সে জন্য ঈদের পরের আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগের বড় দুশ্চিন্তা হয়তো নেই। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের চারটিতেই আওয়ামী লীগের নৌকা জিতেছে। এতে দলটির আস্থা বেড়েছে। অন্যদিকে বিএনপির ভরসা ‘বাইরের চাপ’। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ভূরাজনীতির যে নিত্যনতুন মেরুকরণ, তা আওয়ামী লীগকে বড় চাপে ফেলতে পারবে বলে মনে হয় না।
বিভুরঞ্জন সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

ঈদের ছুটির মধ্যে রাজনীতি নিয়ে লেখা হয়তো পাঠকদের বিরক্তির কারণ হতে পারে। অসংখ্য মানুষ ঈদ উদ্যাপনের জন্য ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে। মানুষের এই যাওয়া ও আসা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন হোক, সেটাই কামনা করি। রাজনীতির প্রতি যতই বিরূপতা তৈরি হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত তো রাজনীতির কাছেই আমাদের ফিরে যেতে হয়। দেশ ভালো চলবে না খারাপ চলবে, তা-ও তো নির্ভর করে রাজনীতিরই ওপর। এবারের কোরবানির ঈদ উদ্যাপন করা হবে ‘ঈদের পর কঠিন আন্দোলন’ এই আশা কিংবা আশঙ্কা মাথায় নিয়েই।
দেশের অন্যতম বড় একটি রাজনৈতিক দল বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এক দফা দাবিতে ঈদের পর কঠিন আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। অবশ্য এটা বিএনপি বহু বছর ধরেই বলে আসছে।
দলটি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ক্ষমতা ছেড়েছে। তারপর প্রায় ১৭ বছর চলে গেছে। এর মধ্যে দুই বছরের মতো ছিল বিশেষ ধরনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার। শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে টানা ১৪ বছরের বেশি সময় ক্ষমতায়। ২০১০ সালের ঈদের সময় থেকেই বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া বলে আসছেন, ‘ইনশা আল্লাহ, ঈদের পর আন্দোলন শুরু করব। দুর্নীতিবাজ সরকারকে বিদায় করব। আন্দোলনের জন্য আপনারা প্রস্তুত হন।’
তারপর বহু ঈদ গেছে, কিন্তু না হয়েছে আন্দোলন, না সরকার বিদায় নিয়েছে। এবার বিএনপি ও তার মিত্ররা বলছে, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না। তারা দুটি লক্ষ্য ঘোষণা করেছে: বর্তমান সরকারের পতন এবং পছন্দের সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠন করে তাদের অধীনে নির্বাচন। এই লক্ষ্য অর্জনে তারা সফল হবে, তা কি দেশের মানুষ বিশ্বাস করে? লম্বা সময় ক্ষমতার বাইরে থাকায় বিএনপির মধ্যে নানা রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক সমস্যা তৈরি হয়েছে। দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে প্রকাশ্য রাজনীতি থেকে দূরে আছেন। শারীরিকভাবেও তিনি ফিট নন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে বসে দল চালান। ফলে দলটি এখন ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত নয়। এই অবস্থায় দলের সিনিয়র নেতাদের আন্দোলনসংক্রান্ত বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে একধরনের হাস্য-কৌতুক চলছে।
এবারও ঈদের পর জনগণ বিএনপি ও তার মিত্রদের ডাকে মাঠে নামবে–এমন লক্ষণ এখনো স্পষ্ট নয়।
দুই. ফেসবুকে কারও কারও বিভিন্ন বিষয়ে বিপ্লবী পোস্ট দেখে অনেক আগে শোনা একটি কৌতুক মনে পড়ছে। একদিন এক লোক একটি উঁচু পাহাড়ের সামনে দাঁড়িয়ে গম্ভীরভাবে কিছু ভাবছিলেন। আরেক লোক অনেকক্ষণ এটা দেখে কৌতূহল দমন করতে পারলেন না। অন্যের ব্যাপারে মানুষের কৌতূহল একটু বেশিই থাকে। তিনি ভাবুক ব্যক্তির কাছে গিয়ে বললেন, কিছু মনে না করলে আপনাকে একটি প্রশ্ন করতে পারি?
ভাবতে ভাবতেই তিনি জবাব দিলেন। করুন।
-আপনি কি কিছু নিয়ে বিশেষ চিন্তিত?
-হুম।
-কী নিয়ে?
-আমার মন চায়, এই পাহাড়টা তুইলা আছাড় মারি।
-ভালো তো। মারুন না। এখানে কেউ বাধা দেওয়ার নেই।
-ভাই রে, শক্তিতে যে কুলায় না!
কিছু করতে হলে শুধু ইচ্ছা থাকলেই হবে না। সামর্থ্যও থাকতে হবে। ফেসবুকে যাঁরা ঝড় তোলেন, তাঁরা খারাপ কিছু সহ্য করতে পারেন না। তাঁরা শুধু ভালোর প্রত্যাশা করেন। কিন্তু পৃথিবীতে ভালো-খারাপের দ্বন্দ্ব তো নতুন কিছু নয়। ভালো চাই, খারাপ করি।
পৃথিবীতে হয়তো ভালো মানুষের সংখ্যাই বেশি। খারাপ মানুষ কম। কিন্তু সংখ্যাগুরু ভালো মানুষেরা হলেন নির্বিরোধ ও নিষ্ক্রিয়।
সংখ্যালঘু খারাপ মানুষ আবার সক্রিয় এবং যা খুশি তা-ই করে ফেলতে পারে। তাই পৃথিবী নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ভালো মানুষের চেয়ে খারাপ মানুষের হাতেই বেশি থাকে বা চলে যায়।
ভালো মানুষ যদি ক্ষমতাবান হয়ে একটি খারাপ কাজ করে, তাহলে ক্ষমতার বাইরে থাকা ভালো মানুষেরা একযোগে তার বিরোধিতা করে, হইচই করে। খারাপ মানুষেরা খারাপ করলে হয়তো মৃদু সমালোচনা করে এবং তাড়াতাড়ি তা ভুলেও যায়।
আমরা ভালো মানুষের শাসন চাই, সুশাসন চাই–এটা যদি সত্য হয়, আন্তরিক হয়, তাহলে খারাপ শাসন চলে কীভাবে? আমাদের চাওয়ায় কি কোনো ভেজাল আছে, গলদ আছে?
আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায়। অনেক বছর ধরেই আছে। আমাদের দেশে শুধু নয়, অন্য অনেক দেশেও শেখ হাসিনার চেয়ে আর কেউ এত দীর্ঘ সময় সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। তিনি তাঁর শাসনকালে ভালো কাজ বেশি করেছেন, না খারাপ কাজ বেশি, সেটা একটা দীর্ঘ আলোচনা ও বিতর্কের বিষয়। কোনো দেশের কোনো সরকার শুধুই ভালো কাজ করে, তেমন নজির আছে কি?
একজন যদি বলেন, শেখ হাসিনা ভালো কাজ বেশি করেছেন, আবার কিছু মন্দ কাজও করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে আরেকজন তেড়ে উঠবেন—বলেন কী, শেখ হাসিনার মতো খারাপ শাসক আর হয় না।
যদি বলা হয়, তিনি তাহলে ক্ষমতায় টিকে আছেন কীভাবে?
জবাব পাওয়া যাবে: আরে, ক্ষমতায় তো আছেন জোর করে। সামরিক-বেসামরিক আমলাদের ওপর নির্ভর করে। বিরোধী দলকে ফ্যাসিস্ট কায়দায় দমন করে।
যদি প্রশ্ন করা হয়, হাসিনার আগে জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়াও তো জোর করে ক্ষমতায় থাকার নানা রকম চেষ্টা করেছেন। পারেননি কেন? শেখ হাসিনা কী কেবল জবরদস্তি করেই ক্ষমতায় আছেন, নাকি তার পেছনে জনসমর্থনও আছে?
অমনি জবাব পাওয়া যাবে, রাখেন আপনার দালালি। মানুষের ভোটের অধিকার একবার ফিরিয়ে দিতে বলেন, দেখেন জনসমর্থন কোন দিকে!
যদি বলা হয়, ঠিক আছে, লুটপাট, দুর্নীতি শেখ হাসিনার আমলেও হচ্ছে। কিন্তু শুধু কি আওয়ামী লীগের চাটার দলেরই পেট ভরছে? মানুষ কি কোনো উপকার পায়নি, পাচ্ছে না? বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি আছে। কিন্তু বিদ্যুতের সংকট দূর হয়েছে। খালেদা শুধু খাম্বা দিয়েই দায়িত্ব পালন করেছেন। খালেদার আমলে কৃষক সার পায়নি, পানি পায়নি, গুলি পেয়েছে। হাসিনার সময় কি সার বা কৃষি উপকরণের সংকট হয়েছে?
উত্তরে বলা হবে, কথায় কথায় খালেদা জিয়ার সময়ের উদাহরণ টানা কেন? খালেদা খারাপ বলেই তো মানুষ হাসিনার ওপর আস্থা রেখেছিল। হাসিনা মানুষের আস্থার মর্যাদা রাখতে পারেননি।
যদি প্রশ্ন করা হয়, আচ্ছা, শেখ হাসিনাকে ভোটের মাধ্যমে পরাজিত করে কাকে ক্ষমতায় আনা হবে?
জবাব দেওয়া হবে: মানুষ যাকে পছন্দ করবে, সে-ই ক্ষমতায় আসবে।
আচ্ছা, আমাদের ভোটের অভিজ্ঞতা কী বলে? মানুষ কি ভালো মানুষকে ভোট দেয়, নাকি দল এবং মার্কা দেখে ভোট দেয়? রাজনীতিতে ভালো মানুষ যাঁরা ছিলেন, তাঁরা বিলুপ্তপ্রায় হয়ে গেলেন কেন? ভালো রাজনীতিকের প্রতি মানুষের সমর্থন থাকলে রাজনৈতিক দলগুলো খারাপ মানুষকে কাছে টানার সাহস পায় কী করে?
রাজনৈতিক দলের প্রধান লক্ষ্য ক্ষমতা। রাজনৈতিক দলের নীতি, কৌশল, কর্মসূচি প্রণীত হয় ক্ষমতায় যাওয়ার পথ তৈরির জন্যই। আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম বা রামকৃষ্ণ মিশনের মতো শুধু সেবাদান কোনো রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নয়। জনসেবার ব্রতের কথা একসময় রাজনীতিকদের মুখে শোনা গেলেও এখন সময় পাল্টেছে। চিন্তার জগতেও এসেছে পরিবর্তন। এখন প্রতিযোগিতার সময়।
তার পরও এখনো কারও কারও নিজেকে ‘বিপ্লব স্পন্দিত বুকে মনে হয় আমিই লেনিন’। কিন্তু ওটা মুখে, কাজে নয়!
যেকোনো ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য হুজুগ নয়, দরকার হয় সচেতন ও সংগঠিত জনশক্তির। এখন আমরা অনেকেই ভাবুক হয়ে ভাবসাগরে হাবুডুবু খেতে ভালোবাসি। কিন্তু গায়ে-গতরে রোদ-মেঘ একটু মাখামাখি করুক তা চাই না। পাহাড় তুলে আছাড় মারার অবাস্তব কল্পনা নয়, এখন দরকার ভালোর পক্ষে জনমত বা শক্তি গড়ে তোলা। ‘এ’র বিকল্প ‘বি’—এই সনাতন চিন্তায় আটকে না থেকে ‘সি’ কিংবা ‘ডি’র পক্ষে সমবেত হওয়ার বাস্তব কাজে হাত দেওয়াই এখন জরুরি। সৎ ও সাহসী মানুষদের খোলস থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। জড়তা নয়, দরকার তীব্র একটি ঝাঁকি। সেই ঝাঁকি কে দেবে, তারই এখন অপেক্ষা।
তিন. আন্দোলন-সংগ্রাম নিয়ে দেশের মানুষের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। সফল গণ-আন্দোলনের কারণে সরকার বদল হয়, কিন্তু তাতে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। রাজনৈতিক নেতৃত্বে সৎ, মানবিক ও দায়িত্ববান মানুষের অভাব রয়েছে। দেশের ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতাপ্রত্যাশী বড় দুটি দলই চায় না দেশে মানুষের স্বার্থে লড়াই-সংগ্রাম করার মতো একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে উঠুক। মানুষ রাজনৈতিক নেতৃত্বের ধান্দা বুঝতে পারছে বলেই জীবনের ঝুঁকি আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত হতে চায় না। এখন আন্দোলন-সংগ্রামে দলের বাইরের একেবারে সাধারণ মানুষকে খুঁজে পাওয়া যায় না। আওয়ামী লীগে তবু একজন শেখ হাসিনা আছেন, যাঁর প্রতি মানুষের আস্থা-বিশ্বাস আছে। মানুষের আস্থাভাজন না হওয়ার কারণেই বিএনপি এখনো আওয়ামী লীগের বিকল্প হয়ে উঠতে পারছে না। সে জন্য ঈদের পরের আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগের বড় দুশ্চিন্তা হয়তো নেই। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের চারটিতেই আওয়ামী লীগের নৌকা জিতেছে। এতে দলটির আস্থা বেড়েছে। অন্যদিকে বিএনপির ভরসা ‘বাইরের চাপ’। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ভূরাজনীতির যে নিত্যনতুন মেরুকরণ, তা আওয়ামী লীগকে বড় চাপে ফেলতে পারবে বলে মনে হয় না।
বিভুরঞ্জন সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

ঈদের ছুটির মধ্যে রাজনীতি নিয়ে লেখা হয়তো পাঠকদের বিরক্তির কারণ হতে পারে। অসংখ্য মানুষ ঈদ উদ্যাপনের জন্য ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে। মানুষের এই যাওয়া ও আসা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন হোক, সেটাই কামনা করি। রাজনীতির প্রতি যতই বিরূপতা তৈরি হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত তো রাজনীতির
২৮ জুন ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

ঈদের ছুটির মধ্যে রাজনীতি নিয়ে লেখা হয়তো পাঠকদের বিরক্তির কারণ হতে পারে। অসংখ্য মানুষ ঈদ উদ্যাপনের জন্য ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে। মানুষের এই যাওয়া ও আসা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন হোক, সেটাই কামনা করি। রাজনীতির প্রতি যতই বিরূপতা তৈরি হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত তো রাজনীতির
২৮ জুন ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ঈদের ছুটির মধ্যে রাজনীতি নিয়ে লেখা হয়তো পাঠকদের বিরক্তির কারণ হতে পারে। অসংখ্য মানুষ ঈদ উদ্যাপনের জন্য ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে। মানুষের এই যাওয়া ও আসা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন হোক, সেটাই কামনা করি। রাজনীতির প্রতি যতই বিরূপতা তৈরি হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত তো রাজনীতির
২৮ জুন ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

ঈদের ছুটির মধ্যে রাজনীতি নিয়ে লেখা হয়তো পাঠকদের বিরক্তির কারণ হতে পারে। অসংখ্য মানুষ ঈদ উদ্যাপনের জন্য ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে। মানুষের এই যাওয়া ও আসা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন হোক, সেটাই কামনা করি। রাজনীতির প্রতি যতই বিরূপতা তৈরি হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত তো রাজনীতির
২৮ জুন ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫