Ajker Patrika

বরগুনায় গত বছর ১২৪ আত্মহত্যা, অধিকাংশই খেয়েছেন ‘গ্যাস ট্যাবলেট’

রুদ্র রুহান, বরগুনা
আপডেট : ০১ জুন ২০২৩, ২২: ২৩
বরগুনায় গত বছর ১২৪ আত্মহত্যা, অধিকাংশই খেয়েছেন ‘গ্যাস ট্যাবলেট’

বরগুনায় ২০২২ সালে ১২৪ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী। তাঁদের মধ্য ৫৮ জনই অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড বা গ্যাস ট্যাবলেট নামের একপ্রকার কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বরগুনা সদর হাসপাতালের গত এক বছরের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

জেলার সচেতন নাগরিকেরা মনে করছেন, আত্মহত্যা রোধে প্রয়োজনীয় সচেতনতার অভাব রয়েছে। পাশাপাশি কীটনাশকের সহজলভ্যতার কারণেও আত্মহত্যা প্রবণতা বেড়েছে যা উদ্বেগজনক। 

বরগুনা সদর হাসপাতালের ময়নাতদন্ত রিপোর্টের তথ্যমতে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বরগুনায় মোট ১৪৯টি অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১২৪ জনের রিপোর্ট এসেছে সুইসাইডাল ডেথ বা আত্মহত্যা। এর মধ্যে ৭৬ জনই নারী, বাকিরা পুরুষ। নারীদের ৪২ জনই কীটনাশক (গ্যাস ট্যাবলেট) খেয়ে এবং বাকি ২৪ জন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এসব নারীর বয়স ১৫ থেকে ৩২ বছর।

এ ছাড়া একই বছর আত্মহত্যাকারী ৪৮ জন পুরুষদের মধ্যে ৩২ জন গলায় ফাঁস এবং ১৬ জন কীটনাশক (গ্যাস ট্যাবলেট) খেয়ে আত্মহত্যা করেন। তাঁদের বয়স ২৫ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে। সজীব নামের ১৩ বছরের এক কিশোরও আছে এই তালিকায়। 

বরগুনায় ২০২২ সালের আলোচিত আত্মহত্যার ঘটনাগুলো

২০২২ সালে বরগুনায় সবচেয়ে আলোচিত অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল বেতাগী উপজেলায়। উপজেলার জোয়ার করুণা গ্রামের গ্রামের বাসিন্দা হিরু হাওলাদারের মেয়ে তামান্না ও মনির হাওলাদারের ছেলে আসলামের প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে হয়। ছেলের পরিবার মেনে নিলেও মেয়ে তামান্নার পরিবারের কেউ এ বিয়ে মেনে নেননি। ২০২২ সালের ১৩ মার্চ উভয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। 

একই বছরের ২৭ জুলাই বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকাখালী গ্রামে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া শারমিন নামে এক ছাত্রী আত্মহত্যা করে। শারমিনের বয়স মাত্র ১২ বছর। ঘরে ওড়না পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করে। 

 ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বাওলাকার গ্রামে সুরমা (১৭) নামের এক মাদ্রাসাছাত্রীর বিয়ে হয়। বাবা শাহ আলম সিকদার একপ্রকার মতের বিরুদ্ধেই তাঁর মেয়ে সুরমাকে পাশের গ্রামের নির্মাণশ্রমিক বশিরের সঙ্গে বিয়ে দেন। পড়াশোনা করে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন মুহূর্তেই ফিকে হয়ে যায় সুরমার। নববধূ হয়ে লাল শাড়ি পরে চলে মাদ্রাসার বদলে তাঁকে চলে যেতে হয় শ্বশুরবাড়ি। 

এরপর কিছুদিন যেতে না যেতেই যৌতুকের চাপে চলে আসতে হয় বাবার বাড়ি। টাকা নিয়ে তবেই ফিরতে হবে শ্বশুরালয়ে, নয়তো নির্যাতনের শিকার হতে হবে। কিন্তু সুরমা যৌতুক দিয়ে স্বামী সংসারে যেতে ছিল নারাজ। এ নিয়ে বাবার সঙ্গে তার বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বাবা রেগে গিয়ে হাত তোলেন মেয়ের গায়ে। অভিমানে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করে সুরমা। 

সুরমার মতোই উপকূলীয় বরগুনা জেলার উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক কিশোরী গৃহবধূ পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। 

বরগুনায় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আলোচিত আত্মহত্যার ঘটনাগুলো

এদিকে হাসপাতালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু ২০২৩ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে বরগুনায় মোট ১৯টি অপমৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টিই আত্মহত্যা। বাকি ছয়জন রোগাক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। 

২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে দুই সন্তানের মা সাবিনা বেগম ফুর্তি (২৮) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। 

এরপর ৫ জানুয়ারি সদরের তানজিলা আক্তার পুতুল নামের এক গৃহবধূ, ৭ জানুয়ারি রাব্বি খান নামের এক কিশোর, ৯ জানুয়ারি মাত্র আমতলী উপজেলার হুলাটানা এলাকার মাত্র ১২ বছরের শিশু নূপুর পারিবারিক কলহের জেরে অভিমানে আত্মহত্যা করে। 

একই বছরের ১১ জানুয়ারি সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বদরখালী গ্রামের বেড়িবাঁধের একটি গাছ থেকে মাতুব্বর (৫৫) নামের এক কৃষকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশের তদন্তে জানা যায়, ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন দুলাল। 

যে কেউ চাইলেই কিনতে পারেন ‘গ্যাস ট্যাবলেট’ 

বেশির ভাগ নারী-পুরুষেরাই সহজলভ্য ‘অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড’ পান করে আত্মহত্যা করছেন। স্থানীয়ভাবে যার নাম ‘গ্যাস ট্যাবলেট’। কৃষকেরা সংরক্ষিত ধান, চাল ও ডাল কীটনাশক মুক্ত রাখতে ট্যাবলেট জাতীয় এই কীটনাশক ব্যবহার করেন। প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই এই গ্যাস ট্যাবলেট থাকে। 

বরগুনা শহর ও গ্রামাঞ্চলে সরকারের কৃষি বিভাগ অনুমোদিত কীটনাশক বিক্রেতাদের (ডিলারদের) কাছে যে কেউ গিয়ে ‘গ্যাস ট্যাবলেট’ নাম বললেই এই কীটনাশক কিনতে পারেন। 

কয়েকজন কীটনাশক বিক্রেতা প্রতিবেদককে জানান, গ্যাস ট্যাবলেটজাতীয় কীটনাশক মূলত গেরস্তের বাড়িতে ধান-চাল কীটনাশক মুক্ত রাখতে ব্যবহার করা হয়। কৃষকেরা কিনে নিয়ে বাড়িতে রেখেও দেন অনেকে। অন্য সব কীটনাশক বিক্রিতে যেমন নিয়ম, গ্যাস ট্যাবলেট বিক্রির ক্ষেত্রেও একই। তবে নারীরা কেউ কিনতে আসলে জেনে-বুঝে বিক্রি করা হয়।  

সার্বিক বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, ‘প্রতিটি আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়। আমরা তদন্ত করে আদালতের কাছে প্রতিবেদন দিই। আমরা তদন্তে দেখেছি, বেশির ভাগ আত্মহত্যাই পারিবারিক কলহের জের, ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েন, হতাশা, প্রতারণা ও আর্থসামাজিক কারণে হয়ে থাকে।’ 

বরগুনায় আত্মহত্যা প্রবণতা বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা কমিউনিটি পুলিশিং ও বিগ পুলিশিংয়ের মধ্য দিয়ে আত্মহত্যার বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছি। এ ছাড়া আত্মহত্যার উপাদানগুলো সহজলভ্য কি না বা এ বিষয়ে বিক্রির কোনো বিধিবিধান রয়েছে কি না, আমরা এ বিষয়গুলো খোঁজ নিয়ে দেখব। এ বিষয়ে অভিভাবক এবং সমাজের সচেতন ব্যক্তিদেরও কাজ করতে হবে।’ 

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে সহকারী ডোম হিসেবে কাজ করেন মালেক ফকির। তিনি বলেন, ‘আত্মহত্যার ঘটনায় মর্গে আসা অধিকাংশ মরদেহের পাকস্থলীতে গ্যাস ট্যাবলেট নামের একপ্রকার মারাত্মক বিষ পাওয়া যায়। যা পান করার পরপরই বিষক্রিয়া গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া বাকিরা প্রায় সবই ঝুলন্ত রশি বা কাপড়ের টুকরায় গলায় ফাঁস দিয়ে মারা যান।’

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ লোকমান হাকিম বলেন, ‘বরগুনায় আত্মহত্যার হার বেড়েছে। এখানে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ১০টিরও বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। আত্মহত্যা আসলে মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক ব্যাধি। এর প্রতিরোধও সম্মিলিত সামাজিকভাবে করতে হবে। আমাদের প্রতিনিয়তই আত্মহত্যার পোস্টমর্টেম করতে হচ্ছে। আবার কাউকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করতে হয়। আমি বলব এটা প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই।’

বরগুনা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শায়লা আহসানের সঙ্গে কথা হয় আত্মহত্যার বিষয়ে। তিনি বলেন, আত্মহত্যা একটি মনস্তাত্ত্বিক সামাজিক ব্যাধি। প্রথমে ব্যক্তি ঘুমের ওষুধ সেবনে আসক্ত হয়ে পড়েন। ঘুমের ওষুধ বিষণ্নতা আরও বাড়িয়ে দেয় এবং আত্মহত্যার দিকে ধাবিত করে। অধিকাংশ নারীই পারিবারিক বিরোধের কারণে আত্মহত্যা করেন। এর মধ্যে কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েনও বড় কারণ। 

ডা. শায়লা আহসান আরও বলেন, ‘আমাদের সমাজব্যবস্থায় এখনো ব্যক্তিগত সমস্যার বিষয়ে পরিবারের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করার সুযোগ যেমন নেই। অভিভাবকেরাও অনেকে ছেলেমেয়েকে শাসনের ক্ষেত্রে শুধু শাস্তিমূলক মনোভাবে স্থির। সামাজিক এই ব্যাধি দূর করতে জেলা পর্যায়ে সমাজসেবার কাউন্সেলিং চালু থাকলেও অনেকে জানেন না বা আসতেও চান না। এ সমস্যা সমাধানে প্রথমেই পরিবারকে সচেতন হতে হবে। পরবর্তীকালে সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগও কাজে লাগাতে হবে।’ 

বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন জাগো নারীর নির্বাহী পরিচালক হোসনেয়ারা হাসি বলেন, ‘উপকূলীয় জেলা বরগুনার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। এ বিষয়ে এখনই সচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নেওয়া জরুরি। গত কয়েক বছরে আমরা আত্মহত্যার যে প্রবণতা দেখছি, তা রীতিমতো ভয়াবহ ও শঙ্কাজনক পর্যায়ে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে নিহত দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক, স্ত্রীকে চাকরির আশ্বাস

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ভালুকায় গণপিটুনিতে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসের বাড়িতে শোকের মাতম এখনো থামেনি। একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটিকে হারিয়ে পুরো পরিবার যেন শোকে কাতর।

প্রতিদিনই বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে দিপুর পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে আর্থিক সহায়তাসহ নানা আশ্বাস। এ ছাড়া দিপুর পরিবারের জন্য বাড়িতে সার্বক্ষণিকভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

আজ সোমবার ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমান নিহত দিপু দাসের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। তাঁর সঙ্গে তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলামসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দিপুর পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা, শীতবস্ত্র, শুকনো খাবার ও একটি সেলাই মেশিন পরিবারটিকে দেওয়া হয়। পাশাপাশি দিপুর স্ত্রীকে চাকরি দেওয়ার ঘোষণাও দেন জেলা প্রশাসক।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিহতের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। সহযোগিতাসহ সব সময় তাদের পাশে থাকার কথা জানিয়েছি।’

উল্লেখ্য, ১৮ ডিসেম্বর রাতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পোশাকশ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে উত্তেজিত জনতা। পরে তাঁর মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ ঘটনায় নিহতে দিপুর ছোট ভাই অপু দাস ১৯ ডিসেম্বর বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে ভালুকা থানায় একটি মামলা করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

প্রতিবাদ সমাবেশ

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ভালুকায় দিপু দাস হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ময়মনসিংহ নগরী ও তারাকান্দায় মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে। আজ সচেতন ময়মনসিংহবাসীর ব্যানারে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তব্য দেন দিপু দাসের ছোট ভাই অপু দাস, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতা আল নুর মো. আয়াস, হৃদয় খান, সাংবাদিক মোজাম্মেল খোকন, কাজী মোহাম্মদ মোস্তফা প্রমুখ।

একই দাবিতে দিপু দাসের নিজ উপজেলা তারাকান্দায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ফ্রন্ট ও দিপু দাসের পরিবার। আজ সকালে তারাকান্দা বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের তারাকান্দা উপজেলা সভাপতি বিজন কুমার ভৌমিক রতন, সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত শর্মা সরকার কাঞ্চনসহ দিপুর পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন।

মানববন্ধনে বক্তারা কারখানার মালিকসহ প্রকৃত দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন এবং দিপু দাসের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ শিক্ষার্থীদের, যানজটে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় আট দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন রহমতপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে শিক্ষার্থীরা রহমতপুর এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন। ঘণ্টা তিনেক ধরে চলা অবরোধে মহাসড়কের উভয় পাশে যানজট তৈরি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন চালক ও যাত্রীরা।

ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত সপ্তাহ থেকে ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়েছেন তাঁরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষাকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) থেকে পৃথক করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান করা, সব কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদ শুধু ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য সংরক্ষণ, ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের বেসরকারি চাকরিতে ন্যূনতম দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের চাকরিতে যোগদানের পর ছয় মাসের বনিয়াদি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘৯ মাস আগে আট দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তখন শুধু আশ্বাস দিয়েছিল, বাস্তব কোনো উদ্যোগ নেয়নি।’ আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘যত দিন পর্যন্ত আমাদের দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মেনে না নেবে, তত দিন ক্যাম্পাস লকডাউন, প্রশাসনিক ভবন বন্ধসহ এই আন্দোলন চলবে।’

এ বিষয়ে রহমতপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ কিশোর কুমার মজুমদার বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাঁদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। তবে এসব দাবি বাস্তবায়নের বিষয়টি আমাদের এখতিয়ারভুক্ত নয়। এ বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তিতাসে শাশুড়িকে চুবিয়ে হত্যায় জামাতা গ্রেপ্তার

হোমনা (কুমিল্লা) সংবাদদাতা
মো. জামাল সিকদার। ছবি: সংগৃহীত
মো. জামাল সিকদার। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় শাশুড়িকে খালে চুবিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি জামাতা মো. জামাল সিকদারকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল রোববার রাতে ঢাকার সাভারে আশুলিয়া থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। আজ সোমবার সকালে তাঁকে তিতাস থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে তিতাস থানা-পুলিশ দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায়।

গত ১০ অক্টোবর উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে সুফিয়া খাতুন নামে (৭০) এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করা হয়। পারিবারিক কলহের জেরে তাঁর জামাতা জামাল তাঁকে বসতবাড়ির কাছে খালে চুবিয়ে হত্যা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে তিতাস থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকে পালিয়ে ছিলেন জামাল।

জানা গেছে, জামাল সুফিয়া বেগমের ভাই দিলু সিকদারের ছেলে। তাঁর সঙ্গে সুফিয়ার মেয়ে রহিমা বেগমের বিয়ে হয়। শ্বশুরবাড়ির পাশেই জামালের বাড়ি।

তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালিদ সাইফুল্লাহ জানান, শাশুড়িকে চুবিয়ে হত্যার প্রধান আসামি জামাল উদ্দিন শিকদারকে যৌথ বাহিনীর সহায়তায় গ্রেপ্তার করে আজ সকালে থানায় আনা হয়। পরে দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পটুয়াখালীতে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
পটুয়াখালী-৩ আসনে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ। ছবি: আজকের পত্রিকা
পটুয়াখালী-৩ আসনে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা–গলাচিপা) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন। আজ সোমবার গলাচিপা উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

এই আসনে এরই মধ্যে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।

এদিকে বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে আসন সমঝোতার ঘোষণার পরদিনই এই নেতার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যদিও বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কাউকে দলীয় মনোনয়ন দেয়নি, তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হাসান মামুনের পক্ষে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে।

জানতে চাইলে গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘ভিপি নুর নির্বাচন করুন বা না করুন, এই আসনে হাসান মামুনকে নিয়েই নির্বাচনে অংশ নেব।’

এ বিষয়ে গলাচিপা উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হাসান মামুনের সমর্থকেরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহের বিষয়টি বিধি অনুযায়ী সম্পন্ন করেছেন এবং সব প্রার্থীর ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা সমভাবে প্রয়োগ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত