রুদ্র রুহান, বরগুনা

বরগুনায় ২০২২ সালে ১২৪ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী। তাঁদের মধ্য ৫৮ জনই অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড বা গ্যাস ট্যাবলেট নামের একপ্রকার কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বরগুনা সদর হাসপাতালের গত এক বছরের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জেলার সচেতন নাগরিকেরা মনে করছেন, আত্মহত্যা রোধে প্রয়োজনীয় সচেতনতার অভাব রয়েছে। পাশাপাশি কীটনাশকের সহজলভ্যতার কারণেও আত্মহত্যা প্রবণতা বেড়েছে যা উদ্বেগজনক।
বরগুনা সদর হাসপাতালের ময়নাতদন্ত রিপোর্টের তথ্যমতে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বরগুনায় মোট ১৪৯টি অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১২৪ জনের রিপোর্ট এসেছে সুইসাইডাল ডেথ বা আত্মহত্যা। এর মধ্যে ৭৬ জনই নারী, বাকিরা পুরুষ। নারীদের ৪২ জনই কীটনাশক (গ্যাস ট্যাবলেট) খেয়ে এবং বাকি ২৪ জন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এসব নারীর বয়স ১৫ থেকে ৩২ বছর।
এ ছাড়া একই বছর আত্মহত্যাকারী ৪৮ জন পুরুষদের মধ্যে ৩২ জন গলায় ফাঁস এবং ১৬ জন কীটনাশক (গ্যাস ট্যাবলেট) খেয়ে আত্মহত্যা করেন। তাঁদের বয়স ২৫ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে। সজীব নামের ১৩ বছরের এক কিশোরও আছে এই তালিকায়।
বরগুনায় ২০২২ সালের আলোচিত আত্মহত্যার ঘটনাগুলো
২০২২ সালে বরগুনায় সবচেয়ে আলোচিত অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল বেতাগী উপজেলায়। উপজেলার জোয়ার করুণা গ্রামের গ্রামের বাসিন্দা হিরু হাওলাদারের মেয়ে তামান্না ও মনির হাওলাদারের ছেলে আসলামের প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে হয়। ছেলের পরিবার মেনে নিলেও মেয়ে তামান্নার পরিবারের কেউ এ বিয়ে মেনে নেননি। ২০২২ সালের ১৩ মার্চ উভয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
একই বছরের ২৭ জুলাই বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকাখালী গ্রামে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া শারমিন নামে এক ছাত্রী আত্মহত্যা করে। শারমিনের বয়স মাত্র ১২ বছর। ঘরে ওড়না পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বাওলাকার গ্রামে সুরমা (১৭) নামের এক মাদ্রাসাছাত্রীর বিয়ে হয়। বাবা শাহ আলম সিকদার একপ্রকার মতের বিরুদ্ধেই তাঁর মেয়ে সুরমাকে পাশের গ্রামের নির্মাণশ্রমিক বশিরের সঙ্গে বিয়ে দেন। পড়াশোনা করে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন মুহূর্তেই ফিকে হয়ে যায় সুরমার। নববধূ হয়ে লাল শাড়ি পরে চলে মাদ্রাসার বদলে তাঁকে চলে যেতে হয় শ্বশুরবাড়ি।
এরপর কিছুদিন যেতে না যেতেই যৌতুকের চাপে চলে আসতে হয় বাবার বাড়ি। টাকা নিয়ে তবেই ফিরতে হবে শ্বশুরালয়ে, নয়তো নির্যাতনের শিকার হতে হবে। কিন্তু সুরমা যৌতুক দিয়ে স্বামী সংসারে যেতে ছিল নারাজ। এ নিয়ে বাবার সঙ্গে তার বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বাবা রেগে গিয়ে হাত তোলেন মেয়ের গায়ে। অভিমানে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করে সুরমা।
সুরমার মতোই উপকূলীয় বরগুনা জেলার উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক কিশোরী গৃহবধূ পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
বরগুনায় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আলোচিত আত্মহত্যার ঘটনাগুলো
এদিকে হাসপাতালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু ২০২৩ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে বরগুনায় মোট ১৯টি অপমৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টিই আত্মহত্যা। বাকি ছয়জন রোগাক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে দুই সন্তানের মা সাবিনা বেগম ফুর্তি (২৮) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এরপর ৫ জানুয়ারি সদরের তানজিলা আক্তার পুতুল নামের এক গৃহবধূ, ৭ জানুয়ারি রাব্বি খান নামের এক কিশোর, ৯ জানুয়ারি মাত্র আমতলী উপজেলার হুলাটানা এলাকার মাত্র ১২ বছরের শিশু নূপুর পারিবারিক কলহের জেরে অভিমানে আত্মহত্যা করে।
একই বছরের ১১ জানুয়ারি সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বদরখালী গ্রামের বেড়িবাঁধের একটি গাছ থেকে মাতুব্বর (৫৫) নামের এক কৃষকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশের তদন্তে জানা যায়, ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন দুলাল।
যে কেউ চাইলেই কিনতে পারেন ‘গ্যাস ট্যাবলেট’
বেশির ভাগ নারী-পুরুষেরাই সহজলভ্য ‘অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড’ পান করে আত্মহত্যা করছেন। স্থানীয়ভাবে যার নাম ‘গ্যাস ট্যাবলেট’। কৃষকেরা সংরক্ষিত ধান, চাল ও ডাল কীটনাশক মুক্ত রাখতে ট্যাবলেট জাতীয় এই কীটনাশক ব্যবহার করেন। প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই এই গ্যাস ট্যাবলেট থাকে।
বরগুনা শহর ও গ্রামাঞ্চলে সরকারের কৃষি বিভাগ অনুমোদিত কীটনাশক বিক্রেতাদের (ডিলারদের) কাছে যে কেউ গিয়ে ‘গ্যাস ট্যাবলেট’ নাম বললেই এই কীটনাশক কিনতে পারেন।
কয়েকজন কীটনাশক বিক্রেতা প্রতিবেদককে জানান, গ্যাস ট্যাবলেটজাতীয় কীটনাশক মূলত গেরস্তের বাড়িতে ধান-চাল কীটনাশক মুক্ত রাখতে ব্যবহার করা হয়। কৃষকেরা কিনে নিয়ে বাড়িতে রেখেও দেন অনেকে। অন্য সব কীটনাশক বিক্রিতে যেমন নিয়ম, গ্যাস ট্যাবলেট বিক্রির ক্ষেত্রেও একই। তবে নারীরা কেউ কিনতে আসলে জেনে-বুঝে বিক্রি করা হয়।
সার্বিক বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, ‘প্রতিটি আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়। আমরা তদন্ত করে আদালতের কাছে প্রতিবেদন দিই। আমরা তদন্তে দেখেছি, বেশির ভাগ আত্মহত্যাই পারিবারিক কলহের জের, ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েন, হতাশা, প্রতারণা ও আর্থসামাজিক কারণে হয়ে থাকে।’
বরগুনায় আত্মহত্যা প্রবণতা বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা কমিউনিটি পুলিশিং ও বিগ পুলিশিংয়ের মধ্য দিয়ে আত্মহত্যার বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছি। এ ছাড়া আত্মহত্যার উপাদানগুলো সহজলভ্য কি না বা এ বিষয়ে বিক্রির কোনো বিধিবিধান রয়েছে কি না, আমরা এ বিষয়গুলো খোঁজ নিয়ে দেখব। এ বিষয়ে অভিভাবক এবং সমাজের সচেতন ব্যক্তিদেরও কাজ করতে হবে।’
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে সহকারী ডোম হিসেবে কাজ করেন মালেক ফকির। তিনি বলেন, ‘আত্মহত্যার ঘটনায় মর্গে আসা অধিকাংশ মরদেহের পাকস্থলীতে গ্যাস ট্যাবলেট নামের একপ্রকার মারাত্মক বিষ পাওয়া যায়। যা পান করার পরপরই বিষক্রিয়া গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া বাকিরা প্রায় সবই ঝুলন্ত রশি বা কাপড়ের টুকরায় গলায় ফাঁস দিয়ে মারা যান।’
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ লোকমান হাকিম বলেন, ‘বরগুনায় আত্মহত্যার হার বেড়েছে। এখানে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ১০টিরও বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। আত্মহত্যা আসলে মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক ব্যাধি। এর প্রতিরোধও সম্মিলিত সামাজিকভাবে করতে হবে। আমাদের প্রতিনিয়তই আত্মহত্যার পোস্টমর্টেম করতে হচ্ছে। আবার কাউকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করতে হয়। আমি বলব এটা প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই।’
বরগুনা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শায়লা আহসানের সঙ্গে কথা হয় আত্মহত্যার বিষয়ে। তিনি বলেন, আত্মহত্যা একটি মনস্তাত্ত্বিক সামাজিক ব্যাধি। প্রথমে ব্যক্তি ঘুমের ওষুধ সেবনে আসক্ত হয়ে পড়েন। ঘুমের ওষুধ বিষণ্নতা আরও বাড়িয়ে দেয় এবং আত্মহত্যার দিকে ধাবিত করে। অধিকাংশ নারীই পারিবারিক বিরোধের কারণে আত্মহত্যা করেন। এর মধ্যে কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েনও বড় কারণ।
ডা. শায়লা আহসান আরও বলেন, ‘আমাদের সমাজব্যবস্থায় এখনো ব্যক্তিগত সমস্যার বিষয়ে পরিবারের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করার সুযোগ যেমন নেই। অভিভাবকেরাও অনেকে ছেলেমেয়েকে শাসনের ক্ষেত্রে শুধু শাস্তিমূলক মনোভাবে স্থির। সামাজিক এই ব্যাধি দূর করতে জেলা পর্যায়ে সমাজসেবার কাউন্সেলিং চালু থাকলেও অনেকে জানেন না বা আসতেও চান না। এ সমস্যা সমাধানে প্রথমেই পরিবারকে সচেতন হতে হবে। পরবর্তীকালে সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগও কাজে লাগাতে হবে।’
বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন জাগো নারীর নির্বাহী পরিচালক হোসনেয়ারা হাসি বলেন, ‘উপকূলীয় জেলা বরগুনার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। এ বিষয়ে এখনই সচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নেওয়া জরুরি। গত কয়েক বছরে আমরা আত্মহত্যার যে প্রবণতা দেখছি, তা রীতিমতো ভয়াবহ ও শঙ্কাজনক পর্যায়ে।’

বরগুনায় ২০২২ সালে ১২৪ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী। তাঁদের মধ্য ৫৮ জনই অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড বা গ্যাস ট্যাবলেট নামের একপ্রকার কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বরগুনা সদর হাসপাতালের গত এক বছরের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জেলার সচেতন নাগরিকেরা মনে করছেন, আত্মহত্যা রোধে প্রয়োজনীয় সচেতনতার অভাব রয়েছে। পাশাপাশি কীটনাশকের সহজলভ্যতার কারণেও আত্মহত্যা প্রবণতা বেড়েছে যা উদ্বেগজনক।
বরগুনা সদর হাসপাতালের ময়নাতদন্ত রিপোর্টের তথ্যমতে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বরগুনায় মোট ১৪৯টি অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১২৪ জনের রিপোর্ট এসেছে সুইসাইডাল ডেথ বা আত্মহত্যা। এর মধ্যে ৭৬ জনই নারী, বাকিরা পুরুষ। নারীদের ৪২ জনই কীটনাশক (গ্যাস ট্যাবলেট) খেয়ে এবং বাকি ২৪ জন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এসব নারীর বয়স ১৫ থেকে ৩২ বছর।
এ ছাড়া একই বছর আত্মহত্যাকারী ৪৮ জন পুরুষদের মধ্যে ৩২ জন গলায় ফাঁস এবং ১৬ জন কীটনাশক (গ্যাস ট্যাবলেট) খেয়ে আত্মহত্যা করেন। তাঁদের বয়স ২৫ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে। সজীব নামের ১৩ বছরের এক কিশোরও আছে এই তালিকায়।
বরগুনায় ২০২২ সালের আলোচিত আত্মহত্যার ঘটনাগুলো
২০২২ সালে বরগুনায় সবচেয়ে আলোচিত অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল বেতাগী উপজেলায়। উপজেলার জোয়ার করুণা গ্রামের গ্রামের বাসিন্দা হিরু হাওলাদারের মেয়ে তামান্না ও মনির হাওলাদারের ছেলে আসলামের প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে হয়। ছেলের পরিবার মেনে নিলেও মেয়ে তামান্নার পরিবারের কেউ এ বিয়ে মেনে নেননি। ২০২২ সালের ১৩ মার্চ উভয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
একই বছরের ২৭ জুলাই বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকাখালী গ্রামে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া শারমিন নামে এক ছাত্রী আত্মহত্যা করে। শারমিনের বয়স মাত্র ১২ বছর। ঘরে ওড়না পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বাওলাকার গ্রামে সুরমা (১৭) নামের এক মাদ্রাসাছাত্রীর বিয়ে হয়। বাবা শাহ আলম সিকদার একপ্রকার মতের বিরুদ্ধেই তাঁর মেয়ে সুরমাকে পাশের গ্রামের নির্মাণশ্রমিক বশিরের সঙ্গে বিয়ে দেন। পড়াশোনা করে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন মুহূর্তেই ফিকে হয়ে যায় সুরমার। নববধূ হয়ে লাল শাড়ি পরে চলে মাদ্রাসার বদলে তাঁকে চলে যেতে হয় শ্বশুরবাড়ি।
এরপর কিছুদিন যেতে না যেতেই যৌতুকের চাপে চলে আসতে হয় বাবার বাড়ি। টাকা নিয়ে তবেই ফিরতে হবে শ্বশুরালয়ে, নয়তো নির্যাতনের শিকার হতে হবে। কিন্তু সুরমা যৌতুক দিয়ে স্বামী সংসারে যেতে ছিল নারাজ। এ নিয়ে বাবার সঙ্গে তার বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বাবা রেগে গিয়ে হাত তোলেন মেয়ের গায়ে। অভিমানে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করে সুরমা।
সুরমার মতোই উপকূলীয় বরগুনা জেলার উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক কিশোরী গৃহবধূ পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
বরগুনায় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আলোচিত আত্মহত্যার ঘটনাগুলো
এদিকে হাসপাতালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু ২০২৩ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে বরগুনায় মোট ১৯টি অপমৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টিই আত্মহত্যা। বাকি ছয়জন রোগাক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে দুই সন্তানের মা সাবিনা বেগম ফুর্তি (২৮) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এরপর ৫ জানুয়ারি সদরের তানজিলা আক্তার পুতুল নামের এক গৃহবধূ, ৭ জানুয়ারি রাব্বি খান নামের এক কিশোর, ৯ জানুয়ারি মাত্র আমতলী উপজেলার হুলাটানা এলাকার মাত্র ১২ বছরের শিশু নূপুর পারিবারিক কলহের জেরে অভিমানে আত্মহত্যা করে।
একই বছরের ১১ জানুয়ারি সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বদরখালী গ্রামের বেড়িবাঁধের একটি গাছ থেকে মাতুব্বর (৫৫) নামের এক কৃষকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশের তদন্তে জানা যায়, ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন দুলাল।
যে কেউ চাইলেই কিনতে পারেন ‘গ্যাস ট্যাবলেট’
বেশির ভাগ নারী-পুরুষেরাই সহজলভ্য ‘অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড’ পান করে আত্মহত্যা করছেন। স্থানীয়ভাবে যার নাম ‘গ্যাস ট্যাবলেট’। কৃষকেরা সংরক্ষিত ধান, চাল ও ডাল কীটনাশক মুক্ত রাখতে ট্যাবলেট জাতীয় এই কীটনাশক ব্যবহার করেন। প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই এই গ্যাস ট্যাবলেট থাকে।
বরগুনা শহর ও গ্রামাঞ্চলে সরকারের কৃষি বিভাগ অনুমোদিত কীটনাশক বিক্রেতাদের (ডিলারদের) কাছে যে কেউ গিয়ে ‘গ্যাস ট্যাবলেট’ নাম বললেই এই কীটনাশক কিনতে পারেন।
কয়েকজন কীটনাশক বিক্রেতা প্রতিবেদককে জানান, গ্যাস ট্যাবলেটজাতীয় কীটনাশক মূলত গেরস্তের বাড়িতে ধান-চাল কীটনাশক মুক্ত রাখতে ব্যবহার করা হয়। কৃষকেরা কিনে নিয়ে বাড়িতে রেখেও দেন অনেকে। অন্য সব কীটনাশক বিক্রিতে যেমন নিয়ম, গ্যাস ট্যাবলেট বিক্রির ক্ষেত্রেও একই। তবে নারীরা কেউ কিনতে আসলে জেনে-বুঝে বিক্রি করা হয়।
সার্বিক বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, ‘প্রতিটি আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়। আমরা তদন্ত করে আদালতের কাছে প্রতিবেদন দিই। আমরা তদন্তে দেখেছি, বেশির ভাগ আত্মহত্যাই পারিবারিক কলহের জের, ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েন, হতাশা, প্রতারণা ও আর্থসামাজিক কারণে হয়ে থাকে।’
বরগুনায় আত্মহত্যা প্রবণতা বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা কমিউনিটি পুলিশিং ও বিগ পুলিশিংয়ের মধ্য দিয়ে আত্মহত্যার বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছি। এ ছাড়া আত্মহত্যার উপাদানগুলো সহজলভ্য কি না বা এ বিষয়ে বিক্রির কোনো বিধিবিধান রয়েছে কি না, আমরা এ বিষয়গুলো খোঁজ নিয়ে দেখব। এ বিষয়ে অভিভাবক এবং সমাজের সচেতন ব্যক্তিদেরও কাজ করতে হবে।’
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে সহকারী ডোম হিসেবে কাজ করেন মালেক ফকির। তিনি বলেন, ‘আত্মহত্যার ঘটনায় মর্গে আসা অধিকাংশ মরদেহের পাকস্থলীতে গ্যাস ট্যাবলেট নামের একপ্রকার মারাত্মক বিষ পাওয়া যায়। যা পান করার পরপরই বিষক্রিয়া গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া বাকিরা প্রায় সবই ঝুলন্ত রশি বা কাপড়ের টুকরায় গলায় ফাঁস দিয়ে মারা যান।’
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ লোকমান হাকিম বলেন, ‘বরগুনায় আত্মহত্যার হার বেড়েছে। এখানে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ১০টিরও বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। আত্মহত্যা আসলে মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক ব্যাধি। এর প্রতিরোধও সম্মিলিত সামাজিকভাবে করতে হবে। আমাদের প্রতিনিয়তই আত্মহত্যার পোস্টমর্টেম করতে হচ্ছে। আবার কাউকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করতে হয়। আমি বলব এটা প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই।’
বরগুনা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শায়লা আহসানের সঙ্গে কথা হয় আত্মহত্যার বিষয়ে। তিনি বলেন, আত্মহত্যা একটি মনস্তাত্ত্বিক সামাজিক ব্যাধি। প্রথমে ব্যক্তি ঘুমের ওষুধ সেবনে আসক্ত হয়ে পড়েন। ঘুমের ওষুধ বিষণ্নতা আরও বাড়িয়ে দেয় এবং আত্মহত্যার দিকে ধাবিত করে। অধিকাংশ নারীই পারিবারিক বিরোধের কারণে আত্মহত্যা করেন। এর মধ্যে কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েনও বড় কারণ।
ডা. শায়লা আহসান আরও বলেন, ‘আমাদের সমাজব্যবস্থায় এখনো ব্যক্তিগত সমস্যার বিষয়ে পরিবারের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করার সুযোগ যেমন নেই। অভিভাবকেরাও অনেকে ছেলেমেয়েকে শাসনের ক্ষেত্রে শুধু শাস্তিমূলক মনোভাবে স্থির। সামাজিক এই ব্যাধি দূর করতে জেলা পর্যায়ে সমাজসেবার কাউন্সেলিং চালু থাকলেও অনেকে জানেন না বা আসতেও চান না। এ সমস্যা সমাধানে প্রথমেই পরিবারকে সচেতন হতে হবে। পরবর্তীকালে সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগও কাজে লাগাতে হবে।’
বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন জাগো নারীর নির্বাহী পরিচালক হোসনেয়ারা হাসি বলেন, ‘উপকূলীয় জেলা বরগুনার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। এ বিষয়ে এখনই সচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নেওয়া জরুরি। গত কয়েক বছরে আমরা আত্মহত্যার যে প্রবণতা দেখছি, তা রীতিমতো ভয়াবহ ও শঙ্কাজনক পর্যায়ে।’
রুদ্র রুহান, বরগুনা

বরগুনায় ২০২২ সালে ১২৪ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী। তাঁদের মধ্য ৫৮ জনই অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড বা গ্যাস ট্যাবলেট নামের একপ্রকার কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বরগুনা সদর হাসপাতালের গত এক বছরের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জেলার সচেতন নাগরিকেরা মনে করছেন, আত্মহত্যা রোধে প্রয়োজনীয় সচেতনতার অভাব রয়েছে। পাশাপাশি কীটনাশকের সহজলভ্যতার কারণেও আত্মহত্যা প্রবণতা বেড়েছে যা উদ্বেগজনক।
বরগুনা সদর হাসপাতালের ময়নাতদন্ত রিপোর্টের তথ্যমতে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বরগুনায় মোট ১৪৯টি অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১২৪ জনের রিপোর্ট এসেছে সুইসাইডাল ডেথ বা আত্মহত্যা। এর মধ্যে ৭৬ জনই নারী, বাকিরা পুরুষ। নারীদের ৪২ জনই কীটনাশক (গ্যাস ট্যাবলেট) খেয়ে এবং বাকি ২৪ জন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এসব নারীর বয়স ১৫ থেকে ৩২ বছর।
এ ছাড়া একই বছর আত্মহত্যাকারী ৪৮ জন পুরুষদের মধ্যে ৩২ জন গলায় ফাঁস এবং ১৬ জন কীটনাশক (গ্যাস ট্যাবলেট) খেয়ে আত্মহত্যা করেন। তাঁদের বয়স ২৫ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে। সজীব নামের ১৩ বছরের এক কিশোরও আছে এই তালিকায়।
বরগুনায় ২০২২ সালের আলোচিত আত্মহত্যার ঘটনাগুলো
২০২২ সালে বরগুনায় সবচেয়ে আলোচিত অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল বেতাগী উপজেলায়। উপজেলার জোয়ার করুণা গ্রামের গ্রামের বাসিন্দা হিরু হাওলাদারের মেয়ে তামান্না ও মনির হাওলাদারের ছেলে আসলামের প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে হয়। ছেলের পরিবার মেনে নিলেও মেয়ে তামান্নার পরিবারের কেউ এ বিয়ে মেনে নেননি। ২০২২ সালের ১৩ মার্চ উভয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
একই বছরের ২৭ জুলাই বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকাখালী গ্রামে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া শারমিন নামে এক ছাত্রী আত্মহত্যা করে। শারমিনের বয়স মাত্র ১২ বছর। ঘরে ওড়না পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বাওলাকার গ্রামে সুরমা (১৭) নামের এক মাদ্রাসাছাত্রীর বিয়ে হয়। বাবা শাহ আলম সিকদার একপ্রকার মতের বিরুদ্ধেই তাঁর মেয়ে সুরমাকে পাশের গ্রামের নির্মাণশ্রমিক বশিরের সঙ্গে বিয়ে দেন। পড়াশোনা করে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন মুহূর্তেই ফিকে হয়ে যায় সুরমার। নববধূ হয়ে লাল শাড়ি পরে চলে মাদ্রাসার বদলে তাঁকে চলে যেতে হয় শ্বশুরবাড়ি।
এরপর কিছুদিন যেতে না যেতেই যৌতুকের চাপে চলে আসতে হয় বাবার বাড়ি। টাকা নিয়ে তবেই ফিরতে হবে শ্বশুরালয়ে, নয়তো নির্যাতনের শিকার হতে হবে। কিন্তু সুরমা যৌতুক দিয়ে স্বামী সংসারে যেতে ছিল নারাজ। এ নিয়ে বাবার সঙ্গে তার বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বাবা রেগে গিয়ে হাত তোলেন মেয়ের গায়ে। অভিমানে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করে সুরমা।
সুরমার মতোই উপকূলীয় বরগুনা জেলার উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক কিশোরী গৃহবধূ পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
বরগুনায় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আলোচিত আত্মহত্যার ঘটনাগুলো
এদিকে হাসপাতালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু ২০২৩ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে বরগুনায় মোট ১৯টি অপমৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টিই আত্মহত্যা। বাকি ছয়জন রোগাক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে দুই সন্তানের মা সাবিনা বেগম ফুর্তি (২৮) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এরপর ৫ জানুয়ারি সদরের তানজিলা আক্তার পুতুল নামের এক গৃহবধূ, ৭ জানুয়ারি রাব্বি খান নামের এক কিশোর, ৯ জানুয়ারি মাত্র আমতলী উপজেলার হুলাটানা এলাকার মাত্র ১২ বছরের শিশু নূপুর পারিবারিক কলহের জেরে অভিমানে আত্মহত্যা করে।
একই বছরের ১১ জানুয়ারি সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বদরখালী গ্রামের বেড়িবাঁধের একটি গাছ থেকে মাতুব্বর (৫৫) নামের এক কৃষকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশের তদন্তে জানা যায়, ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন দুলাল।
যে কেউ চাইলেই কিনতে পারেন ‘গ্যাস ট্যাবলেট’
বেশির ভাগ নারী-পুরুষেরাই সহজলভ্য ‘অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড’ পান করে আত্মহত্যা করছেন। স্থানীয়ভাবে যার নাম ‘গ্যাস ট্যাবলেট’। কৃষকেরা সংরক্ষিত ধান, চাল ও ডাল কীটনাশক মুক্ত রাখতে ট্যাবলেট জাতীয় এই কীটনাশক ব্যবহার করেন। প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই এই গ্যাস ট্যাবলেট থাকে।
বরগুনা শহর ও গ্রামাঞ্চলে সরকারের কৃষি বিভাগ অনুমোদিত কীটনাশক বিক্রেতাদের (ডিলারদের) কাছে যে কেউ গিয়ে ‘গ্যাস ট্যাবলেট’ নাম বললেই এই কীটনাশক কিনতে পারেন।
কয়েকজন কীটনাশক বিক্রেতা প্রতিবেদককে জানান, গ্যাস ট্যাবলেটজাতীয় কীটনাশক মূলত গেরস্তের বাড়িতে ধান-চাল কীটনাশক মুক্ত রাখতে ব্যবহার করা হয়। কৃষকেরা কিনে নিয়ে বাড়িতে রেখেও দেন অনেকে। অন্য সব কীটনাশক বিক্রিতে যেমন নিয়ম, গ্যাস ট্যাবলেট বিক্রির ক্ষেত্রেও একই। তবে নারীরা কেউ কিনতে আসলে জেনে-বুঝে বিক্রি করা হয়।
সার্বিক বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, ‘প্রতিটি আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়। আমরা তদন্ত করে আদালতের কাছে প্রতিবেদন দিই। আমরা তদন্তে দেখেছি, বেশির ভাগ আত্মহত্যাই পারিবারিক কলহের জের, ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েন, হতাশা, প্রতারণা ও আর্থসামাজিক কারণে হয়ে থাকে।’
বরগুনায় আত্মহত্যা প্রবণতা বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা কমিউনিটি পুলিশিং ও বিগ পুলিশিংয়ের মধ্য দিয়ে আত্মহত্যার বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছি। এ ছাড়া আত্মহত্যার উপাদানগুলো সহজলভ্য কি না বা এ বিষয়ে বিক্রির কোনো বিধিবিধান রয়েছে কি না, আমরা এ বিষয়গুলো খোঁজ নিয়ে দেখব। এ বিষয়ে অভিভাবক এবং সমাজের সচেতন ব্যক্তিদেরও কাজ করতে হবে।’
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে সহকারী ডোম হিসেবে কাজ করেন মালেক ফকির। তিনি বলেন, ‘আত্মহত্যার ঘটনায় মর্গে আসা অধিকাংশ মরদেহের পাকস্থলীতে গ্যাস ট্যাবলেট নামের একপ্রকার মারাত্মক বিষ পাওয়া যায়। যা পান করার পরপরই বিষক্রিয়া গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া বাকিরা প্রায় সবই ঝুলন্ত রশি বা কাপড়ের টুকরায় গলায় ফাঁস দিয়ে মারা যান।’
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ লোকমান হাকিম বলেন, ‘বরগুনায় আত্মহত্যার হার বেড়েছে। এখানে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ১০টিরও বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। আত্মহত্যা আসলে মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক ব্যাধি। এর প্রতিরোধও সম্মিলিত সামাজিকভাবে করতে হবে। আমাদের প্রতিনিয়তই আত্মহত্যার পোস্টমর্টেম করতে হচ্ছে। আবার কাউকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করতে হয়। আমি বলব এটা প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই।’
বরগুনা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শায়লা আহসানের সঙ্গে কথা হয় আত্মহত্যার বিষয়ে। তিনি বলেন, আত্মহত্যা একটি মনস্তাত্ত্বিক সামাজিক ব্যাধি। প্রথমে ব্যক্তি ঘুমের ওষুধ সেবনে আসক্ত হয়ে পড়েন। ঘুমের ওষুধ বিষণ্নতা আরও বাড়িয়ে দেয় এবং আত্মহত্যার দিকে ধাবিত করে। অধিকাংশ নারীই পারিবারিক বিরোধের কারণে আত্মহত্যা করেন। এর মধ্যে কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েনও বড় কারণ।
ডা. শায়লা আহসান আরও বলেন, ‘আমাদের সমাজব্যবস্থায় এখনো ব্যক্তিগত সমস্যার বিষয়ে পরিবারের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করার সুযোগ যেমন নেই। অভিভাবকেরাও অনেকে ছেলেমেয়েকে শাসনের ক্ষেত্রে শুধু শাস্তিমূলক মনোভাবে স্থির। সামাজিক এই ব্যাধি দূর করতে জেলা পর্যায়ে সমাজসেবার কাউন্সেলিং চালু থাকলেও অনেকে জানেন না বা আসতেও চান না। এ সমস্যা সমাধানে প্রথমেই পরিবারকে সচেতন হতে হবে। পরবর্তীকালে সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগও কাজে লাগাতে হবে।’
বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন জাগো নারীর নির্বাহী পরিচালক হোসনেয়ারা হাসি বলেন, ‘উপকূলীয় জেলা বরগুনার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। এ বিষয়ে এখনই সচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নেওয়া জরুরি। গত কয়েক বছরে আমরা আত্মহত্যার যে প্রবণতা দেখছি, তা রীতিমতো ভয়াবহ ও শঙ্কাজনক পর্যায়ে।’

বরগুনায় ২০২২ সালে ১২৪ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী। তাঁদের মধ্য ৫৮ জনই অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড বা গ্যাস ট্যাবলেট নামের একপ্রকার কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বরগুনা সদর হাসপাতালের গত এক বছরের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জেলার সচেতন নাগরিকেরা মনে করছেন, আত্মহত্যা রোধে প্রয়োজনীয় সচেতনতার অভাব রয়েছে। পাশাপাশি কীটনাশকের সহজলভ্যতার কারণেও আত্মহত্যা প্রবণতা বেড়েছে যা উদ্বেগজনক।
বরগুনা সদর হাসপাতালের ময়নাতদন্ত রিপোর্টের তথ্যমতে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বরগুনায় মোট ১৪৯টি অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১২৪ জনের রিপোর্ট এসেছে সুইসাইডাল ডেথ বা আত্মহত্যা। এর মধ্যে ৭৬ জনই নারী, বাকিরা পুরুষ। নারীদের ৪২ জনই কীটনাশক (গ্যাস ট্যাবলেট) খেয়ে এবং বাকি ২৪ জন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এসব নারীর বয়স ১৫ থেকে ৩২ বছর।
এ ছাড়া একই বছর আত্মহত্যাকারী ৪৮ জন পুরুষদের মধ্যে ৩২ জন গলায় ফাঁস এবং ১৬ জন কীটনাশক (গ্যাস ট্যাবলেট) খেয়ে আত্মহত্যা করেন। তাঁদের বয়স ২৫ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে। সজীব নামের ১৩ বছরের এক কিশোরও আছে এই তালিকায়।
বরগুনায় ২০২২ সালের আলোচিত আত্মহত্যার ঘটনাগুলো
২০২২ সালে বরগুনায় সবচেয়ে আলোচিত অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল বেতাগী উপজেলায়। উপজেলার জোয়ার করুণা গ্রামের গ্রামের বাসিন্দা হিরু হাওলাদারের মেয়ে তামান্না ও মনির হাওলাদারের ছেলে আসলামের প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে হয়। ছেলের পরিবার মেনে নিলেও মেয়ে তামান্নার পরিবারের কেউ এ বিয়ে মেনে নেননি। ২০২২ সালের ১৩ মার্চ উভয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
একই বছরের ২৭ জুলাই বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকাখালী গ্রামে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া শারমিন নামে এক ছাত্রী আত্মহত্যা করে। শারমিনের বয়স মাত্র ১২ বছর। ঘরে ওড়না পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বাওলাকার গ্রামে সুরমা (১৭) নামের এক মাদ্রাসাছাত্রীর বিয়ে হয়। বাবা শাহ আলম সিকদার একপ্রকার মতের বিরুদ্ধেই তাঁর মেয়ে সুরমাকে পাশের গ্রামের নির্মাণশ্রমিক বশিরের সঙ্গে বিয়ে দেন। পড়াশোনা করে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন মুহূর্তেই ফিকে হয়ে যায় সুরমার। নববধূ হয়ে লাল শাড়ি পরে চলে মাদ্রাসার বদলে তাঁকে চলে যেতে হয় শ্বশুরবাড়ি।
এরপর কিছুদিন যেতে না যেতেই যৌতুকের চাপে চলে আসতে হয় বাবার বাড়ি। টাকা নিয়ে তবেই ফিরতে হবে শ্বশুরালয়ে, নয়তো নির্যাতনের শিকার হতে হবে। কিন্তু সুরমা যৌতুক দিয়ে স্বামী সংসারে যেতে ছিল নারাজ। এ নিয়ে বাবার সঙ্গে তার বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বাবা রেগে গিয়ে হাত তোলেন মেয়ের গায়ে। অভিমানে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করে সুরমা।
সুরমার মতোই উপকূলীয় বরগুনা জেলার উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক কিশোরী গৃহবধূ পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
বরগুনায় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আলোচিত আত্মহত্যার ঘটনাগুলো
এদিকে হাসপাতালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু ২০২৩ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে বরগুনায় মোট ১৯টি অপমৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টিই আত্মহত্যা। বাকি ছয়জন রোগাক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে দুই সন্তানের মা সাবিনা বেগম ফুর্তি (২৮) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এরপর ৫ জানুয়ারি সদরের তানজিলা আক্তার পুতুল নামের এক গৃহবধূ, ৭ জানুয়ারি রাব্বি খান নামের এক কিশোর, ৯ জানুয়ারি মাত্র আমতলী উপজেলার হুলাটানা এলাকার মাত্র ১২ বছরের শিশু নূপুর পারিবারিক কলহের জেরে অভিমানে আত্মহত্যা করে।
একই বছরের ১১ জানুয়ারি সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বদরখালী গ্রামের বেড়িবাঁধের একটি গাছ থেকে মাতুব্বর (৫৫) নামের এক কৃষকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশের তদন্তে জানা যায়, ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন দুলাল।
যে কেউ চাইলেই কিনতে পারেন ‘গ্যাস ট্যাবলেট’
বেশির ভাগ নারী-পুরুষেরাই সহজলভ্য ‘অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড’ পান করে আত্মহত্যা করছেন। স্থানীয়ভাবে যার নাম ‘গ্যাস ট্যাবলেট’। কৃষকেরা সংরক্ষিত ধান, চাল ও ডাল কীটনাশক মুক্ত রাখতে ট্যাবলেট জাতীয় এই কীটনাশক ব্যবহার করেন। প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই এই গ্যাস ট্যাবলেট থাকে।
বরগুনা শহর ও গ্রামাঞ্চলে সরকারের কৃষি বিভাগ অনুমোদিত কীটনাশক বিক্রেতাদের (ডিলারদের) কাছে যে কেউ গিয়ে ‘গ্যাস ট্যাবলেট’ নাম বললেই এই কীটনাশক কিনতে পারেন।
কয়েকজন কীটনাশক বিক্রেতা প্রতিবেদককে জানান, গ্যাস ট্যাবলেটজাতীয় কীটনাশক মূলত গেরস্তের বাড়িতে ধান-চাল কীটনাশক মুক্ত রাখতে ব্যবহার করা হয়। কৃষকেরা কিনে নিয়ে বাড়িতে রেখেও দেন অনেকে। অন্য সব কীটনাশক বিক্রিতে যেমন নিয়ম, গ্যাস ট্যাবলেট বিক্রির ক্ষেত্রেও একই। তবে নারীরা কেউ কিনতে আসলে জেনে-বুঝে বিক্রি করা হয়।
সার্বিক বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, ‘প্রতিটি আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়। আমরা তদন্ত করে আদালতের কাছে প্রতিবেদন দিই। আমরা তদন্তে দেখেছি, বেশির ভাগ আত্মহত্যাই পারিবারিক কলহের জের, ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েন, হতাশা, প্রতারণা ও আর্থসামাজিক কারণে হয়ে থাকে।’
বরগুনায় আত্মহত্যা প্রবণতা বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা কমিউনিটি পুলিশিং ও বিগ পুলিশিংয়ের মধ্য দিয়ে আত্মহত্যার বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছি। এ ছাড়া আত্মহত্যার উপাদানগুলো সহজলভ্য কি না বা এ বিষয়ে বিক্রির কোনো বিধিবিধান রয়েছে কি না, আমরা এ বিষয়গুলো খোঁজ নিয়ে দেখব। এ বিষয়ে অভিভাবক এবং সমাজের সচেতন ব্যক্তিদেরও কাজ করতে হবে।’
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে সহকারী ডোম হিসেবে কাজ করেন মালেক ফকির। তিনি বলেন, ‘আত্মহত্যার ঘটনায় মর্গে আসা অধিকাংশ মরদেহের পাকস্থলীতে গ্যাস ট্যাবলেট নামের একপ্রকার মারাত্মক বিষ পাওয়া যায়। যা পান করার পরপরই বিষক্রিয়া গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া বাকিরা প্রায় সবই ঝুলন্ত রশি বা কাপড়ের টুকরায় গলায় ফাঁস দিয়ে মারা যান।’
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ লোকমান হাকিম বলেন, ‘বরগুনায় আত্মহত্যার হার বেড়েছে। এখানে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ১০টিরও বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। আত্মহত্যা আসলে মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক ব্যাধি। এর প্রতিরোধও সম্মিলিত সামাজিকভাবে করতে হবে। আমাদের প্রতিনিয়তই আত্মহত্যার পোস্টমর্টেম করতে হচ্ছে। আবার কাউকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করতে হয়। আমি বলব এটা প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই।’
বরগুনা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শায়লা আহসানের সঙ্গে কথা হয় আত্মহত্যার বিষয়ে। তিনি বলেন, আত্মহত্যা একটি মনস্তাত্ত্বিক সামাজিক ব্যাধি। প্রথমে ব্যক্তি ঘুমের ওষুধ সেবনে আসক্ত হয়ে পড়েন। ঘুমের ওষুধ বিষণ্নতা আরও বাড়িয়ে দেয় এবং আত্মহত্যার দিকে ধাবিত করে। অধিকাংশ নারীই পারিবারিক বিরোধের কারণে আত্মহত্যা করেন। এর মধ্যে কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েনও বড় কারণ।
ডা. শায়লা আহসান আরও বলেন, ‘আমাদের সমাজব্যবস্থায় এখনো ব্যক্তিগত সমস্যার বিষয়ে পরিবারের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করার সুযোগ যেমন নেই। অভিভাবকেরাও অনেকে ছেলেমেয়েকে শাসনের ক্ষেত্রে শুধু শাস্তিমূলক মনোভাবে স্থির। সামাজিক এই ব্যাধি দূর করতে জেলা পর্যায়ে সমাজসেবার কাউন্সেলিং চালু থাকলেও অনেকে জানেন না বা আসতেও চান না। এ সমস্যা সমাধানে প্রথমেই পরিবারকে সচেতন হতে হবে। পরবর্তীকালে সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগও কাজে লাগাতে হবে।’
বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন জাগো নারীর নির্বাহী পরিচালক হোসনেয়ারা হাসি বলেন, ‘উপকূলীয় জেলা বরগুনার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। এ বিষয়ে এখনই সচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নেওয়া জরুরি। গত কয়েক বছরে আমরা আত্মহত্যার যে প্রবণতা দেখছি, তা রীতিমতো ভয়াবহ ও শঙ্কাজনক পর্যায়ে।’

মামলার বাদী গৃহবধূ বলেন, ‘ঘটনার দিন বিকেলে শিশুসন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় আজাহার মিয়া ও রাজিব মিয়া আমার কক্ষের দরজা খুলতে বলেন। ঘরে অন্য পুরুষ রয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে তাঁরা জোর করে শয়নকক্ষে ঢুকে পড়েন। এ সময় আশপাশের লোকজন জড়ো হলে তাঁরা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁদের সরিয়ে দেন।
৩ মিনিট আগে
সিলেটের ওসমানী নগর উপজেলায় সড়কের পাশ থেকে শিপন আহমদ (২৫) নামের এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে সাদীপুর ইউনিয়নে কেশবখালী নদীর পাড় থেকে তাঁর লাশটি উদ্ধার করা হয়। তবে তাঁর অটোরিকশাটি পাওয়া যায়নি।
৮ মিনিট আগে
হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা না হওয়ায় আব্দুল হান্নানকে আজ বিকেলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে পল্টন থানা-পুলিশ। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন থানার এসআই শামীম হাসান সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
১২ মিনিট আগে
ময়মনসিংহ নগরীতে হেলে পড়া পাঁচতলা ভবনটি পরিদর্শন করেছে সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন। এ সময় দেয়ালে ফাটল দেখা দেওয়ায় ও হেলা পড়ায় ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে হেলে পড়া ভবন, নির্মাণাধীন গ্রিন ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানসহ তিনটি ভবনের মালিককে অনুমোদনসংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ তলব করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেমির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। ধর্ষণের চেষ্টাকালে ওই গৃহবধূ কৌশলে পালিয়ে রক্ষা পান। গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ গতকাল রাতে আজাহার মিয়া (৪২) ও রাজিব মিয়া (৩৫) নামের দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেন। ঘটনার পর থেকে তাঁরা পলাতক রয়েছেন। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে।
মামলার বাদী গৃহবধূ বলেন, ‘ঘটনার দিন বিকেলে শিশুসন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় আজাহার মিয়া ও রাজিব মিয়া আমার কক্ষের দরজা খুলতে বলেন। ঘরে অন্য পুরুষ রয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে তাঁরা জোর করে শয়নকক্ষে ঢুকে পড়েন। এ সময় আশপাশের লোকজন জড়ো হলে তাঁরা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁদের সরিয়ে দেন। এরপর শিশুকে জিম্মি ও স্বামীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে ওই দুই ব্যক্তি ধর্ষণের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে কৌশলে ঘর থেকে বেরিয়ে আসি।’
এলাকার একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে কথা হলে তাঁরা বলেন, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা এভাবেই এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন। সন্ধ্যার পর মদ পান করে এলাকায় অপরাধ কর্মকাণ্ড চালান।
বাড়ির মালিক বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তিরা নানাভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করে আসছে। এলাকায় তাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমার বাসার ভাড়াটের সঙ্গে যা হয়েছে, তা শতভাগ সত্য।’
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে এক নারী দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আমরা আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছি।’

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। ধর্ষণের চেষ্টাকালে ওই গৃহবধূ কৌশলে পালিয়ে রক্ষা পান। গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ গতকাল রাতে আজাহার মিয়া (৪২) ও রাজিব মিয়া (৩৫) নামের দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেন। ঘটনার পর থেকে তাঁরা পলাতক রয়েছেন। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে।
মামলার বাদী গৃহবধূ বলেন, ‘ঘটনার দিন বিকেলে শিশুসন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় আজাহার মিয়া ও রাজিব মিয়া আমার কক্ষের দরজা খুলতে বলেন। ঘরে অন্য পুরুষ রয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে তাঁরা জোর করে শয়নকক্ষে ঢুকে পড়েন। এ সময় আশপাশের লোকজন জড়ো হলে তাঁরা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁদের সরিয়ে দেন। এরপর শিশুকে জিম্মি ও স্বামীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে ওই দুই ব্যক্তি ধর্ষণের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে কৌশলে ঘর থেকে বেরিয়ে আসি।’
এলাকার একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে কথা হলে তাঁরা বলেন, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা এভাবেই এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন। সন্ধ্যার পর মদ পান করে এলাকায় অপরাধ কর্মকাণ্ড চালান।
বাড়ির মালিক বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তিরা নানাভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করে আসছে। এলাকায় তাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমার বাসার ভাড়াটের সঙ্গে যা হয়েছে, তা শতভাগ সত্য।’
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে এক নারী দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আমরা আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছি।’

বরগুনায় ২০২২ সালে ১২৪ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী। তাঁদের মধ্য ৫৮ জনই অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড বা গ্যাস ট্যাবলেট নামের একপ্রকার কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বরগুনা সদর হাসপাতালের গত এক বছরের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
০১ জুন ২০২৩
সিলেটের ওসমানী নগর উপজেলায় সড়কের পাশ থেকে শিপন আহমদ (২৫) নামের এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে সাদীপুর ইউনিয়নে কেশবখালী নদীর পাড় থেকে তাঁর লাশটি উদ্ধার করা হয়। তবে তাঁর অটোরিকশাটি পাওয়া যায়নি।
৮ মিনিট আগে
হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা না হওয়ায় আব্দুল হান্নানকে আজ বিকেলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে পল্টন থানা-পুলিশ। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন থানার এসআই শামীম হাসান সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
১২ মিনিট আগে
ময়মনসিংহ নগরীতে হেলে পড়া পাঁচতলা ভবনটি পরিদর্শন করেছে সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন। এ সময় দেয়ালে ফাটল দেখা দেওয়ায় ও হেলা পড়ায় ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে হেলে পড়া ভবন, নির্মাণাধীন গ্রিন ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানসহ তিনটি ভবনের মালিককে অনুমোদনসংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ তলব করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেসিলেট প্রতিনিধি

সিলেটের ওসমানী নগর উপজেলায় সড়কের পাশ থেকে শিপন আহমদ (২৫) নামের এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে সাদীপুর ইউনিয়নে কেশবখালী নদীর পাড় থেকে তাঁর লাশটি উদ্ধার করা হয়। তবে তাঁর অটোরিকশাটি পাওয়া যায়নি। শিপনের স্বজন ও পুলিশের ধারণা, অটোরিকশা ছিনতাইয়ের জন্য তাঁকে হত্যা করা হয়।
শিপন আহমদ উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের রাইকধারা (গাংপাড়) গ্রামের আশরাফ আলীর ছেলে। তাঁর একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
পুলিশ জানায়, গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে ভাড়ায় চালিত রেজিস্ট্রেশনবিহীন (পরীক্ষামূলক) সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বের হলে আর বাড়িতে ফেরেননি শিপন। রাত গভীর হলেও শিপনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায় এবং তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
আজ সকাল ৯টার দিকে ওসমানী নগরের সাদীপুর ইউনিয়নের বেগমপুর-চাতলপাড় রাস্তার পাশে কেশবখালী নদীর পাড়ে শিপনের লাশ দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁর লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
ওসমানী নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোরশেদুল আলম ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, চালক শিপনকে হত্যা করে তাঁর অটোরিকশাটি নিয়ে গেছে ছিনতাইকারীরা। এ ঘটনায় পুলিশ অটোরিকশাটি উদ্ধার ও জড়িত ব্যক্তিদের আটকের চেষ্টা করছে। তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সিলেটের ওসমানী নগর উপজেলায় সড়কের পাশ থেকে শিপন আহমদ (২৫) নামের এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে সাদীপুর ইউনিয়নে কেশবখালী নদীর পাড় থেকে তাঁর লাশটি উদ্ধার করা হয়। তবে তাঁর অটোরিকশাটি পাওয়া যায়নি। শিপনের স্বজন ও পুলিশের ধারণা, অটোরিকশা ছিনতাইয়ের জন্য তাঁকে হত্যা করা হয়।
শিপন আহমদ উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের রাইকধারা (গাংপাড়) গ্রামের আশরাফ আলীর ছেলে। তাঁর একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
পুলিশ জানায়, গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে ভাড়ায় চালিত রেজিস্ট্রেশনবিহীন (পরীক্ষামূলক) সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বের হলে আর বাড়িতে ফেরেননি শিপন। রাত গভীর হলেও শিপনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায় এবং তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
আজ সকাল ৯টার দিকে ওসমানী নগরের সাদীপুর ইউনিয়নের বেগমপুর-চাতলপাড় রাস্তার পাশে কেশবখালী নদীর পাড়ে শিপনের লাশ দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁর লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
ওসমানী নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোরশেদুল আলম ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, চালক শিপনকে হত্যা করে তাঁর অটোরিকশাটি নিয়ে গেছে ছিনতাইকারীরা। এ ঘটনায় পুলিশ অটোরিকশাটি উদ্ধার ও জড়িত ব্যক্তিদের আটকের চেষ্টা করছে। তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বরগুনায় ২০২২ সালে ১২৪ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী। তাঁদের মধ্য ৫৮ জনই অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড বা গ্যাস ট্যাবলেট নামের একপ্রকার কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বরগুনা সদর হাসপাতালের গত এক বছরের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
০১ জুন ২০২৩
মামলার বাদী গৃহবধূ বলেন, ‘ঘটনার দিন বিকেলে শিশুসন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় আজাহার মিয়া ও রাজিব মিয়া আমার কক্ষের দরজা খুলতে বলেন। ঘরে অন্য পুরুষ রয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে তাঁরা জোর করে শয়নকক্ষে ঢুকে পড়েন। এ সময় আশপাশের লোকজন জড়ো হলে তাঁরা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁদের সরিয়ে দেন।
৩ মিনিট আগে
হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা না হওয়ায় আব্দুল হান্নানকে আজ বিকেলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে পল্টন থানা-পুলিশ। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন থানার এসআই শামীম হাসান সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
১২ মিনিট আগে
ময়মনসিংহ নগরীতে হেলে পড়া পাঁচতলা ভবনটি পরিদর্শন করেছে সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন। এ সময় দেয়ালে ফাটল দেখা দেওয়ায় ও হেলা পড়ায় ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে হেলে পড়া ভবন, নির্মাণাধীন গ্রিন ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানসহ তিনটি ভবনের মালিককে অনুমোদনসংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ তলব করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির মালিক মো. আব্দুল হান্নানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিদারুল আলম আজ রোববার এ নির্দেশ দেন বলে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) কাইউম হোসেন নয়ন।
হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেটের (রেজিস্ট্রেশন নম্বর) সূত্র ধরে আব্দুল হান্নানকে গতকাল শনিবার গভীর রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আটক করা হয়।
হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা না হওয়ায় আব্দুল হান্নানকে আজ বিকেলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে পল্টন থানা-পুলিশ। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন থানার এসআই শামীম হাসান সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আব্দুল হান্নানকে র্যাব-২ আটক করে পল্টন মডেল থানায় সোপর্দ করে। গত শুক্রবার বেলা ২টা ২৪ মিনিটে পল্টন মডেল থানার বক্স কালভার্ট এলাকায় ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। তিনি বর্তমানে মুমূর্ষু অবস্থায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ওসমান হাদি ও তাঁর সঙ্গে থাকা ব্যক্তি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় যাওয়ার সময় অজ্ঞাত দুই সন্ত্রাসী একটি মোটরসাইকেলে এসে ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে। এতে গুরুতর জখম হন হাদি।
সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে র্যাব-২ জানতে পারে, সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর-ঢাকা মেট্রো ল-৫৪-৬৩৭৫। র্যাব-২ বিআরটিএ (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ) থেকে মালিকানা যাচাই করে মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে চিহ্নিত করে।
এ ঘটনায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন। আব্দুল হান্নান উল্লেখিত ঘটনায় জড়িত আছে সন্দেহে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তাঁর ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে যাচাই-বাছাই অব্যাহত আছে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আব্দুল হান্নানকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির মালিক মো. আব্দুল হান্নানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিদারুল আলম আজ রোববার এ নির্দেশ দেন বলে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) কাইউম হোসেন নয়ন।
হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেটের (রেজিস্ট্রেশন নম্বর) সূত্র ধরে আব্দুল হান্নানকে গতকাল শনিবার গভীর রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আটক করা হয়।
হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা না হওয়ায় আব্দুল হান্নানকে আজ বিকেলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে পল্টন থানা-পুলিশ। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন থানার এসআই শামীম হাসান সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আব্দুল হান্নানকে র্যাব-২ আটক করে পল্টন মডেল থানায় সোপর্দ করে। গত শুক্রবার বেলা ২টা ২৪ মিনিটে পল্টন মডেল থানার বক্স কালভার্ট এলাকায় ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। তিনি বর্তমানে মুমূর্ষু অবস্থায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ওসমান হাদি ও তাঁর সঙ্গে থাকা ব্যক্তি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় যাওয়ার সময় অজ্ঞাত দুই সন্ত্রাসী একটি মোটরসাইকেলে এসে ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে। এতে গুরুতর জখম হন হাদি।
সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে র্যাব-২ জানতে পারে, সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর-ঢাকা মেট্রো ল-৫৪-৬৩৭৫। র্যাব-২ বিআরটিএ (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ) থেকে মালিকানা যাচাই করে মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে চিহ্নিত করে।
এ ঘটনায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন। আব্দুল হান্নান উল্লেখিত ঘটনায় জড়িত আছে সন্দেহে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তাঁর ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে যাচাই-বাছাই অব্যাহত আছে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আব্দুল হান্নানকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

বরগুনায় ২০২২ সালে ১২৪ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী। তাঁদের মধ্য ৫৮ জনই অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড বা গ্যাস ট্যাবলেট নামের একপ্রকার কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বরগুনা সদর হাসপাতালের গত এক বছরের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
০১ জুন ২০২৩
মামলার বাদী গৃহবধূ বলেন, ‘ঘটনার দিন বিকেলে শিশুসন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় আজাহার মিয়া ও রাজিব মিয়া আমার কক্ষের দরজা খুলতে বলেন। ঘরে অন্য পুরুষ রয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে তাঁরা জোর করে শয়নকক্ষে ঢুকে পড়েন। এ সময় আশপাশের লোকজন জড়ো হলে তাঁরা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁদের সরিয়ে দেন।
৩ মিনিট আগে
সিলেটের ওসমানী নগর উপজেলায় সড়কের পাশ থেকে শিপন আহমদ (২৫) নামের এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে সাদীপুর ইউনিয়নে কেশবখালী নদীর পাড় থেকে তাঁর লাশটি উদ্ধার করা হয়। তবে তাঁর অটোরিকশাটি পাওয়া যায়নি।
৮ মিনিট আগে
ময়মনসিংহ নগরীতে হেলে পড়া পাঁচতলা ভবনটি পরিদর্শন করেছে সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন। এ সময় দেয়ালে ফাটল দেখা দেওয়ায় ও হেলা পড়ায় ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে হেলে পড়া ভবন, নির্মাণাধীন গ্রিন ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানসহ তিনটি ভবনের মালিককে অনুমোদনসংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ তলব করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ময়মনসিংহ নগরীতে হেলে পড়া পাঁচতলা ভবনটি পরিদর্শন করেছে সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন। এ সময় দেয়ালে ফাটল দেখা দেওয়ায় ও হেলা পড়ায় ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে হেলে পড়া ভবন, নির্মাণাধীন গ্রিন ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানসহ তিনটি ভবনের মালিককে অনুমোদনসংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ তলব করা হয়েছে।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর গুলকিবাড়ী বাইলেন কাজি অফিসসংলগ্ন এলাকায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) ও জেলা প্রশাসন।
এ সময় মসিকের সচিব সুমনা আল মজিদ জানান, হেলে পড়া ভবন ও নির্মাণাধীন গ্রিন ডেভেলপমেন্টের প্রতিষ্ঠানের ভবন এবং পাশে সম্প্রতি নির্মিত ১৩ তলা ভবনটির মালিকদের ডাকা হয়েছে। এসব ভবন বিল্ডিং কোড মেনে নির্মাণ করা হয়েছে কি না, তা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুমনা আল মজিদ জানান, ভবন তিনটি বিল্ডিং কোড মেনে নির্মাণ করা হয়নি। নির্মাণাধীন গ্রিন ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানের ভবনটিও বিল্ডিং কোড না মেনে পাইলিং করার কারণে পাশের ভবন হেলে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে নির্মাণাধীন ভবনের পাইলিংয়ের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় দেয়ালে ফাটল দেখা দেওয়ায় ও হেলা পড়ায় ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
মসিক সচিব বলেন, গ্রিন ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ২০১৭ সালে তৎকালীন পৌরসভা থেকে ১৩ তলা ভবনের অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী অনুমোদন নেওয়ার তিন বছরের মধ্যে ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করার কথা। কিন্তু এখন যে ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে, এটির অনুমোদনের মেয়াদ প্রায় পাঁচ বছর আগে শেষ হয়ে গেছে। এ কারণে তাদের কাগজপত্রসহ তলব করা হয়েছে।
পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন মসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মিয়া, নকশা অনুমোদন কমিটির সদস্য প্রকৌশলী নেসার আহম্মেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক উম্মে হাবীবা মীরা, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা জুলহাস উদ্দিন, সহকারী পুলিশ সুপার তাহমিনা আক্তার, প্রকৌশলী মোতালেব প্রমুখ।
এদিকে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দেখে তাঁদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা অভিযোগ করেন, ভবন হেলে পড়ার ঘটনায় স্থানীয় লোকজন আতঙ্কিত। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ, নগরীর বেশির ভাগ ভবন বিল্ডিং কোড মেনে নির্মাণ করা হয়নি। সরু রাস্তার পাশে ১৩ থেকে ২০ তলা ভবনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
গ্রিন ডেভেলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের মালিকদের একজন জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মো. কামরুল হাসান মিলন বলেন, ‘আমি প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় আছি। তবে ভবন নির্মাণকাজ দেখভাল করছেন স্বপন নামের একজন। তাঁর সঙ্গে কথা বলুন।’
পরে ভবন নির্মাণের দায়িত্বে থাকা স্বপনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে কল দেওয়া হলে তিনি তা ধরেননি।
অপর দিকে হেলে পড়া ভবনটির মালিকের নাম রিয়াজুল আমিন অরুণ। তিনি লন্ডনপ্রবাসী। তাঁর ভাই ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম লিটন এ তথ্য জানান।
রফিকুল ইসলাম লিটন বলেন, ‘সম্প্রতি ভবনের পাশের স্থানে গ্রিন ডেভেলপমেন্ট নামের প্রতিষ্ঠানটি বিল্ডিং কোড না মেনে বহুতল ভবনের পাইলিংয়ের কাজ শুরু করে। এ কারণে আমাদের পাঁচতলা ভবনটি হেলে পড়েছে। একই সঙ্গে ভবনের দেয়ালেও ফাটলের রেখা পড়েছে। পরে বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসকে জানালে তারা সরেজমিনে এসে বেজমেন্টের কাজ বন্ধ করে দিয়ে আমাদের ভবনের বাসিন্দাদের সরিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত। কখন কী হয়, আল্লাহ ভালো জানেন।’
এর আগে গতকাল শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে হেলে পড়া ভবনটির দেয়ালে ও সামনের অংশের মাটিতে ফাটল দেখা দেয়। এরপরই বিষয়টি টের পেয়ে ভবনের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ঘটনাটি ফায়ার সার্ভিস কর্মীকে জানালে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে হেলে পড়া ভবনটির পাশে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের পাইলিংয়ের কাজ বন্ধ করে দেন। একই সঙ্গে ফায়াস সার্ভিস কর্মীরা হেলে পড়া ভবনের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বাসিন্দাদের সরিয়ে দিয়ে গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন।

ময়মনসিংহ নগরীতে হেলে পড়া পাঁচতলা ভবনটি পরিদর্শন করেছে সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন। এ সময় দেয়ালে ফাটল দেখা দেওয়ায় ও হেলা পড়ায় ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে হেলে পড়া ভবন, নির্মাণাধীন গ্রিন ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানসহ তিনটি ভবনের মালিককে অনুমোদনসংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ তলব করা হয়েছে।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর গুলকিবাড়ী বাইলেন কাজি অফিসসংলগ্ন এলাকায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) ও জেলা প্রশাসন।
এ সময় মসিকের সচিব সুমনা আল মজিদ জানান, হেলে পড়া ভবন ও নির্মাণাধীন গ্রিন ডেভেলপমেন্টের প্রতিষ্ঠানের ভবন এবং পাশে সম্প্রতি নির্মিত ১৩ তলা ভবনটির মালিকদের ডাকা হয়েছে। এসব ভবন বিল্ডিং কোড মেনে নির্মাণ করা হয়েছে কি না, তা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুমনা আল মজিদ জানান, ভবন তিনটি বিল্ডিং কোড মেনে নির্মাণ করা হয়নি। নির্মাণাধীন গ্রিন ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানের ভবনটিও বিল্ডিং কোড না মেনে পাইলিং করার কারণে পাশের ভবন হেলে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে নির্মাণাধীন ভবনের পাইলিংয়ের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় দেয়ালে ফাটল দেখা দেওয়ায় ও হেলা পড়ায় ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
মসিক সচিব বলেন, গ্রিন ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ২০১৭ সালে তৎকালীন পৌরসভা থেকে ১৩ তলা ভবনের অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী অনুমোদন নেওয়ার তিন বছরের মধ্যে ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করার কথা। কিন্তু এখন যে ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে, এটির অনুমোদনের মেয়াদ প্রায় পাঁচ বছর আগে শেষ হয়ে গেছে। এ কারণে তাদের কাগজপত্রসহ তলব করা হয়েছে।
পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন মসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মিয়া, নকশা অনুমোদন কমিটির সদস্য প্রকৌশলী নেসার আহম্মেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক উম্মে হাবীবা মীরা, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা জুলহাস উদ্দিন, সহকারী পুলিশ সুপার তাহমিনা আক্তার, প্রকৌশলী মোতালেব প্রমুখ।
এদিকে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দেখে তাঁদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা অভিযোগ করেন, ভবন হেলে পড়ার ঘটনায় স্থানীয় লোকজন আতঙ্কিত। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ, নগরীর বেশির ভাগ ভবন বিল্ডিং কোড মেনে নির্মাণ করা হয়নি। সরু রাস্তার পাশে ১৩ থেকে ২০ তলা ভবনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
গ্রিন ডেভেলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের মালিকদের একজন জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মো. কামরুল হাসান মিলন বলেন, ‘আমি প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় আছি। তবে ভবন নির্মাণকাজ দেখভাল করছেন স্বপন নামের একজন। তাঁর সঙ্গে কথা বলুন।’
পরে ভবন নির্মাণের দায়িত্বে থাকা স্বপনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে কল দেওয়া হলে তিনি তা ধরেননি।
অপর দিকে হেলে পড়া ভবনটির মালিকের নাম রিয়াজুল আমিন অরুণ। তিনি লন্ডনপ্রবাসী। তাঁর ভাই ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম লিটন এ তথ্য জানান।
রফিকুল ইসলাম লিটন বলেন, ‘সম্প্রতি ভবনের পাশের স্থানে গ্রিন ডেভেলপমেন্ট নামের প্রতিষ্ঠানটি বিল্ডিং কোড না মেনে বহুতল ভবনের পাইলিংয়ের কাজ শুরু করে। এ কারণে আমাদের পাঁচতলা ভবনটি হেলে পড়েছে। একই সঙ্গে ভবনের দেয়ালেও ফাটলের রেখা পড়েছে। পরে বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসকে জানালে তারা সরেজমিনে এসে বেজমেন্টের কাজ বন্ধ করে দিয়ে আমাদের ভবনের বাসিন্দাদের সরিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত। কখন কী হয়, আল্লাহ ভালো জানেন।’
এর আগে গতকাল শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে হেলে পড়া ভবনটির দেয়ালে ও সামনের অংশের মাটিতে ফাটল দেখা দেয়। এরপরই বিষয়টি টের পেয়ে ভবনের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ঘটনাটি ফায়ার সার্ভিস কর্মীকে জানালে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে হেলে পড়া ভবনটির পাশে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের পাইলিংয়ের কাজ বন্ধ করে দেন। একই সঙ্গে ফায়াস সার্ভিস কর্মীরা হেলে পড়া ভবনের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বাসিন্দাদের সরিয়ে দিয়ে গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন।

বরগুনায় ২০২২ সালে ১২৪ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী। তাঁদের মধ্য ৫৮ জনই অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড বা গ্যাস ট্যাবলেট নামের একপ্রকার কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বরগুনা সদর হাসপাতালের গত এক বছরের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
০১ জুন ২০২৩
মামলার বাদী গৃহবধূ বলেন, ‘ঘটনার দিন বিকেলে শিশুসন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় আজাহার মিয়া ও রাজিব মিয়া আমার কক্ষের দরজা খুলতে বলেন। ঘরে অন্য পুরুষ রয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে তাঁরা জোর করে শয়নকক্ষে ঢুকে পড়েন। এ সময় আশপাশের লোকজন জড়ো হলে তাঁরা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁদের সরিয়ে দেন।
৩ মিনিট আগে
সিলেটের ওসমানী নগর উপজেলায় সড়কের পাশ থেকে শিপন আহমদ (২৫) নামের এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে সাদীপুর ইউনিয়নে কেশবখালী নদীর পাড় থেকে তাঁর লাশটি উদ্ধার করা হয়। তবে তাঁর অটোরিকশাটি পাওয়া যায়নি।
৮ মিনিট আগে
হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা না হওয়ায় আব্দুল হান্নানকে আজ বিকেলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে পল্টন থানা-পুলিশ। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন থানার এসআই শামীম হাসান সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
১২ মিনিট আগে