Ajker Patrika

৮ গোলের রোমাঞ্চ, টাইব্রেকার, চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুমিল্লা থেকে
আপডেট : ৩০ মে ২০২৩, ১৯: ৩৫
৮ গোলের রোমাঞ্চ, টাইব্রেকার, চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান

রংহীন প্রথমার্ধটা ছিল একপেশে, আবাহনীর আক্রমণে কোণঠাসা মোহামেডান। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের চিত্রটা পাল্টাল পরতে পরতে। আবাহনীর সঙ্গে যেন একাই খেললেন মোহামেডানের মালিয়ান অধিনায়ক সুলেমান দিয়াবাতে। ম্যাচ কখনো হেলে পড়ল আবাহনীর দিকে, আবার কখনো এগিয়ে গেল মোহামেডান। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ১২০ মিনিটের লড়াইয়ে ৮ গোলের থ্রিলার, সেখান শিরোপার নিষ্পত্তি হলো টাইব্রেকারে। সাম্প্রতিক সময়ে অন্যতম সেরা ম্যাচ দেখল বাংলাদেশের ফুটবল। 

আবাহনী কিংবা মোহামেডান; দুই দলেরই সমর্থকদের আশা ছিল চোখজুড়ানো এক ফাইনাল। কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে দর্শকদের সেই তৃষ্ণাটা পুরোটাই মিটিয়েছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর কাঙ্ক্ষিত দ্বৈরথ। ফেডারেশন কাপের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ফাইনাল উপহার দিয়েছে আবাহনী-মোহামেডান। ১২০ মিনিটে ৪-৪ গোলে সমতায় থাকা ম্যাচ শেষ পর্যন্ত গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। রুদ্ধশ্বাস টাইব্রেকারে আবাহনীকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে ১৪ বছর পর ফেডারেশন কাপ জিতেছে ক্ষুধার্ত মোহামেডান।

এই শিরোপায় ৯ বছরের দীর্ঘ শিরোপা খরাও কেটেছে সাদা-কালো শিবিরের। ২০১৪ সালের স্বাধীনতা কাপের পর এই প্রথম শিরোপা জিতল মোহামেডান। দলকে জিতিয়ে ইতিহাস গড়েছেন মালিয়ান ফরোয়ার্ড সুলেমান দিয়াবাতে। ফাইনালে একাই চার গোল করে শিরোপা থেকে দূরে ঠেলে দিয়েছে আবাহনীকে। ফেডারেশন কাপের ৪৩ বছরের ইতিহাসে ফাইনালে এটিই প্রথম হ্যাটট্রিক।

 ফল দেখে ম্যাচের শুরুটা নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়তে পারেন যে কেউ। মনে হতে পারে হাড্ডাহাড্ডি একটা ম্যাচই হয়েছে শুরুতে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, প্রথম ৪৫ মিনিটে আবাহনীর কাছে পাত্তাই পায়নি মোহামেডান।

ম্যাচে আবাহনীর শুরুটা ছিল আক্রমণাত্মক। মোহামেডান তাদের পাল্টা আক্রমণের চেনা ছকেই শুরু করল। তবে শুরুর পনেরো মিনিটে কোনো পক্ষই পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না।

৮ গোলের ম্যাচে গোলের সূচনাটা করেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। ১৬ মিনিটে এমেকা ওগবাহর থ্রু পাস ধরে বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে জাল খুঁজে নেন ফাহিম। এই গোলের পরই গ্যালারিতে আবাহনী সমর্থকেরা পটকা ফোটাতে শুরু করেন!

আবাহনীকে ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মতো এগিয়ে দেন কোস্টারিকান ফরোয়ার্ড দানিয়েল কলিন্দ্রেস। ৪৩ মিনিটে হৃদয়ের লং পাস নিয়ন্ত্রণ নেওয়া কলিনদ্রেসকে আটকাতে পারেননি মোহামেডানের ডিফেন্ডার হাসান মুরাদ। ডান পায়ের দারুণ শটে সুজনকে এবার পরাস্ত করেন কোস্টারিকার ফরোয়ার্ড।

প্রথমার্ধে কোণঠাসা মোহামেডানকে দ্বিতীয়ার্ধে জাগিয়ে তোলেন সুলেমান দিয়াবাতে। বিরতি থেকে ফিরে দ্বিতীয় মিনিট থেকেই আক্রমণে মোহামেডান। বলতে গেলে ম্যাচে এটাই তাদের প্রথম সুযোগ। উজবেক মিডফিল্ডার মুজাফফরজন মুজাফফরভের ফ্রিকিক মানবদেয়ালে প্রতিহত হলে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন সুলেমান দিয়াবাতে। মোহামেডান অধিনায়কের শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান আবাহনীর এক খেলোয়াড়। ৫২ মিনিটে আবারও সুযোগ মোহামেডানের। এবার ইমানুয়েল সানডের শট চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে।

তবে আক্রমণাত্মক ফুটবলে মাত্র চার মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোলে মোহামেডানকে সমতায় ফেরান সুলেমান দিয়াবাতে। ৫৬ মিনিটে বক্স বরাবর কামরুল ইসলামের শটে বল বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হন রহমত মিয়া। ফাঁকায় বল পান দিয়াবাতে। তাঁর প্লেসিং শট আবাহনী গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেলকে ফাঁকি দিয়ে জড়ায় জালে।

প্রথম গোলের চার মিনিট পর আবারও সুলেমান জাদু। ৬০ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে মুজাফফরভের শট ফিস্ট করে ফেরান আবাহনী গোলরক্ষক সোহেল। তাঁর ফিস্টে বক্সের বাঁ প্রান্তে বল পান জাফর ইকবাল। জাফরের শট থেকে লাফিয়ে হেডে বল জালে জড়িয়ে মোহামেডান সমর্থকদের উল্লাসে ভাসান মালিয়ান ফরোয়ার্ড।

সমতা ফিরতেই জমে ওঠে ম্যাচ। পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে আবাহনীর আক্রমণও। ৬৫ মিনিটে এমেকা ওগবাহর হেডে বল ফেরে ক্রসবারে লেগে। পরের মিনিটেই গোল করে সেই আক্ষেপ মেটান আবাহনীর নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড। ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের শট ঝাঁপিয়ে ফিস্ট করেছিলেন মোহামেডান গোলরক্ষক সুজন হোসেন। সুযোগের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন ওগবাহ। সুজনের গ্লাভসে লেগে ফিরে আসা বলে আলতো টোকায় বল জড়ান জালে। 
মোহামেডানকে আবারও সমতায় ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিলেন সুলেমান দিয়াবাতে। সুযোগ ছিল হ্যাটট্রিকেরও। ৭৫ মিনিটে জাফর ক্রস থেকে সুলেমানের হেড সাইডবার দিয়ে চলে যায় বাইরে।

কিন্তু ৮৩ মিনিটে সুলেমানকে আর আটকাতে পারেনি আবাহনী। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের রক্ষণ ভেঙে ঠিকই তুলে নিয়েছেন হ্যাটট্রিক। খেলায় ফেরান প্রাণ। কামরুল ইসলামের কর্নার থেকে সুলেমানের হেড দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না আবাহনী গোলরক্ষকের। 
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের অন্তিম সময়ে ম্যাচটা প্রায় জিতেই নিয়েছিল আবাহনী। কিন্তু অধিনায়ক রাফায়েল অগুস্তোর শট আটকে দেন বদলি নামা ডিফেন্ডার রাজীব হোসেন। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়ের প্রথম আক্রমণটা মোহামেডানের। ৯২ মিনিটে ইমানুয়েল সানডের শট ঠেকিয়ে দেন আবাহনী গোলরক্ষক। অবদান কম নয় মোহামেডান গোলরক্ষক সুজন হোসেনেরও। মাত্র এক মিনিটে দুটি দারুণ সেভে দলকে রক্ষা করেন মোহামেডান গোলরক্ষক। ৯৫ মিনিটে রাফায়েল অগুস্তোর শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান সুজন। দানিয়েল কলিন্দ্রেসে কর্নার থেকে বদলি ডিফেন্ডার আসাদুজ্জামান বাবলুর হেডও একইভাবে ঠেকিয়ে দেন সুজন।

অতিরিক্ত সময়ের যোগ করা সময়ে বড় ভুল করে বসেন আবাহনী গোলরক্ষক সোহেল। বল পায়ে ছুটতে থাকা সুলেমান দিয়াবাতেকে ফেলে দেন আবাহনী গোলরক্ষক, পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি আলমগীর সরকার। স্পট কিকে নিজেই শট নিয়ে প্রথমবারের মতো মোহামেডানকে এগিয়ে দেন মালিয়ান ফরোয়ার্ড।

ম্যাচ শেষ হওয়ার চার মিনিট আগে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খায় মোহামেডান। পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলতে থাকা গোলরক্ষক সুজন চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন কাঁদতে কাঁদতে। সুজনের বদলি হিসেবে মাঠে নামেন আহসান হাবিব।

মোহামেডানের দুর্বলতাকে দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে মাত্র তিন মিনিট আগে অসাধারণ এক গোলে আবাহনীকে ম্যাচে ফেরান রহমত মিয়া। ১১৭ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে রহমত মিয়ার বুলেট গতির শট ঝাঁপিয়েও ঠেকাতে পারেননি বদলি গোলরক্ষক আহসান। শিরোপার নিষ্পত্তির জন্য খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।

টাইব্রেকারে প্রথম শটে মোহামেডানকে এগিয়ে দেন সুলেমান দিয়াবাতে। আবাহনীর হয়ে প্রথম শট নিতে আসেন রাফায়েল অগুস্তো, কিন্তু নষ্ট করেন শট। মোহামেডানের হয়ে একমাত্র শটটি নষ্ট করেন শাহরিয়ার ইমন। আবাহনীর হয়ে দ্বিতীয় শটটি নষ্ট করেন দানিয়েল কলিন্দ্রেস। শেষ শটে কামরুল ইসলাম বল জালে জড়ালে দীর্ঘ অপেক্ষার পর শিরোপার উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন মোহামেডানের সমর্থকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারত ম্যাচে দেরি করায় বাফুফেকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মোরসালিনের গোলে ২২ বছর পর ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোরসালিনের গোলে ২২ বছর পর ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ আয়োজন করে আরও একবার জরিমানার মুখে পড়ল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা ১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ড দেরিতে শুরু হওয়ায় বাফুফেকে ১২৫০ ডলার জরিমানা করেছে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি)। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। গত ১৭ ডিসেম্বর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এএফসির শৃঙ্খলা ও নীতি কমিটি।

গত ১৮ নভেম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি নিয়মরক্ষার হলেও উন্মাদনার কমতি ছিল না। ২২ বছর পর ভারতকে হারানোর স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ৷ একমাত্র জয়সূচক গোলটি আসে ম্যাচের প্রথমার্ধে শেখ মোরসালিনের পা থেকে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে সময়মতো খেলা মাঠে গড়াতে পারেননি রেফারি।

একই কারণে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকেও এক হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর এই অপরাধ দুবার করায় বাংলাদেশের জরিমানার অঙ্ক বেশি ধরা হয়েছে। এর আগে গত জুনে ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতে দুই মিনিট বিলম্ব হওয়ায় দেড় হাজার ডলার জরিমানা করা হয়।

এএফসির শৃঙ্খলা নীতিমালার ১১.৩ ধারা অনুযায়ী, ৩০ দিনের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে হবে দুই ফেডারেশনের। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ ৩১ মার্চ সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে। সিঙ্গাপুর ইতোমধ্যে ১১ পয়েন্ট নিয়ে এশিয়ান কাপে খেলা নিশ্চিত করেছে। ৫ পয়েন্ট নিয়ে চার দলের মধ্যে ‘সি’ গ্রুপে বাংলাদেশের অবস্থান তিনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোস্তাফিজদের বিপক্ষে খরুচে বোলিংয়ে তাসকিনের ৩ উইকেট

ক্রীড়া ডেস্ক    
মোস্তাফিজুর রহমানের দু্বাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ছবি: ফেসবুক
মোস্তাফিজুর রহমানের দু্বাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ছবি: ফেসবুক

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক লিগ টি-টোয়েন্টি যেন বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের মিলনমেলা। সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ—বাংলাদেশের তিন তারকা ক্রিকেটার খেলছেন এখন আমিরাতের এই লিগে। কদিন আগে সাকিব-মোস্তাফিজের একটি ছবি ‘দ্য বাংলা’ ক্যাপশনে পোস্ট করেছিল সাকিবের দল এমআই এমিরেটস। আজ দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছেন তাসকিন-মোস্তাফিজ।

বাংলাদেশের তিন তারকা সাকিব, তাসকিন, মোস্তাফিজ এবারই প্রথমবারের মতো আইএল টি-টোয়েন্টিতে খেলছেন। এই তিন বাংলাদেশির মধ্যে মোস্তাফিজ নিয়মিত বিরতিতে উইকেট নিচ্ছেন। এদিকে তাসকিন উইকেট তেমন পাচ্ছেন না। উপরন্তু মুক্ত হস্তে রান বিলিয়ে দিচ্ছেন। দুবাইয়ে আজ মোস্তাফিজের দুবাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন ৩ উইকেট হলেও ১০ ইকোনমিতে বোলিং করেছেন।

দুবাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শারজা ওয়ারিয়র্সের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। দলীয় ৩ রানে ভেঙে যায় দুবাই ক্যাপিটালসের উদ্বোধনী জুটি। ইনিংসের পঞ্চম বলে দুবাইয়ের ওপেনার শায়ান জাহাঙ্গীরকে (১) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রাজা। দ্বিতীয় উইকেটে এরপর ৩১ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন জর্ডান কক্স ও সেদিকউল্লাহ আতাল। ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে কক্সকে (২৮) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন তাসকিন।

দুবাই ক্যাপিটালসের ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৭ রানের জুটি গড়েছেন কক্স ও আতাল। আরেকটি চল্লিশোর্ধ্ব রানের জুটিতেও অবদান রয়েছে আতালের। চতুর্থ উইকেটে আফগানিস্তান দলের সতীর্থ মোহাম্মদ নবির সঙ্গে ২৬ বলে ৪২ রানের জুটি গড়তে অবদান রেখেছেন আতাল। ওপেনিংয়ে নামা আতাল আউট হয়েছেন পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে। ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আতালের উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। ৪৪ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৬ রানের ইনিংস খেলেছেন আফগান এই ব্যাটার। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮০ রান করে দুবাই ক্যাপিটালস। দুবাইয়ের ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৬ রান এসেছে আতালের ব্যাট থেকে।

শারজা ওয়ারিয়র্সের তাসকিন ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। যার মধ্যে ইনিংসের শেষ ওভারে ১২ রান খরচ করে পেয়েছেন ১ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন রাজা, মাথিসা পাতিরানা ও আদিল রশিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কলম্বিয়ায় ফুটবল ম্যাচে সহিংসতায় আহত ৫৯

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৩৭
কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি
কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি

লাতিন আমেরিকার ফুটবলে সহিংসতা নতুন কিছু নয়। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকাতেই ঘটে মারামারির ঘটনা। স্থানীয় টুর্নামেন্টে সহিংসতার কারণে তো প্রায়ই খবরের শিরোনামে আসে লাতিন আমেরিকার ফুটবল। কলম্বিয়ায় এক ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

কলম্বিয়ার মেডেলিন শহরের আতানাসিও জিরারদোত স্টেডিয়ামে পরশু রাতে কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হয়েছিল দেপোর্তিভো ইন্দিপেন্দিয়েন্তে-আতলেতিকো ন্যাশনাল। ১-০ গোলে আতলেতিকো ন্যাশনালের জয়ের পরই ভক্ত-সমর্থকেরা মাঠে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করেন। আতশবাজি-আগুন নিয়ে এমনভাবে হামলা চালিয়েছিলেন ভক্তরা, যেটা সামাল দিতে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছে। সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কলম্বিয়ার স্থানীয় পত্রিকা এল কলোম্বিয়ানোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মাঠের কিছু অংশে আগুন ধরানো হয়েছে। উপড়ে ফেলা হয়েছে অনেক আসন। গ্যালারিতে আতশবাজির ধোঁয়ার কারণে ম্যাচ শুরু হতেও দেরি হয় ১৪ মিনিট।

মেডেলিনের মেয়র ফেদেরিকো গুতিয়েরেস কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালে সহিংস ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। গুতিয়েরেস বলেন, ‘যারা স্টেডিয়ামে হামলা, ধ্বংসযজ্ঞ বা ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে, তাদের প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে। সবাই মাঠে বসে খেলা উপভোগ করতে পারবেন। হাতে গোনা কয়েকজনের জন্য পরিবেশ নষ্ট হবে, এমনটা তো হতে দেওয়া যাবে না। বছরের পর বছর ধরে আমরা পুরো লাতিন আমেরিকায় শান্তিপূর্ণ ফুটবলের মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছি।’ পুলিশ কমান্ডার উইলিয়াম কাস্তানো বলেন, স্টেডিয়ামে দর্শকদের কাছ থেকে অস্ত্র ও আতশবাজি জব্দ করা হয়েছে। ১২০ কেজির বেশি পাইরোটেকনিক (বিস্ফোরণের প্রভাব তৈরির মতো রাসায়নিক বস্তু) ছিল সেখানে।

দেপোর্তিভো ইন্দিপেন্দিয়েন্তে-আতলেতিকো ন্যাশনাল কলম্বিয়া কাপ ফাইনালের প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হয়েছে। পরশু রাতে দ্বিতীয় লেগটা হয়ে যায় শিরোপা নির্ধারণী। দুই লেগ মিলিয়ে ১-০ গোলে শিরোপা জিতেছে আতলেতিকো ন্যাশনাল। কিন্তু মেডেলিন শহরের আতানাসিও জিরারদোত স্টেডিয়ামে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় আতলেতিকো ন্যাশনালের ম্যাচপরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, শিরোপা নিয়ে উদ্‌যাপন—কিছুই করা সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টনে সোনার লড়াইয়ে বাংলাদেশের জুমার-ঊর্মি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মিশ্র দ্বৈতে ফাইনালে উঠেছেন জুমার-ঊর্মি। ছবি: ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন
মিশ্র দ্বৈতে ফাইনালে উঠেছেন জুমার-ঊর্মি। ছবি: ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন

ইউনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জ টুর্নামেন্টে মিশ্র দ্বৈত বিভাগে ফাইনালে উঠেছেন বাংলাদেশের আল আমিন জুমার ও ঊর্মি আক্তার। আজ সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের কুনলাপাথ লোথোং ও সারিসা জানপেং জুটিকে হারিয়েছেন ২১-১১ ও ২১-১৪ গেমে। পদক তো নিশ্চিত হয়েছে আগে, জুমার-ঊর্মি এবার দেখাচ্ছেন সোনা জয়ের ঝিলিকও। ফাইনালে কাল মালয়েশিয়ার দাতু আনিফ ইসাক দাতু আসরা ও ক্লারিসা সানের মুখোমুখি হবেন তারা।

পল্টনের শহীদ তাজউদ্দিন ইনডোর স্টেডিয়ামে সকালটাও অন্যরকম ছিল জুমার-ঊর্মির। কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের স্বস্তিক মাথারাসান-কীর্তি মাঞ্চালাকে তিন সেটের লড়াইয়ে হারিয়েছেন ২১-১৬, ১৯-২১ ও ২১-১৮ গেমে। প্রথম সেট খানিকটা সহজে জিতলেও দ্বিতীয় সেটে হারতে হয়। তৃতীয় সেটে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে নিশ্চিত করেন ব্রোঞ্জ পদক।

রাতে সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের জুটিকে পাত্তাই দিলেন না জুমার-ঊর্মি। প্রথম সেটে একটা সময় অবশ্য পিছিয়ে ছিলেন ৫-৩ পয়েন্টে। সেখান থেকে অনবরত পয়েন্ট তুলতে থাকেন জুমার। শেষ দিকে ঊর্মিও দেখান তাঁর দাপট। দ্বিতীয় সেটে শুরুতেই আধিপত্য দেখাতে থাকে বাংলাদেশের জুটি। নিয়ে নেন বড় ব্যবধানের লিড। যা পরে আর ছোট করতে পারেননি থাইল্যান্ডের শাটলাররা।

ফাইনালে উঠে জুমার বলেন, ‘ফাইনাল নিয়ে প্রত্যাশা অবশ্যই ভালো খেলার চেষ্টা করব। বাকিটা আল্লাহ ভরসা, জানিনা কি হবে। দেখা যাক। আগে যে রেজাল্টগুলো আমরা আশাও করতে পারতাম না, এখন বাংলাদেশ অন্যান্য বারের মতো হচ্ছে না যে মানে বাংলাদেশ আসছে আর হেরে যাচ্ছে—এরকম হচ্ছে না। প্রত্যেকটা টিমই আমাদের লড়াই করে হেরেছে।’

জুমারের সঙ্গে বোঝাপড়া নিয়ে ঊর্মি বলেন, ‘সকালেই আমি বলেছিলাম, আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। সেই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ফাইনাল নিশ্চিত করেছি। এবার সোনা জিততে চাই। জুমারের সঙ্গে ছয়-সাত বছর ধরে জুটি বেঁধে খেলছি। যেহেতু অনেকদিন ধরে খেলছি, সেহেতু আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা ভালো। আমরা এর আগেও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে পদক জিতেছি।’

এর আগে একক ইভেন্টে কেবল হতাশাই উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের শাটলাররা। দ্বৈতে গতকাল কোয়ার্টার ফাইনালে কেউই জয়ের হাসি হাসতে পারেননি। মিশ্র দ্বৈতে জুমার-ঊর্মি ফুটলেন আশার আলো হয়ে। রুপা নিশ্চিত করে লক্ষ্য এবার সোনার পদক গলায় ঝুলানো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত