হাত-পা জ্বালাপোড়া করা খুব স্বাভাবিক অভিযোগ। নারীদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ আসে বেশি। এ জন্য একে ভিটামিনের অভাব বা নার্ভের অসুখ মনে করে দেওয়া হয় ভিটামিন বি। তবে একে এত হালকাভাবে দেখা ঠিক নয়।
হাত-পা জ্বালাপোড়া করা কোনো নির্দিষ্ট রোগ নয়; বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটি রোগের লক্ষণ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই উপসর্গ দেখা দিতে পারে স্নায়ুর ক্ষতির কারণে। আর তা হতে পারে সাধারণত ডায়াবেটিসের জন্য। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি হয়। এর অর্থ হলো, রক্তের সুগার অনেক দিন ধরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রয়েছে। আরেকটি কথা, ডায়াবেটিসের ওষুধ খেলে ভিটামিন ‘বি ১২’-এর ঘাটতি হয়। তাই এর মান রক্তে মেপে কম হলে সাপ্লিমেন্ট নিতে হয়।
নিউরোপ্যাথির লক্ষণ
শুরুতে পা ঝিন ঝিন, তারপর জ্বালা, পায়ের পাতার তলায় কেউ যেন মরিচের গুঁড়া লাগিয়েছে—এমন অনুভূতি হওয়া, রাতে ঘুমাতে না পারা, ডায়াবেটিসের কারণে হলে পা অসাড় হয়ে যাওয়ার অনুভূতি, পায়ে তীক্ষ্ণ জ্বলুনি, পিন বা সুচ ফোটানোর মতো ব্যথা উপসর্গ—সাধারণত এমন হতে পারে।
পা জ্বালা হলে কেউ ঠান্ডা জল দেন। অনেকে ভিটামিন সেবন করেন। কিন্তু ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি হলে যেতে হবে চিকিৎসকের কাছে। রক্তের গ্লুকোজ মেপে একে নিয়ন্ত্রণে আনতে চিকিৎসকের পরামর্শ ও সহায়তা দরকার।
জ্বালাপোড়া বা নিউরোপ্যাথি কেন হয়
- মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে হতে পারে অ্যালকোহলিক নিউরোপ্যাথি।
- ভিটামিন বি ৬, বি ৯ এবং বি ১২ ঘাটতি হলেও হতে পারে নিউরোপ্যাথি।
- হাইপ থাইরয়েডিজম বা থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি হলে হতে পারে নিউরোপ্যাথি।
- কিছু সংক্রামক রোগের কারণে দেখা দিতে পারে এই লক্ষণ। যেমন লায়মে ডিজিজ, এইচআইভি, কিডনি রোগে পা ফোলা, অসাড় ভাব আর পায়ে জ্বলুনি হতে পারে।
- মানসিক চাপের কারণেও পায়ে জ্বলুনি হতে পারে।
- যক্ষ্মা রোগের কারণেও পায়ে জ্বলুনি হতে পারে। সে জন্য যক্ষ্মার ওষুধের সঙ্গে দেওয়া হয় ভিটামিন পাইরিডক্সিন।
- রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা সরাইটিক আর্থ্রাাইটিসও হতে পারে পা জ্বলুনির কারণ।
- কেমোথেরাপির জন্যও দেখা দিতে পারে এই লক্ষণ।
জানা থাকা ভালো, স্নায়বিক কারণে পায়ের জ্বলুনি শুরু হয় পায়ের পাতায়, এরপর তা যেতে থাকে পায়ের আঙুল, গোড়ালি, এরপর আরও ওপরে উঠতে থাকে।
তাই পায়ে জ্বালাপোড়া করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে দেরি না করাই ভালো।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে