জাহীদ রেজা নূর

আমাদের অলক্ষ্যেই চারদিকের সবকিছু যে দ্রুত পরিবর্তিত হয়ে গেছে এবং যাচ্ছে, সেটা আমরা এখনো খুব একটা বুঝে উঠতে পারছি না। কত দ্রুত এক একটা ইস্যু আসছে, তা নিয়ে মাঠ গরম হচ্ছে, তারপর নতুন কোনো ইস্যু এসে নিয়ে নিচ্ছে তার স্থান, সেটা আমরা ঠিকভাবে ধরতে পারছি কি? কখনো কোনো মতলবি কারবার দিয়ে মানুষকে ভোলানো হচ্ছে, কখনো সরল কোনো ঘটনাকে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে মতলবি কারবার বলে। মূলত যে সময়টা আমরা পার করছি, তা প্রচণ্ড রকম অস্থির একটা সময়।
রাজনীতিটা যে আদর্শস্থানীয় মানুষের হাত থেকে টাকাওয়ালা লোকের হাতে চলে গেছে, সেটা আমরা সাদা চোখেই দেখতে পাই। সংসদে আইনজীবীর সংখ্যা কমতে কমতে তলানিতে এসে ঠেকেছে। সে জায়গা ভরাট করার চেষ্টা করছেন ধনপতিরা এবং সেটা ঘটছে রাজনৈতিক দলের নীতিনির্ধারকদের আশীর্বাদেই। এখন এমন এক অবস্থা দাঁড়িয়েছে, যাঁরা নির্বাচনে মনোনয়ন পান, তাঁদের মধ্যে খুব কমসংখ্যক প্রার্থীই আছেন, যাঁরা আদর্শকে পুঁজি করে নির্বাচনী বৈতরণি পার হয়ে আসতে পারবেন। টাকা আর পেশিশক্তির মিলনে যে রাজনীতি শুরু হয়েছে, তা আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে, কেউ জানে না।
যে যার শ্রেণির স্বার্থ দেখবে, এটা নতুন কোনো কথা নয়। ফলে সংসদে শিল্পপতিদের সংখ্যা বাড়লে তাতে ব্যবসা-বাণিজ্যের রমরমা হবে বটে, কিন্তু তা হয়ে ওঠে সাধারণ ভোটারের সঙ্গে সম্পর্কহীন কাণ্ড-কারখানা। ফলে সিন্ডিকেট যদি গড়ে ওঠে, মালিক সমিতি যদি ধর্মঘট করে বসে, কিংবা ধর্মঘটে যান শ্রমিকেরা, তাহলে দেখা যাবে এই ধনী মানুষেরা কিংবা তাদের পোষ্যপুত্ররা সাধারণ মানুষের বিপরীতে
অবস্থান নিচ্ছে। কেন? কারণ আর কিছু নয়। তারাই মালিক, তারাই শ্রমিকনেতা, তারাই চালাচ্ছে সিন্ডিকেট।
রাজনীতির কাছে হতাশ হয়ে পড়ছে মানুষ এবং হয়ে পড়ছে অসহায়। বুঝতে পারছে, আসলে জনগণের সেবার জন্য যে রাজনীতি, তার এপিটাফ প্রায় লেখা হয়ে গেছে। যে গণতন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে উচ্চ স্বরে, সেই গণতান্ত্রিক আচরণের বড্ড অভাব এই রাজনীতিতে। হ্যাঁ, শুধু সরকারি দলের কথা বলা হচ্ছে না, সামগ্রিকভাবেই গণতন্ত্র আজ যেকোনো দলের আদর্শের জায়গা থেকে নির্বাসিত।
সরকারি কিংবা বিরোধী দলের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের কথাবার্তা লক্ষ করুন। মাঝে মাঝেই কৌতুকের খোরাক তাতে পেয়ে যাবেন। একসময় মনে হবে, আমরা বুঝি ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’কেই রাজনৈতিক জীবনের অন্যতম আদর্শে পরিণত করেছি। উদাহরণ? ঢের আছে। এই তো, এই শনিবারের পত্রিকা থেকে একই রকম দুটো উদাহরণ দিচ্ছি। নাটোর উপশহর মাঠে জেলা বিএনপির তৈরি করা মঞ্চ ভাঙচুর করা হয়েছে এবং তাতে আগুন দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের তির ছুটে গেছে আওয়ামী লীগের দিকে। আওয়ামী লীগ তৎক্ষণাৎ বলে দিয়েছে, বিএনপি নিজেরাই নিজেদের মঞ্চ ভাঙচুর করেছে। কে বলেছেন কথাটা? বলেছেন আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। নাম শরিফুল ইসলাম রমজান।
আপনার নিশ্চয়ই হাসি পেল খবরটা পড়ে?
আপনি নিশ্চয়ই নিজেই বুঝে নিয়েছেন, কী ঘটেছিল সেখানে। তবে পুরো হাসি হাসবেন না। বিপরীত দিক থেকেও হাসির খোরাক পাবেন। রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীতে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে সাংবাদিকদের বেদম মারধরের ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি বলছে, সরকারের দালালেরা গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। এ জন্য নাকি আওয়ামী লীগ দায়ী। বিএনপির এ রকম একটি মাহফিলে সরকারের চরেরা এসে সাংবাদিকদের পিটিয়ে গেল, এ কথাও বিশ্বাস করতে হবে? কথাগুলো কিন্তু বেরিয়েছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কণ্ঠ থেকে!
রাজনীতির শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্বরাই নানা রকম মন্তব্য করে নিজেদের খেলো প্রতিপন্ন করার জন্য যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। আর যা-ই হোক, এটাকে সুস্থ ধারা বলা যাচ্ছে না।
আর ছাত্ররাজনীতি? এ নিয়ে যা হচ্ছে, তার বিবরণ তো পত্রিকার পাতায় দৃশ্যমান। জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে ছাত্ররাজনীতির একটা সংযোগ থাকতেই পারে। কিন্তু সেটা তো কখনোই লেজুড়বৃত্তি নয়। কোনো ভুল সংকেত যদি আসে রাজনৈতিক দলের দিক থেকে, তাহলেও ছাত্ররা সেটাকে মান্য করে চললে তা তো শিরদাঁড়াহীনতা ছাড়া আর কিছুই নয়। সত্যের পক্ষে থাকতে হবে—এই আপ্তবাক্যটি দিনে দিনে তার কার্যকারিতা হারিয়েছে।
ছাত্ররাজনীতি কতটা ফ্রাঙ্কেনস্টাইনে পরিণত হয়েছে, সেটা দেখার জন্য শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গত কয়েক মাসে ঘটা ঘটনাগুলোর দিকে চোখ রাখাই যথেষ্ট।
২. শিল্পের যেমন বিমানবীকরণ হয়েছিল ইতিহাসের একটা সময়, তার ঠিক বিপরীত ঘটনা ঘটছে প্রযুক্তিতে অনেকটাই পরিবর্তিত হয়ে যাওয়া সংস্কৃতিক্ষেত্রে। সেটাও কি আমরা সব সময় ঠিকভাবে দেখতে পাচ্ছি? রুচির সংকট নিয়ে যে কথাবার্তা হচ্ছে আজকাল, তা মিথ্যেও নয়, নতুনও নয়। এই রুচির সংকট কি কখনো দূর হয়েছিল জীবন থেকে? নাকি সুরুচি আর রুচিহীনতা পাশাপাশি হেঁটেছে অনেকটা পথ? এখনো হাঁটছে? সুরুচির প্রশ্নটি জীবন থেকে ‘নেই’ করে দেওয়া যায় না ঠিকই, কিন্তু নতুন সময়ের বাস্তবতা বুঝেই প্রশ্নটি নিয়ে নাড়াচাড়া করতে হয়।
আমরা যে সংস্কৃতির কথা জেনে এসেছি, তা চর্চা ও শ্রমসাধ্য ব্যাপার। সাধনা ছাড়া কলা সৃষ্টি হয় না। সাধনা শিল্পীকে অন্য মানুষের কাছ থেকে আলাদা করে। যে লোক-সংস্কৃতির কথা আমরা বলি, সেটাও হাজার বছরের শ্রম, ঘাম ও সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমেই প্রস্ফুটিত হয়। সংস্কৃতির উচ্চ এবং নিম্ন বলে কিছু আছে বলে আমি অন্তত মানি না। সৃজনশীলতা লোকদেখানো কোনো বস্তু নয় যে লোকে খুশি হলেই তার পূর্ণতা; বরং নিজেকে সার্বিকভাবে খুশি করার একটা চিন্তা থাকতে হয় এবং তাতে থাকে সার্বিক আনন্দ।
যে কেউ যা কিছু করল আর সেটা শিল্প হয়ে গেল, তা তো নয়। বেসুরো গলায় গান করলে সেটার সমালোচনা করা যাবে না কেন? সমালোচনা করলেই কটাক্ষ করা হবে কেন? আবার ভিন্নভাবে বললে, সমালোচনা করার সময় একই অন্যায়ের জন্য শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে ছাড় দেওয়া হবে কেন? থাপ্পড়টা কেন পড়বে শক্তিহীন ব্যক্তির গালে?
প্রশ্নগুলো এড়ানো যাবে না।
আরও একটি কথা মনে রাখতে হবে। যুগ পাল্টেছে। কারও হাতে একটা স্মার্টফোন থাকলেই সে নিজেই হয়ে যেতে পারে অভিনয়শিল্পী, সংগীতশিল্পী, আবৃত্তিশিল্পী, পরিচালক। যে কেউ যেকোনো বিষয়ে ভিডিও করে নিজেকে গণমাধ্যমের স্বজন দাবি করতে পারে। এসব কি আর ঠেকানো যাবে? একেবারে বেসুরো কণ্ঠে গান করার প্রতিকার তো পুলিশের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে গান বন্ধ করা নয়। সেটা কজনের সঙ্গে করবে পুলিশ? মূলত এগুলো না শোনাই হলো প্রতিকারের উপায়। কিন্তু এই বেসুরো শিল্পীই যদি ভিডিওর ক্যারিশমায় দর্শক-শ্রোতা খুঁজে পায়, তাহলে তাকে প্রতিহত করবেন কী দিয়ে? ভালো মানের সংস্কৃতি নির্মাণ করেই তো প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হবে। সেটা কি হচ্ছে?
আমরা মাঝে মাঝে ভুলে যাই, সংস্কৃতিক্ষেত্রটি যেমন কারও মা-বাবার সম্পত্তি নয়, তেমনি এ ক্ষেত্রটি এককভাবে কেউ নষ্ট করে দিতে
পারে না। একটি রাষ্ট্রকে অন্যের কাছে পরিচিত করে তোলার সবচেয়ে সূক্ষ্ম অথচ সহজ মাধ্যম হচ্ছে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। বেঁচে থাকার আনন্দময় পথ অন্বেষণ করাও তো সংস্কৃতির কাজ।
আচারে-ব্যবহারে থাকতে হবে তার প্রকাশ। যে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমরা গৌরব করি, তারই সেরা ফসলের একটি ছিল নাটক। সেই নাটকের হাল আজ কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে, সে বিষয়ে ভাবতে হবে। কারা নাটককে বিপন্ন করল, কারা চলচ্চিত্র অঙ্গনকে প্রায় দর্শকশূন্য করে দিল, কারা শুধু অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকল এবং নিজেদের শিশু হিসেবে ঘোষণা করে রাষ্ট্রের কাছে নিরাপদ আশ্রয় চাইল, নিজেরা বেড়ে ওঠার চেষ্টা করল না, সেটাও কি আলোচনায় আসতে হবে না?
৩. একটি ভয়ংকর সত্য হলো, বাঙালি যেভাবে লড়তে শিখেছে, যেভাবে প্রতিবাদ করতে শিখেছে, সেভাবে শাসন করতে শেখেনি। ইতিহাস সাক্ষী, অন্যের হাতে শাসনভার তুলে দিয়ে দিব্যি আরামে কালাতিপাত করতে চেয়েছে। ফলে ‘ভেঙে আবার গড়তে’ পারার জাদুমন্ত্রটা আমাদের শেখা হয়নি। তাই চারদিকে ভাঙনের যত শব্দ শুনি, তার এক ভাগও গড়ে তোলার তাগিদ পরিলক্ষিত হয় না।
মাত্র দুটো সেক্টরের কথা বললাম, রাজনীতি আর সংস্কৃতি। অধরা রয়ে গেল অন্য সেক্টরগুলো। সেসব জায়গাতেও যে পেশিশক্তি আর ক্ষমতার আস্ফালন দেখতে পাবেন, সে ব্যাপারে আমার অন্তত কোনো সন্দেহ নেই। একটা ভয়ংকর সময় পার করছি আমরা। গন্তব্য এতটাই অবোধ্য যে কবি বিষ্ণু দের ভাষায় বলতে হয়, ‘এ নরকে মনে হয় আশা নেই।’
কবি কোন সময় কাকে উদ্দেশ করে কথাগুলো বলেছেন, তা এখানে আলোচ্য নয়, আলোচ্য বিষয় হলো, আমরা কি সেদিকেই যাচ্ছি?
জাহীদ রেজা নূর, উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

আমাদের অলক্ষ্যেই চারদিকের সবকিছু যে দ্রুত পরিবর্তিত হয়ে গেছে এবং যাচ্ছে, সেটা আমরা এখনো খুব একটা বুঝে উঠতে পারছি না। কত দ্রুত এক একটা ইস্যু আসছে, তা নিয়ে মাঠ গরম হচ্ছে, তারপর নতুন কোনো ইস্যু এসে নিয়ে নিচ্ছে তার স্থান, সেটা আমরা ঠিকভাবে ধরতে পারছি কি? কখনো কোনো মতলবি কারবার দিয়ে মানুষকে ভোলানো হচ্ছে, কখনো সরল কোনো ঘটনাকে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে মতলবি কারবার বলে। মূলত যে সময়টা আমরা পার করছি, তা প্রচণ্ড রকম অস্থির একটা সময়।
রাজনীতিটা যে আদর্শস্থানীয় মানুষের হাত থেকে টাকাওয়ালা লোকের হাতে চলে গেছে, সেটা আমরা সাদা চোখেই দেখতে পাই। সংসদে আইনজীবীর সংখ্যা কমতে কমতে তলানিতে এসে ঠেকেছে। সে জায়গা ভরাট করার চেষ্টা করছেন ধনপতিরা এবং সেটা ঘটছে রাজনৈতিক দলের নীতিনির্ধারকদের আশীর্বাদেই। এখন এমন এক অবস্থা দাঁড়িয়েছে, যাঁরা নির্বাচনে মনোনয়ন পান, তাঁদের মধ্যে খুব কমসংখ্যক প্রার্থীই আছেন, যাঁরা আদর্শকে পুঁজি করে নির্বাচনী বৈতরণি পার হয়ে আসতে পারবেন। টাকা আর পেশিশক্তির মিলনে যে রাজনীতি শুরু হয়েছে, তা আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে, কেউ জানে না।
যে যার শ্রেণির স্বার্থ দেখবে, এটা নতুন কোনো কথা নয়। ফলে সংসদে শিল্পপতিদের সংখ্যা বাড়লে তাতে ব্যবসা-বাণিজ্যের রমরমা হবে বটে, কিন্তু তা হয়ে ওঠে সাধারণ ভোটারের সঙ্গে সম্পর্কহীন কাণ্ড-কারখানা। ফলে সিন্ডিকেট যদি গড়ে ওঠে, মালিক সমিতি যদি ধর্মঘট করে বসে, কিংবা ধর্মঘটে যান শ্রমিকেরা, তাহলে দেখা যাবে এই ধনী মানুষেরা কিংবা তাদের পোষ্যপুত্ররা সাধারণ মানুষের বিপরীতে
অবস্থান নিচ্ছে। কেন? কারণ আর কিছু নয়। তারাই মালিক, তারাই শ্রমিকনেতা, তারাই চালাচ্ছে সিন্ডিকেট।
রাজনীতির কাছে হতাশ হয়ে পড়ছে মানুষ এবং হয়ে পড়ছে অসহায়। বুঝতে পারছে, আসলে জনগণের সেবার জন্য যে রাজনীতি, তার এপিটাফ প্রায় লেখা হয়ে গেছে। যে গণতন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে উচ্চ স্বরে, সেই গণতান্ত্রিক আচরণের বড্ড অভাব এই রাজনীতিতে। হ্যাঁ, শুধু সরকারি দলের কথা বলা হচ্ছে না, সামগ্রিকভাবেই গণতন্ত্র আজ যেকোনো দলের আদর্শের জায়গা থেকে নির্বাসিত।
সরকারি কিংবা বিরোধী দলের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের কথাবার্তা লক্ষ করুন। মাঝে মাঝেই কৌতুকের খোরাক তাতে পেয়ে যাবেন। একসময় মনে হবে, আমরা বুঝি ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’কেই রাজনৈতিক জীবনের অন্যতম আদর্শে পরিণত করেছি। উদাহরণ? ঢের আছে। এই তো, এই শনিবারের পত্রিকা থেকে একই রকম দুটো উদাহরণ দিচ্ছি। নাটোর উপশহর মাঠে জেলা বিএনপির তৈরি করা মঞ্চ ভাঙচুর করা হয়েছে এবং তাতে আগুন দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের তির ছুটে গেছে আওয়ামী লীগের দিকে। আওয়ামী লীগ তৎক্ষণাৎ বলে দিয়েছে, বিএনপি নিজেরাই নিজেদের মঞ্চ ভাঙচুর করেছে। কে বলেছেন কথাটা? বলেছেন আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। নাম শরিফুল ইসলাম রমজান।
আপনার নিশ্চয়ই হাসি পেল খবরটা পড়ে?
আপনি নিশ্চয়ই নিজেই বুঝে নিয়েছেন, কী ঘটেছিল সেখানে। তবে পুরো হাসি হাসবেন না। বিপরীত দিক থেকেও হাসির খোরাক পাবেন। রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীতে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে সাংবাদিকদের বেদম মারধরের ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি বলছে, সরকারের দালালেরা গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। এ জন্য নাকি আওয়ামী লীগ দায়ী। বিএনপির এ রকম একটি মাহফিলে সরকারের চরেরা এসে সাংবাদিকদের পিটিয়ে গেল, এ কথাও বিশ্বাস করতে হবে? কথাগুলো কিন্তু বেরিয়েছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কণ্ঠ থেকে!
রাজনীতির শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্বরাই নানা রকম মন্তব্য করে নিজেদের খেলো প্রতিপন্ন করার জন্য যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। আর যা-ই হোক, এটাকে সুস্থ ধারা বলা যাচ্ছে না।
আর ছাত্ররাজনীতি? এ নিয়ে যা হচ্ছে, তার বিবরণ তো পত্রিকার পাতায় দৃশ্যমান। জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে ছাত্ররাজনীতির একটা সংযোগ থাকতেই পারে। কিন্তু সেটা তো কখনোই লেজুড়বৃত্তি নয়। কোনো ভুল সংকেত যদি আসে রাজনৈতিক দলের দিক থেকে, তাহলেও ছাত্ররা সেটাকে মান্য করে চললে তা তো শিরদাঁড়াহীনতা ছাড়া আর কিছুই নয়। সত্যের পক্ষে থাকতে হবে—এই আপ্তবাক্যটি দিনে দিনে তার কার্যকারিতা হারিয়েছে।
ছাত্ররাজনীতি কতটা ফ্রাঙ্কেনস্টাইনে পরিণত হয়েছে, সেটা দেখার জন্য শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গত কয়েক মাসে ঘটা ঘটনাগুলোর দিকে চোখ রাখাই যথেষ্ট।
২. শিল্পের যেমন বিমানবীকরণ হয়েছিল ইতিহাসের একটা সময়, তার ঠিক বিপরীত ঘটনা ঘটছে প্রযুক্তিতে অনেকটাই পরিবর্তিত হয়ে যাওয়া সংস্কৃতিক্ষেত্রে। সেটাও কি আমরা সব সময় ঠিকভাবে দেখতে পাচ্ছি? রুচির সংকট নিয়ে যে কথাবার্তা হচ্ছে আজকাল, তা মিথ্যেও নয়, নতুনও নয়। এই রুচির সংকট কি কখনো দূর হয়েছিল জীবন থেকে? নাকি সুরুচি আর রুচিহীনতা পাশাপাশি হেঁটেছে অনেকটা পথ? এখনো হাঁটছে? সুরুচির প্রশ্নটি জীবন থেকে ‘নেই’ করে দেওয়া যায় না ঠিকই, কিন্তু নতুন সময়ের বাস্তবতা বুঝেই প্রশ্নটি নিয়ে নাড়াচাড়া করতে হয়।
আমরা যে সংস্কৃতির কথা জেনে এসেছি, তা চর্চা ও শ্রমসাধ্য ব্যাপার। সাধনা ছাড়া কলা সৃষ্টি হয় না। সাধনা শিল্পীকে অন্য মানুষের কাছ থেকে আলাদা করে। যে লোক-সংস্কৃতির কথা আমরা বলি, সেটাও হাজার বছরের শ্রম, ঘাম ও সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমেই প্রস্ফুটিত হয়। সংস্কৃতির উচ্চ এবং নিম্ন বলে কিছু আছে বলে আমি অন্তত মানি না। সৃজনশীলতা লোকদেখানো কোনো বস্তু নয় যে লোকে খুশি হলেই তার পূর্ণতা; বরং নিজেকে সার্বিকভাবে খুশি করার একটা চিন্তা থাকতে হয় এবং তাতে থাকে সার্বিক আনন্দ।
যে কেউ যা কিছু করল আর সেটা শিল্প হয়ে গেল, তা তো নয়। বেসুরো গলায় গান করলে সেটার সমালোচনা করা যাবে না কেন? সমালোচনা করলেই কটাক্ষ করা হবে কেন? আবার ভিন্নভাবে বললে, সমালোচনা করার সময় একই অন্যায়ের জন্য শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে ছাড় দেওয়া হবে কেন? থাপ্পড়টা কেন পড়বে শক্তিহীন ব্যক্তির গালে?
প্রশ্নগুলো এড়ানো যাবে না।
আরও একটি কথা মনে রাখতে হবে। যুগ পাল্টেছে। কারও হাতে একটা স্মার্টফোন থাকলেই সে নিজেই হয়ে যেতে পারে অভিনয়শিল্পী, সংগীতশিল্পী, আবৃত্তিশিল্পী, পরিচালক। যে কেউ যেকোনো বিষয়ে ভিডিও করে নিজেকে গণমাধ্যমের স্বজন দাবি করতে পারে। এসব কি আর ঠেকানো যাবে? একেবারে বেসুরো কণ্ঠে গান করার প্রতিকার তো পুলিশের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে গান বন্ধ করা নয়। সেটা কজনের সঙ্গে করবে পুলিশ? মূলত এগুলো না শোনাই হলো প্রতিকারের উপায়। কিন্তু এই বেসুরো শিল্পীই যদি ভিডিওর ক্যারিশমায় দর্শক-শ্রোতা খুঁজে পায়, তাহলে তাকে প্রতিহত করবেন কী দিয়ে? ভালো মানের সংস্কৃতি নির্মাণ করেই তো প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হবে। সেটা কি হচ্ছে?
আমরা মাঝে মাঝে ভুলে যাই, সংস্কৃতিক্ষেত্রটি যেমন কারও মা-বাবার সম্পত্তি নয়, তেমনি এ ক্ষেত্রটি এককভাবে কেউ নষ্ট করে দিতে
পারে না। একটি রাষ্ট্রকে অন্যের কাছে পরিচিত করে তোলার সবচেয়ে সূক্ষ্ম অথচ সহজ মাধ্যম হচ্ছে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। বেঁচে থাকার আনন্দময় পথ অন্বেষণ করাও তো সংস্কৃতির কাজ।
আচারে-ব্যবহারে থাকতে হবে তার প্রকাশ। যে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমরা গৌরব করি, তারই সেরা ফসলের একটি ছিল নাটক। সেই নাটকের হাল আজ কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে, সে বিষয়ে ভাবতে হবে। কারা নাটককে বিপন্ন করল, কারা চলচ্চিত্র অঙ্গনকে প্রায় দর্শকশূন্য করে দিল, কারা শুধু অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকল এবং নিজেদের শিশু হিসেবে ঘোষণা করে রাষ্ট্রের কাছে নিরাপদ আশ্রয় চাইল, নিজেরা বেড়ে ওঠার চেষ্টা করল না, সেটাও কি আলোচনায় আসতে হবে না?
৩. একটি ভয়ংকর সত্য হলো, বাঙালি যেভাবে লড়তে শিখেছে, যেভাবে প্রতিবাদ করতে শিখেছে, সেভাবে শাসন করতে শেখেনি। ইতিহাস সাক্ষী, অন্যের হাতে শাসনভার তুলে দিয়ে দিব্যি আরামে কালাতিপাত করতে চেয়েছে। ফলে ‘ভেঙে আবার গড়তে’ পারার জাদুমন্ত্রটা আমাদের শেখা হয়নি। তাই চারদিকে ভাঙনের যত শব্দ শুনি, তার এক ভাগও গড়ে তোলার তাগিদ পরিলক্ষিত হয় না।
মাত্র দুটো সেক্টরের কথা বললাম, রাজনীতি আর সংস্কৃতি। অধরা রয়ে গেল অন্য সেক্টরগুলো। সেসব জায়গাতেও যে পেশিশক্তি আর ক্ষমতার আস্ফালন দেখতে পাবেন, সে ব্যাপারে আমার অন্তত কোনো সন্দেহ নেই। একটা ভয়ংকর সময় পার করছি আমরা। গন্তব্য এতটাই অবোধ্য যে কবি বিষ্ণু দের ভাষায় বলতে হয়, ‘এ নরকে মনে হয় আশা নেই।’
কবি কোন সময় কাকে উদ্দেশ করে কথাগুলো বলেছেন, তা এখানে আলোচ্য নয়, আলোচ্য বিষয় হলো, আমরা কি সেদিকেই যাচ্ছি?
জাহীদ রেজা নূর, উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আমাদের অলক্ষ্যেই চারদিকের সবকিছু যে দ্রুত পরিবর্তিত হয়ে গেছে এবং যাচ্ছে, সেটা আমরা এখনো খুব একটা বুঝে উঠতে পারছি না। কত দ্রুত এক একটা ইস্যু আসছে, তা নিয়ে মাঠ গরম হচ্ছে, তারপর নতুন কোনো ইস্যু এসে নিয়ে নিচ্ছে
০৩ এপ্রিল ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আমাদের অলক্ষ্যেই চারদিকের সবকিছু যে দ্রুত পরিবর্তিত হয়ে গেছে এবং যাচ্ছে, সেটা আমরা এখনো খুব একটা বুঝে উঠতে পারছি না। কত দ্রুত এক একটা ইস্যু আসছে, তা নিয়ে মাঠ গরম হচ্ছে, তারপর নতুন কোনো ইস্যু এসে নিয়ে নিচ্ছে
০৩ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আমাদের অলক্ষ্যেই চারদিকের সবকিছু যে দ্রুত পরিবর্তিত হয়ে গেছে এবং যাচ্ছে, সেটা আমরা এখনো খুব একটা বুঝে উঠতে পারছি না। কত দ্রুত এক একটা ইস্যু আসছে, তা নিয়ে মাঠ গরম হচ্ছে, তারপর নতুন কোনো ইস্যু এসে নিয়ে নিচ্ছে
০৩ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আমাদের অলক্ষ্যেই চারদিকের সবকিছু যে দ্রুত পরিবর্তিত হয়ে গেছে এবং যাচ্ছে, সেটা আমরা এখনো খুব একটা বুঝে উঠতে পারছি না। কত দ্রুত এক একটা ইস্যু আসছে, তা নিয়ে মাঠ গরম হচ্ছে, তারপর নতুন কোনো ইস্যু এসে নিয়ে নিচ্ছে
০৩ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫