
শুনে অবাক হবেন, ভারতের মতো জনবহুল দেশের কোনো কোনো শহর ধুঁকছে জনসংখ্যা সংকটে। এসব জায়গায় জন্মহার যেমন কম, তেমনি অনেকেই শহর ছেড়েছেন উন্নত জীবনের আশায়। অনেকটা মৃত শহর বা ঘোস্ট টাউনে পরিণত হয়েছে এগুলো, যেখানে বাস মূলত বয়স্কদের। এমনই এক জায়গা কেরালার কুমবানাদ। সেখানে গিয়েছিলেন বিবিসির সৌতিক বিশ্বাস।
বিগত বছরগুলোতে কেরালার এই অলস শহরের স্কুলগুলো অস্বাভাবিক এক সমস্যায় ভুগছে। শিক্ষার্থী বড় দুষ্প্রাপ্য এখানে, তাদের খোঁজে বের হতে হয় শিক্ষকদের। শুধু তাই নয়, স্কুলে ছাত্রছাত্রী আনতে গাঁটের পয়সা খরচ করতে হয় তাঁদের।
১৫০ বছর আগে স্থাপিত কুমবানাদের সরকারি আপার প্রাইমারি স্কুলে এখন শিক্ষার্থী আছে কেবল টেনেটুনে ৫০ জন। ১৯৮০ সালের দিকে সংখ্যাটা ছিল ৭০০। এই শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই আবার দরিদ্র পরিবারের, যাদের শহরের প্রান্তে অবস্থান। এর মধ্যে সর্বোচ্চ শ্রেণি গ্রেড সেভেনের শিক্ষার্থী কেবল সাতজন। শুধু তাই নয়, শিক্ষকদের এই শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা-যাওয়ার ভাড়াও গুনতে হয়। এমনকি এখানে যে কয়েকটি বেসরকারি স্কুল আছে, তার শিক্ষকদেরও শিক্ষার্থীর খোঁজে বের হতে হয়। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছাত্রছাত্রী আছে যে স্কুলে, সেটির শিক্ষার্থীর সংখ্যাও ৭০।
‘আমাদের কী করার আছে? শহরে কোনো ছেলেমেয়ে নেই। আরও পরিষ্কারভাবে বললে, এখানে খুব কম মানুষই বাস করে।’ বলেন ওই প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল জয়াদেবী আর.।
কথাটা মোটেই মিথ্যা নয়। কুমবানাদ শহরটির অবস্থান কেরালার পাথানামথিতা জেলার ঠিক কেন্দ্রে। এখানে জনসংখ্যা যেমন কমছে, তেমনি যারা বাস করছেন তাঁদের বেশির ভাগই বয়স্ক।
কুমবানাদ ও আশপাশের আধা ডজন গ্রামে মোটামুটি হাজার পঁচিশেক মানুষের বাস। এখানকার ১১ হাজার ১১৮পি বাড়ির শতকরা ১৫ শতাংশ বাড়িতে ঝুলছে তালা। এসব বাড়ির বাসিন্দারা অন্য কোথাও চলে গেছেন কিংবা ছেলেমেয়ের সঙ্গে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। জানান স্থানীয় গ্রাম কাউন্সিল প্রধান আশা সি জে।
একটি হাসপাতাল, রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত একটি ক্লিনিক, ৩০টির বেশি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ৩টি বৃদ্ধনিবাস এখানকার চুলে পাক ধরা লোকের হার যে বেশি তার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এদিকে দুই ডজনের বেশি ব্যাংক, এর মধ্যে আধ কিলোমিটারেরও কম জায়গার মধ্যে ৮টি শাখা পৃথিবীর নানা প্রান্তে বাস ও কাজ করা শহরের মানুষদের অর্থ গ্রহণের জন্য প্রতিযোগিতা করছে। গত বছর ভারতে প্রবাসীদের কাছ থেকে যে ১০ হাজার কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রা পায় তার ১০ শতাংশ আসে কেরালায়।
ভারতে এক যুগের জনসংখ্যা বৃদ্ধির শেষ যে জরিপ (২০০১-১১) করা হয়, তাতে তলানিতে ছিল কেরালা ও তার প্রতিবেশী রাজ্য তামিলনাড়ু। জাতীয় গড় আয়ু ৬৯ হলেও কেরালায় জন্মগ্রহণকারী শিশু ৭৫ বছর আয়ুর আশা করতে পারে।
জন্মহারও কম। একজন নারী গড়ে এখানে ১.৭ থেকে ১.৯টি সন্তান জন্ম দেন। ছোট পরিবারগুলো সন্তানদের শিক্ষার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়। এতে তরুণেরা ভালো সুযোগের জন্য দেশে ও দেশের বাইরে পাড়ি জমাচ্ছেন বয়স্ক মা-বাবাকে রেখে।
আন্নাম্মা জেকব তাঁর দোতলা বাড়িতে একাকী জীবন কাটাচ্ছেন কয়েক দশক ধরে। ৭৪ বছরের অন্নাম্মার স্মৃতিতে কেবল নিঃসঙ্গতা। তাঁর যন্ত্রকৌশল প্রকৌশলী স্বামী ১৯৮০-র দশকেই মারা যান। তাঁর পঞ্চাশে পা দেওয়া ছেলে দুই দশকের বেশি সময় ধরে আবুধাবিতে বাস ও কাজ করছেন। অন্নাম্মার এক মেয়ে থাকেন কয়েক মাইলের মধ্যে, তবে তাঁর স্বামী দুবাইয়ে সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে চাকরি করছেন তিন যুগ ধরে।
আন্নাম্মার নিকটতম দুই প্রতিবেশীর একজন বাড়িতে তালা দিয়ে মা-বাবাকে নিয়ে গেছে বাহরাইনে, সেখানে নার্সের কাজ করেন তিনি। অপর প্রতিবেশী দুবাই চলে গেছেন, বাড়িটা ভাড়া দিয়েছেন এক বৃদ্ধ দম্পতিকে।
তবে কুমবানাদের অনেক অধিবাসী জায়গাটি ছেড়ে চলে গেলেও ক্ষয় একে পুরোপুরি আঁকড়ে ধরেনি। ফাঁকা বাড়িগুলো নিয়মিত রং করা হয়, যেন যেকোনো দিন মানুষ আশা করছে। যদিও এ ধরনের আগমনের ঘটনা ঘটে কমই।
‘এটা খুব নিঃসঙ্গ এক জীবন। আমার শরীরও ভালো থাকে না।’ বলেন আন্নাম্মা জেকব। তবে হার্টে সমস্যা ও বাত থাকার পরও ছেলে ও নাতিদের সঙ্গে সময় কাটাতে বিদেশে পাড়ি জমান তিনি।
আন্নাম্মার বাড়ি থেকে কয়েক লেন দূরে চাক্কো মাম্মেন তাঁর কলার খামারে দিনে চার ঘণ্টা শ্রম দেন। তাঁরও হার্টের সমস্যা আছে, সঙ্গে ডায়াবেটিস। ৬৪ বছরের চাক্কো তিন দশক ওমানে কাজ করে পরে দেশে ফিরে আসেন।
পুলিশ একাকী থাকা এই বৃদ্ধদের খোঁজ-খবর নেয় নিয়মিত। তবে এখানে অপরাধের হার কম। পুলিশ জানায়, চুরির ঘটনা এখানে একেবারেই কম, কারণ মানুষ ঘরে বেশি টাকা বা মূল্যবান জিনিস রাখে না। শেষ কবে এখানে খুনের ঘটনা ঘটেছে তাও মনে করতে পারেন না তাঁরা।
‘সবকিছু মিলিয়ে খুব শান্তিপূর্ণ জায়গা এটি। আমরা কেবল প্রতারণার অভিযোগ পাই। আত্মীয়স্বজনদের মাধ্যমে প্রতারিত হন বৃদ্ধরা, কিংবা তাঁদের স্বাক্ষর নকল করে টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।’ বলেন স্থানীয় পুলিশ স্টেশনের চিফ ইন্সপেক্টর সাজিশ কুমার ভি।
শহরে অপরাধ কম হওয়ায় পুলিশ বয়স্ক ব্যক্তিদের দেখভালে বেশি সময় দিতে পারে। ২০২০ সালে একটি বাড়িতে বারবার বেল চেপে সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে পুলিশ। দেখতে পায়, ওই বাড়ির বাসিন্দায় এক বয়স্ক নারী মাটিতে পড়ে আছেন।
‘আমরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে সুস্থ হন তিনি। আমাদের আরেকটি কর্তব্য শহরের বাসিন্দাদের বৃদ্ধনিবাস বা ওল্ড হোমে নিয়ে যাওয়া। আমরা নিয়মিত বয়স্কদের খবর নিই, তাঁদের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাই।’ বলেন চিফ ইন্সপেক্টর কুমার।
শহরে হুইলচেয়ারে পৌঁছা যায় এমন তিনটি ওল্ড হোম আছে। এগুলো বেশ খোলামেলা, দরজা ও হলওয়ে প্রশস্ত। এদের একটি পাঁচতলা দালানের দ্য আলেক্সান্ডার মারথোমা মেমোরিয়াল জেরিয়াট্রিক সেন্টার। এর সঙ্গেই আছে ১৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল। এই বৃদ্ধনিবাসে ৮৫ থেকে ১০১ বছর বয়সী ১০০ জন বৃদ্ধের দেখভাল করা হয়। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগ শয্যাশায়ী, পরিবারকে মাসে ৫০ হাজার রুপি করে গুনতে হয় এই সেবার বিনিময়ে। কখনো ছেলেমেয়েরা এসে থাকেন তাঁদের সঙ্গে।
এর কাছেই ৭৫ বছরের পুরোনো ধর্মগিরি ওল্ড এজ হোম। সেখানে ৬০ জন স্থানীয় বাসিন্দার বাস, যাদের প্রত্যেকের বয়স ৬০-র বেশি।
অসুস্থ বয়স্ক মানুষ, বৃদ্ধনিবাস, শ্রমিক সংকট, তরুণদের অভিবাসন, জনসংখ্যা হ্রাস, মৃতপ্রায় শহর—এই সবকিছুই যেন এখন কুমবানাদের চিত্র।
‘জনসংখ্যাতাত্ত্বিক পরিবর্তনের এক গল্প এই শহর। শেষ পর্যন্ত গোটা ভারতের গল্প হবে এটি।’ বলেন মুম্বাইভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর পপুলেশন সায়েন্সের অধ্যাপক কে এস জেমস।
বিবিসি থেকে অনুবাদ ইশতিয়াক হাসান
আরও খবর পড়ুন:

শুনে অবাক হবেন, ভারতের মতো জনবহুল দেশের কোনো কোনো শহর ধুঁকছে জনসংখ্যা সংকটে। এসব জায়গায় জন্মহার যেমন কম, তেমনি অনেকেই শহর ছেড়েছেন উন্নত জীবনের আশায়। অনেকটা মৃত শহর বা ঘোস্ট টাউনে পরিণত হয়েছে এগুলো, যেখানে বাস মূলত বয়স্কদের। এমনই এক জায়গা কেরালার কুমবানাদ। সেখানে গিয়েছিলেন বিবিসির সৌতিক বিশ্বাস।
বিগত বছরগুলোতে কেরালার এই অলস শহরের স্কুলগুলো অস্বাভাবিক এক সমস্যায় ভুগছে। শিক্ষার্থী বড় দুষ্প্রাপ্য এখানে, তাদের খোঁজে বের হতে হয় শিক্ষকদের। শুধু তাই নয়, স্কুলে ছাত্রছাত্রী আনতে গাঁটের পয়সা খরচ করতে হয় তাঁদের।
১৫০ বছর আগে স্থাপিত কুমবানাদের সরকারি আপার প্রাইমারি স্কুলে এখন শিক্ষার্থী আছে কেবল টেনেটুনে ৫০ জন। ১৯৮০ সালের দিকে সংখ্যাটা ছিল ৭০০। এই শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই আবার দরিদ্র পরিবারের, যাদের শহরের প্রান্তে অবস্থান। এর মধ্যে সর্বোচ্চ শ্রেণি গ্রেড সেভেনের শিক্ষার্থী কেবল সাতজন। শুধু তাই নয়, শিক্ষকদের এই শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা-যাওয়ার ভাড়াও গুনতে হয়। এমনকি এখানে যে কয়েকটি বেসরকারি স্কুল আছে, তার শিক্ষকদেরও শিক্ষার্থীর খোঁজে বের হতে হয়। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছাত্রছাত্রী আছে যে স্কুলে, সেটির শিক্ষার্থীর সংখ্যাও ৭০।
‘আমাদের কী করার আছে? শহরে কোনো ছেলেমেয়ে নেই। আরও পরিষ্কারভাবে বললে, এখানে খুব কম মানুষই বাস করে।’ বলেন ওই প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল জয়াদেবী আর.।
কথাটা মোটেই মিথ্যা নয়। কুমবানাদ শহরটির অবস্থান কেরালার পাথানামথিতা জেলার ঠিক কেন্দ্রে। এখানে জনসংখ্যা যেমন কমছে, তেমনি যারা বাস করছেন তাঁদের বেশির ভাগই বয়স্ক।
কুমবানাদ ও আশপাশের আধা ডজন গ্রামে মোটামুটি হাজার পঁচিশেক মানুষের বাস। এখানকার ১১ হাজার ১১৮পি বাড়ির শতকরা ১৫ শতাংশ বাড়িতে ঝুলছে তালা। এসব বাড়ির বাসিন্দারা অন্য কোথাও চলে গেছেন কিংবা ছেলেমেয়ের সঙ্গে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। জানান স্থানীয় গ্রাম কাউন্সিল প্রধান আশা সি জে।
একটি হাসপাতাল, রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত একটি ক্লিনিক, ৩০টির বেশি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ৩টি বৃদ্ধনিবাস এখানকার চুলে পাক ধরা লোকের হার যে বেশি তার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এদিকে দুই ডজনের বেশি ব্যাংক, এর মধ্যে আধ কিলোমিটারেরও কম জায়গার মধ্যে ৮টি শাখা পৃথিবীর নানা প্রান্তে বাস ও কাজ করা শহরের মানুষদের অর্থ গ্রহণের জন্য প্রতিযোগিতা করছে। গত বছর ভারতে প্রবাসীদের কাছ থেকে যে ১০ হাজার কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রা পায় তার ১০ শতাংশ আসে কেরালায়।
ভারতে এক যুগের জনসংখ্যা বৃদ্ধির শেষ যে জরিপ (২০০১-১১) করা হয়, তাতে তলানিতে ছিল কেরালা ও তার প্রতিবেশী রাজ্য তামিলনাড়ু। জাতীয় গড় আয়ু ৬৯ হলেও কেরালায় জন্মগ্রহণকারী শিশু ৭৫ বছর আয়ুর আশা করতে পারে।
জন্মহারও কম। একজন নারী গড়ে এখানে ১.৭ থেকে ১.৯টি সন্তান জন্ম দেন। ছোট পরিবারগুলো সন্তানদের শিক্ষার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়। এতে তরুণেরা ভালো সুযোগের জন্য দেশে ও দেশের বাইরে পাড়ি জমাচ্ছেন বয়স্ক মা-বাবাকে রেখে।
আন্নাম্মা জেকব তাঁর দোতলা বাড়িতে একাকী জীবন কাটাচ্ছেন কয়েক দশক ধরে। ৭৪ বছরের অন্নাম্মার স্মৃতিতে কেবল নিঃসঙ্গতা। তাঁর যন্ত্রকৌশল প্রকৌশলী স্বামী ১৯৮০-র দশকেই মারা যান। তাঁর পঞ্চাশে পা দেওয়া ছেলে দুই দশকের বেশি সময় ধরে আবুধাবিতে বাস ও কাজ করছেন। অন্নাম্মার এক মেয়ে থাকেন কয়েক মাইলের মধ্যে, তবে তাঁর স্বামী দুবাইয়ে সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে চাকরি করছেন তিন যুগ ধরে।
আন্নাম্মার নিকটতম দুই প্রতিবেশীর একজন বাড়িতে তালা দিয়ে মা-বাবাকে নিয়ে গেছে বাহরাইনে, সেখানে নার্সের কাজ করেন তিনি। অপর প্রতিবেশী দুবাই চলে গেছেন, বাড়িটা ভাড়া দিয়েছেন এক বৃদ্ধ দম্পতিকে।
তবে কুমবানাদের অনেক অধিবাসী জায়গাটি ছেড়ে চলে গেলেও ক্ষয় একে পুরোপুরি আঁকড়ে ধরেনি। ফাঁকা বাড়িগুলো নিয়মিত রং করা হয়, যেন যেকোনো দিন মানুষ আশা করছে। যদিও এ ধরনের আগমনের ঘটনা ঘটে কমই।
‘এটা খুব নিঃসঙ্গ এক জীবন। আমার শরীরও ভালো থাকে না।’ বলেন আন্নাম্মা জেকব। তবে হার্টে সমস্যা ও বাত থাকার পরও ছেলে ও নাতিদের সঙ্গে সময় কাটাতে বিদেশে পাড়ি জমান তিনি।
আন্নাম্মার বাড়ি থেকে কয়েক লেন দূরে চাক্কো মাম্মেন তাঁর কলার খামারে দিনে চার ঘণ্টা শ্রম দেন। তাঁরও হার্টের সমস্যা আছে, সঙ্গে ডায়াবেটিস। ৬৪ বছরের চাক্কো তিন দশক ওমানে কাজ করে পরে দেশে ফিরে আসেন।
পুলিশ একাকী থাকা এই বৃদ্ধদের খোঁজ-খবর নেয় নিয়মিত। তবে এখানে অপরাধের হার কম। পুলিশ জানায়, চুরির ঘটনা এখানে একেবারেই কম, কারণ মানুষ ঘরে বেশি টাকা বা মূল্যবান জিনিস রাখে না। শেষ কবে এখানে খুনের ঘটনা ঘটেছে তাও মনে করতে পারেন না তাঁরা।
‘সবকিছু মিলিয়ে খুব শান্তিপূর্ণ জায়গা এটি। আমরা কেবল প্রতারণার অভিযোগ পাই। আত্মীয়স্বজনদের মাধ্যমে প্রতারিত হন বৃদ্ধরা, কিংবা তাঁদের স্বাক্ষর নকল করে টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।’ বলেন স্থানীয় পুলিশ স্টেশনের চিফ ইন্সপেক্টর সাজিশ কুমার ভি।
শহরে অপরাধ কম হওয়ায় পুলিশ বয়স্ক ব্যক্তিদের দেখভালে বেশি সময় দিতে পারে। ২০২০ সালে একটি বাড়িতে বারবার বেল চেপে সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে পুলিশ। দেখতে পায়, ওই বাড়ির বাসিন্দায় এক বয়স্ক নারী মাটিতে পড়ে আছেন।
‘আমরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে সুস্থ হন তিনি। আমাদের আরেকটি কর্তব্য শহরের বাসিন্দাদের বৃদ্ধনিবাস বা ওল্ড হোমে নিয়ে যাওয়া। আমরা নিয়মিত বয়স্কদের খবর নিই, তাঁদের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাই।’ বলেন চিফ ইন্সপেক্টর কুমার।
শহরে হুইলচেয়ারে পৌঁছা যায় এমন তিনটি ওল্ড হোম আছে। এগুলো বেশ খোলামেলা, দরজা ও হলওয়ে প্রশস্ত। এদের একটি পাঁচতলা দালানের দ্য আলেক্সান্ডার মারথোমা মেমোরিয়াল জেরিয়াট্রিক সেন্টার। এর সঙ্গেই আছে ১৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল। এই বৃদ্ধনিবাসে ৮৫ থেকে ১০১ বছর বয়সী ১০০ জন বৃদ্ধের দেখভাল করা হয়। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগ শয্যাশায়ী, পরিবারকে মাসে ৫০ হাজার রুপি করে গুনতে হয় এই সেবার বিনিময়ে। কখনো ছেলেমেয়েরা এসে থাকেন তাঁদের সঙ্গে।
এর কাছেই ৭৫ বছরের পুরোনো ধর্মগিরি ওল্ড এজ হোম। সেখানে ৬০ জন স্থানীয় বাসিন্দার বাস, যাদের প্রত্যেকের বয়স ৬০-র বেশি।
অসুস্থ বয়স্ক মানুষ, বৃদ্ধনিবাস, শ্রমিক সংকট, তরুণদের অভিবাসন, জনসংখ্যা হ্রাস, মৃতপ্রায় শহর—এই সবকিছুই যেন এখন কুমবানাদের চিত্র।
‘জনসংখ্যাতাত্ত্বিক পরিবর্তনের এক গল্প এই শহর। শেষ পর্যন্ত গোটা ভারতের গল্প হবে এটি।’ বলেন মুম্বাইভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর পপুলেশন সায়েন্সের অধ্যাপক কে এস জেমস।
বিবিসি থেকে অনুবাদ ইশতিয়াক হাসান
আরও খবর পড়ুন:

শুনে অবাক হবেন, ভারতের মতো জনবহুল দেশের কোনো কোনো শহর ধুঁকছে জনসংখ্যা সংকটে। এসব জায়গায় জন্মহার যেমন কম, তেমনি অনেকেই শহর ছেড়েছেন উন্নত জীবনের আশায়। অনেকটা মৃত শহর বা ঘোস্ট টাউনে পরিণত হয়েছে এগুলো, যেখানে বাস মূলত বয়স্কদের। এমনই এক জায়গা কেরালার কুমবানাদ। সেখানে গিয়েছিলেন বিবিসির সৌতিক বিশ্বাস।
বিগত বছরগুলোতে কেরালার এই অলস শহরের স্কুলগুলো অস্বাভাবিক এক সমস্যায় ভুগছে। শিক্ষার্থী বড় দুষ্প্রাপ্য এখানে, তাদের খোঁজে বের হতে হয় শিক্ষকদের। শুধু তাই নয়, স্কুলে ছাত্রছাত্রী আনতে গাঁটের পয়সা খরচ করতে হয় তাঁদের।
১৫০ বছর আগে স্থাপিত কুমবানাদের সরকারি আপার প্রাইমারি স্কুলে এখন শিক্ষার্থী আছে কেবল টেনেটুনে ৫০ জন। ১৯৮০ সালের দিকে সংখ্যাটা ছিল ৭০০। এই শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই আবার দরিদ্র পরিবারের, যাদের শহরের প্রান্তে অবস্থান। এর মধ্যে সর্বোচ্চ শ্রেণি গ্রেড সেভেনের শিক্ষার্থী কেবল সাতজন। শুধু তাই নয়, শিক্ষকদের এই শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা-যাওয়ার ভাড়াও গুনতে হয়। এমনকি এখানে যে কয়েকটি বেসরকারি স্কুল আছে, তার শিক্ষকদেরও শিক্ষার্থীর খোঁজে বের হতে হয়। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছাত্রছাত্রী আছে যে স্কুলে, সেটির শিক্ষার্থীর সংখ্যাও ৭০।
‘আমাদের কী করার আছে? শহরে কোনো ছেলেমেয়ে নেই। আরও পরিষ্কারভাবে বললে, এখানে খুব কম মানুষই বাস করে।’ বলেন ওই প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল জয়াদেবী আর.।
কথাটা মোটেই মিথ্যা নয়। কুমবানাদ শহরটির অবস্থান কেরালার পাথানামথিতা জেলার ঠিক কেন্দ্রে। এখানে জনসংখ্যা যেমন কমছে, তেমনি যারা বাস করছেন তাঁদের বেশির ভাগই বয়স্ক।
কুমবানাদ ও আশপাশের আধা ডজন গ্রামে মোটামুটি হাজার পঁচিশেক মানুষের বাস। এখানকার ১১ হাজার ১১৮পি বাড়ির শতকরা ১৫ শতাংশ বাড়িতে ঝুলছে তালা। এসব বাড়ির বাসিন্দারা অন্য কোথাও চলে গেছেন কিংবা ছেলেমেয়ের সঙ্গে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। জানান স্থানীয় গ্রাম কাউন্সিল প্রধান আশা সি জে।
একটি হাসপাতাল, রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত একটি ক্লিনিক, ৩০টির বেশি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ৩টি বৃদ্ধনিবাস এখানকার চুলে পাক ধরা লোকের হার যে বেশি তার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এদিকে দুই ডজনের বেশি ব্যাংক, এর মধ্যে আধ কিলোমিটারেরও কম জায়গার মধ্যে ৮টি শাখা পৃথিবীর নানা প্রান্তে বাস ও কাজ করা শহরের মানুষদের অর্থ গ্রহণের জন্য প্রতিযোগিতা করছে। গত বছর ভারতে প্রবাসীদের কাছ থেকে যে ১০ হাজার কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রা পায় তার ১০ শতাংশ আসে কেরালায়।
ভারতে এক যুগের জনসংখ্যা বৃদ্ধির শেষ যে জরিপ (২০০১-১১) করা হয়, তাতে তলানিতে ছিল কেরালা ও তার প্রতিবেশী রাজ্য তামিলনাড়ু। জাতীয় গড় আয়ু ৬৯ হলেও কেরালায় জন্মগ্রহণকারী শিশু ৭৫ বছর আয়ুর আশা করতে পারে।
জন্মহারও কম। একজন নারী গড়ে এখানে ১.৭ থেকে ১.৯টি সন্তান জন্ম দেন। ছোট পরিবারগুলো সন্তানদের শিক্ষার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়। এতে তরুণেরা ভালো সুযোগের জন্য দেশে ও দেশের বাইরে পাড়ি জমাচ্ছেন বয়স্ক মা-বাবাকে রেখে।
আন্নাম্মা জেকব তাঁর দোতলা বাড়িতে একাকী জীবন কাটাচ্ছেন কয়েক দশক ধরে। ৭৪ বছরের অন্নাম্মার স্মৃতিতে কেবল নিঃসঙ্গতা। তাঁর যন্ত্রকৌশল প্রকৌশলী স্বামী ১৯৮০-র দশকেই মারা যান। তাঁর পঞ্চাশে পা দেওয়া ছেলে দুই দশকের বেশি সময় ধরে আবুধাবিতে বাস ও কাজ করছেন। অন্নাম্মার এক মেয়ে থাকেন কয়েক মাইলের মধ্যে, তবে তাঁর স্বামী দুবাইয়ে সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে চাকরি করছেন তিন যুগ ধরে।
আন্নাম্মার নিকটতম দুই প্রতিবেশীর একজন বাড়িতে তালা দিয়ে মা-বাবাকে নিয়ে গেছে বাহরাইনে, সেখানে নার্সের কাজ করেন তিনি। অপর প্রতিবেশী দুবাই চলে গেছেন, বাড়িটা ভাড়া দিয়েছেন এক বৃদ্ধ দম্পতিকে।
তবে কুমবানাদের অনেক অধিবাসী জায়গাটি ছেড়ে চলে গেলেও ক্ষয় একে পুরোপুরি আঁকড়ে ধরেনি। ফাঁকা বাড়িগুলো নিয়মিত রং করা হয়, যেন যেকোনো দিন মানুষ আশা করছে। যদিও এ ধরনের আগমনের ঘটনা ঘটে কমই।
‘এটা খুব নিঃসঙ্গ এক জীবন। আমার শরীরও ভালো থাকে না।’ বলেন আন্নাম্মা জেকব। তবে হার্টে সমস্যা ও বাত থাকার পরও ছেলে ও নাতিদের সঙ্গে সময় কাটাতে বিদেশে পাড়ি জমান তিনি।
আন্নাম্মার বাড়ি থেকে কয়েক লেন দূরে চাক্কো মাম্মেন তাঁর কলার খামারে দিনে চার ঘণ্টা শ্রম দেন। তাঁরও হার্টের সমস্যা আছে, সঙ্গে ডায়াবেটিস। ৬৪ বছরের চাক্কো তিন দশক ওমানে কাজ করে পরে দেশে ফিরে আসেন।
পুলিশ একাকী থাকা এই বৃদ্ধদের খোঁজ-খবর নেয় নিয়মিত। তবে এখানে অপরাধের হার কম। পুলিশ জানায়, চুরির ঘটনা এখানে একেবারেই কম, কারণ মানুষ ঘরে বেশি টাকা বা মূল্যবান জিনিস রাখে না। শেষ কবে এখানে খুনের ঘটনা ঘটেছে তাও মনে করতে পারেন না তাঁরা।
‘সবকিছু মিলিয়ে খুব শান্তিপূর্ণ জায়গা এটি। আমরা কেবল প্রতারণার অভিযোগ পাই। আত্মীয়স্বজনদের মাধ্যমে প্রতারিত হন বৃদ্ধরা, কিংবা তাঁদের স্বাক্ষর নকল করে টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।’ বলেন স্থানীয় পুলিশ স্টেশনের চিফ ইন্সপেক্টর সাজিশ কুমার ভি।
শহরে অপরাধ কম হওয়ায় পুলিশ বয়স্ক ব্যক্তিদের দেখভালে বেশি সময় দিতে পারে। ২০২০ সালে একটি বাড়িতে বারবার বেল চেপে সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে পুলিশ। দেখতে পায়, ওই বাড়ির বাসিন্দায় এক বয়স্ক নারী মাটিতে পড়ে আছেন।
‘আমরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে সুস্থ হন তিনি। আমাদের আরেকটি কর্তব্য শহরের বাসিন্দাদের বৃদ্ধনিবাস বা ওল্ড হোমে নিয়ে যাওয়া। আমরা নিয়মিত বয়স্কদের খবর নিই, তাঁদের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাই।’ বলেন চিফ ইন্সপেক্টর কুমার।
শহরে হুইলচেয়ারে পৌঁছা যায় এমন তিনটি ওল্ড হোম আছে। এগুলো বেশ খোলামেলা, দরজা ও হলওয়ে প্রশস্ত। এদের একটি পাঁচতলা দালানের দ্য আলেক্সান্ডার মারথোমা মেমোরিয়াল জেরিয়াট্রিক সেন্টার। এর সঙ্গেই আছে ১৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল। এই বৃদ্ধনিবাসে ৮৫ থেকে ১০১ বছর বয়সী ১০০ জন বৃদ্ধের দেখভাল করা হয়। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগ শয্যাশায়ী, পরিবারকে মাসে ৫০ হাজার রুপি করে গুনতে হয় এই সেবার বিনিময়ে। কখনো ছেলেমেয়েরা এসে থাকেন তাঁদের সঙ্গে।
এর কাছেই ৭৫ বছরের পুরোনো ধর্মগিরি ওল্ড এজ হোম। সেখানে ৬০ জন স্থানীয় বাসিন্দার বাস, যাদের প্রত্যেকের বয়স ৬০-র বেশি।
অসুস্থ বয়স্ক মানুষ, বৃদ্ধনিবাস, শ্রমিক সংকট, তরুণদের অভিবাসন, জনসংখ্যা হ্রাস, মৃতপ্রায় শহর—এই সবকিছুই যেন এখন কুমবানাদের চিত্র।
‘জনসংখ্যাতাত্ত্বিক পরিবর্তনের এক গল্প এই শহর। শেষ পর্যন্ত গোটা ভারতের গল্প হবে এটি।’ বলেন মুম্বাইভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর পপুলেশন সায়েন্সের অধ্যাপক কে এস জেমস।
বিবিসি থেকে অনুবাদ ইশতিয়াক হাসান
আরও খবর পড়ুন:

শুনে অবাক হবেন, ভারতের মতো জনবহুল দেশের কোনো কোনো শহর ধুঁকছে জনসংখ্যা সংকটে। এসব জায়গায় জন্মহার যেমন কম, তেমনি অনেকেই শহর ছেড়েছেন উন্নত জীবনের আশায়। অনেকটা মৃত শহর বা ঘোস্ট টাউনে পরিণত হয়েছে এগুলো, যেখানে বাস মূলত বয়স্কদের। এমনই এক জায়গা কেরালার কুমবানাদ। সেখানে গিয়েছিলেন বিবিসির সৌতিক বিশ্বাস।
বিগত বছরগুলোতে কেরালার এই অলস শহরের স্কুলগুলো অস্বাভাবিক এক সমস্যায় ভুগছে। শিক্ষার্থী বড় দুষ্প্রাপ্য এখানে, তাদের খোঁজে বের হতে হয় শিক্ষকদের। শুধু তাই নয়, স্কুলে ছাত্রছাত্রী আনতে গাঁটের পয়সা খরচ করতে হয় তাঁদের।
১৫০ বছর আগে স্থাপিত কুমবানাদের সরকারি আপার প্রাইমারি স্কুলে এখন শিক্ষার্থী আছে কেবল টেনেটুনে ৫০ জন। ১৯৮০ সালের দিকে সংখ্যাটা ছিল ৭০০। এই শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই আবার দরিদ্র পরিবারের, যাদের শহরের প্রান্তে অবস্থান। এর মধ্যে সর্বোচ্চ শ্রেণি গ্রেড সেভেনের শিক্ষার্থী কেবল সাতজন। শুধু তাই নয়, শিক্ষকদের এই শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা-যাওয়ার ভাড়াও গুনতে হয়। এমনকি এখানে যে কয়েকটি বেসরকারি স্কুল আছে, তার শিক্ষকদেরও শিক্ষার্থীর খোঁজে বের হতে হয়। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছাত্রছাত্রী আছে যে স্কুলে, সেটির শিক্ষার্থীর সংখ্যাও ৭০।
‘আমাদের কী করার আছে? শহরে কোনো ছেলেমেয়ে নেই। আরও পরিষ্কারভাবে বললে, এখানে খুব কম মানুষই বাস করে।’ বলেন ওই প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল জয়াদেবী আর.।
কথাটা মোটেই মিথ্যা নয়। কুমবানাদ শহরটির অবস্থান কেরালার পাথানামথিতা জেলার ঠিক কেন্দ্রে। এখানে জনসংখ্যা যেমন কমছে, তেমনি যারা বাস করছেন তাঁদের বেশির ভাগই বয়স্ক।
কুমবানাদ ও আশপাশের আধা ডজন গ্রামে মোটামুটি হাজার পঁচিশেক মানুষের বাস। এখানকার ১১ হাজার ১১৮পি বাড়ির শতকরা ১৫ শতাংশ বাড়িতে ঝুলছে তালা। এসব বাড়ির বাসিন্দারা অন্য কোথাও চলে গেছেন কিংবা ছেলেমেয়ের সঙ্গে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। জানান স্থানীয় গ্রাম কাউন্সিল প্রধান আশা সি জে।
একটি হাসপাতাল, রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত একটি ক্লিনিক, ৩০টির বেশি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ৩টি বৃদ্ধনিবাস এখানকার চুলে পাক ধরা লোকের হার যে বেশি তার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এদিকে দুই ডজনের বেশি ব্যাংক, এর মধ্যে আধ কিলোমিটারেরও কম জায়গার মধ্যে ৮টি শাখা পৃথিবীর নানা প্রান্তে বাস ও কাজ করা শহরের মানুষদের অর্থ গ্রহণের জন্য প্রতিযোগিতা করছে। গত বছর ভারতে প্রবাসীদের কাছ থেকে যে ১০ হাজার কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রা পায় তার ১০ শতাংশ আসে কেরালায়।
ভারতে এক যুগের জনসংখ্যা বৃদ্ধির শেষ যে জরিপ (২০০১-১১) করা হয়, তাতে তলানিতে ছিল কেরালা ও তার প্রতিবেশী রাজ্য তামিলনাড়ু। জাতীয় গড় আয়ু ৬৯ হলেও কেরালায় জন্মগ্রহণকারী শিশু ৭৫ বছর আয়ুর আশা করতে পারে।
জন্মহারও কম। একজন নারী গড়ে এখানে ১.৭ থেকে ১.৯টি সন্তান জন্ম দেন। ছোট পরিবারগুলো সন্তানদের শিক্ষার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়। এতে তরুণেরা ভালো সুযোগের জন্য দেশে ও দেশের বাইরে পাড়ি জমাচ্ছেন বয়স্ক মা-বাবাকে রেখে।
আন্নাম্মা জেকব তাঁর দোতলা বাড়িতে একাকী জীবন কাটাচ্ছেন কয়েক দশক ধরে। ৭৪ বছরের অন্নাম্মার স্মৃতিতে কেবল নিঃসঙ্গতা। তাঁর যন্ত্রকৌশল প্রকৌশলী স্বামী ১৯৮০-র দশকেই মারা যান। তাঁর পঞ্চাশে পা দেওয়া ছেলে দুই দশকের বেশি সময় ধরে আবুধাবিতে বাস ও কাজ করছেন। অন্নাম্মার এক মেয়ে থাকেন কয়েক মাইলের মধ্যে, তবে তাঁর স্বামী দুবাইয়ে সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে চাকরি করছেন তিন যুগ ধরে।
আন্নাম্মার নিকটতম দুই প্রতিবেশীর একজন বাড়িতে তালা দিয়ে মা-বাবাকে নিয়ে গেছে বাহরাইনে, সেখানে নার্সের কাজ করেন তিনি। অপর প্রতিবেশী দুবাই চলে গেছেন, বাড়িটা ভাড়া দিয়েছেন এক বৃদ্ধ দম্পতিকে।
তবে কুমবানাদের অনেক অধিবাসী জায়গাটি ছেড়ে চলে গেলেও ক্ষয় একে পুরোপুরি আঁকড়ে ধরেনি। ফাঁকা বাড়িগুলো নিয়মিত রং করা হয়, যেন যেকোনো দিন মানুষ আশা করছে। যদিও এ ধরনের আগমনের ঘটনা ঘটে কমই।
‘এটা খুব নিঃসঙ্গ এক জীবন। আমার শরীরও ভালো থাকে না।’ বলেন আন্নাম্মা জেকব। তবে হার্টে সমস্যা ও বাত থাকার পরও ছেলে ও নাতিদের সঙ্গে সময় কাটাতে বিদেশে পাড়ি জমান তিনি।
আন্নাম্মার বাড়ি থেকে কয়েক লেন দূরে চাক্কো মাম্মেন তাঁর কলার খামারে দিনে চার ঘণ্টা শ্রম দেন। তাঁরও হার্টের সমস্যা আছে, সঙ্গে ডায়াবেটিস। ৬৪ বছরের চাক্কো তিন দশক ওমানে কাজ করে পরে দেশে ফিরে আসেন।
পুলিশ একাকী থাকা এই বৃদ্ধদের খোঁজ-খবর নেয় নিয়মিত। তবে এখানে অপরাধের হার কম। পুলিশ জানায়, চুরির ঘটনা এখানে একেবারেই কম, কারণ মানুষ ঘরে বেশি টাকা বা মূল্যবান জিনিস রাখে না। শেষ কবে এখানে খুনের ঘটনা ঘটেছে তাও মনে করতে পারেন না তাঁরা।
‘সবকিছু মিলিয়ে খুব শান্তিপূর্ণ জায়গা এটি। আমরা কেবল প্রতারণার অভিযোগ পাই। আত্মীয়স্বজনদের মাধ্যমে প্রতারিত হন বৃদ্ধরা, কিংবা তাঁদের স্বাক্ষর নকল করে টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।’ বলেন স্থানীয় পুলিশ স্টেশনের চিফ ইন্সপেক্টর সাজিশ কুমার ভি।
শহরে অপরাধ কম হওয়ায় পুলিশ বয়স্ক ব্যক্তিদের দেখভালে বেশি সময় দিতে পারে। ২০২০ সালে একটি বাড়িতে বারবার বেল চেপে সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে পুলিশ। দেখতে পায়, ওই বাড়ির বাসিন্দায় এক বয়স্ক নারী মাটিতে পড়ে আছেন।
‘আমরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে সুস্থ হন তিনি। আমাদের আরেকটি কর্তব্য শহরের বাসিন্দাদের বৃদ্ধনিবাস বা ওল্ড হোমে নিয়ে যাওয়া। আমরা নিয়মিত বয়স্কদের খবর নিই, তাঁদের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাই।’ বলেন চিফ ইন্সপেক্টর কুমার।
শহরে হুইলচেয়ারে পৌঁছা যায় এমন তিনটি ওল্ড হোম আছে। এগুলো বেশ খোলামেলা, দরজা ও হলওয়ে প্রশস্ত। এদের একটি পাঁচতলা দালানের দ্য আলেক্সান্ডার মারথোমা মেমোরিয়াল জেরিয়াট্রিক সেন্টার। এর সঙ্গেই আছে ১৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল। এই বৃদ্ধনিবাসে ৮৫ থেকে ১০১ বছর বয়সী ১০০ জন বৃদ্ধের দেখভাল করা হয়। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগ শয্যাশায়ী, পরিবারকে মাসে ৫০ হাজার রুপি করে গুনতে হয় এই সেবার বিনিময়ে। কখনো ছেলেমেয়েরা এসে থাকেন তাঁদের সঙ্গে।
এর কাছেই ৭৫ বছরের পুরোনো ধর্মগিরি ওল্ড এজ হোম। সেখানে ৬০ জন স্থানীয় বাসিন্দার বাস, যাদের প্রত্যেকের বয়স ৬০-র বেশি।
অসুস্থ বয়স্ক মানুষ, বৃদ্ধনিবাস, শ্রমিক সংকট, তরুণদের অভিবাসন, জনসংখ্যা হ্রাস, মৃতপ্রায় শহর—এই সবকিছুই যেন এখন কুমবানাদের চিত্র।
‘জনসংখ্যাতাত্ত্বিক পরিবর্তনের এক গল্প এই শহর। শেষ পর্যন্ত গোটা ভারতের গল্প হবে এটি।’ বলেন মুম্বাইভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর পপুলেশন সায়েন্সের অধ্যাপক কে এস জেমস।
বিবিসি থেকে অনুবাদ ইশতিয়াক হাসান
আরও খবর পড়ুন:

অধ্যাপক গুভেয়া ব্রাজিলের সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি সদ্য সমাপ্ত শরৎকালীন সেমিস্টারে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে হার্ভার্ডে পড়িয়েছেন। ডিএইচএস জানিয়েছে, গুভেয়া যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে সম্মত হয়েছেন।
৮ মিনিট আগে
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে শীর্ষ সম্মেলন শুরু করেছেন। যেখানে বাণিজ্য এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চাপানো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর এই শুক্রবারের এই সম্মেলন পুতিনের ভারতে প্রথম
১ ঘণ্টা আগে
তবে বিশ্লেষক ও সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার দ্রুত অগ্রসরমাণ এই কর্মসূচি চীনকে বিরক্ত করতে পারে এবং জাপানকেও একই ধরনের সক্ষমতা অর্জনের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
২ ঘণ্টা আগে
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও...
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ হার্ভার্ড ল স্কুলের একজন অধ্যাপককে গ্রেপ্তার করেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হার্ভার্ডের অধ্যাপক ও ব্রাজিলের নাগরিক কার্লোস পর্তুগাল গুভেয়াকে বুধবার গ্রেপ্তার করেছে ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, গুভেয়ার অস্থায়ী নন-ইমিগ্রান্ট ভিসা বাতিল করার পরই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অধ্যাপক গুভেয়া ব্রাজিলের সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি সদ্য সমাপ্ত শরৎকালীন সেমিস্টারে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে হার্ভার্ডে পড়িয়েছেন। ডিএইচএস জানিয়েছে, গুভেয়া যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে সম্মত হয়েছেন। তবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। হার্ভার্ডও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অক্টোবরে অধ্যাপক গুভেয়ার বিরুদ্ধে ইহুদিদের ধর্মীয় উৎসবের আগের দিন ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের একটি সিনাগগের (ইহুদি উপাসনালয়) বাইরে পেলেট গান (ছররা গুলি) ছোড়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
ম্যাসাচুসেটসের ব্রুকলাইনে টেম্পল বেথ জিয়নের (ইহুদি উপসনালয়) কাছে গত ১ অক্টোবর সন্ধ্যায় অস্ত্র হাতে এক ব্যক্তির উপস্থিতির খবর পায় পুলিশ। পরে সেখানে গিয়ে পুলিশ গুভেয়াকে আটক করে। ওই সময়টা ছিল ইহুদিদের পবিত্র উৎসব ইয়ম কিপুরের আগের দিন। পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুভেয়া দাবি করেছিলেন, তিনি কাছাকাছি ইঁদুর মারতে পেলেট গান ব্যবহার করছিলেন।
কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন ওই ঘটনাকে ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ ঘটনা বলে আখ্যা দেয়। অন্যদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের দাবির বিপরীতে টেম্পল বেথ জিয়ন জানায়, ঘটনাটি ইহুদিবিদ্বেষ থেকে ঘটেছে বলে মনে হয় না। ঘটনাটি তদন্তের পর ব্রুকলাইন পুলিশ বিভাগও একই মত দেয়। উপসনালয়টির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, পুলিশ তাদের জানিয়েছে, গুভেয়া জানতেন না যে তিনি যেখানে থাকেন, সেখানে একটি উপাসনালয় আছে বা ওই দিন সেখানে কোনো ধর্মীয় উৎসব চলছে।
তবে গত মাসে অবৈধভাবে পেলেট গান ছোড়ার অভিযোগে দোষ স্বীকার করেন গুভোয়া। এরপর তিনি ছয় মাসের প্রিট্রায়াল প্রবেশন (বিচার পূর্ববর্তী বিশেষ ব্যবস্থা) মেনে নেন। তখন তাঁর বিরুদ্ধে আনা শান্তিভঙ্গ, বিশৃঙ্খল আচরণ ও সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগগুলো প্লিয়া ডিলের (ফৌজদারি আইনের একটি প্রক্রিয়া) অংশ হিসেবে বাতিল করা হয়।
কিন্তু গত বুধবার ছয় মাসের প্রিট্রায়াল প্রবেশন শেষ হওয়ার আগেই অস্থায়ী নন-ইমিগ্রান্ট ভিসা বাতিল করে অধ্যাপক গুভেয়াকে একটি ভিত্তিহীন অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এদিকে গুভেয়ার গ্রেপ্তারের খবর এমন সময়ে এল, যখন ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয়টির সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাতে চাপ দিচ্ছে।
হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে—বিশ্ববিদ্যালয়টি ইহুদিবিদ্বেষ মোকাবিলায় যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি এবং ক্যাম্পাসে ইহুদি শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ নিয়ে হার্ভার্ড কিছু সরকারি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে মামলাও করেছে। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত সেপ্টেম্বরে একজন বিচারক রায় দেন যে ট্রাম্প প্রশাসন বেআইনিভাবে হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দ করা ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি গবেষণা অনুদান বাতিল করেছিল।

মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ হার্ভার্ড ল স্কুলের একজন অধ্যাপককে গ্রেপ্তার করেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হার্ভার্ডের অধ্যাপক ও ব্রাজিলের নাগরিক কার্লোস পর্তুগাল গুভেয়াকে বুধবার গ্রেপ্তার করেছে ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, গুভেয়ার অস্থায়ী নন-ইমিগ্রান্ট ভিসা বাতিল করার পরই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অধ্যাপক গুভেয়া ব্রাজিলের সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি সদ্য সমাপ্ত শরৎকালীন সেমিস্টারে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে হার্ভার্ডে পড়িয়েছেন। ডিএইচএস জানিয়েছে, গুভেয়া যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে সম্মত হয়েছেন। তবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। হার্ভার্ডও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অক্টোবরে অধ্যাপক গুভেয়ার বিরুদ্ধে ইহুদিদের ধর্মীয় উৎসবের আগের দিন ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের একটি সিনাগগের (ইহুদি উপাসনালয়) বাইরে পেলেট গান (ছররা গুলি) ছোড়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
ম্যাসাচুসেটসের ব্রুকলাইনে টেম্পল বেথ জিয়নের (ইহুদি উপসনালয়) কাছে গত ১ অক্টোবর সন্ধ্যায় অস্ত্র হাতে এক ব্যক্তির উপস্থিতির খবর পায় পুলিশ। পরে সেখানে গিয়ে পুলিশ গুভেয়াকে আটক করে। ওই সময়টা ছিল ইহুদিদের পবিত্র উৎসব ইয়ম কিপুরের আগের দিন। পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুভেয়া দাবি করেছিলেন, তিনি কাছাকাছি ইঁদুর মারতে পেলেট গান ব্যবহার করছিলেন।
কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন ওই ঘটনাকে ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ ঘটনা বলে আখ্যা দেয়। অন্যদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের দাবির বিপরীতে টেম্পল বেথ জিয়ন জানায়, ঘটনাটি ইহুদিবিদ্বেষ থেকে ঘটেছে বলে মনে হয় না। ঘটনাটি তদন্তের পর ব্রুকলাইন পুলিশ বিভাগও একই মত দেয়। উপসনালয়টির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, পুলিশ তাদের জানিয়েছে, গুভেয়া জানতেন না যে তিনি যেখানে থাকেন, সেখানে একটি উপাসনালয় আছে বা ওই দিন সেখানে কোনো ধর্মীয় উৎসব চলছে।
তবে গত মাসে অবৈধভাবে পেলেট গান ছোড়ার অভিযোগে দোষ স্বীকার করেন গুভোয়া। এরপর তিনি ছয় মাসের প্রিট্রায়াল প্রবেশন (বিচার পূর্ববর্তী বিশেষ ব্যবস্থা) মেনে নেন। তখন তাঁর বিরুদ্ধে আনা শান্তিভঙ্গ, বিশৃঙ্খল আচরণ ও সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগগুলো প্লিয়া ডিলের (ফৌজদারি আইনের একটি প্রক্রিয়া) অংশ হিসেবে বাতিল করা হয়।
কিন্তু গত বুধবার ছয় মাসের প্রিট্রায়াল প্রবেশন শেষ হওয়ার আগেই অস্থায়ী নন-ইমিগ্রান্ট ভিসা বাতিল করে অধ্যাপক গুভেয়াকে একটি ভিত্তিহীন অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এদিকে গুভেয়ার গ্রেপ্তারের খবর এমন সময়ে এল, যখন ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয়টির সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাতে চাপ দিচ্ছে।
হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে—বিশ্ববিদ্যালয়টি ইহুদিবিদ্বেষ মোকাবিলায় যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি এবং ক্যাম্পাসে ইহুদি শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ নিয়ে হার্ভার্ড কিছু সরকারি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে মামলাও করেছে। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত সেপ্টেম্বরে একজন বিচারক রায় দেন যে ট্রাম্প প্রশাসন বেআইনিভাবে হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দ করা ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি গবেষণা অনুদান বাতিল করেছিল।

শুনে অবাক হবেন, ভারতের মতো জনবহুল দেশের কোনো কোনো শহর ধুঁকছে জনসংখ্যা সংকটে। এসব জায়গায় জন্মহার যেমন কম, তেমনি অনেকেই শহর ছেড়েছেন উন্নত জীবনের আশায়। অনেকটা মৃত শহর বা ঘোস্ট টাউনে পরিণত হয়েছে এগুলো, যেখানে বাস মূলত বয়স্কদের। এমনই এক জায়গা কেরালার কুমবানাদ।
২৮ মার্চ ২০২৩
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে শীর্ষ সম্মেলন শুরু করেছেন। যেখানে বাণিজ্য এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চাপানো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর এই শুক্রবারের এই সম্মেলন পুতিনের ভারতে প্রথম
১ ঘণ্টা আগে
তবে বিশ্লেষক ও সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার দ্রুত অগ্রসরমাণ এই কর্মসূচি চীনকে বিরক্ত করতে পারে এবং জাপানকেও একই ধরনের সক্ষমতা অর্জনের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
২ ঘণ্টা আগে
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও...
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে শীর্ষ সম্মেলন শুরু করেছেন। যেখানে বাণিজ্য এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চাপানো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর এই শুক্রবারের এই সম্মেলন পুতিনের ভারতে প্রথম সফর। এই সম্মেলন এক সময় হচ্ছে যখন ভারত রুশ তেল কেনার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের মুখোমুখি।
আলোচনা শুরুর সময় মোদি পুতিনকে বলেন, ‘ভারত নিরপেক্ষ নয়—ভারতের একটি অবস্থান আছে, আর সেই অবস্থানটি হলো শান্তির পক্ষে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শান্তির জন্য নেওয়া সমস্ত প্রচেষ্টাকে সমর্থন করি এবং শান্তির জন্য গ্রহণ করা প্রতিটি উদ্যোগের পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াই।’
জবাবে পুতিন সংঘাত মেটানোর লক্ষ্যে মোদির মনোযোগ এবং প্রচেষ্টার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানান। পুতিন বলেন, ‘ইউক্রেনে কী ঘটছে এবং এই সংকটের সম্ভাব্য শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে আমরা অন্যান্য কয়েকটি শরিক, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ যৌথভাবে কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছি—তা নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার সুযোগ আমরা পেয়েছি এবং আপনি আমাকে সেই সুযোগ করে দিয়েছেন।’
পুতিনের এই সফর এমন এক সময়ে এল—যখন মস্কো ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে চাইছে। ভারত রাশিয়ার অস্ত্রের প্রধান ক্রেতা। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের সর্বোচ্চ ৬৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে তাঁরা ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ১০০ বিলিয়ন ডলারে বাড়াতে চান।
শুক্রবার পুতিনের সফরসূচি শুরু হয় ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে যাওয়ার মাধ্যমে, যেখানে ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। পুতিনকে স্বাগত জানাতে মুর্মুর সঙ্গে মোদিও উপস্থিত ছিলেন এবং সেখানে পুতিনকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। এরপর পুতিন রাজঘাটে গিয়ে উপনিবেশবিরোধী আন্দোলনের নেতা মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিসৌধে মাল্যদান করেন।
বৃহস্পতিবার মোদি উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে ব্যক্তিগতভাবে বিমানবন্দরে হাজির হয়ে পুতিনকে আলিঙ্গন ও হাত মিলিয়ে স্বাগত জানান। পরে তিনি রুশ নেতাকে তাঁর বাসভবনে এক নৈশভোজে আপ্যায়ন করেন। দিল্লি থেকে আল–জাজিরার সাংবাদিক নেহা পুনিয়া মন্তব্য করেন, ‘অনেক আলিঙ্গন ও হাত মেলানো হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন নজর শুক্রবারের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের দিকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দুই নেতা এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করবেন যে—রুশ নেতা একঘরে নন এবং পশ্চিমা দেশগুলির চাপ সত্ত্বেও ভারতের মতো দেশ তাঁকে স্বাগত জানায়।’
২০২৩ সালে ইউক্রেন যুদ্ধের সময় ইউক্রেনীয় শিশুদের বেআইনিভাবে নির্বাসনের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। ভারত আইসিসির সদস্য রাষ্ট্র নয় এবং তার চুক্তি বা নিয়মের দ্বারা আবদ্ধও নয়। সেই কারণে পুতিন গ্রেপ্তারের ভয় ছাড়াই ভারতে সফর করতে পেরেছেন।
রুশ নেতা স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার রাত ৯টায় ভারত ছাড়বেন। রাশিয়া এবং ভারতের মধ্যে ২৫ বছর ধরে কৌশলগত শরিকানা রয়েছে, যা রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে পুতিনের প্রথম বছর থেকেই শুরু। তবে, রাশিয়ার ২০২২ সালের আগ্রাসনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া উভয়ের সঙ্গেই সম্পর্ক বজায় রাখার এই ভারসাম্যের কাজটি আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। রুশ কার্যক্রমের কারণে নেতাদের বার্ষিক সফরের বহুদিনের প্রথা ব্যাহত হয়। তবে গত বছর মোদির রাশিয়া সফরের মাধ্যমে তা কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
যুদ্ধের মধ্যে পশ্চিমা দেশগুলো যখন রুশ অপরিশোধিত তেলের ওপর তাদের নির্ভরতা কমাতে শুরু করে, ভারত তখন তার ক্রয় বাড়ায়। কিন্তু আগস্টে ট্রাম্প পুতিনকে যুদ্ধবিরতি মানতে চাপ দেওয়ার জন্য, ভারতের রুশ তেল কেনার শাস্তিস্বরূপ ভারতীয় পণ্যের ওপর পূর্বে আরোপিত ২৫ শতাংশ শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করে দেন। তা সত্ত্বেও ভারত রুশ তেল কেনা চালিয়ে যায়।
তবে এখন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে—নভেম্বরে রুশ তেল কোম্পানি রোজনেফ্ট এবং ল্যুকওয়েলের ওপর ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়, সঙ্গে এই সংস্থাগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যকারী অন্য দেশের সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞার হুমকি আসে। ভারতের মোট তেল আমদানির প্রায় ৬০ শতাংশ আসে এই দুটি কোম্পানি থেকে।
নয়াদিল্লি জানিয়েছে, তাদের অন্যায়ভাবে নিশানা করা হচ্ছে। তারা উল্লেখ করে যে—পশ্চিমা দেশগুলোও যখন তাদের স্বার্থে প্রয়োজন হয়, তখন মস্কোর সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যায়। নয়াদিল্লি আসার আগে এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় সাংবাদিকদের কাছে পুতিনও একইরকম যুক্তি দেন। তিনি বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেরাই তাদের নিজস্ব পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য এখনো আমাদের কাছ থেকে পারমাণবিক জ্বালানি কেনে।’ তিনি আরও যোগ করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যদি রুশ জ্বালানি কেনার অধিকার থাকে, তবে ভারতেরও ‘একই সুবিধা’ পাওয়া উচিত।
পুতিন ভারতকে আরও রুশ অস্ত্র কেনার জন্য চাপ দেবেন বলেও আশা করা হচ্ছে। এই ক্ষেত্রেও নয়াদিল্লিকে ওয়াশিংটনের চাপের মুখে পড়তে হয়েছে। মস্কো ভারতকে আরও এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং এসইউ-৫৭ স্টেল্থ যুদ্ধবিমান বিক্রি করার আশা করছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের জন্য চাপ দিতে এই শুক্রবারের বৈঠকের মাত্র কয়েক দিন আগেই পুতিন মস্কোয় মার্কিন এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেখা করেন। সেই বৈঠকের পর উভয় পক্ষই অগ্রগতির প্রশংসা করে, যদিও কোনো যুগান্তকারী সমাধান হয়নি। বৃহস্পতিবার মার্কিন কর্মকর্তারা ইউক্রেনের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন। ভারত যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার নিন্দা করা থেকে বিরত থেকেছে এবং আলাপ-আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমে শান্তির আহ্বান জানিয়েছে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে শীর্ষ সম্মেলন শুরু করেছেন। যেখানে বাণিজ্য এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চাপানো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর এই শুক্রবারের এই সম্মেলন পুতিনের ভারতে প্রথম সফর। এই সম্মেলন এক সময় হচ্ছে যখন ভারত রুশ তেল কেনার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের মুখোমুখি।
আলোচনা শুরুর সময় মোদি পুতিনকে বলেন, ‘ভারত নিরপেক্ষ নয়—ভারতের একটি অবস্থান আছে, আর সেই অবস্থানটি হলো শান্তির পক্ষে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শান্তির জন্য নেওয়া সমস্ত প্রচেষ্টাকে সমর্থন করি এবং শান্তির জন্য গ্রহণ করা প্রতিটি উদ্যোগের পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াই।’
জবাবে পুতিন সংঘাত মেটানোর লক্ষ্যে মোদির মনোযোগ এবং প্রচেষ্টার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানান। পুতিন বলেন, ‘ইউক্রেনে কী ঘটছে এবং এই সংকটের সম্ভাব্য শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে আমরা অন্যান্য কয়েকটি শরিক, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ যৌথভাবে কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছি—তা নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার সুযোগ আমরা পেয়েছি এবং আপনি আমাকে সেই সুযোগ করে দিয়েছেন।’
পুতিনের এই সফর এমন এক সময়ে এল—যখন মস্কো ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে চাইছে। ভারত রাশিয়ার অস্ত্রের প্রধান ক্রেতা। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের সর্বোচ্চ ৬৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে তাঁরা ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ১০০ বিলিয়ন ডলারে বাড়াতে চান।
শুক্রবার পুতিনের সফরসূচি শুরু হয় ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে যাওয়ার মাধ্যমে, যেখানে ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। পুতিনকে স্বাগত জানাতে মুর্মুর সঙ্গে মোদিও উপস্থিত ছিলেন এবং সেখানে পুতিনকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। এরপর পুতিন রাজঘাটে গিয়ে উপনিবেশবিরোধী আন্দোলনের নেতা মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিসৌধে মাল্যদান করেন।
বৃহস্পতিবার মোদি উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে ব্যক্তিগতভাবে বিমানবন্দরে হাজির হয়ে পুতিনকে আলিঙ্গন ও হাত মিলিয়ে স্বাগত জানান। পরে তিনি রুশ নেতাকে তাঁর বাসভবনে এক নৈশভোজে আপ্যায়ন করেন। দিল্লি থেকে আল–জাজিরার সাংবাদিক নেহা পুনিয়া মন্তব্য করেন, ‘অনেক আলিঙ্গন ও হাত মেলানো হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন নজর শুক্রবারের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের দিকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দুই নেতা এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করবেন যে—রুশ নেতা একঘরে নন এবং পশ্চিমা দেশগুলির চাপ সত্ত্বেও ভারতের মতো দেশ তাঁকে স্বাগত জানায়।’
২০২৩ সালে ইউক্রেন যুদ্ধের সময় ইউক্রেনীয় শিশুদের বেআইনিভাবে নির্বাসনের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। ভারত আইসিসির সদস্য রাষ্ট্র নয় এবং তার চুক্তি বা নিয়মের দ্বারা আবদ্ধও নয়। সেই কারণে পুতিন গ্রেপ্তারের ভয় ছাড়াই ভারতে সফর করতে পেরেছেন।
রুশ নেতা স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার রাত ৯টায় ভারত ছাড়বেন। রাশিয়া এবং ভারতের মধ্যে ২৫ বছর ধরে কৌশলগত শরিকানা রয়েছে, যা রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে পুতিনের প্রথম বছর থেকেই শুরু। তবে, রাশিয়ার ২০২২ সালের আগ্রাসনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া উভয়ের সঙ্গেই সম্পর্ক বজায় রাখার এই ভারসাম্যের কাজটি আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। রুশ কার্যক্রমের কারণে নেতাদের বার্ষিক সফরের বহুদিনের প্রথা ব্যাহত হয়। তবে গত বছর মোদির রাশিয়া সফরের মাধ্যমে তা কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
যুদ্ধের মধ্যে পশ্চিমা দেশগুলো যখন রুশ অপরিশোধিত তেলের ওপর তাদের নির্ভরতা কমাতে শুরু করে, ভারত তখন তার ক্রয় বাড়ায়। কিন্তু আগস্টে ট্রাম্প পুতিনকে যুদ্ধবিরতি মানতে চাপ দেওয়ার জন্য, ভারতের রুশ তেল কেনার শাস্তিস্বরূপ ভারতীয় পণ্যের ওপর পূর্বে আরোপিত ২৫ শতাংশ শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করে দেন। তা সত্ত্বেও ভারত রুশ তেল কেনা চালিয়ে যায়।
তবে এখন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে—নভেম্বরে রুশ তেল কোম্পানি রোজনেফ্ট এবং ল্যুকওয়েলের ওপর ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়, সঙ্গে এই সংস্থাগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যকারী অন্য দেশের সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞার হুমকি আসে। ভারতের মোট তেল আমদানির প্রায় ৬০ শতাংশ আসে এই দুটি কোম্পানি থেকে।
নয়াদিল্লি জানিয়েছে, তাদের অন্যায়ভাবে নিশানা করা হচ্ছে। তারা উল্লেখ করে যে—পশ্চিমা দেশগুলোও যখন তাদের স্বার্থে প্রয়োজন হয়, তখন মস্কোর সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যায়। নয়াদিল্লি আসার আগে এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় সাংবাদিকদের কাছে পুতিনও একইরকম যুক্তি দেন। তিনি বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেরাই তাদের নিজস্ব পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য এখনো আমাদের কাছ থেকে পারমাণবিক জ্বালানি কেনে।’ তিনি আরও যোগ করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যদি রুশ জ্বালানি কেনার অধিকার থাকে, তবে ভারতেরও ‘একই সুবিধা’ পাওয়া উচিত।
পুতিন ভারতকে আরও রুশ অস্ত্র কেনার জন্য চাপ দেবেন বলেও আশা করা হচ্ছে। এই ক্ষেত্রেও নয়াদিল্লিকে ওয়াশিংটনের চাপের মুখে পড়তে হয়েছে। মস্কো ভারতকে আরও এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং এসইউ-৫৭ স্টেল্থ যুদ্ধবিমান বিক্রি করার আশা করছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের জন্য চাপ দিতে এই শুক্রবারের বৈঠকের মাত্র কয়েক দিন আগেই পুতিন মস্কোয় মার্কিন এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেখা করেন। সেই বৈঠকের পর উভয় পক্ষই অগ্রগতির প্রশংসা করে, যদিও কোনো যুগান্তকারী সমাধান হয়নি। বৃহস্পতিবার মার্কিন কর্মকর্তারা ইউক্রেনের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন। ভারত যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার নিন্দা করা থেকে বিরত থেকেছে এবং আলাপ-আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমে শান্তির আহ্বান জানিয়েছে।

শুনে অবাক হবেন, ভারতের মতো জনবহুল দেশের কোনো কোনো শহর ধুঁকছে জনসংখ্যা সংকটে। এসব জায়গায় জন্মহার যেমন কম, তেমনি অনেকেই শহর ছেড়েছেন উন্নত জীবনের আশায়। অনেকটা মৃত শহর বা ঘোস্ট টাউনে পরিণত হয়েছে এগুলো, যেখানে বাস মূলত বয়স্কদের। এমনই এক জায়গা কেরালার কুমবানাদ।
২৮ মার্চ ২০২৩
অধ্যাপক গুভেয়া ব্রাজিলের সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি সদ্য সমাপ্ত শরৎকালীন সেমিস্টারে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে হার্ভার্ডে পড়িয়েছেন। ডিএইচএস জানিয়েছে, গুভেয়া যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে সম্মত হয়েছেন।
৮ মিনিট আগে
তবে বিশ্লেষক ও সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার দ্রুত অগ্রসরমাণ এই কর্মসূচি চীনকে বিরক্ত করতে পারে এবং জাপানকেও একই ধরনের সক্ষমতা অর্জনের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
২ ঘণ্টা আগে
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও...
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনের পর দক্ষিণ কোরিয়ার পরমাণুচালিত সাবমেরিন প্রকল্প নতুন গতি পেয়েছে। দীর্ঘদিনের মার্কিন আপত্তি দূর হওয়ায় এই উদ্যোগ এখন এশিয়ার নিরাপত্তাকাঠামো পাল্টে দিতে পারে এবং পানির নিচে নতুন এক অস্ত্র প্রতিযোগিতা উসকে দিতে পারে।
উত্তর কোরিয়াকে মোকাবিলায় বহুদিন ধরে পরমাণুচালিত সাবমেরিনের অভিজাত ক্লাবে যোগ দিতে চেয়েছে সিউল। ট্রাম্পের সম্মতি পাওয়ায় দুই দেশের পারমাণবিক চুক্তির আওতায় জ্বালানির প্রবেশাধিকার মিলেছে, যা এত দিন ছিল বড় বাধা।
তবে বিশ্লেষক ও সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার দ্রুত অগ্রসরমাণ এই কর্মসূচি চীনকে বিরক্ত করতে পারে এবং জাপানকেও একই ধরনের সক্ষমতা অর্জনের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ার নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সাবমেরিন ক্যাপ্টেন চোই ইল বলেন, সাবমেরিন অত্যন্ত কার্যকর আক্রমণাত্মক অস্ত্র। তাই এই অঞ্চলে অস্ত্র প্রতিযোগিতা অনিবার্য।
সিউলের যুক্তি, উত্তর কোরিয়ার পানির নিচে থাকা হুমকি, বিশেষ করে সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলায় পরমাণুচালিত সাবমেরিন অপরিহার্য।
দক্ষিণ কোরিয়া অবশ্য বারবার বলছে, পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করবে না তারা।
গত বুধবার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক থেকে পাওয়া এই চুক্তিকে ‘বড় ধরনের সাফল্য’ হিসেবে অভিহিত করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিউং।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাব্যবস্থার নমনীয়তা বাড়াবে।
এদিকে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, তারাও একই ধরনের সক্ষমতা বিকাশে মনোনিবেশ করেছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গত মার্চে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখায়, কিম জং-উন একটি তথাকথিত পরমাণুচালিত সাবমেরিন পরিদর্শন করেছেন।
উত্তর কোরিয়ার কর্মসূচি কতটা এগিয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। তবে কিছু বিশ্লেষকের সন্দেহ, পিয়ংইয়ং হয়তো রাশিয়ার সহায়তা পাচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, তারা প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করছে, তবে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনের পর দক্ষিণ কোরিয়ার পরমাণুচালিত সাবমেরিন প্রকল্প নতুন গতি পেয়েছে। দীর্ঘদিনের মার্কিন আপত্তি দূর হওয়ায় এই উদ্যোগ এখন এশিয়ার নিরাপত্তাকাঠামো পাল্টে দিতে পারে এবং পানির নিচে নতুন এক অস্ত্র প্রতিযোগিতা উসকে দিতে পারে।
উত্তর কোরিয়াকে মোকাবিলায় বহুদিন ধরে পরমাণুচালিত সাবমেরিনের অভিজাত ক্লাবে যোগ দিতে চেয়েছে সিউল। ট্রাম্পের সম্মতি পাওয়ায় দুই দেশের পারমাণবিক চুক্তির আওতায় জ্বালানির প্রবেশাধিকার মিলেছে, যা এত দিন ছিল বড় বাধা।
তবে বিশ্লেষক ও সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার দ্রুত অগ্রসরমাণ এই কর্মসূচি চীনকে বিরক্ত করতে পারে এবং জাপানকেও একই ধরনের সক্ষমতা অর্জনের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ার নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সাবমেরিন ক্যাপ্টেন চোই ইল বলেন, সাবমেরিন অত্যন্ত কার্যকর আক্রমণাত্মক অস্ত্র। তাই এই অঞ্চলে অস্ত্র প্রতিযোগিতা অনিবার্য।
সিউলের যুক্তি, উত্তর কোরিয়ার পানির নিচে থাকা হুমকি, বিশেষ করে সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলায় পরমাণুচালিত সাবমেরিন অপরিহার্য।
দক্ষিণ কোরিয়া অবশ্য বারবার বলছে, পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করবে না তারা।
গত বুধবার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক থেকে পাওয়া এই চুক্তিকে ‘বড় ধরনের সাফল্য’ হিসেবে অভিহিত করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিউং।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাব্যবস্থার নমনীয়তা বাড়াবে।
এদিকে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, তারাও একই ধরনের সক্ষমতা বিকাশে মনোনিবেশ করেছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গত মার্চে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখায়, কিম জং-উন একটি তথাকথিত পরমাণুচালিত সাবমেরিন পরিদর্শন করেছেন।
উত্তর কোরিয়ার কর্মসূচি কতটা এগিয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। তবে কিছু বিশ্লেষকের সন্দেহ, পিয়ংইয়ং হয়তো রাশিয়ার সহায়তা পাচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, তারা প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করছে, তবে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।

শুনে অবাক হবেন, ভারতের মতো জনবহুল দেশের কোনো কোনো শহর ধুঁকছে জনসংখ্যা সংকটে। এসব জায়গায় জন্মহার যেমন কম, তেমনি অনেকেই শহর ছেড়েছেন উন্নত জীবনের আশায়। অনেকটা মৃত শহর বা ঘোস্ট টাউনে পরিণত হয়েছে এগুলো, যেখানে বাস মূলত বয়স্কদের। এমনই এক জায়গা কেরালার কুমবানাদ।
২৮ মার্চ ২০২৩
অধ্যাপক গুভেয়া ব্রাজিলের সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি সদ্য সমাপ্ত শরৎকালীন সেমিস্টারে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে হার্ভার্ডে পড়িয়েছেন। ডিএইচএস জানিয়েছে, গুভেয়া যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে সম্মত হয়েছেন।
৮ মিনিট আগে
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে শীর্ষ সম্মেলন শুরু করেছেন। যেখানে বাণিজ্য এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চাপানো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর এই শুক্রবারের এই সম্মেলন পুতিনের ভারতে প্রথম
১ ঘণ্টা আগে
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও...
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পৃথিবী যখন খেলায় মত্ত, তখন তিনি বন্দী ছিলেন অন্ধকারে। ছয় বছর বয়সে ঘরবন্দী হওয়া লিসা ২০ বছর পর সেই দরজা পেরিয়ে বাইরে এলেও আলো দেখার ক্ষমতা প্রায় হারিয়ে ফেলেছেন।
কিছু গল্প ক্ষতের মতো করে উন্মোচিত হয়। কিছু শৈশব যেন কোনোদিনই শুরু হয় না। লিসার জীবন তেমনই এক গল্প। নিঃশব্দে হারিয়ে যাওয়া এক শৈশবের, পরিস্থিতিতে মুছে যাওয়া এক শিশুর এবং এক নারীর।
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও ছিল শুধু অন্ধকার।
ছায়াই ছিল তাঁর পরিচয়। কথোপকথন বলতে ছিল শুধু দরজার নিচ দিয়ে ঠেলে দেওয়া থালাবাটির শব্দ। দুই দশক ধরে বন্দিদশার পর এখন তিনি নিজের নামে সাড়া দিতেও হিমশিম খান।
লিসার বন্দিত্ব শুরু হয়েছিল না লোহার শিক দিয়ে, না শিকল দিয়ে—শুরু হয়েছিল আতঙ্ক দিয়ে।
২০০০ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় গ্রামের এক ব্যক্তি তাঁকে হত্যার হুমকি দেন। সেই কথায় আতঙ্ক এত গভীর হয়, তিনি নিজেকে গুটিয়ে ফেলেন নীরবতায়। এরই মধ্যে মারা যান তাঁর মা। কৃষক বাবা হয়ে পড়েন দুর্বল ও আতঙ্কিত। কোনো সহায়তা নেই, নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই, কারও কাছে ভরসা চাওয়ার নেই। তাই তিনি এমন এক সিদ্ধান্ত নেন, যা মেয়ের জীবনের পরবর্তী ২০ বছর নির্ধারণ করে দেয়।
তিনি মেয়েকে মাটির ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন। বলেন, অন্ধকারই তাঁকে বিপদ থেকে রক্ষা করবে। জানালাবিহীন একটি ঘরই হয়ে ওঠে তাঁর পৃথিবী। না সূর্যের আলো। না কোনো কথা। না কোনো মানুষের স্পর্শ।
শুধু দরজায় রেখে যাওয়া এক প্লেট খাবার আর প্রতিদিন একটু একটু করে সংকুচিত হয়ে যাওয়া জীবনের প্রতিধ্বনি।
যে ব্যবস্থা তাঁকে রক্ষা করবে ভাবা হয়েছিল, তা-ই শেষমেশ তাঁকে সম্পূর্ণ গ্রাস করে নেয়।
সমাজকল্যাণ দপ্তরের দল যখন কুঁড়েঘরে প্রবেশ করে, তারা দেখতে পায় এক নারীকে, যাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব।
চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘদিন প্রাকৃতিক আলো থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে লিসার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। তাঁর মানসিক বিকাশও গুরুতরভাবে ব্যাহত হয়েছে। আচরণ বয়সের তুলনায় অনেক কম বয়সী শিশুর মতো। প্রতিটি শব্দে ভয় পান। যেকোনো স্পর্শে চমকে ওঠেন।
উদ্ধারের পর লিসাকে নিয়ে যাওয়া হয় জগদলপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, যেখানে তাঁর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার বিস্তারিত পরীক্ষা শুরু হয়। প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, লিসার শৈশব থেমে যায় প্রবল ট্রমায় আর প্রাপ্তবয়স্ক জীবন গঠিত হয়েছে ইন্দ্রিয়ের বঞ্চনায়।
সমাজকল্যাণ দপ্তর পুরো ঘটনায় এরই মধ্যে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে।
কর্তৃপক্ষ লিসার পরিবার ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে—কেন তিনি ২০ বছর ধরে বন্দী ছিলেন এবং এই বন্দিত্ব আইনবহির্ভূত আটক হিসেবে বিবেচিত হবে কি না।
জেলার প্রশাসন কর্মকর্তারা বলেন, ‘তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়লে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
এ ছাড়া কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছে, লিসার বাবা কি ভয়ে ও অজ্ঞতার কারণে স্কুল, পঞ্চায়েত বা স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে কোনো সাহায্য চাননি?
লিসা বর্তমানে মধ্যপ্রদেশের এক আশ্রমে আছেন, যেখানে সেবাকর্মী ও কাউন্সেলররা তাঁকে নতুন করে জীবন খুঁজে পেতে সহায়তা করছেন।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

পৃথিবী যখন খেলায় মত্ত, তখন তিনি বন্দী ছিলেন অন্ধকারে। ছয় বছর বয়সে ঘরবন্দী হওয়া লিসা ২০ বছর পর সেই দরজা পেরিয়ে বাইরে এলেও আলো দেখার ক্ষমতা প্রায় হারিয়ে ফেলেছেন।
কিছু গল্প ক্ষতের মতো করে উন্মোচিত হয়। কিছু শৈশব যেন কোনোদিনই শুরু হয় না। লিসার জীবন তেমনই এক গল্প। নিঃশব্দে হারিয়ে যাওয়া এক শৈশবের, পরিস্থিতিতে মুছে যাওয়া এক শিশুর এবং এক নারীর।
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও ছিল শুধু অন্ধকার।
ছায়াই ছিল তাঁর পরিচয়। কথোপকথন বলতে ছিল শুধু দরজার নিচ দিয়ে ঠেলে দেওয়া থালাবাটির শব্দ। দুই দশক ধরে বন্দিদশার পর এখন তিনি নিজের নামে সাড়া দিতেও হিমশিম খান।
লিসার বন্দিত্ব শুরু হয়েছিল না লোহার শিক দিয়ে, না শিকল দিয়ে—শুরু হয়েছিল আতঙ্ক দিয়ে।
২০০০ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় গ্রামের এক ব্যক্তি তাঁকে হত্যার হুমকি দেন। সেই কথায় আতঙ্ক এত গভীর হয়, তিনি নিজেকে গুটিয়ে ফেলেন নীরবতায়। এরই মধ্যে মারা যান তাঁর মা। কৃষক বাবা হয়ে পড়েন দুর্বল ও আতঙ্কিত। কোনো সহায়তা নেই, নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই, কারও কাছে ভরসা চাওয়ার নেই। তাই তিনি এমন এক সিদ্ধান্ত নেন, যা মেয়ের জীবনের পরবর্তী ২০ বছর নির্ধারণ করে দেয়।
তিনি মেয়েকে মাটির ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন। বলেন, অন্ধকারই তাঁকে বিপদ থেকে রক্ষা করবে। জানালাবিহীন একটি ঘরই হয়ে ওঠে তাঁর পৃথিবী। না সূর্যের আলো। না কোনো কথা। না কোনো মানুষের স্পর্শ।
শুধু দরজায় রেখে যাওয়া এক প্লেট খাবার আর প্রতিদিন একটু একটু করে সংকুচিত হয়ে যাওয়া জীবনের প্রতিধ্বনি।
যে ব্যবস্থা তাঁকে রক্ষা করবে ভাবা হয়েছিল, তা-ই শেষমেশ তাঁকে সম্পূর্ণ গ্রাস করে নেয়।
সমাজকল্যাণ দপ্তরের দল যখন কুঁড়েঘরে প্রবেশ করে, তারা দেখতে পায় এক নারীকে, যাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব।
চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘদিন প্রাকৃতিক আলো থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে লিসার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। তাঁর মানসিক বিকাশও গুরুতরভাবে ব্যাহত হয়েছে। আচরণ বয়সের তুলনায় অনেক কম বয়সী শিশুর মতো। প্রতিটি শব্দে ভয় পান। যেকোনো স্পর্শে চমকে ওঠেন।
উদ্ধারের পর লিসাকে নিয়ে যাওয়া হয় জগদলপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, যেখানে তাঁর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার বিস্তারিত পরীক্ষা শুরু হয়। প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, লিসার শৈশব থেমে যায় প্রবল ট্রমায় আর প্রাপ্তবয়স্ক জীবন গঠিত হয়েছে ইন্দ্রিয়ের বঞ্চনায়।
সমাজকল্যাণ দপ্তর পুরো ঘটনায় এরই মধ্যে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে।
কর্তৃপক্ষ লিসার পরিবার ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে—কেন তিনি ২০ বছর ধরে বন্দী ছিলেন এবং এই বন্দিত্ব আইনবহির্ভূত আটক হিসেবে বিবেচিত হবে কি না।
জেলার প্রশাসন কর্মকর্তারা বলেন, ‘তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়লে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
এ ছাড়া কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছে, লিসার বাবা কি ভয়ে ও অজ্ঞতার কারণে স্কুল, পঞ্চায়েত বা স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে কোনো সাহায্য চাননি?
লিসা বর্তমানে মধ্যপ্রদেশের এক আশ্রমে আছেন, যেখানে সেবাকর্মী ও কাউন্সেলররা তাঁকে নতুন করে জীবন খুঁজে পেতে সহায়তা করছেন।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

শুনে অবাক হবেন, ভারতের মতো জনবহুল দেশের কোনো কোনো শহর ধুঁকছে জনসংখ্যা সংকটে। এসব জায়গায় জন্মহার যেমন কম, তেমনি অনেকেই শহর ছেড়েছেন উন্নত জীবনের আশায়। অনেকটা মৃত শহর বা ঘোস্ট টাউনে পরিণত হয়েছে এগুলো, যেখানে বাস মূলত বয়স্কদের। এমনই এক জায়গা কেরালার কুমবানাদ।
২৮ মার্চ ২০২৩
অধ্যাপক গুভেয়া ব্রাজিলের সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি সদ্য সমাপ্ত শরৎকালীন সেমিস্টারে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে হার্ভার্ডে পড়িয়েছেন। ডিএইচএস জানিয়েছে, গুভেয়া যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে সম্মত হয়েছেন।
৮ মিনিট আগে
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে শীর্ষ সম্মেলন শুরু করেছেন। যেখানে বাণিজ্য এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চাপানো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর এই শুক্রবারের এই সম্মেলন পুতিনের ভারতে প্রথম
১ ঘণ্টা আগে
তবে বিশ্লেষক ও সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার দ্রুত অগ্রসরমাণ এই কর্মসূচি চীনকে বিরক্ত করতে পারে এবং জাপানকেও একই ধরনের সক্ষমতা অর্জনের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
২ ঘণ্টা আগে