চাঁদপুরে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে নৌবাহিনীর জাহাজ ‘মেঘনা’ সর্ব সাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে বেলা ৪টা পর্যন্ত শহরের পুরোনো লঞ্চঘাটসংলগ্ন বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে জাহাজটি পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
পরিদর্শনে আসা শহরের হাজি মহসীন রোডের বাসিন্দা, কলেজ শিক্ষার্থী তানজিনা তাবাচ্ছুম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল যুদ্ধজাহাজ দেখার। কয়েকজন সহপাঠী নিয়ে ঘুরে দেখেছি। যাঁরা এটি পরিচালনা করেন, তাঁদের মধ্যে একজন আমাদের জাহাজের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন। এটি আমাদের জন্য বড় চমৎকার অভিজ্ঞতা।’
বড় স্টেশন এলাকার ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আসলে অনেক জাহাজ আমাদের নদীতে চলে। কিন্তু জাহাজের ভেতরে প্রবেশ করে দেখার সুযোগ হয় না। স্বাধীনতা দিবস হওয়ার কারণে জাহাজের অনেক কিছু দেখার সুযোগ হয়েছে। জাহাজ দেখার জন্য শিশু-কিশোর অনেকেই এসেছে। তবে এখানে দেখার জন্য শৃঙ্খলা মানতে হয়।’
জাহাজে দায়িত্বরত লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মোংলা বন্দর থেকে ২৪ মার্চ চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে জাহাজটি আসে। আজকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল। এ সময় বিপুলসংখ্যক মানুষ জাহাজ ও মেরিটাইম মিউজিয়ামটি ঘুরে দেখেন। কাল সোমবার সকালে আবার মোংলা বন্দরের উদ্দেশে জাহাজ নিয়ে রওনা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই জাহাজের দায়িত্বে রয়েছেন অধিনায়ক মহসিন রেজা। এটি একটি উপকূলীয় টহল জাহাজ। এটি নদী এবং উপকূলবর্তী অঞ্চলে টহল প্রদান, উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান রোধ, জলদস্যুতা দমন, মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম।’
উল্লেখ্য, সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সরকার সিঙ্গাপুর থেকে বানৌজা মেঘনা জাহাজটি ক্রয় করে। ১৯৮৪ সালের ১৯ জানুয়ারি জাহাজটিকে প্রথমবারের মতো পানিতে ভাসানো হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালে জাহাজটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে। জাহাজটির আকার আয়তন অপেক্ষাকৃত ছোট হলেও নদী এবং উপকূলবর্তী অঞ্চলে অভিযান পরিচালনায় এর সক্ষমতা বিশেষভাবে প্রশংসনীয়।
শত্রু জাহাজ মোকাবিলা, চোরাচালান রোধ ও জলদস্যুতা দমনে জাহাজটিতে রয়েছে একটি ৫৭ মিমি বোফোর্স ডিপি কামান; একটি ৪০ মিমি বোফোর্স বিমান বিধ্বংসী কামান; দুটি ৭.৬২ মিমি মেশিনগান। ৫৭ মিমি বোফোর্স ডিপি কামানটি প্রতি মিনিটে ২.৪ কেজি ওজনের ২০০টি গোলা ১৭ কিলোমিটার দূরত্বে নিক্ষেপ করতে সক্ষম। ৪০ মিমি বোফোর্স কামানটি প্রতি মিনিটে ৩০০টি ০.৯৬ কেজির গোলা ১২ কিলোমিটার দূরত্বে নিক্ষেপ করতে সক্ষম।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে