Ajker Patrika

বদলে যাচ্ছে সুন্দরবনের প্রাণীদের খাদ্যাভ্যাস

সাইফুল মাসুম, সুন্দরবন থেকে ফিরে
বদলে যাচ্ছে সুন্দরবনের প্রাণীদের খাদ্যাভ্যাস

প্রাণবৈচিত্র্যের আধার সুন্দরবন। বাঘ, হরিণ, কুমির, নানা প্রজাতির সাপ, কাঁকড়াসহ অসংখ্য প্রাণীর আবাসস্থল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এই শ্বাসমূলীয় বন। এই বনের রয়েছে স্বতন্ত্র বাস্তুসংস্থান বা খাদ্যচক্র। সম্প্রতি সুন্দরবনে পর্যটকদের আনাগোনা ও বনজীবীদের উৎপাতে ভেঙে পড়ছে সেখানকার বাস্তুসংস্থান। বদলে যাচ্ছে প্রাণীদের খাদ্যাভ্যাস।

সম্প্রতি সুন্দরবন ঘুরে দেখা গেছে, বনের পর্যটন স্পটগুলোয় প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে হরিণ ও বানরের খাবার। বনের গহিনে পর্যটকদের কাছ থেকে খাবার পেতে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে শূকর ও বানরদের।

সুন্দরবনের খাদ্যচক্রের প্রাথমিক স্তরে রয়েছে উদ্ভিদকণা ও প্রাণিকণা, যা খেয়ে বেঁচে থাকে বনের ছোট মাছ, কাঁকড়া ও শামুক। আবার বড় মাছ, পাখি ও অন্যান্য প্রাণীর প্রধান খাবার ছোট মাছ। তাই নদীর পানিদূষণে উদ্ভিদকণা ও প্রাণিকণা মারা গেলে সর্বস্তরের প্রাণীর খাদ্য জোগানে টান পড়ে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, ‘সুন্দরবনে অব্যবস্থাপনার কারণে বন্য প্রাণীদের খাদ্যশৃঙ্খলে আঘাত এসেছে। বিষ দিয়ে মাছ মারা হচ্ছে, ওই মাছ খেয়ে সুন্দরবন পাখিশূন্য হয়ে পড়েছে। বনের কাছে শিল্পকারখানা তৈরি এবং পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ায় জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

বনের প্রাণীদের মধ্যে হরিণ ও বানর তৃণভোজী। হরিণ বনের ঘাস ও লতাপাতা খেয়ে জীবন ধারণ করে। তার পছন্দের খাবারের মধ্যে রয়েছে কেওড়াপাতা। বানর লতাপাতা এবং বনের বিভিন্ন গাছের ফলমূল খেয়ে থাকে। এ ছাড়া ছোট পোকামাকড়ের প্রতিও বানরের বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। বাঘ ও গুইসাপ মাংসাশী প্রাণী। বাঘের খাদ্যতালিকার ওপরের দিকে রয়েছে হরিণ। সুন্দরবনে বাঘের মোট খাবারের মধ্যে ৮০ শতাংশ হরিণ, ১০ শতাংশ বন্য শূকর, ৫ শতাংশ বানর ও ৫ শতাংশ অন্যান্য প্রাণী থেকে আসে। গুইসাপ তার সামর্থ্য অনুযায়ী ছোট প্রাণী খেয়ে থাকে। সাপও মাংসাশী; তারা ব্যাঙ, মাছ খেয়ে জীবন ধারণ করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুন্দরবনে পর্যটক ও বনজীবী বেড়ে যাওয়ায় বন্য প্রাণীদের খাদ্যাভ্যাসে প্রভাব পড়ছে। এতে ভেঙে পড়ছে বনের খাদ্যশৃঙ্খল; যা পরে তৃণভোজী ও মাংসাশী প্রাণীদের মধ্যেও প্রভাব ফেলছে। লোকালয়ে বেড়ে গেছে বাঘ ও অজগরের আক্রমণ। বনে কমে গেছে পাখির উপস্থিতি।

সম্প্রতি সুন্দরবনের বন্য প্রাণী নিয়ে গবেষণা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদাউসী। তাঁর গবেষণায়ও বন্য প্রাণীদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের তথ্য উঠে এসেছে। জান্নাতুল ফেরদাউসী আজকের পত্রিকাকে বলেন, বনের প্রাণীদের লোকালয়ে আসার ঘটনা বেড়ে যাওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন। বন্য প্রাণীদের খাবার সাধারণত বনেই থাকে। বাইরের খাবার দিলে প্রাণীদের অভ্যস্ততা তৈরি হয়। পর্যটকেরা যখন খাবার দেয়, তখন প্রাণীদের মধ্যে নিজেদের খাবার সংগ্রহের প্রবণতা কমে যায়।

করমজলে বিক্রি হচ্ছে হরিণ ও বানরের খাবার সুন্দরবনের করমজলে রয়েছে বন্য প্রাণীর প্রজনন কেন্দ্র। সেখানে প্রকাশ্যে হরিণ ও বানরের খাবার বিক্রি করতে দেখা গেছে। যদিও প্রজনন কেন্দ্রের ভেতরে কয়েকটি ব্যানারে লেখা রয়েছে ‘বন্য প্রাণীকে খাবার দিবেন না’।

করমজলে বন্য প্রাণীর প্রজনন কেন্দ্রের হরিণের খাঁচার সামনে বসে খাবার বিক্রি করেন লাল মিয়া। চিপস, বাদাম, শাক, পানি, কোমল পানীয়সহ বেশ কিছু খাদ্যপণ্য বিক্রি করেন তিনি। এসব খাদ্যপণ্য কিনে নিয়ে বন্য প্রাণীদের খেতে দেন পর্যটকেরা।

লাল মিয়া জানান, পাঁচ বছর ধরে তিনি এভাবে খাবার বিক্রি করেন। বন বিভাগের লোকজন তাঁকে বাধা দেননি। করমজলের ওয়াচ টাওয়ারের পাশে বন্য প্রাণীর জন্য খাবার বিক্রি করেন বিলকিস বেগম। অনেকে তাঁর কাছ থেকে বাদাম ও কলা কিনে বানরকে খাওয়ায় বলে জানান এই নারী।

বাইরের খাবারের কারণে প্রজনন কেন্দ্রের বন্য প্রাণীদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের কথা স্বীকার করেছেন করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবীর।এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বন বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বন্য প্রাণীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করে আমরা পর্যটকদের খাবার দিতে নিষেধ করি। সচেতনতার জন্য বনের ভেতরে সাইনবোর্ডেও এ বিষয়ে লেখা রয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে ১৯৯৭ সালে ইউনেসকো সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বন বিভাগের ২০০৪ সালের জরিপ অনুসারে সুন্দরবনে বাঘ ছিল ৪৪০টি। ২০১৮ সালের জরিপে দেখা যায়, তা কমে হয়েছে ১১৪টি। এ ছাড়া সুন্দরবনে প্রায় দেড় লাখ হরিণ, ২০০টির মতো কুমির এবং ৫০ হাজারের বেশি বানর রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক

আনিসুলের জাপা ও মঞ্জুর জেপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ঘোষণা

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লিব লিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

বুধবার সিইসির তফসিল ঘোষণা রেকর্ড হবে, বিটিভি–বেতারকে ইসির চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় তাপমাত্রা কমবে কিনা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আজ সোমবার ভোরবেলা ঢাকায় পড়েছিল হালকা কুয়াশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সোমবার ভোরবেলা ঢাকায় পড়েছিল হালকা কুয়াশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পৌষ মাস আসতে আর মাত্র দিন সাতেক বাকি। কিন্তু রাজধানী ঢাকায় এখনো পুরোপুরি শীতের আমেজ পড়েনি। আজ সোমবার ভোরবেলা ঢাকায় সামান্য কুয়াশার সঙ্গে ছিল হালকা শীত।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আজ সকাল ৭টায় পরবর্তী ৬ ঘণ্টার পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় আজ সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৭৪ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৯ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক

আনিসুলের জাপা ও মঞ্জুর জেপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ঘোষণা

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লিব লিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

বুধবার সিইসির তফসিল ঘোষণা রেকর্ড হবে, বিটিভি–বেতারকে ইসির চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকার বাতাস খুব অস্বাস্থ্যকর, দূষণে শীর্ষে বাগদাদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহরের তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ শনিবার ঢাকার অবস্থান তৃতীয়। আর প্রথম স্থানে আছে ইরাকের শহর বাগদাদ।

আজ সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ২৫২, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।

আর শীর্ষে থাকা বাগদাদের বায়ুমান ২৬৮, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো—ভারতের দিল্লি, পাকিস্তানের লাহোর ও ভারতের কলকাতা। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৫৯, ২০৮ ও ২০৬।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক

আনিসুলের জাপা ও মঞ্জুর জেপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ঘোষণা

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লিব লিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

বুধবার সিইসির তফসিল ঘোষণা রেকর্ড হবে, বিটিভি–বেতারকে ইসির চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় আজ ছুটির দিনে আবহাওয়া কেমন থাকবে জানা গেল পূর্বাভাসে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৮
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও আশপাশ এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ। এদিন দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৮ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক

আনিসুলের জাপা ও মঞ্জুর জেপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ঘোষণা

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লিব লিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

বুধবার সিইসির তফসিল ঘোষণা রেকর্ড হবে, বিটিভি–বেতারকে ইসির চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২১ নভেম্বরের পর ভূমিকম্পে কতবার কাঁপল বাংলাদেশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৬
নরসিংদীতে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের মাটিতে গতকাল ফাটলের নমুনা সংগ্রহ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ। ছবি: আজকের পত্রিকা
নরসিংদীতে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের মাটিতে গতকাল ফাটলের নমুনা সংগ্রহ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ। ছবি: আজকের পত্রিকা

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।

আর এই ভূকম্পনেই আতঙ্কিত হয়ে ওঠে ঢাকার নগরজীবন থেকে শুরু করে সারা দেশের মানুষ। আতঙ্কিত হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। কারণ, এক-দুবার নয়, মাত্র ১৪ দিনে বাংলাদেশে একাধিকবার ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী, গাজীপুরের মতো ঢাকার আশপাশের অঞ্চল ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি হয় গত ২১ নভেম্বর। ওই দিন ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এক ভূমিকম্পে ঢাকাসহ সারা দেশ কেঁপে উঠেছিল।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বাংলাদেশেই উৎপত্তিস্থল ছিল পাঁচটি ভূমিকম্পের। এর প্রথমটি ছিল ২১ নভেম্বরের ঠিক দুই মাস আগে ২১ সেপ্টেম্বর। এদিন ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তি হয় সিলেটের ছাতকে।

এরপরের ভূমিকম্প ছিল ২১ নভেম্বর, মাত্রা ৫ দশমিক ৭। পরদিন ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী জেলার কালীগঞ্জ। এর ৫ দিন পর, ২৭ নভেম্বর বিকেল সোয়া ৪টায় ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, উৎপত্তিস্থল ঢাকার পাশের জেলা গাজীপুরের টঙ্গীর ঢালাদিয়া এলাকা।

কতবার ভূকম্পন হলো

তবে বারবার ভূমিকম্প কেবল বাংলাদেশেই নয়, সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমার, ভারত, নেপাল, এমনকি চীনের তিব্বত সীমান্তেও ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে। চলতি বছরের ১১ মাসে এই অঞ্চলে ২৮৫ বার ভূমিকম্প হয়েছে। এর কোনোটিই ৪ মাত্রার নিচে ছিল না।

গত সোমবার ১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে মিয়ানমারের ফালামে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ফলে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকেও এটি অনুভূত হয়েছে। ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ছিল ৪৩১ কিলোমিটার। ওই ভূমিকম্প বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৫৫ মিনিট ১৬ সেকেন্ডে অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৯।

বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, টেকটোনিক প্লেটে বাংলাদেশের যে অবস্থান, তাতে দুটো প্লেটের সংযোগস্থল রয়েছে, পশ্চিমে ইন্ডিয়ান প্লেট আর পূর্ব দিকে বার্মা প্লেট। আর বাংলাদেশের উত্তর দিকে আছে ইউরেশিয়ান প্লেট।

রাজধানীর পুরান ঢাকায় বংশাল এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ অনেক ভবনের ক্ষতির আশঙ্কা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর পুরান ঢাকায় বংশাল এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ অনেক ভবনের ক্ষতির আশঙ্কা। ছবি: সংগৃহীত

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বিবিসি বাংলাকে বলেন, ভারতীয় প্লেটটি ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বার্মা প্লেটের নিচে, অর্থাৎ চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। আর এই তলিয়ে যাওয়ার কারণে একটা সাবডাকশন জোনের তৈরি হয়েছে।

হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, ‘এই জোনের ব্যাপ্তি সিলেট থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত। পুরো চট্টগ্রাম অঞ্চল এর মধ্যে পড়েছে। এখানে বিভিন্ন সেগমেন্ট আছে। আমাদের এই সেগমেন্টে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তি জমা হয়ে আছে। এটা বের হতেই হবে।’ তাঁর মতে, ‘এখানে প্লেট লকড হয়ে ছিল। এর অতি সামান্য ক্ষুদ্রাংশ খুলল বলেই শুক্রবারের ভূমিকম্প হয়েছে। এটিই ধারণা দেয় যে সামনে বড় ভূমিকম্প আমাদের দ্বারপ্রান্তে আছে।’

আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ

তবে ভূমিকম্প নিয়ে উৎকণ্ঠিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদ ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. মমিনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন যেসব ভূকম্পন, সেগুলো হলো ২১ নভেম্বর ভূমিকম্পের ‘আফটার শক’।

২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের হনশু দ্বীপের টোহুকু অঞ্চলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প এবং এর জেরে সৃষ্ট সুনামির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর কেবল ৬ মাত্রারই ৪৫০ বার আফটার শক হয়েছিল জাপানে। আরও অসংখ্যবার ছোট ছোট আফটার শক হয়েছিল তখন।

ভূকম্পনবিদ্যার গবেষক মমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ২১ নভেম্বরের পর একাধিকবার আফটার শক হচ্ছে। এই আফটার শক বহুদিন ধরে হতে পারে, কমপক্ষে আরও তিন মাস হতে পারে। ২ মাত্রার নিচের ভূকম্পনগুলো আমাদের (বাংলাদেশে) সিস্টেমে ধরা পড়ে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক

আনিসুলের জাপা ও মঞ্জুর জেপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ঘোষণা

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লিব লিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

বুধবার সিইসির তফসিল ঘোষণা রেকর্ড হবে, বিটিভি–বেতারকে ইসির চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত