সার্টিফিকেট তুলতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থী আফসানা মিমি। তাঁর মরদেহ নিতে এসেছিলেন ছোট বোন রুকাইয়া রুপা। তিনি বলেন, ‘এখন এই সার্টিফিকেট দিয়ে আর কী হবে। আর আমার আপু কোনো দিন ফিরে আসবে না। আর কোনো দিন সার্টিফিকেটের দরকার হবে না।’
আজ রোববার ভোরে ময়মনসিংহের উদ্দেশে বের হন গোপালগঞ্জের মেয়ে মিমি। আনন্দ নিয়ে বের হলেও লাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। আজ সকাল সোয়া আটটায় দিকে মাদারীপুর শিবচর উপজেলার কুতুবপুরের পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়েতে চাকা ফেটে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস নিচে পড়ে ১৯ জন যাত্রী মারা যান। এই ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মারা যান মিমি।
রুকাইয়া রুপা বলেন, ‘আপু মারা গেছেন; তা মাকে এখনো জানানো হয়নি। কীভাবে মাকে বলব। এই শোক মা কীভাবে সইবে। এই কথা শুনলে আমার মাও তো মারা যাবেন। আমার বাবা অনেক আগে মারা গেছেন। এখন আপুও চলে গেলেন। আমি কার কাছে আমার সব কথা বলব। কেন আমাদের সাথে এমন হলো। আপু মাস্টার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে পাস করেছেন। এই সার্টিফিকেট দিয়ে আর কী হবে। আর আমার আপু কোনো দিন ফিরে আসবে না। আর কোনো দিন সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হবে না।’
জানা যায়, গোপালগঞ্জ সদরের মৃত আবু হেনা মোস্তফা কামালের মেয়ে আফসানা মিমি। বাবা প্রায় ১২ বছর আগে মারা যান। এর পর থেকে দুই মেয়ে নিয়ে মা কানিজ ফাতেমা অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করাচ্ছিলেন। বড় মেয়ে আফসানা মিমি ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। আর ছোট মেয়ে রুকাইয়া রুপাও দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। আফসানা মিমি প্রতিটি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন। প্রতিটি ক্লাসেও প্রথম হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, আফসানা মিমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ থেকে স্নাতক ও হর্টিকালচার বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে