শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সেকশন

 

দোতলা বাসে অচেনা ১১ জনের ৪০ হাজার মাইল ভ্রমণ, ৫০ বছর পর দেখা

আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৩, ০১:০৫

অচেনা মানুষ হিসেবে যাত্রার পর আত্মীয় হয়ে যান ১১ দলের অভিযাত্রীরা। ছবি: সংগৃহীত একেবারে অপরিচিত, শুরুতে নামটাও জানতেন না। এমন ১১ জন দুঃসাহসিক লন্ডন থেকে একটি দোতলা বাসে যাত্রা শুরু করেছিলেন। হাজার হাজার মাইল ভ্রমণ করেন তাঁরা। 

দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর পরে তাঁরা আবার মিলিত হয়েছেন। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পেরুর চিরা নদীতে বাসটি ডুবে যাওয়ায় তাঁদের অভিযাত্রাটি অপ্রত্যাশিতভাবে সমাপ্ত হয়। সেই দলটি ওই দোতলা বাসেই ঘুমিয়েছেন, চরম তাপমাত্রা সহ্য করেছেন, দীর্ঘ উঁচু–নিচু পথ পাড়ি দিয়েছেন। 

গ্রুপটির পাঁচজন সদস্য সম্প্রতি তাঁদের সেসব অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। চালক এবং মেকানিক ডেভিড ম্যাকলাফলিন বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা ২০ মাস বা তারও বেশি সময় ধরে প্রায় ৪০ হাজার মাইল ভ্রমণ করেছি।’ 

আরেক সদস্য বার্নিস পুল সংবাদমাধ্যম মেট্রোর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এটি আমার জীবন বদলে দিয়েছে। আমরা সবাই অনেক কিছু শিখেছি।’ 

এই মহাকাব্যিক ভ্রমণের কৃতিত্ব রজার পুল এবং তাঁর স্ত্রী জোয়ানের। রজার সম্প্রতি মারা গেছেন। এই দম্পতি স্থানীয় কাগজে এই আইডিয়া নিয়ে দুইবার বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন বন্ধু জন উইন্টার। 

তাঁরা ভ্রমণ করেছেন—ব্রিস্টল থেকে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, কলাম্বিয়া, ইকুয়েডর এবং সর্বশেষ পেরু। 

দলটি ১৯৭০ সালের মার্চে ব্রিস্টল থেকে কানাডার মন্ট্রিলের উদ্দেশে যাত্রা করে। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন শেফ, চারজন ড্রাইভার এবং বেশ কয়েকজন মেকানিক। মরুভূমির উত্তাপ এবং হাড় হিম করা শীত দলটি ২২ মাস কাটিয়ে দিয়েছে। বাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ৫০ মাইলেরও কম। 

একটি মালবাহী জাহাজে চড়ে মন্ট্রিলে পৌঁছে দলটি। টরন্টো এবং যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল হয়ে মেক্সিকো সিটিতে যাওয়ার আগে নিউইয়র্ক এবং এরপর টেক্সাস ভ্রমণ করেছেন তাঁরা। মেক্সিকোর পরে তাঁরা ক্যালিফোর্নিয়ায় চলে যান। এরপর কানাডিয়ার বিরান ভূমিতে তীব্র শীতের মধ্যে ভ্রমণ করেন তাঁরা। 

তাঁরা অবশ্য সরাসরি মেক্সিকোর দিকে যাত্রা করেছিলেন। তখন মেক্সিকোতে ফিফা বিশ্বকাপ খেলা চলছিল। ইংল্যান্ড থেকে ৪৮ দিনের সফর শেষে তাঁরা মেক্সিকোতে পৌঁছেন। 

৫০ বছর আগে এই দোতলা বাসে করে ৪০ হাজার মাইল ঘুরেছেন তাঁরা। ছবি: সংগৃহীত সেখান থেকে দলটি টরন্টোতে চলে যায় এবং আবার মার্কিন পূর্ব উপকূলে ফিরে আসে। ফ্লোরিডায় নাসার রকেট উৎক্ষেপণ স্থান করেন। যেখান থেকে দলের কয়েকজন বাড়ি ফিরে যান। বাকিরা চলতে থাকেন। মেক্সিকো থেকে মধ্য আমেরিকা হয়ে পেরুতে যান তাঁরা। 

দলের সবাই পথে নানা কাজ করেছেন। খরচ জোগার করতে তাঁরা ফল বাছাই, ফুলের গাছ রোপণ, রেস্তোরাঁ পরিষ্কার করা এবং ব্যক্তিগত গাড়িচালক হিসেবে কাজ করেছেন। 

দুঃসাহসিক এই অভিযান অবশ্য আচমকা শেষ হয়ে যায়। পেরুতে থাকাকালীন দলটিকে একটি নিচু সেতু পেরোতে হয়েছিল। কিন্তু দোতলা বাসটি এ সেতুর ওপর দিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। সমস্যা সমাধানের জন্য তাঁরা একটি বিশেষ ভেলা ব্যবহার করে বাসটিকে চিরা নদীতে ভাসিয়ে দেন। কিন্তু নদীর মাঝপথে বাসটি ডুবে যায়। এর সঙ্গে দলটির অভিযাত্রারও সমাপ্তি ঘটে। 

গ্রুপটির সেই অভিজ্ঞতা এবং স্মৃতি নিয়ে বই লিখেছেন সাংবাদিক জন উইন্টার। তিনিও এই অভিযাত্রার অংশ ছিলেন।

মন্তব্য

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।
Show
 
    সব মন্তব্য

    ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

    পঠিতসর্বশেষ

    এলাকার খবর

     
    ভ্রমণ

    বিশ্বের সেরা হোটেলের তালিকায় এক নম্বরে আছে কোনটি

    সাম্য ও শান্তির দেশ কানাডা

    তবে কি বন্ধ হবে শান্তর পায়ে পায়ে বিশ্বভ্রমণ

    পর্যটনকে আরও আকর্ষণীয় করবে যেসব হোটেল

    বিমানে ভালো ঘুমের ৪ উপায়

    ভ্রমণ

    বিমানবন্দরটিতে ওঠানামার অনুমতি আছে কেবল ৫০ জন বৈমানিকের

    এখন একটা সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব ঘটে গেছে: ফরহাদ মজহার

    ট্রেনের নিচে ঝাঁপ বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার, দ্বিখণ্ডিত লাশের পাশে সুইসাইড নোট

    রাজধানীর মোহাম্মদপুরে দুই যুবককে কুপিয়ে হত্যা

    ফেরার সময় ফুল নিয়ে ফিরতে পারলেই সফলতা: নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য 

    রাশিয়ার সবচেয়ে ধনী নারীর কাছে স্বামী এখন শত্রু

    সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি পার, বৃষ্টি কবে জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর