Ajker Patrika

অভয়াশ্রয়ে রাত নামলেই শুরু হয় জাটকা নিধন

খান রফিক, বরিশাল
অভয়াশ্রয়ে রাত নামলেই শুরু হয় জাটকা নিধন

রুপালি ইলিশের ষষ্ঠ অভয়াশ্রয়ে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জেলেরা প্রায় নির্বিঘ্নেই জাটকা ধরছেন। নিষিদ্ধ সময়ে ঢিলেঢালা অভিযানের অভিযোগ থাকলেও মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, ৮২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অভিযান চালিয়ে জাটকা নিধন ঠেকানো বেশ চ্যালেঞ্জিং কাজ। 

হিজলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের লাছকাঠী গ্রামসংলগ্ন মেঘনার শাখা নদীতে গত শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে অবস্থান করছিলেন ব্যবসায়ী পলাশ দাস। তিনি বলেন, ‘হরিনাথপুর থেকে লাছকাঠী আসতে মেঘনার সব জায়গায় ছোট নৌকায় জেলেরা মাছ ধরছেন। বিশেষ করে গঙ্গাপুর, ছয় গা, আছুলি আবুপুর, লাছকাঠী এলাকায় নির্বিঘ্নে জাটকা নিধন চলছে। এসব প্রত্যন্ত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা নেই। মূল মেঘনার হিজলা গৌরবদী ইউনিয়নের খালিসপুর, ওরাকুল, চরকিল্লা এলাকায় মাছ ধরা হচ্ছে।’ 

হিজলা গৌরবদী এলাকার চরকুশুরিয়ার মেঘনাপাড়ের জেলে নাসির উদ্দিনও জেলের এ তৎপরতার কথা অস্বীকার করেননি। তিনি বলেন, ‘জেলেরা অবরোধের কারণে নদীতে দিনে কম নামছে। তবে রাতে হয়তো মাছ ধরে।’ তাঁর কথায়, ‘মাছ না ধরলে তারা খাবে কী!’ 

জানতে চাইলে হিজলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এমএম পারভেজ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘অভয়াশ্রয়ে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞায় এখন পর্যন্ত কোনো আটক বা উদ্ধার নেই। রাতে টহল বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। বর্তমানে তিনটি টহল দল কাজ করছে। কোস্টগার্ড, নৌপুলিশও অভিযান চালাচ্ছে। তবে মেঘনা নদীর এই বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল। এক দিক থেকে অভিযানে নামলে জেলেরা অন্য জায়গা থেকে মাছ ধরে। অথচ এই দুই মাসে মাছ না ধরলে ছোট জাটকাগুলো বড় হবে।’ 

ইলিশ রক্ষায় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তা কামনা করে এই মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ‘জেলেদের ঠেকাতে সব বাহিনীকে নিয়ে যৌথ অভিযানে নামতে পারেন তাঁরা। তাঁর এলাকায় ২০ হাজার কার্ডধারী জেলের মধ্যে ১২ হাজার জেলে নিষেধাজ্ঞার সময় ৪০ কেজি করে খাদ্যসহায়তা পাবেন।’

তবে সরকারি খাদ্য সহায়তা সময় মতো পাওয়া ও সমবণ্টন নিয়ে সংশয় প্রকশ করেছেন জেলেরা। যেমন মেঘনা ঘেরা মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ার প্রান্তিক জেলে তোফায়েল হোসেন বলেন, এখানকার বেশির ভাগ অধিবাসীই জেলে। খাদ্যসহায়তা কবে পাবেন তার খবর নেই। তাই পেট চালাতে রাতে নদীতে নামে জেলেরা।’ তিনি বলেন, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ আছে, তাই দিনে তারা তেমন নামেন না। 

বরিশালের হিজলায় মেঘনার শাখা নদীতে জাটকা নিধনমেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘ষষ্ঠ অভয়াশ্রয়ের আওতায় মেহেন্দীগঞ্জের প্রায় ৮২ কিলোমিটার নদীপথ রয়েছে। এই বিশাল এলাকায় জেলেদের ধরে রাখা কঠিন। প্রতিদিন কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশের সহায়তায় তিনটি দল নদীতে কাজ করছে। ইউনিয়নে ইউনিয়নে চলছে সচেতনতা সভা।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাৎক্ষণিক চাইলেই পাওয়া যায় না অভিযোগ করে এই মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, এ কারণে অভিযানে ধীরগতি দেখা দেয়। গত তিন দিনে কোনো আটক নেই। তাঁর উপজেলায় ২৬ হাজার ২০০ জেলের মধ্যে ১৬ হাজার ৯০০ জন খাদ্যসহায়তা পাবেন বলেও জানান তিনি। 

এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, বরিশালের পাঁচটি নদী ষষ্ঠ অভয়াশ্রয়ে নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। এগুলো হচ্ছে কালাবদর, গজারিয়া, মাছকাটা, নয়া ভাঙ্গনী ও মেঘনা নদী। এর আওতায় বরিশাল সদরের হবিনাগর, বুখাইনগরের একাংশ এবং হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জের পুরো অংশ রয়েছে। নদীতে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা চলছে। প্রথম দিনে কালাবদর নদীতে অভিযান চালানো হয়েছে। জেলেরা দিনে নামে না, তবে রাতে বিশাল নদী নিয়ন্ত্রণ চ্যালেঞ্জিং। প্রতি মাসে একজন জেলেকে ৪০ কেজি চাল দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

বরিশালের হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ ও সদরের আংশিক এলাকার আওতায় মেঘনা, কালাবদর, মাসকাটা, গজারিয়া, নয়া ভাঙ্গনী ও কীর্তনখোলা নদীর ৮২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ষষ্ঠ অভয়াশ্রয়। গত ১ মার্চ থেকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশের এ অভয়াশ্রয়ে সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত