মামুনুর রশীদ

বাংলাদেশের নিয়মিত নাট্যচর্চার বয়স পঞ্চাশ। এখানেও নাটক প্রবলভাবে রাজনৈতিক। অভিনয় নিয়ন্ত্রণ ও প্রমোদ কর দিয়ে প্রথম দিকে এর বিরুদ্ধে নাটকের চর্চাকে ব্যাহত করার চেষ্টা চলেছে।
সম্প্রতি এক ঐতিহাসিক ঘটনা হয়ে গেল।
৭ ডিসেম্বর, ২০২২ বাংলা সাধারণ রঙ্গালয়ের দেড় শ বছর পূর্তি উৎসব। এই দিনে ১৮৭২ সালে অবিভক্ত ভারতের রাজধানী কলকাতায় সূচনা হলো সাধারণ রঙ্গালয়। এর আগে নাটকের অভিনয় হতো জমিদারের বাগানবাড়িতে, পূজার মণ্ডপে বা যেকোনো উন্মুক্ত স্থানে কিংবা পাড়া-মহল্লায়। সেসব নাট্যাভিনয়ে প্রতিভাবান অভিনেতারা
অভিনয় করতেন বটে, কিন্তু সবার প্রবেশাধিকার ছিল না।
আবার নাট্যাভিনয়ের জন্য সামন্ত প্রভু ও বিত্তবানদের অনুগ্রহ নিতে হতো। ১৮৭২ সালের প্রথম দিক থেকেই কিছু উদ্যমী তরুণ ন্যাশনাল থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেন এবং দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীল দর্পণ’ নাটক দিয়ে টিকিটের বিনিময়ে যাত্রা শুরু করেন। অভিনয়ের জন্য খুব কম টাকায় জোড়াসাঁকোর মধুসূদন সান্যালের ঘড়িওয়ালা বাড়িটি ভাড়া নেন। চারদিক ঘেরাও করে আট আনা ও এক টাকা মূল্যের টিকিটের বিনিময়ে নাট্যাভিনয় শুরু করেন। দীনবন্ধু মিত্র নীল দর্পণ নাটকটি রচনা করেন ১৮৬০ সালে এবং ওই বছরই ঢাকার বাঙ্গালা প্রেস থেকে মুদ্রিত হয়ে প্রকাশিত হয়। নাটকটি যেহেতু অত্যাচারী ইংরেজ নীলকরদের বিরুদ্ধে, তাই নাট্যকার সেখানে তাঁর নাম ব্যবহার করেননি।
১৮৬১ সালে ঢাকার পূর্ববঙ্গ রঙ্গভূমিতে নাটকটি অভিনীত হয়। নাটকটি অভিনীত হওয়ার পর নানা ধরনের নিপীড়ন নেমে আসে এবং বিষয়টি কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। তবু কলকাতার উদ্যমী তরুণেরা বাংলা সাধারণ রঙ্গালয়ের প্রথম নাটক হিসেবে মঞ্চস্থ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই দিন পুরো প্রেক্ষাগৃহে একটি মাত্র গ্যাসলাইটের মাধ্যমে অভিনীত হয় এবং টিকিট বিক্রি হয় এক শ টাকা।
ন্যাশনাল থিয়েটার এরপর নানা ধরনের সংকটে নিপতিত হয়। তবু নাট্যাভিনয়ের অগ্রযাত্রা চলতে থাকে। এ সময়ে ১৮৭৬ সালে ইংল্যান্ডের প্রিন্স অব ওয়েলস কলকাতায় বেড়াতে আসেন। জনৈক জগদানন্দ উকিলের বাড়িতে তাঁকে সংবর্ধনা জানানো হয়, সেখানে প্রচুর পানাহার ও নৃত্য-গীতের আয়োজন হয়েছিল। কলকাতার সুন্দরী রমণীরা মাটিতে তাঁদের চুল বিছিয়ে দিয়েছিলেন, যার ওপর দিয়ে প্রিন্স অব ওয়েলস হেঁটে সংবর্ধনাস্থলে পৌঁছান। এ ঘটনা সারা কলকাতায় ছড়িয়ে পড়ে। তখনকার নাট্যকর্মীরা এই সংবর্ধনাকে কেন্দ্র করে নাটক রচনা করেন, যার নাম ‘গজদানন্দ’। এ প্রহসনটি কলকাতায় খুবই আলোড়ন সৃষ্টি করে। তখন কোম্পানির শাসনের অবসান হলেও এখানকার ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ এটি বরদাশত করে না। নাটকের পাণ্ডুলিপি, দৃশ্যসজ্জা, প্রপস ইত্যাদি বাজেয়াপ্ত হয় এবং নাটকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, অভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৮৭৬ কালাকানুন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সময়ে বহু অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্দেশক কারাবরণ করেন। সেই আইনে এ-ও বলা হয়, অভিনয়ের জন্য একটি চন্দ্রালোকিত রাত্রিই প্রয়োজন হবে, কৃষ্ণপক্ষের কোনো রজনীতে অভিনয় হবে না। আইনটি ভারতবর্ষে সর্বত্র প্রয়োগ করা হয় নাটকের কণ্ঠ রোধ করার জন্য।
স্বাধীন ভারতের কোনো কোনো স্থানে আইনটির এখনো প্রয়োগ আছে। কিন্তু বাংলাদেশে অনেক লড়াই-সংগ্রামের পর ২০০১ সালে আইনটি রদ করা হয়েছে। এর আগে এ আইনটিকে অমান্য করার জন্য নাট্যকর্মীরা নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। শুধু নাটক নয়, যাত্রাপালায়ও এর প্রয়োগ চলতে থাকে। মুকুন্দ দাস স্বদেশী যাত্রা নামে বরিশাল থেকে শুরু করে সারা বাংলায় দেশাত্মবোধক যাত্রাভিনয় করতেন। যেহেতু যেকোনো জেলার সদরে অভিনয় করতে গেলে পুলিশ এসে তা বন্ধ করতে পারে এবং তিনি গ্রেপ্তার হতে পারেন, এই ভেবে অভিনয়গুলো করতেন জেলার সীমান্তে। অভিনয় চলাকালে তিনি হয়তো খবর পেতেন বরিশাল জেলার পুলিশ অভিনয় বন্ধ করতে এগিয়ে আসছে। তখন তিনি তাঁর দলবল নিয়ে পাশের জেলা ফরিদপুরে চলে যেতেন। এমনি করেই জেলা থেকে জেলায় তাঁর অভিনয় চালিয়ে যেতেন। ব্রিটিশ সরকার সে সময়ে আরেকটি আইন প্রবর্তন করে, যার নাম ‘ডিস্ট্রিক্ট এনডোর্সমেন্ট অ্যাক্ট’। এটার সারমর্ম হলো, কোনো যাত্রাদল যদি এক জেলা থেকে আরেক জেলায় অভিনয় করতে যায়, তাহলে ওই জেলার ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে পূর্বাহ্ণে অনুমতি নিতে হয়। এত সব ঝামেলা উপেক্ষা করে বহুদিন পর্যন্ত মুকুন্দ দাস গ্রামবাংলার পথে-প্রান্তরে তাঁর স্বদেশী যাত্রা চালিয়ে গেছেন। সাধারণ রঙ্গালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর কলকাতা শহরে বেশ কয়েকটি রঙ্গমঞ্চ গড়ে ওঠে। এই রঙ্গমঞ্চগুলোর মালিকানায় চলে আসে ধনাঢ্য ব্যক্তিরাই।
কিন্তু প্রথমে যাঁরা ন্যাশনাল থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তাঁদের ভাবনা ছিল টিকিটলব্ধ টাকা দিয়েই থিয়েটার চালিয়ে যাবেন। সাধারণ রঙ্গালয়ে একসময়ে বিনোদন মুখ্য হয়ে ওঠে। যে আদর্শ সামনে রেখে নীল দর্পণের মতো নাটক দিয়ে বাংলা সাধারণ রঙ্গালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, সেই ভাবনা আর রক্ষা করা যাচ্ছিল না। তাই চল্লিশের দশকের শুরুতে পাল্টা আরেকটি নাট্যধারার জন্ম হয়, যার উদ্যোগ নিল ভারতীয় গণনাট্য সংঘ। সেই উদ্যোগের প্রথম নাটক ‘নবান্ন’। দেশে তখন দুর্ভিক্ষ, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ চলছে। মানুষের তৈরি এই দুর্ভিক্ষের বিরুদ্ধে এক শৈল্পিক প্রতিবাদ নবান্ন। তারপর যুদ্ধ চলে যাওয়ার পর আরেকটি বড় আঘাত আসে সেটি হচ্ছে—দেশভাগ। নাট্যকর্মীরা তা-ও মেনে নিতে পারেননি। সাধারণ রঙ্গালয়ের বিনোদনধর্মিতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী নাটকের জোয়ার বইতে থাকে। অনেকে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হলেন, আর এর নাম হলো সংঘনাট্য।পরবর্তীকালে ইংরেজিতে ‘গ্রুপ থিয়েটার’।
কলকাতা এবং ভারতবর্ষের অনেক স্থানে এই গ্রুপ থিয়েটার খুবই জনপ্রিয় হয়। নাট্যকর্মীদের নিজেদের সৃজনশীলতা এবং পকেটের পয়সা দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে এই নাট্যধারা গড়ে ওঠে, যা এখনো ভারত ও বাংলাদেশে প্রচলিত আছে। বাংলাদেশের নাটকের ইতিহাসটা ঠিক সে রকমই। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগেও নাটক হতো পাড়া-মহল্লায়, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনিয়মিত চর্চায়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সাল থেকে এ চর্চা নিয়মিত হয়ে যায়। সেই অর্থে বাংলাদেশের নিয়মিত নাট্যচর্চার বয়স পঞ্চাশ। এখানেও নাটক প্রবলভাবে রাজনৈতিক। অভিনয় নিয়ন্ত্রণ ও প্রমোদ কর দিয়ে প্রথম দিকে এর বিরুদ্ধে নাটকের চর্চাকে ব্যাহত করার চেষ্টা চলেছে। বঙ্গবন্ধু বিষয়টিকে প্রথমে সহজ করে দিলেন প্রমোদ কর রহিত করে এবং পুলিশের কাছে নয়, নাটকের সেন্সর দিয়ে দিলেন শিল্পকলা একাডেমির হাতে। সামরিক শাসনামলে কখনো আবার পুলিশ কর্তৃপক্ষ নাটকের কালাকানুনকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছে। কিন্তু নাট্যকর্মীদের প্রবল বাধার বিরুদ্ধে তা ধোপে টেকেনি। নাটকের সংঘবদ্ধ শক্তি বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার কর্তৃপক্ষ সেন্সর আইন অমান্য করতে শুরু করে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময়ে নাটক একটি বড় রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে থাকে। নাটক হয়ে দাঁড়ায় রাজনীতির এক বিকল্প মাধ্যমে।
কোনো কিছু ছাপার অক্ষরে প্রকাশ করলে কোনো অনুমতি লাগে না। একমাত্র অনুমতি লাগে নাটকে। তা না হলে অভিনয় করা যায় না। শিল্পের অন্যান্য শাখায় এ ধরনের কালাকানুন নেই। এর কারণও খুব সহজ। নীল দর্পণ নাটক দেড় শ বছর আগে যে উদাহরণ সৃষ্টি করেছিল, তাতে শাসকগোষ্ঠীর ভয় পাওয়ারই কথা। নাটকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এ শিল্পটি গণতান্ত্রিক। কিছু জীবন্ত মানুষ অভিনয় করে আর কিছু জীবন্ত মানুষ নাটকটি অবলোকন করে। এই দুইয়ের মিথস্ক্রিয়ায় একটা চেতনা তৈরি হয় এবং আদিকাল থেকেই সেই চেতনা প্রতিবাদী।
সেই নাটক জনপ্রিয় হয়, যা মানুষের কণ্ঠস্বরকে ধারণ করতে পারে। মানুষের প্রাণের কথা বিবেকের মতো জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেয় এবং একই সঙ্গে শাসকগোষ্ঠীকে দর্শকের সামনে উন্মোচন করে। বাংলায় আদিকাল থেকেই যেসব আঙ্গিক সংলাপ ও অভিনয়ের মাধ্যমে মানুষের সামনে উপস্থিত করেছে, সেগুলোও প্রতিবাদী এবং সমাজসংস্কারের বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে। তাই এই জীবন্ত মাধ্যমটি সারা বিশ্বেই এখন প্রতিবাদী চেতনার বাহক।
কলকাতায় দেড় শ বছর পূর্তি উপলক্ষে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের সঙ্গে নীল দর্পণ নাটকটি যেমন অভিনীত হয়েছে, তেমনি ঢাকায়ও ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর জাতীয় নাট্যশালায় বাঙলা থিয়েটার কলকাতার ৭ ডিসেম্বরের পর পুনরায় অভিনয় করেছে। দুটি স্থানেই বিপুলসংখ্যক দর্শক নাটকটি দেখে দেড় শ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যে ফিরে গেছেন। দুটি দেশেই নাট্যচর্চায় পৃষ্ঠপোষকতা নেই। ভারতে কিছুটা থাকলেও তা অপ্রতুল। বাংলাদেশে নাট্যচর্চায় গত পঞ্চাশ বছরে এক অভাবনীয় অগ্রগতি হয়েছে।
অনেকে বলে, নাটক মুক্তিযুদ্ধের উজ্জ্বল ফসল, নাটক সত্যিকার অর্থেই মুক্তিযুদ্ধকে বুকে ধারণ করে তার চেতনাকে পৌঁছে দেওয়ার গুরুদায়িত্ব বহন করে আসছে।
স্বৈরাচার, সাম্প্রদায়িকতা, শোষণ-নিপীড়ন—এসবের বিরুদ্ধে নাটক সোচ্চার হয়েছে এবং তার দৃঢ় অবস্থানকে জানান দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত নাটককে পেশা হিসেবে নিতে পারছেন না নিবেদিতপ্রাণ নাট্যকর্মীরা। এই দুঃখ দিন দিন গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে।
লেখক: মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব

বাংলাদেশের নিয়মিত নাট্যচর্চার বয়স পঞ্চাশ। এখানেও নাটক প্রবলভাবে রাজনৈতিক। অভিনয় নিয়ন্ত্রণ ও প্রমোদ কর দিয়ে প্রথম দিকে এর বিরুদ্ধে নাটকের চর্চাকে ব্যাহত করার চেষ্টা চলেছে।
সম্প্রতি এক ঐতিহাসিক ঘটনা হয়ে গেল।
৭ ডিসেম্বর, ২০২২ বাংলা সাধারণ রঙ্গালয়ের দেড় শ বছর পূর্তি উৎসব। এই দিনে ১৮৭২ সালে অবিভক্ত ভারতের রাজধানী কলকাতায় সূচনা হলো সাধারণ রঙ্গালয়। এর আগে নাটকের অভিনয় হতো জমিদারের বাগানবাড়িতে, পূজার মণ্ডপে বা যেকোনো উন্মুক্ত স্থানে কিংবা পাড়া-মহল্লায়। সেসব নাট্যাভিনয়ে প্রতিভাবান অভিনেতারা
অভিনয় করতেন বটে, কিন্তু সবার প্রবেশাধিকার ছিল না।
আবার নাট্যাভিনয়ের জন্য সামন্ত প্রভু ও বিত্তবানদের অনুগ্রহ নিতে হতো। ১৮৭২ সালের প্রথম দিক থেকেই কিছু উদ্যমী তরুণ ন্যাশনাল থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেন এবং দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীল দর্পণ’ নাটক দিয়ে টিকিটের বিনিময়ে যাত্রা শুরু করেন। অভিনয়ের জন্য খুব কম টাকায় জোড়াসাঁকোর মধুসূদন সান্যালের ঘড়িওয়ালা বাড়িটি ভাড়া নেন। চারদিক ঘেরাও করে আট আনা ও এক টাকা মূল্যের টিকিটের বিনিময়ে নাট্যাভিনয় শুরু করেন। দীনবন্ধু মিত্র নীল দর্পণ নাটকটি রচনা করেন ১৮৬০ সালে এবং ওই বছরই ঢাকার বাঙ্গালা প্রেস থেকে মুদ্রিত হয়ে প্রকাশিত হয়। নাটকটি যেহেতু অত্যাচারী ইংরেজ নীলকরদের বিরুদ্ধে, তাই নাট্যকার সেখানে তাঁর নাম ব্যবহার করেননি।
১৮৬১ সালে ঢাকার পূর্ববঙ্গ রঙ্গভূমিতে নাটকটি অভিনীত হয়। নাটকটি অভিনীত হওয়ার পর নানা ধরনের নিপীড়ন নেমে আসে এবং বিষয়টি কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। তবু কলকাতার উদ্যমী তরুণেরা বাংলা সাধারণ রঙ্গালয়ের প্রথম নাটক হিসেবে মঞ্চস্থ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই দিন পুরো প্রেক্ষাগৃহে একটি মাত্র গ্যাসলাইটের মাধ্যমে অভিনীত হয় এবং টিকিট বিক্রি হয় এক শ টাকা।
ন্যাশনাল থিয়েটার এরপর নানা ধরনের সংকটে নিপতিত হয়। তবু নাট্যাভিনয়ের অগ্রযাত্রা চলতে থাকে। এ সময়ে ১৮৭৬ সালে ইংল্যান্ডের প্রিন্স অব ওয়েলস কলকাতায় বেড়াতে আসেন। জনৈক জগদানন্দ উকিলের বাড়িতে তাঁকে সংবর্ধনা জানানো হয়, সেখানে প্রচুর পানাহার ও নৃত্য-গীতের আয়োজন হয়েছিল। কলকাতার সুন্দরী রমণীরা মাটিতে তাঁদের চুল বিছিয়ে দিয়েছিলেন, যার ওপর দিয়ে প্রিন্স অব ওয়েলস হেঁটে সংবর্ধনাস্থলে পৌঁছান। এ ঘটনা সারা কলকাতায় ছড়িয়ে পড়ে। তখনকার নাট্যকর্মীরা এই সংবর্ধনাকে কেন্দ্র করে নাটক রচনা করেন, যার নাম ‘গজদানন্দ’। এ প্রহসনটি কলকাতায় খুবই আলোড়ন সৃষ্টি করে। তখন কোম্পানির শাসনের অবসান হলেও এখানকার ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ এটি বরদাশত করে না। নাটকের পাণ্ডুলিপি, দৃশ্যসজ্জা, প্রপস ইত্যাদি বাজেয়াপ্ত হয় এবং নাটকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, অভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৮৭৬ কালাকানুন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সময়ে বহু অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্দেশক কারাবরণ করেন। সেই আইনে এ-ও বলা হয়, অভিনয়ের জন্য একটি চন্দ্রালোকিত রাত্রিই প্রয়োজন হবে, কৃষ্ণপক্ষের কোনো রজনীতে অভিনয় হবে না। আইনটি ভারতবর্ষে সর্বত্র প্রয়োগ করা হয় নাটকের কণ্ঠ রোধ করার জন্য।
স্বাধীন ভারতের কোনো কোনো স্থানে আইনটির এখনো প্রয়োগ আছে। কিন্তু বাংলাদেশে অনেক লড়াই-সংগ্রামের পর ২০০১ সালে আইনটি রদ করা হয়েছে। এর আগে এ আইনটিকে অমান্য করার জন্য নাট্যকর্মীরা নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। শুধু নাটক নয়, যাত্রাপালায়ও এর প্রয়োগ চলতে থাকে। মুকুন্দ দাস স্বদেশী যাত্রা নামে বরিশাল থেকে শুরু করে সারা বাংলায় দেশাত্মবোধক যাত্রাভিনয় করতেন। যেহেতু যেকোনো জেলার সদরে অভিনয় করতে গেলে পুলিশ এসে তা বন্ধ করতে পারে এবং তিনি গ্রেপ্তার হতে পারেন, এই ভেবে অভিনয়গুলো করতেন জেলার সীমান্তে। অভিনয় চলাকালে তিনি হয়তো খবর পেতেন বরিশাল জেলার পুলিশ অভিনয় বন্ধ করতে এগিয়ে আসছে। তখন তিনি তাঁর দলবল নিয়ে পাশের জেলা ফরিদপুরে চলে যেতেন। এমনি করেই জেলা থেকে জেলায় তাঁর অভিনয় চালিয়ে যেতেন। ব্রিটিশ সরকার সে সময়ে আরেকটি আইন প্রবর্তন করে, যার নাম ‘ডিস্ট্রিক্ট এনডোর্সমেন্ট অ্যাক্ট’। এটার সারমর্ম হলো, কোনো যাত্রাদল যদি এক জেলা থেকে আরেক জেলায় অভিনয় করতে যায়, তাহলে ওই জেলার ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে পূর্বাহ্ণে অনুমতি নিতে হয়। এত সব ঝামেলা উপেক্ষা করে বহুদিন পর্যন্ত মুকুন্দ দাস গ্রামবাংলার পথে-প্রান্তরে তাঁর স্বদেশী যাত্রা চালিয়ে গেছেন। সাধারণ রঙ্গালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর কলকাতা শহরে বেশ কয়েকটি রঙ্গমঞ্চ গড়ে ওঠে। এই রঙ্গমঞ্চগুলোর মালিকানায় চলে আসে ধনাঢ্য ব্যক্তিরাই।
কিন্তু প্রথমে যাঁরা ন্যাশনাল থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তাঁদের ভাবনা ছিল টিকিটলব্ধ টাকা দিয়েই থিয়েটার চালিয়ে যাবেন। সাধারণ রঙ্গালয়ে একসময়ে বিনোদন মুখ্য হয়ে ওঠে। যে আদর্শ সামনে রেখে নীল দর্পণের মতো নাটক দিয়ে বাংলা সাধারণ রঙ্গালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, সেই ভাবনা আর রক্ষা করা যাচ্ছিল না। তাই চল্লিশের দশকের শুরুতে পাল্টা আরেকটি নাট্যধারার জন্ম হয়, যার উদ্যোগ নিল ভারতীয় গণনাট্য সংঘ। সেই উদ্যোগের প্রথম নাটক ‘নবান্ন’। দেশে তখন দুর্ভিক্ষ, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ চলছে। মানুষের তৈরি এই দুর্ভিক্ষের বিরুদ্ধে এক শৈল্পিক প্রতিবাদ নবান্ন। তারপর যুদ্ধ চলে যাওয়ার পর আরেকটি বড় আঘাত আসে সেটি হচ্ছে—দেশভাগ। নাট্যকর্মীরা তা-ও মেনে নিতে পারেননি। সাধারণ রঙ্গালয়ের বিনোদনধর্মিতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী নাটকের জোয়ার বইতে থাকে। অনেকে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হলেন, আর এর নাম হলো সংঘনাট্য।পরবর্তীকালে ইংরেজিতে ‘গ্রুপ থিয়েটার’।
কলকাতা এবং ভারতবর্ষের অনেক স্থানে এই গ্রুপ থিয়েটার খুবই জনপ্রিয় হয়। নাট্যকর্মীদের নিজেদের সৃজনশীলতা এবং পকেটের পয়সা দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে এই নাট্যধারা গড়ে ওঠে, যা এখনো ভারত ও বাংলাদেশে প্রচলিত আছে। বাংলাদেশের নাটকের ইতিহাসটা ঠিক সে রকমই। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগেও নাটক হতো পাড়া-মহল্লায়, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনিয়মিত চর্চায়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সাল থেকে এ চর্চা নিয়মিত হয়ে যায়। সেই অর্থে বাংলাদেশের নিয়মিত নাট্যচর্চার বয়স পঞ্চাশ। এখানেও নাটক প্রবলভাবে রাজনৈতিক। অভিনয় নিয়ন্ত্রণ ও প্রমোদ কর দিয়ে প্রথম দিকে এর বিরুদ্ধে নাটকের চর্চাকে ব্যাহত করার চেষ্টা চলেছে। বঙ্গবন্ধু বিষয়টিকে প্রথমে সহজ করে দিলেন প্রমোদ কর রহিত করে এবং পুলিশের কাছে নয়, নাটকের সেন্সর দিয়ে দিলেন শিল্পকলা একাডেমির হাতে। সামরিক শাসনামলে কখনো আবার পুলিশ কর্তৃপক্ষ নাটকের কালাকানুনকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছে। কিন্তু নাট্যকর্মীদের প্রবল বাধার বিরুদ্ধে তা ধোপে টেকেনি। নাটকের সংঘবদ্ধ শক্তি বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার কর্তৃপক্ষ সেন্সর আইন অমান্য করতে শুরু করে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময়ে নাটক একটি বড় রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে থাকে। নাটক হয়ে দাঁড়ায় রাজনীতির এক বিকল্প মাধ্যমে।
কোনো কিছু ছাপার অক্ষরে প্রকাশ করলে কোনো অনুমতি লাগে না। একমাত্র অনুমতি লাগে নাটকে। তা না হলে অভিনয় করা যায় না। শিল্পের অন্যান্য শাখায় এ ধরনের কালাকানুন নেই। এর কারণও খুব সহজ। নীল দর্পণ নাটক দেড় শ বছর আগে যে উদাহরণ সৃষ্টি করেছিল, তাতে শাসকগোষ্ঠীর ভয় পাওয়ারই কথা। নাটকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এ শিল্পটি গণতান্ত্রিক। কিছু জীবন্ত মানুষ অভিনয় করে আর কিছু জীবন্ত মানুষ নাটকটি অবলোকন করে। এই দুইয়ের মিথস্ক্রিয়ায় একটা চেতনা তৈরি হয় এবং আদিকাল থেকেই সেই চেতনা প্রতিবাদী।
সেই নাটক জনপ্রিয় হয়, যা মানুষের কণ্ঠস্বরকে ধারণ করতে পারে। মানুষের প্রাণের কথা বিবেকের মতো জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেয় এবং একই সঙ্গে শাসকগোষ্ঠীকে দর্শকের সামনে উন্মোচন করে। বাংলায় আদিকাল থেকেই যেসব আঙ্গিক সংলাপ ও অভিনয়ের মাধ্যমে মানুষের সামনে উপস্থিত করেছে, সেগুলোও প্রতিবাদী এবং সমাজসংস্কারের বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে। তাই এই জীবন্ত মাধ্যমটি সারা বিশ্বেই এখন প্রতিবাদী চেতনার বাহক।
কলকাতায় দেড় শ বছর পূর্তি উপলক্ষে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের সঙ্গে নীল দর্পণ নাটকটি যেমন অভিনীত হয়েছে, তেমনি ঢাকায়ও ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর জাতীয় নাট্যশালায় বাঙলা থিয়েটার কলকাতার ৭ ডিসেম্বরের পর পুনরায় অভিনয় করেছে। দুটি স্থানেই বিপুলসংখ্যক দর্শক নাটকটি দেখে দেড় শ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যে ফিরে গেছেন। দুটি দেশেই নাট্যচর্চায় পৃষ্ঠপোষকতা নেই। ভারতে কিছুটা থাকলেও তা অপ্রতুল। বাংলাদেশে নাট্যচর্চায় গত পঞ্চাশ বছরে এক অভাবনীয় অগ্রগতি হয়েছে।
অনেকে বলে, নাটক মুক্তিযুদ্ধের উজ্জ্বল ফসল, নাটক সত্যিকার অর্থেই মুক্তিযুদ্ধকে বুকে ধারণ করে তার চেতনাকে পৌঁছে দেওয়ার গুরুদায়িত্ব বহন করে আসছে।
স্বৈরাচার, সাম্প্রদায়িকতা, শোষণ-নিপীড়ন—এসবের বিরুদ্ধে নাটক সোচ্চার হয়েছে এবং তার দৃঢ় অবস্থানকে জানান দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত নাটককে পেশা হিসেবে নিতে পারছেন না নিবেদিতপ্রাণ নাট্যকর্মীরা। এই দুঃখ দিন দিন গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে।
লেখক: মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

বাংলাদেশের নিয়মিত নাট্যচর্চার বয়স পঞ্চাশ। এখানেও নাটক প্রবলভাবে রাজনৈতিক। অভিনয় নিয়ন্ত্রণ ও প্রমোদ কর দিয়ে প্রথম দিকে এর বিরুদ্ধে নাটকের চর্চাকে ব্যাহত করার চেষ্টা চলেছে। সম্প্রতি এক ঐতিহাসিক ঘটনা হয়ে গেল।
২২ ডিসেম্বর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

বাংলাদেশের নিয়মিত নাট্যচর্চার বয়স পঞ্চাশ। এখানেও নাটক প্রবলভাবে রাজনৈতিক। অভিনয় নিয়ন্ত্রণ ও প্রমোদ কর দিয়ে প্রথম দিকে এর বিরুদ্ধে নাটকের চর্চাকে ব্যাহত করার চেষ্টা চলেছে। সম্প্রতি এক ঐতিহাসিক ঘটনা হয়ে গেল।
২২ ডিসেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

বাংলাদেশের নিয়মিত নাট্যচর্চার বয়স পঞ্চাশ। এখানেও নাটক প্রবলভাবে রাজনৈতিক। অভিনয় নিয়ন্ত্রণ ও প্রমোদ কর দিয়ে প্রথম দিকে এর বিরুদ্ধে নাটকের চর্চাকে ব্যাহত করার চেষ্টা চলেছে। সম্প্রতি এক ঐতিহাসিক ঘটনা হয়ে গেল।
২২ ডিসেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

বাংলাদেশের নিয়মিত নাট্যচর্চার বয়স পঞ্চাশ। এখানেও নাটক প্রবলভাবে রাজনৈতিক। অভিনয় নিয়ন্ত্রণ ও প্রমোদ কর দিয়ে প্রথম দিকে এর বিরুদ্ধে নাটকের চর্চাকে ব্যাহত করার চেষ্টা চলেছে। সম্প্রতি এক ঐতিহাসিক ঘটনা হয়ে গেল।
২২ ডিসেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫