রাজধানীতে আজ শনিবার বিএনপির সমাবেশ ঘিরে উত্তরের জেলাগুলো থেকে ঢাকামুখী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। গতকাল শুক্রবার ভোরে দু-একটি বাস ছেড়ে গেলেও বিকেলের দিকে এসে তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
পরিবহনমালিক-শ্রমিকেরা দাবি করছেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার শঙ্কায় মানুষ ঢাকামুখী হচ্ছে না। এতে করে যাত্রীসংকট থাকায় বাস চলাচল কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কোনো ধর্মঘট চলছে না।
গতকাল দুপুরে মডার্ন মোড়, মাহিগঞ্জ সাতমাথা, মেডিকেল মোড় ও কামারপাড়া ঢাকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কগুলোতে আন্তজেলার বাস চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও ঢাকাগামী বাসের সংখ্যা কমে গেছে। সাধারণত এক ঘণ্টা পরপর ঢাকার বাস ছাড়লেও তখন চার ঘণ্টা পর পর ছাড়ছিল।
কামারপাড়া বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায়, সারি সারি বাস দাঁড়িয়ে রয়েছে। কাউন্টারগুলো ফাঁকা, অলস সময় পার করছেন পরিবহনশ্রমিকেরা। কিছু যাত্রীর আনাগোনা থাকলেও অন্য দিনের মতো তেমন চাপ নেই।
সেখানে আসা হাড়িয়ারকুঠির বায়েজিদ ইসলাম বলেন, ‘সৌদিতে যাব ১৫ তারিখ। তাই ঢাকার কিছু কাজ সারতে সাড়ে ১০টার টিকিট কাটছিলাম। এখানে এসে দেখি গাড়ি ফাঁকা। দুই ঘণ্টা অপেক্ষার পর টিকিট বাতিল করে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।’
আরেক যাত্রী রাকিব হোসেন বলেন, ‘শনিবার ঢাকায় কাজে যোগ দিতে হবে। তাই টিকিট কেটেছিলাম আজ (গতকাল) সকালের। কিন্তু বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি বাস বন্ধ।’
এ বিষয়ে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফতাবুজ্জামান বলেন, ‘দু-তিন দিন ধরে ঢাকাগামী বাসের যাত্রী কমে গেছে। মালিকদের লোকজন নিয়ে বাস ঢাকায় যাতায়াত করছে। তার ওপর আগামীকাল (আজ) ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ। ভোগান্তির কথা চিন্তা করে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঢাকায় যাচ্ছে না। আজ (গতকাল) যাত্রী নেই বললেই চলে।’
এদিকে নীলফামারী থেকে বাসে যাত্রী কমে যাওয়ার পাশাপাশি ঢাকাগামী আন্তনগর ট্রেন নীলসাগর ও সৈয়দপুর-ঢাকা রুটে চলাচলকারী উড়োজাহাজেও যাত্রী কমে গেছে।
এনা পরিবহনের সৈয়দপুর কাউন্টারের এজেন্ট ফয়সাল দিদার দীপু জানান, উত্তরের বিভিন্ন জেলা থেকে সৈয়দপুর কাউন্টার হয়ে তাঁদের পাঁচটি নৈশকোচ চলাচল করে।
গতকাল রাতের জন্য এসব কোচের কোনো টিকিট কেউ সংগ্রহ করেননি। তাই বাধ্য হয়ে চলাচল বন্ধ করতে হয়েছে।
নাবিল পরিবহনের কাউন্টার এজেন্ট রবিউল আউয়াল রবি জানান, শুক্রবার সকালে তাঁদের একটি কোচ ঢাকা অভিমুখে ছেড়ে যায়। বাকিগুলোতে যাত্রী পাওয়া যায়নি।
এদিকে সৈয়দপুর রেলস্টেশনের মাস্টার ওবায়দুল ইসলাম রতন বলেন, আন্তনগর ট্রেন নীলসাগর এক্সপ্রেসে গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার যাত্রীসংখ্যা অনেক কম দেখা গেছে।
আগেই টিকিট বিক্রি শেষ হলেও অনেক যাত্রী ভ্রমণ করেনি।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর থেকে উড়োজাহাজ চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও ঢাকাগামী যাত্রীসংখ্যা কমে যাওয়ায় অল্প যাত্রী নিয়ে উড়াল দিয়েছে বিভিন্ন ফ্লাইট।
উড়োজাহাজের টিকিট বিক্রির এজেন্ট মাওয়া ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী মমিনুল ইসলাম মিঠু বলেন, ‘ঢাকাগামী শুক্র ও শনিবারের ফ্লাইটের কোনো টিকিট বিক্রি করতে পারিনি। এই অঞ্চলের অনেক পরিচিত ব্যবসায়ী বৃহস্পতিবার ব্যবসার কাজে ঢাকা যান, কিন্তু এবারে কেউ যায়নি। তাঁরা রোববারের টিকিট বুকিং দিয়েছেন।’
বিএনপির সমাবেশ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
- সড়কে প্রস্তুত পুলিশ, ‘নাশকতা হলেই’ ব্যবস্থা
- যান তল্লাশিতে কমেছে যাত্রী, টানাটানি বাস চালকদের
- নয়াপল্টনে নাশকতার আশঙ্কা: হাফিজ
- নাশকতার আশঙ্কা নেই, শহরজুড়ে ২০ হাজার পুলিশ: ডিবির প্রধান
- বিএনপির সমাবেশ: ক্যাপ দেখে যায় চেনা
- বিএনপির সমাবেশ: মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা
- সমাবেশ গোলাপবাগে, নয়াপল্টনে ৪০০ পুলিশের সতর্ক অবস্থান
- খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে ফের অতিরিক্ত পুলিশ: শায়রুল কবির
- গোলাপবাগে বিএনপির সমাবেশ শুরু
- বিএনপির সমাবেশ: রাজধানী গণপরিবহনশূন্য, সড়কে সতর্ক পুলিশ
- পায়ে হেঁটে রাজধানীর পথে কর্মজীবী সাধারণ মানুষ
- বিএনপির সমাবেশ: গোলাপবাগ মাঠেই তৈরী হচ্ছে ব্যানার-ফেস্টুন
- বিএনপির সমাবেশ: মধ্যরাতেও উজ্জীবিত গোলাপবাগ মাঠ, স্লোগানে সরব নেতা-কর্মীরা
- গোলাপবাগ মাঠে প্রস্তুত হচ্ছে মঞ্চ, অপেক্ষা নেতাদের
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে