Ajker Patrika

‘গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন নিয়ন্ত্রণহীন, ৪৪ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২২, ১৩: ৩৩
‘গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন নিয়ন্ত্রণহীন, ৪৪ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ’

গাইবান্ধা-৫ আসনের সংসদীয় উপনির্বাচন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, আইনভঙ্গ করে গোপন কক্ষে প্রবেশ করে ভোট দিয়ে দিতে আমরা স্বচক্ষে দেখেছি। এখন পর্যন্ত ৪৪টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ করা হয়েছে।

আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গাইবান্ধা-৫ আসনের ভোট পর্যবেক্ষণের মনিটরিং সেলে বসে সিইসি এ মন্তব্য করেন। হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ঢাকা থেকে সিসি ক্যামেরায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সময় আমাদের কাছে যে কয়কটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ নিয়ন্ত্রণহীন মনে হয়েছে, সেগুলোতে সঙ্গে সঙ্গে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’ 

গত জুলাইয়ে সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার মৃত্যুতে এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘মূল অ্যাকশন হিসেবে আমরা কেন্দ্র বন্ধ করেছি। এখন চাকরিবিধি অনুযায়ী বা অন্যবিধি অনুযায়ী কী অ্যাকশন নেব তারপরবর্তীতে দেখব। আমরা টেলিফোনে এসপি, ডিসি, রিটার্নিং অফিসারকে বলেছি, যে আমরা এখান থেকে সিসি ক্যামেরায় দেখতে পেয়েছি। তাই সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দিয়েছি।’ 

নির্বাচন বন্ধের ব্যাপারে সিইসি বলেন, ‘কমিশন যদি মনে করে নির্বাচন সঠিকভাবে হচ্ছে না তাহলে তা বন্ধ করতে পারে। আমরা সেই আলোকে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। যখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যখন নেব, তখন জানাব।’ 

নির্বাচন নিয়ন্ত্রণের বাইরে কেন চলে গেল তা আমরা বলতে পারব না জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে অনেকটাই। আপনারাও দেখতে পেয়েছেন যে গোপন কক্ষে ভোট সুশৃঙ্খলভাবে হচ্ছে না। কেন হচ্ছে এমন তা চটজলদি বলতে পারব না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঠিকমতো কাজ করছে কি না, তা আমরা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। ইভিএমেরও কোনো ত্রুটি দেখতে পাচ্ছি না। ওই যে মানবিক আচরণ, আরেকজন ঢুকে যাচ্ছে, দেখিয়ে দিচ্ছে। আবার অনেকেই দেখছি গেঞ্জি পড়ে, শাড়ি পড়ে যেখানে প্রতীক আছে দেখা যাচ্ছে তারা সেখানে আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। যা এটা সুশৃঙ্খল নির্বাচনের পরিপন্থী। এরাই ডাকাত, এরাই দুর্বৃত্ত। যারাই আইন মানছেন না তাদেরই আমরা ডাকাত দুর্বৃত্ত বলতে পারি। কারণ আইনের প্রতি সকলকে শ্রদ্ধা করতে হবে। সকলে যদি আইন না মানি নির্বাচন কমিশন এখানে বসে সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারবে না।’

এর আগে আজ বুধবার সকাল ৮টা থেকে গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এবারই প্রথম ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে আসনটিতে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। 

নির্বাচনী মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে প্রতিটি কেন্দ্রে চারজন পুলিশ সদস্য ও ১২ জন আনসার সদস্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া ভোটের মাঠে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) ৯টি টিম, চার প্লাটুন বিজিবি ও পাঁচটি সাদা পোশাকের স্ট্রাইকিং ফোর্স দায়িত্বে রয়েছে। তা ছাড়া ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনী মাঠে আছেন। এ ছাড়া ১ হাজার ২৪২টি সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকছে সবগুলো ভোটকেন্দ্র। 

গাইবান্ধা-৫ আসনটি ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত। এর মধ্যে সাঘাটা উপজেলার ১০টি ও ফুলছড়ি উপজেলার ৭টিসহ মোট ১৭টি ইউনিয়ন মিলে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৭০ হাজার ১৬০ জন। 

এই উপনির্বাচনে সাঘাটা উপজেলায় ৮৮টি এবং ফুলছড়ি উপজেলায় ৫৭টিসহ মোট ১৪৫টি কেন্দ্রে ৯৫২টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। 

আসনটিতে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মাহমুদ হাসান রিপন, জাতীয় পার্টির এ এইচ এম গোলাম শহীদ রনজু (লাঙল), বিকল্পধারা বাংলাদেশের জাহাঙ্গীর আলম (কুলা), স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ (আপেল) ও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান (ট্রাক)।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজধানীতে হোস্টেল থেকে এনসিপি নেত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৫
জান্নাতারা রুমি। ছবি: ফেসবুক
জান্নাতারা রুমি। ছবি: ফেসবুক

রাজধানীর জিগাতলার একটি ছাত্রী হোস্টেল থেকে এক তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালের দিকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, হাজারীবাগ থানার জিগাতলা এলাকার একটি ছাত্রী হোস্টেল থেকে জান্নাতারা রুমীর (৩০) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে প্রাথমিকভাবে তিনি কোন পদে ছিলেন, তা জানাতে পারেনি পুলিশ। মরদেহ এখনো ওই হোস্টেলেই রয়েছে।

আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাজারীবাগ থানার এসআই সুব্রত। তিনি বলেন, মরদেহটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

ওই তরুণী জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ধানমন্ডি শাখার যুগ্ম সমন্বয়কারী ছিলেন বলে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব তারেক রেজা।

ফেসবুক পোস্টে তারেক রেজা লেখেন, রুমী গত এক মাস ধরে আওয়ামী লীগের ক্রমাগত সাইবার বুলিং, হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি পেয়ে আসছিলেন।

হাজারীবাগ থানা-পুলিশ জানিয়েছে, মরদেহের সুরতহাল প্রস্তুত করার পর ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও, এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা তা নিশ্চিত হওয়া যাবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওসমান হাদিকে গুলি মানে জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা: আল মামুন

 গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি
গতকাল রাতে ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে গঙ্গাচড়া উপজেলা এনসিপির আয়োজনে মশাল মিছিল হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল রাতে ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে গঙ্গাচড়া উপজেলা এনসিপির আয়োজনে মশাল মিছিল হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

জুলাই বিপ্লবের সম্মুখসারির যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করা মানে বাংলাদেশের সব জুলাই যোদ্ধার ওপর হামলা—এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রংপুর জেলার আহ্বায়ক আল মামুন। গতকাল বুধবার রাতে ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে গঙ্গাচড়া উপজেলা এনসিপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত মশাল মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেন।

আল মামুন বলেন, দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। জুলাই যোদ্ধা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সবাই আজ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। একের পর এক হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

আল মামুন আরও বলেন, ‘আজ ওসমান হাদির ওপর হামলা হয়েছে, আগামীকাল আমার ওপর কিংবা অন্য কোনো সহযোদ্ধার ওপরও হতে পারে। এটি দেশের মানুষের বিরুদ্ধে কোনো পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র কি না, তা সরকারকে স্পষ্ট করতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, হয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি করতে হবে, নয়তো পদত্যাগ করতে হবে। জনগণ নিরাপদ না থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

সমাবেশে রংপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গার নির্বাচনী তৎপরতার সমালোচনা করে আল মামুন বলেন, আবারও ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র হচ্ছে, যা জুলাই যোদ্ধারা প্রতিহত করবে।

মশাল মিছিলটি গঙ্গাচড়া সরকারি কলেজ মোড় থেকে শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে গঙ্গাচড়া বাজার জিরো পয়েন্টে সমাবেশ শেষে পুনরায় কলেজ মোড়ে এসে শেষ হয়। এতে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের এনসিপি নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বৃক্ষরোপণে বদলে যাচ্ছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

­­শাহীন রহমান, পাবনা
পাবিপ্রবি ক্যাম্পাসকে সবুজে পরিণত করতে রোপণ করা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ১ হাজার ২০০ গাছের চারা। গতকাল সকালে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবিপ্রবি ক্যাম্পাসকে সবুজে পরিণত করতে রোপণ করা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ১ হাজার ২০০ গাছের চারা। গতকাল সকালে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাত্র ১৭ বছরের তরুণ একটি বিশ্ববিদ্যালয়। জন্মলগ্নে যার জায়গা ছিল বিস্তীর্ণ জলাভূমি ও খোলা প্রান্তর। সময়ের সঙ্গে সেই ভূমিতে গড়ে উঠেছে আকাশছোঁয়া নান্দনিক ভবন। তবে দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে ছিল রুক্ষ পরিবেশ—ছিল না পর্যাপ্ত গাছ, ফুল কিংবা ছায়া। সেই ভাবনা থেকেই ক্যাম্পাসকে প্রাণবন্ত করে তুলতে বিশেষ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু করেছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘প্রাকৃতিক চরিত্র’ ফুটিয়ে তুলতে গত মে মাস থেকে নান্দনিক পরিকল্পনায় ফলদ, বনজ, ঔষধি ও শোভাবর্ধক ২৫০ প্রজাতির প্রায় ১ হাজার ২০০টি গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। পরিবেশগত বিপর্যয় মোকাবিলা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, দুর্লভ প্রজাতির গাছ রক্ষা এবং সৌন্দর্যবর্ধন—এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে নেওয়া হয়েছে উদ্যোগটি। এরই মধ্যে ক্যাম্পাসে যুক্ত হয়েছে প্রশান্তির নতুন মাত্রা। আগামী তিন বছরের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ ‘গ্রিন ক্যাম্পাস’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।

এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ এবং স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষকসহ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ছয় সদস্যের একটি বৃক্ষরোপণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুরো কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মো. নজরুল ইসলাম। তিনি বায়ো-বেজড কম্পোজিটস, কাঠ সংরক্ষণ, বায়ো-আঠা ও উদ্ভিদবিষয়ক গবেষণায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন।

বৃক্ষরোপণ কমিটি ৩০ একর ক্যাম্পাসকে ১ হাজার ২০০ জোনে ভাগ করে পরিকল্পিতভাবে চারা রোপণের উদ্যোগ নেয়। প্রতিটি স্থানে ৮ ফুট বালু অপসারণ করে গোবর ও দোআঁশ মাটি দিয়ে এক মাস আগে থেকেই জায়গা প্রস্তুত করা হয়। পর্যাপ্ত প্রস্তুতির পরই চারা রোপণ শুরু হয়, যা এখনো চলমান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণের প্রধানতম উদ্দেশ্য সবুজায়ন, সৌন্দর্যবর্ধন ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা। নাটোরের লালপুরসহ পাবনা উঞ্চ এলাকা হিসেবে ইতিমধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে প্রচণ্ড গরম পড়ে। পর্যাপ্ত বৃক্ষরোপণ তাপমাত্রা কমাতে পারে। জীববৈচিত্র্য মাথায় রেখেছি। দুর্লভ গাছ সংরক্ষণের বিষয়টি পরিকল্পনায় আছে। যেসব গাছ হারিয়ে যাচ্ছে, সেসব গাছের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচয় করাতে চাই। ক্যাম্পাসকে সবুজ ও সৌন্দর্যবর্ধন করতে চাই। এখানে পাখি আসবে।’

নজরুল ইসলাম আরও বলেন, কিছুদিনের মধ্যেই ক্যাম্পাসটি জীববৈচিত্র্য, শিক্ষা ও গবেষণার জন্য একটি সমৃদ্ধ লিভিং ল্যাবরেটরিতে পরিণত হবে। গাছপালা বড় হলে জলবায়ু সহনশীলতা বাড়বে, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও বাতাসের মান উন্নত হবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন পোকামাকড় ও পাখির আবাসস্থল তৈরি হয়ে জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ হবে। জীববিজ্ঞান, পরিবেশবিজ্ঞান, কৃষি ও বনবিদ্যার শিক্ষার্থীরা এখানে একটি বাস্তব গবেষণা ক্ষেত্র পাবে।

অবকাঠামো নির্মাণের পর ক্যাম্পাসের যেসব জায়গা ফাঁকা ছিল, মূলত সেসব স্থানে বনজ, ফলদ, ঔষধি ও ছায়াদানকারী গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। অনেক বিলুপ্তপ্রায় ও দুর্লভ প্রজাতির গাছ সংগ্রহ করে লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ধুপ, উরি আম, মধুমাধবী, হাপরমালী, কানাইডিঙ্গা, নাগলিঙ্গম, রক্তন, তমাল, পুন্নাগ, কুসুম, কুরচি, মুচকুন্দচাঁপা, করঞ্জ, পরশপিপুল, কৃষ্ণবট, নীল অঞ্জন, রয়না, রিঠা, কুম্ভী, পুত্রঞ্জীবসহ নানা প্রজাতির গাছ।

এই কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি আর্থিক সহায়তা দিয়েছে পূবালী ও জনতা ব্যাংক। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন চারা রোপণে সহযোগিতা করেছে। ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন রাখতে নিয়মিত কাজ করছে রোভার স্কাউট গ্রুপ। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসের লেকে মাছ অবমুক্ত করা হয়েছে এবং কচ্ছপ ছাড়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।

বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী হোসাইন আহমেদ বলেন, ‘রোপিত চারাগুলোর সঙ্গে বড় হবে আমাদের স্বপ্ন ও সম্ভাবনা। ছায়াঘেরা পথ, ফুলের বাগান আর প্রাণবন্ত পরিবেশে ক্যাম্পাস হবে শিক্ষার্থীদের জন্য আদর্শ সময় কাটানোর জায়গা। এটি সত্যিকারের একটি লিভিং ল্যাবরেটরি হয়ে উঠবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এস আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদি রক্ষণাবেক্ষণ ও সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে বৃক্ষরোপণ করছি। এর মাধ্যমে পরিবেশগত উপকারিতার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মননশীলতা ও সৃজনশীলতা বাড়বে। জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই ভবিষ্যতের জন্য আমাদের উদ্যোগ কাজে লাগবে। আমাদের ক্যাম্পাস ছড়িয়ে পড়বে দেশ থেকে দেশান্তরে। এই ক্যাম্পাসের আলোয় আলোকিত হবে পুরো বাংলাদেশ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নেত্রকোনা সীমান্তে ২৮ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
উদ্ধার করা মদের বোতল। ছবি: সংগৃহীত
উদ্ধার করা মদের বোতল। ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্ত এলাকা থেকে ২৮ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের পাতলাবন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে মালিকবিহীন অবস্থায় ২৮ বোতল ভারতীয় মদ ‘আইস ভদকা’ উদ্ধার করা হয়। নেত্রকোনা ব্যাটালিয়নের (৩১ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল এ এস এম কামরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৩১ বিজিবির অধীন বরুয়াকোনা বিওপি থেকে চার সদস্যের একটি বিশেষ টহল দল সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত পিলার ১১৮১ এমপি থেকে আনুমানিক ২০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাতলাবন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে মালিকবিহীন অবস্থায় মদগুলো উদ্ধার করা হয়।

বিজিবি অধিনায়ক বলেন, সীমান্ত এলাকায় মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে নিয়মিত টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উদ্ধার করা মাদকদ্রব্য নেত্রকোনা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত