অর্ণব সান্যাল, ঢাকা

প্রত্যাখ্যান। এই এক শব্দের ভেতরেই আছে অগ্রাহ্য, উপেক্ষা, অনাদর। আছে পরিত্যাগ বা পরিহার। কিন্তু শিরোনামে দেওয়া ‘আনন্দ’ কখনোই সচরাচর শাব্দিকভাবে প্রত্যাখ্যানের সঙ্গে মেলে না। বাংলা বা ইংরেজি—দুই ভাষাতেই প্রত্যাখ্যান মানেই যেন বিষাদের বাতাবরণ। কিন্তু কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ধার করা পঙ্ক্তিতে বললে এবারের ভাবনাটা দাঁড়ায়, প্রত্যাখ্যানে দুমড়ে-মুচড়ে যেতেই পারি, কিন্তু কেন যাব?
প্রত্যাখ্যাতদের প্রত্যাখ্যান সব সময়ই বোঝায়, ‘তুমি অযোগ্য, তুমি ব্রাত্য’। আর সেই অনুভূতিই আমাদের নিদারুণভাবে বোঝায় সফলতা ও ব্যর্থতার সংজ্ঞা। এক ধাক্কায় ফেলে দেয় অসফলের কাতারে। কিন্তু আসলেই কি প্রত্যাখ্যান মানেই সকরুণ ব্যর্থতা? নাকি এক প্রত্যাখ্যান মানেই আরও বহু সম্ভাবনার দুয়ার?
প্রথম প্রশ্নটায় ইতিবাচক উত্তর দেওয়ার মানুষ পাওয়া যাবে ঢের। এই সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিটাই যে তেমন। ধরুন, আপনি নিজের সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করলেন শিক্ষাজীবনে ভালো ফল করার। কিংবা একদা মনের দেওয়া-নেওয়া হওয়া মানুষটি বলে দিলেন, ‘আর নয়।’ অথবা পড়াশোনা শেষের পর একের পর এক জীবনবৃত্তান্তের প্রিন্ট কপি দিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেওয়া মানবসম্পদ বিভাগের ই-মেইল ঠিকানায়। কিন্তু সুফল এল না। এমনকি এল না কোনো প্রকার ফলও। হয়তো খুব ভালো পরীক্ষা দিয়েও কিছু কিছু ঘাটতিতে ফসকে গেল কাঙ্ক্ষিত সিজিপিএ। হয়তো শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকার পরও প্রাথমিক সাক্ষাৎকারের জন্য ডাক দিল না কোনো প্রতিষ্ঠান। এই প্রত্যাখ্যান আপনার আশপাশের মানুষ দেখবে আপনার ব্যর্থতা হিসেবে। শুধু দেখেই ক্ষান্ত হবে না তারা, পদে পদে মনেও করিয়ে দেবে সকালে তারস্বরে বেজে যাওয়া মোবাইলের অ্যালার্মের মতো। ওদিকে বারবার নিজের প্রত্যাখ্যানের পোস্টার দেখতে দেখতে আপনার মনে হতেই পারে, ‘আমি হয়তো ব্যর্থই!’
প্রত্যাখ্যাত হয়ে হতাশ হয়ে পড়ার দিন হয়তো মানুষ শেষ করে এনেছে। পশ্চিমা সমাজে শুরু হয়েছে প্রত্যাখ্যান বা ব্যর্থতা উদ্যাপনের সংস্কৃতি। মানুষ এখন নিজের আবেগগুলো নিয়ে আরও স্বচ্ছ হতে চলেছে। এই প্রক্রিয়া মানুষকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
ঠিক এমন মুহূর্তটিকে ঠেকানোর জন্যই আসলে দ্বিতীয় প্রশ্নটির অবতারণা। তার মানে এই নয় যে রবার্ট ব্রুসের সেই আদ্যিকালের বদ্যি গল্প শুনিয়ে আপনাকে শক্তি জুগিয়ে যাওয়াই এই লেখার একমাত্র উদ্দেশ্য। একটু অন্যভাবে বরং পুরো বিষয়টি দেখা যাক।
প্রত্যাখ্যানে কী হয়
প্রত্যাখ্যানে মানুষের আসলে কী হয়? যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার ডিউক ইউনিভার্সিটির সাইকোলজি ও নিউরোসায়েন্সের ইমেরিটাস অধ্যাপক মার্ক লিয়েরি প্রায় কয়েক দশক ধরে প্রত্যাখ্যানের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি গবেষণায় পেয়েছেন, প্রত্যাখ্যান একজন ব্যক্তির উৎসাহ-উদ্দীপনাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। নতুন করে ফের শুরু করার বিষয়টিই থমকে যায় অনেক ক্ষেত্রে। এমনকি কখনো কখনো একজন ব্যক্তি আশপাশের চেনা বলয় থেকে নিজেকে বিচ্যুত বলে ভাবতে শুরু করে।
মার্ক লিয়েরি বলছেন, প্রত্যাখ্যানের প্রতি মানুষ খুবই সংবেদনশীল থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের মস্তিষ্কের যেসব অংশ শারীরিক ব্যথা পেলে উদ্দীপ্ত হয়, প্রত্যাখ্যানেও ঠিক তাই-ই হয়। কারণ প্রত্যাখ্যানে শুধু যে আফসোস সৃষ্টি হয়, তা কিন্তু নয়; বরং সেই সঙ্গে তৈরি হয় উদগ্র চেষ্টার পরও আকাঙ্ক্ষিত ফলাফল হাতে না পাওয়ার মনোবেদনা। বুঝুন তবে, প্রত্যাখ্যানের যন্ত্রণা কতটা তীব্র!
প্রত্যাখ্যান উদ্যাপন করুন
যন্ত্রণার তীব্রতা থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন সমাজে, বিশেষত পশ্চিমা দেশগুলোতে শুরু হয়েছে প্রত্যাখ্যান উদ্যাপনের চর্চা। প্রত্যাখ্যানও যে উদ্যাপন করা যায় আনন্দের সঙ্গে, সেই ধারণাই গড়ে উঠছে ধীরে ধীরে। প্রত্যাখ্যানেই তো জীবনের শেষ নয়; বরং এই প্রত্যাখ্যানকে গলার মালা করে নিতে পারলে, জীবনের যাপনটা অনেক সহজ হয়ে ওঠে। এমন ধারণার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, প্রত্যাখ্যানের মুখোমুখি হতে এবং তা সহজভাবে মেনে নিতে মানুষ ভয় পায়। সেই ভয় থেকেই আসে নিজেকে ব্যর্থ মনে করার ভাবনা। আর তখন আশপাশ থেকে মানুষ নিজেকে গুটিয়ে নেয়। সেই গুটিয়ে নেওয়া থেকে শুধু লম্বাই হতে থাকে ব্যর্থতার তালিকা। কারণ তখন যে নতুন কিছু করার বা ফের চেষ্টা করার প্রেরণাটাই হারিয়ে যায় দূর আকাশে।
প্রত্যাখ্যান উদ্যাপনের চর্চার দু-একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার কগনিটিভ সায়েন্সেসের অধ্যাপক বারবারা ডব্লিউ সারনেকা গত বছরের জুনে শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক পার্টির আয়োজন করেছিলেন। সেটির মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের ‘শততম’ প্রত্যাখ্যান উদ্যাপন। মূলত শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রত্যাখ্যানের সংখ্যা যখন ১০০ পেরিয়েছে, তখনই এই পার্টির আয়োজন করা হয়েছে। সাফল্য উদ্যাপনে যেমনটা হয়, ঠিক তেমনি উচ্ছল ছিল সেই ‘প্রত্যাখ্যান’ উদ্যাপন। এ নিয়ে অধ্যাপক বারবারা সারনেকা বলেছেন, ‘এই ভাবনাটা আসে বিভিন্ন প্রত্যাখ্যানকে চিহ্নিত করা, একে অপরের সঙ্গে ভাগাভাগি করা এবং সেসব উদ্যাপনের প্রসঙ্গে। আমরা প্রত্যাখ্যানকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারি না, এ নিয়ে আলোচনাও করতে চাই না সাধারণত, লজ্জিত থাকি। আর উদ্যাপন তো দূরের বিষয়। আমরা সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করতে চেয়েছি এবং তা করেছি সবাই মিলে।’
এভাবেই পশ্চিমা দেশগুলোতে ‘রিজেকশন কালেকশন’-এর ধারণা জনপ্রিয় হচ্ছে; যাতে জীবনের নানা স্তরে পাওয়া প্রত্যাখ্যানগুলোকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, সাদরে বরণ করেও নেওয়া হয়। এতে দূর হয় প্রত্যাখ্যান নিয়ে তাবৎ গোপনীয়তা। কারণ মানুষের জীবন প্রত্যাখ্যান ও ব্যর্থতায় ভরপুর। হ্যাঁ, কারও কারও ওপর হয়তো তথাকথিত সৌভাগ্যদেবীর আশীর্বাদ প্রবল থাকে। কিন্তু কতিপয় ব্যতিক্রমে তো আর সংখ্যাগরিষ্ঠরা ভেসে যায় না।
‘যারা সচল থাকে না, তারা নিজেদের শৃঙ্খলও বোঝে না।’ বলেছেন রোজা লুক্সেমবার্গ। প্রত্যাখ্যাত হলে হতাশ না হয়ে বরং নিজের ব্যর্থতাগুলো নিয়ে নতুন করে মূল্যায়ন করার চেষ্টা করুন। এতে আপনি সচল থাকবেন এবং আপনার সামনে নতুন পথ খুলে যাবে।
শুধু রিজেকশন কালেকশনই নয়, আছে ‘ফেইলিউর সিভি’ তৈরির ধারণাও। ২০১৬ সালে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির এক অধ্যাপক এই ফেইলিউর সিভি তৈরি করে নিজের জীবনের ব্যর্থতার খতিয়ান জানিয়েছিলেন। সেই থেকে ব্যর্থতা নিয়ে এই অকপট স্বীকারোক্তি ব্যর্থতায় নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার ট্যাবু ভাঙার উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এর মাধ্যমে নিজেদের ব্যর্থতা জনসমক্ষে স্বীকার করে নেওয়া হয় এবং প্রত্যাখ্যান যে মানবজীবনের একটি অতি সাধারণ অংশ, সেটিই বুঝিয়ে দেওয়া হয় এক লহমায়।
ব্যর্থতাকে দিন ছুটি
প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর বা ব্যর্থতায় ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরির সঙ্গে সঙ্গে কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে জীবনতরীতে নিজেকে ভাসিয়ে রাখার লক্ষ্যে। এমনই কিছু কৌশল সম্পর্কে এবার জেনে নেওয়া যাক।
প্রথমত, অন্যের ব্যর্থতার গল্প কিছুটা উদ্দেশ্যমূলকভাবে হলেও জানা শুরু করা যেতে পারে। কারণ অন্যের ব্যর্থতার কাহিনি আমাদের নিজস্ব ব্যর্থতায় সৃষ্ট ভয়কে কাটিয়ে দিতে সক্ষম। চিকিৎসক ও থেরাপিস্টরা এই পদ্ধতি ব্যবহারে সায় দিয়ে থাকেন প্রায়ই। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিয়াওদং ডি. লিন দীর্ঘদিন বিজ্ঞানী, ক্রীড়াবিদ ও সাধারণ পেশার মানুষদের জীবনের ব্যর্থতা ও তার সম্মুখীন হওয়ার সংগ্রাম নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি মনে করেন, এই পদ্ধতিতে মানুষের মনের ভয় ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসে এবং এর ক্ষতি করার আশঙ্কাও কমে।
দ্বিতীয়ত, সফলতার জন্য কাঙাল হওয়া বন্ধ করা যেতে পারে। সাধারণত একটি কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা তাতে সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার বিষয়ে মনোযোগী হয়ে পড়ি। ফলে ক্রমান্বয়ে উন্নতির ব্যাপারটি আমাদের নজর এড়িয়ে যায়। তাই নিজেদের আশাহত হওয়ার উদ্দাম ঘোড়াকে লাগাম পরাতে চাইলে, শুরুতেই মন দিতে হবে উন্নতিতে, সাফল্যে নয়। কারণ আপনি যদি কোনো কাজে বিফলও হন, তবু চুলচেরা বিশ্লেষণ করলে দেখবেন, সেই আপাত ব্যর্থতাতেও কিছু না কিছু উন্নতি আছেই।
তৃতীয়ত, প্রত্যাখ্যান মানেই চেষ্টার সত্যায়ন। রোজা লুক্সেমবার্গের এ কথাটি মনে রাখবেন, ‘যারা সচল থাকে না, তারা নিজেদের শৃঙ্খলও বোঝে না।’ সুতরাং, প্রত্যাখ্যান বা ব্যর্থতা আসলে আপনার ঘাটতি বুঝিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি এ-ও দেখিয়ে দেয় যে আপনি চেষ্টা করেছিলেন। এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ক্রিকেটার ক্রিস গেইল হয়তো সব বলে ছক্কা হাঁকান না, কিন্তু চেষ্টা জারি থাকে বলেই শেষ পর্যন্ত কোনো না কোনো ওভারে বল মাঠের বাইরে যায়-ই!
চতুর্থত, কিছু কিছু ক্ষেত্রে চামড়া মোটা থাকাটাও কল্যাণকর! আপনি যত বেশি প্রত্যাখ্যাত হবেন, তত বেশি সেটি আপনার কাছে সহজ বিষয় হয়ে উঠবে। এটি আপনার দক্ষতা নিয়ে নতুন করে ভাবার অবকাশ তৈরি করে দেবে। মানবজীবনে দক্ষতাই সব। আর দক্ষতা কোনো জন্মগত বিষয়ও নয় যে কখনোই তা অর্জন করা যাবে না। তাহলে আর প্রত্যাখ্যাত হতে ভয় কিসের!
পঞ্চমত, ব্যর্থতার কথা ভেবে দিন-রাত গুজরানের বদলে চলুন, নিজেদের কাজ নিয়ে গঠনমূলক সমালোচনা করি। যেহেতু কেউই শতভাগ নিখুঁত হয় না, সেহেতু খুঁতগুলো চিহ্নিত করা যেতেই পারে। আর সেটি নিজে করতে পারলে তো সোনায় সোহাগা। এতে পরবর্তী উদ্যোগগুলো সফল না হয়ে পারেই না!
শেষটা করা যাক বিখ্যাত উদ্ভাবক ও বিজ্ঞানী থমাস আলভা এডিসনের জীবনের একটি বহুল প্রচলিত ঘটনা দিয়ে। ল্যাবরেটরিতে নিজের ব্যর্থ প্রচেষ্টাগুলো সম্পর্কে তিনি একদা বলেছিলেন, ‘আমি ব্যর্থ হইনি। আমি বরং হাজার দশেক উপায় খুঁজে পেয়েছি, যেগুলো আদতে কাজ করে না।’
অকার্যকর উপায়গুলো খুঁজে পাওয়াটাও কিন্তু দিন শেষে কার্যকর থাকারই নির্দেশক। সুতরাং, উদ্যাপন হোক তবে সব প্রত্যাখ্যান ও তৎসংশ্লিষ্ট ব্যর্থতার!
তথ্যসূত্র: ফোর্বস, দ্য আটলান্টিক, মিডিয়াম ডট কম, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ডট ওআরজি, স্মিথসোনিয়ান ম্যাগ ও অক্সফোর্ড রেফারেন্স ডট কম।

প্রত্যাখ্যান। এই এক শব্দের ভেতরেই আছে অগ্রাহ্য, উপেক্ষা, অনাদর। আছে পরিত্যাগ বা পরিহার। কিন্তু শিরোনামে দেওয়া ‘আনন্দ’ কখনোই সচরাচর শাব্দিকভাবে প্রত্যাখ্যানের সঙ্গে মেলে না। বাংলা বা ইংরেজি—দুই ভাষাতেই প্রত্যাখ্যান মানেই যেন বিষাদের বাতাবরণ। কিন্তু কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ধার করা পঙ্ক্তিতে বললে এবারের ভাবনাটা দাঁড়ায়, প্রত্যাখ্যানে দুমড়ে-মুচড়ে যেতেই পারি, কিন্তু কেন যাব?
প্রত্যাখ্যাতদের প্রত্যাখ্যান সব সময়ই বোঝায়, ‘তুমি অযোগ্য, তুমি ব্রাত্য’। আর সেই অনুভূতিই আমাদের নিদারুণভাবে বোঝায় সফলতা ও ব্যর্থতার সংজ্ঞা। এক ধাক্কায় ফেলে দেয় অসফলের কাতারে। কিন্তু আসলেই কি প্রত্যাখ্যান মানেই সকরুণ ব্যর্থতা? নাকি এক প্রত্যাখ্যান মানেই আরও বহু সম্ভাবনার দুয়ার?
প্রথম প্রশ্নটায় ইতিবাচক উত্তর দেওয়ার মানুষ পাওয়া যাবে ঢের। এই সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিটাই যে তেমন। ধরুন, আপনি নিজের সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করলেন শিক্ষাজীবনে ভালো ফল করার। কিংবা একদা মনের দেওয়া-নেওয়া হওয়া মানুষটি বলে দিলেন, ‘আর নয়।’ অথবা পড়াশোনা শেষের পর একের পর এক জীবনবৃত্তান্তের প্রিন্ট কপি দিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেওয়া মানবসম্পদ বিভাগের ই-মেইল ঠিকানায়। কিন্তু সুফল এল না। এমনকি এল না কোনো প্রকার ফলও। হয়তো খুব ভালো পরীক্ষা দিয়েও কিছু কিছু ঘাটতিতে ফসকে গেল কাঙ্ক্ষিত সিজিপিএ। হয়তো শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকার পরও প্রাথমিক সাক্ষাৎকারের জন্য ডাক দিল না কোনো প্রতিষ্ঠান। এই প্রত্যাখ্যান আপনার আশপাশের মানুষ দেখবে আপনার ব্যর্থতা হিসেবে। শুধু দেখেই ক্ষান্ত হবে না তারা, পদে পদে মনেও করিয়ে দেবে সকালে তারস্বরে বেজে যাওয়া মোবাইলের অ্যালার্মের মতো। ওদিকে বারবার নিজের প্রত্যাখ্যানের পোস্টার দেখতে দেখতে আপনার মনে হতেই পারে, ‘আমি হয়তো ব্যর্থই!’
প্রত্যাখ্যাত হয়ে হতাশ হয়ে পড়ার দিন হয়তো মানুষ শেষ করে এনেছে। পশ্চিমা সমাজে শুরু হয়েছে প্রত্যাখ্যান বা ব্যর্থতা উদ্যাপনের সংস্কৃতি। মানুষ এখন নিজের আবেগগুলো নিয়ে আরও স্বচ্ছ হতে চলেছে। এই প্রক্রিয়া মানুষকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
ঠিক এমন মুহূর্তটিকে ঠেকানোর জন্যই আসলে দ্বিতীয় প্রশ্নটির অবতারণা। তার মানে এই নয় যে রবার্ট ব্রুসের সেই আদ্যিকালের বদ্যি গল্প শুনিয়ে আপনাকে শক্তি জুগিয়ে যাওয়াই এই লেখার একমাত্র উদ্দেশ্য। একটু অন্যভাবে বরং পুরো বিষয়টি দেখা যাক।
প্রত্যাখ্যানে কী হয়
প্রত্যাখ্যানে মানুষের আসলে কী হয়? যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার ডিউক ইউনিভার্সিটির সাইকোলজি ও নিউরোসায়েন্সের ইমেরিটাস অধ্যাপক মার্ক লিয়েরি প্রায় কয়েক দশক ধরে প্রত্যাখ্যানের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি গবেষণায় পেয়েছেন, প্রত্যাখ্যান একজন ব্যক্তির উৎসাহ-উদ্দীপনাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। নতুন করে ফের শুরু করার বিষয়টিই থমকে যায় অনেক ক্ষেত্রে। এমনকি কখনো কখনো একজন ব্যক্তি আশপাশের চেনা বলয় থেকে নিজেকে বিচ্যুত বলে ভাবতে শুরু করে।
মার্ক লিয়েরি বলছেন, প্রত্যাখ্যানের প্রতি মানুষ খুবই সংবেদনশীল থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের মস্তিষ্কের যেসব অংশ শারীরিক ব্যথা পেলে উদ্দীপ্ত হয়, প্রত্যাখ্যানেও ঠিক তাই-ই হয়। কারণ প্রত্যাখ্যানে শুধু যে আফসোস সৃষ্টি হয়, তা কিন্তু নয়; বরং সেই সঙ্গে তৈরি হয় উদগ্র চেষ্টার পরও আকাঙ্ক্ষিত ফলাফল হাতে না পাওয়ার মনোবেদনা। বুঝুন তবে, প্রত্যাখ্যানের যন্ত্রণা কতটা তীব্র!
প্রত্যাখ্যান উদ্যাপন করুন
যন্ত্রণার তীব্রতা থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন সমাজে, বিশেষত পশ্চিমা দেশগুলোতে শুরু হয়েছে প্রত্যাখ্যান উদ্যাপনের চর্চা। প্রত্যাখ্যানও যে উদ্যাপন করা যায় আনন্দের সঙ্গে, সেই ধারণাই গড়ে উঠছে ধীরে ধীরে। প্রত্যাখ্যানেই তো জীবনের শেষ নয়; বরং এই প্রত্যাখ্যানকে গলার মালা করে নিতে পারলে, জীবনের যাপনটা অনেক সহজ হয়ে ওঠে। এমন ধারণার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, প্রত্যাখ্যানের মুখোমুখি হতে এবং তা সহজভাবে মেনে নিতে মানুষ ভয় পায়। সেই ভয় থেকেই আসে নিজেকে ব্যর্থ মনে করার ভাবনা। আর তখন আশপাশ থেকে মানুষ নিজেকে গুটিয়ে নেয়। সেই গুটিয়ে নেওয়া থেকে শুধু লম্বাই হতে থাকে ব্যর্থতার তালিকা। কারণ তখন যে নতুন কিছু করার বা ফের চেষ্টা করার প্রেরণাটাই হারিয়ে যায় দূর আকাশে।
প্রত্যাখ্যান উদ্যাপনের চর্চার দু-একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার কগনিটিভ সায়েন্সেসের অধ্যাপক বারবারা ডব্লিউ সারনেকা গত বছরের জুনে শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক পার্টির আয়োজন করেছিলেন। সেটির মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের ‘শততম’ প্রত্যাখ্যান উদ্যাপন। মূলত শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রত্যাখ্যানের সংখ্যা যখন ১০০ পেরিয়েছে, তখনই এই পার্টির আয়োজন করা হয়েছে। সাফল্য উদ্যাপনে যেমনটা হয়, ঠিক তেমনি উচ্ছল ছিল সেই ‘প্রত্যাখ্যান’ উদ্যাপন। এ নিয়ে অধ্যাপক বারবারা সারনেকা বলেছেন, ‘এই ভাবনাটা আসে বিভিন্ন প্রত্যাখ্যানকে চিহ্নিত করা, একে অপরের সঙ্গে ভাগাভাগি করা এবং সেসব উদ্যাপনের প্রসঙ্গে। আমরা প্রত্যাখ্যানকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারি না, এ নিয়ে আলোচনাও করতে চাই না সাধারণত, লজ্জিত থাকি। আর উদ্যাপন তো দূরের বিষয়। আমরা সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করতে চেয়েছি এবং তা করেছি সবাই মিলে।’
এভাবেই পশ্চিমা দেশগুলোতে ‘রিজেকশন কালেকশন’-এর ধারণা জনপ্রিয় হচ্ছে; যাতে জীবনের নানা স্তরে পাওয়া প্রত্যাখ্যানগুলোকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, সাদরে বরণ করেও নেওয়া হয়। এতে দূর হয় প্রত্যাখ্যান নিয়ে তাবৎ গোপনীয়তা। কারণ মানুষের জীবন প্রত্যাখ্যান ও ব্যর্থতায় ভরপুর। হ্যাঁ, কারও কারও ওপর হয়তো তথাকথিত সৌভাগ্যদেবীর আশীর্বাদ প্রবল থাকে। কিন্তু কতিপয় ব্যতিক্রমে তো আর সংখ্যাগরিষ্ঠরা ভেসে যায় না।
‘যারা সচল থাকে না, তারা নিজেদের শৃঙ্খলও বোঝে না।’ বলেছেন রোজা লুক্সেমবার্গ। প্রত্যাখ্যাত হলে হতাশ না হয়ে বরং নিজের ব্যর্থতাগুলো নিয়ে নতুন করে মূল্যায়ন করার চেষ্টা করুন। এতে আপনি সচল থাকবেন এবং আপনার সামনে নতুন পথ খুলে যাবে।
শুধু রিজেকশন কালেকশনই নয়, আছে ‘ফেইলিউর সিভি’ তৈরির ধারণাও। ২০১৬ সালে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির এক অধ্যাপক এই ফেইলিউর সিভি তৈরি করে নিজের জীবনের ব্যর্থতার খতিয়ান জানিয়েছিলেন। সেই থেকে ব্যর্থতা নিয়ে এই অকপট স্বীকারোক্তি ব্যর্থতায় নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার ট্যাবু ভাঙার উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এর মাধ্যমে নিজেদের ব্যর্থতা জনসমক্ষে স্বীকার করে নেওয়া হয় এবং প্রত্যাখ্যান যে মানবজীবনের একটি অতি সাধারণ অংশ, সেটিই বুঝিয়ে দেওয়া হয় এক লহমায়।
ব্যর্থতাকে দিন ছুটি
প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর বা ব্যর্থতায় ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরির সঙ্গে সঙ্গে কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে জীবনতরীতে নিজেকে ভাসিয়ে রাখার লক্ষ্যে। এমনই কিছু কৌশল সম্পর্কে এবার জেনে নেওয়া যাক।
প্রথমত, অন্যের ব্যর্থতার গল্প কিছুটা উদ্দেশ্যমূলকভাবে হলেও জানা শুরু করা যেতে পারে। কারণ অন্যের ব্যর্থতার কাহিনি আমাদের নিজস্ব ব্যর্থতায় সৃষ্ট ভয়কে কাটিয়ে দিতে সক্ষম। চিকিৎসক ও থেরাপিস্টরা এই পদ্ধতি ব্যবহারে সায় দিয়ে থাকেন প্রায়ই। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিয়াওদং ডি. লিন দীর্ঘদিন বিজ্ঞানী, ক্রীড়াবিদ ও সাধারণ পেশার মানুষদের জীবনের ব্যর্থতা ও তার সম্মুখীন হওয়ার সংগ্রাম নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি মনে করেন, এই পদ্ধতিতে মানুষের মনের ভয় ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসে এবং এর ক্ষতি করার আশঙ্কাও কমে।
দ্বিতীয়ত, সফলতার জন্য কাঙাল হওয়া বন্ধ করা যেতে পারে। সাধারণত একটি কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা তাতে সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার বিষয়ে মনোযোগী হয়ে পড়ি। ফলে ক্রমান্বয়ে উন্নতির ব্যাপারটি আমাদের নজর এড়িয়ে যায়। তাই নিজেদের আশাহত হওয়ার উদ্দাম ঘোড়াকে লাগাম পরাতে চাইলে, শুরুতেই মন দিতে হবে উন্নতিতে, সাফল্যে নয়। কারণ আপনি যদি কোনো কাজে বিফলও হন, তবু চুলচেরা বিশ্লেষণ করলে দেখবেন, সেই আপাত ব্যর্থতাতেও কিছু না কিছু উন্নতি আছেই।
তৃতীয়ত, প্রত্যাখ্যান মানেই চেষ্টার সত্যায়ন। রোজা লুক্সেমবার্গের এ কথাটি মনে রাখবেন, ‘যারা সচল থাকে না, তারা নিজেদের শৃঙ্খলও বোঝে না।’ সুতরাং, প্রত্যাখ্যান বা ব্যর্থতা আসলে আপনার ঘাটতি বুঝিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি এ-ও দেখিয়ে দেয় যে আপনি চেষ্টা করেছিলেন। এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ক্রিকেটার ক্রিস গেইল হয়তো সব বলে ছক্কা হাঁকান না, কিন্তু চেষ্টা জারি থাকে বলেই শেষ পর্যন্ত কোনো না কোনো ওভারে বল মাঠের বাইরে যায়-ই!
চতুর্থত, কিছু কিছু ক্ষেত্রে চামড়া মোটা থাকাটাও কল্যাণকর! আপনি যত বেশি প্রত্যাখ্যাত হবেন, তত বেশি সেটি আপনার কাছে সহজ বিষয় হয়ে উঠবে। এটি আপনার দক্ষতা নিয়ে নতুন করে ভাবার অবকাশ তৈরি করে দেবে। মানবজীবনে দক্ষতাই সব। আর দক্ষতা কোনো জন্মগত বিষয়ও নয় যে কখনোই তা অর্জন করা যাবে না। তাহলে আর প্রত্যাখ্যাত হতে ভয় কিসের!
পঞ্চমত, ব্যর্থতার কথা ভেবে দিন-রাত গুজরানের বদলে চলুন, নিজেদের কাজ নিয়ে গঠনমূলক সমালোচনা করি। যেহেতু কেউই শতভাগ নিখুঁত হয় না, সেহেতু খুঁতগুলো চিহ্নিত করা যেতেই পারে। আর সেটি নিজে করতে পারলে তো সোনায় সোহাগা। এতে পরবর্তী উদ্যোগগুলো সফল না হয়ে পারেই না!
শেষটা করা যাক বিখ্যাত উদ্ভাবক ও বিজ্ঞানী থমাস আলভা এডিসনের জীবনের একটি বহুল প্রচলিত ঘটনা দিয়ে। ল্যাবরেটরিতে নিজের ব্যর্থ প্রচেষ্টাগুলো সম্পর্কে তিনি একদা বলেছিলেন, ‘আমি ব্যর্থ হইনি। আমি বরং হাজার দশেক উপায় খুঁজে পেয়েছি, যেগুলো আদতে কাজ করে না।’
অকার্যকর উপায়গুলো খুঁজে পাওয়াটাও কিন্তু দিন শেষে কার্যকর থাকারই নির্দেশক। সুতরাং, উদ্যাপন হোক তবে সব প্রত্যাখ্যান ও তৎসংশ্লিষ্ট ব্যর্থতার!
তথ্যসূত্র: ফোর্বস, দ্য আটলান্টিক, মিডিয়াম ডট কম, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ডট ওআরজি, স্মিথসোনিয়ান ম্যাগ ও অক্সফোর্ড রেফারেন্স ডট কম।

সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।...
১১ ঘণ্টা আগে
আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।...
১৪ ঘণ্টা আগে
বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে।
১৯ ঘণ্টা আগে
আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর
২১ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।
গতকাল ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর হাতিরঝিলে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে নামের এই ম্যারাথনটি। ‘এক শহর, এক দৌড়, এক ইতিহাস’ স্লোগানে আয়োজিত এ আন্তর্জাতিক রোড রেসে অংশ নেন হাজারো দৌড়বিদ। এদের মধ্যে ছিলেন দেশ-বিদেশের অভিজ্ঞ রানার ও শৌখিন অ্যাথলেটরা।

ঢাকার হাতিরঝিল অ্যাম্ফিথিয়েটার থেকে ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে ৩০ কিলোমিটার ক্যাটাগির এ ম্যারাথনের উদ্বোধন করা হয়। এ ছাড়া ১৫ এবং ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার রেসের উদ্বোধন হয় ভোর ৫টা। অংশগ্রহণকারী দৌড়বিদেরা হাতিরঝিলের চারপাশে বিস্তৃত একটি চ্যালেঞ্জিং ও মনোরম ট্র্যাকে তাঁদের দৌড় সম্পন্ন করেন।
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এ ইভেন্টে অন্তর্ভুক্ত ছিল চারটি প্রতিযোগিতা ক্যাটাগরি। এগুলো হলো,
৩০ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন মামুন আহম্মেদ। দৌড়ের পথ শেষ করতে তিনি সময় নেন ১ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন হামিদা আক্তার জেবা। তিনি শেষ করতে সময় নিয়েছে ২ ঘণ্টা ৪৪ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।
এদিকে ১৫ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন পলাশ শেখ। এ পথ শেষ করতে তিনি সময় নেন ৫৩ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন সাজিয়া হেপ্পি। তিনি দৌড় শেষ করতে সময় নেন ১ ঘণ্টা ২১ মিনিট ৭ সেকেন্ড।

৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন মোস্তাক আহমেদ আভিন। দৌড় শেষ করতে তিনি সময় নেন ২৬ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন সাবরিনা আক্তার স্বর্ণা। তিনি ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার দৌড় শেষ করতে সময় নিয়েছেন ৪৩ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।
এ ছাড়া এক কিলোমিটার ওভারল চ্যাম্পিয়ন হয় সাইফান ওময়ের।
দৌড়বিদদের সুবিধার্থে ইভেন্ট এরিয়ায় স্থাপন করা হয়েছিল মেডিকেল সাপোর্ট সিস্টেম, একাধিক হাইড্রেশন ও কুলিং জোন, লাইভ টাইমিং সুবিধা। ইভেন্ট নিরাপদ করতে ছিল শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ ইভেন্টে কাজ করেন শতাধিক প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিবিড় সহযোগিতায় ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা ছিল অত্যন্ত সমন্বিত।

ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে ম্যারাথন রেস ডিরেক্টর মো. আল-আমীন বলেন, ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে শুধু একটি রেস নয়, এটি একটি সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের আন্দোলন। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে, দৌড়ের পাশাপাশি আমরা চাই ঢাকাকে একটি প্রাণবন্ত ও ইতিবাচক শহরে রূপান্তরিত করতে।’
আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন, বিশাল অংশগ্রহণ, পেশাদার ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপদ আয়োজন, সব মিলিয়ে ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে আজ বাংলাদেশের দৌড় ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল।

সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।
গতকাল ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর হাতিরঝিলে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে নামের এই ম্যারাথনটি। ‘এক শহর, এক দৌড়, এক ইতিহাস’ স্লোগানে আয়োজিত এ আন্তর্জাতিক রোড রেসে অংশ নেন হাজারো দৌড়বিদ। এদের মধ্যে ছিলেন দেশ-বিদেশের অভিজ্ঞ রানার ও শৌখিন অ্যাথলেটরা।

ঢাকার হাতিরঝিল অ্যাম্ফিথিয়েটার থেকে ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে ৩০ কিলোমিটার ক্যাটাগির এ ম্যারাথনের উদ্বোধন করা হয়। এ ছাড়া ১৫ এবং ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার রেসের উদ্বোধন হয় ভোর ৫টা। অংশগ্রহণকারী দৌড়বিদেরা হাতিরঝিলের চারপাশে বিস্তৃত একটি চ্যালেঞ্জিং ও মনোরম ট্র্যাকে তাঁদের দৌড় সম্পন্ন করেন।
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এ ইভেন্টে অন্তর্ভুক্ত ছিল চারটি প্রতিযোগিতা ক্যাটাগরি। এগুলো হলো,
৩০ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন মামুন আহম্মেদ। দৌড়ের পথ শেষ করতে তিনি সময় নেন ১ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন হামিদা আক্তার জেবা। তিনি শেষ করতে সময় নিয়েছে ২ ঘণ্টা ৪৪ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।
এদিকে ১৫ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন পলাশ শেখ। এ পথ শেষ করতে তিনি সময় নেন ৫৩ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন সাজিয়া হেপ্পি। তিনি দৌড় শেষ করতে সময় নেন ১ ঘণ্টা ২১ মিনিট ৭ সেকেন্ড।

৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন মোস্তাক আহমেদ আভিন। দৌড় শেষ করতে তিনি সময় নেন ২৬ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন সাবরিনা আক্তার স্বর্ণা। তিনি ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার দৌড় শেষ করতে সময় নিয়েছেন ৪৩ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।
এ ছাড়া এক কিলোমিটার ওভারল চ্যাম্পিয়ন হয় সাইফান ওময়ের।
দৌড়বিদদের সুবিধার্থে ইভেন্ট এরিয়ায় স্থাপন করা হয়েছিল মেডিকেল সাপোর্ট সিস্টেম, একাধিক হাইড্রেশন ও কুলিং জোন, লাইভ টাইমিং সুবিধা। ইভেন্ট নিরাপদ করতে ছিল শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ ইভেন্টে কাজ করেন শতাধিক প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিবিড় সহযোগিতায় ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা ছিল অত্যন্ত সমন্বিত।

ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে ম্যারাথন রেস ডিরেক্টর মো. আল-আমীন বলেন, ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে শুধু একটি রেস নয়, এটি একটি সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের আন্দোলন। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে, দৌড়ের পাশাপাশি আমরা চাই ঢাকাকে একটি প্রাণবন্ত ও ইতিবাচক শহরে রূপান্তরিত করতে।’
আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন, বিশাল অংশগ্রহণ, পেশাদার ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপদ আয়োজন, সব মিলিয়ে ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে আজ বাংলাদেশের দৌড় ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল।

প্রত্যাখ্যান। এই এক শব্দের ভেতরেই আছে অগ্রাহ্য, উপেক্ষা, অনাদর। আছে পরিত্যাগ বা পরিহার। কিন্তু শিরোনামে দেওয়া ‘আনন্দ’ কখনোই সচরাচর শাব্দিকভাবে প্রত্যাখ্যানের সঙ্গে মেলে না। বাংলা বা ইংরেজি—দুই ভাষাতেই প্রত্যাখ্যান মানেই যেন বিষাদের বাতাবরণ। কিন্তু কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ধার করা পঙ্ক্তিতে
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।...
১৪ ঘণ্টা আগে
বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে।
১৯ ঘণ্টা আগে
আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর
২১ ঘণ্টা আগেফারিয়া রহমান খান

আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।
অতিরিক্ত উদ্বেগ থেকে হওয়া ‘সোমাটিক সিম্পটম’ বা শারীরিক প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে একটি হলো অ্যাংজাইটি ইচিং বা সাইকোজেনিক চুলকানি। উদ্বিগ্নতার তীব্রতা বেশি হলে করটিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। এর কারণে ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি সেরোটোনিন বা ডোপামিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারের ভারসাম্যহীনতার ফলেও অনেক সময় চুলকানি শুরু হয়। এই সমস্যা সাধারণত মাথার তালু, মুখ বা পিঠের উপরিভাগে বেশি দেখা যায়। তাই মানসিক চাপের কারণ খুঁজে বের করে চিকিৎসকের সহায়তা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা ছাড়া মেডিটেশন বা ইয়োগা করা যেতে পারে; পাশাপাশি চুলকানি কমাতে ভালো মানের ময়শ্চরাইজার ব্যবহার করতে হবে, পর্যাপ্ত পানি পান করাসহ অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম পানি দিয়ে গোসল এড়াতে হবে। ডা. তাহরিয়াত আহমেদ শরীফ, সহকারী রেজিস্ট্রার, মেডিসিন বিভাগ, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, ঢাকা
মানসিক চাপের কারণে চুলকানি কেন হয়
উদ্বেগ ও চুলকানি আপাতদৃষ্টে সম্পর্কহীন মনে হলেও এই দুটি একে অপরের সঙ্গে বেশ কিছু বিষয়ে জড়িত। মানসিক চাপের প্রভাবে শরীরে কিছু সমস্যা দেখা দেয়, যেগুলোর ফলে চুলকানি হয়। যেমন—
স্ট্রেস হাইভস: মানসিক চাপের কারণে অনেক সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। ফলে শরীরে চুলকানিযুক্ত ফুসকুড়ি দেখা দেয়।
ঘামাচি বা র্যাশ: উদ্বেগের ফলে ঘাম বেড়ে যায়। ফলে শরীরে ঘামাচি বা র্যাশ দেখা দেয়। এগুলো খুবই চুলকায় এবং ২ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
বিদ্যমান রোগ বাড়িয়ে দেওয়া: যাদের আগে থেকে একজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের সমস্যা আছে, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ তাদের এই রোগগুলো আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে চুলকানির মাত্রা বেড়ে যায়।
চুলকানির তীব্রতা বৃদ্ধি: মানসিক চাপ ও উদ্বেগ সামান্য চুলকানির তীব্রতাও বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়, যা রোগীর কাছে অসহনীয় মনে হতে পারে।
অ্যাংজাইটি ইচিং নিয়ন্ত্রণের কিছু উপায়
অ্যাংজাইটি ইচিং নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রথমে মানসিক চাপের কারণ বের করে তার সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে আরাম পাওয়া যেতে পারে। সেগুলো হলো—
কীভাবে অ্যাংজাইটি ইচিং নির্ণয় করা হয়
প্রথমে চিকিৎসক চুলকানির শারীরিক কারণ; যেমন পোকামাকড়ের কামড়, ত্বকের শুষ্কতা, একজিমা বা অ্যালার্জি আছে কি না, তা নির্ণয় করা হয়। তারপর ডায়াবেটিস, অ্যানিমিয়া বা থাইরয়েডের মতো রোগগুলোও খতিয়ে দেখা হয়। সঠিক সিদ্ধান্তে আসার জন্য রোগীর মানসিক স্বাস্থ্যসহ সম্পূর্ণ রোগের সব তথ্য চিকিৎসককে জানাতে হবে। এর ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসক নিশ্চিত হবেন, চুলকানি মানসিক চাপের জন্য হচ্ছে, নাকি অন্য কোনো কারণে। মানসিক চাপের জন্য চুলকানি হচ্ছে নিশ্চিত হলে সেই অনুযায়ী চিকিৎসক উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন
কারণ ছাড়া অতিরিক্ত চুলকানি অনেক সময় কোনো অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও হতে পারে। মূল কারণ জানা এবং সঠিক চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অ্যাংজাইটি ইচিং যদি আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত করে, ত্বকে সংক্রমণ বা গুরুতর ক্ষতি করে বা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঘরোয়া চিকিৎসায়ও না কমে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এ ছাড়া চুলকানির সঙ্গে জ্বর, রাতে ঘাম হওয়া বা অস্বাভাবিক হারে ওজন কমার মতো লক্ষণ থাকলেও দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। মনে রাখবেন, সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমেই অ্যাংজাইটি ইচিংয়ের মতো সমস্যা কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব।
সূত্র: স্টাইলক্রেজ ও অন্যান্য

আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।
অতিরিক্ত উদ্বেগ থেকে হওয়া ‘সোমাটিক সিম্পটম’ বা শারীরিক প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে একটি হলো অ্যাংজাইটি ইচিং বা সাইকোজেনিক চুলকানি। উদ্বিগ্নতার তীব্রতা বেশি হলে করটিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। এর কারণে ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি সেরোটোনিন বা ডোপামিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারের ভারসাম্যহীনতার ফলেও অনেক সময় চুলকানি শুরু হয়। এই সমস্যা সাধারণত মাথার তালু, মুখ বা পিঠের উপরিভাগে বেশি দেখা যায়। তাই মানসিক চাপের কারণ খুঁজে বের করে চিকিৎসকের সহায়তা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা ছাড়া মেডিটেশন বা ইয়োগা করা যেতে পারে; পাশাপাশি চুলকানি কমাতে ভালো মানের ময়শ্চরাইজার ব্যবহার করতে হবে, পর্যাপ্ত পানি পান করাসহ অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম পানি দিয়ে গোসল এড়াতে হবে। ডা. তাহরিয়াত আহমেদ শরীফ, সহকারী রেজিস্ট্রার, মেডিসিন বিভাগ, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, ঢাকা
মানসিক চাপের কারণে চুলকানি কেন হয়
উদ্বেগ ও চুলকানি আপাতদৃষ্টে সম্পর্কহীন মনে হলেও এই দুটি একে অপরের সঙ্গে বেশ কিছু বিষয়ে জড়িত। মানসিক চাপের প্রভাবে শরীরে কিছু সমস্যা দেখা দেয়, যেগুলোর ফলে চুলকানি হয়। যেমন—
স্ট্রেস হাইভস: মানসিক চাপের কারণে অনেক সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। ফলে শরীরে চুলকানিযুক্ত ফুসকুড়ি দেখা দেয়।
ঘামাচি বা র্যাশ: উদ্বেগের ফলে ঘাম বেড়ে যায়। ফলে শরীরে ঘামাচি বা র্যাশ দেখা দেয়। এগুলো খুবই চুলকায় এবং ২ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
বিদ্যমান রোগ বাড়িয়ে দেওয়া: যাদের আগে থেকে একজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের সমস্যা আছে, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ তাদের এই রোগগুলো আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে চুলকানির মাত্রা বেড়ে যায়।
চুলকানির তীব্রতা বৃদ্ধি: মানসিক চাপ ও উদ্বেগ সামান্য চুলকানির তীব্রতাও বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়, যা রোগীর কাছে অসহনীয় মনে হতে পারে।
অ্যাংজাইটি ইচিং নিয়ন্ত্রণের কিছু উপায়
অ্যাংজাইটি ইচিং নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রথমে মানসিক চাপের কারণ বের করে তার সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে আরাম পাওয়া যেতে পারে। সেগুলো হলো—
কীভাবে অ্যাংজাইটি ইচিং নির্ণয় করা হয়
প্রথমে চিকিৎসক চুলকানির শারীরিক কারণ; যেমন পোকামাকড়ের কামড়, ত্বকের শুষ্কতা, একজিমা বা অ্যালার্জি আছে কি না, তা নির্ণয় করা হয়। তারপর ডায়াবেটিস, অ্যানিমিয়া বা থাইরয়েডের মতো রোগগুলোও খতিয়ে দেখা হয়। সঠিক সিদ্ধান্তে আসার জন্য রোগীর মানসিক স্বাস্থ্যসহ সম্পূর্ণ রোগের সব তথ্য চিকিৎসককে জানাতে হবে। এর ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসক নিশ্চিত হবেন, চুলকানি মানসিক চাপের জন্য হচ্ছে, নাকি অন্য কোনো কারণে। মানসিক চাপের জন্য চুলকানি হচ্ছে নিশ্চিত হলে সেই অনুযায়ী চিকিৎসক উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন
কারণ ছাড়া অতিরিক্ত চুলকানি অনেক সময় কোনো অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও হতে পারে। মূল কারণ জানা এবং সঠিক চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অ্যাংজাইটি ইচিং যদি আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত করে, ত্বকে সংক্রমণ বা গুরুতর ক্ষতি করে বা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঘরোয়া চিকিৎসায়ও না কমে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এ ছাড়া চুলকানির সঙ্গে জ্বর, রাতে ঘাম হওয়া বা অস্বাভাবিক হারে ওজন কমার মতো লক্ষণ থাকলেও দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। মনে রাখবেন, সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমেই অ্যাংজাইটি ইচিংয়ের মতো সমস্যা কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব।
সূত্র: স্টাইলক্রেজ ও অন্যান্য

প্রত্যাখ্যান। এই এক শব্দের ভেতরেই আছে অগ্রাহ্য, উপেক্ষা, অনাদর। আছে পরিত্যাগ বা পরিহার। কিন্তু শিরোনামে দেওয়া ‘আনন্দ’ কখনোই সচরাচর শাব্দিকভাবে প্রত্যাখ্যানের সঙ্গে মেলে না। বাংলা বা ইংরেজি—দুই ভাষাতেই প্রত্যাখ্যান মানেই যেন বিষাদের বাতাবরণ। কিন্তু কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ধার করা পঙ্ক্তিতে
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।...
১১ ঘণ্টা আগে
বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে।
১৯ ঘণ্টা আগে
আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর
২১ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে। এই খাবারগুলো কেবল খাদ্য নয় বরং শিল্পের এক একটি অংশ হয়ে উঠেছে। আর তাই এরা তাদের ক্রেতাদের কাছে ক্ষমতা, প্রাচুর্য এবং এক বিশেষ জীবনযাত্রার প্রতীক।
সবচেয়ে দামি খাবারের তালিকায় প্রথমে আসে সেই মাটির নিচের রহস্য। যা সোনার চেয়েও মূল্যবান। ইতালির পিডমন্ট অঞ্চলের স্থানীয় সাদা ট্রাফল এমনই এক ছত্রাক, যা অত্যন্ত দুর্লভ ও ব্যয়বহুল। একবার চীনের ম্যাকাও-এর এক ক্যাসিনো মালিক প্রায় দেড় কেজি ওজনের একটি ট্রাফল ৩,৩০, ০০০ ডলারে কিনেছিলেন। টাকায় হিসাব করলে যার দাম হয় ৪ কোটি ১ লাখ ৯৩ হাজার ৪০০ টাকা। অন্যদিকে, মসলার জগতে রাজা হলো জাফরান। যাকে ডাকা হয় ’লাল সোনা’ নামে। এক কেজি জাফরান তৈরি করতে হাজার হাজার ফুল লাগে। এ জন্য এর দাম পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মসলার স্থানে নিয়ে গেছে। ফরাসি দ্বীপ নুয়ারমুতিয়ে-তে জন্মানো লা বোনোটে আলুর ক্ষেত্রেও সেই বিরলতা দেখা যায়। বিশেষ পরিবেশে ও শৈবালের কারণে এদের প্রতি কেজির দাম প্রায় ৬০০ ডলার বা ৭৩,১৭৮ টাকা।
মাংস এবং সামুদ্রিক খাবারের জগতেও রয়েছে মহাযজ্ঞের ছোঁয়া। জাপানের ওয়াগিউ বিফ কেবল সুস্বাদুই নয়, এর পেছনের প্রক্রিয়াটিও রাজকীয়। এই গরুগুলোকে বিশেষ খাবার দেওয়া হয়। এমনকি প্রতিদিন মালিশও করা হয়। যার ফলস্বরূপ এর ১০০ গ্রাম মাংসের দাম প্রায় ৫০ ডলার। অর্থাৎ ৬০৯৯ টাকা। আরও একধাপ এগিয়ে, ২০১৯ সালে জাপানে একটি স্নো ক্র্যাব। যা নিলামে বিক্রি হয়েছিল প্রায় ৪৬,০০০ ডলারে। তবে সামুদ্রিক খাবারের মুকুট হলো অ্যালমাস ক্যাভিয়ার। এই বিরল বেলুগা ক্যাভিয়ার প্রতি কেজি ৩৪,৫০০ ডলারে বিক্রি হয়ে থাকে। যার বাংলাদেশি মূল্য দাঁড়ায় ৪২,০৮৩১০ টাকা। যা সত্যিকারের বিলাসিতার প্রতিচ্ছবি। অন্যদিকে, স্পেনের ঐতিহ্যবাহী ইবেরিকো হ্যাম-এর এক পা বা লেগ ৪,৫০০ ডলারের মতো দামে বিক্রি হওয়ার বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে।

রেস্টুরেন্টে গেলে ৮০০ টাকা থাকে শুরু করে ৩০০০ টাকায় পিৎজা পাওয়া যায়। তবে ১২,০০০ ডলার বা ১,৪৬৩, ৭৬০ টাকার পিৎজা কখনো শুনেছেন? আপনি না শুনে থাকলেও পৃথিবীতে তা আছে। পিৎজা নির্মাতা রেনাটো ভায়োলা তৈরি করেছিলেন লিউস XIII পিৎজা। যার উপাদানগুলোর মধ্যে ছিল তিন ধরনের ক্যাভিয়ার। আবার স্কটল্যান্ডের ডোমিনিকো ক্রলা-এর তৈরি পিৎজা রয়্যাল ০০৭ বিকোয় ৪,২০০ ডলারে। যেখানে কগনাক-এ ম্যারিনেট করা লবস্টার ও শ্যাম্পেনে ভেজানো ক্যাভিয়ার ব্যবহার করা হয়েছিল। মেক্সিকোর গ্র্যান্ড ভেলাস রিসোর্টে পাওয়া গ্র্যান্ড ভেলাস লস কাবোস টাকো। যার মূল্য ২৫,০০০ ডলার, যেখানে ছিল কোবে বিফ এবং সোনা-মিশ্রিত টর্টিলা। এমনকি নিউ ইয়র্কের একটি সাধারণ গ্রিলড চিজ স্যান্ডউইচও যখন শ্যাম্পেনে ভেজানো রুটি আর সোনার ফ্লেক্সের সঙ্গে আসে, তখন সেই কুইন্টেসেনশিয়াল গ্রিলড চিজ-এর দাম দাঁড়ায় ২১৪ ডলার।
মিষ্টি এবং পানীয়ের ক্ষেত্রেও বিলাসিতা তার ছাপ ফেলেছে। পেস্ট্রি শেফ জেওং হং-ইয়ংটো এক মাস সময় নিয়ে একটি ক্রিসমাস কেক তৈরি করেছিলেন, যাতে ছিল ২২৩টি হিরা, আর এর দাম ছিল অবিশ্বাস্য ১.৭ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, জাপানি ফলগুলোর মধ্যেও রয়েছে রাজকীয়তা। একটি ডেনসুকে ওয়াটারমেলন নিলামে ৬,১০০ ডলারে বিক্রি হয়েছিল এবং দুটি ইউবারি কিং মেলন ৪৫,০০০ ডলারের বেশি দামে বিক্রি হয়েছিল। পানীয়ের ক্ষেত্রে, ১৯৫২ সালের বিরল টুলিবার্ডিন হুইস্কির একটি বোতলের দাম ৪১,০০০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছিল। তবে প্রকৃতির অদ্ভুত খেয়ালের ফল হলো কপি লুয়াক কফি। সিভেট ক্যাট বা গন্ধগোকুলের হজম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি এই কফি প্রতি কেজি প্রায় ৭০০ ডলারে বিক্রি হয়।
সূত্র: স্টার্স ইনসাইডার

বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে। এই খাবারগুলো কেবল খাদ্য নয় বরং শিল্পের এক একটি অংশ হয়ে উঠেছে। আর তাই এরা তাদের ক্রেতাদের কাছে ক্ষমতা, প্রাচুর্য এবং এক বিশেষ জীবনযাত্রার প্রতীক।
সবচেয়ে দামি খাবারের তালিকায় প্রথমে আসে সেই মাটির নিচের রহস্য। যা সোনার চেয়েও মূল্যবান। ইতালির পিডমন্ট অঞ্চলের স্থানীয় সাদা ট্রাফল এমনই এক ছত্রাক, যা অত্যন্ত দুর্লভ ও ব্যয়বহুল। একবার চীনের ম্যাকাও-এর এক ক্যাসিনো মালিক প্রায় দেড় কেজি ওজনের একটি ট্রাফল ৩,৩০, ০০০ ডলারে কিনেছিলেন। টাকায় হিসাব করলে যার দাম হয় ৪ কোটি ১ লাখ ৯৩ হাজার ৪০০ টাকা। অন্যদিকে, মসলার জগতে রাজা হলো জাফরান। যাকে ডাকা হয় ’লাল সোনা’ নামে। এক কেজি জাফরান তৈরি করতে হাজার হাজার ফুল লাগে। এ জন্য এর দাম পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মসলার স্থানে নিয়ে গেছে। ফরাসি দ্বীপ নুয়ারমুতিয়ে-তে জন্মানো লা বোনোটে আলুর ক্ষেত্রেও সেই বিরলতা দেখা যায়। বিশেষ পরিবেশে ও শৈবালের কারণে এদের প্রতি কেজির দাম প্রায় ৬০০ ডলার বা ৭৩,১৭৮ টাকা।
মাংস এবং সামুদ্রিক খাবারের জগতেও রয়েছে মহাযজ্ঞের ছোঁয়া। জাপানের ওয়াগিউ বিফ কেবল সুস্বাদুই নয়, এর পেছনের প্রক্রিয়াটিও রাজকীয়। এই গরুগুলোকে বিশেষ খাবার দেওয়া হয়। এমনকি প্রতিদিন মালিশও করা হয়। যার ফলস্বরূপ এর ১০০ গ্রাম মাংসের দাম প্রায় ৫০ ডলার। অর্থাৎ ৬০৯৯ টাকা। আরও একধাপ এগিয়ে, ২০১৯ সালে জাপানে একটি স্নো ক্র্যাব। যা নিলামে বিক্রি হয়েছিল প্রায় ৪৬,০০০ ডলারে। তবে সামুদ্রিক খাবারের মুকুট হলো অ্যালমাস ক্যাভিয়ার। এই বিরল বেলুগা ক্যাভিয়ার প্রতি কেজি ৩৪,৫০০ ডলারে বিক্রি হয়ে থাকে। যার বাংলাদেশি মূল্য দাঁড়ায় ৪২,০৮৩১০ টাকা। যা সত্যিকারের বিলাসিতার প্রতিচ্ছবি। অন্যদিকে, স্পেনের ঐতিহ্যবাহী ইবেরিকো হ্যাম-এর এক পা বা লেগ ৪,৫০০ ডলারের মতো দামে বিক্রি হওয়ার বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে।

রেস্টুরেন্টে গেলে ৮০০ টাকা থাকে শুরু করে ৩০০০ টাকায় পিৎজা পাওয়া যায়। তবে ১২,০০০ ডলার বা ১,৪৬৩, ৭৬০ টাকার পিৎজা কখনো শুনেছেন? আপনি না শুনে থাকলেও পৃথিবীতে তা আছে। পিৎজা নির্মাতা রেনাটো ভায়োলা তৈরি করেছিলেন লিউস XIII পিৎজা। যার উপাদানগুলোর মধ্যে ছিল তিন ধরনের ক্যাভিয়ার। আবার স্কটল্যান্ডের ডোমিনিকো ক্রলা-এর তৈরি পিৎজা রয়্যাল ০০৭ বিকোয় ৪,২০০ ডলারে। যেখানে কগনাক-এ ম্যারিনেট করা লবস্টার ও শ্যাম্পেনে ভেজানো ক্যাভিয়ার ব্যবহার করা হয়েছিল। মেক্সিকোর গ্র্যান্ড ভেলাস রিসোর্টে পাওয়া গ্র্যান্ড ভেলাস লস কাবোস টাকো। যার মূল্য ২৫,০০০ ডলার, যেখানে ছিল কোবে বিফ এবং সোনা-মিশ্রিত টর্টিলা। এমনকি নিউ ইয়র্কের একটি সাধারণ গ্রিলড চিজ স্যান্ডউইচও যখন শ্যাম্পেনে ভেজানো রুটি আর সোনার ফ্লেক্সের সঙ্গে আসে, তখন সেই কুইন্টেসেনশিয়াল গ্রিলড চিজ-এর দাম দাঁড়ায় ২১৪ ডলার।
মিষ্টি এবং পানীয়ের ক্ষেত্রেও বিলাসিতা তার ছাপ ফেলেছে। পেস্ট্রি শেফ জেওং হং-ইয়ংটো এক মাস সময় নিয়ে একটি ক্রিসমাস কেক তৈরি করেছিলেন, যাতে ছিল ২২৩টি হিরা, আর এর দাম ছিল অবিশ্বাস্য ১.৭ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, জাপানি ফলগুলোর মধ্যেও রয়েছে রাজকীয়তা। একটি ডেনসুকে ওয়াটারমেলন নিলামে ৬,১০০ ডলারে বিক্রি হয়েছিল এবং দুটি ইউবারি কিং মেলন ৪৫,০০০ ডলারের বেশি দামে বিক্রি হয়েছিল। পানীয়ের ক্ষেত্রে, ১৯৫২ সালের বিরল টুলিবার্ডিন হুইস্কির একটি বোতলের দাম ৪১,০০০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছিল। তবে প্রকৃতির অদ্ভুত খেয়ালের ফল হলো কপি লুয়াক কফি। সিভেট ক্যাট বা গন্ধগোকুলের হজম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি এই কফি প্রতি কেজি প্রায় ৭০০ ডলারে বিক্রি হয়।
সূত্র: স্টার্স ইনসাইডার

প্রত্যাখ্যান। এই এক শব্দের ভেতরেই আছে অগ্রাহ্য, উপেক্ষা, অনাদর। আছে পরিত্যাগ বা পরিহার। কিন্তু শিরোনামে দেওয়া ‘আনন্দ’ কখনোই সচরাচর শাব্দিকভাবে প্রত্যাখ্যানের সঙ্গে মেলে না। বাংলা বা ইংরেজি—দুই ভাষাতেই প্রত্যাখ্যান মানেই যেন বিষাদের বাতাবরণ। কিন্তু কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ধার করা পঙ্ক্তিতে
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।...
১১ ঘণ্টা আগে
আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।...
১৪ ঘণ্টা আগে
আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর
২১ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ নিয়ে আসছে। আর এই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে সাহায্য করার জন্য এয়ারবিএনবি প্রকাশ করেছে ২০২৬ সালের জন্য তাদের ভ্রমণ প্রবণতা পূর্বাভাস।
এই হোম-শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মটির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, আগামী বছর ভ্রমণকারীরা তাদের ছুটি থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে চাইবেন। যা হবে অভিজ্ঞতার কেন্দ্রিক। তাদের রিপোর্টে বেশ কয়েকটি মূল বিষয় উঠে এসেছে। যা আপনাকেও বিশ্ব ভ্রমণের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকতে সাহায্য করতে পারে। এখানে উল্লিখিত পূর্বাভাসগুলো ইঙ্গিত দেয় যে ২০২৬ সালে ভ্রমণ হবে আরও সংক্ষিপ্ত, প্রকৃতির কাছাকাছি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভরপুর এবং অবশ্যই খাদ্য-কেন্দ্রিক। আপনিও আপনার পরবর্তী ভ্রমণের জন্য এই নতুন ধারাগুলো বিবেচনা করতে পারেন।

জেনও জিদের আলট্রা-শর্ট আন্তর্জাতিক ট্রিপ
২০২৬ সালে ভ্রমণের সংজ্ঞাই পাল্টে দিচ্ছে জেনারেশন জি বা জেন জি। বিশাল, বহু-সপ্তাহব্যাপী ভ্রমণের পরিকল্পনাকে ভুলে যান। জেন জি আমাদের শেখাচ্ছে কীভাবে ৪৮ ঘণ্টা বা তারও কম সময়ে যেকোনো স্থানে উড়ে যাওয়া যায়। এয়ারবিএনবি-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, জেন জি রা ’কুইক ট্রিপ’-এর ধারণাটি নতুন করে সংজ্ঞায়িত করছে। দীর্ঘ অবকাশের তুলনায় তাদের ১-২ দিনের আন্তর্জাতিক যাত্রা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। টিকটক-এর ভাইরাল ডে-ট্রিপ ট্রেন্ড দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, এই তরুণ প্রজন্ম সংস্কৃতি-সমৃদ্ধ, উচ্চ-শক্তির অভিজ্ঞতার জন্য মহাদেশ পাড়ি দিচ্ছে। এয়ারবিএনবি বলছে, জেন জি রা কর্মবিরতি সর্বাধিক ভাবে ব্যবহার করার এক নতুন কৌশল দেখাচ্ছে। তারা শান্ত সমুদ্র সৈকতের বদলে বেছে নিচ্ছে সংগীত, নৃত্য, ঐতিহাসিক স্থান এবং খাঁটি খাবারে পূর্ণ প্রাণবন্ত শহুরে অভিজ্ঞতা। এই প্রজন্মের পছন্দের গন্তব্যগুলোর মধ্যে রয়েছে বুয়েনোস আইরেস (আর্জেন্টিনা), বুসান (দক্ষিণ কোরিয়া), কো সামুই (থাইল্যান্ড), মারাকেশ (মরক্কো), মেক্সিকো সিটি (মেক্সিকো), সান জুয়ান (পুয়ের্তো রিকো) এবং স্টকহোম (সুইডেন)।
প্রকৃতির সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটানো
প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভ করা ২০২৫ সালেও একটি জনপ্রিয় প্রবণতা ছিল। আর ২০২৬ সালে এটি আরও বেগবান হবে। এয়ারবিএনবি জানিয়েছে যে বিশ্বজুড়ে জাতীয় উদ্যানগুলির প্রতি অনুসন্ধান এবং আগ্রহ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, একটি জাতীয় উদ্যানের কাছাকাছি থাকার জায়গা খোঁজার হার আগামী বছরের জন্য ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে গ্রেট স্মোকি মাউন্টেনস, শেনানডোহ এবং গ্র্যান্ড টেটনের মতো মার্কিন পার্কগুলোর শতবর্ষ উদ্যাপনের কারণে সেগুলোর প্রতি আগ্রহ আরও বাড়ছে। বৈশ্বিক গন্তব্যগুলোর মধ্যে স্যামারিয়া জর্জ ন্যাশনাল পার্কের কাছাকাছি গ্রিসের ক্রিট, ভিয়েনা, ইন্ডিয়ার গোয়া এবং ইতালির সার্ডিনিয়ার মতো স্থানগুলো ভ্রমণকারীদের নজরে রয়েছে।

বড় ইভেন্টগুলোর টানে ভিড় জমছে
২০২৬ সালে ভ্রমণকারীরা বড় ধরনের সাংস্কৃতিক, খেলাধুলা এবং সংগীত অনুষ্ঠানগুলোকে ঘিরে তাদের যাত্রা পরিকল্পনা করছেন। এয়ারবিএনবি-এর তথ্য অনুযায়ী, আগামী বছরের জন্য শীর্ষ-অনুসন্ধান করা তারিখ এবং শহরগুলোর ৬৫ শতাংশই প্রধান ইভেন্টগুলোর সঙ্গে মিলে যায়। যেমন ফিফা বিশ্বকাপ, কার্নিভাল বা কোচেলা। ভ্রমণকারীরা এই অভিজ্ঞতাগুলোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন, যেন টিকিটই তাদের পাসপোর্টে পরিণত হচ্ছে। কার্নিভালের জন্য রিউ দে জানেরো, কোচেলার জন্য ইন্ডিয়ো, মার্ডি গ্রাস-এর জন্য নিউ অর্লিন্স এবং ২০২৬ অলিম্পিক উইন্টার গেমসের জন্য ইতালির মিলান শীর্ষ অনুসন্ধান তালিকায় রয়েছে।
একক ভ্রমণের পুনরুত্থান
একাকী ভ্রমণ বা সোল ট্রাভেল আবার তার কৃতিত্ব ফিরে পাচ্ছে। স্ব-আবিষ্কারের অনলাইন আলোচনায় উৎসাহিত হয়ে, একক ভ্রমণকারীরা এখন কেবল পুরোনো জায়গায় ফিরে যাচ্ছেন না বরং নতুন হটস্পট আবিষ্কার করছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার ইডিল্ডওয়াইল্ড, ডোমিনিকান রিপাবলিকের লা আলতাগ্রেসিয়া এবং নরওয়ের ট্রোমসো-এর মতো জায়গাগুলোতে অনুসন্ধান তিন অঙ্কের বৃদ্ধি দেখছে। অন্যান্য জনপ্রিয় একক ভ্রমণের গন্তব্যের মধ্যে রয়েছে পর্তুগালের আলগার্ভ অঞ্চল, স্পেনের কোস্টা দেল সল, ফ্লোরিডা কিস এবং স্কটল্যান্ডের ইনভারনেস।
রন্ধনশিল্পের প্রতি আকর্ষণ
২০২৬ সালের জন্য খাবার ও পানীয় সম্পর্কিত ভ্রমণ যেন একেবারে আগুন ঝরাচ্ছে। যেখানে বেকারি ক্লাস এবং ওয়াইন অঞ্চলগুলো শীর্ষে রয়েছে। প্যারিসে ক্রোসঁ তৈরির ক্লাস বা টোকিওতে মোচি বানানো শেখার মতন হাতে-কলমে অভিজ্ঞতার দিকে ভ্রমণকারীরা ঝুঁকছেন। ভাইরাল হওয়া টিকটক ফুড ভিডিওগুলো বিশ্বজুড়ে বেকারি এবং রান্নার ক্লাসের প্রতি আগ্রহ তৈরি করছে। ওয়াইন-প্রেমীরা বেঙ্গালুরু (ভারত), ফিঙ্গার লেকস (নিউ ইয়র্ক), মেলবোর্ন (অস্ট্রেলিয়া)-এর মতো উঠতি ওয়াইন অঞ্চলগুলিতে যাচ্ছেন। বেকারি-হটস্পটগুলোর মধ্যে ইস্তাম্বুল, লিসবন, প্যারিস, তাইপে এবং টোকিও বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
সূত্র: ট্রাভেল+লিজার

আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ নিয়ে আসছে। আর এই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে সাহায্য করার জন্য এয়ারবিএনবি প্রকাশ করেছে ২০২৬ সালের জন্য তাদের ভ্রমণ প্রবণতা পূর্বাভাস।
এই হোম-শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মটির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, আগামী বছর ভ্রমণকারীরা তাদের ছুটি থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে চাইবেন। যা হবে অভিজ্ঞতার কেন্দ্রিক। তাদের রিপোর্টে বেশ কয়েকটি মূল বিষয় উঠে এসেছে। যা আপনাকেও বিশ্ব ভ্রমণের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকতে সাহায্য করতে পারে। এখানে উল্লিখিত পূর্বাভাসগুলো ইঙ্গিত দেয় যে ২০২৬ সালে ভ্রমণ হবে আরও সংক্ষিপ্ত, প্রকৃতির কাছাকাছি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভরপুর এবং অবশ্যই খাদ্য-কেন্দ্রিক। আপনিও আপনার পরবর্তী ভ্রমণের জন্য এই নতুন ধারাগুলো বিবেচনা করতে পারেন।

জেনও জিদের আলট্রা-শর্ট আন্তর্জাতিক ট্রিপ
২০২৬ সালে ভ্রমণের সংজ্ঞাই পাল্টে দিচ্ছে জেনারেশন জি বা জেন জি। বিশাল, বহু-সপ্তাহব্যাপী ভ্রমণের পরিকল্পনাকে ভুলে যান। জেন জি আমাদের শেখাচ্ছে কীভাবে ৪৮ ঘণ্টা বা তারও কম সময়ে যেকোনো স্থানে উড়ে যাওয়া যায়। এয়ারবিএনবি-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, জেন জি রা ’কুইক ট্রিপ’-এর ধারণাটি নতুন করে সংজ্ঞায়িত করছে। দীর্ঘ অবকাশের তুলনায় তাদের ১-২ দিনের আন্তর্জাতিক যাত্রা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। টিকটক-এর ভাইরাল ডে-ট্রিপ ট্রেন্ড দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, এই তরুণ প্রজন্ম সংস্কৃতি-সমৃদ্ধ, উচ্চ-শক্তির অভিজ্ঞতার জন্য মহাদেশ পাড়ি দিচ্ছে। এয়ারবিএনবি বলছে, জেন জি রা কর্মবিরতি সর্বাধিক ভাবে ব্যবহার করার এক নতুন কৌশল দেখাচ্ছে। তারা শান্ত সমুদ্র সৈকতের বদলে বেছে নিচ্ছে সংগীত, নৃত্য, ঐতিহাসিক স্থান এবং খাঁটি খাবারে পূর্ণ প্রাণবন্ত শহুরে অভিজ্ঞতা। এই প্রজন্মের পছন্দের গন্তব্যগুলোর মধ্যে রয়েছে বুয়েনোস আইরেস (আর্জেন্টিনা), বুসান (দক্ষিণ কোরিয়া), কো সামুই (থাইল্যান্ড), মারাকেশ (মরক্কো), মেক্সিকো সিটি (মেক্সিকো), সান জুয়ান (পুয়ের্তো রিকো) এবং স্টকহোম (সুইডেন)।
প্রকৃতির সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটানো
প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভ করা ২০২৫ সালেও একটি জনপ্রিয় প্রবণতা ছিল। আর ২০২৬ সালে এটি আরও বেগবান হবে। এয়ারবিএনবি জানিয়েছে যে বিশ্বজুড়ে জাতীয় উদ্যানগুলির প্রতি অনুসন্ধান এবং আগ্রহ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, একটি জাতীয় উদ্যানের কাছাকাছি থাকার জায়গা খোঁজার হার আগামী বছরের জন্য ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে গ্রেট স্মোকি মাউন্টেনস, শেনানডোহ এবং গ্র্যান্ড টেটনের মতো মার্কিন পার্কগুলোর শতবর্ষ উদ্যাপনের কারণে সেগুলোর প্রতি আগ্রহ আরও বাড়ছে। বৈশ্বিক গন্তব্যগুলোর মধ্যে স্যামারিয়া জর্জ ন্যাশনাল পার্কের কাছাকাছি গ্রিসের ক্রিট, ভিয়েনা, ইন্ডিয়ার গোয়া এবং ইতালির সার্ডিনিয়ার মতো স্থানগুলো ভ্রমণকারীদের নজরে রয়েছে।

বড় ইভেন্টগুলোর টানে ভিড় জমছে
২০২৬ সালে ভ্রমণকারীরা বড় ধরনের সাংস্কৃতিক, খেলাধুলা এবং সংগীত অনুষ্ঠানগুলোকে ঘিরে তাদের যাত্রা পরিকল্পনা করছেন। এয়ারবিএনবি-এর তথ্য অনুযায়ী, আগামী বছরের জন্য শীর্ষ-অনুসন্ধান করা তারিখ এবং শহরগুলোর ৬৫ শতাংশই প্রধান ইভেন্টগুলোর সঙ্গে মিলে যায়। যেমন ফিফা বিশ্বকাপ, কার্নিভাল বা কোচেলা। ভ্রমণকারীরা এই অভিজ্ঞতাগুলোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন, যেন টিকিটই তাদের পাসপোর্টে পরিণত হচ্ছে। কার্নিভালের জন্য রিউ দে জানেরো, কোচেলার জন্য ইন্ডিয়ো, মার্ডি গ্রাস-এর জন্য নিউ অর্লিন্স এবং ২০২৬ অলিম্পিক উইন্টার গেমসের জন্য ইতালির মিলান শীর্ষ অনুসন্ধান তালিকায় রয়েছে।
একক ভ্রমণের পুনরুত্থান
একাকী ভ্রমণ বা সোল ট্রাভেল আবার তার কৃতিত্ব ফিরে পাচ্ছে। স্ব-আবিষ্কারের অনলাইন আলোচনায় উৎসাহিত হয়ে, একক ভ্রমণকারীরা এখন কেবল পুরোনো জায়গায় ফিরে যাচ্ছেন না বরং নতুন হটস্পট আবিষ্কার করছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার ইডিল্ডওয়াইল্ড, ডোমিনিকান রিপাবলিকের লা আলতাগ্রেসিয়া এবং নরওয়ের ট্রোমসো-এর মতো জায়গাগুলোতে অনুসন্ধান তিন অঙ্কের বৃদ্ধি দেখছে। অন্যান্য জনপ্রিয় একক ভ্রমণের গন্তব্যের মধ্যে রয়েছে পর্তুগালের আলগার্ভ অঞ্চল, স্পেনের কোস্টা দেল সল, ফ্লোরিডা কিস এবং স্কটল্যান্ডের ইনভারনেস।
রন্ধনশিল্পের প্রতি আকর্ষণ
২০২৬ সালের জন্য খাবার ও পানীয় সম্পর্কিত ভ্রমণ যেন একেবারে আগুন ঝরাচ্ছে। যেখানে বেকারি ক্লাস এবং ওয়াইন অঞ্চলগুলো শীর্ষে রয়েছে। প্যারিসে ক্রোসঁ তৈরির ক্লাস বা টোকিওতে মোচি বানানো শেখার মতন হাতে-কলমে অভিজ্ঞতার দিকে ভ্রমণকারীরা ঝুঁকছেন। ভাইরাল হওয়া টিকটক ফুড ভিডিওগুলো বিশ্বজুড়ে বেকারি এবং রান্নার ক্লাসের প্রতি আগ্রহ তৈরি করছে। ওয়াইন-প্রেমীরা বেঙ্গালুরু (ভারত), ফিঙ্গার লেকস (নিউ ইয়র্ক), মেলবোর্ন (অস্ট্রেলিয়া)-এর মতো উঠতি ওয়াইন অঞ্চলগুলিতে যাচ্ছেন। বেকারি-হটস্পটগুলোর মধ্যে ইস্তাম্বুল, লিসবন, প্যারিস, তাইপে এবং টোকিও বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
সূত্র: ট্রাভেল+লিজার

প্রত্যাখ্যান। এই এক শব্দের ভেতরেই আছে অগ্রাহ্য, উপেক্ষা, অনাদর। আছে পরিত্যাগ বা পরিহার। কিন্তু শিরোনামে দেওয়া ‘আনন্দ’ কখনোই সচরাচর শাব্দিকভাবে প্রত্যাখ্যানের সঙ্গে মেলে না। বাংলা বা ইংরেজি—দুই ভাষাতেই প্রত্যাখ্যান মানেই যেন বিষাদের বাতাবরণ। কিন্তু কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ধার করা পঙ্ক্তিতে
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।...
১১ ঘণ্টা আগে
আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।...
১৪ ঘণ্টা আগে
বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে।
১৯ ঘণ্টা আগে