আবু তাহের খান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে সম্প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট প্রগতিশীল চিন্তাবিদ গোলাম মোহাম্মদ ফারুক। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ মিঞার বক্তব্য থেকে এ মর্মে তিনি উদ্ধৃত করেছেন যে ‘বাঙালির নিজেকে শাসন করার ইতিহাস সুখের নয়।’ অতঃপর গোলাম ফারুক লিখেছেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সকল ইতিহাসকে মিথ্যা প্রমাণিত করে বাঙালি জাতির হাতে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র তুলে দিয়ে গেছেন।’ এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গত পঞ্চাশ বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করে তিনি যে ইঙ্গিত করেছেন, তার সারমর্ম হচ্ছে: তাহলে কি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে ম্লান করে দিয়ে অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ মিঞার মন্তব্যই শেষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সঠিক বলে প্রমাণিত হলো? আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেও কি তাহলে স্বাধীনতা-উত্তরকালে সুখকর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে পরিচালনা করা গেল না, বিশেষ করে ১৯৯০-উত্তর ৩০ বছর ধরে?
১৯৭২ সালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করে অসামান্য সাহস ও আশাবাদ বুকে নিয়ে স্বাধীন দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে শিক্ষাবিদ, দার্শনিক, রাজনীতিক ইত্যাদি নানা শ্রেণিপেশার মহান সব মানুষেরা এসে তাঁদের আবেগ, সমর্থন ও অঙ্গীকার নিয়ে মহিরুহ এ প্রতিষ্ঠানের পাশে দাঁড়ান। ১৬ ডিসেম্বরের (১৯৭২) পর মাত্র দুই মাসের কম সময়ের ব্যবধানে এডওয়ার্ড এম কেনেডি ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কলাভবনের সামনে দাঁড়িয়ে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বললেন, ‘আই এম প্রাউড টু স্ট্যান্ড হিয়ার অ্যাট ঢাকা ইউনিভার্সিটি, লং দ্য সিম্বল অ্যান্ড ফোকাস অব দ্য বেঙ্গলি স্ট্রাগল ফর সেলফ-ডিটারমিনেশন, অ্যান্ড দ্য ফার্স্ট টার্গেট অব দৌজ হু হ্যাভ সওট টু রিপ্রেস দ্যাট ফ্রিডম।’ (মর্নিং নিউজ, ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২)
মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত সতেজ স্মৃতি মস্তিষ্কে প্রোথিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সেদিন নাওয়া-খাওয়া ভুলে গিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রতিষ্ঠানটিকে পূর্ণ শক্তিতে দাঁড় করানোর জন্য নিজেরাই শুধু উঠেপড়ে লাগেননি, পরম মমতায় তাঁর শিক্ষার্থীদেরও এর সঙ্গে যুক্ত করেন। আর সে ক্ষেত্রে নেপথ্যে থেকে তাঁদের শক্তি জোগান ১৯৭১-এর শহীদ শিক্ষকেরা। নানা প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতার মধ্যেও প্রতিটি বিভাগের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমকে তাঁরা সেদিন এমনই অবিশ্বাস্য দ্রুততায় ঢেলে সাজাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে আজ ভাবতেও অবাক লাগে কীভাবে এত বড় ও কঠিন কাজগুলো সর্বোচ্চ গুণগত মান রক্ষা করে এতটা অবলীলায় সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছিল! ওই সমস্যাসংকুল সীমাবদ্ধ পরিবেশের মধ্যেই আন্তর্জাতিক সেমিনার আয়োজন, বিদেশের খ্যাতিসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান শিক্ষক-পণ্ডিতদের ক্লাসে ও অন্যত্র বক্তৃতা করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো, উঁচুমানের গবেষণাকাজ হাতে নেওয়া, স্বাধীন দেশের চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে পাঠ্যক্রমকে ঢেলে সাজানো, উন্নতমানের গবেষণা প্রবন্ধসংবলিত জার্নাল প্রকাশ ইত্যাদি কাজ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু এর চেয়ে বহুগুণ বেশি সুযোগ-সুবিধা এবং আর্থিক ও অবকাঠামোগত সমর্থন নিয়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ এ কাজগুলো সে মাত্রায় করতে পারছে না কেন?
ব্যাপকভাবে মনে করা হয় যে প্রতিষ্ঠার একেবারে গোড়া থেকেই দীর্ঘকাল পর্যন্ত বাঙালির রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চিন্তা ও মননের ক্ষেত্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে, বিশেষত ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত সময়কালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ই ছিল বস্তুত ভাষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগ্রাম ও আন্দোলনের সকল পর্যায়ের চিন্তা ও সাংগঠনিক তৎপরতার কেন্দ্রবিন্দু। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থাকাকালেই অধ্যাপক রেহমান সোবহান তাঁর বিখ্যাত ‘দুই অর্থনৈতিক তত্ত্ব’ সেমিনারের মাধ্যমে জনসমক্ষে তুলে ধরেন, যা ঐতিহাসিক ৬ দফার ভিত্তি নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষকের মৌলিক চিন্তাভাবনাও এ দেশের সমাজ-ইতিহাসের গতিধারা নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ তার সেই অবস্থান শুধু হারিয়েই ফেলেনি, নানা হীনতায় ভরা তার বর্তমান ভূমিকা প্রায়ই মানুষকে হতাশ ও বিরক্ত করছে। এর ছাত্রাবাসগুলোর ‘গেস্টরুম নির্যাতন’ মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানাচ্ছে। অথচ তা বন্ধের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের মধ্যে রয়েছে বরফশীতল নীরবতা, যা দেখে মানুষের ভেতর গুমোট কষ্টমিশ্রিত প্রশ্ন, শিক্ষক কী করে নিজ ছাত্রের ওপর পরিচালিত এরূপ বর্বরতা দেখে নীরব থাকতে পারেন?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে শিক্ষা, গবেষণা ও জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে যে মান ও ধারায় পরিচালিত হচ্ছে, তাতে নিকট ভবিষ্যতের দিনগুলোতে তার পক্ষে আরও পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কাই সর্বাধিক। এর গবেষণাগার, গ্রন্থাগার, জার্নাল, নিয়োগ ও পদোন্নতি কাঠামো, গোষ্ঠীগত স্বার্থে উপযুক্ত যাচাই-বাছাই ছাড়াই রাতারাতি গড়ে ওঠা নতুন নতুন বিভাগ, সংস্কৃতিচর্চা, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের ধরন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ইত্যাদি ক্ষেত্রে বর্তমানে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তাতে করে এর পক্ষে রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে অবদান রাখা তথা নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও নতুনতর উদ্ভাবনার পথে এগিয়ে যাওয়া অনেকটাই দুঃস্বপ্নের মতো। অবশ্য সে রকম স্বপ্ন দেখার আকাঙ্ক্ষা পোষণের চেয়ে সান্ধ্য কোর্সে বেশি বেশি করে সময় দেওয়াটাকেই তাঁরা অধিকতর লাভজনক বিবেচনা করেন বলে তাঁদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড থেকে প্রতীয়মান হয়। এসব দেখে দেশের স্বল্পজ্ঞানধারী সাধারণ মানুষ কষ্ট পেলেও আমাদের উচ্চশিক্ষিত শিক্ষকেরা এসব নিয়ে আদৌ ভাবিত বলে মনে হয় না; বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এখন ব্যস্ত নীল-সাদা-গোলাপির দ্বন্দ্বে। তবে একটি বিষয়ে তাঁদের মধ্যে নিরঙ্কুশ ঐকমত্য লক্ষ করা যায় এবং তা হচ্ছে সান্ধ্য কোর্স চালু রাখা, যা চালু রাখার জন্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশনাকে উপেক্ষা করতেও তাঁরা দ্বিধা করেননি।
গোলাম ফারুক আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরকার বর্তমান বেহাল দশা ও এর চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে এটিকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার দাবিও উঠতে পারে। আর তেমনটি হলে সেটি এখানকার শিক্ষক-কর্মচারীদের চেয়েও অধিকতর হতাশাব্যঞ্জক ঘটনা হবে এর শিক্ষার্থী ও দেশের সাধারণ মানুষের জন্য। তবে উল্লিখিত উদ্বেগকে গুরুত্ব দিয়ে উপলব্ধি করার পরও আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করতে চাই যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার দেড় শ বছর পূর্তির আগেই আবার ঘুরে দাঁড়াবে। কারণ, যে প্রতিষ্ঠানটি এ দেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রতীক এবং যে প্রতিষ্ঠান এ দেশের সমাজ, রাজনীতি, ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতির নির্মাণ ও গঠনপ্রক্রিয়ার অন্যতম অগ্রদূত, সেই প্রতিষ্ঠান সবার চোখের সামনে এভাবে কিছুতেই ক্ষয়ে যেতে পারে না।
আদি উদ্যোক্তা হিসেবে এ প্রতিষ্ঠানকে যাঁরা গড়ে তুলেছিলেন, এর যে শিক্ষক-গবেষকেরা শিক্ষার মানে একে অক্সফোর্ড পদবাচ্যে তুলনীয় হওয়ার পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, এর যে শিক্ষার্থীরা বুকের রক্ত ঢেলে এ দেশের ইতিহাস ও চিন্তার নানা বাঁক নির্মাণ করেছিলেন, তাঁদের অধিকাংশ আজ আর সশরীরে না থাকলেও তাঁদের চিন্তার প্রতিনিধিরা তো প্রান্তিক চরিত্রে হলেও রাষ্ট্রের নানা স্তরে, পৃথিবীর নানা প্রান্তে টিকে আছেন। এমনকি তাঁরা আছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেও। আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকই এর ভগ্নদশায় চরম মানসিক পীড়ন বোধ করেন। কিন্তু শুধু পীড়ন বোধ করলে তো হবে না। পীড়ন বোধিত কষ্টকে সমাধানে রূপান্তরের জন্য এগিয়ে আসতে হবে। এ জন্য রাজপথে নেমে আন্দোলন করার দরকার নেই। শিক্ষকেরা (এ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী ছিলাম বিধায় আপনারা প্রত্যেকে আমার শিক্ষক), আপনারা দয়া করে আপনাদের চিন্তার আন্দোলনটিকে বেগবান করুন। আরও গবেষণা, আরও নতুন জ্ঞান সৃষ্টি এবং বৈশ্বিক স্তরের আরও উন্নততর চিন্তার মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়টির হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারে এগিয়ে আসুন। চিন্তাশীল বিবেকবান মানুষেরা হয়তো বাইরে থেকে আপনাদের পরামর্শ ও সহায়তা দিতে পারবেন। কিন্তু মূল কাজটি আপনাদেরই করতে হবে এবং সেই যোগ্যতা আপনাদের মধ্যে প্রচণ্ডভাবে আছে বলেই আমরা, তথা এ দেশের সাধারণ মানুষ বুকভরা আশা নিয়ে আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
বলা হয়, দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন নেতৃত্বের সংকটে ভুগছে, যার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামও উচ্চারিত হয়। আমরা সাধারণ মানুষ এতে প্রচণ্ড কষ্ট পাই। তো, যে বিশ্ববিদ্যালয়কে জিএইচ ল্যাংলি, আর সি মজুমদার, মাহমুদ হোসেন, আবু সাঈদ চৌধুরী, মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী, আবদুল মতিন চৌধুরী প্রমুখের মতো বলিষ্ঠ চরিত্রের বিদ্বজ্জনেরা নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয় কেন নেতৃত্বের সংকটে ভুগবে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই হাজার শিক্ষকের মধ্যে এমন বহু শিক্ষক রয়েছেন, যাঁরা তাঁদের জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও নেতৃত্ব দিয়ে বস্তুতই একে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডে রূপান্তরের সামর্থ্য রাখেন। আমরা আশা করব, ২০৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় শ বছর পূর্তির আগেই তাঁরা তাঁদের সেই সর্বোচ্চ সামর্থ্যটুকু ঢেলে দিয়ে একে তার হৃত গৌরব ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হবেন। আমাদের অনেকেই তখন আর থাকব না। কিন্তু এ দেশের অযুত মানুষের হৃদয়ের আকুতিটুকু যদি সেদিন বাস্তবতা খুঁজে পায়, তাহলে এ দেশের জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য সেটি হবে এক বিশাল প্রাপ্তি।
লেখক: আবু তাহের খান,সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা (বিসিক), শিল্প মন্ত্রণালয়; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে সম্প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট প্রগতিশীল চিন্তাবিদ গোলাম মোহাম্মদ ফারুক। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ মিঞার বক্তব্য থেকে এ মর্মে তিনি উদ্ধৃত করেছেন যে ‘বাঙালির নিজেকে শাসন করার ইতিহাস সুখের নয়।’ অতঃপর গোলাম ফারুক লিখেছেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সকল ইতিহাসকে মিথ্যা প্রমাণিত করে বাঙালি জাতির হাতে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র তুলে দিয়ে গেছেন।’ এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গত পঞ্চাশ বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করে তিনি যে ইঙ্গিত করেছেন, তার সারমর্ম হচ্ছে: তাহলে কি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে ম্লান করে দিয়ে অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ মিঞার মন্তব্যই শেষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সঠিক বলে প্রমাণিত হলো? আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেও কি তাহলে স্বাধীনতা-উত্তরকালে সুখকর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে পরিচালনা করা গেল না, বিশেষ করে ১৯৯০-উত্তর ৩০ বছর ধরে?
১৯৭২ সালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করে অসামান্য সাহস ও আশাবাদ বুকে নিয়ে স্বাধীন দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে শিক্ষাবিদ, দার্শনিক, রাজনীতিক ইত্যাদি নানা শ্রেণিপেশার মহান সব মানুষেরা এসে তাঁদের আবেগ, সমর্থন ও অঙ্গীকার নিয়ে মহিরুহ এ প্রতিষ্ঠানের পাশে দাঁড়ান। ১৬ ডিসেম্বরের (১৯৭২) পর মাত্র দুই মাসের কম সময়ের ব্যবধানে এডওয়ার্ড এম কেনেডি ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কলাভবনের সামনে দাঁড়িয়ে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বললেন, ‘আই এম প্রাউড টু স্ট্যান্ড হিয়ার অ্যাট ঢাকা ইউনিভার্সিটি, লং দ্য সিম্বল অ্যান্ড ফোকাস অব দ্য বেঙ্গলি স্ট্রাগল ফর সেলফ-ডিটারমিনেশন, অ্যান্ড দ্য ফার্স্ট টার্গেট অব দৌজ হু হ্যাভ সওট টু রিপ্রেস দ্যাট ফ্রিডম।’ (মর্নিং নিউজ, ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২)
মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত সতেজ স্মৃতি মস্তিষ্কে প্রোথিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সেদিন নাওয়া-খাওয়া ভুলে গিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রতিষ্ঠানটিকে পূর্ণ শক্তিতে দাঁড় করানোর জন্য নিজেরাই শুধু উঠেপড়ে লাগেননি, পরম মমতায় তাঁর শিক্ষার্থীদেরও এর সঙ্গে যুক্ত করেন। আর সে ক্ষেত্রে নেপথ্যে থেকে তাঁদের শক্তি জোগান ১৯৭১-এর শহীদ শিক্ষকেরা। নানা প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতার মধ্যেও প্রতিটি বিভাগের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমকে তাঁরা সেদিন এমনই অবিশ্বাস্য দ্রুততায় ঢেলে সাজাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে আজ ভাবতেও অবাক লাগে কীভাবে এত বড় ও কঠিন কাজগুলো সর্বোচ্চ গুণগত মান রক্ষা করে এতটা অবলীলায় সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছিল! ওই সমস্যাসংকুল সীমাবদ্ধ পরিবেশের মধ্যেই আন্তর্জাতিক সেমিনার আয়োজন, বিদেশের খ্যাতিসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান শিক্ষক-পণ্ডিতদের ক্লাসে ও অন্যত্র বক্তৃতা করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো, উঁচুমানের গবেষণাকাজ হাতে নেওয়া, স্বাধীন দেশের চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে পাঠ্যক্রমকে ঢেলে সাজানো, উন্নতমানের গবেষণা প্রবন্ধসংবলিত জার্নাল প্রকাশ ইত্যাদি কাজ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু এর চেয়ে বহুগুণ বেশি সুযোগ-সুবিধা এবং আর্থিক ও অবকাঠামোগত সমর্থন নিয়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ এ কাজগুলো সে মাত্রায় করতে পারছে না কেন?
ব্যাপকভাবে মনে করা হয় যে প্রতিষ্ঠার একেবারে গোড়া থেকেই দীর্ঘকাল পর্যন্ত বাঙালির রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চিন্তা ও মননের ক্ষেত্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে, বিশেষত ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত সময়কালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ই ছিল বস্তুত ভাষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগ্রাম ও আন্দোলনের সকল পর্যায়ের চিন্তা ও সাংগঠনিক তৎপরতার কেন্দ্রবিন্দু। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থাকাকালেই অধ্যাপক রেহমান সোবহান তাঁর বিখ্যাত ‘দুই অর্থনৈতিক তত্ত্ব’ সেমিনারের মাধ্যমে জনসমক্ষে তুলে ধরেন, যা ঐতিহাসিক ৬ দফার ভিত্তি নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষকের মৌলিক চিন্তাভাবনাও এ দেশের সমাজ-ইতিহাসের গতিধারা নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ তার সেই অবস্থান শুধু হারিয়েই ফেলেনি, নানা হীনতায় ভরা তার বর্তমান ভূমিকা প্রায়ই মানুষকে হতাশ ও বিরক্ত করছে। এর ছাত্রাবাসগুলোর ‘গেস্টরুম নির্যাতন’ মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানাচ্ছে। অথচ তা বন্ধের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের মধ্যে রয়েছে বরফশীতল নীরবতা, যা দেখে মানুষের ভেতর গুমোট কষ্টমিশ্রিত প্রশ্ন, শিক্ষক কী করে নিজ ছাত্রের ওপর পরিচালিত এরূপ বর্বরতা দেখে নীরব থাকতে পারেন?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে শিক্ষা, গবেষণা ও জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে যে মান ও ধারায় পরিচালিত হচ্ছে, তাতে নিকট ভবিষ্যতের দিনগুলোতে তার পক্ষে আরও পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কাই সর্বাধিক। এর গবেষণাগার, গ্রন্থাগার, জার্নাল, নিয়োগ ও পদোন্নতি কাঠামো, গোষ্ঠীগত স্বার্থে উপযুক্ত যাচাই-বাছাই ছাড়াই রাতারাতি গড়ে ওঠা নতুন নতুন বিভাগ, সংস্কৃতিচর্চা, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের ধরন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ইত্যাদি ক্ষেত্রে বর্তমানে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তাতে করে এর পক্ষে রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে অবদান রাখা তথা নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও নতুনতর উদ্ভাবনার পথে এগিয়ে যাওয়া অনেকটাই দুঃস্বপ্নের মতো। অবশ্য সে রকম স্বপ্ন দেখার আকাঙ্ক্ষা পোষণের চেয়ে সান্ধ্য কোর্সে বেশি বেশি করে সময় দেওয়াটাকেই তাঁরা অধিকতর লাভজনক বিবেচনা করেন বলে তাঁদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড থেকে প্রতীয়মান হয়। এসব দেখে দেশের স্বল্পজ্ঞানধারী সাধারণ মানুষ কষ্ট পেলেও আমাদের উচ্চশিক্ষিত শিক্ষকেরা এসব নিয়ে আদৌ ভাবিত বলে মনে হয় না; বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এখন ব্যস্ত নীল-সাদা-গোলাপির দ্বন্দ্বে। তবে একটি বিষয়ে তাঁদের মধ্যে নিরঙ্কুশ ঐকমত্য লক্ষ করা যায় এবং তা হচ্ছে সান্ধ্য কোর্স চালু রাখা, যা চালু রাখার জন্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশনাকে উপেক্ষা করতেও তাঁরা দ্বিধা করেননি।
গোলাম ফারুক আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরকার বর্তমান বেহাল দশা ও এর চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে এটিকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার দাবিও উঠতে পারে। আর তেমনটি হলে সেটি এখানকার শিক্ষক-কর্মচারীদের চেয়েও অধিকতর হতাশাব্যঞ্জক ঘটনা হবে এর শিক্ষার্থী ও দেশের সাধারণ মানুষের জন্য। তবে উল্লিখিত উদ্বেগকে গুরুত্ব দিয়ে উপলব্ধি করার পরও আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করতে চাই যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার দেড় শ বছর পূর্তির আগেই আবার ঘুরে দাঁড়াবে। কারণ, যে প্রতিষ্ঠানটি এ দেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রতীক এবং যে প্রতিষ্ঠান এ দেশের সমাজ, রাজনীতি, ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতির নির্মাণ ও গঠনপ্রক্রিয়ার অন্যতম অগ্রদূত, সেই প্রতিষ্ঠান সবার চোখের সামনে এভাবে কিছুতেই ক্ষয়ে যেতে পারে না।
আদি উদ্যোক্তা হিসেবে এ প্রতিষ্ঠানকে যাঁরা গড়ে তুলেছিলেন, এর যে শিক্ষক-গবেষকেরা শিক্ষার মানে একে অক্সফোর্ড পদবাচ্যে তুলনীয় হওয়ার পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, এর যে শিক্ষার্থীরা বুকের রক্ত ঢেলে এ দেশের ইতিহাস ও চিন্তার নানা বাঁক নির্মাণ করেছিলেন, তাঁদের অধিকাংশ আজ আর সশরীরে না থাকলেও তাঁদের চিন্তার প্রতিনিধিরা তো প্রান্তিক চরিত্রে হলেও রাষ্ট্রের নানা স্তরে, পৃথিবীর নানা প্রান্তে টিকে আছেন। এমনকি তাঁরা আছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেও। আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকই এর ভগ্নদশায় চরম মানসিক পীড়ন বোধ করেন। কিন্তু শুধু পীড়ন বোধ করলে তো হবে না। পীড়ন বোধিত কষ্টকে সমাধানে রূপান্তরের জন্য এগিয়ে আসতে হবে। এ জন্য রাজপথে নেমে আন্দোলন করার দরকার নেই। শিক্ষকেরা (এ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী ছিলাম বিধায় আপনারা প্রত্যেকে আমার শিক্ষক), আপনারা দয়া করে আপনাদের চিন্তার আন্দোলনটিকে বেগবান করুন। আরও গবেষণা, আরও নতুন জ্ঞান সৃষ্টি এবং বৈশ্বিক স্তরের আরও উন্নততর চিন্তার মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়টির হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারে এগিয়ে আসুন। চিন্তাশীল বিবেকবান মানুষেরা হয়তো বাইরে থেকে আপনাদের পরামর্শ ও সহায়তা দিতে পারবেন। কিন্তু মূল কাজটি আপনাদেরই করতে হবে এবং সেই যোগ্যতা আপনাদের মধ্যে প্রচণ্ডভাবে আছে বলেই আমরা, তথা এ দেশের সাধারণ মানুষ বুকভরা আশা নিয়ে আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
বলা হয়, দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন নেতৃত্বের সংকটে ভুগছে, যার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামও উচ্চারিত হয়। আমরা সাধারণ মানুষ এতে প্রচণ্ড কষ্ট পাই। তো, যে বিশ্ববিদ্যালয়কে জিএইচ ল্যাংলি, আর সি মজুমদার, মাহমুদ হোসেন, আবু সাঈদ চৌধুরী, মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী, আবদুল মতিন চৌধুরী প্রমুখের মতো বলিষ্ঠ চরিত্রের বিদ্বজ্জনেরা নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয় কেন নেতৃত্বের সংকটে ভুগবে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই হাজার শিক্ষকের মধ্যে এমন বহু শিক্ষক রয়েছেন, যাঁরা তাঁদের জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও নেতৃত্ব দিয়ে বস্তুতই একে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডে রূপান্তরের সামর্থ্য রাখেন। আমরা আশা করব, ২০৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় শ বছর পূর্তির আগেই তাঁরা তাঁদের সেই সর্বোচ্চ সামর্থ্যটুকু ঢেলে দিয়ে একে তার হৃত গৌরব ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হবেন। আমাদের অনেকেই তখন আর থাকব না। কিন্তু এ দেশের অযুত মানুষের হৃদয়ের আকুতিটুকু যদি সেদিন বাস্তবতা খুঁজে পায়, তাহলে এ দেশের জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য সেটি হবে এক বিশাল প্রাপ্তি।
লেখক: আবু তাহের খান,সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা (বিসিক), শিল্প মন্ত্রণালয়; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে সম্প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট প্রগতিশীল চিন্তাবিদ গোলাম মোহাম্মদ ফারুক। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ মিঞার বক্তব্য থেকে এ মর্মে তিনি উদ্ধৃত করেছেন যে ‘বাঙালির নিজেকে শাসন করার ইতিহ
১২ এপ্রিল ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে সম্প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট প্রগতিশীল চিন্তাবিদ গোলাম মোহাম্মদ ফারুক। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ মিঞার বক্তব্য থেকে এ মর্মে তিনি উদ্ধৃত করেছেন যে ‘বাঙালির নিজেকে শাসন করার ইতিহ
১২ এপ্রিল ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে সম্প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট প্রগতিশীল চিন্তাবিদ গোলাম মোহাম্মদ ফারুক। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ মিঞার বক্তব্য থেকে এ মর্মে তিনি উদ্ধৃত করেছেন যে ‘বাঙালির নিজেকে শাসন করার ইতিহ
১২ এপ্রিল ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে সম্প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট প্রগতিশীল চিন্তাবিদ গোলাম মোহাম্মদ ফারুক। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ মিঞার বক্তব্য থেকে এ মর্মে তিনি উদ্ধৃত করেছেন যে ‘বাঙালির নিজেকে শাসন করার ইতিহ
১২ এপ্রিল ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫