Ajker Patrika

মেয়াদ শেষে পৌরসভায় বসবে প্রশাসক: সংসদে বিল পাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২২, ১৪: ৩৫
মেয়াদ শেষে পৌরসভায় বসবে প্রশাসক: সংসদে বিল পাস

বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যদের সমালোচনার মুখে পৌরসভার নির্বাচিত পরিষদের মেয়াদ শেষ হলে প্রশাসক নিয়োগের বিধান যুক্ত করে পৌরসভা আইনের সংশোধনী বিল পাস হয়েছে। বিলটি পাসের প্রতিবাদে সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। তবে কিছু সময় পর তিনি সংসদকক্ষে আবার ফিরে আসেন। 

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) বিল, ২০২২ সংসদে পাসের প্রস্তাব করেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। 

বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুন বিলটির সংশোধনীর কয়েকটি বিষয়ে ব্যাখ্যা দাবি করেন। তবে সে বিষয়ে প্রত্যাশিত জবাব না পাওয়ায় তিনি ওয়াকআউট করেন। এর আগের বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করা হয়। 

গত ২৩ জানুয়ারি বিলটি সংসদে তোলা হয়। পরে বিলটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয় ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

বিদ্যমান আইনে বলা আছে, পৌরসভা ঘোষণা করতে হলে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে গড়ে দেড় হাজার হতে হবে। এর কম হলে হবে না। সংশোধনে তা বাড়িয়ে দুই হাজার করা হয়েছে। আর পৌরসভার সচিবের পদের নাম বদলে ‘পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা’ করা হয়েছে। 
 
বিদ্যমান আইনের মেয়র ও কাউন্সিলদের অপসারণ সংক্রান্ত ধারণায় নতুন একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। ধারা ‘ঝ’ যুক্ত করে বলা হয়েছে, মেয়র অথবা কাউন্সিলর তাঁর নিজ পদ থেকে অপসারণযোগ্য হবেন, “সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রদত্ত নির্দেশ পালন করতে ব্যর্থ হন। ”

বিদ্যমান আইনের ৪২ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো শহরকে পৌর এলাকা ঘোষণার পর পৌরসভার কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য সরকার একজন উপযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রশাসক নিয়োগ করিবে এবং পৌরসভা গঠন না হওয়া পর্যন্ত উক্ত প্রশাসক প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করিবেন।’ 

বিলে এই ধারায় পরিবর্তন আনা হয়েছে; বলা হয়েছে, পৌরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন পরিষদ গঠনের আগ পর্যন্ত কাজ চালানোর জন্য প্রশাসক নিয়োগ দেবে সরকার। সরকারি কোনো কর্মকর্তা বা সরকার উপযুক্ত মনে করে এমন কোনো ব্যক্তিকে প্রশাসক নিয়োগ দেবে। 

বিলে পৌরসভার পরিষদ বাতিলসংক্রান্ত ধারায় নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাদিক্রমে ১২ মাস বেতন বকেয়া থাকলে পরিষদ বাতিল হবে। 

নতুন পৌরসভা গঠিত হলে বা কোনো ইউনিয়নের অংশবিশেষ পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত হলে বিলুপ্ত ইউনিয়ন বা বিলুপ্ত অংশে কর্মরতদের পৌরসভায় অন্তর্ভুক্তির সুযোগ রাখা হয়েছে বিলে। 

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি উন্নত জীবন ও পর্যাপ্ত নাগরিক সেবার প্রত্যাশায় অধিকসংখ্যক মানুষ শহরমুখী হচ্ছে। একই সঙ্গে শহর এলাকার মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন নতুন অনেক পৌরসভা গঠিত হওয়ার পর দেখা যায় যে, পৌরসভার নাগরিকসেবা প্রদান এবং নিজস্ব প্রশাসন পরিচালনার সক্ষমতা থাকে না।’ 

মন্ত্রী বলেন, ‘সুশাসন নিশ্চিত ও পর্যাপ্ত সেবা প্রদানে শহরগুলোকে বাসযোগ্য করতে শহর গঠনে জনসংখ্যার ঘনত্বের মান পরিবর্তন প্রয়োজন।’ 

তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান আইনে পৌরসভাসমূহের মেয়াদ পাঁচ বছর শেষ হওয়া সত্ত্বেও নতুন পরিষদ প্রথম সভায় মিলিত না হওয়া পর্যন্ত, পূর্বের পরিষদ দায়িত্ব পালন করতে পারে। অনেক সময় পৌরসভার মেয়াদ শেষ হলেও বিভিন্ন কারণে রিট মামলা বা অন্য কোনো মামলা করে মেয়াদোত্তীর্ণ পরিষদ অনির্ধারিত সময়ের জন্য পৌর প্রশাসন পরিচালনা করে। ফলে আইনের এই শর্ত সংশোধনক্রমে মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভার ক্ষেত্রে নতুন পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক নিয়োগ করা প্রয়োজন।’ 
 
বিল নিয়ে সংসদে সমালোচনা 
বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, স্থানীয় সরকারপ্রতিষ্ঠানগুলো ক্যানসারে আক্রান্ত। স্থানীয় সরকারগুলোর একটি বিরাট অংশের প্রতিনিধি বিনা ভোটে নির্বাচিত, বিরাট অংশ প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে নির্বাচিত। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর মানুষ এমন স্থানীয় সরকার আশা করেনি। 

তিনি বলেন, সংবিধানে সকল পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির কথা বলা আছে। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করতে না পারলে সেটার জন্য সরকার দায়ী। প্রতিনিধিদের সরিয়ে দিয়ে সরকারদলীয় লোকদের বসানোর জন্য এটি করা হচ্ছে। তিনি এটাকে ‘বাকশালি পদ্ধতি’ চালুর চেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেন। 

হারুন বলেন, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা এখন আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচি পালন করছেন। জনগণকে সেখানে অংশ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। ভিন্নমতের কেউ সেখানে না গেলে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হবে—এই উদ্দেশে এই আইন করা হচ্ছে। 

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন হলো। এখনো ফল ঘোষণা হলো না। ৫০ বছরের ইতিহাসে এটা নজিরবিহীন। এটা হতে পারে না। এটি বিরাট লজ্জা। 

বিলটি নিয়ে আলোচনার সময় জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সংবিধানে বলা হয়েছে, নির্বাচিত ব্যক্তিদের দ্বারা স্থানীয় সরকার পরিচালিত হবে। প্রশাসক নিয়োগের বিধান সংবিধানের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ। নতুন পৌরসভা গঠনের পর প্রথমবার নির্বাচনের আগে একজন প্রশাসক নিয়োগ করা যেতে পারে, সেটা জরুরি প্রয়োজনে। আমলাতন্ত্র দিয়েই যদি কাজ হতো, তাহলে স্থানীয় সরকারের কোনো প্রয়োজন ছিল না। 
 
জাপার পীর ফজলুর রহমান বলেন, যেখানে নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকার কথা, সেখানে অনির্বাচিত কেউ বসতে পারবেন না। এটা সংবিধানের স্পিরিট। তত্ত্বাবধায়ক সরকার অনির্বাচিত সরকার—এ কারণে এটা রাখা হয়নি। সেখানে কেন স্থানীয় সরকারে অনির্বাচিত ব্যক্তিকে বসানো হবে? এটা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। 

জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, জনগণ, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্নজনের মতামত নিয়ে আইনে সংশোধনী আনা হচ্ছে। প্রশাসক নিয়োগের বিধান রাখার বিষয়টি যৌক্তিক। বিভিন্ন কারণে অনেক সময় নির্বাচন করা নিয়ে আইনগত জটিলতা তৈরি হয়। অনেকে এর সুযোগ নিয়ে থাকেন। 

সচিব পদটিকে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা নামাকরণের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয়ে সচিব থাকেন। এই পদ নিয়ে অনেক সময় সংশয় দেখা দেয়। কিছু ক্ষেত্রে এই পদের অপব্যবহারও দেখা গেছে। 

বিলটি পাস হওয়ার বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক স্পিকারের কাছ থেকে সময় নিয়ে হারুনের বক্তব্যের জবাব দেন। হারুনের ওয়াকআউটকে ‘স্ট্যান্টবাজি’ আখ্যা দিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘হারুন আইনটি পুরোপুরি পড়েননি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির মৃত্যুর খবরে নওফেলের বাসায় অগ্নিসংযোগ, ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১: ২৩
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ফাইল ছবি
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। বিক্ষোভকারীরা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসায় ভাঙচুর ও বাড়ির সামনে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় ইন্ডিয়ান হাইকমিশন কার্যালয় ভাঙচুরের চেষ্টা করে তারা।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১১ থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা চট্টগ্রাম নগরীর ২ নম্বর গেট চশমা হিলে নওফেলের বাসার সামনে অবস্থান করে। একপর্যায়ে তারা বাসার ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে। বাসার পার্কিংয়ে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়।

একই সময়ে আরেকটি দল নগরীর খুলশী এলাকায় ভারতীয় হাইকমিশন কার্যালয় ভাঙচুরের চেষ্টা করে।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান বলেন, ঘটনাস্থলে টিম রয়েছে। পুলিশ বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতাকে থামানোর চেষ্টা করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুলনায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে সাংবাদিক নিহত, প্রাণিচিকিৎসক আশঙ্কাজনক

খুলনা প্রতিনিধি
নিহত সাংবাদিক এমদাদুল হক মিলন। ছবি: সংগৃহীত
নিহত সাংবাদিক এমদাদুল হক মিলন। ছবি: সংগৃহীত

খুলনা মহানগরীর আড়ংঘাটা থানাধীন সলুয়া বাজারে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আড়ংঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সলুয়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক মিলন (৪৫) নিহত হয়েছেন। এ সময় দেবাশীষ নামের এক প্রাণিচিকিৎসক গুলিবিদ্ধ হন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে সলুয়া বাজারের একটি চায়ের দোকানে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এ সময় ওই দুজন চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। সন্ত্রাসীরা খুব কাছ থেকে দুজনকে গুলি করে।

নিহত ইমদাদুল হক মিলন ওই এলাকার মো. বজলুর ছেলে। কয়েক মাস আগে তিনি একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এ ছাড়া মিলন খুলনার স্থানীয় একটি দৈনিকে আড়ংঘাটা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। পরে নিজেই ‘বর্তমান সময়’ নামের একটি অনলাইন পোর্টাল বের করেন। জমি নিয়ে তাঁর সঙ্গে একটি পক্ষের বিরোধ ছিল বলে জানা গেছে।

আহত দেবাশীষকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

জানতে চাইলে আড়ংঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজাহান আহমেদ বলেন, ‘ইমদাদুল হক মিলন গুলিতে নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া প্রাণিচিকিৎসক দেবাশীষ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁর মাথায় গুলি লেগেছে বলে জানতে পেরেছি।’

ওসি আরও বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, চরমপন্থী হুমায়ূন কবির হুমা গ্রুপ এই হামলা চালাতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে পুলিশ এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি।

একটি সূত্র জানায়, প্রাণিচিকিৎসক দেবাশীষ ওরফে দীবা বিশ্বাসের বুকে ও মাথায় আগে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। পরেরটা সাংবাদিক মিলনের মাথায়। সেখানে পাঁচ রাউন্ড গুলি হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির মৃত্যুর খবরে উত্তাল শাহবাগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ৩৫
হাদির মৃত্যুর খবরে উত্তাল শাহবাগ

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের কর্মী-সমর্থকেরা। আজ বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুর থেকে হাদির মৃত্যুর খবর পৌঁছানোর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও বিক্ষোভ শুরু হয়।

আজ রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেওয়া বিক্ষোভকারীরা হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে স্লোগান ও বিক্ষোভ-মিছিল করছেন। তাঁরা ‘হাদি’ ‘হাদি’ বলে স্লোগানও দেন।

একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে আসা বিভিন্ন সংগঠনের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ করেন।

জুলাই অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরিচিতি পাওয়া হাদি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। গত শুক্রবার গণসংযোগের উদ্দেশ্যে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গেলে তিনি হামলার শিকার হন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, চলন্ত রিকশায় থাকা হাদিকে চলন্ত একটি মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা আততায়ী গুলি করেন। গুলিটি তাঁর মাথায় লাগে।

গুরুতর আহত অবস্থায় হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর রাতেই তাঁকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গত সোমবার দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।

ঢাকায় হাদির অস্ত্রোপচারে অংশ নেওয়া নিউরোসার্জন অধ্যাপক আবদুল আহাদ আজ রাতে এক ভিডিওবার্তায় জানান, সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাদির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এদিকে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বার্তায় বলা হয়, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদীকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আপত্তিকর টিকটক ভিডিও, তিন যুবককে খুঁজছে পুলিশ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া।
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া।

নেত্রকোনার পূর্বধলায় আপত্তিকর টিকটক ভিডিও বানিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিন যুবক। তাঁদের গ্রেপ্তারে পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

পূর্বধলা উপজেলার নারায়ণডহর গ্রামে ধারণ করা ১২ সেকেন্ডের ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, উপজেলার নারায়ণডহর এলাকার একটি মহিলা মাদ্রাসার সামনে এক যুবক স্কেটিং করতে করতে ভ্যানের পেছনে বসা এক মেয়েকে উত্ত্যক্ত করছেন। একপর্যায়ে মেয়েটির পোশাক টেনে খোলার চেষ্টা করেন ওই যুবক। আপত্তিকর ভিডিওটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। ১৫ ডিসেম্বর ভিডিওটি ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর অনেকেই এমন কাজকে সমাজের জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভিডিওতে দেখানো বিষয়টি অভিনয়ের অংশ। আলোচনায় আসার জন্যই মূলত এমন আপত্তিকর ভিডিওটি করা হয়েছে। ভিডিওটি করেছেন রোমান নামের এক যুবক, স্কেটিং করেছেন রাকিব হাসান (২০) এবং মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন হানিফ (২০)। হানিফ ও রোমান সম্পর্কে আপন দুই ভাই। তাঁরা পূর্বধলা উপজেলার নারায়ণডহর গ্রামের ওয়াসিম মিয়ার ছেলে।

এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা আত্মগোপনে রয়েছেন এবং তাঁদের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। তাই এ ব্যাপারে তাঁদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে পূর্বধলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান বুলবুল বলেন, ‘এ ধরনের ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্কুলপড়ুয়া ছাত্রীদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করেছে। জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত শাস্তি দাবি করছি।’

পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দিদারুল ইসলাম বলেন, ভিডিওটি মূলত অভিনয়। এতে মেয়ের পোশাকে ছিলেন হানিফ নামের এক যুবক। তবে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হয়েছে। এতে অনেকেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ঘটনার পর থেকে ওই তিন যুবক আত্মগোপনে রয়েছেন। তাঁদের ধরতে অভিযান চলছে।

এ বিষয়ে পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান খান বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরপরই তাঁদের গ্রেপ্তারে জন্য পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত