মন্টি বৈষ্ণব, ঢাকা

‘এই যে নারী দিবস, নারী দিবস কারে বলে, আমরা তো জানি না। আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়, কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না।’ কথাটা তৈরি পোশাক কারখানা লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগমের। নারী দিবস কী, কেন ইত্যাদি না জানলেও বৈষম্যের পাঠটা তিনি নিজের জীবন দিয়েই নিয়েছেন।
আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর সম-অধিকার আদায়ের একটা দিন। পুরো বিশ্ব এই দিবসকে কেন্দ্র করে নানা কর্মসূচি পালন করে। সভা, সমাবেশ, মিছিল, মিটিং থেকে শুরু করে অনলাইন আর অফলাইনে চলে নানা কর্মসূচি পালনের প্রতিযোগিতা। কিন্তু আন্তর্জাতিক নারী দিবসের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের ইতিহাস, সে কথা অনেকেই ভুলতে বসেছেন। লাইজু বেগমের মতো নারীরা এখনো দেশে-বিদেশে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে।
এই বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘টেকসই আগামীর লক্ষ্যে লৈঙ্গিক সাম্য’। নারীর জেগে ওঠার কথা তো অনেক আগে থেকেই বলা হচ্ছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকাঠামো কতটা সহায় হয়েছে, সে প্রশ্ন তোলাই যায়।
ফেরা যাক লাইজু বেগমের কাছে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের যাত্রা যে নারী শ্রমিকদের হাতে হয়েছিল, লাইজুও তেমনই একজন শ্রমিক। নারীর প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার নারীদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ দিবসের শুরুটা হলেও বৈষম্যের শেষ হয়নি। লাইজু বেগমেরা তাই নারী দিবসের ইতিহাস সম্পর্কে না জানলেও ঠিকই জানেন বৈষম্যের প্রকরণ। অথচ নারী দিবসের সূত্রপাত হয়েছিল কিন্তু পোশাক কারখানায় নারীদের ন্যায্য মজুরি ও বাড়তি কাজ বাতিলের দাবিতে করা আন্দোলন থেকে।
লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না। আমরা সেই সকাল ৮টায় কারখানায় ঢুকি আর বের হই রাত ৮টায়। কারখানায় অতিরিক্ত সময় কাজ করেও টাকা পাই কম। এই কম টাকা দিয়ে তো সংসার চালাইতে পারি না। আমার তিন বছরের সন্তানের খাবারের টাকা জোগাড় করতে পারি না। ঘরভাড়া দিতে পারি না। যেখানে কম টাকার বাসা খুঁজে পাই, সেখানেই থাকতে হয়।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ইতিহাস রচনা করেছিলেন নারী শ্রমিকেরা। স্বল্প মজুরিতে নারী শ্রমিকের সস্তা শ্রম কেনার প্রতিবাদে গড়ে উঠেছিল সেই আন্দোলন। একটু খেয়াল করলে দেখা যায়, সেদিনের নিউইয়র্ক শহরের সেই পরিস্থিতির সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতির তেমন কোনো পার্থক্য নেই। আজও বাংলাদেশের নারী শ্রমিকেরা কর্মক্ষেত্রে পাচ্ছেন না কাজের সঠিক মূল্যায়ন। নারীর কাছ থেকে সস্তায় শ্রম কেনায় কারখানাগুলোর মধ্যে তেমন ভিন্নতা দেখা যায় না। বলা যায়, সেদিনের নিউইয়র্ক শহরে পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকদের বৈষম্য আজ বাংলাদেশের পোশাক কারখানায়ও বিরাজমান। এর মূল্য দিতে হচ্ছে শুধু সেই শ্রমিককে নয়, তার সন্তানকেও।
লাইজু বেগম বলেন, ‘বাজারের প্রতিটা জিনিসের দাম বেশি। আমরা একদিন হয়তো শাক খাই, আরেকদিন খাই আলু ভর্তা। ভালো খাবার আমরা খুব কম সময়ই খাই। নিজের পোলাটারেও ভালো-মন্দ খাওয়াতে পারি না। এভাবে থাকা আমাদের জন্য অনেক কষ্টের। আমরা তো কারখানায় প্রতিদিন আট ঘণ্টার বেশি কাজ করি। আমরা কেন কম টাকা পাব?’
লাইজুর এ প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। সভা-সমিতিতে কিংবা নারী দিবসের নানা কর্মসূচিতে নারী-পুরুষ সমানাধিকারের কথা বলা হয়, এবারও হবে। কিন্তু বাংলাদেশে এটি এখনো অনেকটাই কাগজকলমে রয়ে গেছে। লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের আরেক অপারেটর রিনা আক্তার বলেন, ‘আমাদের মালিকপক্ষ ন্যায্য টাকা দেয় না। আমি ২০১৪ সাল থেকে ঢাকায় আছি। এই কারখানায় আমরা অসুস্থ হলে ছুটি পাই না। মাঝে মাঝে এখানকার কর্তৃপক্ষ অমানবিক আচরণ করে, গালাগালি করে। আমরা কোথাও গিয়া শান্তি পাই না।’
রিনা আক্তার শুধু কর্মক্ষেত্রে নন, ঘরেও শান্তির খোঁজ পান না। অধিকারের প্রশ্নে সেখানেও তাঁকে একই আচরণ সহ্য করতে হয়। তিনি বলেন, ‘এত খাটাখাটনির পর ঘরে গিয়া শুনতে হয় জামাইয়ের কথা। ঠিকঠাক নাকি কাজ করতে পারি না। আমরা নারীরা কী করব? সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ডিউটি করি। এরপর বাসায় গিয়া সংসারের কাজ। আমি নারী হয়ে ঘরে, কারখানায় এত কাজ করি, কিন্তু আমার জামাই শুধু বাইরে কাজ করে। আমার জামাই ঘরের কোনো কাজকর্ম করে না। তারে ঘরের কাজ করতে বললে গায়ে হাত তোলে।’
রিনা আক্তারের বর পেশায় একজন গাড়িচালক। তাঁরা দুজনই পরিশ্রম করেন। কিন্তু ঘরের পরিশ্রমটা শুধু রিনার জন্যই তোলা থাকে। সেখানে তাঁর স্বামীর হাত চলে না। এটা শুধু রিনার একার অভিজ্ঞতা নয়, কর্মজীবী নারীমাত্রই এ অভিজ্ঞতা কম-বেশি সবার আছে। রিনা বলেন, ‘আমরা তো দুজনই পরিশ্রম করি। আমি একদিন বাসায় দেরি করে এলে বা শরীর খারাপ লাগলে যদি তারে বলি ভাতটা একটু চুলায় বসায় দিয়ো, সে কিন্তু আমার কথা শোনে না। বরং কথা শোনায়, মেয়েদের জন্ম ঘরের কাজের জন্য। আমরা নারীরা আসলেই অসহায়।’
নিজের কাজের পরিসর, যোগ্যতা এবং বৈষম্য—এসব নিয়ে সচেতন রিনা বলেন, ‘আমাকে কারখানার যেই মেশিনে কাজ দেয়, আমি সে মেশিনে কাজ করতে পারি। কিন্তু মাস শেষে অনেক কম টাকা পাই। আমরা তো মালিক থেকে টাকা ভিক্ষা করছি না। আমরা আমাদের শ্রমের বিনিময়ে মাস শেষে বেতন পাই। সে বেতন আবার একই কাজ করা পুরুষদের সমান না। আমরা তো নারী, আমাদের কেউ সম্মান করে না। ঘরেও অত্যাচার সইতে হয়। কারখানায়ও কথা শুনতে হয়। আবার দেখেন নারীরা নির্যাতনের শিকারও হয় বেশি। আমাদের সরকার কি এসব দেখে না? আমরা আমাদের কাজের সমান মজুরি চাই।’
দেশে নারী দিবস নানা আয়োজনে পালন করা হলেও বাল্যবিবাহ, যৌতুকসহ নানাভাবে নারীরা নির্যাতিত। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মোট ২৬৫ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৮৮ জন। তার মধ্যে ৪৬ জন কন্যাশিশুসহ ৭৫ জন ধর্ষণের শিকার, ৩ জন কন্যাশিশুসহ ১২ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার, ১ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছে। এ পরিসংখ্যান কিন্তু বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসা খবরের ভিত্তিতে তৈরি। বলে রাখা ভালো—বহু নারী নির্যাতনের খবর সংবাদমাধ্যমে আসেই না। আর মজুরি বৈষম্য রয়ে গেছে সব স্তরে; কখনো প্রত্যক্ষ, কখনো পরোক্ষভাবে।
এ নিয়ে কথা হয় হবিগঞ্জের চা-বাগানের সাধারণ চা-শ্রমিক সন্ধ্যা রানী ভৌমিকের সঙ্গে। চা-বাগানে নারী-পুরুষ বৈষম্যের একটা চিত্র তাঁর কাছ থেকে পাওয়া গেল। বললেন, ‘আমি চা-বাগানে ১০ বছর ধরে কাজ করছি। আমাদের এখানে নারী-পুরুষের মজুরি বৈষম্য না থাকলেও গাছ ছাঁটাইয়ের সময় শ্রম বৈষম্যের কবলে পড়তে হয়। যেমন আমরা যে সময়ে ১ হাজার ২০০ গাছের চারা কাটি, ঠিক সেই সময়ে পুরুষেরা কাটে ২০০ গাছের চারা। এই কাজ ছেলেরা ৬ ঘণ্টা করলেও নারীদের করতে হয় ৮ ঘণ্টা। এ ক্ষেত্রে ছেলেরা কম চারা গাছ কাটলেও কেউ কিছু বলে না। কিন্তু আমরা কম চারা গাছ কাটলে আমাদের টাকা কেটে রাখে। এ ভারী অন্যায়। আমাদের শ্রমের কি কোনো মূল্য নেই?’
সন্ধ্যা রানী নারী দিবস ও এর ইতিহাস সম্পর্কে জানেন। এ ক্ষেত্রে তিনি রিনা ও লাইজুর চেয়ে এগিয়ে বলা যায়। নারী দিবস কেন পালন করা হয়, জানতে চাইলে সন্ধ্যা রানী বলেন, ‘নারী দিবসটা হচ্ছে ১৮৫৭ সালে নারীদের মজুরি বৈষম্য কমানোর জন্য আন্দোলন হয়েছিল, সেখান থেকে। সেখানে নারীরা এই আন্দোলন সংগঠিত করেছিল। সেই আন্দোলনে মূল ভূমিকা পালন করেন ক্লারা জেটকিন নামের এক নেত্রী। তিনি এই দিবসের সূচনা করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমি যেটা বুঝি সেটা হলো, নারীরা এখনো তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমাদের বাগানগুলো টিকিয়ে রাখছে নারীরা। তারাই কাজ করে বেশি। কিন্তু দিন শেষে নারীদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না।’
সন্ধ্যা রানী এক অর্থে ঠিকই বলেছেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস সম্পর্কে জানতে হলে ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চে যেতে হবে। ঘটনাস্থল ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর। ন্যায্য মজুরির দাবিতে রাস্তায় নামেন সুচ কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেদিনের আন্দোলনরত নারী শ্রমিকদের আন্দোলনের মূল বিষয় ছিল অতিরিক্ত শ্রমঘণ্টা বাতিল, কর্মক্ষেত্রে অমানবিক আচরণ, ন্যায্য মজুরি, কাজের সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন দাবি। সেদিনের সুচ কারখানার নারী শ্রমিকদের মিছিলে চলে সরকারি বাহিনীর দমনপীড়ন। গ্রেপ্তার করা হয় আন্দোলনকারীদের। ফলে এই আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ে। জোরদার হয় আন্দোলন। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় তিন বছর পর ১৮৬০ সালে সুচ কারখানার নারী শ্রমিকেরা তাঁদের নিজস্ব ইউনিয়ন গঠন করেন। এরপর ১৯০৮ সালে ৮ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকেরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত শ্রম বাতিলের দাবিতে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা এই আন্দোলনে প্রায় ২০ হাজার নারী শ্রমিক অংশ নেন। কর্মক্ষেত্রে নারীদের সম-অধিকারের ঐক্যবদ্ধ এ আন্দোলন থেকেই এই দিবসের সূচনা।
এরপর এল ঐতিহাসিক ১৯১০ সাল। জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেতা ক্লারা জেটকিন কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে নারীদের অধিকারের দিন হিসেবে নারী দিবস ঘোষণার দাবি জানান। এই সম্মেলনে ১৭টি দেশ থেকে প্রায় ১০০ জন নারী প্রতিনিধি অংশ নেন। সম্মেলনে ক্লারা জেটকিন ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের প্রস্তাব দেন। পরে বিভিন্ন দেশের সমাজতান্ত্রিক নেতারা দিনটি পালনের বিশেষ উদ্যোগ নেন। এই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদানের জন্য জাতিসংঘ বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায়। এরপর থেকে সারা বিশ্বে নারীর সম-অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে যথাযথ মর্যাদায় পালন হয়ে আসছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বাংলাদেশেও হচ্ছে। কিন্তু লাইজু বেগম, রিনা আক্তার, সন্ধ্যা রানীরা যে তিমিরে ছিলেন, সেই তিমিরেই রয়ে যাচ্ছেন।

‘এই যে নারী দিবস, নারী দিবস কারে বলে, আমরা তো জানি না। আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়, কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না।’ কথাটা তৈরি পোশাক কারখানা লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগমের। নারী দিবস কী, কেন ইত্যাদি না জানলেও বৈষম্যের পাঠটা তিনি নিজের জীবন দিয়েই নিয়েছেন।
আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর সম-অধিকার আদায়ের একটা দিন। পুরো বিশ্ব এই দিবসকে কেন্দ্র করে নানা কর্মসূচি পালন করে। সভা, সমাবেশ, মিছিল, মিটিং থেকে শুরু করে অনলাইন আর অফলাইনে চলে নানা কর্মসূচি পালনের প্রতিযোগিতা। কিন্তু আন্তর্জাতিক নারী দিবসের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের ইতিহাস, সে কথা অনেকেই ভুলতে বসেছেন। লাইজু বেগমের মতো নারীরা এখনো দেশে-বিদেশে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে।
এই বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘টেকসই আগামীর লক্ষ্যে লৈঙ্গিক সাম্য’। নারীর জেগে ওঠার কথা তো অনেক আগে থেকেই বলা হচ্ছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকাঠামো কতটা সহায় হয়েছে, সে প্রশ্ন তোলাই যায়।
ফেরা যাক লাইজু বেগমের কাছে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের যাত্রা যে নারী শ্রমিকদের হাতে হয়েছিল, লাইজুও তেমনই একজন শ্রমিক। নারীর প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার নারীদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ দিবসের শুরুটা হলেও বৈষম্যের শেষ হয়নি। লাইজু বেগমেরা তাই নারী দিবসের ইতিহাস সম্পর্কে না জানলেও ঠিকই জানেন বৈষম্যের প্রকরণ। অথচ নারী দিবসের সূত্রপাত হয়েছিল কিন্তু পোশাক কারখানায় নারীদের ন্যায্য মজুরি ও বাড়তি কাজ বাতিলের দাবিতে করা আন্দোলন থেকে।
লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না। আমরা সেই সকাল ৮টায় কারখানায় ঢুকি আর বের হই রাত ৮টায়। কারখানায় অতিরিক্ত সময় কাজ করেও টাকা পাই কম। এই কম টাকা দিয়ে তো সংসার চালাইতে পারি না। আমার তিন বছরের সন্তানের খাবারের টাকা জোগাড় করতে পারি না। ঘরভাড়া দিতে পারি না। যেখানে কম টাকার বাসা খুঁজে পাই, সেখানেই থাকতে হয়।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ইতিহাস রচনা করেছিলেন নারী শ্রমিকেরা। স্বল্প মজুরিতে নারী শ্রমিকের সস্তা শ্রম কেনার প্রতিবাদে গড়ে উঠেছিল সেই আন্দোলন। একটু খেয়াল করলে দেখা যায়, সেদিনের নিউইয়র্ক শহরের সেই পরিস্থিতির সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতির তেমন কোনো পার্থক্য নেই। আজও বাংলাদেশের নারী শ্রমিকেরা কর্মক্ষেত্রে পাচ্ছেন না কাজের সঠিক মূল্যায়ন। নারীর কাছ থেকে সস্তায় শ্রম কেনায় কারখানাগুলোর মধ্যে তেমন ভিন্নতা দেখা যায় না। বলা যায়, সেদিনের নিউইয়র্ক শহরে পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকদের বৈষম্য আজ বাংলাদেশের পোশাক কারখানায়ও বিরাজমান। এর মূল্য দিতে হচ্ছে শুধু সেই শ্রমিককে নয়, তার সন্তানকেও।
লাইজু বেগম বলেন, ‘বাজারের প্রতিটা জিনিসের দাম বেশি। আমরা একদিন হয়তো শাক খাই, আরেকদিন খাই আলু ভর্তা। ভালো খাবার আমরা খুব কম সময়ই খাই। নিজের পোলাটারেও ভালো-মন্দ খাওয়াতে পারি না। এভাবে থাকা আমাদের জন্য অনেক কষ্টের। আমরা তো কারখানায় প্রতিদিন আট ঘণ্টার বেশি কাজ করি। আমরা কেন কম টাকা পাব?’
লাইজুর এ প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। সভা-সমিতিতে কিংবা নারী দিবসের নানা কর্মসূচিতে নারী-পুরুষ সমানাধিকারের কথা বলা হয়, এবারও হবে। কিন্তু বাংলাদেশে এটি এখনো অনেকটাই কাগজকলমে রয়ে গেছে। লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের আরেক অপারেটর রিনা আক্তার বলেন, ‘আমাদের মালিকপক্ষ ন্যায্য টাকা দেয় না। আমি ২০১৪ সাল থেকে ঢাকায় আছি। এই কারখানায় আমরা অসুস্থ হলে ছুটি পাই না। মাঝে মাঝে এখানকার কর্তৃপক্ষ অমানবিক আচরণ করে, গালাগালি করে। আমরা কোথাও গিয়া শান্তি পাই না।’
রিনা আক্তার শুধু কর্মক্ষেত্রে নন, ঘরেও শান্তির খোঁজ পান না। অধিকারের প্রশ্নে সেখানেও তাঁকে একই আচরণ সহ্য করতে হয়। তিনি বলেন, ‘এত খাটাখাটনির পর ঘরে গিয়া শুনতে হয় জামাইয়ের কথা। ঠিকঠাক নাকি কাজ করতে পারি না। আমরা নারীরা কী করব? সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ডিউটি করি। এরপর বাসায় গিয়া সংসারের কাজ। আমি নারী হয়ে ঘরে, কারখানায় এত কাজ করি, কিন্তু আমার জামাই শুধু বাইরে কাজ করে। আমার জামাই ঘরের কোনো কাজকর্ম করে না। তারে ঘরের কাজ করতে বললে গায়ে হাত তোলে।’
রিনা আক্তারের বর পেশায় একজন গাড়িচালক। তাঁরা দুজনই পরিশ্রম করেন। কিন্তু ঘরের পরিশ্রমটা শুধু রিনার জন্যই তোলা থাকে। সেখানে তাঁর স্বামীর হাত চলে না। এটা শুধু রিনার একার অভিজ্ঞতা নয়, কর্মজীবী নারীমাত্রই এ অভিজ্ঞতা কম-বেশি সবার আছে। রিনা বলেন, ‘আমরা তো দুজনই পরিশ্রম করি। আমি একদিন বাসায় দেরি করে এলে বা শরীর খারাপ লাগলে যদি তারে বলি ভাতটা একটু চুলায় বসায় দিয়ো, সে কিন্তু আমার কথা শোনে না। বরং কথা শোনায়, মেয়েদের জন্ম ঘরের কাজের জন্য। আমরা নারীরা আসলেই অসহায়।’
নিজের কাজের পরিসর, যোগ্যতা এবং বৈষম্য—এসব নিয়ে সচেতন রিনা বলেন, ‘আমাকে কারখানার যেই মেশিনে কাজ দেয়, আমি সে মেশিনে কাজ করতে পারি। কিন্তু মাস শেষে অনেক কম টাকা পাই। আমরা তো মালিক থেকে টাকা ভিক্ষা করছি না। আমরা আমাদের শ্রমের বিনিময়ে মাস শেষে বেতন পাই। সে বেতন আবার একই কাজ করা পুরুষদের সমান না। আমরা তো নারী, আমাদের কেউ সম্মান করে না। ঘরেও অত্যাচার সইতে হয়। কারখানায়ও কথা শুনতে হয়। আবার দেখেন নারীরা নির্যাতনের শিকারও হয় বেশি। আমাদের সরকার কি এসব দেখে না? আমরা আমাদের কাজের সমান মজুরি চাই।’
দেশে নারী দিবস নানা আয়োজনে পালন করা হলেও বাল্যবিবাহ, যৌতুকসহ নানাভাবে নারীরা নির্যাতিত। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মোট ২৬৫ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৮৮ জন। তার মধ্যে ৪৬ জন কন্যাশিশুসহ ৭৫ জন ধর্ষণের শিকার, ৩ জন কন্যাশিশুসহ ১২ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার, ১ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছে। এ পরিসংখ্যান কিন্তু বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসা খবরের ভিত্তিতে তৈরি। বলে রাখা ভালো—বহু নারী নির্যাতনের খবর সংবাদমাধ্যমে আসেই না। আর মজুরি বৈষম্য রয়ে গেছে সব স্তরে; কখনো প্রত্যক্ষ, কখনো পরোক্ষভাবে।
এ নিয়ে কথা হয় হবিগঞ্জের চা-বাগানের সাধারণ চা-শ্রমিক সন্ধ্যা রানী ভৌমিকের সঙ্গে। চা-বাগানে নারী-পুরুষ বৈষম্যের একটা চিত্র তাঁর কাছ থেকে পাওয়া গেল। বললেন, ‘আমি চা-বাগানে ১০ বছর ধরে কাজ করছি। আমাদের এখানে নারী-পুরুষের মজুরি বৈষম্য না থাকলেও গাছ ছাঁটাইয়ের সময় শ্রম বৈষম্যের কবলে পড়তে হয়। যেমন আমরা যে সময়ে ১ হাজার ২০০ গাছের চারা কাটি, ঠিক সেই সময়ে পুরুষেরা কাটে ২০০ গাছের চারা। এই কাজ ছেলেরা ৬ ঘণ্টা করলেও নারীদের করতে হয় ৮ ঘণ্টা। এ ক্ষেত্রে ছেলেরা কম চারা গাছ কাটলেও কেউ কিছু বলে না। কিন্তু আমরা কম চারা গাছ কাটলে আমাদের টাকা কেটে রাখে। এ ভারী অন্যায়। আমাদের শ্রমের কি কোনো মূল্য নেই?’
সন্ধ্যা রানী নারী দিবস ও এর ইতিহাস সম্পর্কে জানেন। এ ক্ষেত্রে তিনি রিনা ও লাইজুর চেয়ে এগিয়ে বলা যায়। নারী দিবস কেন পালন করা হয়, জানতে চাইলে সন্ধ্যা রানী বলেন, ‘নারী দিবসটা হচ্ছে ১৮৫৭ সালে নারীদের মজুরি বৈষম্য কমানোর জন্য আন্দোলন হয়েছিল, সেখান থেকে। সেখানে নারীরা এই আন্দোলন সংগঠিত করেছিল। সেই আন্দোলনে মূল ভূমিকা পালন করেন ক্লারা জেটকিন নামের এক নেত্রী। তিনি এই দিবসের সূচনা করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমি যেটা বুঝি সেটা হলো, নারীরা এখনো তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমাদের বাগানগুলো টিকিয়ে রাখছে নারীরা। তারাই কাজ করে বেশি। কিন্তু দিন শেষে নারীদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না।’
সন্ধ্যা রানী এক অর্থে ঠিকই বলেছেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস সম্পর্কে জানতে হলে ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চে যেতে হবে। ঘটনাস্থল ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর। ন্যায্য মজুরির দাবিতে রাস্তায় নামেন সুচ কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেদিনের আন্দোলনরত নারী শ্রমিকদের আন্দোলনের মূল বিষয় ছিল অতিরিক্ত শ্রমঘণ্টা বাতিল, কর্মক্ষেত্রে অমানবিক আচরণ, ন্যায্য মজুরি, কাজের সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন দাবি। সেদিনের সুচ কারখানার নারী শ্রমিকদের মিছিলে চলে সরকারি বাহিনীর দমনপীড়ন। গ্রেপ্তার করা হয় আন্দোলনকারীদের। ফলে এই আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ে। জোরদার হয় আন্দোলন। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় তিন বছর পর ১৮৬০ সালে সুচ কারখানার নারী শ্রমিকেরা তাঁদের নিজস্ব ইউনিয়ন গঠন করেন। এরপর ১৯০৮ সালে ৮ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকেরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত শ্রম বাতিলের দাবিতে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা এই আন্দোলনে প্রায় ২০ হাজার নারী শ্রমিক অংশ নেন। কর্মক্ষেত্রে নারীদের সম-অধিকারের ঐক্যবদ্ধ এ আন্দোলন থেকেই এই দিবসের সূচনা।
এরপর এল ঐতিহাসিক ১৯১০ সাল। জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেতা ক্লারা জেটকিন কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে নারীদের অধিকারের দিন হিসেবে নারী দিবস ঘোষণার দাবি জানান। এই সম্মেলনে ১৭টি দেশ থেকে প্রায় ১০০ জন নারী প্রতিনিধি অংশ নেন। সম্মেলনে ক্লারা জেটকিন ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের প্রস্তাব দেন। পরে বিভিন্ন দেশের সমাজতান্ত্রিক নেতারা দিনটি পালনের বিশেষ উদ্যোগ নেন। এই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদানের জন্য জাতিসংঘ বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায়। এরপর থেকে সারা বিশ্বে নারীর সম-অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে যথাযথ মর্যাদায় পালন হয়ে আসছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বাংলাদেশেও হচ্ছে। কিন্তু লাইজু বেগম, রিনা আক্তার, সন্ধ্যা রানীরা যে তিমিরে ছিলেন, সেই তিমিরেই রয়ে যাচ্ছেন।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনা
১ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজার সময় পিছিয়ে আগামীকাল শনিবার বেলা দুইটায় নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ছায়ানট ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের প্রতি সংগঠনটি এই আহ্বান জানায়।
২ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির লাশ ঢাকায় পৌঁছানোকে কেন্দ্র করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরজুড়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা।
২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনাকে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ভিত্তি, নাগরিক নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার চেতনার বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক লিখিত বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টার্গেটেড শুটিংয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থতা এবং পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অদূরদর্শিতা ও অদক্ষতারই প্রতিফলন। এর ফলে গণরোষ থেকে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি আরও বেড়েছে, যার দায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতনের পর বিজয়ের দাবিদার কিছু শক্তির আক্রোশপূর্ণ ও প্রতিশোধপ্রবণ আচরণ রাষ্ট্র ও সমাজে নতুন ধরনের দমনমূলক প্রবণতা তৈরি করছে। এর সরাসরি শিকার হচ্ছে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার কার্যকর অবস্থান নিতে ব্যর্থ হয়েছে; বরং অতীতে অনুরূপ সংকটে নতজানু অবস্থান গ্রহণ করে রাষ্ট্র নিজেই অসহিষ্ণুতা ও সহিংসতার ক্ষেত্র প্রসারিত করেছে।
টিআইবি জানায়, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের মতো শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, দৈনিক নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলা, সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটে আক্রমণ এবং কথিত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে দীপু চন্দ্র দাসকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন নয়। বরং এসবই মুক্তচিন্তা, ভিন্নমত ও স্বাধীন মতপ্রকাশকে পরিকল্পিতভাবে দমনের জ্বলন্ত উদাহরণ।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে যেভাবে মানবিক মূল্যবোধ ও মৌলিক মানবাধিকার পদদলিত হয়েছিল, আজ সেই একই দমনমূলক বাস্তবতা নতুন রূপে ফিরে আসছে। যারা বিগত ১৬ বছর অধিকার হরণের শিকার হয়েছেন এবং জুলাই আন্দোলনের বিজয়ী হিসেবে নিজেদের দাবি করছেন, তাঁদেরই একাংশের হাতে আজ মুক্ত গণমাধ্যম ও ভিন্নমতের অধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান সতর্ক করে বলেন, এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা, জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ও মূল্যবোধ চরম হুমকির মুখে পড়ছে। বৈষম্যমুক্ত সমাজ, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্প্রীতি ও বহু সংস্কৃতির সহাবস্থানের যে স্বপ্ন একাত্তর ও জুলাই ধারণ করেছিল, তা আজ গভীর সংকটে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট আবেগকে কাজে লাগিয়ে মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকারের বিরোধী স্বার্থান্বেষী মহল পতিত শক্তির ইন্ধনে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে। তিনি হত্যাকারীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি এবং মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে কার্যকর, সমন্বিত ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
ড. ইফতেখারুজ্জামান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এসব পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ, রাষ্ট্র সংস্কারের প্রত্যাশা, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং একাত্তর ও জুলাইয়ের মৌলিক আদর্শ আরও গভীর সংকটে পড়বে, যার দায় সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারবে না।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনাকে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ভিত্তি, নাগরিক নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার চেতনার বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক লিখিত বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টার্গেটেড শুটিংয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থতা এবং পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অদূরদর্শিতা ও অদক্ষতারই প্রতিফলন। এর ফলে গণরোষ থেকে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি আরও বেড়েছে, যার দায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতনের পর বিজয়ের দাবিদার কিছু শক্তির আক্রোশপূর্ণ ও প্রতিশোধপ্রবণ আচরণ রাষ্ট্র ও সমাজে নতুন ধরনের দমনমূলক প্রবণতা তৈরি করছে। এর সরাসরি শিকার হচ্ছে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার কার্যকর অবস্থান নিতে ব্যর্থ হয়েছে; বরং অতীতে অনুরূপ সংকটে নতজানু অবস্থান গ্রহণ করে রাষ্ট্র নিজেই অসহিষ্ণুতা ও সহিংসতার ক্ষেত্র প্রসারিত করেছে।
টিআইবি জানায়, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের মতো শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, দৈনিক নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলা, সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটে আক্রমণ এবং কথিত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে দীপু চন্দ্র দাসকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন নয়। বরং এসবই মুক্তচিন্তা, ভিন্নমত ও স্বাধীন মতপ্রকাশকে পরিকল্পিতভাবে দমনের জ্বলন্ত উদাহরণ।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে যেভাবে মানবিক মূল্যবোধ ও মৌলিক মানবাধিকার পদদলিত হয়েছিল, আজ সেই একই দমনমূলক বাস্তবতা নতুন রূপে ফিরে আসছে। যারা বিগত ১৬ বছর অধিকার হরণের শিকার হয়েছেন এবং জুলাই আন্দোলনের বিজয়ী হিসেবে নিজেদের দাবি করছেন, তাঁদেরই একাংশের হাতে আজ মুক্ত গণমাধ্যম ও ভিন্নমতের অধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান সতর্ক করে বলেন, এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা, জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ও মূল্যবোধ চরম হুমকির মুখে পড়ছে। বৈষম্যমুক্ত সমাজ, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্প্রীতি ও বহু সংস্কৃতির সহাবস্থানের যে স্বপ্ন একাত্তর ও জুলাই ধারণ করেছিল, তা আজ গভীর সংকটে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট আবেগকে কাজে লাগিয়ে মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকারের বিরোধী স্বার্থান্বেষী মহল পতিত শক্তির ইন্ধনে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে। তিনি হত্যাকারীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি এবং মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে কার্যকর, সমন্বিত ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
ড. ইফতেখারুজ্জামান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এসব পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ, রাষ্ট্র সংস্কারের প্রত্যাশা, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং একাত্তর ও জুলাইয়ের মৌলিক আদর্শ আরও গভীর সংকটে পড়বে, যার দায় সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারবে না।

‘এই যে নারী দিবস, নারী দিবস কারে বলে, আমরা তো জানি না। আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না।’ কথাটা তৈরি পোশাক কারখানা লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগমের। নারী দিবস কী, কেন ইত্যাদি না জানলেও বৈষম্যের পাঠটা তিনি নিজের জীবন দিয়েই ন
০৮ মার্চ ২০২২
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজার সময় পিছিয়ে আগামীকাল শনিবার বেলা দুইটায় নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ছায়ানট ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের প্রতি সংগঠনটি এই আহ্বান জানায়।
২ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির লাশ ঢাকায় পৌঁছানোকে কেন্দ্র করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরজুড়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা।
২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজার সময় এগিয়ে এনে আগামীকাল শনিবার বেলা দুইটায় নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামীকাল বেলা দুইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শহিদ ওসমান হাদির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে নামাজে জানাজা বেলা আড়াইটায় অনুষ্ঠিত হবার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
শহিদ ওসমান হাদির নামাজে জানাজায় যারা অংশ নিতে আসবেন তারা কোনো প্রকার ব্যাগ বা ভারী বস্তু বহন না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সংসদ ভবন ও এর আশপাশের এলাকায় ড্রোন উড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজার সময় এগিয়ে এনে আগামীকাল শনিবার বেলা দুইটায় নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামীকাল বেলা দুইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শহিদ ওসমান হাদির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে নামাজে জানাজা বেলা আড়াইটায় অনুষ্ঠিত হবার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
শহিদ ওসমান হাদির নামাজে জানাজায় যারা অংশ নিতে আসবেন তারা কোনো প্রকার ব্যাগ বা ভারী বস্তু বহন না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সংসদ ভবন ও এর আশপাশের এলাকায় ড্রোন উড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

‘এই যে নারী দিবস, নারী দিবস কারে বলে, আমরা তো জানি না। আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না।’ কথাটা তৈরি পোশাক কারখানা লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগমের। নারী দিবস কী, কেন ইত্যাদি না জানলেও বৈষম্যের পাঠটা তিনি নিজের জীবন দিয়েই ন
০৮ মার্চ ২০২২
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনা
১ ঘণ্টা আগে
ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ছায়ানট ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের প্রতি সংগঠনটি এই আহ্বান জানায়।
২ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির লাশ ঢাকায় পৌঁছানোকে কেন্দ্র করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরজুড়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা।
২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ছায়ানট ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের প্রতি সংগঠনটি এই আহ্বান জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১২টার পর ওসমান হাদির মর্মান্তিক মৃত্যুকে উপলক্ষ করে একজোট লোক ছায়ানট-সংস্কৃতি ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজ চালায় এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। তারা ছয়তলা ভবনের সব সিসি ক্যামেরাসহ অধিকাংশ কক্ষ, প্রক্ষালণ কক্ষ এবং বহু বাদ্যযন্ত্র, মিলনায়তন, কম্পিউটার ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে। সার্ভারসহ ছায়ানটের কিছু বাদ্যযন্ত্র ও আসবাবপত্র পুড়িয়ে দিয়েছে। অন্তত সাতটি ল্যাপটপসহ গোটা চারেক ফোন ও কিছু হার্ডডিস্ক লুট করেছে। তাদের ভাঙচুরে বৈদ্যুতিক সংযোগ ও সরঞ্জামও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
‘ছায়ানট একটি স্বেচ্ছাসেবী ও স্বনির্ভর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। ছায়ানট কোনো সরকার, বিদেশি সংস্থা বা করপোরেট অনুদান নেয় না। সুতরাং, ছায়ানট আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে এই ক্ষতি পূরণ করবে এবং সংগীত ও শিশুদের সাধারণ শিক্ষায় এই সাময়িক বিঘ্নের দ্রুত প্রতিকার করতে বদ্ধপরিকর।’
এতে আরও বলা হয়, ‘ছায়ানটের কাজের ক্ষেত্র রাজনীতি নয়, সংগীত-সংস্কৃতিচর্চার মাধ্যমে বাঙালি জাতিসত্তাকে ধারণ করে ছায়ানট। ছায়ানট সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের সমাজ গড়তে প্রয়াসী। আমরা ওসমান হাদির মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে গভীরভাবে শোকাহত। কিন্তু ওই সূত্র ধরে ছায়ানট-সংস্কৃতি ভবনে কেন হামলা সংঘটিত হলো, তা মোটেই বোধগম্য নয়। হয়তো পরিস্থিতির সুযোগ গ্রহণ করেছে সংস্কৃতিচর্চার বিরোধী গোষ্ঠী।’
সংগীতশিক্ষার প্রতিষ্ঠানটি আরও বলে, ছায়ানট এই উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ অনানুষ্ঠানিক সংগীতশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীরা দেশে ও বিদেশে সমাদৃত। বাংলা গানের চর্চা বিস্তৃতির পাশাপাশি স্বাধীনতা-সংগ্রামে ছায়ানটের ভূমিকাও সারা বিশ্বে স্বীকৃত। তাই ছায়ানট-সংস্কৃতি ভবনে এই নিন্দনীয় হামলা মাতৃভূমি সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিতে পারে বিশ্বে।
দেশ ও বিদেশ থেকে যে অগণিত শুভাকাঙ্ক্ষী তাঁদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা জানিয়েছেন, তাঁদের সবার কাছে ছায়ানট কৃতজ্ঞ।
বাঙালির আবহমান সংগীতসংস্কৃতির সাধনা ও প্রসারে ছায়ানট তার স্থির প্রত্যয় যাত্রায় অবিচল থাকবে।

ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ছায়ানট ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের প্রতি সংগঠনটি এই আহ্বান জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১২টার পর ওসমান হাদির মর্মান্তিক মৃত্যুকে উপলক্ষ করে একজোট লোক ছায়ানট-সংস্কৃতি ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজ চালায় এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। তারা ছয়তলা ভবনের সব সিসি ক্যামেরাসহ অধিকাংশ কক্ষ, প্রক্ষালণ কক্ষ এবং বহু বাদ্যযন্ত্র, মিলনায়তন, কম্পিউটার ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে। সার্ভারসহ ছায়ানটের কিছু বাদ্যযন্ত্র ও আসবাবপত্র পুড়িয়ে দিয়েছে। অন্তত সাতটি ল্যাপটপসহ গোটা চারেক ফোন ও কিছু হার্ডডিস্ক লুট করেছে। তাদের ভাঙচুরে বৈদ্যুতিক সংযোগ ও সরঞ্জামও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
‘ছায়ানট একটি স্বেচ্ছাসেবী ও স্বনির্ভর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। ছায়ানট কোনো সরকার, বিদেশি সংস্থা বা করপোরেট অনুদান নেয় না। সুতরাং, ছায়ানট আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে এই ক্ষতি পূরণ করবে এবং সংগীত ও শিশুদের সাধারণ শিক্ষায় এই সাময়িক বিঘ্নের দ্রুত প্রতিকার করতে বদ্ধপরিকর।’
এতে আরও বলা হয়, ‘ছায়ানটের কাজের ক্ষেত্র রাজনীতি নয়, সংগীত-সংস্কৃতিচর্চার মাধ্যমে বাঙালি জাতিসত্তাকে ধারণ করে ছায়ানট। ছায়ানট সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের সমাজ গড়তে প্রয়াসী। আমরা ওসমান হাদির মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে গভীরভাবে শোকাহত। কিন্তু ওই সূত্র ধরে ছায়ানট-সংস্কৃতি ভবনে কেন হামলা সংঘটিত হলো, তা মোটেই বোধগম্য নয়। হয়তো পরিস্থিতির সুযোগ গ্রহণ করেছে সংস্কৃতিচর্চার বিরোধী গোষ্ঠী।’
সংগীতশিক্ষার প্রতিষ্ঠানটি আরও বলে, ছায়ানট এই উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ অনানুষ্ঠানিক সংগীতশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীরা দেশে ও বিদেশে সমাদৃত। বাংলা গানের চর্চা বিস্তৃতির পাশাপাশি স্বাধীনতা-সংগ্রামে ছায়ানটের ভূমিকাও সারা বিশ্বে স্বীকৃত। তাই ছায়ানট-সংস্কৃতি ভবনে এই নিন্দনীয় হামলা মাতৃভূমি সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিতে পারে বিশ্বে।
দেশ ও বিদেশ থেকে যে অগণিত শুভাকাঙ্ক্ষী তাঁদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা জানিয়েছেন, তাঁদের সবার কাছে ছায়ানট কৃতজ্ঞ।
বাঙালির আবহমান সংগীতসংস্কৃতির সাধনা ও প্রসারে ছায়ানট তার স্থির প্রত্যয় যাত্রায় অবিচল থাকবে।

‘এই যে নারী দিবস, নারী দিবস কারে বলে, আমরা তো জানি না। আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না।’ কথাটা তৈরি পোশাক কারখানা লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগমের। নারী দিবস কী, কেন ইত্যাদি না জানলেও বৈষম্যের পাঠটা তিনি নিজের জীবন দিয়েই ন
০৮ মার্চ ২০২২
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনা
১ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজার সময় পিছিয়ে আগামীকাল শনিবার বেলা দুইটায় নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির লাশ ঢাকায় পৌঁছানোকে কেন্দ্র করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরজুড়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা।
২ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির লাশ ঢাকায় পৌঁছানোকে কেন্দ্র করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরজুড়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা।
আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে বিমানবন্দর এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে ডোমেস্টিক ও আন্তর্জাতিক টার্মিনালের প্রতিটি প্রবেশপথে সেনাবাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। পুরো বিমানবন্দর এলাকার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতেও নিরাপত্তা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ভিআইপি গেটে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ও আর্মড ফোর্স ব্যাটালিয়নের (এএফবি) সদস্যদের কঠোর দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে বিমানবন্দরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত নজরদারি রাখা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ওসমান হাদির লাশের বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট দিয়ে বের করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। ওই গেট এলাকাতেও সেনাবাহিনী, আর্মড ফোর্স ব্যাটালিয়ন ও পুলিশের সদস্যদের কড়া অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি ৫৮৫ ফ্লাইটে করে সিঙ্গাপুর থেকে আনা হয় ওসমান হাদির লাশ। ফ্লাইটটি সন্ধ্যা ৫টা ৪৯ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির লাশ ঢাকায় পৌঁছানোকে কেন্দ্র করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরজুড়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা।
আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে বিমানবন্দর এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে ডোমেস্টিক ও আন্তর্জাতিক টার্মিনালের প্রতিটি প্রবেশপথে সেনাবাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। পুরো বিমানবন্দর এলাকার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতেও নিরাপত্তা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ভিআইপি গেটে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ও আর্মড ফোর্স ব্যাটালিয়নের (এএফবি) সদস্যদের কঠোর দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে বিমানবন্দরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত নজরদারি রাখা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ওসমান হাদির লাশের বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট দিয়ে বের করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। ওই গেট এলাকাতেও সেনাবাহিনী, আর্মড ফোর্স ব্যাটালিয়ন ও পুলিশের সদস্যদের কড়া অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি ৫৮৫ ফ্লাইটে করে সিঙ্গাপুর থেকে আনা হয় ওসমান হাদির লাশ। ফ্লাইটটি সন্ধ্যা ৫টা ৪৯ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

‘এই যে নারী দিবস, নারী দিবস কারে বলে, আমরা তো জানি না। আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না।’ কথাটা তৈরি পোশাক কারখানা লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগমের। নারী দিবস কী, কেন ইত্যাদি না জানলেও বৈষম্যের পাঠটা তিনি নিজের জীবন দিয়েই ন
০৮ মার্চ ২০২২
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনা
১ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজার সময় পিছিয়ে আগামীকাল শনিবার বেলা দুইটায় নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ছায়ানট ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের প্রতি সংগঠনটি এই আহ্বান জানায়।
২ ঘণ্টা আগে