আনিকা জীনাত, ঢাকা

করোনা মহামারির প্রভাবে বদলে গেছে প্রযুক্তি ব্যবহারের ধরন। ২০২০ সালে অনলাইনে কেনাকাটার হার বেড়েছিল ব্যাপকভাবে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স, অনলাইন কোর্স, ভিডিও কনফারেন্সের অ্যাপ জুমের দাপট দেখেছে বিশ্ব। ২০২১ সালেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। নতুন বছরে পা ফেলার আগে চলতি বছর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পাওয়া কিছু প্রযুক্তিপণ্য সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
জুম
আমেরিকান ভিডিও কমিউনিকেশন কোম্পানি জুম যত দ্রুত উত্থান দেখেছে, তার তুলনা হয়তো চলে শুধু রকেটের সঙ্গেই! ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত জুম (অ্যাপটি চালু হয় ২০১৩ সালে) ছিল অচেনা এক সফটওয়্যার কোম্পানি। করোনা মহামারিতে আচমকা সব অফিস-আদালত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জুমের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে অস্বাভাবিক গতিতে। সহজ ইউজার ইন্টারফেসই ছিল এর মূল কারণ। গত বছরের এপ্রিলে জুম জানায়, প্রতিদিন গড়ে ৩০ কোটি মানুষ তাদের সফটওয়্যার ব্যবহার করে সভা করেছে।
২০২০ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে জুমের আয় ছিল ৭০ কোটি ডলার। এ বছর একই প্রান্তিকে তাদের আয় ৮২ কোটি ডলার। তবে আয় বাড়লেও কমেছে শেয়ারের মূল্য। গত বছর নভেম্বরে প্রতিটি শেয়ারের মূল্য ছিল ৫০০ ডলার। কমতে কমতে তা এখন দাঁড়িয়েছে ১৮২ ডলারে। তবু জুমের বার্ষিক মিটিং মিনিট দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়নে। শেয়ারবাজারের কল্যাণে কোম্পানিটির মূলধন এখন ৭৫ বিলিয়ন ডলার। আগামী বছর অনেক প্রতিষ্ঠানই হয়তো হোম অফিসের বদলে কর্মীদের অফিসে এনে ফেলবে। তখন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ও শেয়ারমূল্য দুটোই আরও কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অনলাইনে ব্যবসা
দিন দিন অনলাইনে আমাদের সময় দেওয়ার মাত্রা বেড়েই চলছে। এই পরিবর্তনের ভালো-খারাপ সব দিকই আছে। অনলাইনে সময় কাটানোর প্রবণতাকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই নতুন আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন। অনলাইন থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং ট্রেইনারদের আয়ও বেড়েছে। দক্ষ ট্রেইনাররা তাদের কোর্সে বিদেশি শিক্ষার্থীও পাচ্ছেন। টেকেবল, ইউডেমি, স্কিলশেয়ার ও কোর্সেরার ব্যবসা ফুলে-ফেঁপে উঠছে। টেকেবল থেকে ৪০ হাজার ট্রেইনার আয় করেছেন ১ বিলিয়ন ডলার। কোর্সেরার মূলধন এখন ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। প্ল্যাটফর্মটিতে ৩ হাজারের বেশি কোর্স আছে। শেয়ার মার্কেটের কল্যাণে ইউডেমির মূলধন এখন সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার।
এ ছাড়া সামনের দিনে ই-কমার্স ব্যবসার বাজারও আরও ফুলে-ফেঁপে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২২ সালে ই-কমার্স ব্যবসা থেকে আয় হবে ৫ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ব্যবসা বাড়ানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা সক্রিয় থাকবেন, তাঁদের বিক্রি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ৩২ শতাংশ বেশি।
প্রযুক্তিবিদদের অনুমান, ক্রেতাদের আচরণ ও কেনাকাটার তথ্য বিশ্লেষণে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বাড়বে আগামী দিনে। দাম ঠিক করা ও পণ্য দেখানোর ক্ষেত্রে বিক্রেতারা এআইয়ের সহায়তা পাবে। অন্যদিকে ক্রেতারা নিজস্ব চাহিদা আরও সহজে বোঝাতে পারবেন বিক্রেতাদের। পূর্বাভাস আছে, ২০২২ সালে মোবাইলের মাধ্যমে ৫০ শতাংশের বেশি অনলাইন কেনাকাটা হবে। ভিআর ও এআর প্রযুক্তির সাহায্যে যেকোনো পণ্য ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল থেকে দেখা যাবে। ফলে পণ্যটি কাজে লাগবে কি না, তা সহজেই বোঝা যাবে। আর ২০২৫ সাল নাগাদ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির হার্ডওয়্যারের বাজার হবে ১০৫ বিলিয়ন ডলারের।
নেটফ্লিক্স
২৪ বছর আগে যাত্রা শুরু করেছিল নেটফ্লিক্স। প্রথম দিকে তারা ডিভিডি ভাড়া দিত। ২০১৩ সালে নেটফ্লিক্স কনটেন্ট বানানোর ব্যবসায় নামে। তাদের প্রথম অরিজিনাল সিরিজ হলো আমেরিকান পলিটিক্যাল ড্রামা ‘হাউস অব কার্ডস’।
আমেরিকান এই সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভিসটি বর্তমানে ১৯০টি দেশে দেখা যায়। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত নেটফ্লিক্সের গ্রাহকসংখ্যা ছিল ২১ কোটি ৪০ লাখ।
মহামারিকালীন লকডাউনের প্রভাবে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ কোটি ৪০ লাখ নতুন গ্রাহক জুটেছিল নেটফ্লিক্সের। গ্রাহক বাড়ার এই হার কমার আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে নতুন সাবস্ক্রাইবার যুক্ত হয় আরও ৪৪ লাখ।
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স স্মার্টফোনের জন্য গেমস নিয়ে আসে এ বছরের নভেম্বরে। ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস: ১৯৮৪ ’, ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস ৩: দ্য গেম’, কার্ড ব্লাস্ট, টিটার আপ, শুটিং হোপসসহ ৫টি গেম এনেছে তারা। নেটফ্লিক্স গ্রাহকেরা বিজ্ঞাপন ছাড়াই গেমগুলো খেলতে পারবে।
ডলারের বিপরীতে অনেক দেশের মুদ্রার মান কম হওয়ায় মার্কিনরাই এখন পর্যন্ত নেটফ্লিক্সের সবচেয়ে বিশ্বস্ত গ্রাহক। নেটফ্লিক্সে মার্কিন গ্রাহকের সংখ্যা বর্তমানে ৭ কোটি ৪০ লাখ। সে তুলনায় ভারতীয় গ্রাহকের সংখ্যা ৪৪ লাখ। অবশ্য এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্রাহক ধরতে নিত্যনতুন বাণিজ্যিক কৌশল নিচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মটি। ভারতের বাজার দখলে নিতে সাবস্ক্রিপশন ফি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছে নেটফ্লিক্স।
এ বছর নেটফ্লিক্সের অরিজিনাল কনটেন্টের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার সিরিজ ‘স্কুইড গেম’। প্রথম ৪ সপ্তাহে সিরিজটি দেখেন ১৪ কোটি ২০ লাখ গ্রাহক। সিরিজটি বানাতে খরচ হয় ১৬৮ কোটি টাকা। আর মুনাফা হয় ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
মেটাভার্স
মার্কিন সায়েন্সফিকশন লেখক নিল স্টিফেনসনের একটি উপন্যাসে প্রথমবার মেটাভার্সের কথা লেখা হয়েছিল। ১৯৯২ সালে কল্পিত সেই জগতের দরজা খুলেছিল ‘স্নো ক্র্যাশ’ নামের বইয়ের মাধ্যমে। ৩০ বছর পর এসে মানুষের থ্রিডি অবতারের ধারণা বাস্তব রূপ লাভ করছে। আর সেই সুযোগ আনার ঘোষণা দিয়ে এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় তুলেছেন মার্ক জাকারবার্গ।
বলা হচ্ছে, মেটাভার্সে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, অগমেন্টেড রিয়েলিটি ও ভিডিওর মাধ্যমে ডিজিটাল জীবনযাপন করা যাবে। কেনাকাটা, অফিসের কাজ, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ও খেলাধুলা করা যাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। বিশ্বের অপর প্রান্তে চলতে থাকা যেকোনো সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যোগ দেওয়া যাবে। অর্থাৎ সশরীরে উপস্থিত থাকার প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে।
মেটাভার্স প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রধান শর্ত হলো দ্রুতগতির ইন্টারনেট। মেটার (ফেসবুক) সব ব্যবহারকারীর হাতে দ্রুত গতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট পৌঁছালে এই প্রযুক্তির পূর্ণাঙ্গ রূপ সম্পর্কে ধারণা মিলবে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা। মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ জানিয়েছেন, সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য মেটাভার্সের মূল বিষয়গুলোর উন্নয়ন ঘটাতে আরও ৫ থেকে ১০ বছর সময় লাগবে।
মেটাভার্স প্রযুক্তি নিয়ে শুধু ফেসবুক নয়, সফটওয়্যার নির্মাতা কোম্পানি মাইক্রোসফট, ভিডিও গেম নির্মাতা কোম্পানি এপিক গেমস ও অনলাইন গেইম প্ল্যাটফর্ম রোবোলক্স’ও কাজ করছে।
মাইক্রোসফটের প্রযুক্তির নাম হবে ম্যাশ। তাদের নিজস্ব হলোলেন্স (মিক্সড রিয়েলিটি স্মার্টগ্লাস) ব্যবহারকারীকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও অগমেন্টেড রিয়েলিটিতে নিয়ে যাবে। হেডসেট ছাড়াও সাধারণ টু-ডি মনিটর দিয়ে ভার্চুয়াল কর্মক্ষেত্রে সভা করা যাবে। ক্লাউডভিত্তিক ডাইনামিক ৩৬৫ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ড বিভাগ ও মহাকাশে থাকা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনেও ভার্চুয়ালি যাওয়া যাবে।
মাইক্রোসফট জানিয়েছে, তাদের অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে করপোরেট অফিসের কর্মীরা নিজেদের ডিজিটাল অবতার তৈরি করতে পারবেন। অফিসের জন্য তৈরি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল যেমন স্প্রেডশিট আদান-প্রদান করা যাবে। এই প্রযুক্তির প্রাথমিক রূপ কেমন হবে, তা আগামী বছরের শেষ ভাগে জানা যাবে।
এদিকে ফোর্টনাইট গেম নির্মাতা কোম্পানি এপিক গেমস ইনকরপোরেশনও মেটাভার্স প্রযুক্তির দখল নিতে মরিয়া। কোম্পানিটির সিইও টিম সুইনি জানিয়েছেন, আগামী দশকে মেটাভার্স প্রযুক্তির বাজারমূল্য হবে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে শক্ত অবস্থান তৈরিতে এপিক, রোবোলক্স, মাইক্রোসফট ও ফেসবুকের জন্য আগামী তিন বছর খুব গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক শ কোটি ব্যবহারকারীকে সবাই নিজেদের ছাতার তলে আনতে চাইবে। প্রথম যারা কাজটি করতে পারবে তাদের হাতেই মান নির্ধারণের ভার চলে যাবে। পরিসংখ্যানগত পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে ৫০ কোটি ভিআর সেট বিক্রি হতে পারে।
মেসেজিং অ্যাপের বাজার
এককালে মেসেজিং অ্যাপে শুধু টেক্সট পাঠানো যেত। এখন ভয়েস মেসেজ পাঠানো যায়, চলে ভিডিও চ্যাট। এ ছাড়া গ্রুপ চ্যাটের সুবিধাও যুক্ত হয়েছে। সারা বিশ্বে ২৭৭ কোটি মানুষ বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করছেন। আর ২০২২ সালে এসব অ্যাপের ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৩০০ কোটিতে।
মেসেজিং অ্যাপ ওয়াটসঅ্যাপের ব্যবহারকারী সংখ্যা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। তাদের অ্যাপ ব্যবহার করেন বিশ্বের ২০০ কোটি মানুষ। এর মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যা ৩৯ কোটি। ২০০৯ সালে চালু হওয়া অ্যাপটি এখন পর্যন্ত ৫০০ কোটি বার ডাউনলোড হয়েছে। বিশ্বের ১০০টি দেশে হোয়াটসঅ্যাপ সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাপ। হোয়াটসঅ্যাপ কোনো বিজ্ঞাপন দেখায় না। তাদের মূল আয়ের উৎস হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস, বিভিন্ন কোম্পানিগুলো এর মূল গ্রাহক। বহুল ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ এনক্রিপ্টেড থাকে। ফলে নিরাপদ থাকতে হোয়াটসঅ্যাপে ভরসা রাখেন অনেকে।
ফেসবুক মেসেঞ্জারের ব্যবহারকারী সংখ্যা এখন প্রায় ১৩০ কোটি। তবে ফেসবুক মেসেঞ্জার বা ইনস্টাগ্রামের ডাইরেক্ট মেসেজে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন সুবিধা নেই। ২০২২ সালে এই সুবিধা যুক্ত করার কথা দিয়েছিল ফেসবুক। কিন্তু তারা জানিয়েছে, ২০২৩ সালের আগে এই সুবিধা পাওয়া যাবে না অ্যাপ দুটিতে।
ব্যবহারকারীর সংখ্যার দিক দিয়ে চীনের মেসেজিং অ্যাপ উইচ্যাট আছে তৃতীয় অবস্থানে। তাদের ব্যবহারকারী সংখ্যা ১২৫ কোটি।
পরিশেষে
প্রযুক্তি বিশ্ব খুব দ্রুত বদলায়। কোনো কিছুই দীর্ঘদিন টেকে না। গুটিকয়েক প্রযুক্তি কোম্পানি বাজার নিয়ন্ত্রণ করলেও প্রতিনিয়ত পণ্য ও সেবায় তারা নতুনত্ব এনে চলেছে। আগামী বছরেও নতুন অনেক পণ্য দেখা যাবে। সেবায়ও আসবে পরিবর্তন। বিশ্লেষকদের মতে, মানুষ কী ভাবছে তা নির্ভুলভাবে অনুমান করতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির দাপট বাড়বে সামনের দিনগুলোতে। হয়তো এই পথ ধরেই প্রযুক্তি দুনিয়ায় আসবে নয়া বিপ্লব!
তথ্যসূত্র: ব্যাকলিংকো ডটকম, রয়টার্স, আইজিএন ডটকম, বিজনেস অব অ্যাপস, স্ট্যাটিস্টা ডটকম ও উইডেভস ডটকম
সালতামামির অন্যান্য আয়োজন:

করোনা মহামারির প্রভাবে বদলে গেছে প্রযুক্তি ব্যবহারের ধরন। ২০২০ সালে অনলাইনে কেনাকাটার হার বেড়েছিল ব্যাপকভাবে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স, অনলাইন কোর্স, ভিডিও কনফারেন্সের অ্যাপ জুমের দাপট দেখেছে বিশ্ব। ২০২১ সালেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। নতুন বছরে পা ফেলার আগে চলতি বছর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পাওয়া কিছু প্রযুক্তিপণ্য সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
জুম
আমেরিকান ভিডিও কমিউনিকেশন কোম্পানি জুম যত দ্রুত উত্থান দেখেছে, তার তুলনা হয়তো চলে শুধু রকেটের সঙ্গেই! ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত জুম (অ্যাপটি চালু হয় ২০১৩ সালে) ছিল অচেনা এক সফটওয়্যার কোম্পানি। করোনা মহামারিতে আচমকা সব অফিস-আদালত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জুমের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে অস্বাভাবিক গতিতে। সহজ ইউজার ইন্টারফেসই ছিল এর মূল কারণ। গত বছরের এপ্রিলে জুম জানায়, প্রতিদিন গড়ে ৩০ কোটি মানুষ তাদের সফটওয়্যার ব্যবহার করে সভা করেছে।
২০২০ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে জুমের আয় ছিল ৭০ কোটি ডলার। এ বছর একই প্রান্তিকে তাদের আয় ৮২ কোটি ডলার। তবে আয় বাড়লেও কমেছে শেয়ারের মূল্য। গত বছর নভেম্বরে প্রতিটি শেয়ারের মূল্য ছিল ৫০০ ডলার। কমতে কমতে তা এখন দাঁড়িয়েছে ১৮২ ডলারে। তবু জুমের বার্ষিক মিটিং মিনিট দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়নে। শেয়ারবাজারের কল্যাণে কোম্পানিটির মূলধন এখন ৭৫ বিলিয়ন ডলার। আগামী বছর অনেক প্রতিষ্ঠানই হয়তো হোম অফিসের বদলে কর্মীদের অফিসে এনে ফেলবে। তখন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ও শেয়ারমূল্য দুটোই আরও কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অনলাইনে ব্যবসা
দিন দিন অনলাইনে আমাদের সময় দেওয়ার মাত্রা বেড়েই চলছে। এই পরিবর্তনের ভালো-খারাপ সব দিকই আছে। অনলাইনে সময় কাটানোর প্রবণতাকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই নতুন আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন। অনলাইন থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং ট্রেইনারদের আয়ও বেড়েছে। দক্ষ ট্রেইনাররা তাদের কোর্সে বিদেশি শিক্ষার্থীও পাচ্ছেন। টেকেবল, ইউডেমি, স্কিলশেয়ার ও কোর্সেরার ব্যবসা ফুলে-ফেঁপে উঠছে। টেকেবল থেকে ৪০ হাজার ট্রেইনার আয় করেছেন ১ বিলিয়ন ডলার। কোর্সেরার মূলধন এখন ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। প্ল্যাটফর্মটিতে ৩ হাজারের বেশি কোর্স আছে। শেয়ার মার্কেটের কল্যাণে ইউডেমির মূলধন এখন সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার।
এ ছাড়া সামনের দিনে ই-কমার্স ব্যবসার বাজারও আরও ফুলে-ফেঁপে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২২ সালে ই-কমার্স ব্যবসা থেকে আয় হবে ৫ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ব্যবসা বাড়ানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা সক্রিয় থাকবেন, তাঁদের বিক্রি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ৩২ শতাংশ বেশি।
প্রযুক্তিবিদদের অনুমান, ক্রেতাদের আচরণ ও কেনাকাটার তথ্য বিশ্লেষণে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বাড়বে আগামী দিনে। দাম ঠিক করা ও পণ্য দেখানোর ক্ষেত্রে বিক্রেতারা এআইয়ের সহায়তা পাবে। অন্যদিকে ক্রেতারা নিজস্ব চাহিদা আরও সহজে বোঝাতে পারবেন বিক্রেতাদের। পূর্বাভাস আছে, ২০২২ সালে মোবাইলের মাধ্যমে ৫০ শতাংশের বেশি অনলাইন কেনাকাটা হবে। ভিআর ও এআর প্রযুক্তির সাহায্যে যেকোনো পণ্য ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল থেকে দেখা যাবে। ফলে পণ্যটি কাজে লাগবে কি না, তা সহজেই বোঝা যাবে। আর ২০২৫ সাল নাগাদ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির হার্ডওয়্যারের বাজার হবে ১০৫ বিলিয়ন ডলারের।
নেটফ্লিক্স
২৪ বছর আগে যাত্রা শুরু করেছিল নেটফ্লিক্স। প্রথম দিকে তারা ডিভিডি ভাড়া দিত। ২০১৩ সালে নেটফ্লিক্স কনটেন্ট বানানোর ব্যবসায় নামে। তাদের প্রথম অরিজিনাল সিরিজ হলো আমেরিকান পলিটিক্যাল ড্রামা ‘হাউস অব কার্ডস’।
আমেরিকান এই সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভিসটি বর্তমানে ১৯০টি দেশে দেখা যায়। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত নেটফ্লিক্সের গ্রাহকসংখ্যা ছিল ২১ কোটি ৪০ লাখ।
মহামারিকালীন লকডাউনের প্রভাবে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ কোটি ৪০ লাখ নতুন গ্রাহক জুটেছিল নেটফ্লিক্সের। গ্রাহক বাড়ার এই হার কমার আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে নতুন সাবস্ক্রাইবার যুক্ত হয় আরও ৪৪ লাখ।
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স স্মার্টফোনের জন্য গেমস নিয়ে আসে এ বছরের নভেম্বরে। ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস: ১৯৮৪ ’, ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস ৩: দ্য গেম’, কার্ড ব্লাস্ট, টিটার আপ, শুটিং হোপসসহ ৫টি গেম এনেছে তারা। নেটফ্লিক্স গ্রাহকেরা বিজ্ঞাপন ছাড়াই গেমগুলো খেলতে পারবে।
ডলারের বিপরীতে অনেক দেশের মুদ্রার মান কম হওয়ায় মার্কিনরাই এখন পর্যন্ত নেটফ্লিক্সের সবচেয়ে বিশ্বস্ত গ্রাহক। নেটফ্লিক্সে মার্কিন গ্রাহকের সংখ্যা বর্তমানে ৭ কোটি ৪০ লাখ। সে তুলনায় ভারতীয় গ্রাহকের সংখ্যা ৪৪ লাখ। অবশ্য এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্রাহক ধরতে নিত্যনতুন বাণিজ্যিক কৌশল নিচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মটি। ভারতের বাজার দখলে নিতে সাবস্ক্রিপশন ফি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছে নেটফ্লিক্স।
এ বছর নেটফ্লিক্সের অরিজিনাল কনটেন্টের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার সিরিজ ‘স্কুইড গেম’। প্রথম ৪ সপ্তাহে সিরিজটি দেখেন ১৪ কোটি ২০ লাখ গ্রাহক। সিরিজটি বানাতে খরচ হয় ১৬৮ কোটি টাকা। আর মুনাফা হয় ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
মেটাভার্স
মার্কিন সায়েন্সফিকশন লেখক নিল স্টিফেনসনের একটি উপন্যাসে প্রথমবার মেটাভার্সের কথা লেখা হয়েছিল। ১৯৯২ সালে কল্পিত সেই জগতের দরজা খুলেছিল ‘স্নো ক্র্যাশ’ নামের বইয়ের মাধ্যমে। ৩০ বছর পর এসে মানুষের থ্রিডি অবতারের ধারণা বাস্তব রূপ লাভ করছে। আর সেই সুযোগ আনার ঘোষণা দিয়ে এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় তুলেছেন মার্ক জাকারবার্গ।
বলা হচ্ছে, মেটাভার্সে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, অগমেন্টেড রিয়েলিটি ও ভিডিওর মাধ্যমে ডিজিটাল জীবনযাপন করা যাবে। কেনাকাটা, অফিসের কাজ, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ও খেলাধুলা করা যাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। বিশ্বের অপর প্রান্তে চলতে থাকা যেকোনো সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যোগ দেওয়া যাবে। অর্থাৎ সশরীরে উপস্থিত থাকার প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে।
মেটাভার্স প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রধান শর্ত হলো দ্রুতগতির ইন্টারনেট। মেটার (ফেসবুক) সব ব্যবহারকারীর হাতে দ্রুত গতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট পৌঁছালে এই প্রযুক্তির পূর্ণাঙ্গ রূপ সম্পর্কে ধারণা মিলবে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা। মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ জানিয়েছেন, সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য মেটাভার্সের মূল বিষয়গুলোর উন্নয়ন ঘটাতে আরও ৫ থেকে ১০ বছর সময় লাগবে।
মেটাভার্স প্রযুক্তি নিয়ে শুধু ফেসবুক নয়, সফটওয়্যার নির্মাতা কোম্পানি মাইক্রোসফট, ভিডিও গেম নির্মাতা কোম্পানি এপিক গেমস ও অনলাইন গেইম প্ল্যাটফর্ম রোবোলক্স’ও কাজ করছে।
মাইক্রোসফটের প্রযুক্তির নাম হবে ম্যাশ। তাদের নিজস্ব হলোলেন্স (মিক্সড রিয়েলিটি স্মার্টগ্লাস) ব্যবহারকারীকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও অগমেন্টেড রিয়েলিটিতে নিয়ে যাবে। হেডসেট ছাড়াও সাধারণ টু-ডি মনিটর দিয়ে ভার্চুয়াল কর্মক্ষেত্রে সভা করা যাবে। ক্লাউডভিত্তিক ডাইনামিক ৩৬৫ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ড বিভাগ ও মহাকাশে থাকা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনেও ভার্চুয়ালি যাওয়া যাবে।
মাইক্রোসফট জানিয়েছে, তাদের অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে করপোরেট অফিসের কর্মীরা নিজেদের ডিজিটাল অবতার তৈরি করতে পারবেন। অফিসের জন্য তৈরি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল যেমন স্প্রেডশিট আদান-প্রদান করা যাবে। এই প্রযুক্তির প্রাথমিক রূপ কেমন হবে, তা আগামী বছরের শেষ ভাগে জানা যাবে।
এদিকে ফোর্টনাইট গেম নির্মাতা কোম্পানি এপিক গেমস ইনকরপোরেশনও মেটাভার্স প্রযুক্তির দখল নিতে মরিয়া। কোম্পানিটির সিইও টিম সুইনি জানিয়েছেন, আগামী দশকে মেটাভার্স প্রযুক্তির বাজারমূল্য হবে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে শক্ত অবস্থান তৈরিতে এপিক, রোবোলক্স, মাইক্রোসফট ও ফেসবুকের জন্য আগামী তিন বছর খুব গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক শ কোটি ব্যবহারকারীকে সবাই নিজেদের ছাতার তলে আনতে চাইবে। প্রথম যারা কাজটি করতে পারবে তাদের হাতেই মান নির্ধারণের ভার চলে যাবে। পরিসংখ্যানগত পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে ৫০ কোটি ভিআর সেট বিক্রি হতে পারে।
মেসেজিং অ্যাপের বাজার
এককালে মেসেজিং অ্যাপে শুধু টেক্সট পাঠানো যেত। এখন ভয়েস মেসেজ পাঠানো যায়, চলে ভিডিও চ্যাট। এ ছাড়া গ্রুপ চ্যাটের সুবিধাও যুক্ত হয়েছে। সারা বিশ্বে ২৭৭ কোটি মানুষ বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করছেন। আর ২০২২ সালে এসব অ্যাপের ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৩০০ কোটিতে।
মেসেজিং অ্যাপ ওয়াটসঅ্যাপের ব্যবহারকারী সংখ্যা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। তাদের অ্যাপ ব্যবহার করেন বিশ্বের ২০০ কোটি মানুষ। এর মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যা ৩৯ কোটি। ২০০৯ সালে চালু হওয়া অ্যাপটি এখন পর্যন্ত ৫০০ কোটি বার ডাউনলোড হয়েছে। বিশ্বের ১০০টি দেশে হোয়াটসঅ্যাপ সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাপ। হোয়াটসঅ্যাপ কোনো বিজ্ঞাপন দেখায় না। তাদের মূল আয়ের উৎস হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস, বিভিন্ন কোম্পানিগুলো এর মূল গ্রাহক। বহুল ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ এনক্রিপ্টেড থাকে। ফলে নিরাপদ থাকতে হোয়াটসঅ্যাপে ভরসা রাখেন অনেকে।
ফেসবুক মেসেঞ্জারের ব্যবহারকারী সংখ্যা এখন প্রায় ১৩০ কোটি। তবে ফেসবুক মেসেঞ্জার বা ইনস্টাগ্রামের ডাইরেক্ট মেসেজে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন সুবিধা নেই। ২০২২ সালে এই সুবিধা যুক্ত করার কথা দিয়েছিল ফেসবুক। কিন্তু তারা জানিয়েছে, ২০২৩ সালের আগে এই সুবিধা পাওয়া যাবে না অ্যাপ দুটিতে।
ব্যবহারকারীর সংখ্যার দিক দিয়ে চীনের মেসেজিং অ্যাপ উইচ্যাট আছে তৃতীয় অবস্থানে। তাদের ব্যবহারকারী সংখ্যা ১২৫ কোটি।
পরিশেষে
প্রযুক্তি বিশ্ব খুব দ্রুত বদলায়। কোনো কিছুই দীর্ঘদিন টেকে না। গুটিকয়েক প্রযুক্তি কোম্পানি বাজার নিয়ন্ত্রণ করলেও প্রতিনিয়ত পণ্য ও সেবায় তারা নতুনত্ব এনে চলেছে। আগামী বছরেও নতুন অনেক পণ্য দেখা যাবে। সেবায়ও আসবে পরিবর্তন। বিশ্লেষকদের মতে, মানুষ কী ভাবছে তা নির্ভুলভাবে অনুমান করতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির দাপট বাড়বে সামনের দিনগুলোতে। হয়তো এই পথ ধরেই প্রযুক্তি দুনিয়ায় আসবে নয়া বিপ্লব!
তথ্যসূত্র: ব্যাকলিংকো ডটকম, রয়টার্স, আইজিএন ডটকম, বিজনেস অব অ্যাপস, স্ট্যাটিস্টা ডটকম ও উইডেভস ডটকম
সালতামামির অন্যান্য আয়োজন:
আনিকা জীনাত, ঢাকা

করোনা মহামারির প্রভাবে বদলে গেছে প্রযুক্তি ব্যবহারের ধরন। ২০২০ সালে অনলাইনে কেনাকাটার হার বেড়েছিল ব্যাপকভাবে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স, অনলাইন কোর্স, ভিডিও কনফারেন্সের অ্যাপ জুমের দাপট দেখেছে বিশ্ব। ২০২১ সালেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। নতুন বছরে পা ফেলার আগে চলতি বছর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পাওয়া কিছু প্রযুক্তিপণ্য সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
জুম
আমেরিকান ভিডিও কমিউনিকেশন কোম্পানি জুম যত দ্রুত উত্থান দেখেছে, তার তুলনা হয়তো চলে শুধু রকেটের সঙ্গেই! ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত জুম (অ্যাপটি চালু হয় ২০১৩ সালে) ছিল অচেনা এক সফটওয়্যার কোম্পানি। করোনা মহামারিতে আচমকা সব অফিস-আদালত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জুমের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে অস্বাভাবিক গতিতে। সহজ ইউজার ইন্টারফেসই ছিল এর মূল কারণ। গত বছরের এপ্রিলে জুম জানায়, প্রতিদিন গড়ে ৩০ কোটি মানুষ তাদের সফটওয়্যার ব্যবহার করে সভা করেছে।
২০২০ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে জুমের আয় ছিল ৭০ কোটি ডলার। এ বছর একই প্রান্তিকে তাদের আয় ৮২ কোটি ডলার। তবে আয় বাড়লেও কমেছে শেয়ারের মূল্য। গত বছর নভেম্বরে প্রতিটি শেয়ারের মূল্য ছিল ৫০০ ডলার। কমতে কমতে তা এখন দাঁড়িয়েছে ১৮২ ডলারে। তবু জুমের বার্ষিক মিটিং মিনিট দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়নে। শেয়ারবাজারের কল্যাণে কোম্পানিটির মূলধন এখন ৭৫ বিলিয়ন ডলার। আগামী বছর অনেক প্রতিষ্ঠানই হয়তো হোম অফিসের বদলে কর্মীদের অফিসে এনে ফেলবে। তখন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ও শেয়ারমূল্য দুটোই আরও কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অনলাইনে ব্যবসা
দিন দিন অনলাইনে আমাদের সময় দেওয়ার মাত্রা বেড়েই চলছে। এই পরিবর্তনের ভালো-খারাপ সব দিকই আছে। অনলাইনে সময় কাটানোর প্রবণতাকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই নতুন আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন। অনলাইন থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং ট্রেইনারদের আয়ও বেড়েছে। দক্ষ ট্রেইনাররা তাদের কোর্সে বিদেশি শিক্ষার্থীও পাচ্ছেন। টেকেবল, ইউডেমি, স্কিলশেয়ার ও কোর্সেরার ব্যবসা ফুলে-ফেঁপে উঠছে। টেকেবল থেকে ৪০ হাজার ট্রেইনার আয় করেছেন ১ বিলিয়ন ডলার। কোর্সেরার মূলধন এখন ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। প্ল্যাটফর্মটিতে ৩ হাজারের বেশি কোর্স আছে। শেয়ার মার্কেটের কল্যাণে ইউডেমির মূলধন এখন সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার।
এ ছাড়া সামনের দিনে ই-কমার্স ব্যবসার বাজারও আরও ফুলে-ফেঁপে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২২ সালে ই-কমার্স ব্যবসা থেকে আয় হবে ৫ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ব্যবসা বাড়ানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা সক্রিয় থাকবেন, তাঁদের বিক্রি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ৩২ শতাংশ বেশি।
প্রযুক্তিবিদদের অনুমান, ক্রেতাদের আচরণ ও কেনাকাটার তথ্য বিশ্লেষণে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বাড়বে আগামী দিনে। দাম ঠিক করা ও পণ্য দেখানোর ক্ষেত্রে বিক্রেতারা এআইয়ের সহায়তা পাবে। অন্যদিকে ক্রেতারা নিজস্ব চাহিদা আরও সহজে বোঝাতে পারবেন বিক্রেতাদের। পূর্বাভাস আছে, ২০২২ সালে মোবাইলের মাধ্যমে ৫০ শতাংশের বেশি অনলাইন কেনাকাটা হবে। ভিআর ও এআর প্রযুক্তির সাহায্যে যেকোনো পণ্য ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল থেকে দেখা যাবে। ফলে পণ্যটি কাজে লাগবে কি না, তা সহজেই বোঝা যাবে। আর ২০২৫ সাল নাগাদ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির হার্ডওয়্যারের বাজার হবে ১০৫ বিলিয়ন ডলারের।
নেটফ্লিক্স
২৪ বছর আগে যাত্রা শুরু করেছিল নেটফ্লিক্স। প্রথম দিকে তারা ডিভিডি ভাড়া দিত। ২০১৩ সালে নেটফ্লিক্স কনটেন্ট বানানোর ব্যবসায় নামে। তাদের প্রথম অরিজিনাল সিরিজ হলো আমেরিকান পলিটিক্যাল ড্রামা ‘হাউস অব কার্ডস’।
আমেরিকান এই সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভিসটি বর্তমানে ১৯০টি দেশে দেখা যায়। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত নেটফ্লিক্সের গ্রাহকসংখ্যা ছিল ২১ কোটি ৪০ লাখ।
মহামারিকালীন লকডাউনের প্রভাবে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ কোটি ৪০ লাখ নতুন গ্রাহক জুটেছিল নেটফ্লিক্সের। গ্রাহক বাড়ার এই হার কমার আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে নতুন সাবস্ক্রাইবার যুক্ত হয় আরও ৪৪ লাখ।
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স স্মার্টফোনের জন্য গেমস নিয়ে আসে এ বছরের নভেম্বরে। ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস: ১৯৮৪ ’, ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস ৩: দ্য গেম’, কার্ড ব্লাস্ট, টিটার আপ, শুটিং হোপসসহ ৫টি গেম এনেছে তারা। নেটফ্লিক্স গ্রাহকেরা বিজ্ঞাপন ছাড়াই গেমগুলো খেলতে পারবে।
ডলারের বিপরীতে অনেক দেশের মুদ্রার মান কম হওয়ায় মার্কিনরাই এখন পর্যন্ত নেটফ্লিক্সের সবচেয়ে বিশ্বস্ত গ্রাহক। নেটফ্লিক্সে মার্কিন গ্রাহকের সংখ্যা বর্তমানে ৭ কোটি ৪০ লাখ। সে তুলনায় ভারতীয় গ্রাহকের সংখ্যা ৪৪ লাখ। অবশ্য এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্রাহক ধরতে নিত্যনতুন বাণিজ্যিক কৌশল নিচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মটি। ভারতের বাজার দখলে নিতে সাবস্ক্রিপশন ফি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছে নেটফ্লিক্স।
এ বছর নেটফ্লিক্সের অরিজিনাল কনটেন্টের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার সিরিজ ‘স্কুইড গেম’। প্রথম ৪ সপ্তাহে সিরিজটি দেখেন ১৪ কোটি ২০ লাখ গ্রাহক। সিরিজটি বানাতে খরচ হয় ১৬৮ কোটি টাকা। আর মুনাফা হয় ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
মেটাভার্স
মার্কিন সায়েন্সফিকশন লেখক নিল স্টিফেনসনের একটি উপন্যাসে প্রথমবার মেটাভার্সের কথা লেখা হয়েছিল। ১৯৯২ সালে কল্পিত সেই জগতের দরজা খুলেছিল ‘স্নো ক্র্যাশ’ নামের বইয়ের মাধ্যমে। ৩০ বছর পর এসে মানুষের থ্রিডি অবতারের ধারণা বাস্তব রূপ লাভ করছে। আর সেই সুযোগ আনার ঘোষণা দিয়ে এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় তুলেছেন মার্ক জাকারবার্গ।
বলা হচ্ছে, মেটাভার্সে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, অগমেন্টেড রিয়েলিটি ও ভিডিওর মাধ্যমে ডিজিটাল জীবনযাপন করা যাবে। কেনাকাটা, অফিসের কাজ, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ও খেলাধুলা করা যাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। বিশ্বের অপর প্রান্তে চলতে থাকা যেকোনো সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যোগ দেওয়া যাবে। অর্থাৎ সশরীরে উপস্থিত থাকার প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে।
মেটাভার্স প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রধান শর্ত হলো দ্রুতগতির ইন্টারনেট। মেটার (ফেসবুক) সব ব্যবহারকারীর হাতে দ্রুত গতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট পৌঁছালে এই প্রযুক্তির পূর্ণাঙ্গ রূপ সম্পর্কে ধারণা মিলবে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা। মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ জানিয়েছেন, সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য মেটাভার্সের মূল বিষয়গুলোর উন্নয়ন ঘটাতে আরও ৫ থেকে ১০ বছর সময় লাগবে।
মেটাভার্স প্রযুক্তি নিয়ে শুধু ফেসবুক নয়, সফটওয়্যার নির্মাতা কোম্পানি মাইক্রোসফট, ভিডিও গেম নির্মাতা কোম্পানি এপিক গেমস ও অনলাইন গেইম প্ল্যাটফর্ম রোবোলক্স’ও কাজ করছে।
মাইক্রোসফটের প্রযুক্তির নাম হবে ম্যাশ। তাদের নিজস্ব হলোলেন্স (মিক্সড রিয়েলিটি স্মার্টগ্লাস) ব্যবহারকারীকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও অগমেন্টেড রিয়েলিটিতে নিয়ে যাবে। হেডসেট ছাড়াও সাধারণ টু-ডি মনিটর দিয়ে ভার্চুয়াল কর্মক্ষেত্রে সভা করা যাবে। ক্লাউডভিত্তিক ডাইনামিক ৩৬৫ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ড বিভাগ ও মহাকাশে থাকা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনেও ভার্চুয়ালি যাওয়া যাবে।
মাইক্রোসফট জানিয়েছে, তাদের অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে করপোরেট অফিসের কর্মীরা নিজেদের ডিজিটাল অবতার তৈরি করতে পারবেন। অফিসের জন্য তৈরি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল যেমন স্প্রেডশিট আদান-প্রদান করা যাবে। এই প্রযুক্তির প্রাথমিক রূপ কেমন হবে, তা আগামী বছরের শেষ ভাগে জানা যাবে।
এদিকে ফোর্টনাইট গেম নির্মাতা কোম্পানি এপিক গেমস ইনকরপোরেশনও মেটাভার্স প্রযুক্তির দখল নিতে মরিয়া। কোম্পানিটির সিইও টিম সুইনি জানিয়েছেন, আগামী দশকে মেটাভার্স প্রযুক্তির বাজারমূল্য হবে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে শক্ত অবস্থান তৈরিতে এপিক, রোবোলক্স, মাইক্রোসফট ও ফেসবুকের জন্য আগামী তিন বছর খুব গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক শ কোটি ব্যবহারকারীকে সবাই নিজেদের ছাতার তলে আনতে চাইবে। প্রথম যারা কাজটি করতে পারবে তাদের হাতেই মান নির্ধারণের ভার চলে যাবে। পরিসংখ্যানগত পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে ৫০ কোটি ভিআর সেট বিক্রি হতে পারে।
মেসেজিং অ্যাপের বাজার
এককালে মেসেজিং অ্যাপে শুধু টেক্সট পাঠানো যেত। এখন ভয়েস মেসেজ পাঠানো যায়, চলে ভিডিও চ্যাট। এ ছাড়া গ্রুপ চ্যাটের সুবিধাও যুক্ত হয়েছে। সারা বিশ্বে ২৭৭ কোটি মানুষ বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করছেন। আর ২০২২ সালে এসব অ্যাপের ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৩০০ কোটিতে।
মেসেজিং অ্যাপ ওয়াটসঅ্যাপের ব্যবহারকারী সংখ্যা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। তাদের অ্যাপ ব্যবহার করেন বিশ্বের ২০০ কোটি মানুষ। এর মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যা ৩৯ কোটি। ২০০৯ সালে চালু হওয়া অ্যাপটি এখন পর্যন্ত ৫০০ কোটি বার ডাউনলোড হয়েছে। বিশ্বের ১০০টি দেশে হোয়াটসঅ্যাপ সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাপ। হোয়াটসঅ্যাপ কোনো বিজ্ঞাপন দেখায় না। তাদের মূল আয়ের উৎস হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস, বিভিন্ন কোম্পানিগুলো এর মূল গ্রাহক। বহুল ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ এনক্রিপ্টেড থাকে। ফলে নিরাপদ থাকতে হোয়াটসঅ্যাপে ভরসা রাখেন অনেকে।
ফেসবুক মেসেঞ্জারের ব্যবহারকারী সংখ্যা এখন প্রায় ১৩০ কোটি। তবে ফেসবুক মেসেঞ্জার বা ইনস্টাগ্রামের ডাইরেক্ট মেসেজে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন সুবিধা নেই। ২০২২ সালে এই সুবিধা যুক্ত করার কথা দিয়েছিল ফেসবুক। কিন্তু তারা জানিয়েছে, ২০২৩ সালের আগে এই সুবিধা পাওয়া যাবে না অ্যাপ দুটিতে।
ব্যবহারকারীর সংখ্যার দিক দিয়ে চীনের মেসেজিং অ্যাপ উইচ্যাট আছে তৃতীয় অবস্থানে। তাদের ব্যবহারকারী সংখ্যা ১২৫ কোটি।
পরিশেষে
প্রযুক্তি বিশ্ব খুব দ্রুত বদলায়। কোনো কিছুই দীর্ঘদিন টেকে না। গুটিকয়েক প্রযুক্তি কোম্পানি বাজার নিয়ন্ত্রণ করলেও প্রতিনিয়ত পণ্য ও সেবায় তারা নতুনত্ব এনে চলেছে। আগামী বছরেও নতুন অনেক পণ্য দেখা যাবে। সেবায়ও আসবে পরিবর্তন। বিশ্লেষকদের মতে, মানুষ কী ভাবছে তা নির্ভুলভাবে অনুমান করতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির দাপট বাড়বে সামনের দিনগুলোতে। হয়তো এই পথ ধরেই প্রযুক্তি দুনিয়ায় আসবে নয়া বিপ্লব!
তথ্যসূত্র: ব্যাকলিংকো ডটকম, রয়টার্স, আইজিএন ডটকম, বিজনেস অব অ্যাপস, স্ট্যাটিস্টা ডটকম ও উইডেভস ডটকম
সালতামামির অন্যান্য আয়োজন:

করোনা মহামারির প্রভাবে বদলে গেছে প্রযুক্তি ব্যবহারের ধরন। ২০২০ সালে অনলাইনে কেনাকাটার হার বেড়েছিল ব্যাপকভাবে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স, অনলাইন কোর্স, ভিডিও কনফারেন্সের অ্যাপ জুমের দাপট দেখেছে বিশ্ব। ২০২১ সালেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। নতুন বছরে পা ফেলার আগে চলতি বছর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পাওয়া কিছু প্রযুক্তিপণ্য সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
জুম
আমেরিকান ভিডিও কমিউনিকেশন কোম্পানি জুম যত দ্রুত উত্থান দেখেছে, তার তুলনা হয়তো চলে শুধু রকেটের সঙ্গেই! ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত জুম (অ্যাপটি চালু হয় ২০১৩ সালে) ছিল অচেনা এক সফটওয়্যার কোম্পানি। করোনা মহামারিতে আচমকা সব অফিস-আদালত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জুমের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে অস্বাভাবিক গতিতে। সহজ ইউজার ইন্টারফেসই ছিল এর মূল কারণ। গত বছরের এপ্রিলে জুম জানায়, প্রতিদিন গড়ে ৩০ কোটি মানুষ তাদের সফটওয়্যার ব্যবহার করে সভা করেছে।
২০২০ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে জুমের আয় ছিল ৭০ কোটি ডলার। এ বছর একই প্রান্তিকে তাদের আয় ৮২ কোটি ডলার। তবে আয় বাড়লেও কমেছে শেয়ারের মূল্য। গত বছর নভেম্বরে প্রতিটি শেয়ারের মূল্য ছিল ৫০০ ডলার। কমতে কমতে তা এখন দাঁড়িয়েছে ১৮২ ডলারে। তবু জুমের বার্ষিক মিটিং মিনিট দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়নে। শেয়ারবাজারের কল্যাণে কোম্পানিটির মূলধন এখন ৭৫ বিলিয়ন ডলার। আগামী বছর অনেক প্রতিষ্ঠানই হয়তো হোম অফিসের বদলে কর্মীদের অফিসে এনে ফেলবে। তখন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ও শেয়ারমূল্য দুটোই আরও কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অনলাইনে ব্যবসা
দিন দিন অনলাইনে আমাদের সময় দেওয়ার মাত্রা বেড়েই চলছে। এই পরিবর্তনের ভালো-খারাপ সব দিকই আছে। অনলাইনে সময় কাটানোর প্রবণতাকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই নতুন আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন। অনলাইন থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং ট্রেইনারদের আয়ও বেড়েছে। দক্ষ ট্রেইনাররা তাদের কোর্সে বিদেশি শিক্ষার্থীও পাচ্ছেন। টেকেবল, ইউডেমি, স্কিলশেয়ার ও কোর্সেরার ব্যবসা ফুলে-ফেঁপে উঠছে। টেকেবল থেকে ৪০ হাজার ট্রেইনার আয় করেছেন ১ বিলিয়ন ডলার। কোর্সেরার মূলধন এখন ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। প্ল্যাটফর্মটিতে ৩ হাজারের বেশি কোর্স আছে। শেয়ার মার্কেটের কল্যাণে ইউডেমির মূলধন এখন সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার।
এ ছাড়া সামনের দিনে ই-কমার্স ব্যবসার বাজারও আরও ফুলে-ফেঁপে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২২ সালে ই-কমার্স ব্যবসা থেকে আয় হবে ৫ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ব্যবসা বাড়ানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা সক্রিয় থাকবেন, তাঁদের বিক্রি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ৩২ শতাংশ বেশি।
প্রযুক্তিবিদদের অনুমান, ক্রেতাদের আচরণ ও কেনাকাটার তথ্য বিশ্লেষণে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বাড়বে আগামী দিনে। দাম ঠিক করা ও পণ্য দেখানোর ক্ষেত্রে বিক্রেতারা এআইয়ের সহায়তা পাবে। অন্যদিকে ক্রেতারা নিজস্ব চাহিদা আরও সহজে বোঝাতে পারবেন বিক্রেতাদের। পূর্বাভাস আছে, ২০২২ সালে মোবাইলের মাধ্যমে ৫০ শতাংশের বেশি অনলাইন কেনাকাটা হবে। ভিআর ও এআর প্রযুক্তির সাহায্যে যেকোনো পণ্য ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল থেকে দেখা যাবে। ফলে পণ্যটি কাজে লাগবে কি না, তা সহজেই বোঝা যাবে। আর ২০২৫ সাল নাগাদ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির হার্ডওয়্যারের বাজার হবে ১০৫ বিলিয়ন ডলারের।
নেটফ্লিক্স
২৪ বছর আগে যাত্রা শুরু করেছিল নেটফ্লিক্স। প্রথম দিকে তারা ডিভিডি ভাড়া দিত। ২০১৩ সালে নেটফ্লিক্স কনটেন্ট বানানোর ব্যবসায় নামে। তাদের প্রথম অরিজিনাল সিরিজ হলো আমেরিকান পলিটিক্যাল ড্রামা ‘হাউস অব কার্ডস’।
আমেরিকান এই সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভিসটি বর্তমানে ১৯০টি দেশে দেখা যায়। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত নেটফ্লিক্সের গ্রাহকসংখ্যা ছিল ২১ কোটি ৪০ লাখ।
মহামারিকালীন লকডাউনের প্রভাবে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ কোটি ৪০ লাখ নতুন গ্রাহক জুটেছিল নেটফ্লিক্সের। গ্রাহক বাড়ার এই হার কমার আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে নতুন সাবস্ক্রাইবার যুক্ত হয় আরও ৪৪ লাখ।
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স স্মার্টফোনের জন্য গেমস নিয়ে আসে এ বছরের নভেম্বরে। ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস: ১৯৮৪ ’, ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস ৩: দ্য গেম’, কার্ড ব্লাস্ট, টিটার আপ, শুটিং হোপসসহ ৫টি গেম এনেছে তারা। নেটফ্লিক্স গ্রাহকেরা বিজ্ঞাপন ছাড়াই গেমগুলো খেলতে পারবে।
ডলারের বিপরীতে অনেক দেশের মুদ্রার মান কম হওয়ায় মার্কিনরাই এখন পর্যন্ত নেটফ্লিক্সের সবচেয়ে বিশ্বস্ত গ্রাহক। নেটফ্লিক্সে মার্কিন গ্রাহকের সংখ্যা বর্তমানে ৭ কোটি ৪০ লাখ। সে তুলনায় ভারতীয় গ্রাহকের সংখ্যা ৪৪ লাখ। অবশ্য এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্রাহক ধরতে নিত্যনতুন বাণিজ্যিক কৌশল নিচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মটি। ভারতের বাজার দখলে নিতে সাবস্ক্রিপশন ফি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছে নেটফ্লিক্স।
এ বছর নেটফ্লিক্সের অরিজিনাল কনটেন্টের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার সিরিজ ‘স্কুইড গেম’। প্রথম ৪ সপ্তাহে সিরিজটি দেখেন ১৪ কোটি ২০ লাখ গ্রাহক। সিরিজটি বানাতে খরচ হয় ১৬৮ কোটি টাকা। আর মুনাফা হয় ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
মেটাভার্স
মার্কিন সায়েন্সফিকশন লেখক নিল স্টিফেনসনের একটি উপন্যাসে প্রথমবার মেটাভার্সের কথা লেখা হয়েছিল। ১৯৯২ সালে কল্পিত সেই জগতের দরজা খুলেছিল ‘স্নো ক্র্যাশ’ নামের বইয়ের মাধ্যমে। ৩০ বছর পর এসে মানুষের থ্রিডি অবতারের ধারণা বাস্তব রূপ লাভ করছে। আর সেই সুযোগ আনার ঘোষণা দিয়ে এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় তুলেছেন মার্ক জাকারবার্গ।
বলা হচ্ছে, মেটাভার্সে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, অগমেন্টেড রিয়েলিটি ও ভিডিওর মাধ্যমে ডিজিটাল জীবনযাপন করা যাবে। কেনাকাটা, অফিসের কাজ, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ও খেলাধুলা করা যাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। বিশ্বের অপর প্রান্তে চলতে থাকা যেকোনো সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যোগ দেওয়া যাবে। অর্থাৎ সশরীরে উপস্থিত থাকার প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে।
মেটাভার্স প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রধান শর্ত হলো দ্রুতগতির ইন্টারনেট। মেটার (ফেসবুক) সব ব্যবহারকারীর হাতে দ্রুত গতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট পৌঁছালে এই প্রযুক্তির পূর্ণাঙ্গ রূপ সম্পর্কে ধারণা মিলবে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা। মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ জানিয়েছেন, সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য মেটাভার্সের মূল বিষয়গুলোর উন্নয়ন ঘটাতে আরও ৫ থেকে ১০ বছর সময় লাগবে।
মেটাভার্স প্রযুক্তি নিয়ে শুধু ফেসবুক নয়, সফটওয়্যার নির্মাতা কোম্পানি মাইক্রোসফট, ভিডিও গেম নির্মাতা কোম্পানি এপিক গেমস ও অনলাইন গেইম প্ল্যাটফর্ম রোবোলক্স’ও কাজ করছে।
মাইক্রোসফটের প্রযুক্তির নাম হবে ম্যাশ। তাদের নিজস্ব হলোলেন্স (মিক্সড রিয়েলিটি স্মার্টগ্লাস) ব্যবহারকারীকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও অগমেন্টেড রিয়েলিটিতে নিয়ে যাবে। হেডসেট ছাড়াও সাধারণ টু-ডি মনিটর দিয়ে ভার্চুয়াল কর্মক্ষেত্রে সভা করা যাবে। ক্লাউডভিত্তিক ডাইনামিক ৩৬৫ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ড বিভাগ ও মহাকাশে থাকা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনেও ভার্চুয়ালি যাওয়া যাবে।
মাইক্রোসফট জানিয়েছে, তাদের অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে করপোরেট অফিসের কর্মীরা নিজেদের ডিজিটাল অবতার তৈরি করতে পারবেন। অফিসের জন্য তৈরি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল যেমন স্প্রেডশিট আদান-প্রদান করা যাবে। এই প্রযুক্তির প্রাথমিক রূপ কেমন হবে, তা আগামী বছরের শেষ ভাগে জানা যাবে।
এদিকে ফোর্টনাইট গেম নির্মাতা কোম্পানি এপিক গেমস ইনকরপোরেশনও মেটাভার্স প্রযুক্তির দখল নিতে মরিয়া। কোম্পানিটির সিইও টিম সুইনি জানিয়েছেন, আগামী দশকে মেটাভার্স প্রযুক্তির বাজারমূল্য হবে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে শক্ত অবস্থান তৈরিতে এপিক, রোবোলক্স, মাইক্রোসফট ও ফেসবুকের জন্য আগামী তিন বছর খুব গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক শ কোটি ব্যবহারকারীকে সবাই নিজেদের ছাতার তলে আনতে চাইবে। প্রথম যারা কাজটি করতে পারবে তাদের হাতেই মান নির্ধারণের ভার চলে যাবে। পরিসংখ্যানগত পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে ৫০ কোটি ভিআর সেট বিক্রি হতে পারে।
মেসেজিং অ্যাপের বাজার
এককালে মেসেজিং অ্যাপে শুধু টেক্সট পাঠানো যেত। এখন ভয়েস মেসেজ পাঠানো যায়, চলে ভিডিও চ্যাট। এ ছাড়া গ্রুপ চ্যাটের সুবিধাও যুক্ত হয়েছে। সারা বিশ্বে ২৭৭ কোটি মানুষ বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করছেন। আর ২০২২ সালে এসব অ্যাপের ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৩০০ কোটিতে।
মেসেজিং অ্যাপ ওয়াটসঅ্যাপের ব্যবহারকারী সংখ্যা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। তাদের অ্যাপ ব্যবহার করেন বিশ্বের ২০০ কোটি মানুষ। এর মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যা ৩৯ কোটি। ২০০৯ সালে চালু হওয়া অ্যাপটি এখন পর্যন্ত ৫০০ কোটি বার ডাউনলোড হয়েছে। বিশ্বের ১০০টি দেশে হোয়াটসঅ্যাপ সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাপ। হোয়াটসঅ্যাপ কোনো বিজ্ঞাপন দেখায় না। তাদের মূল আয়ের উৎস হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস, বিভিন্ন কোম্পানিগুলো এর মূল গ্রাহক। বহুল ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ এনক্রিপ্টেড থাকে। ফলে নিরাপদ থাকতে হোয়াটসঅ্যাপে ভরসা রাখেন অনেকে।
ফেসবুক মেসেঞ্জারের ব্যবহারকারী সংখ্যা এখন প্রায় ১৩০ কোটি। তবে ফেসবুক মেসেঞ্জার বা ইনস্টাগ্রামের ডাইরেক্ট মেসেজে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন সুবিধা নেই। ২০২২ সালে এই সুবিধা যুক্ত করার কথা দিয়েছিল ফেসবুক। কিন্তু তারা জানিয়েছে, ২০২৩ সালের আগে এই সুবিধা পাওয়া যাবে না অ্যাপ দুটিতে।
ব্যবহারকারীর সংখ্যার দিক দিয়ে চীনের মেসেজিং অ্যাপ উইচ্যাট আছে তৃতীয় অবস্থানে। তাদের ব্যবহারকারী সংখ্যা ১২৫ কোটি।
পরিশেষে
প্রযুক্তি বিশ্ব খুব দ্রুত বদলায়। কোনো কিছুই দীর্ঘদিন টেকে না। গুটিকয়েক প্রযুক্তি কোম্পানি বাজার নিয়ন্ত্রণ করলেও প্রতিনিয়ত পণ্য ও সেবায় তারা নতুনত্ব এনে চলেছে। আগামী বছরেও নতুন অনেক পণ্য দেখা যাবে। সেবায়ও আসবে পরিবর্তন। বিশ্লেষকদের মতে, মানুষ কী ভাবছে তা নির্ভুলভাবে অনুমান করতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির দাপট বাড়বে সামনের দিনগুলোতে। হয়তো এই পথ ধরেই প্রযুক্তি দুনিয়ায় আসবে নয়া বিপ্লব!
তথ্যসূত্র: ব্যাকলিংকো ডটকম, রয়টার্স, আইজিএন ডটকম, বিজনেস অব অ্যাপস, স্ট্যাটিস্টা ডটকম ও উইডেভস ডটকম
সালতামামির অন্যান্য আয়োজন:

দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
১ দিন আগে
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির...
১ দিন আগে
স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
২ দিন আগে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন আর শুধু প্রযুক্তি খাতেই সীমাবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনাতেও এটি হয়ে উঠছে নতুন ভরসা। বিশেষ করে জেন-জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্মের মধ্যে এআই ব্যবহার করে খরচ নিয়ন্ত্রণ ও সঞ্চয় বাড়ানোর প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এই হার গ্রামাঞ্চলে ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শহরে ৬৪ শতাংশ।
‘ব্যক্তি ও খানা পর্যায়ে জেলাভিত্তিক আইসিটি ব্যবহারের সুযোগ ও প্রয়োগ পরিমাপ’ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করে বিবিএস। এতে পরিবারগুলোয় মোবাইল ফোন, ফিক্সড ফোন, টেলিভিশন, রেডিও ও কম্পিউটার ব্যবহারের চিত্রও উঠে আসে।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে টেলিভিশন, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের হারও। তবে কমেছে স্মার্টফোন ও রেডিওর ব্যবহার।
‘আইসিটি প্রয়োগ ও ব্যবহার জরিপ’-এ পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী এবং শহর-পল্লি অঞ্চল অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে আইসিটির সূচকসমূহ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। সারা দেশে ২ হাজার ৫৬৮টি নির্বাচিত নমুনা এলাকায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২৪টি করে মোট ৬১ হাজার ৬৩২টি খানায় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
জরিপের বিষয়ে বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, জরিপের খানা ও ব্যক্তি পর্যায়ে আইসিটির সূচকগুলো আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) আলোকে নেওয়া হয়েছে। জরিপে খানায় রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ইন্টারনেটের এক্সেস এবং ব্যক্তি পর্যায়ে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের ব্যবহার, মোবাইল ফোনের মালিকানার ফলাফল প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের অনেক মানুষ ডিজিটাল সেবার বাইরে। এই জরিপে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) এর আওতায় আনা হলে পরিসংখ্যান হয়তো পাল্টাবে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সচেতনতার অভাবে এখনো অর্ধেক মানুষ ডিজিটাল সিস্টেমের আওতার বাইরে রয়েছে, যাদের বেশির ভাগ গ্রামাঞ্চল এবং পার্বত্য এলাকার। তারা ডিজিটাল সেবাকে ভয় পায়।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে রয়েছে স্মার্টফোন। স্মার্টফোন ব্যবহারে শহরাঞ্চল এগিয়ে। শহরে ৮০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং গ্রামে ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার স্মার্টফোন ব্যবহার করে। এ ছাড়া ফিক্সড ফোন ব্যবহার করে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার। কম্পিউটার ব্যবহার করে ৯ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার। আর ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
অন্যদিকে, ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে টেলিভিশন দেখা হয় এবং ১৫ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করে বলে জরিপে উঠে এসেছে। আর বিদ্যুৎ সুবিধা রয়েছে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে।
এর আগের বছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশের ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিল। এর মধ্যে স্মার্টফোন ছিল ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ১ শতাংশ বাড়লেও স্মার্টফোনের ব্যবহার কমেছে দশমিক ৪ শতাংশ।
২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে পারিবারিকভাবে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ছিল ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখান থেকে এই হার দশমিক ২ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম-শহরভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলে ১৪ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করলেও শহরে এই হার ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ।
জরিপের ব্যক্তি পর্যায়ের বিশ্লেষণে দেখানো হয়, ২০২৫ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছে, যা এক বছর আগে ছিল ৭৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে মোবাইল ব্যবহারকারী বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নারী ৭৮ দশমিক ৮ শতাংশ।
তবে ব্যক্তিমালিকানাধীন মোবাইল ফোনের ব্যবহার কিছুটা কমেছে। ২০২৪ সালে যেখানে এ হার ছিল ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশে। কম্পিউটার ব্যবহারের হারও সামান্য কমে ১০ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমেছে। বিপরীতে, ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ২০২৪ সালে ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
বিবিএস জানায়, এই জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পরিমাপ এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) জন্য আইসিটি সূচক সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এই হার গ্রামাঞ্চলে ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শহরে ৬৪ শতাংশ।
‘ব্যক্তি ও খানা পর্যায়ে জেলাভিত্তিক আইসিটি ব্যবহারের সুযোগ ও প্রয়োগ পরিমাপ’ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করে বিবিএস। এতে পরিবারগুলোয় মোবাইল ফোন, ফিক্সড ফোন, টেলিভিশন, রেডিও ও কম্পিউটার ব্যবহারের চিত্রও উঠে আসে।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে টেলিভিশন, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের হারও। তবে কমেছে স্মার্টফোন ও রেডিওর ব্যবহার।
‘আইসিটি প্রয়োগ ও ব্যবহার জরিপ’-এ পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী এবং শহর-পল্লি অঞ্চল অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে আইসিটির সূচকসমূহ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। সারা দেশে ২ হাজার ৫৬৮টি নির্বাচিত নমুনা এলাকায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২৪টি করে মোট ৬১ হাজার ৬৩২টি খানায় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
জরিপের বিষয়ে বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, জরিপের খানা ও ব্যক্তি পর্যায়ে আইসিটির সূচকগুলো আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) আলোকে নেওয়া হয়েছে। জরিপে খানায় রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ইন্টারনেটের এক্সেস এবং ব্যক্তি পর্যায়ে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের ব্যবহার, মোবাইল ফোনের মালিকানার ফলাফল প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের অনেক মানুষ ডিজিটাল সেবার বাইরে। এই জরিপে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) এর আওতায় আনা হলে পরিসংখ্যান হয়তো পাল্টাবে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সচেতনতার অভাবে এখনো অর্ধেক মানুষ ডিজিটাল সিস্টেমের আওতার বাইরে রয়েছে, যাদের বেশির ভাগ গ্রামাঞ্চল এবং পার্বত্য এলাকার। তারা ডিজিটাল সেবাকে ভয় পায়।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে রয়েছে স্মার্টফোন। স্মার্টফোন ব্যবহারে শহরাঞ্চল এগিয়ে। শহরে ৮০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং গ্রামে ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার স্মার্টফোন ব্যবহার করে। এ ছাড়া ফিক্সড ফোন ব্যবহার করে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার। কম্পিউটার ব্যবহার করে ৯ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার। আর ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
অন্যদিকে, ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে টেলিভিশন দেখা হয় এবং ১৫ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করে বলে জরিপে উঠে এসেছে। আর বিদ্যুৎ সুবিধা রয়েছে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে।
এর আগের বছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশের ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিল। এর মধ্যে স্মার্টফোন ছিল ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ১ শতাংশ বাড়লেও স্মার্টফোনের ব্যবহার কমেছে দশমিক ৪ শতাংশ।
২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে পারিবারিকভাবে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ছিল ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখান থেকে এই হার দশমিক ২ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম-শহরভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলে ১৪ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করলেও শহরে এই হার ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ।
জরিপের ব্যক্তি পর্যায়ের বিশ্লেষণে দেখানো হয়, ২০২৫ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছে, যা এক বছর আগে ছিল ৭৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে মোবাইল ব্যবহারকারী বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নারী ৭৮ দশমিক ৮ শতাংশ।
তবে ব্যক্তিমালিকানাধীন মোবাইল ফোনের ব্যবহার কিছুটা কমেছে। ২০২৪ সালে যেখানে এ হার ছিল ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশে। কম্পিউটার ব্যবহারের হারও সামান্য কমে ১০ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমেছে। বিপরীতে, ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ২০২৪ সালে ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
বিবিএস জানায়, এই জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পরিমাপ এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) জন্য আইসিটি সূচক সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

করোনা মহামারির প্রভাবে বদলে গেছে প্রযুক্তি ব্যবহারের ধরন। ২০২০ সালে অনলাইনে কেনাকাটার হার বেড়েছিল ব্যাপকভাবে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স, অনলাইন কোর্স, ভিডিও কনফারেন্সের অ্যাপ জুমের দাপট দেখেছে বিশ্ব। ২০২১ সালেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। নতুন বছরে পা ফেলার আগে চলতি বছর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পাওয়া কিছু
২৭ ডিসেম্বর ২০২১
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির...
১ দিন আগে
স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
২ দিন আগে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন আর শুধু প্রযুক্তি খাতেই সীমাবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনাতেও এটি হয়ে উঠছে নতুন ভরসা। বিশেষ করে জেন-জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্মের মধ্যে এআই ব্যবহার করে খরচ নিয়ন্ত্রণ ও সঞ্চয় বাড়ানোর প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া।
রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার ‘বিল্ডিং ট্রাস্ট অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি থ্রু ডেটা গভর্ন্যান্স’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (ইডিজিই প্রকল্প) এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির অভাব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
তৈয়্যব জানান, অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে সাইবার সেফটি, ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা ও জাতীয় ডেটা গভর্ন্যান্স—এই তিন আইনি ভিত্তি গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে, যা ভবিষ্যৎ ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারের (ডিপিআই) মূল স্তম্ভ হবে। ভবিষ্যতে প্রতিটি নাগরিকের একটি ডিজিটাল ডেটা ওয়ালেট থাকবে; যেখানে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তথ্য সুরক্ষিত থাকবে এবং নাগরিকের সম্মতিতেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডেটা ব্যবহার করা যাবে।
সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, কার্যকর ডেটা গভর্ন্যান্স কেবল নীতিমালা প্রণয়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এর জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, আন্তখাত সমন্বয় এবং সুস্পষ্ট জবাবদিহি কাঠামো। সরকারি ও বেসরকারি খাতে ডিজিটাল সেবার পরিসর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বশীল ডেটা ব্যবহার, নিরাপত্তা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জনআস্থা অর্জন ও টেকসই ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সম্মেলনে তিনটি আলাদা অধিবেশনে ডেটা সুরক্ষা নীতিমালার বাস্তব প্রয়োগ, আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে বাংলাদেশের ডেটা ব্যবস্থাপনার তুলনা এবং ডেটা ব্যবস্থাপনায় পেশাদার হিসাববিদদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়।
সম্মেলনে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের (আইএফএসি) সভাপতি জ্যঁ বোকু, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান অঞ্চলের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যঁ পেসমেসহ সরকারি নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, পেশাদার হিসাববিদ, আইন ও প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া।
রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার ‘বিল্ডিং ট্রাস্ট অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি থ্রু ডেটা গভর্ন্যান্স’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (ইডিজিই প্রকল্প) এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির অভাব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
তৈয়্যব জানান, অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে সাইবার সেফটি, ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা ও জাতীয় ডেটা গভর্ন্যান্স—এই তিন আইনি ভিত্তি গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে, যা ভবিষ্যৎ ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারের (ডিপিআই) মূল স্তম্ভ হবে। ভবিষ্যতে প্রতিটি নাগরিকের একটি ডিজিটাল ডেটা ওয়ালেট থাকবে; যেখানে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তথ্য সুরক্ষিত থাকবে এবং নাগরিকের সম্মতিতেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডেটা ব্যবহার করা যাবে।
সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, কার্যকর ডেটা গভর্ন্যান্স কেবল নীতিমালা প্রণয়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এর জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, আন্তখাত সমন্বয় এবং সুস্পষ্ট জবাবদিহি কাঠামো। সরকারি ও বেসরকারি খাতে ডিজিটাল সেবার পরিসর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বশীল ডেটা ব্যবহার, নিরাপত্তা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জনআস্থা অর্জন ও টেকসই ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সম্মেলনে তিনটি আলাদা অধিবেশনে ডেটা সুরক্ষা নীতিমালার বাস্তব প্রয়োগ, আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে বাংলাদেশের ডেটা ব্যবস্থাপনার তুলনা এবং ডেটা ব্যবস্থাপনায় পেশাদার হিসাববিদদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়।
সম্মেলনে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের (আইএফএসি) সভাপতি জ্যঁ বোকু, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান অঞ্চলের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যঁ পেসমেসহ সরকারি নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, পেশাদার হিসাববিদ, আইন ও প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

করোনা মহামারির প্রভাবে বদলে গেছে প্রযুক্তি ব্যবহারের ধরন। ২০২০ সালে অনলাইনে কেনাকাটার হার বেড়েছিল ব্যাপকভাবে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স, অনলাইন কোর্স, ভিডিও কনফারেন্সের অ্যাপ জুমের দাপট দেখেছে বিশ্ব। ২০২১ সালেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। নতুন বছরে পা ফেলার আগে চলতি বছর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পাওয়া কিছু
২৭ ডিসেম্বর ২০২১
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
১ দিন আগে
স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
২ দিন আগে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন আর শুধু প্রযুক্তি খাতেই সীমাবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনাতেও এটি হয়ে উঠছে নতুন ভরসা। বিশেষ করে জেন-জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্মের মধ্যে এআই ব্যবহার করে খরচ নিয়ন্ত্রণ ও সঞ্চয় বাড়ানোর প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
ফোনটিতে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বিজয়ী ইন্ডাস্ট্রির সর্বোচ্চ ওয়াটার অ্যান্ড ডাস্ট প্রোটেকশন স্ট্যান্ডার্ড—আইপি ৬৯ প্রো রেটিং রয়েছে, যা এটিকে ৬০ দিন পর্যন্ত পানির নিচে টিকে থাকতে সাহায্য করে।
এতে রয়েছে ৬.৮ ইঞ্চি অ্যামোলেড ডিসপ্লে, যার রিফ্রেশ রেট সুপার-স্মুথ ১৪৪ হার্জ এবং পিক ব্রাইটনেস ১,২০০ নিট।
ডিভাইসটিতে স্ন্যাপড্রাগন ৬৮৫ ফোরজি প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। ফটোগ্রাফির জন্য পেছনে ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা এবং সামনে ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা রয়েছে।
রিয়েলমি সি৮৫ সোয়ান ব্ল্যাক ও কিংফিশার ব্লু রঙে দুইটি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে: ৬ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ১৮,৯৯৯ টাকা। ৮ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ২০,৯৯৯ টাকা।

স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
ফোনটিতে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বিজয়ী ইন্ডাস্ট্রির সর্বোচ্চ ওয়াটার অ্যান্ড ডাস্ট প্রোটেকশন স্ট্যান্ডার্ড—আইপি ৬৯ প্রো রেটিং রয়েছে, যা এটিকে ৬০ দিন পর্যন্ত পানির নিচে টিকে থাকতে সাহায্য করে।
এতে রয়েছে ৬.৮ ইঞ্চি অ্যামোলেড ডিসপ্লে, যার রিফ্রেশ রেট সুপার-স্মুথ ১৪৪ হার্জ এবং পিক ব্রাইটনেস ১,২০০ নিট।
ডিভাইসটিতে স্ন্যাপড্রাগন ৬৮৫ ফোরজি প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। ফটোগ্রাফির জন্য পেছনে ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা এবং সামনে ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা রয়েছে।
রিয়েলমি সি৮৫ সোয়ান ব্ল্যাক ও কিংফিশার ব্লু রঙে দুইটি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে: ৬ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ১৮,৯৯৯ টাকা। ৮ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ২০,৯৯৯ টাকা।

করোনা মহামারির প্রভাবে বদলে গেছে প্রযুক্তি ব্যবহারের ধরন। ২০২০ সালে অনলাইনে কেনাকাটার হার বেড়েছিল ব্যাপকভাবে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স, অনলাইন কোর্স, ভিডিও কনফারেন্সের অ্যাপ জুমের দাপট দেখেছে বিশ্ব। ২০২১ সালেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। নতুন বছরে পা ফেলার আগে চলতি বছর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পাওয়া কিছু
২৭ ডিসেম্বর ২০২১
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
১ দিন আগে
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির...
১ দিন আগে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন আর শুধু প্রযুক্তি খাতেই সীমাবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনাতেও এটি হয়ে উঠছে নতুন ভরসা। বিশেষ করে জেন-জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্মের মধ্যে এআই ব্যবহার করে খরচ নিয়ন্ত্রণ ও সঞ্চয় বাড়ানোর প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন আর শুধু প্রযুক্তি খাতেই সীমাবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনাতেও এটি হয়ে উঠছে নতুন ভরসা। বিশেষ করে জেন-জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্মের মধ্যে এআই ব্যবহার করে খরচ নিয়ন্ত্রণ ও সঞ্চয় বাড়ানোর প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। এরই একটি উদাহরণ কানাডার অন্টারিওভিত্তিক একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা তাকি ওং।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ২৭ বছর বয়সী তাকি ওং ব্যস্ত পেশাজীবীদের জন্য এআই টুল তৈরি করেন। তবে নিজের ব্যক্তিগত অর্থ পরিচালনায়ও তিনি এআইয়ের ওপর ভরসা রাখেন। গুগলের জেমিনি এআই মডেলকে তিনি নিজের ‘২৪ ঘণ্টার ব্যক্তিগত আর্থিক উপদেষ্টা’ বলে মনে করেন।
ওং জানান, প্রতি মাসে তিনি নিজের ক্রেডিট কার্ড ও অন্যান্য খরচের হিসাব নিজে হাতে এআইয়ে ইনপুট দেন। এরপর এআই সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে তাঁকে জানায় কোথায় অপ্রয়োজনীয় খরচ হচ্ছে।
ওংয়ের ভাষায়, এআই কখনো বলে দেয়—‘তুমি হয়তো রেস্তোরাঁয় বেশি খাচ্ছ’, আবার কখনো সতর্ক করে—‘এই সাবস্ক্রিপশনগুলো অপ্রয়োজনীয়।’ এই ধরনের বিশ্লেষণের ফলেই তিনি বাইরে খাওয়ার খরচ মাসে ৬০০ ডলার থেকে কমিয়ে ২০০ ডলারে নামাতে পেরেছেন। একইভাবে টিভি ও অন্যান্য সাবস্ক্রিপশনের খরচ ৩০০ ডলার থেকে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫০ ডলারে।
তবে সুবিধার পাশাপাশি সতর্কতাও অবলম্বন করছেন তিনি। ওং স্পষ্ট করে বলেন, তিনি কখনোই এআইয়ের সঙ্গে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যুক্ত করেন না। শুধুমাত্র মোট খরচের সংখ্যা বা সামগ্রিক তথ্যই তিনি শেয়ার করেন, যাতে ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষিত থাকে।
এই প্রবণতা শুধু ওংয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এআই ব্যবহারকারী আমেরিকানদের একটি বড় অংশ আর্থিক পরামর্শ নিতে এআইয়ের ওপর নির্ভর করছে। এঁদের মধ্যে জেন জি ও মিলেনিয়ালদের হার ৮২ শতাংশ। যুক্তরাজ্যেও প্রায় তিনজনের একজন নিয়মিত ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনায় এআই ব্যবহার করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এআই সময় বাঁচাতে ও খরচের দুর্বল জায়গা চিহ্নিত করতে সহায়ক হলেও সব পরামর্শ যাচাই করে নেওয়া জরুরি। পাশাপাশি ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকাই সবচেয়ে নিরাপদ পথ।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন আর শুধু প্রযুক্তি খাতেই সীমাবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনাতেও এটি হয়ে উঠছে নতুন ভরসা। বিশেষ করে জেন-জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্মের মধ্যে এআই ব্যবহার করে খরচ নিয়ন্ত্রণ ও সঞ্চয় বাড়ানোর প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। এরই একটি উদাহরণ কানাডার অন্টারিওভিত্তিক একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা তাকি ওং।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ২৭ বছর বয়সী তাকি ওং ব্যস্ত পেশাজীবীদের জন্য এআই টুল তৈরি করেন। তবে নিজের ব্যক্তিগত অর্থ পরিচালনায়ও তিনি এআইয়ের ওপর ভরসা রাখেন। গুগলের জেমিনি এআই মডেলকে তিনি নিজের ‘২৪ ঘণ্টার ব্যক্তিগত আর্থিক উপদেষ্টা’ বলে মনে করেন।
ওং জানান, প্রতি মাসে তিনি নিজের ক্রেডিট কার্ড ও অন্যান্য খরচের হিসাব নিজে হাতে এআইয়ে ইনপুট দেন। এরপর এআই সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে তাঁকে জানায় কোথায় অপ্রয়োজনীয় খরচ হচ্ছে।
ওংয়ের ভাষায়, এআই কখনো বলে দেয়—‘তুমি হয়তো রেস্তোরাঁয় বেশি খাচ্ছ’, আবার কখনো সতর্ক করে—‘এই সাবস্ক্রিপশনগুলো অপ্রয়োজনীয়।’ এই ধরনের বিশ্লেষণের ফলেই তিনি বাইরে খাওয়ার খরচ মাসে ৬০০ ডলার থেকে কমিয়ে ২০০ ডলারে নামাতে পেরেছেন। একইভাবে টিভি ও অন্যান্য সাবস্ক্রিপশনের খরচ ৩০০ ডলার থেকে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫০ ডলারে।
তবে সুবিধার পাশাপাশি সতর্কতাও অবলম্বন করছেন তিনি। ওং স্পষ্ট করে বলেন, তিনি কখনোই এআইয়ের সঙ্গে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যুক্ত করেন না। শুধুমাত্র মোট খরচের সংখ্যা বা সামগ্রিক তথ্যই তিনি শেয়ার করেন, যাতে ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষিত থাকে।
এই প্রবণতা শুধু ওংয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এআই ব্যবহারকারী আমেরিকানদের একটি বড় অংশ আর্থিক পরামর্শ নিতে এআইয়ের ওপর নির্ভর করছে। এঁদের মধ্যে জেন জি ও মিলেনিয়ালদের হার ৮২ শতাংশ। যুক্তরাজ্যেও প্রায় তিনজনের একজন নিয়মিত ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনায় এআই ব্যবহার করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এআই সময় বাঁচাতে ও খরচের দুর্বল জায়গা চিহ্নিত করতে সহায়ক হলেও সব পরামর্শ যাচাই করে নেওয়া জরুরি। পাশাপাশি ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকাই সবচেয়ে নিরাপদ পথ।

করোনা মহামারির প্রভাবে বদলে গেছে প্রযুক্তি ব্যবহারের ধরন। ২০২০ সালে অনলাইনে কেনাকাটার হার বেড়েছিল ব্যাপকভাবে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স, অনলাইন কোর্স, ভিডিও কনফারেন্সের অ্যাপ জুমের দাপট দেখেছে বিশ্ব। ২০২১ সালেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। নতুন বছরে পা ফেলার আগে চলতি বছর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পাওয়া কিছু
২৭ ডিসেম্বর ২০২১
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
১ দিন আগে
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির...
১ দিন আগে
স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
২ দিন আগে