এ কে এম শামসুদ্দিন

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ক্র্যাকডাউনের পর পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হলেও মুক্তিযোদ্ধারা আগস্টের আগে নিজেদের পূর্ণাঙ্গরূপে সংগঠিত করতে পারেননি। প্রবাসী সরকার গঠনের পর সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে সেক্টরভিত্তিক যুদ্ধ শুরু হলেও দেশের বিভিন্ন অংশে স্থানীয় পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা নিজেরা সংগঠিত হয়ে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। এলাকাভিত্তিক গড়ে ওঠা মুক্তিযোদ্ধাদের এসব দল আঞ্চলিক বাহিনী হিসেবেই পরিচিত। এসব বাহিনী ভারত সরকার, বাংলাদেশ সরকার কিংবা সেক্টর হেডকোয়ার্টার্সের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থেকে এবং তাদের কাছ থেকে কোনো ধরনের সমর্থন বা সাহায্য ছাড়াই নিজ উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল। মুক্তিযুদ্ধকালীন এসব বাহিনীর সদস্যরা স্থানীয় লোকজনকে মোটিভেট করে, তাঁদের মনোবল চাঙা করে আঞ্চলিক বাহিনীতে যোগদানে উৎসাহিত করেছিলেন। সম্পূর্ণ ব্যক্তি-প্রচেষ্টায় স্থানীয় লোকজনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় এসব বাহিনী শুধু গড়েই ওঠেনি; মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকে দেশ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত দেশের মাটিতে থেকেই পাকিস্তানি হায়েনা ও এ-দেশীয় দালালদের বিরুদ্ধে তারা যুদ্ধ চালিয়ে গেছে। এই বাহিনীর প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও যুদ্ধের রসদ স্থানীয়ভাবেই জোগান বা সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। হানাদারদের সঙ্গে যুদ্ধ করে দখল করা অস্ত্র ও রসদই ছিল তাদের অস্ত্র জোগানের মূল উৎস। এসব আঞ্চলিক বাহিনীর মধ্যে কাদেরিয়া বাহিনী, হেমায়েত বাহিনী, আকবর বাহিনী, লতিফ মির্জা বাহিনী, জিয়া বাহিনী ও বাতেন বাহিনীর নাম বেশি শোনা যায়। এ ছাড়াও অনেক ক্ষুদ্র মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপ ছিল, যারা সেক্টর বা সাব-সেক্টরের বাইরে থেকে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে গেছে।
ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং তাদের দেওয়া অস্ত্র নিয়ে সেক্টরের অধীন থেকেই যুদ্ধ করেছেন—এমন অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন, যাঁরা নিজ গুণাবলি ও সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে পাকিস্তানি বাহিনী ও স্থানীয় দালালদের নাস্তানাবুদ করে তুলেছিলেন। উপর্যুপরি আক্রমণ করে শত্রুর অপারেশনাল ও লজিস্টিকস মুভমেন্টও বিপজ্জনক করে তুলেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালে সুনামগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি দাসের ‘দাস পার্টি’ এবং দিনাজপুরের ‘জর্জ বাহিনী’ এর মধ্যে অন্যতম। মুক্তিযুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি দাস বীর বিক্রম ১৯৭১ সালের ১৬ নভেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ সমরে নিহত হয়েছিলেন। মৃত্যুর পর তাঁর মৃতদেহের ওপর যে পৈশাচিক আচরণ করা হয়েছিল, তা সত্যিই অবর্ণনীয়। জগৎজ্যোতি প্রকৃত অর্থেই একজন সাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।
তিনি বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত যোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত একটি চৌকস গেরিলা দলের কমান্ডার ছিলেন। তাঁর নামের শেষাংশ নিয়েই তাঁদের এ দলটির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘দাস পার্টি’। মুক্তিযুদ্ধকালীন মাত্র ৩৬ সদস্য নিয়ে গঠিত দাস পার্টি উল্লিখিত এলাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর প্রচণ্ড প্রভাব বিস্তার করতে সমর্থ হয়েছিল। ভৈরব-সুনামগঞ্জ নৌপথটি ছিল পাকিস্তানিদের লজিস্টিকস সাপ্লাই রুট। দাস পার্টির অব্যাহত অভিযানের মুখে পাকিস্তানিরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত নৌচলাচল বন্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছিল। জগৎজ্যোতি যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে দিরাই, শাল্লা, রানীগঞ্জ ও কাদিরগঞ্জ এলাকায় সফল অভিযান চালিয়ে অসংখ্য রাজাকার সদস্যকে আটক করেন। সত্যিকার অর্থেই গেরিলাযুদ্ধবিদ্যায় তিনি ছিলেন পারদর্শী। একক চেষ্টায় মাত্র একটি হালকা মেশিনগান নিয়ে তিনি জামালগঞ্জ থানা দখল করে নেন। মাত্র এক সেকশন (১০-১২ জন) গেরিলা যোদ্ধা নিয়ে তিনি শ্রীপুর ও খালিয়াজুরী শত্রুমুক্ত করেন। মোটকথা, মুক্তিযুদ্ধকালে বিস্তীর্ণ ভাটি অঞ্চলে জগৎজ্যোতি ও তাঁর দাস পার্টি পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও রাজাকারদের কাছে মূর্তিমান এক আতঙ্কের নাম ছিল।
বিস্মৃতপ্রায় এমনই এক মুক্তিযোদ্ধার নাম জর্জ জে এম দাস। যাঁর নেতৃত্বে স্বতন্ত্র একটি দল দিনাজপুরে বেশ দাপটের সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলাযুদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধে উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছে। তাঁর নামে নাম ‘জর্জ বাহিনী’র তিনিই ছিলেন প্রধান। তিনি তৎকালীন ইপিআরের একজন সাবেক সদস্য। ১১ বছরের চাকরিজীবন শেষে শারীরিক অসুস্থতার জন্য ল্যান্স করপোরাল হিসেবে অবসর নেন। তিনি অস্ত্রচালনা প্রশিক্ষণ, ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিলেন। এ কারণে তিনি এক্সপ্লোসিভ সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখতেন, যা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বিশেষ কাজেও লেগেছে। এই অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্ম দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলায়। তাঁর পিতার নাম পিটার ডিসি দাস। জর্জ দাস সবার বড়। তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে চার ছোট ভাই—জেমস এম দাস, রবার্ট আর এন দাস, জন এস কে দাস ও অ্যান্টনি এন দাসও মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। একই পরিবারের সব সন্তান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে এক অন্যান্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছিলেন তাঁরা।
১৯৭১ সালের মার্চ মাসের প্রথম থেকেই জর্জ দাস স্বাধীনতাসংগ্রামে জড়িয়ে পড়েন। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে দিনাজপুরের তরুণদের অস্ত্র প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর দিনাজপুরে রাজনৈতিক নেতারা সিদ্ধান্ত নেন জেলার তরুণদের অস্ত্র প্রশিক্ষণের। সে সময় আনুমানিক ৫০০ তরুণকে বিভিন্ন পর্বে গোপনে অস্ত্রচালনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। জর্জ দাসকে তখন সেই প্রশিক্ষণের সার্বিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। জর্জ দাস নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে এই তরুণদের প্রশিক্ষণ দেন। উল্লেখ্য, জর্জ দাসের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অধিকাংশ তরুণই পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
ইপিআরের সাবেক সদস্য হিসেবে দিনাজপুরের কুঠিবাড়িতে ইপিআর সেক্টর হেডকোয়ার্টার্সের বাঙালি সৈনিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল জর্জ দাসের। তখন সেখানকার বাঙালি জোয়ানদের মধ্যে সুবেদার আরব আলী, হাবিলদার ভুলু, হাবিলদার আবু সাঈদ, হাবিলদার নাজেম জর্জের মাধ্যমে দিনাজপুরের স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। ২৫ মার্চ ঢাকায় ক্র্যাকডাউনের পর থেকে কুঠিবাড়িতে অবস্থিত বাঙালি জোয়ানরা অস্ত্রাগারের অস্ত্র লুট করে বিদ্রোহ করার পরিকল্পনা করেন। তাঁদের এই পরিকল্পনায় জর্জ দাসও তাঁর এক ভাইসহ শামিল হন। পরিকল্পনা মোতাবেক ইপিআরের সদস্যরা অস্ত্র লুট করে বিদ্রোহ করলে, জর্জ দাস স্থানীয় বাঙালি তরুণদের একত্র করে এই বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করবেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৭ মার্চ বেলা ৩-৪টার মধ্যে অবাঙালি জোয়ানরা কিছু বোঝার আগেই প্রচণ্ড গোলাগুলির মাধ্যমে ক্যাম্প দখল করে নেন এবং ক্যাম্পে অবস্থিত সব অবাঙালি সদস্যকে হত্যা করেন। জর্জ পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তাঁর দলবল নিয়ে বিদ্রোহে যোগ দেন এবং কুঠিবাড়ির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে বাঙালি জোয়ানদের সাহায্য করেন। কুঠিবাড়ি বিদ্রোহের পর ইপিআর সদস্য ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের অব্যাহত চাপে পাকিস্তানিরা দিনাজপুর ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। দিনাজপুর ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত শত্রুমুক্ত ছিল। ১২ এপ্রিল সৈয়দপুর সেনানিবাস থেকে সাঁজোয়া গাড়ি ও ট্যাংক নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পাকিস্তানিরা আক্রমণ করে। একই দিন দিনাজপুরের দশমাইল এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই হয়। জর্জ দাসও জীবনবাজি রেখে তাঁর দলবল নিয়ে শত্রুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু শত্রুর ট্যাংক, মর্টার ও কামানের গোলাবর্ষণের মুখে টিকতে না পেরে পিছু হটেন এবং শেষ পর্যন্ত রামচন্দ্রপুর ও কিশোরগঞ্জ বর্ডার আউট পোস্ট (বিওপি) হয়ে ভারতের রাধিকাপুরে আশ্রয় নেন।
ভারতে যাওয়ার পর জর্জ দাসকে ৬ নম্বর সেক্টরের অধীন শিববাড়ি ক্যাম্পের ইনচার্জ করা হয়। তিনি শিববাড়ি ইয়ুথ ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব পান। জর্জ দাসের গেরিলা ট্রেনিং কৌশল ছিল ব্যতিক্রমী। তাঁর সাংগঠনিক তৎপরতা, মোটিভেশন, ব্যক্তিগত আচরণ ও সাহসিকতার জন্য শিববাড়ি ক্যাম্পে সবার প্রিয় নেতায় পরিণত হন। জর্জ আনুমানিক ৪০০ মুক্তিযোদ্ধার সমন্বয়ে জর্জ বাহিনী গড়ে তোলেন। তাঁর মেজ ভাই জেমস এন দাস, সেজ ভাই রবার্ট আর এন দাসও তাঁর এই বাহিনীর সদস্য ছিলেন। টানা নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে জর্জ দাস কুঠিবাড়ি যুদ্ধসহ, দশমাইলের যুদ্ধ, বিরল, খানপুর, গোয়ালবাড়ি, ধর্মপুর, জামালপুর, হাকিমপুর, রামসাগর ও সরস্বতী এলাকায় শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন।
জর্জ দাস কোনো সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। তিনি মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগ থেকে যুবকদের সংগঠিত করে অস্ত্র চালনা প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তিনি যেহেতু ব্যাটল ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ারিং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি ছিলেন, এ জন্য দখলদার বাহিনীর পুঁতে রাখা স্থলমাইন অপসারণের বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্বটিও তাঁকে পালন করতে হয়েছে। স্বাধীনতার পর অসীম ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে দিনের পর দিন দিনাজপুরের বিভিন্ন স্থানে পুঁতে রাখা স্থলমাইন অপসারণের কাজটি তিনি করেছেন। যে স্বপ্ন ও উদ্দেশ্য নিয়ে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বাধীনতাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন; স্বাধীনতার পর তাঁর সেই স্বপ্ন যেন সুবিধাভোগী ক্ষমতালোভীদের পায়ের নিচে পিষ্ট হয়েছে।
এই অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধার জীবনের শেষ পরিণতি ভালো ছিল না। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদানের যোগ্য স্বীকৃতি তিনি পাননি; বরং দারিদ্র্যের কশাঘাতে জীবন হয়েছে জর্জরিত। অভাব-অনটনে কোনোরকমে জীবন কাটিয়েছেন। বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে অনেকটা বিনা চিকিৎসায় জীবনের কাছে পরাজয় মেনে নিয়েছেন এই বীর যোদ্ধা। আমরা যাঁরা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত বড়াই করি, তাঁরা জর্জ দাসের মতো মুক্তিযোদ্ধাদের নাম কতজনই-বা জানি। অনেকে হয়তো তাঁদের নামও শোনেননি। আমরা এখন শুধু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথার ফুলঝুরি ফোটাতেই ব্যস্ত! মনে রাখতে হবে, প্রান্তিক এই যোদ্ধাদের প্রকৃত মর্যাদা দিতে যদি না পারি, তাহলে গর্বিত নাগরিক হিসেবে আমাদের মর্যাদাই-বা থাকে কোথায়?
এ কে এম শামসুদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ক্র্যাকডাউনের পর পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হলেও মুক্তিযোদ্ধারা আগস্টের আগে নিজেদের পূর্ণাঙ্গরূপে সংগঠিত করতে পারেননি। প্রবাসী সরকার গঠনের পর সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে সেক্টরভিত্তিক যুদ্ধ শুরু হলেও দেশের বিভিন্ন অংশে স্থানীয় পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা নিজেরা সংগঠিত হয়ে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। এলাকাভিত্তিক গড়ে ওঠা মুক্তিযোদ্ধাদের এসব দল আঞ্চলিক বাহিনী হিসেবেই পরিচিত। এসব বাহিনী ভারত সরকার, বাংলাদেশ সরকার কিংবা সেক্টর হেডকোয়ার্টার্সের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থেকে এবং তাদের কাছ থেকে কোনো ধরনের সমর্থন বা সাহায্য ছাড়াই নিজ উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল। মুক্তিযুদ্ধকালীন এসব বাহিনীর সদস্যরা স্থানীয় লোকজনকে মোটিভেট করে, তাঁদের মনোবল চাঙা করে আঞ্চলিক বাহিনীতে যোগদানে উৎসাহিত করেছিলেন। সম্পূর্ণ ব্যক্তি-প্রচেষ্টায় স্থানীয় লোকজনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় এসব বাহিনী শুধু গড়েই ওঠেনি; মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকে দেশ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত দেশের মাটিতে থেকেই পাকিস্তানি হায়েনা ও এ-দেশীয় দালালদের বিরুদ্ধে তারা যুদ্ধ চালিয়ে গেছে। এই বাহিনীর প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও যুদ্ধের রসদ স্থানীয়ভাবেই জোগান বা সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। হানাদারদের সঙ্গে যুদ্ধ করে দখল করা অস্ত্র ও রসদই ছিল তাদের অস্ত্র জোগানের মূল উৎস। এসব আঞ্চলিক বাহিনীর মধ্যে কাদেরিয়া বাহিনী, হেমায়েত বাহিনী, আকবর বাহিনী, লতিফ মির্জা বাহিনী, জিয়া বাহিনী ও বাতেন বাহিনীর নাম বেশি শোনা যায়। এ ছাড়াও অনেক ক্ষুদ্র মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপ ছিল, যারা সেক্টর বা সাব-সেক্টরের বাইরে থেকে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে গেছে।
ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং তাদের দেওয়া অস্ত্র নিয়ে সেক্টরের অধীন থেকেই যুদ্ধ করেছেন—এমন অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন, যাঁরা নিজ গুণাবলি ও সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে পাকিস্তানি বাহিনী ও স্থানীয় দালালদের নাস্তানাবুদ করে তুলেছিলেন। উপর্যুপরি আক্রমণ করে শত্রুর অপারেশনাল ও লজিস্টিকস মুভমেন্টও বিপজ্জনক করে তুলেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালে সুনামগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি দাসের ‘দাস পার্টি’ এবং দিনাজপুরের ‘জর্জ বাহিনী’ এর মধ্যে অন্যতম। মুক্তিযুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি দাস বীর বিক্রম ১৯৭১ সালের ১৬ নভেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ সমরে নিহত হয়েছিলেন। মৃত্যুর পর তাঁর মৃতদেহের ওপর যে পৈশাচিক আচরণ করা হয়েছিল, তা সত্যিই অবর্ণনীয়। জগৎজ্যোতি প্রকৃত অর্থেই একজন সাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।
তিনি বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত যোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত একটি চৌকস গেরিলা দলের কমান্ডার ছিলেন। তাঁর নামের শেষাংশ নিয়েই তাঁদের এ দলটির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘দাস পার্টি’। মুক্তিযুদ্ধকালীন মাত্র ৩৬ সদস্য নিয়ে গঠিত দাস পার্টি উল্লিখিত এলাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর প্রচণ্ড প্রভাব বিস্তার করতে সমর্থ হয়েছিল। ভৈরব-সুনামগঞ্জ নৌপথটি ছিল পাকিস্তানিদের লজিস্টিকস সাপ্লাই রুট। দাস পার্টির অব্যাহত অভিযানের মুখে পাকিস্তানিরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত নৌচলাচল বন্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছিল। জগৎজ্যোতি যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে দিরাই, শাল্লা, রানীগঞ্জ ও কাদিরগঞ্জ এলাকায় সফল অভিযান চালিয়ে অসংখ্য রাজাকার সদস্যকে আটক করেন। সত্যিকার অর্থেই গেরিলাযুদ্ধবিদ্যায় তিনি ছিলেন পারদর্শী। একক চেষ্টায় মাত্র একটি হালকা মেশিনগান নিয়ে তিনি জামালগঞ্জ থানা দখল করে নেন। মাত্র এক সেকশন (১০-১২ জন) গেরিলা যোদ্ধা নিয়ে তিনি শ্রীপুর ও খালিয়াজুরী শত্রুমুক্ত করেন। মোটকথা, মুক্তিযুদ্ধকালে বিস্তীর্ণ ভাটি অঞ্চলে জগৎজ্যোতি ও তাঁর দাস পার্টি পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও রাজাকারদের কাছে মূর্তিমান এক আতঙ্কের নাম ছিল।
বিস্মৃতপ্রায় এমনই এক মুক্তিযোদ্ধার নাম জর্জ জে এম দাস। যাঁর নেতৃত্বে স্বতন্ত্র একটি দল দিনাজপুরে বেশ দাপটের সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলাযুদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধে উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছে। তাঁর নামে নাম ‘জর্জ বাহিনী’র তিনিই ছিলেন প্রধান। তিনি তৎকালীন ইপিআরের একজন সাবেক সদস্য। ১১ বছরের চাকরিজীবন শেষে শারীরিক অসুস্থতার জন্য ল্যান্স করপোরাল হিসেবে অবসর নেন। তিনি অস্ত্রচালনা প্রশিক্ষণ, ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিলেন। এ কারণে তিনি এক্সপ্লোসিভ সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখতেন, যা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বিশেষ কাজেও লেগেছে। এই অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্ম দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলায়। তাঁর পিতার নাম পিটার ডিসি দাস। জর্জ দাস সবার বড়। তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে চার ছোট ভাই—জেমস এম দাস, রবার্ট আর এন দাস, জন এস কে দাস ও অ্যান্টনি এন দাসও মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। একই পরিবারের সব সন্তান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে এক অন্যান্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছিলেন তাঁরা।
১৯৭১ সালের মার্চ মাসের প্রথম থেকেই জর্জ দাস স্বাধীনতাসংগ্রামে জড়িয়ে পড়েন। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে দিনাজপুরের তরুণদের অস্ত্র প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর দিনাজপুরে রাজনৈতিক নেতারা সিদ্ধান্ত নেন জেলার তরুণদের অস্ত্র প্রশিক্ষণের। সে সময় আনুমানিক ৫০০ তরুণকে বিভিন্ন পর্বে গোপনে অস্ত্রচালনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। জর্জ দাসকে তখন সেই প্রশিক্ষণের সার্বিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। জর্জ দাস নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে এই তরুণদের প্রশিক্ষণ দেন। উল্লেখ্য, জর্জ দাসের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অধিকাংশ তরুণই পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
ইপিআরের সাবেক সদস্য হিসেবে দিনাজপুরের কুঠিবাড়িতে ইপিআর সেক্টর হেডকোয়ার্টার্সের বাঙালি সৈনিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল জর্জ দাসের। তখন সেখানকার বাঙালি জোয়ানদের মধ্যে সুবেদার আরব আলী, হাবিলদার ভুলু, হাবিলদার আবু সাঈদ, হাবিলদার নাজেম জর্জের মাধ্যমে দিনাজপুরের স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। ২৫ মার্চ ঢাকায় ক্র্যাকডাউনের পর থেকে কুঠিবাড়িতে অবস্থিত বাঙালি জোয়ানরা অস্ত্রাগারের অস্ত্র লুট করে বিদ্রোহ করার পরিকল্পনা করেন। তাঁদের এই পরিকল্পনায় জর্জ দাসও তাঁর এক ভাইসহ শামিল হন। পরিকল্পনা মোতাবেক ইপিআরের সদস্যরা অস্ত্র লুট করে বিদ্রোহ করলে, জর্জ দাস স্থানীয় বাঙালি তরুণদের একত্র করে এই বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করবেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৭ মার্চ বেলা ৩-৪টার মধ্যে অবাঙালি জোয়ানরা কিছু বোঝার আগেই প্রচণ্ড গোলাগুলির মাধ্যমে ক্যাম্প দখল করে নেন এবং ক্যাম্পে অবস্থিত সব অবাঙালি সদস্যকে হত্যা করেন। জর্জ পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তাঁর দলবল নিয়ে বিদ্রোহে যোগ দেন এবং কুঠিবাড়ির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে বাঙালি জোয়ানদের সাহায্য করেন। কুঠিবাড়ি বিদ্রোহের পর ইপিআর সদস্য ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের অব্যাহত চাপে পাকিস্তানিরা দিনাজপুর ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। দিনাজপুর ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত শত্রুমুক্ত ছিল। ১২ এপ্রিল সৈয়দপুর সেনানিবাস থেকে সাঁজোয়া গাড়ি ও ট্যাংক নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পাকিস্তানিরা আক্রমণ করে। একই দিন দিনাজপুরের দশমাইল এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই হয়। জর্জ দাসও জীবনবাজি রেখে তাঁর দলবল নিয়ে শত্রুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু শত্রুর ট্যাংক, মর্টার ও কামানের গোলাবর্ষণের মুখে টিকতে না পেরে পিছু হটেন এবং শেষ পর্যন্ত রামচন্দ্রপুর ও কিশোরগঞ্জ বর্ডার আউট পোস্ট (বিওপি) হয়ে ভারতের রাধিকাপুরে আশ্রয় নেন।
ভারতে যাওয়ার পর জর্জ দাসকে ৬ নম্বর সেক্টরের অধীন শিববাড়ি ক্যাম্পের ইনচার্জ করা হয়। তিনি শিববাড়ি ইয়ুথ ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব পান। জর্জ দাসের গেরিলা ট্রেনিং কৌশল ছিল ব্যতিক্রমী। তাঁর সাংগঠনিক তৎপরতা, মোটিভেশন, ব্যক্তিগত আচরণ ও সাহসিকতার জন্য শিববাড়ি ক্যাম্পে সবার প্রিয় নেতায় পরিণত হন। জর্জ আনুমানিক ৪০০ মুক্তিযোদ্ধার সমন্বয়ে জর্জ বাহিনী গড়ে তোলেন। তাঁর মেজ ভাই জেমস এন দাস, সেজ ভাই রবার্ট আর এন দাসও তাঁর এই বাহিনীর সদস্য ছিলেন। টানা নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে জর্জ দাস কুঠিবাড়ি যুদ্ধসহ, দশমাইলের যুদ্ধ, বিরল, খানপুর, গোয়ালবাড়ি, ধর্মপুর, জামালপুর, হাকিমপুর, রামসাগর ও সরস্বতী এলাকায় শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন।
জর্জ দাস কোনো সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। তিনি মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগ থেকে যুবকদের সংগঠিত করে অস্ত্র চালনা প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তিনি যেহেতু ব্যাটল ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ারিং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি ছিলেন, এ জন্য দখলদার বাহিনীর পুঁতে রাখা স্থলমাইন অপসারণের বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্বটিও তাঁকে পালন করতে হয়েছে। স্বাধীনতার পর অসীম ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে দিনের পর দিন দিনাজপুরের বিভিন্ন স্থানে পুঁতে রাখা স্থলমাইন অপসারণের কাজটি তিনি করেছেন। যে স্বপ্ন ও উদ্দেশ্য নিয়ে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বাধীনতাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন; স্বাধীনতার পর তাঁর সেই স্বপ্ন যেন সুবিধাভোগী ক্ষমতালোভীদের পায়ের নিচে পিষ্ট হয়েছে।
এই অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধার জীবনের শেষ পরিণতি ভালো ছিল না। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদানের যোগ্য স্বীকৃতি তিনি পাননি; বরং দারিদ্র্যের কশাঘাতে জীবন হয়েছে জর্জরিত। অভাব-অনটনে কোনোরকমে জীবন কাটিয়েছেন। বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে অনেকটা বিনা চিকিৎসায় জীবনের কাছে পরাজয় মেনে নিয়েছেন এই বীর যোদ্ধা। আমরা যাঁরা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত বড়াই করি, তাঁরা জর্জ দাসের মতো মুক্তিযোদ্ধাদের নাম কতজনই-বা জানি। অনেকে হয়তো তাঁদের নামও শোনেননি। আমরা এখন শুধু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথার ফুলঝুরি ফোটাতেই ব্যস্ত! মনে রাখতে হবে, প্রান্তিক এই যোদ্ধাদের প্রকৃত মর্যাদা দিতে যদি না পারি, তাহলে গর্বিত নাগরিক হিসেবে আমাদের মর্যাদাই-বা থাকে কোথায়?
এ কে এম শামসুদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ক্র্যাকডাউনের পর পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হলেও মুক্তিযোদ্ধারা আগস্টের আগে নিজেদের পূর্ণাঙ্গরূপে সংগঠিত করতে পারেননি। প্রবাসী
২৪ ডিসেম্বর ২০২১
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ক্র্যাকডাউনের পর পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হলেও মুক্তিযোদ্ধারা আগস্টের আগে নিজেদের পূর্ণাঙ্গরূপে সংগঠিত করতে পারেননি। প্রবাসী
২৪ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ক্র্যাকডাউনের পর পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হলেও মুক্তিযোদ্ধারা আগস্টের আগে নিজেদের পূর্ণাঙ্গরূপে সংগঠিত করতে পারেননি। প্রবাসী
২৪ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ক্র্যাকডাউনের পর পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হলেও মুক্তিযোদ্ধারা আগস্টের আগে নিজেদের পূর্ণাঙ্গরূপে সংগঠিত করতে পারেননি। প্রবাসী
২৪ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫