ধানমন্ডি লেকে হাত বাড়ালে এখন পাওয়া যায় বই। পার্কে বসে বই পড়ার এমন সুযোগ করে দিয়েছেন জাকিয়া রায়হানা রুপা। তাঁর এই ব্যতিক্রমী আয়োজনের গল্প লিখেছেন মুহাম্মদ শফিকুর রহমান।
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
চীন, রাশিয়া কিংবা ইউরোপের গণপরিবহনে পাঠকদের প্রায়ই মগ্ন দেখা যায়। জার্মানিতে রাস্তাঘাট ও পার্কে আছে ছোট ছোট লাইব্রেরি। সেখান থেকে যে কেউ বই নিয়ে পড়তে পারেন। জার্মানির এমন দৃশ্যের মনোজ্ঞ বর্ণনা নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছিলেন বাংলাদেশি যুবক মানো বিশ্বাস। তাঁর সেই লেখা থেকে রুপা এক নতুন ভুবন তৈরি করে ফেললেন নিজের চৌহদ্দিতে, ঢাকায় বসে। ভাবলেন, বাড়ির কাছেই ধানমন্ডি লেক। সেখানে ছোট ছোট বুককেস স্থাপন করলে কেমন হয়? সকালে বা বিকেলে লেকের ধারে হাঁটতে আসা মানুষ বই পড়তে পারবেন। ভাবনামতোই কাজ শুরু করলেন তিনি।
শুরু হলো কাজ
রুপাকে সহযোগিতা করলেন বন্ধু রাশেদুল ইসলাম রানা। প্রথম বুককেসটা ১৬ নভেম্বর ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডের লেকের মসজিদের পেছনের রাস্তায় বসানো হলো। প্রথমটির ডিজাইন ইন্টারনেট থেকে নিলেও পরেরগুলোর নকশা করেন রুপা।
প্রথম বুককেসটি তৈরি করেছে সিমবায়োসিস আইটি নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সেই বুককেসে ছিল রুপার প্রিয় লেখক মহিউদ্দিন মোহাম্মদের ৫টি বই। পরে হুমায়ুন আজাদ, আহমদ ছফা, শরৎচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বার্ট্রান্ড রাসেলসহ বিভিন্ন লেখকের বই বুককেসে রাখা হয়।
মাইক্রো লাইব্রেরি
পার্কে বা সুবিধামতো জায়গায় রাখা ছোট ছোট বুককেসকে মাইক্রো লাইব্রেরি কিংবা উন্মুক্ত পাঠাগারও বলেন অনেকে। এরই মধ্যে ধানমন্ডি লেকে ৪টি মিনি বুককেস বসানো হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে আরও ৭টি বুককেস বসানো হবে। প্রতি কেসে ৬-৭টি বই থাকে। এই বুককেসগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে বৃষ্টি হলেও সমস্যা হবে না।
ধানমন্ডি লেকের এই উন্মুক্ত বা মাইক্রো লাইব্রেরিতে শিক্ষার্থীরাই আসেন বেশি। প্রতিদিন একবার রুপা বুককেসগুলো দেখে আসেন।
আদতে গৃহিণী তিনি
আদতে গৃহিণী হলেও রুপা একজন মানবিক মানুষ। অন্যের জন্য কিছু করতে তাঁর ভালো লাগে। তিনি এরই মধ্যে মরণোত্তর চক্ষু ও দেহ দান করেছেন। রুপা জানিয়েছেন, নিয়ে নয়, দিয়ে সুখী হন তিনি। এ গুণ তিনি পেয়েছেন তাঁর মায়ের কাছ থেকে। তাঁর মা ছিলেন একজন সমাজসেবক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারুকলা বিষয়ে লেখাপড়া শেষ করা রুপা স্বামী, দুই মেয়েসহ থাকেন ধানমন্ডি এলাকাতেই। গৃহিণী হলেও তিনি মানসিক স্বাস্থ্য, সেক্স এডুকেশন এবং প্যারেন্টিং নিয়েও কাজ করেন। রাস্তার প্রাণীদের অধিকার সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার কাজও করেন তিনি।
ছড়িয়ে দেওয়া যায় দেশব্যাপী
বুককেস বসানোর উদ্যোগ রুপা একা শুরু করলেও এখন অনেকে পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ নগদ অর্থ আবার কেউ বই দিয়ে সাহায্য করছেন। বুককেস বসানোর এই উদ্যোগ শুধু ঢাকায় নয়, পুরো দেশে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব বলে মনে করেন রুপা।
হাতের মুঠোয় বিশ্ব
এই মাইক্রো লাইব্রেরিগুলো মানুষের পড়ার অভ্যাস বাড়িয়ে দেবে। রুপা জানান, এতে মানুষ হাতের নাগালে পাবে বই। যানজটের শহরে কষ্ট করতে
হবে না।
এই ধারণা কি কিছুটা সত্যি? ধানমন্ডি লেকে গিয়ে দেখা গেল, বুককেস থেকে বই নিয়ে পড়ছেন অনেকে। নানান বয়স ও পেশার মানুষ আছেন এই পাঠক দলে। বই হাতে যুগলেরা ঝগড়া করছেন
চরিত্র আর ঘটনা নিয়ে কিংবা একজন আসতে দেরি করায় অন্যজন বইয়ের দুনিয়ায় দিয়েছেন ডুব, এমন দৃশ্যও দেখা গেল।
ইচ্ছা সংক্রামক
জাকিয়া রায়হানা রুপার এমন উদ্যোগ দেখার পর অনেকে নিজেদের বাড়ি, অফিস কিংবা আশপাশের পার্কে উন্মুক্ত পাঠাগার তৈরির ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এরই মধ্যে মিরপুর ৬০ ফিটে নিজ বাড়ির নিচে একটি শেলফ স্থাপন করেছেন নাজমুল রোমেন। সেখান থেকে ফেরত দেওয়ার শর্তে যে কেউ বই পড়তে নিয়ে যেতে পারেন।
রুপা কিংবা রোমেনদের বই পড়ানোর এমন ইচ্ছা ছড়িয়ে পড়ুক পুরো দেশে। মানুষ মেতে উঠুক বই নিয়ে। পার্কের ছায়াময় সবুজ জমিনে দেখা মিলুক মগ্ন পাঠকদের।
চীন, রাশিয়া কিংবা ইউরোপের গণপরিবহনে পাঠকদের প্রায়ই মগ্ন দেখা যায়। জার্মানিতে রাস্তাঘাট ও পার্কে আছে ছোট ছোট লাইব্রেরি। সেখান থেকে যে কেউ বই নিয়ে পড়তে পারেন। জার্মানির এমন দৃশ্যের মনোজ্ঞ বর্ণনা নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছিলেন বাংলাদেশি যুবক মানো বিশ্বাস। তাঁর সেই লেখা থেকে রুপা এক নতুন ভুবন তৈরি করে ফেললেন নিজের চৌহদ্দিতে, ঢাকায় বসে। ভাবলেন, বাড়ির কাছেই ধানমন্ডি লেক। সেখানে ছোট ছোট বুককেস স্থাপন করলে কেমন হয়? সকালে বা বিকেলে লেকের ধারে হাঁটতে আসা মানুষ বই পড়তে পারবেন। ভাবনামতোই কাজ শুরু করলেন তিনি।
শুরু হলো কাজ
রুপাকে সহযোগিতা করলেন বন্ধু রাশেদুল ইসলাম রানা। প্রথম বুককেসটা ১৬ নভেম্বর ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডের লেকের মসজিদের পেছনের রাস্তায় বসানো হলো। প্রথমটির ডিজাইন ইন্টারনেট থেকে নিলেও পরেরগুলোর নকশা করেন রুপা।
প্রথম বুককেসটি তৈরি করেছে সিমবায়োসিস আইটি নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সেই বুককেসে ছিল রুপার প্রিয় লেখক মহিউদ্দিন মোহাম্মদের ৫টি বই। পরে হুমায়ুন আজাদ, আহমদ ছফা, শরৎচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বার্ট্রান্ড রাসেলসহ বিভিন্ন লেখকের বই বুককেসে রাখা হয়।
মাইক্রো লাইব্রেরি
পার্কে বা সুবিধামতো জায়গায় রাখা ছোট ছোট বুককেসকে মাইক্রো লাইব্রেরি কিংবা উন্মুক্ত পাঠাগারও বলেন অনেকে। এরই মধ্যে ধানমন্ডি লেকে ৪টি মিনি বুককেস বসানো হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে আরও ৭টি বুককেস বসানো হবে। প্রতি কেসে ৬-৭টি বই থাকে। এই বুককেসগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে বৃষ্টি হলেও সমস্যা হবে না।
ধানমন্ডি লেকের এই উন্মুক্ত বা মাইক্রো লাইব্রেরিতে শিক্ষার্থীরাই আসেন বেশি। প্রতিদিন একবার রুপা বুককেসগুলো দেখে আসেন।
আদতে গৃহিণী তিনি
আদতে গৃহিণী হলেও রুপা একজন মানবিক মানুষ। অন্যের জন্য কিছু করতে তাঁর ভালো লাগে। তিনি এরই মধ্যে মরণোত্তর চক্ষু ও দেহ দান করেছেন। রুপা জানিয়েছেন, নিয়ে নয়, দিয়ে সুখী হন তিনি। এ গুণ তিনি পেয়েছেন তাঁর মায়ের কাছ থেকে। তাঁর মা ছিলেন একজন সমাজসেবক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারুকলা বিষয়ে লেখাপড়া শেষ করা রুপা স্বামী, দুই মেয়েসহ থাকেন ধানমন্ডি এলাকাতেই। গৃহিণী হলেও তিনি মানসিক স্বাস্থ্য, সেক্স এডুকেশন এবং প্যারেন্টিং নিয়েও কাজ করেন। রাস্তার প্রাণীদের অধিকার সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার কাজও করেন তিনি।
ছড়িয়ে দেওয়া যায় দেশব্যাপী
বুককেস বসানোর উদ্যোগ রুপা একা শুরু করলেও এখন অনেকে পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ নগদ অর্থ আবার কেউ বই দিয়ে সাহায্য করছেন। বুককেস বসানোর এই উদ্যোগ শুধু ঢাকায় নয়, পুরো দেশে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব বলে মনে করেন রুপা।
হাতের মুঠোয় বিশ্ব
এই মাইক্রো লাইব্রেরিগুলো মানুষের পড়ার অভ্যাস বাড়িয়ে দেবে। রুপা জানান, এতে মানুষ হাতের নাগালে পাবে বই। যানজটের শহরে কষ্ট করতে
হবে না।
এই ধারণা কি কিছুটা সত্যি? ধানমন্ডি লেকে গিয়ে দেখা গেল, বুককেস থেকে বই নিয়ে পড়ছেন অনেকে। নানান বয়স ও পেশার মানুষ আছেন এই পাঠক দলে। বই হাতে যুগলেরা ঝগড়া করছেন
চরিত্র আর ঘটনা নিয়ে কিংবা একজন আসতে দেরি করায় অন্যজন বইয়ের দুনিয়ায় দিয়েছেন ডুব, এমন দৃশ্যও দেখা গেল।
ইচ্ছা সংক্রামক
জাকিয়া রায়হানা রুপার এমন উদ্যোগ দেখার পর অনেকে নিজেদের বাড়ি, অফিস কিংবা আশপাশের পার্কে উন্মুক্ত পাঠাগার তৈরির ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এরই মধ্যে মিরপুর ৬০ ফিটে নিজ বাড়ির নিচে একটি শেলফ স্থাপন করেছেন নাজমুল রোমেন। সেখান থেকে ফেরত দেওয়ার শর্তে যে কেউ বই পড়তে নিয়ে যেতে পারেন।
রুপা কিংবা রোমেনদের বই পড়ানোর এমন ইচ্ছা ছড়িয়ে পড়ুক পুরো দেশে। মানুষ মেতে উঠুক বই নিয়ে। পার্কের ছায়াময় সবুজ জমিনে দেখা মিলুক মগ্ন পাঠকদের।
নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুরে বন্যা চলছে। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। বাড়িঘরের শুধু চালাটা দেখা যায়। ত্রাণ দিতে ব্যস্ত সবাই। আর দলবল নিয়ে চিকিৎসা দিতে ছুটে গেলেন মাহমুদা আলম মিতু। ডুবন্ত এক বাড়ি থেকে উদ্ধার করলেন এক শিশুকে। বেশ নাজুক অবস্থা ছিল তার। মিতুর কোলে সেই শিশুর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরা
১ দিন আগেএই গল্পের শুরু এক বোহিমিয়ান যুবকের ভ্রমণ ও প্রেম থেকে। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের ট্রান্ডল শহরের বাসিন্দা ক্রিস্টোফার রস্টহর্ন। একঘেয়ে জীবন থেকে মুক্তি পেতে চাকরি ছেড়ে, সব সম্পত্তি বিক্রি করে বেরিয়ে পড়েন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ভ্রমণে। সময়টা ২০০৯ সাল। ভিয়েতনামের হুয়ে একটি বাজেট হোস্টেলে ওঠেন
১ দিন আগেআমি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী। নিজের প্রস্তুতি নিয়ে একেবারে সন্তুষ্ট হতে পারছি না। আমার পরিবারও সন্তুষ্ট নয়। তারা মাঝে মাঝে এমন সব কথা বলে, যা শুনে খারাপ লাগে। কোনোভাবেই মানসিকভাবে স্থির হতে পারছি না। ফলে পরীক্ষার প্রস্তুতিতে খারাপ প্রভাব পড়ছে। তিন বছর আগে ভাইয়াকেও অনেক কথা শুনতে হয়েছিল। জানি
১ দিন আগেবিবিসির প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকা প্রতিবছর রোমাঞ্চ জাগায়। এ বছরও ব্যতিক্রম হয়নি। সুসংবাদ হচ্ছে, এ বছরের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার নারী রিকতা আখতার বানু (লুৎফা)।
১ দিন আগে