Ajker Patrika

মানুষখেকো গাছ কি সত্যি আছে, নাকি গালগপ্পো

ইশতিয়াক হাসান
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৩, ১২: ২৪
মানুষখেকো গাছ কি সত্যি আছে, নাকি গালগপ্পো

কল্পনা করুন, গহিন এক জঙ্গলে আছেন। এ সময়ই একটি গাছের সামনে চলে এলেন, বিশাল পাতাগুলো কেমন যেন শুঁড়ের মতো। চারপাশ ভারী হয়ে আছে মিষ্টি এক গন্ধে। গাছটির নিচে কোনো একটি প্রাণীর কঙ্কাল পড়ে আছে। পাতাগুলো নড়ছে। এটা কি শুধুই বাতাসের কারণে? আরেকটু কাছে গেলেন, গাছের পাতাগুলো আপনার দিকে ঝুঁকে আসছে...। বিশাল মাংসখেকো কোনো গাছের চিন্তা যদি কোনোভাবে আপনার মস্তিষ্কে ঢুকে যায় তবে, একে সেখান থেকে বের করা মুশকিল। আফ্রিকা, মধ্য কিংবা দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গলে এমন মানুষখেকো গাছের নানা গল্পগাথা ডালপালা মেলেছে ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে। 

তবে শুনে আনন্দিত হবেন, মানুষকে খেয়ে ফলতে পারে এমন কোনো উদ্ভিদের অস্তিত্বে মোটেই বিশ্বাসী নয় বিজ্ঞান। এখন পর্যন্ত যে তথ্য মিলেছে, তাতে মাংসাশী যেকোনো গাছের জন্য একটা ইঁদুরই খাবার হিসেবে বেশ বড়। তবে মানুষ যুগে যুগে মানুষের রক্তের তৃষ্ণা আছে এমন উদ্ভিদকে কল্পনায়, গল্পে হাজির করেছে বারবারই। 

মানুষখেকো গাছের গল্প ব্যাপকভাবে ছড়ানো শুরু করে ১৮৮০-র দশকে। সাধারণত গল্পগুলো এমন হতো, একজন সাহসী ইউরোপীয় দুর্গম কোনো দ্বীপে বা অরণ্যে হাজির হন। এ সময়ই অদ্ভুত কোনো একটি গাছের সামনে চলে আসেন। তারপরই দেখেন স্থানীয় কোনো অধিবাসী অসাবধানতাবশত ওই গাছের গ্রাসে পরিণত হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব গল্প সরাসরি যার অভিজ্ঞতা তার থেকে অন্য কেউ শুনে কিংবা তার থেকে আরও কেউ শুনে ছড়িয়ে দেন। এভাবে মূল কাহিনি অনেকটা ফুলেফেঁপে প্রকাশ পায়। 

এখন পর্যন্ত খোঁজ পাওয়া সবচেয়ে বড় মাংসাশী গাছ নেপেনথেস রাজাউদাহরণ হিসেবে ফিল রবিনসনের ১৮৮১ সালের বই আন্ডার দ্য পুনকাহ ট্রির কথা বলতে পারেন। লেখকের চাচা আশ্চর্য এক গাছ খুঁজে পান। ওটার বিশাল মোমের মতো ফুল, ফল রসে টইটম্বুর। পাতাগুলো ছোট্ট হাতের মতো খুলছে, বন্ধ হচ্ছে। একটি স্থানীয় কিশোর একটি হরিণকে তাড়া করতে গিয়ে গাছের লতাপাতার মাঝখানে চলে আসে। তারপর শ্বাসরোধ হয়ে আসছে এমন একটা ফ্যাসফ্যাসে চিৎকার। তারপর যে পাতাগুলোর ভেতরে ছিল ছেলেটি, সেগুলোর পাগলাটে নড়াচড়া চোখে পড়ে। এ ছাড়া জীবনের আর কোনো চিহ্ন নেই। জে ডব্লিউ বুয়েলের ‘সি অ্যান্ড ল্যান্ড’ প্রকাশ পায় ১৮৮৯ সালে। এর মধ্যে অভিযাত্রীদের মুখ থেকে শোনা মোটা গুঁড়ির এক গাছের গল্পও আছে, যে কিনা শিকার থেকে রক্ত শুষে নেয়, তারপর রক্তশূন্য দেহটাকে ছুড়ে দিয়ে নতুন শিকারের প্রতীক্ষায় থাকে। 

তবে মানুষখেকো গাছের সবচেয়ে ভয়ানক গল্পটি ফার্স্ট হ্যান্ড অ্যাকাউন্ট বা সরাসরি যার অভিজ্ঞতা তাঁর বিবরণে পাওয়া। কার্ল লেচে নামের এক বিজ্ঞানী সংবাদপত্রগুলোকে বলেন এমন এক গাছের কথা, যেটার নিচের অংশ আনারসের মতো। এর দীর্ঘ, স্বাস্থ্যবান ও কাঁটাযুক্ত আটটি পাতা আছে, সাদা ছয়টি টেনড্রিল ছিল, যেগুলো বাতাসে প্রবলভাবে নড়ছিল। যখন একজন নারীকে গাছটার ওপরে জমা হওয়া মিষ্টি তরল খেতে পাঠানো হয়, তখন তাঁকে আঁকড়ে ধরে টেনড্রিল। পাতাগুলো বন্ধ হয়ে আড়াল করে ফেলে মেয়েটিকে। তারপর গাছের গুঁড়ি বেয়ে নেমে আসে উদ্ভিদের রস আর মানুষের রক্তের একটি মিশেল। 

একটা সময় পর্যন্ত গল্পগুলো যে বানানো, এটি পরিষ্কার ছিল না। বুয়েলের মানুষখেকো উদ্ভিদের বর্ণনার পর বাস্তব কিছু আশ্চর্য গাছের খবর মেলে। এর মধ্যে আছে ব্রেড ফ্রুট বা পাউরুটি ফলের গাছ, পিচার প্ল্যান্ট বা কলসগাছ এবং তিরের আগা বিষাক্ত করতে ব্যবহার করা হয় এমন বিষ তৈরি করে এমন গাছ ইত্যাদি। বুয়েল যদিও সন্দিহান ছিলেন, তবে তিনি লেখেন, নির্ভরযোগ্য অনেক অভিযাত্রী এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। লিচের কাহিনিটা বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও সংবাদপত্রে প্রকাশ পায়। কয়েক দশক পরে জানা যায় এটি আসলে বানানো। 

শিল্পীর কলমের তুলিতে মানুষখেকো গাছতবে সত্যিকারের মাংসাশী গাছেরা কিন্তু এতটা ভয়ংকর নয়। আর তাদের কোনো ছোটখাটো প্রাণীকে খেয়ে ফেলার যুক্তিসংগত কারণও আছে। উদ্ভিদের নাইট্রোজেন প্রয়োজন। কিন্তু কিছু কিছু জায়গার মাটি অনুর্বর। এসব জায়গায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে ছোট ছোট প্রাণী ধরে। ছয় শতাধিক প্রজাতির উদ্ভিদ পোকামাকড়সহ ছোটখাটো প্রাণী খায় বলে জানা গেছে। 

এসব উদ্ভিদের মধ্যে অস্বস্তিকর কিছু ব্যাপার আছে তাতে সন্দেহ নেই। পিচার প্ল্যান্ট বা কলস উদ্ভিদের কথা যদি ধরেন, ফাঁদে ফেলা পোকামাকড়টিকে হজম করতে অনেকটা অম্লীয় একটি তরল ব্যবহার করে। তবে তাদের কলস কখনো আবর্জনা উগরে দেয় না। 

‘বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি পোকামাকড়ের শরীরের বিভিন্ন অংশে পূর্ণ হয়ে যায়। সবকিছু হজম করতে পারে না এরা,’ বলেন সান ডিয়েগো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে মাংসাশী উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা করা উদ্ভিদবিদ তানিয়া রেনার, ‘এটাকে অনেকটা শ্মশানের সঙ্গে তুলনা করতে পারেন।’ 

বড় আকারের কলস উদ্ভিদদের ইঁদুর পর্যন্ত খেয়ে ফেলার রেকর্ড আছে। তবে এটা এদের হজমের জন্য একটু বাড়াবাড়ি। সে ক্ষেত্রে বুঝতেই পারছেন একজন মানুষকে হজম করা আকাশকুসুম কল্পনাকে হার মানায়। 

নেপেনথেস ম্যাক্সিমাও একধরনের মাংসাশী গাছঅবশ্য মানুষখেকো গাছ নিয়ে বহু গল্প-উপন্যাসও রচিত হয়েছে। যেমন—এ ধরনের একটি গল্পে দেখা যায় এক উদ্ভিদবিদ এমন একটি মাংসাশী উদ্ভিদ খুঁজে পেয়ে এটাকে লুকিয়ে এটার খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতেন। একপর্যায়ে নিজেই এর খাবারে পরিণত হন। 

এইচ জি ওয়েলসের এক গল্পে রক্তখেকো একটি অর্কিডের শিকার হতে চলেছিলেন এক উদ্ভিদবিদ। সৌভাগ্যক্রমে হাউসকিপারের কল্যাণে বেঁচে যান। এদিকে হাওয়ার্ড আর গেরিসের ১৯০৫ সালে প্রকাশিত গল্প ‘প্রোফেসর জনকিন’স ক্যানিবাল প্ল্যান্টে’ দেখা যায় উদ্ভিদটি অধ্যাপককে খাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে ক্লোরোফরম দিয়ে গাছটিকে সাময়িক নিষ্ক্রিয় করে দেন অধ্যাপকের বন্ধু। শুধু তাই নয়, ওটার হজম করার কাজে ব্যবহার করা তরলে পৌঁছার আগেই তাঁকে সরিয়ে নেন বন্ধুটি। 

এবার বরং মাংসাশী গাছদের ব্যাপারে কিছু তথ্য দেওয়া যাক। উদ্ভিদবিদ ও অভিযাত্রী ডালটন হুকার ১৮৫৯ যখন প্রথম কলস উদ্ভিদদের দেখেন, এদের পরিচয় করিয়ে দেন ‘আকর্ষণীয় এক সবজি হিসেবে’। তবে এই উদ্ভিদরা আসলেই কতটা অস্বাভাবিক, এটি প্রথম কারও নজরে আসে ১৮৬২ সালে। 

আর এই পিচার প্ল্যান্ট বা কলস উদ্ভিদদের মধ্যে সবচেয়ে বড় নেপেনথেস রাজা। একই সঙ্গে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মাংসভোজী উদ্ভিদও এটি। কখনো কখনো একে ‘কলস উদ্ভিদের রাজা’ হিসেবেও পরিচয় করে দেওয়া হয়। 

নেপেনথেস রাজা থেকে মধু পান করছে একটি সামিট রেটআপনি সাড়ে তিন লিটার পানি এবং আড়াই লিটার হজম করতে সক্ষম তরল সমৃদ্ধ একটি ফাঁদ বলতে পারেন একে। এটি পোকামাকড়কে তার দিকে আকৃষ্ট করে। যখন কোনো পোকামাকড় ওই তরলে পড়ে গিয়ে পালাতে ব্যর্থ হয় এবং উদ্ভিদটি একে হজম করে ফেলে। নেপেনথেস রাজা বা জায়ান্ট মালয়েশিয়ান পিচার প্ল্যান্টরা সাধারণত পোকামাকড়, যেমন পিঁপড়া ধরেই সন্তুষ্ট থাকে। তবে কখনো কখনো এদের ফাঁদে তুলনামূলক বড় শিকারও ধরা পড়ে। 

কালেভদ্রে কলসের ভেতরে আধা হজম হওয়া ইঁদুর পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তেমনি ছোট পাখি, সরীসৃপ এমনকি ব্যাঙও শিকারে পরিণত হয় হঠাৎ হঠাৎ এই মাংসাশী উদ্ভিদের। 

এই উদ্ভিদের অদ্ভুত এক সম্পর্ক আছে মালয়েশিয়ার জঙ্গলের গেছো ছুঁচোদের সঙ্গে। গেছো ছুঁচোদের আকৃষ্ট করে উদ্ভিদটির মধ্যে থাকা রস বা মধু। এই মধু পানের পাশাপাশি নিজেদের খাবারের এলাকা চিহ্নিত করতে গিয়ে গেছো ছুঁচোরা সরাসরি কলসের বা কাপের মধ্যে মল ত্যাগ করে। এটা এই মাংসাশী গাছদের গুরুত্বপূর্ণ নাইট্রোজেনের জোগান দেয়। ইঁদুর কিংবা পাখি কালেভদ্রে মিললেও ছুঁচোর মল নিয়মিতই জোটে। অবশ্য একই ধরনের একটি সম্পর্ক এই উদ্ভিদের সামিট রেট নামের একধরনের ইঁদুরেরও থাকে বলে জানা গেছে। অবশ্য সামিট রেট বা গেছো ছুঁচোরা কখনো এই উদ্ভিদের খাবারে পরিণত হয়েছে বলে জানা যায়নি।

কাজেই এখন পর্যন্ত যে তথ্য, তাতে মানুষখেকো গাছ তো দূরের কথা, হরিণ এমনকি খরগোশের মতো প্রাণী হজম করতে পারে এমন কোনো মাংসাশী উদ্ভিদের খোঁজ মেলেনি। তবে ঘটনা হলো, পৃথিবীতে নতুন নতুন অনেক কিছুর খোঁজই তো মেলে, যার অস্তিত্ব সম্পর্কে আগে মানুষের কোনো ধারণা ছিল না। তাই রহস্যময় প্রাণী বা উদ্ভিদে যাঁদের মাত্রাতিরিক্ত আগ্রহ তাঁরা ঠিক এই মুহূর্তে পৃথিবীর দুর্গম কোনো অরণ্যে এ ধরনের ভয়ংকর কোনো গাছ বড় শিকারের প্রতীক্ষায় আছে ফাঁদ পেতে, এমন তর্ক জুড়তেই পারেন। 

সূত্র: অ্যাটলাস অবসকিউরা, উইকিপিডিয়া

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কখনো চাকরিই করেননি, সেই প্রতিষ্ঠান থেকে পেলেন বরখাস্তের চিঠি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ই-মেইল চেক করছেন একজন নারী। ছবি: পেক্সেলস
ই-মেইল চেক করছেন একজন নারী। ছবি: পেক্সেলস

একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন, একটা ই-মেইল এসেছে যার ‘সাবজেক্ট’ অপশনে লেখা ‘টার্মিনেশন লেটার’। ঘুম ঘুম চোখে এই ই-মেইল দেখলে স্বাভাবিকভাবেই ঘুম তো থাক, অন্য সব ভাবনাও হারাম হয়ে যাওয়ার কথা! তখন ভাবনায় আসবে ঠিক কি কারণে চাকরি থেকে ছাঁটাই হতে হলো! ভাবতে ভাবতে মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় এ সময় চোখে পড়ল, যে কোম্পানি থেকে এই ই-মেইল এসেছে, সেখানে আপনি চাকরিই করেন না, কখনো করেনওনি! ভাবুন তো কেমন লাগার কথা।

এমনই ঘটনা ঘটেছে এক নারীর সঙ্গে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ সাইমন ইনগারি নামের একজন ক্যারিয়ার কাউন্সিলর তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা শেয়ার করেছেন।

সাইমন ইনগারি তাঁর টুইটে জানান, তাঁর স্ত্রী এমন একটি কোম্পানি থেকে ছাঁটাইয়ের ই-মেইল পেয়েছেন, যেখানে তিনি কখনো কাজই করেননি। ইমেইল পাওয়ার পর তিনি এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন যে তিনি পুরো স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন।

ইনগারি বলেন, ‘আমার স্ত্রী ভাবতে শুরু করেছিল, সে কি কোনো ডেডলাইন মিস করেছিল, নাকি তাঁর বড় কোনো ভুল হয়েছিল। পরে চেক করে দেখে ই-মেইল প্রেরক কোম্পানিটি তাঁর কর্মস্থলই নয়।’

ইনগারি তাঁর পোস্টে লেখেন, ‘আমার স্ত্রী একটি টার্মিনেশন ইমেইল পেয়েছে। ইমেইলটি দেখেই তাঁর বুক ধক করে ওঠে। এক সেকেন্ডের জন্য সে থমকে যায়। কোনো ডেডলাইন মিস করেছে? কিছু ভুল বলেছে? শেষে জানা গেল, যে কোম্পানিতে সে কখনো চাকরিই করেনি, সেখান থেকেই তাঁকে “বরখাস্ত” করা হয়েছে।’

এই ঘটনার মাধ্যমে ওই কোম্পানির এইচআর বিভাগের অসতর্কতার বিষয়টি তুলে ধরে ইনগারি অনুরোধ জানান, ভবিষ্যতে ইমেইল পাঠানোর সময় যেন প্রাপকের আইডি আরও ভালোভাবে যাচাই করা হয়। তিনি লেখেন, ‘প্রিয় এইচআর, দয়া করে পরেরবার ইমেইল আইডিটা একটু ভালো করে দেখবেন। এমন ভুলে তো কারও সত্যিই হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেতে পারে।’

এই পোস্ট নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক ব্যবহারকারী এমন ভুলের সম্ভাব্য গুরুতর পরিণতির কথা তুলে ধরেন। কেউ কেউ ঘটনাটিকে হাস্যরসের চোখে দেখলেও, অন্যরা এটিকে আধুনিক করপোরেট দুনিয়ায় বাড়তে থাকা অসতর্কতা ও চাকরির অনিশ্চয়তার প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেন।

একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘তাঁর উচিত একটি অপ্রত্যাশিত এবং কঠোর জবাব দেওয়া। এতে করে অন্তত তাঁরা বুঝতে পারার আগেই যে ভুল ঠিকানায় ইমেইল পাঠানো হয়েছে, তিনি নিজের ক্ষোভ উগরে দেওয়ার সুযোগ পাবেন।’

আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘এটা কোনো ছোটখাটো ভুল নয়। একটি ভুল ইমেইল কারও পুরো দিন, সপ্তাহ—এমনকি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। এইচআর সারাদিন সহমর্মিতার কথা বলে, অথচ স্প্যামের মতো করে বরখাস্তের ইমেইল পাঠায়।’

আরেকজন বলেন, ‘মানবিক কোনো মান যাচাই ছাড়াই যখন কোম্পানিগুলো সব অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয় করে ফেলে, তখনই এমনটা ঘটে। এটি অত্যন্ত নিম্নমানের পরিচালনা এবং ব্র্যান্ডের জন্য ক্ষতিকর। ভাগ্য ভালো যে এটি কেবল একটি ভুল সতর্কবার্তা ছিল।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চীনের গ্রামে লিভ টুগেদার ও গর্ভধারণ নিয়ে ‘অদ্ভুত’ আইন জারি, সমালোচনার ঝড়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩৭
গ্রাম মাতবরদের এই নতুন আইন নিয়ে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। ছবি: সংগৃহীত
গ্রাম মাতবরদের এই নতুন আইন নিয়ে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। ছবি: সংগৃহীত

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার পর শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা ও বিতর্ক।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রামের শৃঙ্খলা বজায় রাখার নামে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় গ্রাম কমিটি। ভাইরাল হওয়া ছবির ভিত্তিতে জরিমানার তালিকাটি নিচে দেওয়া হলো:

প্রাদেশিক বৈষম্য: ইউনান প্রদেশের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে দম্পতিকে ১ হাজার ৫০০ ইউয়ান (প্রায় ২৩,০০০ টাকা) জরিমানা দিতে হবে।

বিয়ের আগে গর্ভধারণ: কোনো নারী বিয়ের আগে গর্ভবতী হলে তাঁকে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

লিভ ইন রিলেশন: বিয়ে ছাড়াই কোনো যুগল একত্রে বসবাস করলে প্রতিবছর ৫০০ ইউয়ান জরিমানা দিতে হবে।

সন্তান জন্মের সময়: বিয়ের মাত্র ১০ মাসের মধ্যে কোনো দম্পতি সন্তান জন্ম দিলে তাঁকে ‘অকাল গর্ভধারণ’ হিসেবে গণ্য করে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানা করা হবে।

পারিবারিক কলহ: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে এবং তা মেটাতে গ্রাম কর্তাদের ডাকলে উভয় পক্ষকে ৫০০ ইউয়ান করে জরিমানা দিতে হবে।

সামাজিক আচরণ: মদ্যপ অবস্থায় বিশৃঙ্খলা করলে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার ইউয়ান এবং গুজব ছড়ালে ১ হাজার ইউয়ান পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

চীনের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘উইবো’-তে এই নোটিশ শেয়ার হওয়ার পর নেটিজেনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। অনেক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘গ্রাম কমিটি কি এখন মানুষের শোবার ঘরের পাহারাদার হতে চায়?’ কেউ কেউ এটিকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। সমালোচকদের মতে, আধুনিক চীনের আইনি কাঠামোয় এ ধরনের নিয়মাবলি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং মধ্যযুগীয় বর্বরতার শামিল।

বিতর্ক তুঙ্গে উঠলে স্থানীয় মেংডিং টাউন সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। ১৬ ডিসেম্বর রেড স্টার নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রশাসনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, নোটিশটি গ্রাম কমিটির নিজস্ব উদ্যোগে টাঙানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এই নিয়মগুলো অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং ইউনিয়ন বা টাউন সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রকার পূর্বানুমতি নেওয়া হয়নি। আমরা ইতিমধ্যেই নোটিশটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি এবং এটি এখন কার্যকর নেই।’

লিংক্যাং গ্রামটির জনসংখ্যা বা বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রাম কমিটিগুলো নিজেদের ছোটখাটো ‘রাজা’ মনে করে এ ধরনের অবৈধ নিয়ম জারি করে থাকে। এই ঘটনাটি চীনের গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসনের সীমাবদ্ধতা এবং সাধারণ মানুষের আইনি অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৩০ বছর পর প্রথম শিশুর জন্মে খুশিতে মাতোয়ারা ইতালির এক গ্রাম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মা-বাবার কোলে লারা বুসি ত্রাবুক্কো। ছবি: দ্য গার্ডিয়ানের সৌজন্যে
মা-বাবার কোলে লারা বুসি ত্রাবুক্কো। ছবি: দ্য গার্ডিয়ানের সৌজন্যে

ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম হয়েছে।

লারা বুসি ত্রাবুক্কো নামের এই শিশুটির আগমনে গ্রামের জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। তার খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষাদান অনুষ্ঠানে পুরো গ্রাম ভেঙে পড়েছিল। এমনকি ৯ মাস বয়সী লারা এখন ওই অঞ্চলের প্রধান পর্যটন আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। লারার মা সিনজিয়া ত্রাবুক্কো বলেন, ‘যারা আগে এই গ্রামের নামও জানত না, তারাও এখন লারাকে দেখতে আসছে।’

লারার জন্ম এক দিকে যেমন আশার প্রতীক, অন্য দিকে এটি ইতালির ভয়াবহ জনসংখ্যা হ্রাসের চিত্রকেও ফুটিয়ে তুলেছে।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইতালিতে জন্মহার সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে (৩,৬৯,৯৪৪ জন)। প্রজনন হার প্রতি নারী পিছু মাত্র ১.১৮, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্ন।

২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসের উপাত্ত অনুযায়ী, আব্রুজ্জো অঞ্চলে জন্মহার গত বছরের তুলনায় আরও ১০.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই পরিস্থিতির জন্য একাধিক কারণকে দায়ী করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে—তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কর্মসংস্থানের অভাব ও দেশত্যাগের প্রবণতা। কর্মজীবী মায়েদের জন্য ডে-কেয়ার বা নার্সারির অভাব। অনেক নারী মা হওয়ার পর আর কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারেন না। পুরুষদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বন্ধ্যাত্ব এবং অনেকের সন্তান না নেওয়ার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ট্যাক্স বেশি হলেও সেই অনুযায়ী সামাজিক সেবা বা উন্নত জীবনযাত্রার অভাব।

জর্জিয়া মেলোনির সরকার এই পরিস্থিতিকে ‘জনসংখ্যার শীতকাল’ (Demographic Winter) হিসেবে অভিহিত করেছে। সংকট মোকাবিলায় ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে প্রতিটি শিশুর জন্মের পর এককালীন ১ হাজার ইউরো ‘বেবি বোনাস’ এবং প্রতি মাসে প্রায় ৩৭০ ইউরো শিশু ভাতা দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছে। তবে লারার মায়ের মতে, শুধু অর্থ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়; পুরো ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন।

এদিকে, জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় অনেক শহরে প্রসূতি বিভাগ (Maternity Unit) বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পালিয়ারা দে মার্সি থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত সুলমোনা শহরের হাসপাতালটি এখন বন্ধের ঝুঁকিতে। নিয়ম অনুযায়ী বছরে অন্তত ৫০০ শিশুর জন্ম না হলে সেই ইউনিট চালু রাখা কঠিন। ২০২৪ সালে সেখানে মাত্র ১২০টি শিশুর জন্ম হয়েছে। এটি বন্ধ হয়ে গেলে গর্ভবতী নারীদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অন্য শহরে যেতে হবে, যা জরুরি অবস্থায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

গ্রামের মেয়র জিউসেপিনা পেরোজি আশা প্রকাশ করেন, লারার জন্ম অন্যদেরও পরিবার গঠনে অনুপ্রাণিত করবে। কিন্তু লারার ভবিষ্যৎ শিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েই গেছে। গ্রামটিতে কয়েক দশক ধরে কোনো শিক্ষক নেই, এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামের স্কুলগুলোও শিক্ষার্থীর অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জরায়ুর বাইরে বেড়ে উঠল শিশু, অলৌকিক জন্ম দেখল ক্যালিফোর্নিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১: ১১
২০২৫ সালের আগস্টে লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই হাসপাতালে সুজ লোপেজের মেয়ে কাইলা সুজ, তাঁর কোলে রিউ ও অ্যান্ড্রু লোপেজ (ছবিতে বাম দিক থেকে)। ছবি: এপির সৌজন্যে
২০২৫ সালের আগস্টে লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই হাসপাতালে সুজ লোপেজের মেয়ে কাইলা সুজ, তাঁর কোলে রিউ ও অ্যান্ড্রু লোপেজ (ছবিতে বাম দিক থেকে)। ছবি: এপির সৌজন্যে

ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎসকেরা।

লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই মেডিকেল সেন্টারের প্রসূতি ও প্রসব বিভাগের মেডিকেল ডিরেক্টর ড. জন ওজিমেক এপিকে বলেন, ‘প্রতি ৩০ হাজার গর্ভাবস্থার মধ্যে মাত্র একটি জরায়ুর বাইরে পেটের ভেতরে (Abdominal Pregnancy) ঘটে। আর পূর্ণ মেয়াদে সুস্থ শিশু জন্ম দেওয়ার ঘটনা ১ কোটিতে একজনের ক্ষেত্রেও দেখা যায় না। এটি সত্যিই অবিশ্বাস্য।’

৪১ বছর বয়সী সুজ লোপেজ পেশায় একজন নার্স। আশ্চর্যের বিষয় হলো, সন্তান জন্ম দেওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগ পর্যন্ত তিনি জানতেনই না যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা।

সুজ দীর্ঘদিন ধরে ওভারিয়ান সিস্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। যখন তাঁর পেট বড় হতে শুরু করে, তিনি ভেবেছিলেন, এটি ২১ পাউন্ড ওজনের সেই সিস্টেরই বৃদ্ধি।

সাধারণ গর্ভাবস্থার কোনো লক্ষণ; যেমন সকালবেলায় অসুস্থতা বোধ করা (Morning Sickness) বা শিশুর নড়াচড়া—কিছুই তিনি অনুভব করেননি। অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়াকেও তিনি স্বাভাবিক ধরে নিয়েছিলেন।

অবশেষে পেটে অসহ্য ব্যথা শুরু হলে তিনি সিস্ট অপসারণের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। সেখানে সিটি স্ক্যান করার আগে বাধ্যতামূলক গর্ভাবস্থা পরীক্ষায় ফল ‘পজিটিভ’ আসে।

হাসপাতালে আলট্রাসাউন্ড এবং এমআরআই স্ক্যানে দেখা যায়, সুজের জরায়ু সম্পূর্ণ খালি। অথচ একটি পূর্ণাঙ্গ ভ্রূণ তাঁর লিভারের কাছে পেটের এক কোণে অ্যামনিওটিক থ্যাকের ভেতরে বেড়ে উঠছে। ড. ওজিমেক জানান, ভ্রূণটি লিভারের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে সরাসরি আক্রান্ত করেনি, বরং পেলভিসের পাশের দেয়ালে গেঁথে ছিল। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হলেও লিভারের তুলনায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণযোগ্য ছিল।

গত ১৮ আগস্ট এক জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ৮ পাউন্ড (৩.৬ কেজি) ওজনের রিউকে পৃথিবীতে আনা হয়। অস্ত্রোপচারের সময় সুজের সেই বিশাল সিস্টটিও অপসারণ করা হয়। অত্যধিক রক্তক্ষরণ হলেও চিকিৎসকদের দক্ষতায় সুজ এবং তাঁর সন্তান দুজনেই সুস্থভাবে ফিরে আসেন।

সুজের স্বামী অ্যান্ড্রু লোপেজ বলেন, ‘বাইরে শান্ত থাকলেও আমি ভেতরে-ভেতরে প্রার্থনা করছিলাম। যেকোনো মুহূর্তে স্ত্রী বা সন্তানকে হারানোর ভয় আমাকে তাড়া করছিল।’

বর্তমানে রিউ সম্পূর্ণ সুস্থ এবং প্রাণচঞ্চল। নিজের ১৮ বছর বয়সী বড় বোন কাইলার সঙ্গে তার খুনসুটি লেগেই থাকে। সামনেই রিউয়ের প্রথম বড়দিন। সুজ লোপেজ আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমি এখন অলৌকিক ঘটনায় বিশ্বাস করি। ঈশ্বর আমাদের জীবনের সেরা উপহারটি দিয়েছেন।’

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই কেস এতই বিরল যে তাঁরা এটি একটি মেডিকেল জার্নালে প্রকাশের পরিকল্পনা করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত