Ajker Patrika

মার্কিন বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হবে ওপেনএআইয়ের এআই মডেল

অ্যানডুরিলের কাউন্টার ড্রোন সিস্টেমে ওপেনএআই তার সফটওয়্যার একত্রিত করবে। ছবি: ডেইরি সান
অ্যানডুরিলের কাউন্টার ড্রোন সিস্টেমে ওপেনএআই তার সফটওয়্যার একত্রিত করবে। ছবি: ডেইরি সান

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা স্টার্টআপ ‘অ্যানডুরিল’ এর সঙ্গে অংশীদারত্ব করেছে বিশ্বের অন্যতম প্রধান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) কোম্পানি ওপেনএআই। মার্কিন সামরিক বাহিনীর জন্য মিসাইল, ড্রোন এবং সফটওয়্যার তৈরি করে থাকে স্টার্টআপটি। এই চুক্তির মাধ্যমে ওপেনএআইয়ের এআই মডেলগুলো মার্কিন বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলোয় ব্যবহার করা হবে। ফলে প্রযুক্তি শিল্প প্রতিরক্ষার শিল্পের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠবে।

গত বুধবার এক বিবৃতিতে ওপেনএআইয়ের সিইও স্যাম অল্টম্যান বলেন, ওপেনএআই এমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরি করার চেষ্টা করে, যা যত বেশি সম্ভব মানুষের উপকারে আসে। সেইসঙ্গে মার্কিন নেতৃত্বাধীন প্রচেষ্টাগুলোকে সমর্থন করে যাতে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বজায় রাখতে সাহায্য করে প্রযুক্তি।

এক বিবৃতিতে অ্যান্ডুরিলের কোফাউন্ডার এবং সিইও ব্রায়ান শিম্পফ বলেন, ওপেনএআই-এর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেলগুলো বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে। অ্যানডুরিলের কাউন্টার ড্রোন সিস্টেমে ওপেনএআই তার সফটওয়্যার একত্রিত করবে, যা ড্রোন শনাক্ত করে এবং তাদের ধ্বংস করে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ‘আমরা একত্রে দায়বদ্ধ সমাধান তৈরি করতে প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা সামরিক ও গোয়েন্দা অপারেটরদের উচ্চ চাপপূর্ণ পরিস্থিতিতে দ্রুত এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক ওপেনএআই কর্মী বলেন, ‘ড্রোন হুমকি দ্রুত এবং সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে অপারেটরদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করতে, যাতে তারা ক্ষতির সম্মুখীন না হয়ে কাজ করতে পারে ওপেনএআই-এর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।’

এই বছর শুরুতে তার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সামরিক ব্যবহারের নীতিতে পরিবর্তন করেছে ওপেনএআই। ওই সময়ে কোম্পানিতে কাজ করা এক সূত্র জানায় যে, কিছু কর্মী এই পরিবর্তনে অসন্তুষ্ট ছিলেন, তবে কোনোও প্রকাশ্য প্রতিবাদ হয়নি। দ্য ইন্টারসেপ্টের রিপোর্ট অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই মার্কিন সামরিক বাহিনী কিছু ওপেনএআই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।

অ্যানডুরিল একটি উন্নত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করছে, যা ছোট ও স্বয়ংক্রিয় বিমানগুলোর একটি দল নিয়ে গঠিত, যা একযোগে বিভিন্ন মিশনে ব্যবহার করা হয়। এই বিমানগুলো একটি ইন্টারফেসের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত। এই ইন্টারফেস আবার লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এটি স্বাভাবিক ভাষায় নির্দেশাবলি ব্যাখ্যা করে এবং সেগুলোকে এমন নির্দেশনায় রূপান্তরিত করে, যা মানব পাইলট এবং ড্রোন উভয়ই বুঝতে ও সম্পন্ন করতে পারে। এখন পর্যন্ত অ্যানডুরিল পরীক্ষামূলক উদ্দেশ্যে ওপেন সোর্স ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল ব্যবহার করে আসছিল।

অ্যানডুরিল বর্তমানে তার স্বয়ংক্রিয় সিস্টেমগুলো নিয়ন্ত্রণে উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করছে না বা তাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে অনুমতি দিচ্ছে না। এমন একটি পদক্ষেপ আরও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, বিশেষ করে বর্তমানের মডেলগুলোর অনিশ্চয়তার দিকে নজর দিলে।

কয়েক বছর আগে সিলিকন ভ্যালির অনেক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষক সামরিক বাহিনীর সঙ্গে কাজ করতে দৃঢ়ভাবে বিরোধিতা করেছিলেন। ২০১৮ সালে, হাজার হাজার গুগল কর্মী মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করা নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন, যা তখন পেন্টাগনের মধ্যে ‘মাভেন’ প্রকল্প নামে পরিচিত ছিল। পরে গুগল ওই প্রকল্প থেকে সরে আসে।

তবে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর কিছু মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি এবং কর্মী তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে সরকারের দৃষ্টিতে একটি পরিবর্তনশীল এবং ভূ-রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে। সামরিক কাজের প্রতি আরও খোলামেলা মনোভাব দেখাচ্ছে অনেক প্রযুক্তি কোম্পানি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোম্পানির জন্য একটি লাভজনক রাজস্ব উৎস হতে পারে প্রতিরক্ষা চুক্তি, যারা গবেষণা ও উন্নয়নে বিপুল পরিমাণ পুঁজি বিনিয়োগ করতে বাধ্য।

ওপেনএআই-এর প্রতিদ্বন্দ্বী হলো আরেক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্টার্টআপ অ্যানথ্রোপিক। কোম্পানিটি গত মাসে ঘোষণা করেছে, এটি প্রতিরক্ষা ঠিকাদার প্যালানটির সঙ্গে একটি অংশীদারত্ব চুক্তি করেছে, যাতে ‘মার্কিন গোয়েন্দা ও প্রতিরক্ষা এজেন্সি’গুলোকে তার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেলগুলোতে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। প্রায় একই সময়ে মেটা জানিয়েছে যে, তারা মার্কিন সরকারি সংস্থা এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক প্রকল্পে নিয়োজিত ঠিকাদারদের জন্য ওপেন সোর্স কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি প্রদান করছে, যাদের মধ্যে অ্যানডুরিল, প্যালানটির, বুজ অ্যালেন, লকহিড মার্টিন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এক বিবৃতিতে অল্টম্যান বলেছেন, সামরিক বাহিনী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যথাযথভাবে ব্যবহার করছে তা নিশ্চিত করবে ওপেনএআই। অ্যানডুরিলের সঙ্গে অংশীদারত্ব নিশ্চিত করবে যে, ওপেনএআই প্রযুক্তি মার্কিন সামরিক কর্মীদের রক্ষা করবে এবং জাতীয় নিরাপত্তা সম্প্রদায়কে এই প্রযুক্তি বুঝতে ও দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করতে সহায়তা করবে যাতে আমাদের নাগরিকদের নিরাপদ এবং মুক্ত রাখা যায়।’

অ্যানডুরিলের প্রতিষ্ঠাতা হলেন অকুলাস ভিআর-এর স্রষ্টা পালমার লাকি। অ্যানডুরিল তার আধুনিক প্রযুক্তি সফটওয়্যার দিয়ে পুরোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বদলানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই কারণে পুরোনো ও বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর ঠিকাদার চুক্তি হারালেও তারা কিছু বড় প্রতিরক্ষা চুক্তি পেয়েছে।

তথ্যসূত্র: এনগেজেট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিবিএসের জরিপ: ইন্টারনেটের আওতার বাইরে দেশের ৪৪% পরিবার

  • মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবার।
  • ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ ব্যবহার করে স্মার্টফোন।
  • কম্পিউটারের ব্যবহার বেড়েছে, কমেছে রেডিও শোনা।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ১০
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এই হার গ্রামাঞ্চলে ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শহরে ৬৪ শতাংশ।

‘ব্যক্তি ও খানা পর্যায়ে জেলাভিত্তিক আইসিটি ব্যবহারের সুযোগ ও প্রয়োগ পরিমাপ’ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করে বিবিএস। এতে পরিবারগুলোয় মোবাইল ফোন, ফিক্সড ফোন, টেলিভিশন, রেডিও ও কম্পিউটার ব্যবহারের চিত্রও উঠে আসে।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে টেলিভিশন, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের হারও। তবে কমেছে স্মার্টফোন ও রেডিওর ব্যবহার।

‘আইসিটি প্রয়োগ ও ব্যবহার জরিপ’-এ পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী এবং শহর-পল্লি অঞ্চল অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে আইসিটির সূচকসমূহ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। সারা দেশে ২ হাজার ৫৬৮টি নির্বাচিত নমুনা এলাকায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২৪টি করে মোট ৬১ হাজার ৬৩২টি খানায় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

জরিপের বিষয়ে বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, জরিপের খানা ও ব্যক্তি পর্যায়ে আইসিটির সূচকগুলো আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) আলোকে নেওয়া হয়েছে। জরিপে খানায় রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ইন্টারনেটের এক্সেস এবং ব্যক্তি পর্যায়ে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের ব্যবহার, মোবাইল ফোনের মালিকানার ফলাফল প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের অনেক মানুষ ডিজিটাল সেবার বাইরে। এই জরিপে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) এর আওতায় আনা হলে পরিসংখ্যান হয়তো পাল্টাবে।

তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সচেতনতার অভাবে এখনো অর্ধেক মানুষ ডিজিটাল সিস্টেমের আওতার বাইরে রয়েছে, যাদের বেশির ভাগ গ্রামাঞ্চল এবং পার্বত্য এলাকার। তারা ডিজিটাল সেবাকে ভয় পায়।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে রয়েছে স্মার্টফোন। স্মার্টফোন ব্যবহারে শহরাঞ্চল এগিয়ে। শহরে ৮০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং গ্রামে ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার স্মার্টফোন ব্যবহার করে। এ ছাড়া ফিক্সড ফোন ব্যবহার করে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার। কম্পিউটার ব্যবহার করে ৯ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার। আর ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে।

অন্যদিকে, ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে টেলিভিশন দেখা হয় এবং ১৫ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করে বলে জরিপে উঠে এসেছে। আর বিদ্যুৎ সুবিধা রয়েছে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে।

এর আগের বছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশের ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিল। এর মধ্যে স্মার্টফোন ছিল ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ১ শতাংশ বাড়লেও স্মার্টফোনের ব্যবহার কমেছে দশমিক ৪ শতাংশ।

২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে পারিবারিকভাবে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ছিল ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখান থেকে এই হার দশমিক ২ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম-শহরভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলে ১৪ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করলেও শহরে এই হার ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ।

জরিপের ব্যক্তি পর্যায়ের বিশ্লেষণে দেখানো হয়, ২০২৫ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছে, যা এক বছর আগে ছিল ৭৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে মোবাইল ব্যবহারকারী বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নারী ৭৮ দশমিক ৮ শতাংশ।

তবে ব্যক্তিমালিকানাধীন মোবাইল ফোনের ব্যবহার কিছুটা কমেছে। ২০২৪ সালে যেখানে এ হার ছিল ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশে। কম্পিউটার ব্যবহারের হারও সামান্য কমে ১০ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমেছে। বিপরীতে, ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ২০২৪ সালে ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।

বিবিএস জানায়, এই জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পরিমাপ এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) জন্য আইসিটি সূচক সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। ছবি: আজকের পত্রিকা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া।

রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার ‘বিল্ডিং ট্রাস্ট অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি থ্রু ডেটা গভর্ন্যান্স’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (ইডিজিই প্রকল্প) এই সম্মেলনের আয়োজন করে।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির অভাব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

তৈয়্যব জানান, অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে সাইবার সেফটি, ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা ও জাতীয় ডেটা গভর্ন্যান্স—এই তিন আইনি ভিত্তি গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে, যা ভবিষ্যৎ ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারের (ডিপিআই) মূল স্তম্ভ হবে। ভবিষ্যতে প্রতিটি নাগরিকের একটি ডিজিটাল ডেটা ওয়ালেট থাকবে; যেখানে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তথ্য সুরক্ষিত থাকবে এবং নাগরিকের সম্মতিতেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডেটা ব্যবহার করা যাবে।

সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, কার্যকর ডেটা গভর্ন্যান্স কেবল নীতিমালা প্রণয়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এর জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, আন্তখাত সমন্বয় এবং সুস্পষ্ট জবাবদিহি কাঠামো। সরকারি ও বেসরকারি খাতে ডিজিটাল সেবার পরিসর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বশীল ডেটা ব্যবহার, নিরাপত্তা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জনআস্থা অর্জন ও টেকসই ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সম্মেলনে তিনটি আলাদা অধিবেশনে ডেটা সুরক্ষা নীতিমালার বাস্তব প্রয়োগ, আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে বাংলাদেশের ডেটা ব্যবস্থাপনার তুলনা এবং ডেটা ব্যবস্থাপনায় পেশাদার হিসাববিদদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়।

সম্মেলনে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের (আইএফএসি) সভাপতি জ্যঁ বোকু, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান অঞ্চলের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যঁ পেসমেসহ সরকারি নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, পেশাদার হিসাববিদ, আইন ও প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ার ব্যাটারির সাশ্রয়ী ফোন আনল রিয়েলমি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।

ফোনটিতে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বিজয়ী ইন্ডাস্ট্রির সর্বোচ্চ ওয়াটার অ্যান্ড ডাস্ট প্রোটেকশন স্ট্যান্ডার্ড—আইপি ৬৯ প্রো রেটিং রয়েছে, যা এটিকে ৬০ দিন পর্যন্ত পানির নিচে টিকে থাকতে সাহায্য করে।

এতে রয়েছে ৬.৮ ইঞ্চি অ্যামোলেড ডিসপ্লে, যার রিফ্রেশ রেট সুপার-স্মুথ ১৪৪ হার্জ এবং পিক ব্রাইটনেস ১,২০০ নিট।

ডিভাইসটিতে স্ন্যাপড্রাগন ৬৮৫ ফোরজি প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। ফটোগ্রাফির জন্য পেছনে ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা এবং সামনে ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা রয়েছে।

রিয়েলমি সি৮৫ সোয়ান ব্ল্যাক ও কিংফিশার ব্লু রঙে দুইটি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে: ৬ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ১৮,৯৯৯ টাকা। ৮ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ২০,৯৯৯ টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এআইকে ব্যক্তিগত অর্থ উপদেষ্টা বানালেন ২৭ বছরের এই সিইও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
তাকি ওং। ছবি: রয়টার্স
তাকি ওং। ছবি: রয়টার্স

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন আর শুধু প্রযুক্তি খাতেই সীমাবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনাতেও এটি হয়ে উঠছে নতুন ভরসা। বিশেষ করে জেন-জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্মের মধ্যে এআই ব্যবহার করে খরচ নিয়ন্ত্রণ ও সঞ্চয় বাড়ানোর প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। এরই একটি উদাহরণ কানাডার অন্টারিওভিত্তিক একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা তাকি ওং।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ২৭ বছর বয়সী তাকি ওং ব্যস্ত পেশাজীবীদের জন্য এআই টুল তৈরি করেন। তবে নিজের ব্যক্তিগত অর্থ পরিচালনায়ও তিনি এআইয়ের ওপর ভরসা রাখেন। গুগলের জেমিনি এআই মডেলকে তিনি নিজের ‘২৪ ঘণ্টার ব্যক্তিগত আর্থিক উপদেষ্টা’ বলে মনে করেন।

ওং জানান, প্রতি মাসে তিনি নিজের ক্রেডিট কার্ড ও অন্যান্য খরচের হিসাব নিজে হাতে এআইয়ে ইনপুট দেন। এরপর এআই সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে তাঁকে জানায় কোথায় অপ্রয়োজনীয় খরচ হচ্ছে।

ওংয়ের ভাষায়, এআই কখনো বলে দেয়—‘তুমি হয়তো রেস্তোরাঁয় বেশি খাচ্ছ’, আবার কখনো সতর্ক করে—‘এই সাবস্ক্রিপশনগুলো অপ্রয়োজনীয়।’ এই ধরনের বিশ্লেষণের ফলেই তিনি বাইরে খাওয়ার খরচ মাসে ৬০০ ডলার থেকে কমিয়ে ২০০ ডলারে নামাতে পেরেছেন। একইভাবে টিভি ও অন্যান্য সাবস্ক্রিপশনের খরচ ৩০০ ডলার থেকে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫০ ডলারে।

তবে সুবিধার পাশাপাশি সতর্কতাও অবলম্বন করছেন তিনি। ওং স্পষ্ট করে বলেন, তিনি কখনোই এআইয়ের সঙ্গে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যুক্ত করেন না। শুধুমাত্র মোট খরচের সংখ্যা বা সামগ্রিক তথ্যই তিনি শেয়ার করেন, যাতে ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষিত থাকে।

এই প্রবণতা শুধু ওংয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এআই ব্যবহারকারী আমেরিকানদের একটি বড় অংশ আর্থিক পরামর্শ নিতে এআইয়ের ওপর নির্ভর করছে। এঁদের মধ্যে জেন জি ও মিলেনিয়ালদের হার ৮২ শতাংশ। যুক্তরাজ্যেও প্রায় তিনজনের একজন নিয়মিত ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনায় এআই ব্যবহার করেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এআই সময় বাঁচাতে ও খরচের দুর্বল জায়গা চিহ্নিত করতে সহায়ক হলেও সব পরামর্শ যাচাই করে নেওয়া জরুরি। পাশাপাশি ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকাই সবচেয়ে নিরাপদ পথ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত