Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

এর চেয়ে তো রিকশা চালানো ভালো

এর চেয়ে তো রিকশা চালানো ভালো
রানা আব্বাস
আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৪, ১০: ০৩

বাংলাদেশের আর্চারিতে গতকাল সকালটা ছিল অস্থিরতায় ভরা। হঠাৎ ছড়িয়ে পড়ল, আন্তর্জাতিক আর্চারি থেকে অবসর নিয়েছেন ২০২১ টোকিও অলিম্পিকে সরাসরি সুযোগ পাওয়া তিরন্দাজ রোমান সানা। অবসরের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আজকের পত্রিকার কাছে শুধু ক্ষোভই নয়, অনেক আফসোস-আক্ষেপও ঝরেছে দেশের তারকা তিরন্দাজের কণ্ঠে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস

প্রশ্ন: আপনার এত বড় সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ কী?
রোমান সানা: হতাশা, আক্ষেপ থেকে। ১৪ বছর ধরে আর্চারি খেললাম। এখন আমার পরিবার বড় হয়েছে। খরচ বেড়েছে সবকিছুর। একটা জাতীয় দলের খেলোয়াড় যদি তাঁর স্ত্রী-পরিবার না চালাতে পারে, এর চেয়ে দুঃখের আর কী হতে পারে। স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে...।

প্রশ্ন: আপনাদের হাত ধরে আর্চারি পরিচিতি পেয়েছে দেশে। কিন্তু এখানে শীর্ষস্থানীয় খেলোয়াড় হিসেবে আপনার এই আর্থিক দুর্দশা না কাটার কারণ কী?
রোমান: ৩ হাজার টাকা বেতন দেয়। সেটাও ২০২৩ সাল থেকে। এর আগে ছিল ৫০ টাকা দৈনিক ভাতা। ২০১৯ সালে যখন তীর আসে স্পনসর হিসেবে, তখন সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়েছিল।  র‍্যাঙ্কিংয়ের এক ও দুই নম্বর খেলোয়াড়কে ৫ ও ৭ হাজার টাকা দিত। তখন আমি টপ হিসেবে ৭ হাজার টাকা পেতাম। আর পদক পেলে এদিক-সেদিক থেকে ২০-৩০ হাজার টাকা আসত। বছর শেষে হয়তো এক, দেড় লাখ টাকা পেতাম। চিন্তা করুন, এই হচ্ছে অবস্থা। দেশের বাইরে খেলতে গেলে পুরো সফরে পকেটমানি দেয় ১০০ ডলার। দিনপ্রতি গড়ে ১৫ ডলার।  এভাবে কত দিন খেলব? আমার নিষেধাজ্ঞার পর ব্যক্তিগত পৃষ্ঠপোষক থেকে শুরু করে সব চলে গেল। তবু কত কিছু করে নিজেকে ফিরিয়েছি ভালো করে খেলব বলে। যত সঞ্চয় ছিল, সব শেষ। এখন সংসার চালাতে গেলে... আমাকে ঢাকায় থাকতে হবে। দলের সঙ্গে থাকতে পারি না, ৫ হাজার টাকা বেতন। একটি মোটামুটি বাসযোগ্য ভালো বাসাভাড়াও ১০ হাজার টাকার ওপরে। আনসারে বেতন পাই ২৫ হাজার টাকা। ১০-১৫ হাজার যদি বাসা ভাড়া যায়, মায়ের ওষুধ, থাকা-খাওয়া, চলার খরচ...এভাবে যদি জাতীয় দলের একজন খেলোয়াড়কে জীবনযাপন করতে হয়! সবাই বলবে আপনি তাহলে কী আয়-উপার্জন করেছেন, সেসব দিয়ে কী করেছেন। আমি কী-ইবা আয় করেছি?     

প্রশ্ন: আপনার চরম আর্থিক দুর্দশা সামনে আসছে, কিন্তু এ সংকট নিরসনে নীতিনির্ধারকেরা কী ভূমিকা রাখছেন এখানে?
রোমান: দেখুন, কোন ইভেন্ট থেকে ভালো ফল আনিনি? অল্পিম্পিক কোয়ালিফাই করলাম, ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ, বিশ্বকাপ, এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ, এশিয়া কাপ—বাংলাদেশের কোন অ্যাথলেটের এত ফল আছে দেখান। অথচ দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে সোনা পাওয়া অ্যাথলেটরা সবকিছু পাচ্ছেন। দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে বাদে আমাদের সোনার পদক দেখিয়ে দিন। আজ আমার কষ্টে দিন যায়, সংসার চালাতে হিমশিম খাই। আমি নাকি এত বড় খেলোয়াড়। অথচ ভারতে দুই বছর আর্চারি খেলা একজন খেলোয়াড়কে দেখেন, সুযোগ-সুবিধায় কত পার্থক্য। ১৪ বছর ধরে খেলি, আফসোস হয়। তারা ভালো খেলবে না কেন? পদকপ্রাপ্ত একজন অ্যাথলেটকে কী যত্ন নেয় তারা। আমাদের আনুষঙ্গিক আনুষ্ঠানিকতা আছে, তবে খেলোয়াড়দের টাকা নেই।   

প্রশ্ন: অবসর নিলেই যে আপনার জীবনের সংকট দ্রুত দূর হয়ে যাচ্ছে, সে নিশ্চয়তাও কি পাচ্ছেন?
রোমান: আমার হাতে অনেক অপশন আছে। আনসার আমাকে বেশ সুযোগ-সুবিধা দেয়। জাতীয় পর্যায়ে খেলে বাকি ছয় মাস বাড়িতে থাকলাম। এই যে সময়টা, এ সময়ে যদি আমি রিকশাও চালাই, তবু মাসে ১০ হাজার টাকা আয় করতে পারব। শুধু বোঝানোর জন্য বলছি। পৃথিবীতে কাজের তো অভাব নেই। তারা আমাকে দৈনিক ৮ ঘণ্টার পরিশ্রমে ৩ হাজার টাকা দেয়। এর চেয়ে তো রিকশা চালানো ভালো! 

 প্রশ্ন: সর্বোচ্চ পর্যায়ে থেকে যদি আপনাকে আবার অনুরোধ করা হয় অবসর ভেঙে ফেরার, কী করবেন তখন?
রোমান: আমি অবশ্যই ফিরব, তবে শর্ত সাপেক্ষে। আমাকে সুযোগ-সুবিধা দেবে, আমি খেলব। এ ছাড়া খেলব না, পরিষ্কার কথা। এই কথাটা বলতে আমার কষ্ট হচ্ছে। আমার জীবনে এ রকম পরিস্থিতি আসবে, কথা বলতে হবে—কল্পনাও করিনি।   

প্রশ্ন: কেউ কেউ বলছেন, ফর্ম হারিয়ে ছিটকে পড়েছেন ইরাকের বাগদাদে হওয়া এশিয়া কাপের দল থেকে। সব মিলিয়ে হতাশ আপনি, এ রকম বিষয়ও আসছে।
রোমান: বাগদাদে যেতে পারিনি, আমাকে দল থেকে বাদ দিয়েছে। কোচ যে দল নির্বাচন করে গেছেন, সেই দল বাদ দিয়ে বিকেএসপির সঙ্গে মিলিয়ে আরেকটা নিয়ে গেছে। দলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি তো সবাই জানে না। এগুলো বললে সহ্য করতে পারবে না অনেকেই। আমি রোমান সানা কোনো কোয়ালিফাই ছাড়া গেছি, দেখাক। ট্রায়ালে সেরা পাঁচে থেকেছি ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে। দয়ার ভিত্তিতে দলে সুযোগ পাইনি, প্রমাণ প্রতিবছরের প্রতিটি রেজাল্ট শিট। যারা এটা বলে, তাদের প্লিজ রেজাল্ট শিট দেখতে বলবেন। অন্য খেলোয়াড়েরা ভালো না করলেও দলে রাখছেন, তাদের নিয়ে তো এত কথা আসছে না। রোমান সানা চলে গেল, তাকে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন পারফরম্যান্স নিয়ে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুয়াকাণ্ডে তুরস্কের ২৯ ফুটবলারেক প্রেপ্তারের নির্দেশ

ক্রীড়া ডেস্ক    
বাজি কেলেঙ্কারিতে টালমাটাল তুর্কি ফুটবল। ছবি: এক্স
বাজি কেলেঙ্কারিতে টালমাটাল তুর্কি ফুটবল। ছবি: এক্স

বাজি কেলেঙ্কারিতে কিছুদিন ধরেই টালমাটাল তুর্কি ফুটবল। এই অভিযোগে গত দুই মাসে নিষেধাজ্ঞার হিড়িক চলছে দেশটিতে। এবার আরও একটি বাজে খবর এল তুর্কি ফুটবলে। অবৈধ বাজি ধরার অভিযোগে আজ ৪৬ জনকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে ইস্তাম্বুলের প্রসিকিউটররা। এর মধ্যে ২৯ জনই ফুটবলার।

অভিযুক্ত ফুটবলাররা কোন ক্লাবের সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা ২০২৩-২০২৪ মৌসুমে তৃতীয়-বিভাগের একটি ম্যাচে বাজি কাণ্ডে জড়ায় দুটি ক্লাব। বাজি কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ছিলেন খোদ ওই দুই ক্লাবের সভাপতি।

প্রসিকিউটরের অফিস জানিয়েছে, গ্রেপ্তারের আদেশে থাকা ৪৬ জনের মধ্যে পুলিশ এখন পর্যন্ত ৩৫ জনকে আটক করেছে। পাঁচজন বিদেশে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত খেলোয়াড়দের মধ্যে ২৭ জন তাদের নিজস্ব দলের ম্যাচে বাজি ধরার অভিযোগে অভিযুক্ত।

তাদের মধ্যে একজন হলেন মেতেহান বালতাচি, যিনি বর্তমান তুর্কি চ্যাম্পিয়ন গালাতাসারাইয়ের হয়ে খেলছেন। এই মাসের শুরুতে বাজি কেলেঙ্কারিতে তাঁকে নয় মাসের জন্য বরখাস্ত করেছিল তুর্কি ফুটবল ফেডারেশন (টিএফএফ)।

তুর্কি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অভিযুক্ত ম্যাচটি সহজেই তদন্তকারীদের দৃষ্টিতে আসে। কারণ, সে ম্যাচে কোনো দলই গোল করার জন্য ন্যূনতম চেষ্টা করেনি। বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সেখান থেকেই পুরো তদন্ত শুরু হয়েছিল।

প্রসিকিউটররা তাদের নিজস্ব দলের সাথে বাজি ধরার সন্দেহে থাকা অন্য ২৬ জন খেলোয়াড়কে শনাক্ত করতে পারেননি। তবে বলেছেন যে ইস্তাম্বুলের আরেকটি প্রধান ক্লাব ফেনারবাচের হয়ে খেলা মের্ট হাকান ইয়ান্দাস অন্য কারো অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বাজি ধরেছিলেন।

এখন পর্যন্ত ১০০০ এর বেশি তুর্কি খেলোয়াড়কে বরখাস্ত করেছে টিএফএফ। এর মধ্যে দেশটির সুপার লিগের ২৫ জন ফুটবলার আছেন। এদের ৪৫ দিন থেকে সর্বোচ্চ ১ বছর পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ৯০০ জনেরও বেশি ফুটবলার তৃতীয় এবং চতুর্থ বিভাগের। বাজি কাণ্ডে গত অক্টোবরে প্রায় ১৫০ জন রেফারিকে বরখাস্ত করেছে টিএফএফ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আবারও কিংসের বড় জয়, রাকিবের হ্যাটট্রিক অ্যাসিস্ট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড় জয় পেয়েছে কিংস। ফাইল ছবি
বড় জয় পেয়েছে কিংস। ফাইল ছবি

মৌসুমের শুরুটা তারা করেছে নবাগত পিডব্লিউডি স্পোর্টস ক্লাবের বিপক্ষে ড্র করে। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বাংলাদেশ ফুটবল লিগে টানা চার ম্যাচে জয় তুলে নিল বসুন্ধরা কিংস। আজ ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। এনিয়ে টানা দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ৫ গোল করে বড় জয় আদায় করল মারিও গোমেসের দল।

মুন্সিগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে কিংসকে ৪১ মিনিটের বেশি সামলে রাখতে পারেনি ব্রাদার্স। রাকিব হোসেন ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে। ডানপ্রান্ত ত্রাস সৃষ্টি করা এই উইঙ্গার পেয়েছেন হ্যাটট্রিক অ্যাসিস্টের স্বাদ। যদিও গোলের দেখা পাননি। দোরিয়েলতনকে দিয়ে প্রথম গোলের উপলক্ষ্য এনে দেন তিনি। ডানপ্রান্ত দিয়ে বাড়ানো ক্রস দুই ডিফেন্ডারের মাথার ওপর দিয়ে হেডে জালে পাঠান দোরিয়েলতন।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। দোরিয়েলতনের শট ব্রাদার্স গোলরক্ষক ইশাক আলী ফিরিয়ে দিলেও রিবাউন্ড শটে জাল খুঁজে নেন তিনি।

বিরতির পর আরও ক্ষিপ্র হয়ে ওঠে কিংস। ৫০ মিনিটে রাকিবের কাটব্যাক থেকে বার ঘেঁষে গোল আদায় করেন এমানুয়েল সানডে। চার মিনিট পর আবারও রাকিবের অ্যাসিস্ট। এবার তাঁর ব্যাকপাসে ডিফ্লেক্টেড শটে বল জালে পাঠান সোহেল রানা জুনিয়র। ৭৭ মিনিটে শাহরিয়ার ইমনের লং পাস থেকে নিজের দ্বিতীয় গোলের দেখা পান দোরিয়েলতন। ৯০ মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার কর্নার থেকে হেডে ব্যবধান কমান ব্রাদার্সের মোজাম্মেল হোসেন নীরা।

৫ ম্যাচে ৪ জয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরও পোক্ত করল কিংস।  দ্বিতীয় হারের স্বাদ পাওয়া ব্রাদার্স ৭ পয়েন্ট নিয়ে আছে চারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিদায়ী ম্যাচের আগে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন মেসির সতীর্থ

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৮
বার্সেলোনায় একসঙ্গে খেলার সময় ইন্টার মায়ামিতেও সতীর্থ জর্দি আলবা ও লিওনেল মেসি। আলবা আগামীকাল তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে নামবেন। ছবি: এএফপি
বার্সেলোনায় একসঙ্গে খেলার সময় ইন্টার মায়ামিতেও সতীর্থ জর্দি আলবা ও লিওনেল মেসি। আলবা আগামীকাল তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে নামবেন। ছবি: এএফপি

পেশাদার ক্যারিয়ারে কাউকে না কাউকে একদিন ফুলস্টপ তো দিতেই হয়। সেই বিদায়টা যদি হয় শিরোপা দিয়ে, তাহলে এর চেয়ে স্মরণীয় আর কী হতে পারে! জর্দি আলবারও ফুটবল ক্যারিয়ারের বিদায় বলার সময় এসে গেছে। আগামীকাল এমএলএস কাপ ফাইনাল ম্যাচটা তাই আলবার কাছে অন্য সব ম্যাচের চেয়ে আলাদা।

এ বছরের অক্টোবরে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন আলবা। ২০২৫ এমএলএস দিয়ে শেষ করবেন তাঁর দীর্ঘ ২০ বছরের ক্যারিয়ার। চেজ স্টেডিয়ামে আগামীকাল বাংলাদেশ সময় রাত দেড়টায় শুরু হবে এমএলএস কাপের ইন্টার মায়ামি-ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপস ফাইনাল ম্যাচ। এই ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন আলবা। ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচের সময় মুহূর্তটা কেমন হবে, সেটা অনুভব করতে পারছেন তিনি। ৩৬ বছর বয়সী স্প্যানিশ এই ডিফেন্ডার বলেন, ‘এটা একেবারে আলাদা। কারণ, আমি জানি ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। অবশ্যই এটা ফাইনাল ম্যাচ। এর গুরুত্ব আছে। কিন্তু এটা ক্লাব ছাপিয়ে বড় কিছু। যা-ই হোক না কেন, আমি ছেড়ে যাচ্ছি। অবশ্যই শিরোপা দিয়ে শেষ করতে চাই।’

২০১২ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত ১১ বছর বার্সেলোনায় খেলেছেন জর্দি আলবা। যে ২০২৩ সালে মেসি প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি) ছেড়ে ইন্টার মায়ামিতে গিয়েছেন, সে বছরই আলবা পাড়ি জমান ইন্টার মায়ামিতে। বার্সা থেকে যখন বিদায় নিয়েছিলেন, সেই মুহূর্তের কথা এমএলএস কাপ ফাইনালের আগের দিন স্মরণ করেছেন। আলবা বলেন, ‘আমি জানি না কীভাবে এটা সামলাব। সেই আবেগময় মুহূর্তটা অনুভব করা যায় না। বার্সেলোনার হয়ে আমার শেষ ম্যাচের দিনও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। তবে এটা (এমএলএস কাপ ফাইনাল) তো শুধু দলবদল নয়। আমার তো এরপর আর মাঠেই নামা হবে না।’

ইন্টার মায়ামি যেন বার্সেলোনার সাবেক ফুটবলারদের মিলনমেলা হয়ে উঠেছে। মেসি, সুয়ারেজ, সার্জিও বুসকেতস, আলবারা ফের মিলেছেন মায়ামিতে এসে। মেসি আসার পর ২০২৩ সালে লিগস কাপ, ২০২৪ সালে সাপোর্টার্স শিল্ড—এই দুটি শিরোপা জিতেছে মায়ামি। যে স্টেডিয়ামেই ইন্টার মায়ামির ম্যাচ হোক না কেন, মেসির খেলা দেখতে গ্যালারি ভরপুর হয়ে ওঠে। তাঁর সঙ্গে সেলফি তুলতে ভক্ত-সমর্থকেরা উন্মুখ হয়ে থাকেন। গত বছর কোপা আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্রের যে স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার খেলা হয়েছে, সেখানে তাঁর জার্সি পরিহিত ভক্ত-সমর্থকদের মাঠে দেখা গেছে।

মেসি-সুয়ারেজদের সঙ্গে আবার যে পুনরায় একত্র হতে পেরেছেন, সেটা আলবার কাছে রোমাঞ্চকর। ৩৬ বছর বয়সী স্প্যানিশ ডিফেন্ডার বলেন, ‘নতুন একধরনের অভিজ্ঞতা হবে। তবে রোমাঞ্চকর। সাবেক সতীর্থদের সঙ্গে আবার পুনর্মিলন হয়েছে। ক্লাবটা (ইন্টার মায়ামি) কতটা গড়ে উঠেছে, সেটা স্পষ্ট। ফাইনালে ওঠা ইন্টার মায়ামির জন্য ঐতিহাসিক। তাদের সঙ্গে অনেক ম্যাচ খেলতে পেরে সৌভাগ্য।’ বার্সার জার্সিতে আলবা ছয়বার লা লিগা ও একবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন। আগামীকাল এমএলএস কাপ ফাইনাল জিতলে মায়ামির হয়ে শিরোপার হ্যাটট্রিক করবেন তিনি। মেসির মতো আলবাও মায়ামির হয়ে লিগস কাপ ও সাপোর্টার্স শিল্ডের শিরোপা জিতেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতের দুর্বলতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন হরভজন

ক্রীড়া ডেস্ক    
৩৫৮ রান করেও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে পারেনি ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো
৩৫৮ রান করেও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে পারেনি ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো

টেস্টে পরিস্থিতি বদলে দেওয়ার মতো বোলারের অভাব নেই ভারতের। যশপ্রীত বুমরা, মোহাম্মদ সিরাজ, আকাশ দীপরা নিজেদের দিনে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের জন্য যমদূত হয়ে উঠেন। এদিক থেকে দলটির সাদা বলের ক্রিকেটের বোলিং লাইন ব্যতিক্রম বলে মনে করেন হরভজন সিংহ। তাঁর মতে, ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টিতে ভারতের যথেষ্ট ম্যাচ উইনিং বোলার নেই।

সাদা বলের ক্রিকেটে ভারতের বোলিং লাইনের দুর্বলতা কেমন চলমান দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজই সেটার বড় প্রমাণ। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩৪৯ রান করেও স্বস্তিতে ছিল না স্বাগতিকেরা। বড় লক্ষ্যের পেছনে ছুটতে গিয়ে ১৩০ রানে ৫ উইকেট হারানোর পরও অলআউট হওয়ার আগে ৩২২ রান করে অতিথিরা।

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারতের পুঁজি ছিল আরও বেশি; ৩৫৮ রানের। এবার আর রক্ষা হয়নি লোকেশ রাহুলদের। ৪ বল এবং সমান উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ৮.২ ওভারে ৮৫ রান দেন প্রসিধ কৃষ্ণা। ১০ ওভার বল করা হার্শিত রানার খরচ ৭০ রান। এর আগে প্রথম ম্যাচেও খরুচে বোলিং করেছিলেন আর্শদীপ সিং, রানা, কুলদীপ, রবীন্দ্র জাদেজারা।

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে হরভজন বলেন, ‘ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজে বুমরাহ ছাড়াও সিরাজ অবিশ্বাস্য বোলিং করেছে। ভারত এমন সব টেস্ট জিতেছে যেখানে বুমরাহ খেলেনি। কিন্তু সাদা বলের ক্রিকেটে এমন সব বোলার খুঁজে বের করতে হবে যারা ম্যাচ জেতাতে পারবে। সেটা হোক পেসার কিংবা স্পিনার। এমন স্পিনার খুঁজে বের করতে হবে যারা মাঠে নেমে উইকেট নিতে পারে। দলে কুলদীপ আছে। কিন্তু বাকিদের কী হবে?’

দারুণ ফর্মে থাকার পরও অজানা কারণে দলের বাইরে আছেন মোহাম্মদ শামি। যেটা নিয়ে ভারতীয় ম্যানেজমেন্টকে ধুয়ে দিয়েছেন হরভজন, ‘শামি কোথায়? আমি জানি না কেন তাকে খেলাতে হচ্ছে না। আমি বুঝতে পারছি, দলে প্রসিধ আছে। সে একজন ভালো বোলার। কিন্তু তার এখনো অনেক কিছু শেখার আছে। দলে কয়েকজন ভালো বোলার ছিল। ধীরে ধীরে তাদের দলের বাইরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুমরা দলে থাকলে ভারতের বোলিং আক্রমণ ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। সে না থাকলে তেমন ধার থাকে না। তাই ভারতীয় দলকে বুমরা ছাড়া আমাদের খেলা জেতার কৌশল শিখতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত