Ajker Patrika

‘দুবাই যামু, ক্রিকেট দেখতে’

রানা আব্বাস, ঢাকা
‘দুবাই যামু, ক্রিকেট দেখতে’

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) গত শনিবার রাজস্থান-দিল্লির ম্যাচে টিভি ক্যামেরা (ড্রোন ক্যামেরাই হবে) আবুধাবি স্টেডিয়ামের বাইরের দৃশ্য দেখাচ্ছিল। চোখে পড়ল ঊষর মরভূমিতে চোখজুড়ানো টুকরো টুকরো সবুজ ভূমি।

মরুর রাজ্যে ক্রিকেটের বীজ বুনে দেওয়া হয়েছিল আশির দশকের শুরুতে। বিপুল আর্থিক বিনিয়োগ, প্রযুক্তির যথার্থ ব্যবহার আর উন্নত ব্যবস্থাপনায় এই ধূসর ভূমে সবুজ বৃক্ষের মতোই প্রাণবন্ত হয়েছে ক্রিকেট। আরব আমিরাত পরিণত হয়েছে ক্রিকেটের রাজধানী, অন্যভাবে বললে ক্রিকেট-হৃৎপিণ্ডে!

একটা সময় আমিরাতের ক্রিকেট-যজ্ঞের কেন্দ্র ছিল শারজা। আর তার বেশির ভাগই ছিল পাকিস্তানকেন্দ্রিক। গত দুই দশকে তার অংশীদার হয়েছে পুরো ক্রিকেটবিশ্ব। আরব আমিরাত যেন ক্রিকেটের জটিল সব সমীকরণ মেলানোর গ্রহণযোগ্য এক সূত্র।

২০১৮ এশিয়া কাপের আয়োজক ছিল ভারত। সে সময় ভারত-পাকিস্তান রাজনৈতিক বৈরিতা চরমে ওঠায় টুর্নামেন্টের পাশে বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন বসে যায়। রাজনৈতিক ঝামেলায় একটা অর্থকরী টুর্নামেন্ট ভেস্তে গেলে সবারই ক্ষতি—এ ভাবনায় একটা সমঝোতায় আসে এশীয় ক্রিকেটের পরাশক্তিরা। সমাধান হয় আমিরাত। ভারতের ব্যবস্থাপনায় সে টুর্নামেন্ট হয় দুবাই-আবুধাবিতে।

আশি-নব্বইয়ের দশকে পাকিস্তান শারজায় ওয়ানডে ক্রিকেট খেলেছে একটা সফরকারী দল হিসেবে। গত দুই দশকে আমিরাতে তাদের খেলতে হচ্ছে ‘হোমগ্রাউন্ড’ বানিয়ে। নিরাপত্তার ইস্যুতে পাকিস্তানে ওপরের সারির টেস্ট খেলুড়ে দলগুলো সহজেই যেতে চায় না। আফগানিস্তান দল এখনো নিজের দেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারে না। তাদের বড় সহায় এই মরুর দেশ। পাকিস্তান-আফগানিস্তান কেন, ‘বিপদে’ পড়ে ভারতও ঠাঁই নিয়েছে আমিরাতে। গত বছর করোনায় যখন আইপিএল নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা, তখন সমাধান হয়ে এসেছে দুবাই-আবুধাবি। আইপিএল না হওয়া মানে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি। সেই ক্ষতি ঠেকাতে গত বছর আইপিএলের তাঁবু পড়েছে মরুতেই।

এ বছর নিজের মাঠেই আইপিএল আয়োজন করেছিল ভারত। কিন্তু করোনার কাছে হার মেনে মাঝপথে টুর্নামেন্ট থেমে গেল। এই সংকট থেকে উতরে যাওয়ার বটিকা আবার সেই দুবাই-আবুধাবি। আইপিএলই নয়; বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের আয়োজকদের কাছে আকর্ষণীয় নাম আমিরাত। আর এবার প্রথমবারের মতো আইসিসির বড় টুর্নামেন্ট (কোনো বিশ্বকাপ) হতে যাচ্ছে এখানে। আগামী মাসে মরুতেই হবে সংক্ষিপ্ত সংস্করণে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের মঞ্চ—টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

জাভেদ মিয়াঁদাদ অবশ্য বলতে পারেন, আশির দশকেই আমিরাতে বড় বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হয়েছে। শারজার প্রতি ‘বড়ে মিয়া’র কী আত্মিক সম্পর্ক, ২০০৩ সালে প্রকাশিত তাঁর আত্মজীবনী ‘কাটিং এজে’ই পরিষ্কার। বইয়ে ‘শারজা’ নামে একটা অধ্যায়ই রেখেছেন মিয়াঁদাদ। সেটির শুরুতে লিখেছেন, ‘কে ভেবেছিল মধ্যপ্রাচ্যের একটি মরুর শহরে একদিন সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে ম্যাচ আয়োজন হবে! একটি ক্রিকেটের কেন্দ্র হিসেবে শারজার আবির্ভাব খেলাটার জন্যই ভালো হয়েছে। বিশেষ করে এশিয়ার ক্রিকেটে।’ বইয়ের আরেক জায়গায় লিখেছেন, ‘ক্রিকেটের অনেক ভালো কিছুর শুরু এই শারজায়।

নতুন এক ঠিকানায় বিশ্বমানের ক্রিকেট রপ্তানি হয়েছে, আধুনিক ক্রিকেটে সম্ভবত সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভৌগোলিক বিস্তার ছিল এটি। ক্রিকেট যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে, তেমনি নিরপেক্ষ ভেন্যু হওয়ায় ভারত-পাকিস্তানের দর্শকেরা দুই দেশের চিরবৈরিতা দূরে রেখে এক জায়গায় বসে সঠিক চেতনায় খেলাটা উপভোগ করেছে।’

মরুর দেশের প্রতি মিয়াঁদাদের ভালো লাগা আরও একটি কারণে। খেলোয়াড়ি জীবনের দুর্দান্ত কিছু কীর্তি তাঁর এখানেই। বিশেষ করে ১৯৮৬ সালের ১৮ এপ্রিল শারজায় অনুষ্ঠিত ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলেশিয়া কাপের সেই ফাইনাল। ২৪৬ রান তাড়া করতে নামা পাকিস্তানকে মিয়াঁদাদ অবিস্মরণীয় এক জয় এনে দিয়েছিলেন চেতন শর্মাকে শেষ বলে ছক্কা মেরে। যেটি আজও ক্রিকেট ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা রোমাঞ্চকর ম্যাচ হিসেবে বিবেচিত।

শুধু মিয়াঁদাদই নন; ক্রিকেটের অনেক কিংবদন্তিই গৌরবের চিহ্ন এঁকেছেন মরুতে। ১৯৯৮ সালের এপ্রিলে কোকাকোলা কাপটা বিখ্যাত হয়ে আছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শচীন টেন্ডুলকারের টানা দুটি দুর্দান্ত সেঞ্চুরির সৌজন্যে। দর্শকেরা শুধু দেখেন ক্রিকেটারদের ক্রিকেটশৈলীই। তবে মরুর কন্ডিশনে একজন খেলোয়াড়কে কতটা কঠিন পরীক্ষা দিতে হয় তা টেন্ডুলকার নিজেই বলেছেন তাঁর আত্মজীবনী ‘প্লেয়িং ইট মাই ওয়ে’-তে। দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করা কোকাকোলা কাপ ফাইনালের আগে নাকি তাঁর শরীরই চলছিল না। লিখেছেন, ‘সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর শরীর শক্ত হয়ে গেল। বাথরুমে হেঁটে যাওয়াটাও কঠিন হলো। পানিশূন্যতায় এটা হতে পারে। আমি যথেষ্ট পানি খেয়েছিলাম। ক্যারিয়ারের যে হাতে গোনা কয়েকবার সকালে সোজা হয়ে দাঁড়াতে সমস্যা হয়েছে, এটি ছিল তার একটি।’

এই চ্যালেঞ্জ উতরে পরের দিন শারজায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের ফাইনালে টেন্ডুলকার খেলেছিলেন ম্যাচ জেতানো ১৩৪ রানের ইনিংস। পুরস্কার হিসেবে পেয়েছিলেন মার্সিডিজ এসএল ৬০০। টেন্ডুলকারের মার্সিডিজ পুরস্কারের কথা বলা বিশেষ কারণে। শারজার হাত ধরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দামি সব পুরস্কারের প্রচলন। মিয়াঁদাদ যেমন বলেছেন, ‘...শারজা প্রথম ভেন্যু, যেখানে ক্রিকেটারদের বড় অঙ্কের প্রাইজমানি দেওয়ার রীতি চালু হয়েছে।’

অবশ্য এই টাকাপয়সা নিয়ে একটা মজার স্মৃতি আছে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের। পঞ্চম এশিয়া কাপ খেলতে ১৯৯৫ সালে মরুর দেশে গিয়েছিল বাংলাদেশ। এই টুর্নামেন্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বিস্তৃত দিগন্তে পাখা মেলা শুরু হাবিবুল বাশার, মোহাম্মদ রফিক, খালেদ মাসুদ, হাসিবুল হোসেন, জাভেদ ওমরদের; যাঁরা প্রত্যেকে পরে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন দেশের ক্রিকেটের উজ্জ্বল নাম হিসেবে।

ওই এশিয়া কাপের কথা তুললেই বাংলাদেশের অন্যতম সফল অধিনায়ক ও বর্তমানে বিসিবির নির্বাচক হাবিবুলের স্মৃতিতে ভেসে আসে মজার একটা ঘটনা, ‘শ্রীলঙ্কার সঙ্গে স্লো ওভার রেটের কারণে ম্যাচ রেফারি ক্লাইভ লয়েড আমাদের হুমকি দিলেন ম্যাচ ফি কেটে নেওয়ার। আমরা ঘাবড়েই গেলাম! পেতামই মাত্র ৫০ ডলার ম্যাচ ফি। সেটিও হারানোর শঙ্কায়। পকেট-টকেট হাতড়ে লয়েডকে আমরা বললাম, যা আছে নিয়ে যান।’

‘আর্থিক ক্ষতি’র মুখে পড়তে গিয়ে কোনোভাবে রক্ষা পেয়েছিলেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা। তবে বিপুল আর্থিক লাভের কথা ভেবেই আইসিসি তাদের সদর দপ্তর ইংল্যান্ড থেকে সরিয়ে দুবাইয়ে এনেছে। গত দুই দশকে আক্ষরিক অর্থেই সংযুক্ত আরব আমিরাত পরিণত হয়েছে ক্রিকেটের রাজধানীতে। একটা সময় যে দেশে ক্রিকেট ছিল শুধুই শারজাকেন্দ্রিক, সেটি এখন আরও বিস্তৃত।

অবশ্য শুধু ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ডেই নয়, মরুর দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগ আছে ক্রিকেটের অন্ধকার জগতেরও! ফিক্সিং কিংবা ম্যাচ গড়াপেটার আলোচনা উঠলেই অবধারিতভাবে চলে আসে ‘দুবাই’ নামটাও। 
আমজাদ হোসেনের নাটকের সংলাপ, ‘টাকা দাও দুবাই যামু’ ভীষণ জনপ্রিয় ছিল আশির দশকে। সেই সংলাপটা এখন একটু ঘুরিয়ে বলা যায়, ‘দুবাই যামু, ক্রিকেট দেখতে’। মজাটা হচ্ছে, গত চার দশকে যে দেশে ক্রিকেটের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড যতটা বিস্তৃত হয়েছে, তার তুলনায় ক্রিকেট খেলাটা সেই তিমিরেই থেকে গেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিশ্বকাপ খেলতে না পারলে মাঠে বসে খেলা দেখবেন মেসি

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৫
লিওনেল মেসি। ছবি: এক্স
লিওনেল মেসি। ছবি: এক্স

২০২৬ বিশ্বকাপ খেলতে চান লিওনেল মেসি। পারবেন কি না, সেটা এখনো নিশ্চিত নয়। বিশ্ব ফুটবলের ২৩তম আসরে আর্জেন্টিনা দলের জার্সিতে এই ফরোয়ার্ড মাঠ মাতাবেন কি না, সেটা সময়ই বলে দেবে। আপাতত মেসি জানালেন, বিশ্বকাপ খেলতে না পারলেও মাঠে বসে দলের খেলা দেখতে চান তিনি।

ইচ্ছা থাকলেও আরও একটি বিশ্বকাপ মঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার বিষয়টি যে হাতে নেই, সেটা ভালোভাবেই জানেন মেসি। কিছুদিন আগে আটবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী জানিয়েছিলেন, শরীর সুস্থ থাকলে ও ফর্ম থাকলে কেবল ২০২৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে মাঠে নামবেন তিনি।

ইএসপিএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, ‘আশা করি, আমি বিশ্বকাপ খেলতে পারব। আগেই বলেছি যে, আমি আরও একটি বিশ্বকাপ খেলতে চাই। বিশ্বকাপ খেলতে না পারা আমার জন্য সবচেয়ে খারাপ হবে। তেমনটা হলে আমি মাঠে বসে দলের খেলা উপভোগ করব।’

লিওনেল স্কালোনির হাত ধরে গত সাড়ে চার বছরে একটি বিশ্বকাপের পাশাপাশি দুটি কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতেছে আর্জেন্টিনা। দলের এমন সাফল্যে কোচের ভূমিকার কথা অকপটে স্বীকার করলেন মেসি, ‘বিশ্বকাপ সবার জন্য, যেকোনো দেশের জন্য বিশেষ; বিশেষ করে আমাদের জন্য। কারণ, আমরা সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে এটা উপভোগ করি। সত্যি কথা হলো, আমাদের অসাধারণ সব খেলোয়াড় আছে। বছরের পর বছর ধরে এটা দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে, লিওনেল স্কালোনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আকাঙ্ক্ষা ও উত্তেজনা অনেকটাই বেড়ে গেছে।’

নিজেদের দল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী মেসি, ‘প্রত্যেকেরই দারুণ মানসিকতা আছে। আমাদের এই দলে অনেক বিজয়ী আছে। যাদের শক্তিশালী মানসিকতা আছে, যারা আরও জিততে চায়। জয়ের ইচ্ছাটা প্রশিক্ষণে ও ম্যাচে দেখা যায়। আমাদের দলটি অসাধারণ। আমরা ভালোভাবে একত্রে কাজ করি। সবাই কঠোর পরিশ্রম করে। নিজ নিজ জায়গা থেকে সেরাটা ঢেলে দেয়। এটাই এই দলের একটি বিশাল শক্তি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বয়কট থেকে সরে এসে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে ইরান

ক্রীড়া ডেস্ক    
সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। ছবি: এক্স
সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। ছবি: এক্স

প্রতিনিধি দলের সব সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা না পাওয়ায় ২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র বয়কট করেছিল ইরান। এক সপ্তাহের মাথায় নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এল তারা। অর্থাৎ বিশ্ব ফুটবলের ২৩ তম আসরের ড্রতে উপস্থিত থাকবে ইরানের প্রতিনিধি দল।

বয়কট থেকে সরে এসে দুজনকে ড্র অনুষ্ঠানে পাঠাবে ইরান। দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রী আহমাদ ডনজামালি সংবাদ সংস্থা ইরনাকে জানিয়েছেন, ড্র অনুষ্ঠানে উপস্থিত তাকবেন ইরানের প্রধান কোচ আমির গালেনোই। তাঁর সঙ্গী হবেন ইরান ফুটবল ফেডারেশনের (এফএফআইআরআই) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান ওমিদ জামালি–প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে বিসিবি। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, তাঁদের দুজনের সঙ্গে কয়েকজন প্রতিনিধিও উপস্থিত থাকতে পারেন।

গত আগস্টে বিশ্বকাপের অন্যতম আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, ৫ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনের কেনেডি সেন্টারে ড্র হবে। নিয়ম অনুযায়ী, বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দল হিসেবে ড্রয়ে উপস্থিত থাকার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য আবেদন করেছিলেন ইরানি ফুটবল ফেডারেশনের ৯ জনের একটি প্রতিনিধি দল। এদের মধ্যে ভিসা পেয়েছেন মাত্র চারজন।

ভিসা না পাওয়ার তালিকায় আছেন ইরানি ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি মেহেদী তাজ। নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় গত জুনে ১২ দেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এই তালিকায় আছে ইরান। তবে অলিম্পিক ও বিশ্বকাপের মতো বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের কথা ভেবে কোচ, অ্যাথলেট ও নির্বাহীদের এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখা হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে ২০২৬ বিশ্বকাপ আয়োজন করবে কানাডা ও মেক্সিকো। গত মার্চ মাসে ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত করে ইরান। সপ্তমবারের মতো দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থে অংশ নেবে এশিয়ার দেশটি। আগের ছয় আসরে একবারও নকআউট পর্বে পা রাখতে পারেনি তারা। কাতারে অনুষ্ঠিত ২০২২ বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ১-০ গোলে হেরে যায় ইরান। এর আগে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে দলটিকে হারিয়েছিল তারা। বিশ্বমঞ্চে সেটাই তাদের একমাত্র জয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উন্নতমানের কোচ আনতে বাফুফেকে টাকা দেবে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৩
৪ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। ছবি: বাফুফে
৪ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। ছবি: বাফুফে

জাতীয় দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরাকে নিয়ে সমালোচনার শেষ নেই। চার বছরের বেশি বেশির ভাগ সমর্থকই তাঁকে আর বাংলাদেশের ডাগআউটে দেখতে চান না। বাফুফে অবশ্য এ ব্যাপারে বরাবর নীরবতা দেখিয়ে এসেছে। উন্নতমানের কোচ আনতে বাফুফের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে রাজি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।

সচিবালয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আওতাধীন জেলা ও উপজেলাপর্যায়ে ক্রীড়া স্থাপনা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আজ সাংবাদিকদের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘বাফুফেকে উন্নতমানের ইউরোপীয় পর্যায়ের কোচ আনা এবং নারী খেলোয়াড়দের বেতন বৃদ্ধি—এই দুইটা খাতের জন্য আসলে কোথা থেকে অর্থের জোগাড় করা যায়, সেটা ভাবছি। হয় আমরা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে নেব অথবা যে ফান্ড আছে, সেখান থেকে সোর্স করে বাফুফেকে একটা ফান্ড দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’

তাহলে কি হাভিয়ের কাবরেরার পরিবর্তে আসতে যাচ্ছেন নতুন কেউ? উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ‘সেটা বাফুফের সিদ্ধান্ত। তবে ভালো কোচ আনতে গেলে একটা আর্থিক ব্যাপার আছে। আপনারা জানেন যে, ইউরোপের বড় বড় দলগুলো কোচদের যে টাকা দেয়, সেটা হয়তো আমাদের পুরো বাফুফের বার্ষিক বাজেটের সমান। আমরা এখনই ওই পর্যায়ে যেতে পারব না। তবে উন্নতমানের কোচ আনার ক্ষেত্রে অর্থ যেন একটা বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সেই জায়গা থেকে আমরা একটা সহযোগিতা করার বা একটা ফান্ড তাদের দেওয়ার চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিশ্বকাপের আগে দলে বেশি পরিবর্তন চান না লিটন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ১৭
লিটন দাস। ফাইল ছবি
লিটন দাস। ফাইল ছবি

বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড সিরিজ শেষে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আগে আপাতত কোনো ব্যস্ততা নেই জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের। এই অবসরে আজ রাজধানীর উত্তরার একটি স্কুলে অতিথি হয়ে গেলেন লিটন দাস। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সময় কাটাতে গিয়ে যেন ছেলেবেলায় ফিরে গেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সেখানে স্বাভাবিকভাবেই সেখানে এল বাংলাদেশ দল-প্রসঙ্গ। সেখানে লিটন জানিয়েছেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে খুব বেশি পরিবর্তনের পক্ষে নন তিনি।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হবে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি। তার আগে প্রস্তুতির দারুণ এক মঞ্চ হিসেবে বিপিএলে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। দেশের সবচেয়ে বড় টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে ভালো করতে পারলে নতুন করে জাতীয় দলের দরজায় কড়া নাড়ার সুযোগ মেলে অনেক ক্রিকেটারের। গত এক বছরে জাতীয় দলে নেই কিন্তু বিপিএলে ভালো করে ফেলল, এমন কোনো ক্রিকেটারের সুযোগ কি মিলবে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে? লিটন হতাশ করছেন না। বিপিএলে ভালো করলে দরজা খোলাই থাকবে বলে মনে করেন তিনি। তবে জাতীয় দলে টানা খেলার মধ্যে থাকা ক্রিকেটারদের প্রাধান্যই বেশি তাঁর কাছে।

লিটন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘যাঁরা অনেকদিন ধরে এই সংস্করণে খেলে আসছে তাঁদের প্রাধান্যই বেশি। এই দলে যে বাড়তি কোনো খেলোয়াড় ঢুকবে না বিষয়টা তাও না। কিন্তু যাঁরা এতদিন ধরে এই সংস্করণে খেলছে, ভালো করছে, আমার কাছে মনে হয় অভিজ্ঞতা তাঁদেরই বেশি। তবু বিপিএল বাংলাদেশের অনেক বড় একটা টুর্নামেন্ট। যদি কোনো খেলোয়াড় ভালো করে, সেক্ষেত্রে নির্বাচক বা কোচ যদি মনে করে যে আমাদের ওই খেলোয়াড়কে দরকার তাহলে কেন নয়? বাংলাদেশের সবার জন্যই জায়গাটা খোলা আছে।’

বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতির শেষ মঞ্চ হওয়ায় বিপিএলে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ভালো খেলার তাগিদ দিলেন লিটন, ‘অনেক দিন ধরেই তো এই খেলোয়াড়েরা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলছে। আমার মনে হয় চলতি বছর আমরা ১৮–১৯ জন খেলোয়াড় টি-টোয়েন্টি সংস্করণে খেলেছি। দল তো হয়ই ১৫-১৬ জনের। আমার মনে হয় যেসব খেলোয়াড় দলে ছিল, তারা পারফর্ম করেছে। তারা বিশ্বকাপ খেলার দাবিদার। নিকট অতীতে আমাদের মিডলঅর্ডার নিয়ে কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছিল। আমি সেটা নিয়ে চিন্তিত ছিলাম না। কারণ আমাদের দুই-একটা খেলোয়াড় রানে ফিরেছে। এখন আমরা যদি বিপিএলে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি, খেলোয়াড়দের যে মানসিকতা থাকবে, বিশ্বকাপে সেটা কাজে দেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত