Ajker Patrika

উত্তেজনার ফাইনাল জিতে বসুন্ধরার ট্রেবল 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ থেকে
আপডেট : ২২ মে ২০২৪, ১৯: ০৯
উত্তেজনার ফাইনাল জিতে বসুন্ধরার ট্রেবল 

আক্রমণ, গোল এবং আবারও গোল; একটি ফাইনাল উপভোগ্য হতে আর কী লাগে! বসুন্ধরা কিংস আর মোহামেডানের ফেডারেশন কাপ ফাইনালকে বর্ণনা করতে হলে আরও কিছু লিখতে হবে, রুদ্ধশ্বাস ও একই সঙ্গে উত্তেজনার। এই ম্যাচে হাতাহাতি থেকে শুরু করে সবই হলো। খেলা একসময় থামিয়েও দিতে হলো। টান টান উত্তেজনার ম্যাচ খেলেও কিন্তু বসুন্ধরাকে ইতিহাস গড়া থামাতে পারল না মোহামেডান।

রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামের ১৫ হাজার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন গ্যালারি আজ ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ। কাঠফাটা রোদে মাথায় নিয়ে এই দর্শকেরা এসেছিলেন উপভোগ্য এক ফাইনালের প্রত্যাশা নিয়ে যেমনটা হয়েছিল এক বছর আগে কুমিল্লায়। ৪-৪ গোলের সমতায় থাকা সেই ফাইনালে আবাহনীকে টাইব্রেকারে জিতে নিয়েছিল মোহামেডান। সাদা-কালোদের শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে আজ প্রতিপক্ষ ছিল ট্রেবল জিতে ইতিহাসের অপেক্ষায় থাকা বসুন্ধরা। পিছিয়ে পড়ে বসুন্ধরা শেষ পর্যন্ত ইতিহাস গড়েছে। পিছিয়ে থাকা ম্যাচ ২-১ গোলে জিতে দ্বিতীয় দল হিসেবে ট্রেবল জিতেছে অস্কার ব্রুজোনের দল।

২০০৭ সালে পেশাদার লিগ শুরুর পর ২০১৩ সালে প্রথম ট্রেবল জিতেছিল শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে মোহামেডানকে হারিয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে ট্রেবল জিতল বসুন্ধরা। ইতিহাস গড়তে ব্রুজোনের দলকে বেশ কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়েছে। পিছিয়ে থাকা ম্যাচে ৮৭ মিনিটে সমতায় ফেরা, সেখান থেকে ম্যাচ জিতে নেওয়া, নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়েই ট্রেবল জিতেছে বসুন্ধরা।

এই মৌসুমে আজকের ম্যাচের আগে তিনবার মুখোমুখি হয়েছে বসুন্ধরা-মোহামেডান। একবার স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে, দুইবার লিগে। স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে মোহামেডানকে হারিয়ে মৌসুমের প্রথম শিরোপা জিতেছিল বসুন্ধরা, মোহামেডান সেই শোধটা তুলেছিল লিগে বসুন্ধরাকে একমাত্র হার উপহার দিয়ে। পরের দুই ম্যাচ জিতেছে বসুন্ধরা। সব মিলিয়ে মোহামেডানের বিপক্ষে এই মৌসুমে তিনবার ম্যাচ জিতল ব্রুজোনের দল। কাকতালীয়ভাবে বসুন্ধরা সবগুলো ম্যাচই জিতেছে ২-১ গোলের ব্যবধানে।

ম্যাচের প্রথম পরিষ্কার সুযোগটা বসুন্ধরার। ২৭ মিনিটে রাকিব হোসেনের লম্বা করে বাড়ানো বলে দরিয়েলতন গোমেজের সামনে ছিলেন কেবল মোহামেডান গোলরক্ষক সুজন হোসেন। দরিয়েলতন শট নিলেন বটে কিন্তু সুজনকে হারাতে পারলেন না।

মোহামেডানও কাজে লাগাতে পারেনি তাদের প্রথম সুযোগটি। ৪১ মিনিটে মুজাফফরভের বাড়ানো বলে সুলেমান দিয়াবাতের সঙ্গে দেওয়া-নেওয়া করে পোস্টে জোরালো শট নেন ইম্যানুয়েল সানডে। সেই শট ফিস্ট করে ফিরিয়ে বল জালে জড়াতে দেননি বসুন্ধরা গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ।

দুই মিনিট বাদে শ্রাবণই আরেকবার হতাশ করেন মোহামেডান সমর্থকদের। আরিফ হোসেনের ভাসিয়ে বাড়ানো ক্রসে সুলেমান দিয়াবাতে ভলি করেছিলেন লক্ষ্যেই। তবে সতর্ক শ্রাবণ সহজেই বলের নিয়ন্ত্রণ নেন গ্লাভসে।

বিরতির পর প্রথম সুযোগটা বসুন্ধরার। ৪৯ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে তপু বর্মণের বাতাসে বাড়ানো বলে দর্শনীয় সাইড ভলি নিলেও বলকে জালে জড়াতে পারেননি দরিয়েলতন।

আশরাফুল হক আসিফের বদলি হিসেবে নেমে শাহরিয়ার ইমন নামার পরই বদলে যায় মোহামেডানের খেলার ধরন। ইমন প্রথমেই সুযোগ পেয়ে যান মোহামেডানকে এগিয়ে দেওয়ার। যদিও প্রথম শটে ইমন আটকে যান বসুন্ধরার রক্ষণে। পরের মিনিটে তাঁর শট ঠেকিয়ে দেন বসুন্ধরা গোলরক্ষক শ্রাবণ।

এরপর শ্রাবণকে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে একের পর এক শট ঠেকাতে। ৬২ মিনিটে মুজাররফের শটও ঠেকান শ্রাবণ। কিন্তু পরের মিনিটে শেষ পর্যন্ত অবশ্য হারতে মানতে হয় তাঁকে।

৬৩ মিনিটে ইমনের বাড়ানো বলে বসুন্ধরার দুই ফুটবলকে হার মানিয়ে ২৫ গজ দূর থেকে এক শট নেন ইম্যানুয়েল সানডে। নাইজেরিয়ান এই ফরোয়ার্ডের বাঁ পায়ের শটে এতটাই গতি থাকল যে শ্রাবণ ঝাঁপালেন কিন্তু ঠেকাতে পারলেন না। গোলের আনন্দে মাতে মাঠে থাকা হাজার হাজার মোহামেডান সমর্থক।

গোলের পর যেন আরও ক্ষুরধার মোহামেডানের আক্রমণ। আবারও পরীক্ষার মুখে শ্রাবণ ৭২ মিনিটে মিনহাজুর আবেদিন রাকিবের শট ফেরান বসুন্ধরা গোলরক্ষক।

মোহামেডানের আক্রমণের তোড়ে তিন পরিবর্তন আনতে বাধ্য হোন বসুন্ধরা কোচ অস্কার ব্রুজোন। মাঠে নামেন শেখ মোরসালিন, ইয়াসির আরাফাত ও মাসুক মিয়া জনি। আক্রমণে গতি বাড়ে বসুন্ধরার। ৭৭ মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগটা পায়ে ঠেলেন দরিয়েলতন। মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজনকে একা পেয়েও মেরে বসেন গোলরক্ষকের গায়ে।

পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণে মোহামেডান আরও একবার কাঁপিয়ে দেয় বসুন্ধরার রক্ষণকে। নিজেদের অর্ধ থেকে মিনহাজুরের শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান তপু বর্মণ।

ময়মনসিংহে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে রুদ্ধশ্বাস এক ম্যাচই উপহার দিয়েছে বসুন্ধরা-মোহামেডান। ছবি: বাফুফে৮১ মিনিটে পোস্টে আটকে যায় বসুন্ধরার গোল। সতীর্থদের সুযোগ নষ্টের মহড়া দেখে নিজেই শট নেন বসুন্ধরা অধিনায়ক রবসন রবিনহো। তার ডান পায়ের শট মোহামেডান গোলরক্ষক সুজনের হাতে লেগে দিক পাল্টে আটকে যায় পোস্টে। সেখান থেকে পাল্টা আক্রমণে ওঠে মোহামেডান। সুলেমান দিয়াবাতের সামনে ছিলেন কেবল শ্রাবণ। মোহামেডান অধিনায়কও হারান ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ।

মোহামেডানকে চাপে রাখার ফল বসুন্ধরা পায় ৮৭ মিনিটে। এই গোলের পুরো কৃতিত্বটা পুরোই মিগেল দামাশিনোর। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে একে একে কাটান মোহামেডানের চার খেলোয়াড়কে। এরপর বক্সের ভেতর ঢুকে নেন বাঁ পায়ের বুলেট গতির এক শট। এতটাই গতি মিশে থাকল শটে যে গ্লাভস ছোঁয়ার সুযোগই পেলেন না মোহামেডান গোলরক্ষক। এই গোলেই হার দেখতে থাকা বসুন্ধরা খেলা নিয়ে যায় অতিরিক্ত সময়ে।

খেলা অতিরিক্ত সময়ে বদলি ডিফেন্ডার জাহিদ হোসেনের গোলে এগিয়ে যায় বসুন্ধরা। আর তাতেই উত্তেজিত হয়ে খেলা থামিয়ে দেয় মোহামেডান। ১০৬ মিনিটে মিগেল দামাশিনোর কর্নার গ্লাভসে নিতে গিয়ে বল হাতছাড়া করেন মোহামেডান গোলরক্ষক সুজন হোসেন। ফাঁকায় থাকা জাহিদ এই সুযোগ নষ্ট করেননি, ডান পায়ের শটে বল জড়ান জালে। রেফারি জসিম আক্তার গোলের বাঁশি দিতেই তাঁর দিকে ছুটে যান মোহামেডানের ফুটবলাররা। মাঠে নেমে পড়েন মোহামেডান কোচ আলফাজ আহমেদও। গ্যালারি থেকে মোহামেডান সমর্থকেরা বোতল ছুঁড়ে মারা শুরু করেন বসুন্ধরার ডাগআউটে। উত্তেজিত মোহামেডানের ফুটবলাররা এক সময় মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রায় ১০ মিনিট বন্ধ থাকে খেলা। পরে অবশ্য রেফারির সিদ্ধান্ত মেনে মাঠে নামে মোহামেডান।

জাহিদের গোলটাই শেষ পর্যন্ত গড়ে দিয়েছে ম্যাচের পার্থক্য। মোহামেডান একদম শেষ সময়ে মরিয়া হয়ে শেষ চেষ্টা করে আটকাতে পারেনি বসুন্ধরাকে। ১২০ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে আড়াআড়ি শট নেন শাহরিয়ার ইমন। কিন্তু সাদা-কালোদের হতাশার চিত্র হয়ে রইল ইমনের নখদন্তহীন শট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নোয়াখালীকে অপেশাদার বলছেন বিসিবি পরিচালক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ১৮
নোয়াখালী এক্সপ্রেসের বল-কাণ্ডকে অপেশাদার বলছেন ইফতেখার রহমান মিঠু। ছবি: সংগৃহীত
নোয়াখালী এক্সপ্রেসের বল-কাণ্ডকে অপেশাদার বলছেন ইফতেখার রহমান মিঠু। ছবি: সংগৃহীত

২০২৬ বিপিএল মাঠে গড়ানোর আগেই পরিবেশ উত্তপ্ত। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ অনুশীলনের মাঝপথেই রাগান্বিত অবস্থায় মাঠ ছেড়ে চলে যান নোয়াখালী এক্সপ্রেসের দুই কোচ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠুর দৃষ্টিতে প্রথমবারের মতো অংশ নিতে যাওয়া নোয়াখালী অপেশাদার আচরণ করেছে।

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ নোয়াখালী এক্সপ্রেসের বাস থেকে ক্রিকেটাররা নামছিলেন। হঠাৎ করেই ক্ষুব্ধ অবস্থায় স্টেডিয়াম ছাড়তে দেখা যায় প্রধান কোচ সুজন ও সহকারী কোচ তালহাকে। সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে যখন তাঁরা (সুজন-তালহা) মাঠ ছাড়ছিলেন, তখন সাংবাদিকদের বুম-ক্যামেরা ঘিরে ধরে তাঁদের। শোনা যায়, দলটির অনুশীলনের সময় বল নিয়ে ঝামেলা তৈরি হয়েছে। নোয়াখালীর এমন ঘটনা প্রসঙ্গে সিলেটে আজ বিকেলে সাংবাদিকদের মিঠু বলেন, ‘এটার অর্থ তারা অপেশাদার। এটা তো আমি গভর্নিং কাউন্সিল বলি তাদের ১০টা বল দেন...আমরাই তো দিয়ে দিতাম। অবশ্যই অপেশাদার। এমনকি কোচকেও যদি বলত অন্য দল থেকে যদি না এসে থাকে। এটা খুবই সাধারণ সমাধান। না এলে অন্য দল থেকে আজকে চালিয়ে পরে ফেরত দেওয়া যেত। এটা তো অনেকবার হয়েছে।’

নোয়াখালী এক্সপ্রেসের বল-কাণ্ডের কয়েক ঘণ্টা আগে চট্টগ্রাম রয়্যালসের মালিকানা ছেড়ে দিয়েছেন ফ্র্যাঞ্চাইজিটির স্বত্বাধিকারী আবদুল কাইয়ুম। শুধু তা-ই নয়, বিপিএল শুরুর আগের দিন অধিনায়কদের আনুষ্ঠানিক সম্মেলন, ফটোসেশন কোনো কিছুই হয়নি। এত অগোছালো অবস্থার মধ্যে বিপিএল আয়োজন করাটা কি ভুল হয়েছে—মিঠুর কাছে আজ এমন প্রশ্ন করেছেন সাংবাদিকেরা। যেখানে আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান মিঠু একই সঙ্গে বিসিবি পরিচালক ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যসচিব। উত্তরে বিসিবি পরিচালক বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, এত অল্প সময়ে, সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, যে সময়টা আমরা পেয়েছি, অক্টোবরের ১২-১৩ তারিখে দায়িত্ব পেয়েছি; আজ দেখেন এত শর্ট টাইমে এত কিছু করা, এ রকম হতো যে আগে দল ছিল, তাহলে কিন্তু খুব সহজ হতো। এখন নতুন করে দল দিতে হয়েছে। কারণ, আগের চুক্তিগুলো শেষ হয়ে গিয়েছিল। এত কিছু করে এই দুই মাসে এত বড় টুর্নামেন্ট আয়োজন করা, সত্যিই অনেক কঠিন।’

টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই যখন এত বিতর্ক, তখন বিপিএল কি আয়োজন না করলে ভালো হতো—সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মিঠু বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত তো আমার না। সম্মিলিতভাবে ওপর মহল থেকে নেওয়া হয়েছে।’ বল কেলেঙ্কারিতে অনুশীলনের মাঝপথে ক্ষুব্ধ অবস্থায় সুজন-তালহার মাঠ ছাড়ার মতো ঘটনাকে মিঠু অপেশাদার বলছেন ঠিকই, তবে ম্যাচ শুরুর আগে ক্রিকেটারদের ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিক দেওয়ায় নোয়াখালী এক্সপ্রেসের প্রশংসা করেছেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যসচিব, ‘ভালো কথা হচ্ছে, তারা (নোয়াখালী) পারিশ্রমিকটা দিয়ে ফেলেছে। রংপুর রাইডার্স অর্ধেক দিয়েছে। রাজশাহী ও ঢাকা ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিক দিয়েছে। একটু আগে শুনলাম, নোয়াখালী ২৫ শতাংশ দিয়েছে। বিকেলে সিলেট দেবে।’ আগমুহূর্তে স্বত্বাধিকারী শূন্য হয়ে যাওয়া চট্টগ্রাম রয়্যালসের দায়িত্ব এখন বিসিবির। হাবিবুল বাশার সুমন চট্টগ্রামের টিম ডিরেক্টর, মিজানুর রহমান বাবুলকে কোচ ও নাফিস ইকবালকে ম্যানেজার করে চট্টগ্রাম রয়্যালসের দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে বলে মিঠু সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

১২তম বিপিএল শুরু হচ্ছে সিলেট পর্ব দিয়ে। শেষ হবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। ২৩ জানুয়ারি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে হবে ফাইনাল। বিপিএল শেষে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত ভারত-শ্রীলঙ্কায় হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় নাঈম শেখকে কিনেছে চট্টগ্রাম রয়্যালস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯২ লাখ টাকা দাম উঠেছে হৃদয়ের। তাঁকে কিনেছে রংপুর রাইডার্স। একই দল লিটনকে কিনেছে ৭০ লাখ টাকায়। তাসকিনকে সরাসরি চুক্তিতে নিয়েছে ঢাকা ক্যাপিটালস। তবে সর্বোচ্চ চারবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স নেই এবারের বিপিএলে। নেই ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালও। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালকেও দেখা যাবে না ২০২৬ বিপিএলে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিপিএল দিয়ে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে চান শান্ত

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ০১
বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে বিপিএলে চোখ রাখছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।ছবি: আজকের পত্রিকা
বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে বিপিএলে চোখ রাখছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।ছবি: আজকের পত্রিকা

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে একরকম ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এ বছরের ১৯ মে আরব আমিরাতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টির পর জাতীয় দলের জার্সিতে আর খেলার সুযোগ মেলেনি তাঁর। শান্ত তাই এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগকে (বিপিএল) পাখির চোখ করছেন। কারণ, এই বিপিএল শেষ হতে না হতেই শুরু হবে দশম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

সবশেষ বিপিএলে তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন ফরচুন বরিশালে খেলেছিলেন শান্ত। চ্যাম্পিয়ন বরিশাল লিগ পর্ব থেকে শুরু করে ফাইনাল পর্যন্ত ১৪ ম্যাচ খেলেছে। কিন্তু শান্ত কেবল পাঁচ ম্যাচে বরিশালের একাদশে ছিলেন। ৫ ম্যাচে ১১.২ গড় ও ১১৯.১৪ স্ট্রাইকরেটে করেছিলেন ৫৬ রান। বছর ঘুরতেই এবারের বিপিএলে শান্ত খেলবেন রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের হয়ে। এদিকে এ বছর বাংলাদেশ ৩০টি টি-টোয়েন্টি খেললেও তিনি কেবল এক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন। এ সময় শান্তহীন বাংলাদেশ লিটন দাসের নেতৃত্বে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নেদারল্যান্ডস ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। এমনকি শান্তর খেলার সুযোগ হয়নি সংযুক্ত আরব আমিরাতে সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপে।

সিলেট টাইটানসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আগামীকাল বিপিএল অভিযান শুরু করবে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। ম্যাচের আগে আজ সিলেটে সাংবাদিকদের শান্ত বলেন, ‘রাজশাহী দলটা ব্যক্তিগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। কীভাবে দলের হয়ে অবদান রাখতে পারছি, সেটাই লক্ষ্য। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি সব দিক দিয়ে অবদান রাখতে চাচ্ছি। রাজশাহীতে অবদান রাখতে পারি। এরপর সামনে বিশ্বকাপ। যদি এখানে ভালো করতে পারি, তাহলে বড় সুযোগ। তবে এটা নির্বাচকেরা বুঝবেন। ম্যানেজমেন্ট আছেন। আমার কাজ হলো কীভাবে নিয়মিত পারফর্ম করতে পারি।’ সবশেষ বিপিএলে শান্ত বরিশালের হয়ে উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এবার কি দেখা যাবে বোলার শান্তকে—এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে মজার ছলে রাজশাহী অধিনায়ক বলেন, ‘আগের বছর তো উইকেটরক্ষকের কাজ করেছিলাম। দেখি এবার বোলিংও করব।’

সিলেট স্টেডিয়ামে আগামীকাল সিলেট টাইটানস-রাজশাহী ওয়ারিয়র্স ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে ১২তম বিপিএল। স্বাগতিক দর্শকদের বিপক্ষে খেলাটা যে চ্যালেঞ্জিং, সেটা জানা আছে শান্তরও। বিপিএল, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সব ম্যাচেই সিলেটের গ্যালারি পূর্ণ হয়ে ওঠে। সিলেটে আজ সংবাদমাধ্যমকে রাজশাহী অধিনায়ক বলেন, ‘স্বাগতিক দর্শকদের বিপক্ষে খেলাটা রোমাঞ্চকর। আমার দলের ক্রিকেটাররা এই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।’

১২তম বিপিএল শুরু হচ্ছে সিলেট পর্ব দিয়ে। শেষ হবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। ২৩ জানুয়ারি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে হবে ফাইনাল। বিপিএল শেষে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত ভারত-শ্রীলঙ্কায় হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় নাঈম শেখকে কিনেছে চট্টগ্রাম রয়্যালস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯২ লাখ টাকা দাম উঠেছে হৃদয়ের। তাঁকে কিনেছে রংপুর রাইডার্স। একই দল লিটনকে কিনেছে ৭০ লাখ টাকায়। তাসকিনকে সরাসরি চুক্তিতে নিয়েছে ঢাকা ক্যাপিটালস। তবে সর্বোচ্চ চারবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স নেই এবারের বিপিএলে। নেই ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালও। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালকেও দেখা যাবে না ২০২৬ বিপিএলে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিপিএলে থাকতে চান না সুজন, সিলেটে উত্তপ্ত পরিবেশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ০৯
এবারের বিপিএল করতে চান না নোয়াখালী এক্সপ্রেসের প্রধান কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। ছবি: সংগৃহীত
এবারের বিপিএল করতে চান না নোয়াখালী এক্সপ্রেসের প্রধান কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। ছবি: সংগৃহীত

১২তম বিপিএল শুরু হতে ২৪ ঘণ্টাও বাকি নেই। সিলেট স্টেডিয়ামে আগামীকাল বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টায় সিলেট টাইটান্স-রাজশাহী ওয়ারিয়র্স ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াচ্ছে নতুন বিপিএল। তার আগেই আজ পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ক্ষোভে মাঠ ছাড়লেন নোয়াখালী এক্সপ্রেসের প্রধান কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন ও সহকারী কোচ তালহা জুবায়ের।

আগামীকাল ম্যাচ রয়েছে প্রথমবার বিপিএলে অংশ নিতে যাওয়া নোয়াখালী এক্সপ্রেসেরও। চট্টগ্রাম রয়্যালসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করবে নোয়াখালী। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে নোয়াখালী এক্সপ্রেসের বাস থেকে ক্রিকেটাররা নেমেছিলেন। হঠাৎ করেই স্টেডিয়াম ছাড়তে দেখা যায় প্রধান কোচ সুজন ও সহকারী কোচ তালহাকে। দুজনই খুব ক্ষুব্ধ ছিলেন। সিএনজিতে করে যখন তাঁরা (সুজন-তালহা) মাঠ ছাড়ছিলেন, তখন সাংবাদিকদের বুম-ক্যামেরা ঘিরে ধরে তাঁদের। তালহা জুবায়েরকে বলতে শোনা গেছে, ‘আমার জীবনে অনেক বিপিএল করেছি। সবচেয়ে বিরক্তিকর বিপিএল লেগেছে এটা।’ সুজনকে এরপর তালহা জুবায়ের প্রশ্ন করেন, ‘আপনি করবেন কি না জানি না। আমি করব না।’

তালহার সুরে সুর মিলিয়েছেন সুজনও। সাংবাদিকদের নোয়াখালীর প্রধান কোচ বলেন,‘আজ আমি কিছু করতেই পারব না। মেজাজ অনেক খারাপ। পরে দেখব। সে (তালহা) বল চুরি করবে নাকি বেচে খাবে? বলের টাকাও তো নিইনি আমরা। কাজ করতে ইচ্ছা করছে না। করব না বিপিএল।’ এমনকি এবারের বিপিএলে নোয়াখালী এক্সপ্রেসের কোচের দায়িত্বেও থাকতে চান না বলে সুজন জানিয়েছেন। তাহলে কে নেবেন নোয়াখালীর প্রধান কোচের দায়িত্ব—এমন প্রশ্নের উত্তরে সুজন বলেন, ‘অনেক কোচ আছেন। তাঁরা নিতে পারবেন।’

১২তম বিপিএল শুরু হচ্ছে সিলেট পর্ব দিয়ে। শেষ হবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। ২৩ জানুয়ারি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে হবে ফাইনাল। এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় নাঈম শেখকে কিনেছে চট্টগ্রাম রয়্যালস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯২ লাখ টাকা দাম উঠেছে হৃদয়ের। তাঁকে কিনেছে রংপুর রাইডার্স। একই দল লিটনকে কিনেছে ৭০ লাখ টাকায়। তাসকিনকে সরাসরি চুক্তিতে নিয়েছে ঢাকা ক্যাপিটালস। তবে সর্বোচ্চ চারবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স নেই এবারের বিপিএলে। নেই ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালও। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালকেও দেখা যাবে না ২০২৬ বিপিএলে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রোনালদোকে পর্তুগালের এখন অনেক বেশি দরকার, বলছেন কোচ

ক্রীড়া ডেস্ক    
পর্তুগাল ফুটবল দলে রোনালদোকে অনেক দরকার বলে মনে করেন কোচ রবার্তো মার্তিনেজ। ছবি: এএফপি
পর্তুগাল ফুটবল দলে রোনালদোকে অনেক দরকার বলে মনে করেন কোচ রবার্তো মার্তিনেজ। ছবি: এএফপি

বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। একের পর এক গোল করে ওলটপালট করে দিচ্ছেন রেকর্ড বইয়ের পাতা। ৪০ পেরোনোর পরও যেভাবে পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে চলেছেন, তা সত্যিই অসাধারণ। ফুটবলপ্রেমীরা তো বটেই, ছন্দে থাকা রোনালদোকে দেখে প্রতিপক্ষ দলের মুখেও শোনা যায় প্রশংসা।

মাঠে তো বটেই, অনুশীলনেও বিন্দুমাত্র ছাড় দেন না রোনালদো। ফিটনেস নিয়ে অনেক কাজ করেন পর্তুগালের তারকা ফুটবলার। ২০২৬ বিশ্বকাপ আসতে আসতে তাঁর বয়স হয়ে যাবে ৪১ বছর। আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ে শুরু হতে যাওয়া পর্তুগালের বিশ্বকাপ পরিকল্পনা স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে। পর্তুগালের প্রধান কোচ রবার্তো মার্তিনেজের মতে রোনালদো শুরুর একাদশে থাকার মতো অপরিহার্য খেলোয়াড়।

রোনালদোকে নিয়ে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কাকে কদিন আগে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অনেক কথাই বলেছেন মার্তিনেজ। কোচের মতে তিনটি গুণের কারণে রোনালদোকে এখনো পর্তুগালের অনেক প্রয়োজন। পর্তুগাল কোচ বলেন, ‘প্রতিভা, অভিজ্ঞতা, মানসিকতা—সব সময় এই তিনটা জিনিস আমরা দেখি। দলের জন্য কিছু করতে সদা তৎপর থাকে সে। একারণেই সে জাতীয় দলের অপরিহার্য অংশ। সেরা হওয়ার ক্ষুধাটা তার মধ্যে অনেক কাজ করে। মাঠে সে অনেক বড় অবদান রাখতে পারে।’

ফুটবল ইতিহাসের প্রথম ফুটবলার হিসেবে ১০০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করার লক্ষ্যের কথা আগেই বলেছিলেন রোনালদো। আন্তর্জাতিক দল, ক্লাব ফুটবল সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ২০ বছরের বেশি সময় খেলে তিনি করেছেন ৯৫৪ গোল। তাঁর সেই ১০০০ গোলের প্রসঙ্গ এসেছে পর্তুগাল কোচ মার্তিনেজের কাছেও। স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যম মার্কাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কোচ বলেন, ‘সে (রোনালদো) এখন তার ক্যারিয়ারের দারুণ এক অবস্থায় আছে। তার গোলের ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা হলে সে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কথাবার্তা কম বলে। ১০০০ সংখ্যাটা আমার মতে গোল নয়। কত দিন পরে সে অবসর নেবে, তেমনই কিছু মনে হচ্ছে। তার সাফল্যের রহস্য হচ্ছে আজ ও কাল সব সময় নিজের সেরাটা দেওয়া।’

২০০৬ থেকে শুরু করে ২০২২ পর্যন্ত পাঁচ বিশ্বকাপেই খেলেছেন রোনালদো। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ে হতে যাওয়া বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে তাঁর ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ। আগামী বছরই ফুটবল বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারের ইতি টানতে যাচ্ছেন বলে কয়েক মাস আগে জানিয়েছেন রোনালদো। তবে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল কবে ছাড়বেন, তা এখনো জানাননি তিনি। পর্তুগালের জার্সিতে এখন পর্যন্ত ২২৬ ম্যাচে ১৪৩ গোল করেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এখনো তিনি সর্বোচ্চ গোলদাতা। গত রাতে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ টুতে তাঁর দল আল নাসর ৫-১ গোলে হারিয়েছে আল জাওরাকে। গোল না পেলেও সতীর্থকে দিয়ে একটি গোল করিয়েছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত